Posts

Showing posts from April, 2016

সাপ্তাহিকী

ওঙ্গে পাত্র- পাত্রী নিজেরাই নিজেদের বিবাহ ঠিক করে জানায় দু’পক্ষের পিতামাতাকে। অনেক সময়েই জানাবার প্রয়োজন হয় না, পিতামাতা টের পায় তাঁদের সন্তান কোথায় যায়, কার কাছে যায়। অভিভাবকরা তখন নিজেদের মধ্যে একটা দিন ঠিক করে। পাত্রীকে নিয়ে আসে পাত্রের বাড়িতে। ঘরের ভিতরে একটা মাচায় বসে পাত্র, একটা মাচায় বসে পাত্রী। পাত্রকে বলা হয় পাত্রীর হাত ধরে তার মাচায় তুলে নিতে। বর মাচা হতে নেমে এসে কনের হাত ধরে টানে। লাজুক কনে একটু একটু করে এগোয়, যেন জোর করেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভাবটা। বর কনেকে নিয়ে মাচায় তোলে। বর বসে, কনে বসে বরের কোলে। ধীরে দু’জন দু’জনকে আলিঙ্গন করে। নিঃশব্দে দু’-তিন মিনিট সেই আলিঙ্গনাবদ্ধ অবস্থায় থাকে। বিয়ের অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। বর-বউ নেমে আসে, গুরুজনদের কোলে বসে, সবাইকে এক এক করে সেইভাবে আলিঙ্গন করে। শ্রদ্ধা সম্মান দেখাবার এই রীতি এদের। …… শিশুর যখন জন্ম নেবার সময় হয়, প্রসূতির সঙ্গে তার স্বামীও পাশের মাচায় শুয়ে শুয়ে প্রসববেদনা অনুভূতিতে অনুভব করে। মায়ের মতো পিতাও যন্ত্রণায় কাতর হয়। সে সময়ে প্রসূতির স্বামী ছাড়া আর কোনও পুরুষ লোক থাকে না সে ঘরে। মেয়েরা থাকে - মায়ের কোলের শিশুরা থাকে

গত তিন বছরে আমি যা যা ভেঙেছি

Image
উৎস গুগল ইমেজেস (জিনিসগুলোর প্রতি আমার অনুরক্তির অধঃক্রমে সাজানো) ১। মায়ের দেওয়া একটা সাদা পোর্সিলিনের বাটি। ২। একটা লাল কাপ। নিজের কেনা। খুব শখের ছিল। ৩। ইলেকট্রিক কেটলি। কেটলিটা ভাঙেনি, ভেঙেছে ঢাকনাটা। বাকি শরীরের থেকে আলাদা হয়ে গেছে। আর এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত একটা চিড় ধরেছে। জল গরম করা যায়। তবে কাপে গরম জল ঢালার সময় সতর্ক থাকতে হয়, না হলে ঢাকনা আলগা হয়ে কাপের ওপর পড়ে যেতে পারে। পড়েওছে কয়েকবার। কিন্তু কোনও কাপ ভাঙেনি। এখনও পর্যন্ত। ভাঙলে সেগুলোকেও এই লিস্টে ঢোকাতে হত। কারণ প্রত্যক্ষভাবে না হলেও দুর্ঘটনাটার জন্য পরোক্ষভাবে আমিই দায়ী থাকতাম। ৮। একটা ল্যাপটপ। (আমার জীবনের প্রথম ল্যাপটপ। দু’হাজার আটে কেনা। তার আগের আঠাশটা বছর নাকি আমি নিজস্ব ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই, খেয়েদেয়ে, নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে, মানুষের সমাজে দিব্যি চলেফিরে বেড়াতাম। অন্তত কমন সেন্স তো সে রকমটাই দাবি করছে। যদিও আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।) ৯।  আরেকটা ল্যাপটপ। রাতে চোখ বন্ধ করার আগে অর্চিষ্মানকে টপকে টেবিল অবধি হাত বাড়াতে কুঁড়েমো লাগছিল বলে খাটের নিচে নামিয়ে রেখেছিলাম। ঘুম থেকে উঠে রো

গোয়েন্দাগল্পে প্রেক্ষাপট

Image
উৎস গুগল ইমেজেস অবান্তরের একটা পুরোনো পোস্টে আমি দাবি করেছি, যদিও গোয়েন্দাগল্প প্লটপ্রধান, তবু গোয়েন্দাগল্পের সার্থকতা/সফলতার প্রধান উপকরণ প্লট (অর্থাৎ খুন, চুরি, কিডন্যাপ, ক’টা খুন, কী চুরি, কে কিডন্যাপ) নয়, বরং গল্পের নায়ক অর্থাৎ গোয়েন্দার চরিত্র। বলাই বাহুল্য এখানে গোয়েন্দার নৈতিক চরিত্রের কথা বোঝানো হচ্ছে না (তাহলে ফাদার ব্রাউন কোকেনখোর হোমসের থেকে অনেক বেশি জনপ্রিয় হতেন), বরং তার ‘ক্যারেকটার’ হয়ে উঠতে পারার ক্ষমতার কথা বলা হচ্ছে। অর্থাৎ সে বাদবাকি পাঁচটা লোকের থেকে যথেষ্ট পরিমাণে আলাদা কি না, বই শেষ করে উঠে খুনির নাম ভুলে গেলেও তাকে মনে থাকবে কি না ইত্যাদি।  সম্প্রতি একেনবাবুর  সম্পর্কে লিখতে গিয়ে আরও একটা জরুরি বিষয়ের কথা মনে পড়ল। প্রেক্ষাপট বা ওয়ার্ল্ড বিল্ডিং। চরিত্রগুলোর সঙ্গে সঙ্গে চরিত্রদের চারপাশটাকেও জীবন্ত করে তোলা। লিটারেরি বা সাই-ফাই বা ইয়ং অ্যাডাল্ট ঘরানার সাহিত্যের ক্ষেত্রে এ ব্যাপারটার প্রয়োজন সকলেই স্বীকার করবেন। হ্যারি পটারের প্রতিভার কারিকুরি পাঠকের কোনও কাজেই লাগত না যদি না অমন নিখুঁত একখানা হগওয়ার্টস তৈরি করতেন জে কে রোলিং। ঠিক তেমনি মিস মার্পলের

চেনেন নাকি?

Image

পাড়ার প্রেম

সকাল প’নে আটটা নাগাদ, আমার দু’নম্বর আর অর্চিষ্মানের এক নম্বর চা খাওয়া হয়ে যাওয়ার পর ক্বচিৎ কদাচিৎ আমাদের বাড়িতে একটা আশ্চর্য ঘটনা ঘটে। সেদিনও ঘটল। আমাদের পশ্চিমের দেওয়ালে ল্যাম্পশেডের নিচে গোল মুখের যে ঘড়িটা ঝোলানো আছে সেটায় প্রাণসঞ্চার হল। কাঁটা দুটো জ্যান্ত হয়ে প্রচণ্ড জোরে দৌড়তে শুরু করল। বারোটা কালো অক্ষরের খোঁদল হয়ে গেল বারো খানা ধকধকে চোখ। আর ঘড়ির ঠিক মাঝখানটা ধ্বসে গিয়ে একটা খাদের মতো হয়ে গেল, আর সেই খাদের চারধার থেকে অমসৃণ শ্বদন্তের মতো ধারালো দাঁত ঠিকরে বেরোল। ঠিক যেন ভূগোল বইয়ের পাতার ছবি। অন্ধকার, ভয়াল বোরা গুহার মুখে ঝুলে আছে স্ট্যালাগটাইট স্ট্যালাগমাইট। আমরা হাঁ করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি আর ঠিক তক্ষুনি… ‘অ্যান্ড ইয়োর টাইম স্টার্টস নাউ!’ কীসের টাইম ? আর গলাটাই বা কার? ঘড়ি থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দেখি ঘরটা হয়ে গেছে একটা সার্কাসের তাঁবু, লালনীল দেওয়াল, মেঝে জুড়ে রঙিন আলো জ্বলছে নিভছে, এক সেকেন্ডের বেশি তাকালে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। আবার একজন রিং লিডারও এসে জুটেছেন। ইনিই চেঁচাচ্ছিলেন নাকি? চেনা চেনা, কোথায় যেন দেখেছি, এক মহিলা, মেয়ে বলাই উচিত, পঁচিশের কাছাকাছি বয়স, মেকআপে মুখে অ

I want to be proud of myself as well as my husband

Image
উনিশশো তিয়াত্তরে প্রকাশিত নিচের টেস্টটি মূলত মহিলাদের জন্য। তবে যেহেতু এটা দু ' হাজার ষোলো , তাই অবান্তরের পুরুষ পাঠকরাও   টেস্টে অংশ নিতে পারেন। আমার টেস্টের রেজাল্ট পোস্টের নামেই ছেপে দিয়েছি, আপনাদের রেজাল্ট জানার জন্য বসে রইলাম।  উৎস

সাপ্তাহিকী

Image
The most frequent question writers are asked is some variant on, “Do you write every day, or do you just wait for inspiration to strike?” I want to snarl, “Of course I write every day, what do you think I am, some kind of hobbyist?” But I understand the question is really about the central mystery – what is inspiration? Eternal vigilance, in my opinion. Being on the watch for your material, day or night, asleep or awake.                                                                                                              ---Hilary Mantel কোনও বই অনুবাদের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচিত হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, কিন্তু এই কারণটা?    এই সমস্যাটার কথা প্রথম আমার মা আমাকে বলেছিলেন। বলেছিলেন, তিনি নাকি পুজো প্যান্ডেলের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় অনেক চেষ্টা করেছেন কানের পর্দা ফাটানো ‘মহুয়ায় জমেছে আজ মৌ গো’-র সঙ্গে তাল না মিলিয়ে হাঁটতে, কিছুতেই পারেননি। স্পিড বাড়িয়েছেন, কমিয়েছেন, সম্পূর্ণ থেমে গিয়ে আবার হাঁটতে শুরু করেছেন, লম্বা স্টেপের পর বেঁটে স্টেপ ফেলেছেন, সব প্

একেনবাবুর চিঠি

ঠিক একেনবাবু নয়, একেনবাবুর স্রষ্টা সুজন দাশগুপ্ত আমাকে চিঠি লিখেছেন। চিঠিটা উনি একেন্দ্র সেন পোস্টের কমেন্ট হিসেবেই প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগে সেটা হয়ে ওঠেনি। তাই উনি আমাকে ইমেল করেছেন। আমি এটাকে ওই পোস্টের কমেন্ট হিসেবে জুড়ে দিতে পারতাম, কিন্তু তাতে যদি অবান্তরের কোনও বন্ধুর চোখ এড়িয়ে যায়, তাই আমি চিঠিটাকে আলাদা পোস্ট হিসেবে ছাপালাম। ***** কুন্তলা , একজন এক পরিচিতের কাছে খোঁজ পেয়ে আপনার ব্লগটা আমি পড়লাম। একেনবাবু প্রসঙ্গে সুজন দাশগুপ্তের যে সমালোচনা আপনি করেছেন , আমি নিজে সুজন দাশগুপ্ত হয়ে তার সঙ্গে সহমত। আমার গল্প/উপন্যাসের পটভূমি দুয়েকটা বই ছাড়া সবই নিউ ইয়র্ক ; প্রায় পঞ্চাশ বছর এদেশে কাটিয়ে এই জায়গাটাকেই আমি চিনি। কিন্তু পাত্রপাত্রীরা সব ভারতীয় কেন ?  নিউ ইয়র্কের সায়েবরাও তো খুন-খারাবি করে , কেন একেনবাবুকে ' আনফিশিয়ালি ' সে সব রহস্য উদ্ঘাটনে কাজে লাগাই নি ? তার সদুত্তর আমার নেই। তবে এখন যখন সে প্রশ্ন উঠেছে , পরে যদি একেনবাবুর দুয়েকটা কাহিনী লিখি , কথা দিলাম সেটা মনে রাখব। আপনার অন্য সমালোচনা , যে নিউ ইয়র্কের অস্থির এনার্জির (গতিময়তা) কোনও

New York Times By the Book tag

Image
নিউ ইয়র্ক টাইমস্‌-এর বুক রিভিউ কলামের একটা নিয়মিত ফিচার হচ্ছে লেখকের সাক্ষাৎকার। এই সাক্ষাৎকারের অংশ হিসেবে লেখককে কয়েকটা প্রশ্ন করা হয়। সেই সব প্রশ্নের মধ্য থেকে বেছে বুকটিউবার  মারি বার্গ এই নিচের প্রশ্নপত্রটি বানিয়েছেন। আমি তার উত্তর দিলাম। আপনারাও ইচ্ছে করলে দিতে পারেন।  ***** 1. What book is on your night stand now? আমার নাইটস্ট্যান্ড নেই, একখানা টেবিল আছে। সেটার ওপর আমার কারেন্টলি রিডিং বইগুলো থাকে। আপাতত সেখানে জে. জি. ফ্যারেল-এর 'সিজ অফ কৃষ্ণপুর' আর রানী চন্দর 'পথে ঘাটে' দেখতে পাচ্ছি।  2. What was the last truly great book you read? এই প্রশ্নের উত্তরটা দেওয়া খুব সোজা, কারণ লাস্ট যে বইটা আমি পড়লাম সেটা এমা ডনাহিউ-র 'রুম', এবং আমার মতে বইখানা সত্যিই গ্রেট। এ বিষয়ে আর বলছি না, এপ্রিল মাসের বইয়ের পোস্টে বলব।  3. If you could meet any writer – dead or alive – who would it be? And what would you want to know? এই প্রশ্নটা মাস ছয়েক আগে করলে আমি হয় বলতাম আগাথা ক্রিস্টি নয় সত্যজিৎ রায়, কিন্তু এখন বলছি কারও সঙ্গে দেখা করতে চাই

সাপ্তাহিকী

রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুতে দেশবিদেশের কত - না জনের কতরকমের প্রতিক্রিয়ার খবর জানি আমরা। কিন্তু সবই কি আর জানি ? আমারও একটা প্রতিক্রিয়া হয়েছিল তখন সেই ন ’ বছর বয়সে , আর আজ ভেবে দেখলে সন্দেহ হয় যে সেটাকে বেশ মৌলিক বলাই চলে , হয়তো একেবারে অদ্বিতীয়।     ইস্কুলে তখনও ভর্তি হইনি , তবু স্কুলপাঠ্য একখানা বই হাতে নিয়ে বসে আছি জানলার ধারে। সবে শুরু হয়েছে দুপুর। বাড়িতে একটা থমথমে ভাব , কেননা পাশের ঘরে বাবা কয়েকদিন ধরে শুয়ে , জ্বর হয়েছে। মেঘ - মেঘ দিনটা , কখনো মেঘ আসে কখনো কেটে যায় , আর মাঝে মাঝে বইয়ের পাতা ওলটাই আমি। এমন সময়ে সমবয়সী এক বন্ধু এসে দাঁড়ায় জানলার বাইরে , পেয়ারাগাছের পাশে। জিজ্ঞেস করে আমাকেঃ ‘ জানিস তো খবর ?’ ‘ কী খবর ?’ রবীন্দ্রনাথ আর নেই। ইনস্টিটিউটের রেডিয়োতে বলেছে। ‘  শুনে চুপ করে থাকি অল্পক্ষণ। আর তারপর ক্ষিপ্র হাতে পাতা উলটিয়ে বার করি বইয়ের সেই জায়গাটা যেখানে রবীন্দ্রনাথের একটা কবিতা আছে। সামনেই ছিল দোয়াত। কলমটা তাতে ডুবিয়ে নিয়ে , বইটির মুদ্রিত রব

কুইজঃ আমি কে? (উত্তর প্রকাশিত)

কিন্তু তার আগে শুভ নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা , ভালোবাসা , কোলাকুলি , করমর্দন , প্রণাম , আশীর্বাদ। আপনার নতুন বছর ভীষণ ভীষণ ভালো কাটুক , সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হোক , শোকরোগতাপ আপনাকে এবং আপনার কাছের মানুষদের স্পর্শ করতে না পারুক , এই আমার অন্তরের চাওয়া। কী করলেন আজ ? নতুন জামা পরলেন কি ? আজ না পরলে উইকএন্ডে অবশ্য পরবেন মনে করে। কিছু রেসলিউশন , নাকি সংকল্প বলা উচিত , নিলেন নাকি ? আমি একটা নিয়েছি। আপনি যদি আপনারটা বলেন তাহলে আমি আমারটা বলব।   ***** এবার কুইজ। বাংলা নববর্ষে বাঙালিদের ছাড়া আর কাউকে নিয়ে কুইজ খেলা ভালো দেখায় না। তাই নিচে ছ’জন বাঙালির পরিচয় দেওয়া হল , যারা বাকি বাঙালিদের থেকে অন্যরকম। আপনাদের তাঁদের নাম বলতে হবে। উত্তর বেরোবে শুক্রবার , দোসরা বৈশাখ , রাত দশটায়। ততক্ষণ কমেন্ট পাহারা দেব আমি। ( নববর্ষের সংকল্পসংক্রান্ত মন্তব্যের জন্য কোনও পাহারা থাকবে না বলাই বাহুল্য। ) অল দ্য বেস্ট।  ১। হোগলা গ্রামে জন্ম। বাবা গরিব চাষি ছিলেন , পড়ানোর ক্ষমতা