Posts

Showing posts from January, 2017

নতুন পোয়্যারো

Image
*কোনও স্পয়লার নেই। উৎস গুগল ইমেজেস নতুন হারক্যুল পোয়্যারোর বই বেরোতে শুরু করেছে দু’হাজার চোদ্দ থেকে। আমি কেন এতদিন পড়িনি তার মুখ্য উত্তর, ভয়। কিন্তু বছরের শুরুতে হঠাৎ একদিন চ্যাটবাক্সের ওপার থেকে প্রশ্ন এল, পড়েছ? আমি বললাম, না। চ্যাটবাক্স বলল, পড়বে নাকি? কিন্ডলে দারুণ সস্তা। বল তো অর্ডার করে দিই। সাহসী হওয়া আমার এ বছরের রেজলিউশন, লিখে দিলাম, দাও দাও।  নতুন পোয়্যারো লিখেছেন সোফি হানা, একজন ইংরেজ লেখক ও কবি। নতুন পোয়্যারো লেখার আগে তাঁর নিজের আটখানা ক্রাইম নভেল ছাপা হয়ে গিয়েছিল। আগাথা ক্রিস্টি এস্টেট-এর বরাতে পোয়্যারোর ‘কনটিনিউয়েশন’ উপন্যাস লিখতে শুরু করেন সোফি হানা। পূর্ববর্তী লেখকের তৈরি চরিত্র বা ঘটনাপ্রবাহ অবলম্বন করে যখন পরবর্তী লেখক নতুন করে লেখেন তখন সেটা হয় কনটিনিউয়েশন লেখা। আমার পড়া বাংলায় যে কনটিনিউয়েশন লেখার উদাহরণ এই মুহূর্তে মনে আসছে তা হল তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কাজল’। গোয়েন্দা গল্পে এ ধরণের কনটিনিউয়েশনের উদাহরণ প্রচুর। জেমস বন্ড, শার্লক হোমস সবাইকে নিয়েই বিস্তর গল্প এখনও লেখা হয়ে চলেছে। কনটিনিউয়েশন রচনার প্রতি সকলের মনোভাব সমান নয়। কেউ বলেন, হোক না। এই ক

এ সপ্তাহের গান

Image

আমার প্রতিবাদের ভাষা

Image
উৎস

এ মাসের বই/ ডিসেম্বর ২০১৬ঃ বইয়ের বোঝা

Image
এই পোস্টটা লিখতে যে এত দেরি হল সে অপরাধ পুরোটা আমার নয়। আমি লিখতে শুরু করেছিলাম অনেকদিন আগেই। ‘ডিসেম্বর মাসের বই’ নামের একটা ফাইল অবান্তর-এর ‘ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস’ ফোল্ডারে রাখাও ছিল। আমি নিজে রেখেছিলাম। গোটা ডিসেম্বর মাস ধরে যতবার ওই ফোল্ডারে ঢুকছিলাম, চোখে পড়ছিল। জানুয়ারি মাসের শুরুতে একদিন দেখলাম ফাইলটা নেই। আমি বেশি মাথা ঘামালাম না। সাতদিন বাদে যখন জানুয়ারি মাসের বইয়ের ফাইল খুলে ফোল্ডারে সেভ করা হল তখন আরেকবার ডিসেম্বরের হারানো পোস্টের কথা মনে পড়ল। এবারে আমি আরেকটু সময় নিয়ে (দু’মিনিট) খুঁজলাম এবং আবারও খুঁজে না পেয়ে বেরিয়ে এলাম। ভাবলাম, কোথায় আর যাবে। উবে তো আর যায়নি। আছে নিশ্চয় এখানেই আমার চোখে পড়ছে না। জানুয়ারির অর্ধেক যখন চলে গেল তখন আমার টনক নড়ল। আমি নির্দিষ্ট ফোল্ডারে ঢুকে ডিসেম্বর মাসের বইয়ের পোস্ট খুঁজলাম,আঁতিপাঁতি করে, পেলাম না। সে ফোল্ডার থেকে বেরিয়ে এসে অন্য ফোল্ডারে ঢুকলাম, খুঁজলাম, সেখানেও নেই। পোস্টটা সত্যিই উবে গেছে। কাজেই আবার নতুন করে লিখতে হচ্ছে। ভাগ্যিস ডিসেম্বর মাসে বেশি বই পড়িনি (তার মধ্যে একটা আবার নভেম্বর মাসের)। যে দুটো বইয়ের কথা লিখতে যাচ্ছি তাদের

এ সপ্তাহের গান

Image

ভালো ডাক্তার

আমার আর অর্চিষ্মানের সারাদিনের সবথেকে ব্যস্ত সময় কোনটা? অন্য কাউকে আন্দাজ করতে বললে তারা হয়তো বলবে, সকাল সাতটা থেকে আটটার মধ্যের সময়টাই হবে। অফিসে যাওয়ার আগের তাড়াটাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তাড়া। যারা কোনওদিন অফিসে যায়নি তারাও এ তাড়ায় ভুগেছে। যেমন আমার ঠাকুমা। অফিস যাওয়া নিয়ে কেউ মাসল ফোলাতে এলে ঠাকুমা বলতেন, আমরা অফিস যাই নাই তো কী হইসে, আমরা অফিসের ভাত দিসি। যে তাড়া শুধু ব্যক্তির নয়, গোটা বাড়ির গায়ে যার আঁচ লাগে, তার থেকে বড় তাড়া কি হতে পারে কিছু?  হতে পারে। আমরাই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। সকালের ওই সময়টা আমাদের দেখলেই সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। চায়ে চুমুক দিচ্ছি যেন বিলম্বিত ধামার, আঁকশি দিয়ে মগজের কোণাঘুঁজি থেকে টেনে এনে কথা বলছি তো বলছিই। কবে কোথায় কী হয়েছিল, স্কুলের স্পোর্টসে কবে ব্যান্ড বাজিয়েছিলাম, সেই বিট মনে করে বিস্কুটের প্যাকেটের ওপর বাজিয়ে শোনাচ্ছি। যা এখনও হয়নি, হবে, ছাব্বিশে জানুয়ারির ছুটিতে বেড়াতে যাব, কত মজা হবে, সেই নিয়ে লেবু কচলাচ্ছি। কথা না থাকলে টিভি আছে। কিছু না পেলে নাপতোল। ন’শো নিরানব্বই টাকার জুসারনিষ্পেষিত কমলার রসে চুমুক দিয়ে ঘোষকের শিহরণ দেখছি হাঁ করে।  এ সবই আস

সাপ্তাহিকী

Image
Don't you understand that we need to be childish in order to understand? Only a child sees things with perfect clarity, because it hasn't developed all those filters which prevent us from seeing things that we don't expect to see.                                  —Douglas Adams, Dirk Gentley’s Holistic Detective Agency দেশের খবর বিদেশের কাগজে/সাইটে পড়তে সত্যিকারের গ্লানি হয়। তাও যখন খবরটা এমন ভালো। পৃথিবীর সবথেকে পুরোনো ডোবার বয়স কত বলুন দেখি? মোটে দু’মিলিয়ন।  বেশিরভাগ মহিলাই কি বাচ্চা বাঁদিকের কোলে নেন? কেন? নিলামে কত অদ্ভুত জিনিস ওঠে। একেবারে বদলে দিয়েছে বলাটা বাড়াবাড়ি, তবে কোন অভ্যেস আমার জীবনে বলার মতো প্রভাব ফেলেছে বললে আমি বলব প্ল্যানার ব্যবহার করার অভ্যেস। সেই একই প্রশ্নের উত্তরে আরও অনেকে অনেক কিছু বলেছেন, যেমন বারোমাস ঠাণ্ডা জলে স্নান করা, চেঁচিয়ে কথা বলা বন্ধ করা। আমার পড়তে ইন্টারেস্টিং লেগেছে, আপনারও লাগে কিনা দেখতে পারেন। এ মাসের গান।

লিটল সাইগন, হজ খাস মার্কেট

Image
উবার-এর সহযাত্রীদের টাইপসংক্রান্ত পোস্ট লেখার সময় একখানা টাইপ আমার মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। এঁরা হচ্ছেন সেই টাইপ যাঁরা কথা না বলে থাকতে পারেন না। ড্রাইভারের সঙ্গে দরকারি কথোপকথন শেষ হওয়া মাত্র ব্যাগ থেকে ফোন বার করে লোক শিকারে বেরোন। অনেক সময় উল্টোদিকের লোকটি আগ্রহীও থাকেন না, তা এদিকের “অওর বাতাও”, “অওর বাতাও”-এর ঘনঘটা দেখেই বোঝা যায়। কিন্তু কখনও কখনও মণিকাঞ্চনযোগ ঘটে, যেমন সেদিন ঘটেছিল, আর সেই যোগে আমার মতো উলুখাগড়ার লাভ হয়।  সেদিন তিনটে ফোন “অওর বাতাও”-এ শেষ হওয়ার পর চতুর্থ ফোনে আমার সহযাত্রীর শিকে ছিঁড়ল। উল্টোদিকের লোকটিও সঙ্গের জন্য হন্যে হয়ে ছিলেন, তিনি একেবারে ডিনারের প্রস্তাব দিয়ে বসলেন। ইনি উত্তেজিত হয়ে বললেন, “শিওর শিওর, কাহাঁ পে? হ্যাভ ইউ বিন টু লিটল সাইগন? নো? লেট’স গো টু লিটল সাইগন দেন।” সে রাতের মতো একা ডিনার খাওয়ার সম্ভাবনা এড়াতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে সহযাত্রী সিটে হেলান দিয়ে বসলেন। আমার গন্তব্য এসে গেল। আমি নেমে বাড়ি চলে এলাম, লিটল সাইগন নামটা মগজের ভেতর জেগে রইল।  নামটা একেবারে অচেনা নয়। অনেকদিন আগে শুনেছিলাম, ভুলেও গিয়েছিলাম। কেন কে জানে। ভিয়ে

Three stars only

Image
উৎস

উৎসর্গ

গত বছর অক্টোবরের শেষে বইকথা ওয়েবপত্রিকায় আমার এই ছোটগল্পটা বেরিয়েছিল। সম্পাদকের অনুমতি নিয়ে অবান্তরে ছাপছি। *****  শেষ দাঁড়িটা টাইপ করে শিরদাঁড়াকে নমনীয় হতে অনুমতি দিলেন লেখক। চোখ বুজলেন। পা দু’খানা হাঁটু থেকে সোজা করে টেবিলের তলায় ছড়িয়ে দিলেন যতক্ষণ না আঙুলের ডগা দেওয়াল ছোঁয়। দু’কাঁধ ঠেলে পেছনে নিয়ে গেলেন যতখানি সম্ভব। দশ আঙুল একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে কানের পাশ দিয়ে তুলে মাথার ওপর তুলে ধরলেন।  তাঁর গোটা শরীরটা এখন একটা স্ট্রেট লাইন। হাড়ের জোড়ায় জোড়ায়, তন্তুতে তন্তুতে একটা মোক্ষম টান। দীর্ঘ প্রশ্বাসে বুকের ভেতর বাতাস পুরে নিয়ে দম বন্ধ করে খুব ধীরে দশ গুনলেন লেখক। তারপর নিঃশ্বাস ছেড়ে দিলেন। কেঠো চেয়ারের ওপর ভেজা ন্যাতার মতো এলিয়ে পড়ল তাঁর শরীর। দশ মাস পর এই প্রথম যেন তিনি প্রথমবার সম্পূর্ণ বিশ্রাম বোধ করছেন। দশ মাসের হিসেবটা মনে পড়তেই লেখকের ভুরু সামান্য কুঁচকে গেল। গুনতে নিশ্চয় ভুল হচ্ছে তাঁর, মোটে দশ মাস? চোখ খুললেন তিনি। সামনের দেওয়ালের গায়ে একখানা ক্যালেন্ডার। প্লাস্টিকের কালো রঙের স্প্রিং থেকে ঝুলন্ত চৌকো মোটা পাতা, পাতার ওপর মাসের নাম আর বছরের তলায় খোপ কাটা। বার নেই,শন

বার্ষিক জমাখরচ ৩/৪ঃ দু'হাজার ষোলোর বই, দু'হাজার সতেরোর বইয়ের রেজলিউশন

Image
এ পোস্ট লেখার কথা ছিল ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে। সে জায়গায় জানুয়ারির প্রথম। ক্ষমা চাইছি।  ***** গুনতি প্রতি বছরই শুনি আগের বছর বেশি শীত পড়েছিল। কাজেই চোদ্দ বছর আগে কেমন শীত পড়েছিল বুঝে দেখুন। তার ওপর আমরা হাঁটছিলাম ইস্ট গেটের দিকটায়। চারদিক ফাঁকাফাঁকা, নিস্তব্ধ। ময়ূরগুলো ক্যাঁ ক্যাঁ করছিল মাঝে মাঝে। যে বন্ধুর সঙ্গে ঘুরছিলাম তার মানুষ বিচার করার মাপকাঠি ছিল বই। কে কটা বই পড়েছে। মারাঠি হলে কটা মারাঠি বই, পাঞ্জাবি হলে কটা পাঞ্জাবি বই, বাঙালি হলে কটা বাংলা বই। ইস্ট গেট থেকে ফেরার পথে বন্ধু বলল, আজ দুপুরে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটা উপন্যাস শেষ করলাম।  আমি বললাম, ও। কেমন লাগল? উত্তর না দিয়ে সে বলল, এটা নিয়ে একশো আটাত্তরটা হল। তোর ক’টা হয়েছে? আমি সত্যি কথাটাই বললাম। কোনও আইডিয়া নেই। কিন্তু কিছু কিছু পরিস্থিতিতে সত্যি উত্তর ঠিক উত্তর নয়। বন্ধুর কোঁচকানো ভুরু দেখে বুঝলাম ওটাও সেরকমই একটা পরিস্থিতি। তাড়াতাড়ি শুধরে নিয়ে বললাম, তবে একশো আটাত্তরের অনেক কম।  সেদিন বলতে পারিনি, কিন্তু আজ বলতে পারব। গোটা জীবনে না হলেও গত বছর আমি ক’টা বই পড়েছি। বাংলা, ইংরিজি, নভেল, ছোটগ

সাপ্তাহিকী

Image
সুন্দরবনে চোখপরীক্ষা চলছে। ছবি তুলেছেন  Brent Stirton. কৃতজ্ঞতাস্বীকার National Geographic.  কেউ কেউ বয়স হলে ঝিমিয়ে পড়েন, কেউ কেউ থাকেন তাজা। এই দ্বিতীয় দলের বিজ্ঞানীরা নাম রেখেছেন সুপারএজার । সুপারএজার হতে গেলে কী করতে হবে? " make a New Year’s resolution to take up a challenging activity. Learn a foreign language. Take an online college course. Master a musical instrument. Work that brain. Make it a year to remember." (নিউ ইয়র্ক টাইমস) Brent Stirton কথায় কথায় সবাই বলে তারা নাকি ‘এক্সিসটেনশিয়াল ক্রাইসিস’ এ ভুগছে। ক্রাইসিসটা আসলে কীসের? সায়েন্টিস্টদের একসময় বলা হত ‘ম্যান অফ সায়েন্স’। কারণ আন্দাজ করা খুবই সোজা। কিন্তু একসময় ওই শব্দবন্ধে আর কুলিয়ে ওঠা গেল না, নতুন শব্দের আমদানি করতে হল। সে আমদানির গল্প পড়তে হলে ক্লিক করুন।  সপ্তাহে একটা করে-র চমৎকার রেকর্ডটা অ্যামেরিকা মেন্টেন করেছে। পর পর দু’বছর।  রিসাইক্লিং-এর চোটে সুইডেনের আবর্জনা শেষ। আমাদের এখান থেকে কিছু রপ্তানি করা যায় না? ওরা টাকা দিতে রাজি।  কম পয়সা, কম জাঁকজমকেও যে ভালো কাজ হতে পারে সে

লেপকম্বল

ফেরার সময় মা কেক দিলেন, পুরীর খাজা দিলেন, গাছ থেকে একটা পাকা পেঁপে নেমেছে সেটা দেওয়ার চেষ্টা করলেন, তারপর চোরচোর মুখে একখানা সুটকেস নিয়ে এলেন।  এটা অন্তত নিয়ে যা সোনা।  মায়ের পক্ষেও হঠাৎ অকারণে একখানা সুটকেস গছাতে চাওয়া অস্বাভাবিক। আমি প্রথমে চোখ কপালে তুললাম। তারপর সন্দেহ হতে সুটকেস হাতে তুলে দেখলাম ভেতরে মালপত্র আছে। খুলতেই একখানা চমৎকার সাদাবেগুনি ছোট ছোট ফুলছাপ ওয়াড় পরানো নতুন লেপ বেরিয়ে পড়ল।  আন্দাজ করা উচিত ছিল। কারণ আমি জানি বাড়িতে ক’দিন আগে একটা লেপ বানানো হয়েছে। মায়ের জন্য। কাজেই আমারও যে একটা লেপ জুটবে সেটা বলা বাহুল্য। ধরা যাক আমি মাংসভাত খাচ্ছি, আর মা খাচ্ছেন দুধভাত। আমি মহানন্দে খাচ্ছি, মাকে সাধছিটাধছি না। খানিকক্ষণ বাদে মা বলবেন, সোনা, দুধভাত খাবি নাকি একটু? খুব ভালো খেতে লাগছে। ভালো কিছু জিনিস মা একা একা ভোগ করবেন, আমাকে বাদ দিয়ে, এ যেন শাস্ত্রে বারণ। পয়লা আষাঢ় খবরের কাগজে মেঘের ছবি ছাপা হলে মা কেটে রাখেন। একসময় পোস্টঅফিসে গিয়ে পোস্ট করতেন, বকা খেয়ে থেমেছেন। এখন বাড়িতে ফাইল করে রাখেন, আমি গিয়ে দেখব বলে। এমন ভালো জিনিস উনি দেখলেন আর আমি মিস করে গেলাম, চলব