Posts

Showing posts from February, 2017

মেহনতের চানা আর দেওয়াল আলমারি

আজকাল দিল্লিতে যে রোদ্দুরটা ওঠে, সেটা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। চারদিকে সবাই কাশছে খকখক, সকলেরই গলা স্বাভাবিকের থেকে দু’স্কেল নেমে গেছে, তুলসী ফ্লেভারড গ্রিন টি-র গন্ধে প্যান্ট্রি ভুরভুর। হাওয়ার থেকেও খারাপ হচ্ছে রোদ্দুরখানা। কাজ করতে করতে একবার স্ক্রিনবিচ্যুত হয়ে চোখ জানালায় পড়লেই কনসেনট্রেশনের বারোটা, খালি মনে হয় যাই একটুখানি গা সেঁকে আসি। এমনি তো ঘুরে বেড়ানো যায় না, কে কোথায় বসের কান ভাঙাবে, কোনও একটা কাজের ছুতো করে উঠতে হয়। তাই আমি আজকাল অফিসে চা খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছি। দিনের মধ্যে চারবার করে আন্টিজির দোকানে ভিজিট দিই। কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সেদিন আন্টিজির একটিও খদ্দের ছিল না। জলের বাসনটা খালি উনুনে চাপিয়ে রেখে হাঁটু খুঁটির মতো জাপটে শরীরের ভার পেছনে হেলিয়ে আন্টিজি বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, আংকলজির রুটির কারখানার সামনে দু’চারজন গজল্লা করছিল, মাঝে মাঝে তাদের আলোচনায় ফোড়ন কাটছিলেন। এককোণে শিখর আর রজনীগন্ধা আর আলট্রা মাইল্ড আর মার্লবরোর জাম্বো থলির পেছনে আন্টিজির বৌমা চিবুক পর্যন্ত ঘোমটা টেনে বসেছিলেন, বৌমার ডানদিকে সবুজ রঙের ছোটছোট পাতায় ভরা একগাদা প্রশাখা, বেশ শক্তপোক্ত ঝাড়ের মতো

হলে গিয়ে

‘মাইন্ড সিজ হোয়াট ইট ওয়ান্টস টু সি’ হতে পারে, কিন্তু সত্যি সত্যিই আমার আর অর্চিষ্মানের মধ্যে মিল খুব বেশি। অমিলও যে নেই তা নয়। প্রচুর আছে। একজন বেগুন বলতে অজ্ঞান, অন্যজন দুচোখে দেখতে পারে না, একজন সারাদিন এন ডি টি ভি আর নিউজলন্ড্রি, অন্যজনের ব্রেকিং আর নিউজ শব্দদুটো পরপর শুনলে প্যালপিটেশন হয়। একজনের আনুগত্য আজীবন, অন্যজন মনে করে কবে ভালো শিল্প ফলিয়েছিলাম তা একজনের বাকি জীবন বাজে বকার লাইসেন্স হতে পারে না।  কিন্তু আমার এও মনে হয় যে এই অমিলগুলো খুব একটা ম্যাটার করে না। দৈনিক মেনু থেকে বেগুন বাদ পড়লেও পুষ্টি কিছু টের পাওয়ার মতো কম পড়ে না, টিভি দেখার কমন সময়টুকুতে সংগীত বাংলা কিংবা সি আই ডি দেখলে জেনারেল নলেজে তেমন কিছু তফাৎ হয় না। সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কত বিষ উগরোলো তা নিয়ে চা খেতে খেতে টুকটাক তর্ক চলতে পারে, তার বেশি সম্পর্কে আঁচড় পড়ে না।   কিন্তু যে বিষয়গুলোতে আঁচড় পড়লেও পড়তে পারত (ইন ফ্যাক্ট পড়তই, আমার বিশ্বাস) সেগুলোতে আমাদের প্রায় আনক্যানি মিল। মাসমাইনের কতখানি কোনদিকে যাবে, রাতে ডালভাততরকারির ফাঁদে পড়তে হবে নাকি ম্যাগিই যথেষ্ট,  জিনসের ছেঁদাটা পাঞ্জাবীর আড়ালে না হয় থাকল আর

যেটা মনে রাখার

Image

বার্ষিক জমাখরচ ৪/৪ঃ গত এক বছরের প্ল্যানিং থেকে আমি যা যা জেনেছি

Image
আমি যদি কোনওদিন আত্মজীবনী লিখতে বসি (অবান্তরও একরকমের চলমান আত্মজীবনীই বটে, কিন্তু আমি বলছি রেসপেকটেবল আত্মজীবনীর কথা) তাহলে তার শুরুর লাইনটা এরকম হতে পারে।  আই কাম ফ্রম আ লং লাইন অফ প্ল্যানারস।  আমার পূর্বপুরুষের সকলেই প্ল্যানিং পছন্দ করতেন। আমার ঠাকুরদার বাবা, ঈশ্বর অক্ষয় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তস্যপুত্র ঈশ্বর জগবন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্ল্যানিং-এর নমুনা আমি দেখিনি, কিন্তু শুকনো কাগুজে প্রমাণের থেকে ঢের বেশি বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে রক্তমাংসের, চোখের সামনে হেঁটে চলে বেড়ানো প্রমাণ। জগবন্ধুবাবুর পুত্রের দাবিমতো যদি তিনি প্ল্যানিং করা বাবার থেকেই শিখে থাকেন,  জগবন্ধুর প্ল্যানিং-এর পক্ষে তার থেকে ভালো সার্টিফিকেট আর হতে পারে না।   আমার বাবার মতো প্ল্যানার আমি দেখিনি। সকালের রসুন থেকে শুরু করে রাতে দুধের গ্লাস, বাবার প্ল্যান করা আছে। আজ সকালে বাবা ব্যাংকের লাইনে দাঁড়াবেন এবং তিন মাস পর বিজাপুরের গোলগম্বুজের তলায়, প্ল্যান করা আছে। জন্মে থেকে দেখছি, বিশ্বকাপ ফুটবলের সবক’টা গ্রুপ, সবক’টা ধাপ, সবক’টা গ্রুপ, সবক’টা দল বাবা ছক করে রাখেন। (সাতানব্বই সালের আগে পর্যন্ত ডায়রিতে, তারপর থেকে এক

Shopping

People swarmed through the boutiques and gourmet shops. Organ music rose from the great court. We smelled chocolate, popcorn, cologne; we smelled rugs and furs, hanging salamis and deathly vinyl. My family gloried in the event. I was one of them, shopping, at last. They gave me advice, badgered clerks on my behalf. I kept seeing myself unexpectedly in some reflecting surface. We moved from store to store, rejecting not only items in certain departments, not only entire departments but whole stores, mammoth corporations that did not strike our fancy for one reason or another. There was always another store, three floors, eight floors, basement full of cheese graters and paring knives. I shopped with reckless abandon. I shopped for immediate needs and distant contingencies. I shopped for its own sake, looking and touching, inspecting merchandise I had no intention of buying, then buying it. I sent clerks into their fabric books and pattern books to search for elusive designs. I began

রুস্তম'স ক্যাফে অ্যান্ড বেকারি, খিড়কি গাঁও

Image
সাকেতের শপিং মলত্রয়ের উল্টোদিকে খিড়কি এক্সটেনশন, তার অগোছালো, ধুলোমাখা গলির ভেতর 'খোঁজ ইন্টারন্যাশনাল আর্টিস্টস’ অ্যাসোসিয়েশন'-এর ধপধপে সাদা শৈল্পিক বাড়ির দেড়তলায় রুস্তম’স ক্যাফে অ্যান্ড বেকারি। পারসি ক্যাফের মেনুতে মাসকা পাও, বাটাটা পোহা, ভিন্দালুর দাপট। শিল্পীদের চা খাওয়ার জায়গা বলে কথা। দেওয়ালে ভিন্টেজ কাপপ্লেট, ঝাপসা ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট ছবির গ্যালারি ওয়াল। লেসের পর্দা চুঁইয়ে আসা আলো চারদিকের সাদা দেওয়ালে ঠিকরে অপূর্ব মায়া। গোল হাতল ওয়ালা কাঠের আরামকেদারার উত্তল হাতল, ফ্রিল দেওয়া কুশন। দেখলেই শখ হয় আহা আমার বাড়িতে যদি একটা থাকত। কাউন্টারের ওপর রাখা কুরুশের জামা পড়া প্রকাণ্ড কাচের বয়ামে মেলোডি চকোলেটি আর কিসমি টফির ভাণ্ডার। দেখলেই লোভ হয়, আহা আমার পড়ার টেবিলে যদি এ রকম থাকত।   রুস্তম’স-এ এই নিয়ে আমাদের দ্বিতীয়বার। প্রথমবার খেয়েছিলাম কান্দা বাটাটা পোহা পাও দিয়ে মাটন ভিন্দালু। আর রুস্তম’স-এর বিখ্যাত উইন্টার রেমেডি অর্থাৎ মধু, লেবু, আদা দিয়ে চা। আর শেষে চকোলেট কেক। সে সবের ছবি নেই। এবারের আছে। এবারে আমরা খেলাম পারসি চা। লেমনগ্রাস আর পুদিনা দিয়ে ফোটানো পারস

খালি বাড়ি

মূল গল্পঃ House of Spirits লেখকঃ Lucy Wood ***** শেষের জন না বলেকয়েই চলে গেল। যতরকমের যাওয়া হয়, তার মধ্যে এই রকম যাওয়াটা আমাদের সবথেকে বেশি অপছন্দের। কিছু না বলে চলে যাওয়া। চলে যাওয়ার পর যে শূন্যতা, যে নৈঃশব্দ্য তৈরি হবে তার জন্য প্রস্তুত হওয়ার কোনও সুযোগ না দিয়ে চলে যাওয়া। যদিও বাড়ি কখনও শূন্য হয় না। নীরবও নয়। কলের মুখ থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল পড়তেই থাকে। টুপ টুপ টুপ। দেওয়ালে ফোটোর পেছনে টিক টিকি পোকা তাড়া করে খসখস আওয়াজ তোলে। আর ধুলো। দরজার পাল্লার তলা দিয়ে, জানালার বন্ধ পাল্লার ফাঁক দিয়ে, ঘুলঘুলি দিয়ে সূর্যরশ্মির ব্রিজ পেরিয়ে এসে বাড়ির দখল নেয়। মেঝে, টেবিল, টেবিলের ওপর ফুলদানিতে সাজানো প্লাস্টিক ফুলের পাপড়ি। আমরা দেখেও সে ধুলো পরিষ্কার করি না কেন? কারণ ওটা আমাদের কাজ না। কলের মুখ টি পে বন্ধ করাও না, কিংবা শুকনো ডিমের খোলা বা ময়ুরপেখম সাজানোর  টোটকা ব্যবহার করে   টিকটিকি তাড়ানোও না। যাদের কাজ, তাদের শেষের জন না বলেকয়ে চলে গেল। অনেকদিন ধরেই যাবে যাবে করছিল। রাতে পাশের বাড়ির টিভি থেমে গেলে লোকটার শ্বাসের শব্দ স্পষ্ট শোনা যেত। যেন ফুটন্ত লাভা। বিছানার পাশে কাঠের টুলের ওপর র

Fascinated by Disasters

I said to him, "Why is it, Alfonse, that decent, well-meaning and responsible people find themselves intrigued by catastrophe when they see it on television?"  I told him about the recent evening of lava, mud and raging water that the children and I had found so entertaining.  We wanted more, more.  "It's natural, it's normal," he said, with a reassuring nod. "It happens to everybody."  "Why?"  "Because we're suffering from brain fade. We need an occasional catastrophe to break up the incessant bombardment of information."  "It's obvious," Lasher said. A slight man with a taut face and slicked-back hair.  "The flow is constant," Alfonse said. "Words, pictures, numbers, facts, graphics, statistics, specks, waves, particles, motes. Only a catastrophe gets our attention. We want them, we need them, we depend on them. As long as they happen somewhere else. This is where California co

সময় চাই, সময়?

আজ আমার ছুটি। দারুণ ভালো লাগছে। পড়ে পাওয়া ছুটি বলে আরও বেশি ভালো লাগছে। আর যখন মনে পড়ছে, এই ছুটির বিকল্প ছিল সবাই মিলে বাসে চেপে গিয়ে মহার্ঘ ফার্মের অ্যাসর্টমেন্ট অফ স্টাফড পরাঠা’র ব্রেকফাস্ট খেয়ে বুলক কার্ট রাইড অ্যান্ড আদার ফান অ্যাকটিভিটিস-এ সারাদিন কাটিয়ে সন্ধ্যেবেলা রিসর্টের বারান্দায় নিজের নিজের সংস্কৃতিচর্চা (শায়েরি, গজল) ফলিয়ে ফেরৎ আসা, তখন ডিগবাজি খেতে ইচ্ছে করছে।  স্টাফড পরাঠার বদলে এখন আমার কপালে ছোটবেলার স্টিলের ফুলকাটা বাটিতে দুধখই। যেন মরুভূমির ফুটন্ত বালিতে ফেলে কাঁটাওয়ালা চাবুকের মারের বদলে নন্দনকাননে পারিজাতের ছায়ায় নিদ্রাযোগ। আবার গানও শুনছি। গানটা এই মুহূর্তের পক্ষে খুবই অ্যাপ্রোপ্রিয়েট, কারণ আমারও অনেক কিছু করার আছে।  মাথার মধ্যে গুছিয়ে নিচ্ছি সামনের তিনদিন (ওয়েল, পনে তিন দিন) টু ডু লিস্ট। পেপারটা শেষ করব, তিনটে উপন্যাস পড়ব আর একটা লিখবও, আর গোটা বাড়ি এমন পরিষ্কার করে ফেলব যে বাবায়াগা এসে নোড়া পিটিয়েও এককণা ধুলো বার করতে পারবে না। রবিবার সন্ধ্যেবেলা হিসেব কী দাঁড়াবে সেটা আপনি জানেন, আমিও জানি। কিন্তু সেই জানাকে এই মুহূর্তের ফিলিংটাকে মাটি করতে আমি অ্যালাউ

রেখেছ বাঙালি করে

ইন্টারনেটে দ্য ব্রিটিশ ট্যাগ বলে একটা ট্যাগ আছে। আমার এ মুহূর্তে মাথা মরুভূমি, তাই ওদের টুকে 'বাঙালি' ট্যাগ বানিয়ে অবান্তরে ছাপলাম। ***** ১। দিনে ক’কাপ চাঃ   সাত থেকে আট। ২। চায়ের সঙ্গে খাওয়ার জন্য ফেভারিট টাঃ মারি বিস্কুট। অবশ্যই ব্রিটানিয়ার।  ৩। চিরঞ্জিৎ না প্রসেনজিৎঃ  চিরঞ্জিৎ ৪। ঘটি না বাঙালঃ বাঙাল ৫। প্রিয় বাঙালিঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ৬। পশ্চিমবঙ্গের প্রিয় বেড়ানোর জায়গাঃ যা দেখেছি তার মধ্যে বিষ্ণুপুর আর মুর্শিদাবাদ দারুণ লেগেছিল।  ৭। প্রিয় বাঙালি গুণঃ আত্মবিশ্বাসের অভাব। যদিও এটা দিনে দিনে দুর্লভ হয়ে উঠছে। ৮। প্রিয় বাঙালি দোষঃ পরনিন্দা পরচর্চা। কারণ আগেও বলেছি, যার নিন্দা করা হচ্ছে তার কোনও ক্ষতি হয় না। যে করে তার মন হালকা হয়। *তবে এ জিনিস করার সময় আমি কিছু সতর্কতা অবলম্বন করি। সাধারণত এমন কারও সঙ্গে না করার চেষ্টা করি, যে অন্যের নিন্দে আমার কাছে করে। কারণ, হান্ড্রেড পার সেন্ট সে আমার নিন্দে অন্যের কাছে করবে। খুব সম্ভবত, যার নিন্দে আমার সঙ্গে করছে, তারই কাছে। দ্বিতীয়ত, চেনা কারও চর্চা করার সময় বিশ্বস্তজনের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান করার চেষ্

এ মাসের বই/ জানুয়ারি ২০১৭

Image
উৎস গুগল ইমেজেস হানা কেন্ট-এর বেরিয়াল রাইটস পড়ার ইচ্ছে ছিল আমার অনেকদিনের। বইটার বিষয়ই এমন যে শুনলেই পড়তে ইচ্ছে করে। আইসল্যান্ডের শেষ মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল আঠেরোশো তিরিশ সালের বারোই জানুয়ারি। মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতির ভালোমন্দ বিচার হাস্যকর মনে হতে পারে, কিন্তু সে পদ্ধতির রকম শুনলে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠতে হয়। আরেকজন মানুষ, একটি কুঠার দিয়ে দণ্ডিতের মুণ্ডু ধড় থেকে আলাদা করে ফেলবে। সে দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিল দু’জন, Agnes Magnúsdóttir আর Friðrik Sigurðsson। স্থানীয় দুই কৃষককে খুনের অপরাধে তাদের এই সাজা হয়। হ্যানা কেন্টের গল্প শুরু হয় একটি গরিব কিন্তু সামাজিক প্রতিষ্ঠাসম্পন্ন চাষিপরিবারের কথা দিয়ে যেখানে দণ্ডের আগের কয়েকদিন অ্যাগনেসকে এনে রাখা হয়েছিল। সাধারণত তখন বন্দীদের পাঠানো হত ডেনমার্কে, সেখানেই তাদের অন্তিম দণ্ড হত, কিন্তু এখানে খরচ কমানোর ও আরও নানারকম প্রশাসনিক অসুবিধের কারণে অ্যাগনেসকে স্থানীয় এই পরিবারটির সঙ্গে শেষের ক’দিন রাখা হয়। বলাই বাহুল্য, পরিবারটি এবং তাদের প্রতিবেশীরাও এ ঘটনায় প্রথমে খুবই বিচলিত হয়ে পড়ে।  কেন্টের প্রথম উপন্যাস বেরিয়াল রাইটস। লেখার হাত ভদ্রমহিলার চমৎকার

এ সপ্তাহের গান

Image

গোয়া ২/২

Image
রিট্‌জ্‌ হোটেল দু’খানা আছে পানজিমে। একটা ক্ল্যাসিক একটা আধুনিক। আধুনিকটি বাসস্ট্যান্ডের একেবারে গায়ে। কিন্তু আমাদের গন্তব্য অন্যটা। ওয়াগলে ভিশন বিল্ডিং যাব বলামাত্র অটো ভাইসাব জিজ্ঞাসা করলেন, রিট্‌জ্‌ ক্ল্যাসিক?  রিটজ হোটেলের রাস্তার নামখানা চমৎকার, আঠেরোই জুন রোড। বাইরে থেকে জাঁকজমক কিছু বোঝা যায় না। মাথা ঘুরে যায় তীরচিহ্ন ফলো করে দোতলায় ওঠার পর। গিজগিজ করছে ভিড়। ভিড়ের অধিকাংশ বাইরের বারান্দায়, খানিকটা উপচে ঢুকে গেছে রেস্টোর‍্যান্টের ভেতর যেখানে খাওয়া চলছে। আমরা ভেবেছিলাম ঘণ্টা তিনেক দাঁড়াতে হবে কিন্তু এ সব সিচুয়েশনে ছোট পরিবার নিঃসন্দেহে সুখী পরিবার। একটা চারজনের টেবিলে দু’জন বসে খাচ্ছিলেন, শেয়ার করতে চাই কি না জিজ্ঞাসা করাতে আমরা লাফ দিয়ে হ্যাঁ বললাম। তিনঘণ্টার গেসটিমেটেড অপেক্ষা হয়ে গেল তিন মিনিটের।  ক্ল্যাসিক রিটজের হাবভাব, চালচলন ক্ল্যাসিক। গদি আঁটা চেয়ার, সাদা কালো উর্দি পরা পরিবেশক। তিন্নি-সায়ক ফিশ থালির কথাই বলে দিয়েছিল, দ্রুত আড়চোখের সার্ভেতে বুঝলাম আশেপাশের নিরানব্বই শতাংশ লোক ওটাই খাচ্ছে। আমরাও বলে দিলাম, ফিশ থালি প্লিজ। সঙ্গে অর্চিষ্মানের জন্য লাইম সোডা, আমার

গোয়া ১/২

Image
আমার একসময় ধারণা ছিল খোনা গলা ছাড়া ফেরিওয়ালা হওয়া যায় না। অনেকদিন পর বুঝেছিলাম যে ও গলা ওঁদের জন্মসূত্রে প্রাপ্ত নয়, ওটা ইচ্ছে করে করা, যাতে স্বর অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছয়। এমনকি ট্রেনের দুলুনির গাঢ় ঘুম ভেদ করেও। সেই রকম গলার চায়এএএ শব্দটা ভেসে এল যেই, ঘুম ছুটে গিয়ে পঞ্চেন্দ্রিয় সজাগ হয়ে উঠল। আমি সাইড আপার থেকে ঝুঁকি মারলাম, অর্চিষ্মান সাইড লোয়ার থেকে ঘাড় তুলল, দুজনে একসঙ্গে বলে উঠলাম, “খাবে তো?”  খাব না আবার? বার্থ থেকে নেমে অর্চিষ্মানের পাশে বসলাম। এম এ পড়ার সময় পূর্বা এক্সপ্রেসের তিনতলার বার্থ থেকে সিনথেটিক সালওয়ার কামিজ ফসকে আমি সোজা মাটিতে এসে পড়েছিলাম, সেই থেকে আমি অতি সাবধানে বার্থে ওঠানামা করি। অর্চিষ্মানও সে পতনের কথা জানে, ও-ও তাড়াতাড়ি উঠে আমার পা যেখানে পড়বে সেখানকার চাদরটাদর সরিয়ে দিল। ভাইসাব দুজনের হাতে দুখানা চা ধরিয়ে টাকা নিয়ে বিদায় হলেন।  ট্রেন থেমে ছিল। পর্দা সরিয়ে দেখি জলের ফোঁটার দাগওয়ালা কাচের ওপারে প্ল্যাটফর্ম। আমাদের কামরাটা ভালো জায়গায় পড়েছে, ওইখানেই স্টেশনের নাম লেখা বোর্ড। রত্নগিরি। প্ল্যাটফর্মের ওপাশ থেকে সবুজ জঙ্গলের দেওয়াল উঠে গেছে, ফাঁকা পরিষ্কার