Posts

কফি শপ ৩ঃ শু

সকালে হাত আকাশে তুলে কফি শপে ঢুকি। গুড মর্নিং ম্যাম, ক্যায়সে হো ম্যাম-এর উত্তরে হাই হ্যালো করি। খোঁজ নিই,রাতে কার কেমন ঘুম হয়েছিল, ব্রেকফাস্ট মে কেয়া থা, আসার পথে হেলমেট পরেছিল কি না। নেক্সট দশ ঘণ্টা ধরে দোকানে যারা ঢোকে ও বেরোয়, সবার সঙ্গে গায়ে পড়ে কথা বলি। এবং এত অ্যাগ্রেসিভলি ব্যাপারটা প্র্যাকটিস করি যে অর্চিষ্মানের ধারণা আমি ব্লু টোকাইতে যাওয়া শুরু করার পর কিছু লোক আতংকে ব্লু টোকাই ত্যাগ দিয়েছে তা কেন? ওর মতো পাবলিকও আছে। যারা আমার এই অ্যাগ্রেসিভ বন্ধুত্বপূর্ণতা রুথলেসলি রিজেক্ট করেছে। ঠোঁট টিপে সরে গেছে। আমিও, অফ কোর্স, তাদের আর বিরক্ত করিনি। আমি গায়ে পড়া। উন্মাদ নই। অর্চিষ্মান বলেছে, গুড। দেয়ার ইজ স্টিল হোপ ফর হিউম্যানিটি। অর্চিষ্মানও শনিরবি আমার সঙ্গে কফি শপে যায়। কাজ করে, কান খোঁচায়, হাই তোলে। কানে গান গুঁজে ফোনের দিকে হাসি হাসি মুখে বসে থাকে। আমাকে যারা রোজ হাই বলে, ওকে হাই বলতে এলে ঠোঁট টিপে হেসে আবার ফোনের দিকে তাকায়। বলে, কী বলব কুন্তলা? কেন? বলবে, আঃ কী গরম, উঃ কী ঠাণ্ডা, সি আর পার্কে কী পলিউশন, লালকেল্লায় কী বোমাবাজি, হংকং-এ কী অগ্নিকাণ্ড? কথা বলারও দরকার নেই, চনমনে হাত ...

Pessoa

I lived inscrutable hours, a succession of disconnected moments, in my night-time walk to the lonely shore of the sea. All the thoughts that have made men live and all their emotions that have died passed through my mind, like a dark summary of history, in my meditation that went to the seashore. I suffered in me, with me, the aspirations of all eras, and every disquietude of every age walked with me to the murmuring shore of the sea. What men want and didn't achieve, what they killed in order to achieve, and all that souls have secretly been - all of this filled the feeling soul with which I walked to the seashore. What lovers found strange in those they love, what the wife never revealed to her husband, what the mother imagines about the son she didn't have, what only had form in a smile or opportunity, in a time that wasn't the right time or in an emotion that was missing - all of this went to the seashore with me and with me returned, and the waves grandly churned their...

নিজের হাতে

Image
বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম আমার টেবিলের সামনে নাজিয়া। এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। আপহি কো ঢুন্ড রহে থে ম্যাম। এসপ্রেসো বনায়েঙ্গে? প্রশ্নটা বুঝতে দশ সেকেন্ড গেল। ব্লু টোকাই-এর নতুন স্ট্র্যাটেজি হচ্ছে এনগেজমেন্ট। দোকানের বাইরের চাওয়ালা, বইয়ের দোকানের মালিক, দর্জি - কমিউনিটির অন্যান্য সদস্য, নেবারহুডের বাকি প্রতিবেশীদের নিজেদের কর্মকাণ্ডের অংশ করতে উঠে পড়ে লেগেছে ব্লু টোকাই। প্রতিবেশীদের ছবিসম্বলিত ব্যানার রাখা হয়েছে দোকানের সামনে, অ্যাডভার্টাইজমেন্ট তৈরি হয়েছে যা দোকানের ভেতর ঝোলানো তিনটে টিভির একটায় লুপে চলছে। বাইরের প্রতিবেশীদের এনগেজ করা ভালো ব্যাপার। ভেতরের পাপীরা যাতে ভেসে আসার ফিলিং না পায় সেদিকেও নজর দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। আশপাশের পাড়ার ম্যাপ - এত প্রফেশনালি আঁকা যে অ্যামেচারিশের আশ্বাস দেয় - টাঙিয়ে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে প্রিয় পাড়া সম্পর্কে নিজের অনুভূতি পোস্ট ইট-এ লিখে সাঁটতে। ম্যাপটা হচ্ছে একটা পিন বোর্ড। বাথরুমের জন্য যে দেওয়ালের পাশে লাইন পড়ে, বোর্ড স্ট্র্যাটেজিক্যালি সেই দেওয়ালেই টাঙানো হয়েছে। অপেক্ষা করতে করতে রেগে না উঠে গল্প লিখুন, সাঁটুন, পড়ুন। রেগুলাররা প্রায় সকলেই গল্প সেঁটেছে।...

যারা যারা দায়ী

উঁচু করা মুখেদের ভিড়ঠাসা অডিটোরিয়াম। মঞ্চে সুমন দে, সঙ্গে আমি, ঘণ্টাখানেকের আলাপচারিতায়। সুমনের ঠোঁট নড়ছে, আপনার এই ইলাস্ট্রিয়াস সাহিত্যিক জীবনের জার্নি . . . নুয়ে পড়ছি, না না কী যে বলেন, কিছুই তো আসলে একা করে হয়ে ওঠে না, কত মানুষ হাত বাড়িয়ে দেয়, আমার এই জার্নির মোড়ে মোড়ে কত লোক দীপ জ্বেলে গেছেন তাদের মধ্যে যার কথা না বললেই নয় তেমন একজন হচ্ছে চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম আর সোমেন বসু। ঘুম ভেঙে গেল। বাঁ হাতের মুঠো খুলে ফোন, জয়পুর থেকে আনা হাতিছাপ বেডকাভারে ছেতরে আছে। তুলে চোখের এক মিলিমিটার দূরে এনে চেক করলাম। নাহ্‌, এখনও বেরোয়নি। একটা গল্প চার নম্বরে পাঠিয়েছিলাম বেশ কয়েকমাস। তারও অনেক মাস আগে থেকে গল্পটা লিখতে শুরু করেছি। যে কাজটা সবাই দু'ঘণ্টায় করে সেটা দু'বছর লাগানোর অসামান্য অভ্যেসে মাত্র কয়েক হাজার শব্দের এই গল্পটা আমি টেনে গেছি টেনে গেছি টেনে গেছি। মানুষের স্বভাবই হচ্ছে - অর্চিষ্মান বলছে, আবার মানুষকে টানাটানি কেন কুন্তলা - ঠিকাছে আমারই স্বভাব হচ্ছে, নিজে যত গড়িমসিই করি না কেন, কথা দিয়ে যত কথা ভাঙিই না কেন, বাকি সবাইকে সুপারসনিক স্পিডে কাজ করতে হবে। যবে গল্প ছাপানোর কথা ছিল তখনই ...

কফি শপ ২ঃ অনলাইন স্ক্যাম ও রিয়েলিটি

শতদ্রুর তীরে, শিবালিকের কোলে, শিখধর্মের পুণ্যতীর্থ আনন্দপুর সাহিব। বাবার ফেভারিট। মাঝে মাঝেই গিয়ে থেকে আসেন। গত মাসে যাওয়ার পথে দু'দিন ফেরার পথে চার ঘণ্টা আমাদের বাড়িতে কাটিয়ে গেলেন। আসার আগে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, বাবা তোমার দিল্লিতে কী করার ইচ্ছে? একটা ইচ্ছে জানা ছিল। সোডাবটল ওপেনারওয়ালাতে খাওয়া। মা থাকতে একবার (নাকি দু'বার?) দুজনকে খান মার্কেটের সোডাবটল ওপেনারওয়ালাতে নিয়ে গেছিলাম। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে অ্যালুমিনিয়ামের টিফিনবাক্সে করে বেরি পোলাও এসেছিল আর সবুজ চাটনি। সেই চাটনি আর টিফিনবাক্সের কথা বাবা এখনও বলেন। বাবার ইচ্ছে পূরণ করা যায়নি কারণ সোডাবটল উঠে গেছে। বা রেনোভেশন হচ্ছে। বাবার দ্বিতীয় ইচ্ছের কথাও আঁচ করেছিলাম। তোর কফি শপে একবার যাব, সোনা। বাবা ফোনে রোজই শোনেন, আমি কফি শপে চলে এসেছি। এই তো তোমার ফোন রেখেই কাজ শুরু করব। আমি শিওর বাবা বোঝেননি ব্যাপারটা কী করে সম্ভব। দোকানে লোকে কাজ করে কী করে? তাও আবার কফির দোকান? যে সব দোকানে বারকয়েক যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বাবার ধারণা হয়েছে জিনিসটা হাফ রেস্টোর‍্যান্ট। রেস্টোর‍্যান্ট আর অফিসের কনসেপ্টের মধ্যে বাবার মগজে যে অলঙ্ঘ্যনীয় পরিখা...

কফি শপ ১ঃ পান্না কি তমন্না

জি কে টু এম ব্লক মার্কেটে এখন সব মিলিয়ে আঠেরোটা কফি শপ। একজন বললেন গুনে দেখেছেন চোদ্দ। আমি আঠেরোয় স্টিক করছি। আমার প্রতিপাদ্য - যা হচ্ছে জি কে টু-তে কফি শপের বান ডেকেছে - প্রতিষ্ঠা করার জন্য চোদ্দর থেকে আঠেরো বেশি উপযোগী। আঠেরোর মধ্যে তিনচারটেয় আমি গেছি। তাও অর্চিষ্মান চল চল করেছে বলে। ওর সব রকম নতুনই চেখে দেখতে ইচ্ছে করে। আমার করে না। কারণ প্রায় পঁয়তাল্লিশে পৌঁছে বুঝে গেছি। কফি শপ, চাকরি, রোম্যান্স, সব ক্ষেত্রেই - আমার কাছে, বাকিদের কাছে জানি না - লং টার্ম বোরডম >>> শর্ট টার্ম ফান। জি কে টু এম ব্লক মার্কেটে কফি শপে আমার লং টার্ম পার্টনার ব্লু টোকাই। রাস্তার এদিকে ওদিকে দুটো আছে। আমি ওদিকেরটায় যাই। গত এক বছর বা ওর কাছাকাছি সময় ধরে যাচ্ছি। সপ্তাহে সাত দিন। কোনও কোনওদিন ভোর সাড়ে ছ’টায় পৌঁছই, কোনও কোনওদিন রাত তিনটে পর্যন্ত থাকি। জি কে টু -র আঠেরোটা কফি শপের আটটা চব্বিশঘণ্টা খোলা থাকে। আমাদের মতো লোকদের জন্য যাদের বাড়িতে থাকার কোনও কারণ নেই। থাকতে কান্না পায়। আমি কফি অ্যাডিক্ট কি না জানি না, ডেফিনিটলি কফি শপ অ্যাডিক্ট। কফি শপও না। জি কে টু-র রাস্তার ওইদিকের ব্লু টোকাইয়ের টেবিল নম্...

No one especially minds

ইন্টারনেটে কত কথা ঘোরে। কিছু মনে ধরে। কিছুতে জ্বালা। কিছু কিছু নতুন জানায়। কিছু কিছু অলরেডি জানাশোনাকে কনফার্ম করে। নিচের প্যারাদুটো যদিও "লাভারস"দের নিয়ে, কারণ সব সম্পর্ক গিয়ে ওই সম্পর্কটিই আজকের দুনিয়ার সব সম্পর্কের সরতাজ হয়ে উঠেছে, ওই সম্পর্কটি নিয়েই সকলে অবসেসড, ওই সম্পর্কটিকে নিয়েই ইন্টারনেটে সবথেকে বেশি পোস্ট, বেশি ভিউ, বেশি লাইক, বেশি শেয়ার এবং বেশি কাঞ্চনমূল্য। চন্দ্রিল যেমন বলেন "টাকা জিতে গেছে," তেমনি "রোম্যান্টিক লাভ" দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আর যাবতীয় ফ্লেভারকে মাত দিয়েছে। কিন্তু রোম্যান্টিক লাভও দুটো মানুষের মধ্যেই হয় (মানিকবাবু বা মেঘের ব্যতিক্রম বাদ দিলে)। আর প্রেমে পড়লে মানুষ, কনট্র্যারি টু নাটকনভেল, দেবতা নয়, আরও বেশি করে মানুষ হয়ে ওঠে। কাজেই লাভার্স ছাড়াও বাকি সব মানুষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেই নিচের কথাগুলো সত্য। অন্ততঃ আমার অভিজ্ঞতায়। আমার অভিজ্ঞতাজাত সত্য আগে মিথ্যে প্রমাণিত হয়নি তেমন নয়, আফটার অল মানুষ মাত্রেই ভুল, ভুল মাত্রেই মানুষ, কিন্তু আমি খুব, খুব, খুব চমকে যাব যদি এই ইস্যুতে ভুল প্রমাণিত হই। * "It’s a bitter truth that other peo...

পুজো ২০২৫

পঞ্চমী দুপুরে কেনাকাটা করতে গেছিলাম। অর্চিষ্মানের জন্য একটা গাঢ় বাদামী টি শার্ট কেনা হল আর একটা ফেডেড ডেনিমের শার্ট - ফুলহাতা। সপ্তমী ও দশমীতে অর্চিষ্মান ওই শার্টটা পরেছিল, অবভিয়াসলি হাতা গুটিয়ে, এবং অতীব সোন্দর প্রতিভাত হইতেছেল। বাড়ির জিনিসপত্রও কিনলাম। গ্লাস ভাঙতে ভাঙতে তিনটেয় এসে ঠেকেছে। আমরা বোতল থেকে জল খাই, আমাদের বাড়িতে ন’মাসে ছ’মাসে যে সব ভালোমানুষেরা আসেন, যদি আসেন, বোতল থেকেই জল খান। আরে গ্লাস দরকার নেই, বোতল নিয়ে আয়। ভান করি যেন বোতল আনা ছাড়া আমাদের বিকল্প আছে। কিন্তু এনাফ ইজ এনাফ। যত বোহেমিয়ানই নিজেদের ক্লেম করি না কেন, গ্লাসহীন বাড়িতে থাকা বাড়াবাড়ি। গ্লাস কেনা হল, বালিশের ওয়াড়। শপিং করা আমাদের কাছে সাত হাত মাটি কোপানোর সমান। হোমস্টপ না কী একটা দোকান, কোটি কোটি কাপ প্লেটের মধ্যে কোটি কোটি সেলসপিপল। আমরা একতলা দু'তলা ঘুরে গ্লাস কিনছি, বালিশের ওয়াড় কিনছি, পেছন পেছন ঘুরছেন। ছুরিতে রিবেট চলছে ম্যাম। বড় বড় ছুরি, খুব ধার। দেব? এই সব কিনতে কিনতে সাড়ে পাঁচটা বেজে গেল, আমার পা টনটন করতে থাকল। বললাম, উবার ডাকছি। অর্চিষ্মান বলল, তোমার জামা? বললাম, হবে'খন। এখন বাড়ি চল। কোটি কোট...