Posts

Showing posts from January, 2023

পৌষমেলা ২০২৩

বাঁশত্রিপল জমা হলে টসকায় না কিছু। খাড়া হলেও ফাঁকেফোকরে হাঁটা, দৌড়, জাম্পিং জ্যাক চলতে থাকে। কার্টুন মুখওয়ালা পলিথিনের স্লিপ, কাঠের নাগরদোলা - উল্লম্ভ অনুভূমিক দুই ভ্যারাইটিরই - এসে যাওয়ার পর অবশ্য একদলকে পিছু হটতে হয়। জয়সূচক বাদ্যগীত জমে আর লেপের ভেতর থেকে বেরিয়ে সোয়েটার জিনস গলিয়ে আমি বলি, যাই একবার ঘুরে আসি। পৌষমেলাটা একদিক থেকে দুর্গাপুজোর থেকেও ফুর্তির। পুজো সব ব্লকের মাঠে হয়, পৌষমেলা খালি আমার বাড়ির উল্টোদিকের মাঠে। পুজোর ভিড়টা দরকারের থেকে বেশি এবং সাড়ে বত্রিশ ভাজা, পৌষমেলার ভিড় প্রাদেশিক। সব চেনা পাপী। তবু ফুর্তি খানিকটা কম হয়ে গেল। ঘুমচোখে মেলা মাথায় আসেনি, খাবারের খোঁজে সোজা বাজারে চলে গেছি। অন্নপূর্ণায় সংক্রান্তি উদযাপন চলছে তিনদিনব্যাপী। রাধাবল্লভীর সঙ্গে একেকদিন একেকরকম। সেদিন ছোলার ডাল। আগের দিন আলুর দম ছিল। আহা, একটা খবর দিলেন না? কাল আসুন বৌদি, মটর পনির থাকছে। কান চাপা দিই। চায়ের ভাঁড় হাতে মেলায় ঢুকি, সারি সারি খাবার টেবিল। এখানে খেলেই হত। বন্যাটা মূলত ফিশ ফ্রাই, চিকেন চাপ, মাটন রোলের তবে আমার মতো কুলাঙ্গারদের জন্য পিঠেপুলি, চাট, ঝালমুড়িও আছে। খিদে নেই বলে তো ম

বল্লভপুরের রূপকথা ও হত্যাপুরী

বল্লভপুরের রূপকথা শুরুতেই অপ্রিয় সত্যিটা ক্লিয়ার করে দেওয়া ভালো। বল্লভপুরের রূপকথা আমার সুবিধের লাগেনি। অনেকেরই লেগেছে। সুন্দর দেখতে লোকজন সুন্দর জামাকাপড় পরে বড় পর্দায় ঘুরছে ফিরছে নাচছে গাইছে, অসুবিধে লাগবেই বা কেন। মা না হয় বাড়াবাড়ি অল্পে সন্তুষ্ট ছিলেন, মায়ের থেকে যদি আরেকটু কড়াও হই আর সুন্দরের বাড়তি অন্য কিছু খুঁজি তাতেও সুবিধের উপাদান কম পড়বে না। যেমন ধরা যাক, ভালো অভিনয়। আমার মতে মনোহর বেস্ট। শ্যামল চক্রবর্তী নাটকের ভেটেরান, তিনি আমার সার্টিফিকেটের জন্য বসে নেই, তবু দিলাম। রাজকুমারের বন্ধুও চমৎকার। রাজকুমারীর বাবা মা, রাজকুমার ভালো, রাজকুমারীও খারাপ কী? মঞ্চসজ্জা সুন্দর। রাজবাড়ির ভাঙাচোরা জায়গাগুলো ভাঙাচোরাই মনে হচ্ছে, আলোকসম্পাতটম্পাতও কত ভালো যদি নাও বুঝি খারাপ হলে ধরতে পারতাম নিশ্চয়। হইচই-এর সিরিয়ালগুলোয় মধ্যবিত্তর প্রকাণ্ড হলঘরের তিন কোণে তিনটে পেপারফ্রাই-এর ঘোমটাপরা এথনিক ল্যাম্পপোস্টের আলোর অখাদ্যতা  যেমন পারি। রাতের মাঠের ছমছম, সকালবেলার স্পষ্ট সূর্যালোক সব যেমন চাই। বল্লভপুরের মুদিদোকানের মালিক থেকে কোটপ্যান্ট আঁটা নব্য ক্যাপিটালিস্ট - সবার মানানসই সাজপোশাক। সেক

নতুন বছরের গান

Image
 

২০২৩ঃ সামোসা ও সংযমের সাল

একজন বললেন, অবান্তরে তোমার নতুন বছরের রেজলিউশন দেখলাম না তো? আগের বছরেও দেখিনি। উনি অবান্তরের রেজলিউশনের অপেক্ষা করছেন জেনে অবাক হলাম। আতংকও হল। পাছে রেজলিউশন ফাঁস করতে হয়। অবান্তরে লিখিনি বলে তো এমন নয় যে ভোল পালটানোর আকাঙ্ক্ষা গোপনে পোষণ করিনি। সে পালটানো এমন পালটানো যে দু’হাজার তেইশের ডিসেম্বরের কুন্তলাকে চিনতে পারলে হয়। যে সব রেজলিউশনের ঘাড়ে চেপে এ অসম্ভব সম্ভব হবে তাদের তলে তলে রাখারই প্ল্যান ছিল। কে জানে মন্ত্রগুপ্তির মাহাত্ম্য হয়তো মিথ্যে নয়। হয়তো রেটিসেন্স বাস্তবিকই ইজ দ্য পিলার অফ সাকসেস। তারপর মনে পড়ল, আগের বছরও রেজলিউশনদের গোপন রেখেছিলাম ঠিক এই যুক্তিতেই। লিখিনি কোথাও। লাভের মধ্যে লাভ, রেজলিউশনগুলোই ভুলে গেছি। রক্ষা করে জীবনের গতিপ্রকৃতি বদলানো ছেড়েই দিলাম। অর্থাৎ ফাঁস করি বা না করি রেজলিউশন রক্ষিত হওয়ার সম্ভাবনা সমান। শূন্য, জিরো, নাল। কাজেই এ বছরের শপথাবলী, পূর্ণ হলে যারা আমার খোলনলচে বদলানোর ক্ষমতা রাখত কিন্তু পূর্ণ হবে না কাজেই খোলনলচে বদলাবে না, মন এবং হাত খুলে লিখে রাখছি। বাৎসরিক রেজলিউশনের উদ্দেশ্য যদি হয় জীবনের খামতি অ্যাড্রেস করা,তাহলে এ বছর আমার শপথে