Posts

Showing posts from March, 2023

তুমি একা, আমি একাই

বাড়িঘর ঝেড়েমুছে এক বালতি পেঁয়াজি ভেজে চাবি ঘোরাতে ঘোরাতে প্রসেনজিৎ বেরিয়ে গেল, ফ্যান জোর আর লাইট নিভুনিভু করে আড্ডা শুরু হল। অনুপস্থিত বন্ধুদের নিয়ে তুমুল চর্চা চলছে, এমন সময় চমকে মুখ চাপা দিল একজন। ভুলেই গেছি বলতে। খবরটা পেয়েছ? খবরটা এই নয় যে অমুকে প্রকাণ্ড মাইনের চাকরি পেয়েছে কিংবা মিটু খেয়েছে। খবরটা হচ্ছে, অমুক নিজের নতুন বাড়িতে একটি ঠাকুরঘর বানিয়েছে যেখানে ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর লোকনাথবাবা রামঠাকুর সবাই আছেন। ইলন মাস্কের প্রথম মঙ্গলাভিযানের টিমে সিলেক্টেড হওয়ার খবর পেলে কম অবাক হতাম। বন্ধুটি আমার দেখা গেরিলাতম নাস্তিক। ছিলেন, আই গেস। সেটা অবশ্য একদিক থেকে আমার অবাক হওয়াকে নাকচ করে। কারণ গুলতি থিওরি। একটা গুলতি যত জোরে এদিকে টানা হবে, টান যখন ঢিলে হবে (সাধারণতঃ হয়) ঢিল তত জোরে, তত ওদিকে গিয়ে পড়বে। ঠাকুমার কথাটা একটু ঘুরিয়ে নিলে, যে যত বড় হিঁদুর পোলা, মুসলমান হলে সে তত উদ্যমে গোয়াল কে গোয়াল সাবাড় করবে। কত কেস যে দেখলাম। হাসাহাসি থামলে দ্বিতীয় কারণটা মাথায় এল। অবাক যে আর হলাম না তাই নয়, এক মুহূর্তে ক্লিয়ার হয়ে গেল ঘটনাটার পেছনে কী কাজ করেছে। একাকীত্ব। ক্লিয়ার হয়ে গ

আজ সারাদিন

Image
 

তাওয়াং ৬ঃ ফেরা

Image
গাড়ি দুলতে দুলতে চলল। জানালার কাচে গাল রাখল ঘন বাষ্প, ওয়াইপারের নাগালের বাইরে উইন্ডস্ক্রিনের কিনারায় বরফ আইস হতে শুরু করল। সবাই চুপ। অর্চিষ্মান ফিসফিসিয়ে বলল, মনে হচ্ছে না যত ভালোই হোক, এবার বরফ শেষ হলে পারে? বরফপাতের মধ্যে একটা ভুতুড়ে ব্যাপার আছে। ভূতে আমার আর অর্চিষ্মানের যেমন অবিশ্বাস তেমন ভয়। আমাদের ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ে, শনশনিয়ে কালবৈশাখী ছোটে, বা অত বাড়াবাড়ি কিছু না হলেও, স্রেফ গরম লাগলেও ফ্যান পাঁচে ঘোরে ক্যাঁচকোঁচিয়ে। মোটমাট একটা শব্দকল্পদ্রুম ঘটে। এদিকে বরফ পড়ে নিঃশব্দে, আশপাশের সমস্ত শব্দ শুষে নিয়ে। ভুতের আবির্ভাবের আদর্শ পরিবেশ। আমাদের বর্ষানিশীথে যে ভুতেরা আসেন রামনাম করলে তাঁরা পিছু হটলেও হটতে পারেন, বরফের নৈঃশব্দ্যে আসেন যাঁরা তাঁরা কীসে ভাগেন আমাদের জানা নেই। কাজেই বরফের ভুতুড়েপনায় আমাদের অস্বস্তি। অস্বস্তি কাটল একটি অসম্ভবে। দেভের সুমোও ফাঁসল। অট্টহাস্য করে দেভ বলল, আরে বাঁদিকে গেল না তো গাড়িটা কিছুতেই। চাকা ঘুরতে আর গাড়ি দুলতে শুরু করতেই লাফিয়ে নামার উপক্রম করলাম। গাড়ির দরকার নেই, গোটা রাস্তা হেঁটে যাব। আমার নামার আগেই ঠেলাঠেলি সারা হয়ে গেল এবং আবার চলতে শুরু করলাম

তাওয়াং ৫ঃ বুম লা

Image
যে কোনও লা-এর পর পাস বলা ‘চায় টি’ বলার মতো। কারণ লা মানেই পাস। বুম মানে পাহাড়। যদিও শুধু বুম লা বলতে কেমন লাগে বলে জেনেশুনেও কখনও কখনও বুম লা পাস বলে ফেলব হয়তো। তাওয়াং থেকে বুম লা সাঁইত্রিশ কিলোমিটার। অস্থানীয় গাড়ি নিয়ে বুম লা যাওয়া বারণ। কাজেই পঙ্কজ, অগ্নিক, হিমাংশুর আজ ছুটি। অন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেছে অগ্নিক, সকালে হোটেল থেকে পিক আপ করবে। যাওয়ার খরচও তাওয়াং টুরস-এর প্যাকেজের খরচের বাইরে। আগের দিন গোলটেবিল বৈঠকে স্থির হয়েছে, আমরা আর আরেকটি পরিবার একটিই গাড়িতে যাব তাতে খরচ অর্ধেক হয়ে যাবে। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ অগ্নিকের পিং এল। গুড মর্নিং জী, কার ইজ হিয়ার। আমরা বাইরেই ছিলাম। চা টোস্ট খেয়ে তাওয়াং বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। প্রথমটা বাজারে যাইনি। দুটো মোরগের পিছু নিয়ে একটা গলির মধ্যে ঘোরাঘুরি করছিলাম। তারপর মোরগদুটো আমাদের গাইডের কাজে ক্ষান্ত দিয়ে উড়ে গেল, তখন টের পেলাম যে শুকনো হাওয়ায় দুজনের মুখ চড়চড় করছে, এদিকে ক্রিমটিম কিছু আনা হয়নি। ক্রিমের খোঁজে বাজারের দিকে যাওয়া হল। সবই বন্ধ, অবশেষে একটা দোকান খোলা দেখলাম যেটাতে ক্রিম পাওয়া গেলেও যেতে পারে। পন্ডসও আছে, নিভিয়াও। প্রথমটা দেড়শো, পরেরটা

তাওয়াং ৪ঃ পাহাড়ি পরিষেবা ও যশওয়ন্তগড়

Image
এ ট্রিপের সবথেকে বেশিসংখ্যক রাত্রিবাস তাওয়াং-এ, একেবারে দু'দুটো। দ্বিতীয় দিন সকালে দরজায় টোকা। প্রত্যাশিত, কারণ চা বলা আছে, কিন্তু দরজা খুলে একটি অপ্রত্যাশিত দৃশ্য উদ্ভাসিত হল। দুটি মেয়ে। একজন মেরেকেটে আঠেরো, একজন টেনেটুনে পনেরো। আঠেরোর হাতে লিস্ট, পনেরোর হাতে ট্রে-ভর্তি কাপের গুচ্ছ। গত পরশু রাতে হোটেলে চেক ইন করা ইস্তক যতবার দরজা খুলে চা ইত্যাদি নিয়েছি এঁদের দেখিনি। ঘরে ডাকলাম। আঠেরো রিডিং পড়লেন। ব্ল্যাক কফি, মিল্ক টি? ঠিক ঠিক। পনেরো ট্রে থেকে দুটো কাপ টেবিলে নামালেন, যার দুটোতেই দুধের পরিমাণ প্রয়োজনের থেকে বেশি। মৃদু গলায় পয়েন্ট আউট করলাম। দুজনের মুখের মিল খেয়াল করলাম। যে ভদ্রলোক রিসেপশনে বসেন এবং মাঝে মাঝে অর্ডার বেশি চলে এলে রান্নাঘরে ঘোরাঘুরি করেন তাঁর মুখের সঙ্গে মিলও। ট্রে পর্যবেক্ষণ করে কালচে তরলওয়ালা একমাত্র কাপটির দিকে ছোটজনের দৃষ্টি থামল। উৎসাহব্যঞ্জক ঘাড় নাড়লাম। মেয়েটি আমার প্রতি সন্দেহজনক চোখ তুলে উক্ত কাপটি টেবিলের ওপর নামাল। নামিয়ে চলে যাওয়ার উপক্রম করল। তাড়াতাড়ি দুধ কফির কাপটা ট্রে-তে তুলে দিলাম না হলে পাশের ঘরে কনফিউশনের সৃষ্টি হবে। যে ঘরে একজনের নাম ডেফিনিটলি বাবু

তাওয়াং ৩ঃ সেলা পাস

Image
দিরাং গ্রাম দিরাং আসার পথের একটা হাইলাইট লিখতে ভুলে গেছি। সেভেন সিস্টারস না ব্রাদারস নামের একটা দোকানে অগ্নিক সবাইকে থামিয়েছিল। সেখানে ভেজ, চিকেন, পর্ক থালি আর চাউমিন পাওয়া যায়। ভেজ থালি নেব নেব করেও ভেজ চাউমিন নিয়েছিলাম। অর্চিষ্মান পর্ক না চিকেন কীসের থালি নিয়েছিল। চাউমিনটা খুবই ভালো এবং এত বহুল পরিমাণে যে খুব স্পিডে খেয়েও, যাতে ব্রেনে পেট ভরে যাওয়ার সিগন্যাল পৌঁছনোর আগেই যতখানি সম্ভব খেয়ে নেওয়া যায়, অর্ধেক প্লেটের পর আর এগোনো যায়নি। এদিকে অর্চিষ্মান নিজের খাবার মুখে দিয়ে থেকে হাহুতাশ শুরু করেছে। কী মিস করলে কুন্তলা। কেন ভেজ থালি নিলে না। ওর থালিতে যে নিরামিষ পদগুলো ছিল সেগুলো নাকি অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো ভালো। প্রমাণ হিসেবে আমার প্লেটের খালি অর্ধেকে ডাল, শাকের মতো কী একটা আর সয়াবিনের তরকারি তুলে দিল। ভালো বটে। বিশেষ করে সয়াবিনের তরকারিটা। চায়ের মতো খাবারের পলিসিতেও বদল আনলাম। এর পর থেকে সর্বত্র থালিি নিয়েছি। পাহাড়ের ডাল ভাত তরকারির জবাব নেই। অর্চিষ্মান বলল, 'চলো লেট’স গো' মনে পড়ছে না? গল্প সিনেমার নাম ভুলে যাওয়া আমার একটা কমন ঝামেলা। তার ওপর সিনেমার নাম আজকাল এত একরকম। ব্যোমকেশ