Posts

Showing posts from October, 2016

বইকথা ওয়েব ম্যাগাজিন/ ছোট গল্প 'উৎসর্গ'

ব্রিফ ছিল বই , লেখক বা কবিকে নিয়ে লেখার। শব্দসীমা ছিল না, তবে দু’হাজার শব্দের মধ্যে হলে ভালো। কবি সম্পর্কে লেখার ধৃষ্টতা আমার নেই। বই সম্পর্কে লেখা যেত, কিন্তু শেষে ভেবে দেখলাম লেখককে নিয়ে লেখাই সবথেকে সহজ। বিশেষত লেখক ব্যাপারটার প্রতি যখন আমার আগ্রহ আছে। লেখক কী ভাবে লেখেন, কী ভেবে লেখেন এই নিয়ে যখন আমার মারাত্মক কৌতূহলই আছে। আর বইয়ের শুরুতে থাকা ওই উৎসর্গের পাতাটা নিয়েও। সব খাটুনিটা নিজে খেটে  সে লেখা একেতাকে উৎসর্গ করতে লেখকের কেমন লাগে সেটা নিয়েও। একদিক থেকে দেখলে সব লেখা কি নিজেকেই উৎসর্গ করা উচিত নয়? আফটার অল, গোটা খাটুনিটা তো নিজেকেই খাটতে হল। শুধু খাটতেই হল না, লজ্জাঘেন্নার মাথা খেয়ে সে লেখাকে পাঠকের দরবারে প্যারেডও করাতে হল। প্রশংসা পেলে প্রশংসা, পচা ডিম পেলে পচা ডিম।  তবু কোনও লেখকই নিজেকে নিজের বই উৎসর্গ করেন না। কেন করেন না? কেন তাঁর এত সাধনার ধন নিজেকে বাদ দিয়ে বিশ্বশুদ্ধু সকলকে উৎসর্গ করতে ছোটেন? আমার সন্দেহ এর মধ্যে একটা সামাজিকতার ব্যাপার আছে। মাবাবা স্বামীস্ত্রী ছেলেমেয়েকে বই উৎসর্গ করতেই হয়, না হলে লোকে খারাপ ভাবে।  কিংবা হয়তো সত্যিই লেখক বিশ্বা

সাপ্তাহিকী

Image
পৃথিবীর বৃহত্তম জীবন্ত জিনিস। নীল তিমির থেকে কত গুণ বড় তা হিসেব কষার উৎসাহ নেই। তবে এটুকু বলতে পারি চার বর্গ মাইল জুড়ে জিনিসটা থাকে।  আমার চেনার মধ্যে একজনের এক মহিলা বস্‌ শনিরবিবার কিংবা ছুটির দিন কিংবা অফিসটাইমের বাইরে ইমেলের উত্তর দিতেন না। স্কাইপ মিটিং-এ রাজি হতেন না। মহিলাকে নিয়ে সবাই হাসাহাসি করত। বলত, অদ্ভুত। আমি বলতাম তাহলে পৃথিবীর সবারই অদ্ভুত হওয়া উচিত। ঘটনাচক্রে, মহিলা ফরাসি। পুরুষ সিংহ। কৃষিজীবী পোকা। Brett pulled his tank top up over his head and stared at himself in the full-length mirror. He pushed down his jeans, then his boxers, and imagined the moment when Jennifer saw him nude for the first time. His feet were average-sized, and there was hair on his toes that he should probably take care of before tonight. He liked his legs just fine, but his thighs were wide and embarrassingly muscular. He tried standing at an angle, a twist at his waist. Some improvement. In that position, it was easier to see his ass and notice that it was not as pert as it h

৮, প্রিন্স আলব্রেশটস্ট্রাসে

উইলহেলমস্ট্রাসে আর স্ট্রেসেমানস্ট্রাসে। A অক্ষরের দুটো হাতের মতো এক বিন্দু থেকে দুদিকে বিস্তৃত। তফাৎ একটাই যে A -র পেট মোটে একবার কাটা থাকে, এখানে একাধিক। সবথেকে ওপরের পেটকাটা লাইনটার নাম আনহল্টারস্ট্রাসে। এই রাস্তা যেখানে স্ট্রেসেমানস্ট্রাসে গিয়ে জুড়েছে সেই বিন্দুতেই আমার হোটেল। আর দ্বিতীয় যে পেটকাটা রাস্তাটা, আনহল্টারের নিচে কাজেই আনহল্টারস্ট্রাসের থেকে লম্বা, উইলহেলম আর স্ট্রেসেমানকে জুড়েছে সেটার নাম হচ্ছে নিডারকিরশনারস্ট্রাসে।  এই নিডারকিরশনারস্ট্রাসে আর উইলহেলমস্ট্রাসের মোড়ে একসময় একটা মস্ত প্রাসাদ ছিল। সেখানে থাকতেন প্রাশিয়ার রাজপুত্র প্রিন্স অ্যালবার্ট। তাঁর নামে এই রাস্তার নাম রাখা হয়েছিল প্রিন্স আলব্রেশটস্ট্রাসে। সেই রাস্তার ৮ নম্বর প্লটে উনিশশো পাঁচ সালে মিউজিয়াম অফ ডেকোরেটিভ আর্টসের বাড়ি বানানো হয়। উনিশশো তেত্রিশ থেকে মিউজিয়াম ব্যবহার হতে শুরু করে গেস্টাপো আর নাৎজি পার্টির সিক্রেট পুলিশের (শুৎজস্টাফেল বা এস এস) অফিস হিসেবে। উনিশশো চৌত্রিশে এই বাড়িতে কনসেনট্রেশন ক্যাম্প ইন্সপেক্টোরেট-এর হেডঅফিস খোলা হয়, যাদের কাজ হচ্ছে দেশের এবং অচিরেই বিদেশেরও কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের

সাপ্তাহিকী

Image
রেডি হওয়ার সময় মনে পড়ে না। সেমিনারের দরজা ঠেলে কালো আর ধূসর, নিউট্রাল আর প্রফেশনাল সমুদ্রে পা দিয়ে আমার মনে পড়ে রং নির্বাচনে আবারও ভুল হয়ে গেল। আমাকে দেখে বেশিরভাগেরই নিশ্চয় এই কথাটাই মনে হয়। কপাল ভালো তাঁরা মনের কথা মনেই রাখেন। হাতে গোনা কেউ দৌড়ে এসে বলে, হয়তো ইয়ার্কি করেই, আই লাআআআভ ইন্ডিয়ান ক্লোথস। শুনে আমি খুশি হই। হাঁফ ছেড়ে ভাবি, যাক বাবা, হাল্লারাজা সেজে এসে তেমন ক্ষতিও হয়নি তার মানে। ছবিতে আমার সঙ্গে আমার বন্ধু মাথিয়াস।  ***** Traits don't change, states of mind do.                                                                 ―  Elizabeth Strout ,  Olive Kitteridge   Why do anything? (নিউ ইয়র্ক টাইমস) বোঝো। আমি এঁকে “ ফিমেল শিন্ডলার ” বলব না। আমি বরং এঁকে আইরিন সেন্ডলার বলেই জানব যিনি আড়াই হাজার ইহুদি বাচ্চার প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন।  তারাদের চেতনা? ছবি আমার হাসি পেয়েছিল। আপনাদেরও পায় কি না দেখতে পারেন।  ইন্ট্রোভার্টেড আর এক্সট্রোভার্টেডদের ওয়ার্ল্ড ম্যাপ।  ভিডিও Borrowed Time. টম হ্যাংকস যখন টম হ্যাংকসের সিনেমায় অভ

ছবিহীন বার্লিন/ ১

হোটেলে ঢোকার মুখে দেখেছিলাম রাস্তার ওপারে একটা ভাঙাচোরা সিংদরজা। সামনে থামওয়ালা একটা ঢাকা বারান্দা। মেঘলা আকাশের গায়ে ভাঙা মাথাটা কালো, পোড়া। দেখলেই বোঝা যায় একে সময় ভাঙেনি, ভেঙেছে মানুষ। বা মানুষের হাতে তৈরি বোমা। ভেবেছিলাম যদি এদিকমুখো ঘর পাই তাহলে ‘ভিউ’ ক্যাপশন দিয়ে সিংদরজাটার ছবি দেব অবান্তরে।  ঘরে ঢুকে দেখলাম জানালার নিচে একটা পার্কিং লট, লট পেরিয়ে আরেকটা গগনচুম্বী হোটেলের গা, গা বেয়ে হু হু করে নামছে স্বচ্ছ সার্ভিস এলিভেটর। এলিভেটরের ভেতর একজন গাঁট্টাগোট্টা মহিলা দাঁড়িয়ে আছেন হলুদ ট্রলিতে আলগোছে হাত রেখে। ট্রলির বিভিন্ন খোপে ঝাঁটা, সারি সারি ক্লিনিং লিকুইডের বোতল সাজানো।  ঘরের ভেতরটাও মন ভালো করার মতো কিছু নয়। ভিট্রুভিয়ান ম্যান হয়ে শোওয়ার মতো খাট, খাটে দুধসাদা চাদর, ফুলকো বালিশ, উষ্ণ লেপ। পড়ার টেবিল, বসার এবং লোক বসানোর সোফা, আড়াল দিয়ে একখানা মাইক্রোওয়েভ আর ছোট্ট ফ্রিজ, ইলেকট্রিক কেটলি আর চা ব্যাগ। ঘরের বিভিন্ন কোণে মুড লাইটিং। এমন সাউন্ডপ্রুফিং যে কানের মধ্যে নীরবতা বুজকুড়ি তোলে। শীতল, কঠিন আরাম ঘিরে রয়েছে চতুর্দিক। এ আরামকে সহনীয় করে তুলতে পারে একমাত্র স্কাইপ। কিন্তু

চা + বই

Image
এক সপ্তাহ ছুটি নিয়ে আবার ছুটি কেটে ফেরৎ আসা? আমার ডিরেক্টর এ জিনিস আশা করবেন না, কিন্তু এটা অফিস নয়, অবান্তর। যে কাজটার জন্য ছুটি চেয়েছিলাম সেটা ঘাড়ের ওপর খাঁড়ার মতো ঝুলে আছে এখনও, কিন্তু যে ভেবেছিলাম ফাঁকে ফাঁকে একটুও সময় বার করতে পারব না, সেটা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।  তাই এই পোস্ট। হয়তো এই একটাই ছাপতে পারব, কিংবা আরও দু’চারটে, কিছু বলা যায় না। ছুটির আবেদনটা বলবৎ রইল। এই ট্যাগের আইডিয়া এসেছে, আমার বইসংক্রান্ত সব আইডিয়াই আজকাল যেখান থেকে আসে, সেই বুকটিউব থেকে। আমার বই ভালো লাগে, চা বাড়াবাড়ি রকম বেশি ভালো লাগে। কিন্তু এ দুটোর থেকেই যেটা বেশি ভালো লাগে সেটা হচ্ছে চা খেতে খেতে বই পড়তে। তাই দুটোকে মিলিয়েমিশিয়ে দেওয়ার আইডিয়া দেখে লোভ সংবরণ করতে পারলাম না।  ***** রাস্তার ধারের ফোটানো চা। এ জিনিস বাড়িতে রেপ্লিকেট করা অসম্ভব। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত দোকানে রেপ্লিকেট করা অসম্ভব। মোড়ে মোড়ে পাওয়া যায়। স্বাদের রেঞ্জ বিরাট। কোনওটা ভীষণ ভালো কোনওটা না খেলেই হত। কিন্তু ব্যাপারটা এমন সর্বব্যাপী যে খাওয়াটা অলমোস্ট বাধ্যতামূলক। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বই ছাড়া এই মুহূর্তে কারও কথা মনে পড়ছে না। 

গুজরাট ভবন

Image
লাঞ্চে যাওয়ার আগে কাজ তুলে রেখে এদিকওদিক করছি, ফোনে আলো জ্বলে উঠল। একদিকে সবুজ ফোন, একদিকে লাল কাটাচিহ্নর মাঝখানে অর্চিষ্মানের নাম। আমি ফোনের ওপরদিকে ডানকোণে তাকালাম। ১২ টা ২৫। এখন অর্চিষ্মানের ফোন করার কথা নয়। ওর ফোন করার কথা ১ টা ২৫-এ। ফোন করে জিজ্ঞাসা করার কথা, কী খেলে? তখন আমার বলার কথা, রুটি আর ভিন্ডি/সীতাফল/লাউকি/সয়াবিন। তারপর উল্টে জিজ্ঞাসা করার কথা, তুমি? তখন ওরও বলার কথা, রুটি আর ভিন্ডি/সীতাফল/লাউকি/সয়াবিন। তারপর আমাদের দুজনেরই বিতৃষ্ণায় খানিকক্ষণ চুপ করে থাকার কথা, তারপর দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে, ঠিক আছে? ঠিক আছে। বলে ফোন ছেড়ে দেওয়ার কথা। আমি ওর নামটার দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলাম কোনও খারাপ খবরের জন্য আমার তৈরি হওয়া উচিত নাকি। যা হওয়ার কথা তার বদলে অন্য কিছু হলে নির্ঘাত কিছু খারাপই ঘটেছে এইটা আঁচ করে নেওয়ার অভ্যেস অনেকের থাকে। আমার মায়ের আছে। মায়ের সঙ্গে আমার দৈনিক কথাবার্তার একটা রুটিন এইরকম। সকালে উঠেই, মানে ঠিক উঠেই না, মাকে ঘুম থেকে ওঠার সময় দিয়ে, এই ছ’টা নাগাদ, আমি মাকে ফোন করি। গুড মর্নিং বলি, আগের দিন কিছু ইন্টারেস্টিং ঘটেছে কি না, আজ কিছু ইন্টারেস্টিং ঘটার আশা আছে কি ন

মিনি সাপ্তাহিকী

Image
প্রবাদপ্রতিম রন্ধনশিল্পী জুলিয়া চাইল্ড-এর  টিভি শো-র সেট উৎস ইন্টারনেট আমিও বাড়ির মেঝেতে খাবার পড়লে তুলে খেয়ে নিই। সায়েন্স অফ সারকাজম।  আগাথা ক্রিস্টির স্মরণে তাঁর গল্পের সিনসিনারির ছবি দেওয়া স্ট্যাম্প বেরিয়েছে ব্রিটেনে।  রিপ্লাই টু অল।  উনিশশো সাতাশ। মাটি থেকে দু’হাজার ফুট ওপর। এরোপ্লেনের পাখা। নৃত্যরত দশ বছর বয়সী।  

সাত থেকে এগারো

Image
৭ই অক্টোবর, ২০১৬ আড্ডা। ফিশ ফ্রাই, ভাত, নারকেল দিয়ে ডাল, তরকারি, পাঁঠার মাংস এবং উমদা পায়েস। সৌজন্যে, সহৃদয় বন্ধু। সামনে চার-চারটে ছুটির দিন গা এলিয়ে পড়ে আছে। আজ রাতে যেমন ঘুম হবে তেমন অনেকদিন হয় না। ৮ই অক্টোবর, ২০১৬ সি আর পার্কের বাইরের পুজোর কোটা পূরণ করতে আগের বার গিয়েছিলাম কাশ্মীরী গেট, এ বার ফরিদাবাদের চার্মউড ভিলেজ। ভেতরে তখন উলুধ্বনি আর শঙ্খ প্রতিযোগিতা হচ্ছিল। এই যে নাম দিতে চাওয়া অথচ লজ্জা পাওয়া প্রতিযোগীদের মাইকে চেঁচিয়ে নাম ধরে ডাকা হচ্ছে, তারা বলছেন, তুমি যদি যাও তো আমি যেতে পারি, সেক্রেটারি আর প্রেসিডেন্ট হলে জীবনে শাঁখে ফুঁ দাও আর না দাও নাম দিতেই হবে, চাঁদা তোলা আর ডেকরেটর ডাকার দায়িত্বের সঙ্গে এটাও একটা দায়িত্ব, তবে এক্সট্রা হাততালি গ্যারান্টিড, শেষমেশ যে পাড়ার নিরীহ আর মুখচোরাতম কাকিমা, হাসি ছাড়া যার গলা দিয়ে দ্বিতীয় শব্দ বেরোয়নি কখনও, তিনি "কী সোনা, রেজাল্ট কেমন হল?" বলে রাস্তার ওপার থেকে  চেল্লানো কনফিডেন্ট কাকিমার সাত সেকেন্ডের মাথা মুড়িয়ে সতেরো সেকেন্ড শাঁখ বাজিয়ে প্যান্ডেল মাত করে যাবেন, এই সব দেখতে আমার দারুণ লাগে। এই যে মণ্ডপের ভ

সাপ্তাহিকী

Image
খবরাখবর জিনিয়াস যে নই সে তো প্রমাণ করার কিছু নেই, পাগল যে নই এটা দাবি করতে পেরে ভালো লাগছে।  নোবেলজয়ীরা পুরস্কারের অর্থমূল্য কে কীভাবে খরচ করেন।  পরীক্ষা এসে গেছে কিচ্ছু পড়া হয়নি এ দুঃস্বপ্ন ইউনিভার্সাল। কেন দেখি আমরা সবাই ও স্বপ্ন? মক্ষীরানীর পিছু পিছু।  সিনেমাগুলো যতবার দেখি (বেশিবার নয়, প্রত্যেকটা একবার করে, তাও ব্যাটম্যানকে দেখতে নয়, ক্রিশ্চিয়ান বেলকে দেখতে) আমার এই প্রশ্নটা মনে জাগত। এতদিনে উত্তর পাওয়া গেল।  ব্লাইন্ড ডেটে আমি মানুষ বা বই, কারও সঙ্গেই যেতে চাই না।   তিরিশ বছর পর হারানো পোষা কচ্ছপ খুঁজে পেয়েছেন একটি পরিবার। যে বসিয়া থাকে তাহার স্বাস্থ্যও বসিয়া থাকে, এমনকি শুয়ে পড়াও আশ্চর্য নয়। আমি তো সেইজন্য একশোবার করে জল খেতে উঠি। সাধারণ মানুষ যখন আবিষ্কারক।  ছবি এক্সেপেক্টেশন বনাম রিয়্যালিটি। পারস্পেক্টিভ। কুইজ আমার বই পড়ার বহর দেখে এরা আন্দাজ করেছে আমার বয়স সতেরোর কম। আপনার?

রেডি

অক্টোবরের শুরুর দিকে নাগাল্যান্ড ভবন যাওয়া হয়েছিল। অফিসের লোকজন সঙ্গে ছিল, তাই ছবি তুলিনি, অবান্তরেও লিখিনি। স্টেট ভবন ক্যান্টিনে খেতে যাওয়া আসলে যতখানি স্টেট ভবন ক্যান্টিনে খেতে যাওয়া, ততখানি কি তার থেকেও বেশি অর্চিষ্মানের সঙ্গে অপ্রত্যাশিত সময়ে অপ্রত্যাশিত জায়গায় দেখা করার মজা। সেটা এ ক্ষেত্রে হয়নি, তাই নাগাল্যান্ডকে না-চাখা স্টেট ভবনের লিস্টেই রেখে দিয়েছি এখনও। দুজনে খেয়ে এসে ব্যাখ্যান করে এসে আপনাদের জানাব।  যাই হোক, ভবন যাওয়ার কথা উঠতে দল বাড়ানোর চেষ্টা করা হল। অফিসে যাদের ফুডি বলে পরিচিতি আছে তাদের চিহ্নিত করে প্রস্তাব দেওয়া হল। কয়েকজন রাজি হল, কয়েকজন হল না। এই দু’নম্বর দলের একজন ক’দিন আগেই Dzukou Tribal Kitchen -এ খেয়ে এসে খুব সুখ্যাতি করছিল। তাকে আমি বললাম, যাবে না কেন, চল। তাতে সে মুখ কালো করে বলল, না গো, সংযম করছি।  কী সাংঘাতিক, কীসের? সে জানাল তার নাকি পেট ভালো যাচ্ছে না।  আমি বললাম, সে তো ফুডিমাত্ররই হওয়ার কথা। খাবার যদি তোমাকে কাত না করতে পারল তা হলে আর তেমন খাবার খেয়ে লাভ কী। খাবারের কাছে হার মানাটাই তো ফুডির জিত। তখন সে বলল, হারব বলেই তো এখন জিতছি। পুজোয়

এ মাসের বই/ সেপ্টেম্বর ২০১৬ (২)/ লাভ সেক্স আর ধোঁকা

Image
সেপ্টেম্বর মাসে দু’টো ভয়ানক ইন্টারেস্টিং বই পড়লাম। যেচে আনইন্টারেস্টিং বই আমি পড়ি না, কিন্তু আমার পড়া সব ইন্টারেস্টিং বইয়ের মধ্যেও এরা ইন্টারেস্টিং। দু’খানা বইই বাঙালির দুই কেচ্ছা নিয়ে লেখা।  ***** মোহান্ত এলোকেশী সম্বাদ/ শ্রীপান্থ তারকেশ্বরের কাছে কুমরুল গ্রামে নীলকমল মুখোপাধ্যায় নামে এক গরিব ব্রাহ্মণ থাকতেন। রূপসী এলোকেশী ছিল তাঁর প্রথম পক্ষের সন্তান। নবীনচন্দ্র ব্যানার্জির সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। নবীনচাঁদ চাকরি করত কলকাতায়। সেটা আঠেরোশো সত্তরের দশক। তখন ঘণ্টায় চারটে করে তারকেশ্বের লোকাল চলত না; কলকাতা প্রায় বিদেশই বলা চলে। নবীনচাঁদ থাকত কলকাতায়। এলোকেশী থাকত বাবা আর সৎমার সংসারে।  এলোকেশীর বাড়ির লোকের তারকেশ্বর মন্দিরে আনাগোনা ছিল। সাধারণ ভক্তের মতো নয়, তার থেকে খানিক বেশিই। খোদ মোহান্তের খাস অনুগত ছিলেন তাঁরা। মন্দিরের অন্দরমহলে অবাধ যাতায়াত ছিল।  অন্দরমহলটি দেখার মতো। তারকেশ্বর আর আশেপাশের অনেক শিবমন্দির নিয়ে একটা ঘোঁট মতো ছিল, তারকেশ্বরের হেড পুরোহিত, মোহান্ত ছিলেন সেই ঘোঁটের সর্বেসর্বা। বিপুল ঐশ্বর্য, অগাধ ক্ষমতা এবং সে ক্ষমতার অকথ্য অপব্যবহার।

স্বধর্ম

"প্রত্যেক মনীষীরই একটি বিশেষ প্রতিভা থাকে - নিজের রাজ্যেই সে সিদ্ধ। কবির সিদ্ধিও তার নিজের জগতে; কাব্যসৃষ্টির ভিতরে। আমরা হয়তো মনে করতে পারি যে যেহেতু সে মনীষী কাজেই অর্থনীতি সম্বন্ধে - সমাজনীতি, রাজনীতি সম্বন্ধে, মননরাজ্যের নানা বিভাগেই, কবির চিন্তার ধারা সিদ্ধ। আমাদের উপলব্ধি করে নিতে হবে যে তা নয়। উপকবির চিন্তার ধারা অবশ্য সব বিভাগেই সিদ্ধ - যেমন উপ-দার্শনিকের। কিন্তু প্রতিভা যাকে কবি বানিয়েছে কিংবা সঙ্গীত-বা-চিত্রশিল্পী বানিয়েছে - বুদ্ধির সমীচীনতা নয়, - শিল্পের দেশেই সে সিদ্ধ শুধু - অন্য কোথাও নয়। একজন প্রতিভাযুক্ত মানুষের কাছ থেকে আমরা যদি তার শ্রেষ্ঠ দান চাই, কোনো দ্বিতীয় স্তরের দান নয়, তাহলে তা পেতে পারি সেই রাজ্যের পরিধির ভিতরেই শুধু যেখানে তার প্রতিভার প্রণালী ও বিকাশ তর্কাতীত। শেক্সপীয়রের কথাই ধরা যাক - তাঁর এক-একটি নাটক পড়তে পড়তে বোঝা যায়, মনোবৈজ্ঞানিকের কাছে যেমন করে পাই তেমন করে নয়, মানবচরিত্র ও মানুষের প্রদেশ সম্বন্ধে নানা রকম অর্থ ও প্রভূত সত্যের ইঙ্গিত পাওয়া গেল কাব্যের সমুদ্রবীজনের গভীরে গভীরে মুক্তোর মতো, কিংবা কাব্যের আকাশের ওপারে আকাশে স্বাদিত,

এ মাসের বই/ সেপ্টেম্বর ২০০৬ (১)/ ছোট্ট একটা স্কুল, পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলা

Image
ছোট্ট একটা স্কুল/ শঙ্খ ঘোষ উৎস গুগল ইমেজেস শিশু সাহিত্য সংসদের সামান্য ময়লা হলুদ রঙের মলাটে সবুজ গাছে ঘেরা লাল ছাদ আর তিনকোণা দরজার মাথাওয়ালা চকমেলানো স্কুলবাড়ির ছবি দেখে সেটা তুলে নিয়েছিলাম। কেনার সিদ্ধান্ত নিতে আরও সাহায্য করল বইয়ের দাম। ষাট টাকা মাত্র।  "স্বাধীনতার কয়েক বছর আগে থেকে যে-স্কুলটিতে” শঙ্খ ঘোষ পড়েছেন, তারই স্মৃতিচারণ নিয়ে তৈরি বই ছোট্ট একটা স্কুল। কিছু উল্লেখ দেখে বোঝা যায় স্কুলটা ওপারবাংলার, ব্যস, নামধাম আর কিছু জানা যায় না।   তবে বোঝা যায় যে স্কুলটা ভালো। বা বলা উচিত অন্যরকম। ভালো স্কুল আজকাল মোড়ে মোড়ে, চিলেকোঠায় চিলেকোঠায়, বেসমেন্টে বেসমেন্টে। তাদের সঙ্গে একে গুলিয়ে ফেললে বিপদ।এই স্কুলের দায়িত্ব যাদের হাতে তাঁরা অন্যরকম। তাঁরা সিলেবাসের বাইরের পড়া পড়ান, ছুটির পর ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থীদের শশা খাইয়ে স্পেশাল ক্লাস নেন, বসন্তের রাতে খোলা মাঠে গিয়ে পাঁচ ব্যাটারির টর্চের আলোয় ছাত্রদের কালপুরুষ, সপ্তর্ষি, ধ্রুবতারা চেনান। এই স্কুলে ক্লাসে ক্লাসে গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট বসানোর আইডিয়া আসে হেডমাস্টারমশাইয়ের মাথায়, কিংবা ইনভিজিলেটরহীন পরীক্ষার কথা। বো

সাপ্তাহিকী

"স্বপ্ন তো অনেক দেখেছি। তবে একবার একটা ইন্টারেস্টিং স্বপ্ন দেখেছিলাম। কেওড়াতলা শ্মশান থেকে যে সিঁড়িগুলো নেমে গেছে জলের দিকে, ওটাকে অনেকে আদি গঙ্গাও বলে থাকেন, ওখানে গঙ্গায়  জোয়ার ভাঁটা আসে। কেন জানি না ওই ঘাটটাকে নিয়ে আমি অনেক স্বপ্ন দেখেছি। যা হোক, স্বপ্নটা ছিল এইরকম, আমি দেখলাম সেই ঘাটটায় একটা নৌকো এসে দাঁড়িয়েছে। ওটা যেন ঘাট পেরিয়ে গঙ্গা, গঙ্গা থেকে মোহনা তারপর সমুদ্রে পড়বে। …তো আমি দেখছি ঘাটে একজন মেয়ে মাঝি সেই নৌকার পাটনি। সে-ই নৌকা বাইবে আর কি। চারদিকে খুব ভিড়। অনেক টেম্পো বোঝাই জিনিসপত্র। এমন সময় দেখি ভিড় ঠেলে বঙ্কিমচন্দ্র আসছেন, সেই মাথায় শামলা যেমন সাজতেন আর কি। তাঁকে দেখেই মেয়ে মাঝি স্পষ্ট বীরভূমের ভাষায় বলল, আপনি ধড়াচুড়ো ছেড়ে আসেন কেনে। উনি তাড়াতাড়ি সব ছেড়ে-টেড়ে একটা খেটো ধুতি পরে এলেন।…। …এরপর রবীন্দ্রনাথ। তাঁর সঙ্গে বহু মালপত্র। তাঁকেও মাঝি এত জিনিসপত্র নিয়ে উঠতে দিলেন না। শুধু হাতে একটা চটি বই, সম্ভবত চতুরঙ্গ হবে, নিয়ে উঠে পড়লেন তিনি। সবচেয়ে হাইট হয়েছিল শরৎচন্দ্রের বেলায়। তাঁকে তো মাঝি সরাসরি বলেছিল, তুমি বাপু পরের খেপে। …পরের খেপ শোনার সঙ্গে সঙ্গে তীরে দা