Posts

Showing posts from May, 2017

গত সাড়ে তিন মাসে

Image
কিছু পছন্দের লিংক জমেছিল, এই রইল।  উৎস বন্ধুত্ব । আমার মতে পৃথিবীর সবথেকে ওভারহাইপড সম্পর্ক।  আইফেল টাওয়ার এরই মধ্যে বারদুয়েক বিক্রি হয়েছে জানতেন? যিনি বিক্রি করেছেন তাঁর সম্পর্কে জানতে হলে ক্লিক করুন। এরকম একটা সমীক্ষা বাংলায়ও করা যেতে পারে। যে বইগুলো সকলেই পড়েছে দাবি করেছে, কিন্তু আসলে পড়েনি। ক্রাইম রাইটারস’ অ্যাসোসিয়েশন-এর ছশো লেখকের মতে ' বেস্ট ক্রাইম নভেল এভার '? লিংকে ক্লিক করার আগে সমাধান করার চেষ্টা করুন দেখি? ক্লু হচ্ছে, ভেজিটেবল ম্যারো, চার্লস কেন্ট, ডিকটাফোন। পড়ুয়ারা ভালো গোয়েন্দা হয়। পড়ুয়ারা ভালো হিংসুটেও হয়। লাইব্রেরি নিয়ে কত লড়াই হয়েছে ইতিহাসে, পড়ে আমার চোখ কপালে। একে অপরের বই লেখা ডকে তোলার জন্য কাগজের সাপ্লাই বন্ধ করা পর্যন্ত। মেল হ্যারাসিং অ্যাভয়েড করার একটা স্ট্র্যাটেজি। ভ্যাজাইনা আর ভালভার পার্থক্য জানেন? না জানলে জেনে নিন। এই সেদিন বাড়ি পরিষ্কার নিয়ে অত কথা লিখলাম, তাই কিনব না। কারণ ফাইন্যালি এগুলো জঞ্জাল ছাড়া কিছু না। তা যদি না হত, তাহলে আমি মুখ মোছার জন্য এই রুমালটা কিনতাম। আর পেন রাখার জন্য এই পেনদানি

এ মাসের বই/ মে ২০১৭

Image
Into the Water/Paula Hawkins বই ছাপা হয়ে বেরোলো আর আমি লাফিয়ে পড়ে সে বই কিনে পড়ে ফেললাম, এ প্রায় ঘটেই না। পলা হকিন্সের ‘ইনটু দ্য ওয়াটার’-এর ক্ষেত্রে সেটাই ঘটল। পলা হকিন্স হচ্ছেন ‘দ্য গার্ল ইন দ্য ট্রেন’-এর বিখ্যাত লেখক। আমার ‘দ্য গার্ল ইন দ্য ট্রেন’ রীতিমত ভালো লেগেছিল, তাই ইনটু দ্য ওয়াটার পড়ব ঠিকই করে রেখেছিলাম। সিদ্ধান্ত নিতে বেগ পেতে হয়নি। ইংল্যান্ডের উত্তরে বেকফোর্ড নামের এক ছোট্ট গ্রাম। সেই গ্রামে থাকত জুলস এবং নেল নামের দুই বোন, তাদের বাবামায়ের সঙ্গে। সদ্ভাব কখনওই ছিল না, বড় হওয়ার পর দুই বোনের সম্পর্কছেদ হয়। মূলত, ছোটবোন জুলসেরই উদ্যোগে। নেল কেরিয়ারে নাম করে, বেকফোর্ড ছেড়ে বেরিয়ে সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়ায়, এবং কিছুদিন পর নিজের মেয়েকে নিয়ে বেকফোর্ডে ফিরে এসে, পুরোনো বাড়িতে থাকতে শুরু করে। বেকফোর্ডে ফিরে আসার একটা বিশেষ কারণ নেলের ছিল। বেকফোর্ড-এর একটা কুখ্যাতি ছিল জনমানসে। গ্রামের পাশ দিয়ে বইত এক নদী। একটি বিশেষ বাঁকে, নদী প্রায় সবদিক থেকে অবরুদ্ধ ছিল আর একদিক থেকে উঠে গিয়েছিল খাড়া পাথরের দেওয়াল। সেই নদীর বদ্ধ অংশটুকুকে সবাই জানত ‘ড্রাউনিং পুল” নামে। দেওয়ালের ওপর

কেটলি ও কপোলকল্পনা

এখনও সবকিছু শান্ত, ফ্যানের ঘরঘর আর বাড়িওয়ালার পাম্পের আওয়াজ (আর আমার টাইপিং-এর খটাখট) ছাড়া চারদিক শব্দহীন। অর্চিষ্মান ঘুমোচ্ছে। আমার ভোরের কোটা দু’কাপ চা হয়ে গেছে, ও উঠলে ওর সঙ্গে আরেক কাপ খাব। মিনিটকুড়ি আবোলতাবোল আড্ডা দেব, ব্যস। তারপর একটা দক্ষযজ্ঞ বেধে যাবে।   আজ আমাদের বাড়ি গোছানোর দিন। অনেকদিন আগেই এই দিনটা আসা উচিত ছিল। করছি করব বলে ঠেলে রেখেছি। আর ঠেলব না। সারা সপ্তাহ ধরে নিজেদের প্রস্তুত করেছি। চ্যাটবাক্সে গানের লিংক চালাচালি করার আগেপিছে মনে করিয়েছি, "মনে আছে তো? এই উইকএন্ডেই কিন্তু… " প্রথমে হাত দেব ওয়ার্ডরোবে। টান মেরে জামাকাপড়গুলো ফেলব। অফিসে যাওয়ার দুটো জামা থাকবে, বাড়িতে পরার দুটো। বালিশ, গদি সরিয়ে খাটের গহ্বরের হাঁ খুলব। তিনটে সুটকেস, পাঁচটা লেপ, সাতটা বালিশ, সতেরোটা বিছানার চাদর। হ্যাঁচকাটানে ড্রয়ার খুলব একে একে। কান ধরে ধরে সামনে আনব ঘাপটি মেরে থাকা যত বিল, রসিদ, পুরোনো ডায়রি। দুমদুম পা ফেলে যাব রান্নাঘরে। সংসারে দুটো লোক। তাদের ছ’টা থালা, তেরোটা বাটি, পনেরোটা চায়ের কাপ। আজকের পর আর থাকবে না। নেক্সট, ফ্রিজ। ফ্রিজের দরজায় যে সব সরুমোটা সাদাকালো শিশ

টাফিদের আড্ডায়

সে মেধা নেই, সে নোবেল নেই, সে সি পি এম নেই, এমনকি সে আড্ডাও নেই। নেই নেই আর্তনাদ ছাড়া আর কিছু নেই বাঙালির। আড্ডার না থাকাটা সবথেকে বড় আফসোস। নোবেল, জ্ঞানপীঠ, ম্যাগসেসে, পলিটব্যুরোর সদস্যপদ, বসের পিঠচাপড়ানি, ফর্সা + রবীন্দ্রসংগীত জানা বউ, অ্যামেরিকার স্কলারশিপ, বাঙালি যতটুকু যা পেয়েছে, সব নাকি আড্ডা মেরেই পেয়েছে। অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতনের মাঠে আড্ডা দিতেন, তবে না অক্সফোর্ড কেম্ব্রিজ হার্ভার্ড, শান্তিদেব ঘোষ আর সুচিত্রা মিত্র কালোদার দোকানে বসে আড্ডা দিতেন, তবে না গলায় অমন দাপট। ছ’নম্বর প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিটের আড্ডার দৌলতেই না যত আনন্দ, রবীন্দ্র, সাহিত্য অ্যাকাডেমি, জ্ঞানপীঠ।  তবে একেবারে কি নেই? আছে এদিকসেদিক ঘাপটি মেরে। আমাদের বাড়ির সামনেই একটা আছে। বিশুদ্ধ বাঙালি আড্ডা। ওই যে মোড়ের মাথায় বাড়ির (যার নেমপ্লেটে সারিসারি নাম আর প্রতিটি নামের পাশে নামের থেকেও বেশি জায়গা জুড়ে ‘আই আই টি’ লেখা), তার সামনের কংক্রিটের ঢালু হওয়া অংশটুকুতে আর রাস্তার ওপারে জমে ওঠা বালির পাহাড়ে ভাগ ভাগ হয়ে আড্ডা বসে। কখনও কখনও আড্ডা তর্কের আকার নেয়, তার চিৎকার পাঁচশো মিটার দূরের আমার এই ভাড়াবাড়ির দোতলাতে

ল্যান্ডোর ৩/৩

Image
পাহাড়ে গেলে প্রশ্নটা অবধারিত ওঠে। এখানে থেকে যেতে পারবে? এই গুটিকয়েক মানুষ আর অনেক গাছের মধ্যে? ঝিঁঝিঁর ডাক আর প্রজাপতির মধ্যে? আপনি যদি বলেন, থাকা না থাকার ডিসিশন তো ওভাবে নেওয়া যায় না, চাকরি পেতে হবে, তাছাড়া বাড়ির লোক কে কোথায় থাকবে, তারা সঙ্গে থাকতে চাইবে কি না, ছেলেমেয়েদের স্কুল কী হবে, বাবামা কী বলবেন, পাড়াপড়শি কী বলবে, তাহলে উত্তরটা বাস্তবধর্মী এবং বোরিং হবে। বেড়াতে গিয়ে বোরিং উত্তরের কোনও জায়গা নেই। উত্তর দিতে হবে স্পষ্ট হ্যাঁ কিংবা না-তে।  আমি সবসময় বলি, পারব। চারদিকে ঝিঁঝিঁ ডাকবে, ঝুপঝুপ বৃষ্টি পড়বে যখনতখন, আমি বারান্দায় বসে চা খাব, বরফি দৌড়ে দৌড়ে প্রজাপতি তাড়াবে, না পারার কী আছে? অর্চিষ্মান সবসময় বলে, না বাবা, আমি পারব না। একদিন ভালো লাগবে, দু’দিন ভালো লাগবে, তিনদিনের দিন ঠিক দু’নম্বর মার্কেটের এগরোলের জন্য মন হু হু করবে।  আপনি পারবেন, নিরিবিলি পাহাড়ে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে? ল্যান্ডোরের লোকেরা শহরের কথা বললে বুঝে নিতে হবে, মুসৌরির কথা হচ্ছে। মুসৌরি থেকে ল্যান্ডোর ওঠা যত কষ্টের, ল্যান্ডোর থেকে মুসৌরি নাম ততই সোজা। নাকবরাবর নেমে যাও। অন্তত মিসেস ভাট্টি তাই

ল্যান্ডোর ২/৩

Image
পাহাড়ে , বিশেষ করে ল্যান্ডোরের মতো নিরিবিলি পাহাড়ে আমার আসতে ইচ্ছে করে দু ’ তিনটে কারণে । প্রথমত , দৃশ্যপট পরিবর্তন । যা রোজ দেখি , তার থেকে অন্য দেখা । আমার মুখ , তোমার মুখ , বসের মুখের বদলে গাঢ় পাহাড় , ফ্যাকাসে পাহাড় , নীল পাহাড় , সবুজ পাহাড় । দুদিকে হাত ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকা থাকা পাইনের বন , লাল ছাদের সারি । রোদচিকচিক মাকড়সার জাল । হলুদ প্রজাপতি । দ্বিতীয় কারণ , গন্ধ । বাড়িতে মোটামুটি একটা গন্ধহীন অবস্থার মধ্যে দিনরাত কাটাই বলা যেতে পারে । সকালবেলা একবার ওলাক্যাবের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকার সময় কুড়া সংগ্রহের গাড়ি থেকে রাতভর জমে , ফুলে , ভেপসে ওঠা ডাল , মাছের কাঁটা , তরমুজের খোসার গন্ধ । বিকেলে একবার বাজারের মেছো গন্ধ। আর কিছু সিজনাল গন্ধ। জানুয়ারি মাসের রেজলিউশন সিজনে প্রায়ই অফিসের এ ডেস্ক ও ডেস্ক থেকে কাঁচা পেঁয়াজ দেওয়া স্যালাডের গন্ধ আসে। আর কখনও কখনও , অটোয় বসে থাকা অবস্থায় ছাতিমের ঘ্রাণ । ব্যস। পাহাড়ে এলে গন্ধের ভ্যারাইটি যে খুব বাড়ে তেমন নয় , মূলত গাছের গন্ধ। সেটা বর্ণনা করা খুব শক্ত ।   ঠাণ্ডা , সবুজ রঙের গন্ধ। ল্যান্ডোরে পাইনি , অন্য অনেক পাহাড়ে অনেকসময় কাঠের