Posts

Showing posts from October, 2013

The Man Who Planted Trees

আজকের ভিডিওটার দৈর্ঘ্য সা মান্য বড়। পুরো তিরিশ মিনিট আট সেকেন্ড। তবে যদি খেয়াল রাখেন যে এটা আসলে একটা ছোট গল্পের চিত্ররূপ, তাহলে এটাকে একটি মিনি সিনেমা বলে ধরে নিতে পারবেন, আর দৈর্ঘ্যের ব্যাপারটাও জাস্টিফাই করতে সুবিধে হবে। গল্পটা আসলে ফ্রেঞ্চে লেখা, নাম   L'homme qui plantait des arbres ।   লেখকের নাম  Jean Giono । গল্পের স্থান আল্পসের পায়ের তলার এক উপত্যকা, কাল বিংশ শতাব্দীর শুরু, পাত্র এক রাখাল। রাখাল বলতে যে চেহারাগুলো আমাদের মনে ভেসে ওঠে, এক, দুষ্টুমিষ্টি বাচ্চা ছেলে মাঠে বসে বাঁশি বাজাচ্ছে নয়তো মিছিমিছি ‘বাঘ! বাঘ!’ বলে চেঁচিয়ে লোক ডেকে আমোদ পাচ্ছে, (যদিও এ বেচারা রাখালের পরিণতিটা বিশেষ আমোদজনক নয়) আমাদের গল্পের রাখাল এ দু’জনের একজনের মতোও নয়। বান্টি কোকের বোতলে চুমুক দিয়ে বলল, 'রাখাল বলতে তোমার খালি এই চেহারা মনে পড়ে? আর এরপরেও তুমি নিজেকে বাঙালি বুদ্ধিজীবী বলে দাবি কর?' আমি খানিকক্ষণ ভ্যাবাচাকা খেয়ে থাকলাম, তারপর মনে পড়ে গেল। বান্টি সেইসব মধ্যরাত্রির রাখালদের কথা বলছে, রবীন্দ্ররচনাবলীতে লাথি মেরে যারা কলকাতা শহরের রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে বেড়া

জেঠু, গোবিন্দ আর পুঁটের গল্প

লাক্ষাদ্বীপ-জেঠুকে আমরা সবাই জেঠু বলে ডাকতাম বটে, কিন্তু দাদু ডাকলেও খুব বেমানান কিছু হত না। বছর দুয়েক আগে, প্রায় একশো বছর কমপ্লিট করে জেঠু মারা গেছেন। যৌবনে লাক্ষাদ্বীপে চাকরি করতে গিয়েছিলেন, সেখানেই সংসার পেতে, ছেলেমেয়ে মানুষ করে, শেষকালে আমাদের বাড়ির উল্টোদিকে এসে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। জেঠুর সঙ্গে এসেছিলেন জেঠিমা, তাঁদের মেয়ে, মেয়ের জামাই, ছোটছেলে, ছোট ছেলের বউ। মেয়ে উত্তরপাড়ায় ফ্ল্যাট কিনে সংসার পাতল, ছোটছেলে বউসহ এবাড়িতেই থাকল। জেঠুর বড়ছেলে লাক্ষাদ্বীপের মেয়ে বিয়ে করে ওখানেই সেট্‌ল্‌ করেছে, তার আর এদিকে আসার আশা নেই। কোনও বছর পুজোয় বাড়িতে থাকলে জেঠুজেঠিমাকে বিজয়ার প্রণাম করতে যেতাম। জেঠুর তখন বয়স নব্বই পেরিয়ে গেছে। শরীর গেছে, মাথারও যেতে বিশেষ বাকি নেই। প্রণাম সেরে, দাঁতভাঙা নাড়ু চুষতে চুষতে একঘণ্টা ধরে তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গার বিভিন্ন রকম ব্যথাবেদনার বিবরণ শুনতে হত। পুরোটাই যে বাধ্যবাধকতা তা নয়। ব্যথার কথা শেষ হলে জেঠু ঝুলি থেকে আরও নানারকম ইন্টারেস্টিং গল্প বের করতেন। তাদেরই অপেক্ষায় বসে বসে টাইমপাস করা আর কি।    ‘তোমরা তো সব ছেড়েছুড়ে চলে গেল

বইয়ের ব্যাপারে

আমার মতে, আবহাওয়ার পরেই যে বিষয়টা নিয়ে কথা বলা সবথেকে সোজা সেটা হল বই। কারণ বই নিয়ে সকলেরই কিছু না কিছু বলার থাকে। থাকে বলেই আবার বই নিয়ে কথা বলাটা শক্তও বটে। বিশেষ করে বাঙালি সমাজের যে ক্রস্‌-সেকশনটা থেকে আমি এসেছি, চালকলাবাঁধা শিক্ষায় শিক্ষিত বাঙালি, তাদের সঙ্গে তো ভীষণ শক্ত। কুকুর যেমন গায়ের গন্ধ শুঁকে লোক বিচার করে, আমরা তেমনি বুকশেলফ্‌ দেখে লোক বিচার করি। আমি অন্তত করি। পৃথিবীর যে কোনও দাঁড়িপাল্লার থেকে বইয়ের দাঁড়িপাল্লা আমার ফেভারিট। এ ব্যাপারে একটা কথা পরিষ্কার করে দেওয়া ভালো, মাপামাপির মধ্যে কিন্তু জাজমেন্টের থেকে মিলিয়ে নেওয়ার ভাবটাই বেশি। কেউ যদি চব্বিশ ঘণ্টা পাওলো কোয়েলহো পড়েন, আর কেউ যদি চমস্কি ছাড়া কিছুই পড়েন না, তাহলে আমার বুঝতে সুবিধে হয় যে দুজনের কেউই আমার “টাইপ” নন। ব্যস্‌, সেটুকুই। টাইপ না হলে ক্ষতি তো কিছু নেই। একেকজন একেক টাইপের হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। এই প্রসঙ্গে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর এক ইন্টারভিউতে শোনা একটা কথা মনে পড়ে গেল। অবান্তরে আগে বলেছি বোধহয়, তবু আবার বলছি। নীরেন্দ্রনাথের ঠাকুমা নাকি বলতেন, পাঁচশোটা লোক যদি পাঁচশো টাইপের হয় ত

মোনালিসা

Image
প্যারিসে এসেছি দু ’ সপ্তাহ কেটে গেছে , আর তিন-তিনটে উইকএন্ড। এখনও লুভ্‌র্‌ দেখা হয়নি। আত্মীয়স্বজনের কাছে মুখ দেখানো কঠিন হয়ে উঠেছে। শেষরাতে বাবা ফোন করে বলছেন, এখনও যে গেলি না, একদিনে যদি কভার করতে না পারিস, দ্বিতীয়বার যাওয়ার সময় হাতে রাখতে হবে তো। আমি কোনওমতে হাই চেপে বলছি , বাবা এখনও দেড়মাস বাকি আছে। বাবা বলছেন , দেড় মাস কত তাড়াতাড়ি কাটে সেটা খেয়াল আছে তোর ? তুই গেছিস ক ’ দিন হল ? জুন , জুলাই , সেপ্টেম্বর , অক্টো...এই তো চার মাস হয়ে গেল , দেড় মাস হতে কতক্ষণ ? স্থির করলাম , এই উইকএন্ডেই একটা এসপার-ওসপার করতে হবে। একটাই রক্ষা , হোমওয়ার্কটা করা ছিল। কীভাবে যেতে হবে , কোথায় যেতে হবে , কখন যেতে হবে। লুভ্‌র্‌ খোলা থাকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছ ’ দিন। সব দিন নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই , শনিরবিবার মিউজিয়াম খোলে সকাল ন ’ টায় , বন্ধ হয় ছ ’ টায়। মিউজিয়ামে কী কী দেখব সে অনুযায়ী বিভিন্ন দামের টিকিট পাওয়া যায়। আমি পার্মানেন্ট কালেকশনটাই দেখব , তাই দাম পড়বে মোটে বারো টাকা। অবশ্য পকেট থেকে একটি পয়সাও খরচ না করে লুভ্‌র্‌ দেখা যায় , প্রতি মাসের প্রথম রবিবার