Posts

Showing posts from December, 2017

ছবিতে ২০১৭

Image
জানুয়ারি বছরের এর থেকে ভালো শুরু আর হতেই পারত না। গোয়ার সেই দুপুরের আরামটা এখনও মনে করতে পারি। এই গোয়াতেই হানি লেমন জিঞ্জার ‘টি’-এর মাহাত্ম্য প্রথম অনুধাবন করি। এখন এই পোস্ট লেখার সময়েও এক গ্লাস লেমন জিঞ্জার ‘টি’ পাশে রাখা রয়েছে।   ফেব্রুয়ারি খিড়কি গাঁওয়ের রুস্তম’স ক্যাফে অ্যান্ড বেকারি এখন বন্ধ হয়ে গেছে। ওই দোকানটার শান্তি, জাফরি দিয়ে এসে পড়া রোদ আর পোহা, মনে আছে এখনও। মার্চ   নিষিদ্ধ নগরী। এপ্রিল মাসে প্রায় কিছুই ঘটেনি।   মে ল্যান্ডোর। ১ , ২ , ৩ । জুন সারাহান । রকশম-চিৎকুল। জুলাই ম্যাগপাই মার্ডারস। আমার এবছরের পড়া সেরা বই। আগস্ট নিন্দেমন্দয় ছাওয়া। মেঘনাদবধ কাব্য। আনন্দমেলা ১। আনন্দমেলা ২। সেপ্টেম্বর বাড়ি গেলাম। ইরার সঙ্গে দেখা হল। সপ্তমীতে অঞ্জনের সঙ্গে। অক্টোবর আবার অকিঞ্চিৎকর। নভেম্বর থিয়েটার ওয়াকে হাঁটা হল।  পুরোনো দিল্লিতে খাওয়া হল। পাসপোর্ট হারালো। ফিরলো।   ঠাকুমা চলে গেলেন। ডিসেম্বর একটা জিনিস শেখালো। আমার স্মরণযোগ্য অতীতে অবান্তরের কোনও পোস

একটি ভালো সিনেমা

Image
কোনও সিনেমার প্রথম দৃশ্যে যদি তাঁতের শাড়ি, সুতির পাঞ্জাবী, মার্বেলের মেঝে আর সে মেঝের ওপর বাবু হয়ে বসা গান গাওয়া বালক থাকে, তাও আবার যে সে গান না, একেবারে ‘সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা’, তাহলে আপনার কী মনে হয় আমি জানি না, আমার আর কোনও সন্দেহই থাকে না সিনেমাটা ভালো।   আর এই ভালো সিনেমাটাই কি না রিলিজ করার সাত মাস পরেও আমার না-দেখা পড়ে ছিল। আরও কত মাস পড়ে থাকত কে জানে যদি না অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে (ব্যোমকেশের ভূমিকায়) দেখার জন্য ফোনে হইচই অ্যাপ ডাউনলোড  করতাম। সে অ্যাপের কল্যাণে অনির্বাণ ভট্টাচার্য ছাড়াও আরও অনেককিছু দেখা হল। 'বৌদি ডিটেকটিভ’ মার্কা হইচই অরিজিন্যাল ওয়েবসিরিজ দেখা হল, পুরোনো সিনেমার মধ্যে সাড়ে চুয়াত্তর, চিড়িয়াখানা, নতুনের মধ্যে খোঁজ, ক্ষত, খাদ ইত্যাদিও বাদ গেল না। কিন্তু বছরের শেষে হইচই অ্যাপের কাছে যে কারণে সবথেকে বেশি কৃতজ্ঞ বোধ করছি তা এই ভালো সিনেমাটার জন্য। যার ভালো তার সবই ভালো, এমনকি নামটাও। আমার ফেভারিট তরকারি আর এই সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র বাচ্চা ছেলেটির নাম একই, পোস্ত। (বাই দ্য ওয়ে, বিপাশা বসুর কুকুরের নামও পোস্ত, জানতেন?) আজকাল পশ্চ

কয়েকটা লিংক

আন্তর্জাতিক চা দিবসে বৈজয়ন্তী এই লিংকটা পাঠিয়েছিলেন।   All writers belong to the class of non-orators,                                                                          —Thomas Mann ওপরের উক্তিটি যে রচনাটা থেকে নেওয়া সেটা খুব বেশি লোকের কাজে লাগবে বলে মনে হয় না, তবু রইল। অকাজের জিনিস জানতে বাধা নেই।   অভিধানে নতুন শব্দ কী করে ঢোকে জানতে হলে ক্লিক করুন।   আগাথা ক্রিস্টির অনুরাগীদের ডেইজি আর্মস্ট্রং নামটা চেনা লাগতে পারে। এই ডেইজি আর্মস্ট্রং-এর কিডন্যাপিং-এর ঘটনাটা নাকি আগাথা ক্রিস্টি একটি সত্যি অপহরণের ঘটনার ওপর ভিত্তি করে লিখেছিলেন।   শার্লক হোমস আসলে কে বলুন তো? যদি ইচ্ছে হয় নতুন বছরে এর মধ্যে কিছু কিছু পদক্ষেপ নিয়ে দেখতে পারেন। প্লিজ, অ্যাভিড হওয়ার দরকার নেই, বইপত্রের সঙ্গে সামান্য পরিচয় আর চোখকান খোলা থাকলে এই কুইজে সবাই একশোয় একশো পাবে।  

রেজাল্ট ও রেজলিউশন

Image
মা ফোন ছেড়ে দেওয়ার পর সেই প্রশ্নটা মনে পড়ল যেটা কাল থেকে করব করব করে করা হচ্ছে না। আবার ফোন করলাম, পরিশীলিত বাংলায় এক ভদ্রমহিলা জানালেন, মায়ের ফোন নেটওয়ার্কের বাইরে। ভাবলাম বাড়ির ফোনে ফোন করি, কিন্তু আমার প্রশ্নটা সকাল ছ’টার সময় ঝ্যাং ঝ্যাং করে সারা বাড়ি কাঁপিয়ে ল্যান্ডলাইন বাজানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ ছিল। আবার মোবাইলে ফোন করাই সাব্যস্ত করলাম। তবে এবার নম্বর ম্যানুয়ালি টাইপ করে। কয়েকটা নম্বর আমি মাঝে মাঝেই ম্যানুয়ালি টাইপ করে ফোন করি, নম্বরগুলো মুখস্থ আছে কি না দেখে রাখার জন্য। মায়ের নম্বর, বাবার নম্বর, অর্চিষ্মানের নম্বর, রিষড়ার ল্যান্ডলাইন ইত্যাদি। এ ছাড়াও পাড়ার কিছু লোকের (বুচিদিদিদের) ল্যান্ডলাইন নম্বর আপসেই মনে থেকে গেছে, আর ছোটমামারও। তবে সেগুলো বিনা প্র্যাকটিসেই।   যাই হোক, আমার মুখস্থবিদ্যার কথা থাক, যা বলছিলাম তাতে ফেরৎ আসি। টাইপ করার পরিশ্রম বৃথা গেল না, ইট’স রিংগিং। কিন্তু বাজছে তো বাজছেই। একমিনিটের মধ্যে ফোন থেকে কতদূরে যেতে পারেন মা? এই সব ভাবছি আর ভাবছি এই ঘটনাটাকে, মাকে ফোনে চাওয়ামাত্র না পাওয়াটাকে, সক্কালসক্কাল কতদূর মেজাজ খারাপ করার পা

এ মাসের বই/ নভেম্বর ২০১৭

Image
Do Androids Dream of Electric Sheep?/Philip K. Dick উৎস গুগল ইমেজেস “Kipple is useless objects, like junk mail or match folders after you use the last match or gum wrappers or yesterday's homeopape. When nobody's around, kipple reproduces itself. For instance, if you go to bed leaving any kipple around your apartment, when you wake up the next morning there's twice as much of it. It always gets more and more." [...]"There's the First Law of Kipple," [...] "'Kipple drives out nonkipple.' [...]"No one can win against kipple," he said, "except temporarily and maybe in one spot, like in my apartment I've sort of created a stasis between the pressure of kipple and nonkipple, for the time being. But eventually I'll die or go away, and then the kipple will again take over. It's a universal principle operating throughout the universe; the entire universe is moving toward a final state of total, absolute kip

বিশ্ব চা দিবসে

Image
অবান্তরের সকল চাপ্রেমী কমরেডদের আমার প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা জানালাম। নিজে ঘন ঘন চা খান, অন্যদেরও খাওয়ান।   বিশ্ব চা দিবস

৩৭

আমার ঠাকুরদা কংগ্রেসকে ভোট দিতেন এবং বিশ্বাস করতেন নোয়ার নৌকায় যদি মানুষের স্পেসিমেন হিসেবে কাউকে কখনও চাপানোর দরকার পড়ে, তাহলে সেটা ইন্দিরা গান্ধী ছাড়া অন্য কারও হওয়া উচিত না। কেউ খুব দেমাক নিয়ে চললে তিনি জানতে চাইতেন (হোপফুলি উক্ত ব্যক্তির আড়ালে, তবে কিছুই বলা যায় না), ‘নিজেকে কী মনে করে, ইন্দিরা গান্ধী?’ চেনাশোনার মধ্যে কারও জন্মদিন পালন হচ্ছে শুনলে মন্তব্য করতেন, ‘ইন্দিরা গান্ধী নাকি যে জন্মে উদ্ধার করে দিয়েছে?’ নিজে ব্লগ খুলে, নিজেই সবাইকে হেঁকেডেকে নিজের জন্মদিন মনে করাচ্ছি জানলে দাদু কী বলতেন আমি কল্পনা করতে চাই না।   আমি সত্যি ভেবেছিলাম চোদ্দই ডিসেম্বরের নিয়মরক্ষা পোস্টটা এবার এড়িয়ে যাব। কী নিজেই নিজের জন্মদিন পালন করা, তাছাড়া বয়সটাও তো বলার মতো কিছু না। সাঁইত্রিশ। এত আনরোম্যান্টিক, এত বোরিং, এত তুচ্ছ, তাৎপর্যহীন বয়স মানুষের জীবনে আর দুটো খুঁজলে পাওয়া যাবে না বলে আমার বিশ্বাস। কোনও সাঁইত্রিশ বছর বয়সী রকস্টারের কথা শুনেছেন? সাঁইত্রিশ পূর্ণ করে কেউ বোধি প্রাপ্ত হয়েছে জানা আছে? কোনও সরকারি চাকরির সময়সীমা সাঁইত্রিশ হতে দেখেছেন? কোনও সাহিত্য/ কলা/গণিত/বিজ্ঞানের প্রাইজ

মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস

Image
অর্চিষ্মান একবার বলার চেষ্টা করেছিল, রিভিউ ভালো নয় কিন্তু। কিন্তু ও-ও জানত, 'মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস' সিনেমা হয়ে বেরিয়েছে যখন আমি দেখব। ক্রিটিকে, দর্শকে কী বলল তোয়াক্কা না করেই। শনিবার সাড়ে বারোটার শোয়ের টিকিটের দাম মোটামুটি ভদ্রলোকের মতো দেখে আমরা রওনা দিলাম। টিকিট অনলাইন কাটা যেত, কিন্তু সে ক্ষেত্রে ‘কনভেনিয়েন্স ফি’ বলে একটা জিনিস হয়, সেটা আমার চরম অসুবিধেজনক লাগে। তাছাড়া আমার ভরসা ছিল, ফুকরে রিটার্নস রিলিজ করেছে, থরঃ রাগনারোক চলছে, এই বাজারে বেশি লোক পোয়্যারো নিয়ে উৎসাহী হবে না। ভরসা বিফলে যায়নি,হলে গিয়ে টিকিট পেতে কোনও অসুবিধেই হয়নি।   প্রায় আধঘণ্টা ধরে ট্রেলার আর অ্যাড চলার পর মার্গসংগীতের ছোঁয়া লাগানো জনগণমন বাজিয়ে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি করে সিনেমা শুরু হল। পবিত্র শহর জেরুজালেমে একটি রহস্যের সাফল্যের সঙ্গে সমাধা করে (বইয়ের সমস্যাটির সঙ্গে সিনেমার সমস্যাটির মিল নেই) পোয়্যারো লন্ডনে ফিরছেন, ইচ্ছে ফেরার আগে ইস্তানবুলে ক’টা দিন বিশ্রাম নিয়ে যান। কিন্তু খবর আসে, আরেকটি রহস্য সমাধানের জন্য পোয়্যারোকে অবিলম্বে লন্ডনে ফিরতে হবে। ট্রেন কোম্পানির কর্তা মঁসিয়র ব

কয়েকটা লিংক ও চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের হুইলার্স স্টল

Image
The best things in life happen to you when you’re alone.                                                                           —Agnes Martin দ্য অরিজিন্যাল গন গার্ল।   গত বছরে শেখা ৫২টি তথ্যের এই তালিকাটি ইন্টারেস্টিং। ভারতসংক্রান্ত যে তথ্যটি লেখক জেনেছেন সেটা হল, Unscrupulous mobile phone recharging stations in Uttar Pradesh, India, are selling the phone numbers of female customers to male customers, who use them to harass the women. Numbers cost from Rs 50 (60p) to Rs 500 (£6) depending on how attractive the victim is. [ Snigdha Poonam ] এই সোজা কথাটা মনে রাখা শক্ত।  দ্য আদার সাইড ইজ নট ডাম্ব। টেকনোলজি থাকলে বিশ্বসাহিত্যে যা যা   গোলমাল ঘটতে পারত।   রাশিয়ান সাহিত্যের কয়েকটি শিক্ষা যা আপনার কাজে লাগলেও লাগতে পারে।  গাছ পোঁতা হয়েছে, একশো বছর পরে তাদের কেটে কাগজ হবে, সেই দিয়ে বই হবে। হতে পারে অভিনব ব্যাপার, তবে আমার খবরটা শুনে মনখারাপ হল, এ যেন বলির আগে পাঁঠাকে কাঁঠালপাতা খাওয়ানো।   ডাইনোসরের প্রতি আমার ভালোবাসা আছে (মুখোমুখি আমি পড়তে চাই ন

গত সপ্তাহে

Image
আমি তৈরি হয়েই গিয়েছিলাম। গেট খুলতে খুলতে বারান্দাটা দেখব, যে বারান্দায় বসে বসে ঠাকুমা মশা মারতেন, দু’পাশের বাগান দেখব, ঠাকুমার লাগানো, যত্ন করা গাছে ভরা বারান্দা পেরিয়ে সদর ঘর দেখব, ঘরের তক্তপোশে আমি আর ঠাকুমা শুয়ে থাকতাম পাশপাশি, বাঁয়ে বেঁকে অযৌক্তিক বারান্দাটা পেরিয়ে আলনা দেখব আর আলনার পাশে পর্দা সরিয়ে ঠাকুমার ঘর দেখব। এ ঘরের বিছানায় গত পাঁচ বছর ধরে ঠাকুমা শুয়ে ছিলেন। শুয়ে শুয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। আমি বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও অনেকক্ষণ তাঁর কাছে না গেলে আমাকে ‘সোনা সোনা’ বলে ডেকেছেন। ওই ঘরের জানালার শিকের মধ্য দিয়ে বিশ্বের খবর নিয়েছেন এবং দিয়েছেন।   আমি তৈরি ছিলাম এসব দেখলেই আমার চোখে জল আসবে। যেটার জন্য আমি তৈরি ছিলাম না (যদিও থাকা উচিত ছিল) সেটা হচ্ছে ওই বাড়িতে এখন অন্তত দশজন লোক বাড়তি থাকবেন। আরও জনা দশেক রোজ আসাযাওয়া করবেন। ঠাকুমার খাট দেওয়ালের দিকে ঠেলে দিয়ে মেঝেতে ঢালাও বিছানা পাতা হবে। তেরোদিনের জন্য যাঁদের খাটে শোওয়া বারণ হয়ে গেছে তাঁরা তো মাটিতে শোবেনই, যাদের বারণ নয় তারাও কমরেডারি দেখিয়ে বেতো হাঁটু নিয়ে এই ডিসেম্বরের শীতে মেঝেতে শয্যা পাতবেন। আতপচালের ফেনাভাত আর স

এখনতখন

Image
ঘণ্টাখানেক হল ঘরে ঢুকেছি। সবাইকে ফোন করে নিশ্চিন্ত করে, হাতপা ধুয়ে, জামা ছেড়ে, টিভি চালিয়ে, কেটলিতে জল বসানো হয়ে গেছে। অবান্তরে চারখানা পোস্ট লেখার মতো কথা জমেছে গত চারদিনে। সে সব কথা, মনে হওয়া, মনে পড়া, মাথার ভেতর জট পাকিয়ে, বুকের ভেতর দলা পাকিয়ে রয়েছে এখন। তাদের ঝেড়েবেছে বাক্যে প্যারাগ্রাফে সাজাতে সময় লাগবে, হয়তো সাজানো হবেও না। তাই আপাতত চট করে এই কয়েকটা ছবি দেখিয়ে নিই আপনাদের। আপনারা সবাই ভালো আছেন আশা করি। শিগগিরই আগের ছন্দে দেখা হচ্ছে।