P মোড
অনেকদিন
ধরেই ভাবা হচ্ছে ঝুল ঝেড়ে দেখা দরকার ক্যামেরাটা এখনও চলে কি
না কিন্তু সংসারের বেশিরভাগ কাজের মতো তা পেছোচ্ছে তো
পেছোচ্ছেই। অথচ ক্যামেরা কেনার আগে কত গবেষণা, কত সাজেশন,
ক্যানন এবং নিকনের ইতিহাস ভূগোল জীবনবিজ্ঞান নিয়ে কত তুলনামূলক হুলাবিলা। সে হুলাবিলার ডিগ্রি দিয়ে মাপলে
ক্যামেরাটাকে সন্তানতুল্য যত্ন করা উচিত ছিল; গত তিন বছর
ব্যাগের জিপ পর্যন্ত খোলা হয়নি।
ব্যাকপকেট
থেকে মোবাইল বার করে যদি কাজ সারা যায় তাহলে ক্যামেরা ঘাড়ে ঘোরে কে? অন্তত আমাদের মতো লোকেরা যাদের মেমোরি মেকিং নিয়ে কথা, সে সব মেমোরির এক্সপোজার
কিংবা হোয়াইট ব্যালেন্স নিয়ে কাঁচকলা, তারা না।
তার ওপর সব
হিব্রু ঠেকছে। "f" কাকে বলে,
"ISO"-র চলন কোনদিকে সব ভুলে গেছি। দুলে
দুলে কত মুখস্থ করেছিলাম। খালি মনে পড়ছে একটা সংখ্যা যত বাড়ে ক্যামেরায় আলো তত কম ঢোকে। কোন বোতামটা টিপলে ডিসপ্লে চালু হবে সেটা পর্যন্ত মনে পড়ছে না। এলোপাথাড়ি টেপাটিপির পর অবশেষে কোথায় যেন আঙুল লেগে আয়তক্ষেত্র
অন্ধকার থেকে আলো হল।
যতক্ষণ না
"এই চাকাটার পাশে AV, MV এসব কী
লেখা" বলে অর্চিষ্মান চাকাটা ঘোরাতে শুরু করল। আর আমি,
"ঘুরিয়ো না" আর্তনাদে ঝাঁপিয়ে পড়লাম।
ওটা
P-তেই রাখো।
কেন
P-টা কী এমন হনু?
হুড়হুড়
করে মনে পড়ে গেল। P হচ্ছে অটো। সমস্ত সেটিং ক্যামেরা ঠিক করে
দিয়েছে, আমার শাটার টেপার অপেক্ষা। এও মনে পড়ল অফিসের সবাই যখন পেপারের পর পেপার
লিখে ফেলছে তখন একবার এফ বাড়িয়ে, একবার আই
এস ও কমিয়ে, একবার ম্যানুয়াল ফোকাসে এগিয়ে, পরের বার অটো ফোকাসে পিছিয়ে আমি যে ছবিগুলো
তুলে উঠতে পারতাম, প্রত্যেকটাই সম্পূর্ণ অটো বা P মোডে তোলা ছবির থেকে কুশ্রী হত।
ক্যামেরাটার
কালো সর্বাঙ্গ দিয়ে বিচ্ছুরিত মুচকি হাসি, মনে পড়ে এই এত বছর পরেও গা জ্বালা করল।
আলমারি থেকে ক্যামেরা বেরিয়েছে কারণ আমরা বেরোচ্ছি। বেড়াতে।
অনেকবছর পর, অনেক দূরে। মাঝে একবার কালিম্পং, দার্জিলিং হল বটে কিন্তু সে এত ঝটিকা
যে প্রপার সফরের মর্যাদা দিতে বাধে। হোলির আগের উইকেন্ড জুড়ে একটা সময় বার করা গেছে।
গন্তব্যের পক্ষে সেটা যথেষ্ট ভদ্রস্থ কি না ডিবেটেবল, কিন্তু এর থেকে বেশি সময় খরচ
মেরে ফেললেও সম্ভব না।
জায়গাটা
চিনের গা ঘেঁষে, পৌঁছতে অন্যতম উঁচু একটা মোটরেবল রাস্তা পেরোতে হয়, ওয়েদার
ডট কম বলছে ঠাণ্ডা নাকি ভীষণ। যুগযুগান্ত আগে বাবামায়ের সঙ্গে যেতে যেতেও একবার জায়গাটা
ফসকে গেছে আমার, অর্চিষ্মানেরও অদেখা।
গবেষণার অংশ
হিসেবে গুগল ইমেজেস খুলে ছবি দেখছিলাম আর সৌন্দর্যে বাক্যহারা হচ্ছিলাম। এ সৌন্দর্য তেরো মেগাপিক্সেলের থেকে বেশি কিছু দাবি করে। নিদেনপক্ষে P মোড।
কাজেই আমরা,
আমাদের ক্যামেরা, আমাদের ভুষো সুটকেস, আমাদের কালো ব্যাকপ্যাক, আমাদের ক্যালপল আর
ইনোর ফার্স্ট এইডের থলি, আমাদের লিটল হার্টস, লে চিপস্ আর কালো-কমলা লজেন্সের ‘খুচুরমুচুর’
ঝুলি – চললাম। সপ্তাহ ঘোরার আগেই ফিরে
আসব।
durdanto khobor! Happy Ladakh berano :)
ReplyDeleteহয়নি হয়নি, তাওয়াং যাচ্ছি, কাকলি।
Deletebah bah aro exciting! bose roilam golpo sunbo bole
DeleteAmio prothome Ladakh bhebechhilam. Tobe okhane ekhon rasta khulbe na bodhoy
ReplyDeleteAmio prothome Ladakh bhebechhilam. tarpor baba maa-r shonge jabaar chance chhilo bole mone holo hoyto North East hobe. Tachhara Ladhak-e ekhon rasta khulbe na bodhoy.
ReplyDeleteTezpur hoye jachho bodhoy? oi airport ta hoyate onek subidha ekhon.
তাওয়াঙ - wow! গল্প শুনবো আর ভাববো আমরাও কবে যাবো যদিও কোনোদিন যাওয়া হবেনা| চা পাকোড়া আর ম্যাগির শুভেচ্ছা রইলো|
ReplyDeleteDarun! Khub bhalo beriyo ar anondo koro . Chobi ar golper opekkhaye roilam.
ReplyDeleteBon voyage! Khub bhalo kore fhure asun. bhalo thakben
ReplyDeleteIndrani
baah darun khobor! Beriye aasun. Aar anekdin por apnake dekhlam.
ReplyDeleteযদিও পর্ব ১,২,৩ পোস্ট হয়ে যাওয়ার পর কমেন্ট করতে বসেছি, তাও আমি ওগুলো এখনও পড়িনি, তাই সাসপেন্স বজায় রেখে বলি, ভাল করে ঘুরে আসুন। আর আপনার তো ক্যামেরার ব্যাপার দিব্যি মনে আছে দেখছি। P মোডের আউটপুট দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
ReplyDeleteএইবার নার্ভাস লাগছে। আউটপুট খুবই খারাপ। কারণ যা-ই বলি না কেন, আসলে তো যন্ত্রীর কেরামতিটাই সব, যন্ত্র তুচ্ছ।
Delete