Posts

Showing posts from November, 2025

নিজের হাতে

Image
বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম আমার টেবিলের সামনে নাজিয়া। এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। আপহি কো ঢুন্ড রহে থে ম্যাম। এসপ্রেসো বনায়েঙ্গে? প্রশ্নটা বুঝতে দশ সেকেন্ড গেল। ব্লু টোকাই-এর নতুন স্ট্র্যাটেজি হচ্ছে এনগেজমেন্ট। দোকানের বাইরের চাওয়ালা, বইয়ের দোকানের মালিক, দর্জি - কমিউনিটির অন্যান্য সদস্য, নেবারহুডের বাকি প্রতিবেশীদের নিজেদের কর্মকাণ্ডের অংশ করতে উঠে পড়ে লেগেছে ব্লু টোকাই। প্রতিবেশীদের ছবিসম্বলিত ব্যানার রাখা হয়েছে দোকানের সামনে, অ্যাডভার্টাইজমেন্ট তৈরি হয়েছে যা দোকানের ভেতর ঝোলানো তিনটে টিভির একটায় লুপে চলছে। বাইরের প্রতিবেশীদের এনগেজ করা ভালো ব্যাপার। ভেতরের পাপীরা যাতে ভেসে আসার ফিলিং না পায় সেদিকেও নজর দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। আশপাশের পাড়ার ম্যাপ - এত প্রফেশনালি আঁকা যে অ্যামেচারিশের আশ্বাস দেয় - টাঙিয়ে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে প্রিয় পাড়া সম্পর্কে নিজের অনুভূতি পোস্ট ইট-এ লিখে সাঁটতে। ম্যাপটা হচ্ছে একটা পিন বোর্ড। বাথরুমের জন্য যে দেওয়ালের পাশে লাইন পড়ে, বোর্ড স্ট্র্যাটেজিক্যালি সেই দেওয়ালেই টাঙানো হয়েছে। অপেক্ষা করতে করতে রেগে না উঠে গল্প লিখুন, সাঁটুন, পড়ুন। রেগুলাররা প্রায় সকলেই গল্প সেঁটেছে।...

যারা যারা দায়ী

উঁচু করা মুখেদের ভিড়ঠাসা অডিটোরিয়াম। মঞ্চে সুমন দে, সঙ্গে আমি, ঘণ্টাখানেকের আলাপচারিতায়। সুমনের ঠোঁট নড়ছে, আপনার এই ইলাস্ট্রিয়াস সাহিত্যিক জীবনের জার্নি . . . নুয়ে পড়ছি, না না কী যে বলেন, কিছুই তো আসলে একা করে হয়ে ওঠে না, কত মানুষ হাত বাড়িয়ে দেয়, আমার এই জার্নির মোড়ে মোড়ে কত লোক দীপ জ্বেলে গেছেন তাদের মধ্যে যার কথা না বললেই নয় তেমন একজন হচ্ছে চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম আর সোমেন বসু। ঘুম ভেঙে গেল। বাঁ হাতের মুঠো খুলে ফোন, জয়পুর থেকে আনা হাতিছাপ বেডকাভারে ছেতরে আছে। তুলে চোখের এক মিলিমিটার দূরে এনে চেক করলাম। নাহ্‌, এখনও বেরোয়নি। একটা গল্প চার নম্বরে পাঠিয়েছিলাম বেশ কয়েকমাস। তারও অনেক মাস আগে থেকে গল্পটা লিখতে শুরু করেছি। যে কাজটা সবাই দু'ঘণ্টায় করে সেটা দু'বছর লাগানোর অসামান্য অভ্যেসে মাত্র কয়েক হাজার শব্দের এই গল্পটা আমি টেনে গেছি টেনে গেছি টেনে গেছি। মানুষের স্বভাবই হচ্ছে - অর্চিষ্মান বলছে, আবার মানুষকে টানাটানি কেন কুন্তলা - ঠিকাছে আমারই স্বভাব হচ্ছে, নিজে যত গড়িমসিই করি না কেন, কথা দিয়ে যত কথা ভাঙিই না কেন, বাকি সবাইকে সুপারসনিক স্পিডে কাজ করতে হবে। যবে গল্প ছাপানোর কথা ছিল তখনই ...

কফি শপ ২ঃ অনলাইন স্ক্যাম ও রিয়েলিটি

শতদ্রুর তীরে, শিবালিকের কোলে, শিখধর্মের পুণ্যতীর্থ আনন্দপুর সাহিব। বাবার ফেভারিট। মাঝে মাঝেই গিয়ে থেকে আসেন। গত মাসে যাওয়ার পথে দু'দিন ফেরার পথে চার ঘণ্টা আমাদের বাড়িতে কাটিয়ে গেলেন। আসার আগে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, বাবা তোমার দিল্লিতে কী করার ইচ্ছে? একটা ইচ্ছে জানা ছিল। সোডাবটল ওপেনারওয়ালাতে খাওয়া। মা থাকতে একবার (নাকি দু'বার?) দুজনকে খান মার্কেটের সোডাবটল ওপেনারওয়ালাতে নিয়ে গেছিলাম। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে অ্যালুমিনিয়ামের টিফিনবাক্সে করে বেরি পোলাও এসেছিল আর সবুজ চাটনি। সেই চাটনি আর টিফিনবাক্সের কথা বাবা এখনও বলেন। বাবার ইচ্ছে পূরণ করা যায়নি কারণ সোডাবটল উঠে গেছে। বা রেনোভেশন হচ্ছে। বাবার দ্বিতীয় ইচ্ছের কথাও আঁচ করেছিলাম। তোর কফি শপে একবার যাব, সোনা। বাবা ফোনে রোজই শোনেন, আমি কফি শপে চলে এসেছি। এই তো তোমার ফোন রেখেই কাজ শুরু করব। আমি শিওর বাবা বোঝেননি ব্যাপারটা কী করে সম্ভব। দোকানে লোকে কাজ করে কী করে? তাও আবার কফির দোকান? যে সব দোকানে বারকয়েক যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বাবার ধারণা হয়েছে জিনিসটা হাফ রেস্টোর‍্যান্ট। রেস্টোর‍্যান্ট আর অফিসের কনসেপ্টের মধ্যে বাবার মগজে যে অলঙ্ঘ্যনীয় পরিখা...