কফি শপ ২ঃ অনলাইন স্ক্যাম ও রিয়েলিটি


শতদ্রুর তীরে, শিবালিকের কোলে, শিখধর্মের পুণ্যতীর্থ আনন্দপুর সাহিব। বাবার ফেভারিট। মাঝে মাঝেই গিয়ে থেকে আসেন। গত মাসে যাওয়ার পথে দু'দিন ফেরার পথে চার ঘণ্টা আমাদের বাড়িতে কাটিয়ে গেলেন। আসার আগে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, বাবা তোমার দিল্লিতে কী করার ইচ্ছে?

একটা ইচ্ছে জানা ছিল। সোডাবটল ওপেনারওয়ালাতে খাওয়া। মা থাকতে একবার (নাকি দু'বার?) দুজনকে খান মার্কেটের সোডাবটল ওপেনারওয়ালাতে নিয়ে গেছিলাম। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে অ্যালুমিনিয়ামের টিফিনবাক্সে করে বেরি পোলাও এসেছিল আর সবুজ চাটনি। সেই চাটনি আর টিফিনবাক্সের কথা বাবা এখনও বলেন।

বাবার ইচ্ছে পূরণ করা যায়নি কারণ সোডাবটল উঠে গেছে। বা রেনোভেশন হচ্ছে।

বাবার দ্বিতীয় ইচ্ছের কথাও আঁচ করেছিলাম। তোর কফি শপে একবার যাব, সোনা।

বাবা ফোনে রোজই শোনেন, আমি কফি শপে চলে এসেছি। এই তো তোমার ফোন রেখেই কাজ শুরু করব।

আমি শিওর বাবা বোঝেননি ব্যাপারটা কী করে সম্ভব। দোকানে লোকে কাজ করে কী করে? তাও আবার কফির দোকান? যে সব দোকানে বারকয়েক যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বাবার ধারণা হয়েছে জিনিসটা হাফ রেস্টোর‍্যান্ট। রেস্টোর‍্যান্ট আর অফিসের কনসেপ্টের মধ্যে বাবার মগজে যে অলঙ্ঘ্যনীয় পরিখা তা পেরোনোর বাবার উদগ্র কৌতূহল ছিল।

স্বাভাবিক। অফিসে যারা কাজ করেছেন আজীবন, অফিসের বাইরে কাজ কেমন দেখতে লাগে, সেটা সম্পর্কে উত্তেজনা না থাকতে গেলে আমার মতো হতে হবে। বাবা পড়ে গিয়ে পা ভাঙলেন। অর্চিষ্মান বলল, কী করে পড়লেন? আমি বললাম, জানি না। বাবা বলেননি। বাবার পা ভেঙেছে, স্মৃতিভ্রংশ হয়নি। কাজেই বলতে চাইলে  বলতে পারতেন। কোনও বিশেষ কারণে বলেননি। আমি সেই কারণকে সম্পূর্ণ সম্মান করি, কাজেই অন্য সব খবর নিয়েছি, পতনের ইতিহাসভূগোল জানতে চাইনি।

অর্চিষ্মান বলে, দিস ইজ নট নর্ম্যাল, কুন্তলা।

আমি তো দাবি করিনি আমি নর্ম্যাল। তাছাড়া হোয়াট ইভন্‌ ইজ নর্ম্যাল?

কৌতূহল থাক না থাক, আমি নর্ম্যাল হই বা অ্যাবনর্ম্যাল, বাবাকে কফি শপে আনতাম। বাবামায়ের অফিসে ছোটবেলায় গেছি, এখন আমার অফিসে বাবামায়ের আসাই তো স্বাভাবিক। (শিবুনন্দিতার মডেলে মায়ের ছেলের অফিসে গিয়ে ছেলের অফিসের ছাদে সরস্বতীপুজো অর্গ্যানাইজ করা স্বাভাবিক নয় তাই বলে।)

বাবা এলেন, দেখলেন, কফি খেলেন। নাজিয়া অনু রিনা মনীষাদের সঙ্গে বাবার আলাপ করিয়ে দিলাম। প্রথমটা বাবার অস্বস্তি হচ্ছিল মনে হয়, এদিকওদিক তাকাচ্ছিলেন। তারপর রিল্যাক্সড হলেন। জল খেলেন। কফি খেলেন। পরপর দু'কাপ।

মনে হল, অদর্শনে যে অবোধ্যতা ছিল, দূর হয়েছে। অনেকের হয় না। বা হওয়াতে রিফিউজ করেন। অজানাকে অ্যাকসেপ্ট করাতে আমাদের অ্যালার্জি ইউনিভারসাল। যেটা আমি আগে দেখিনি, আগে করিনি, আগে শুনিনি - সেটা দেখতেশুনতে অসুবিধে বা অস্বস্তি হওয়ার অংশটা আমি বুঝি। সে অস্বস্তি আমারও হয়। কিউরিয়াস হচ্ছে রেগে ওঠাটা।

রেগে তো সেভাবে ওঠা যায় না। সামাজিকভাবে অ্যালাউড নয়। তবে বোঝা যায়। আমাদের কমিউনিকেশনের কতটাই বা ভাষায়, প্রায় সবটাই তো ভাইবে। পাশে বসে আমার ল্যাপটপের দিকে ভুরু কুঁচকে তাকালে সে কোঁচকানো ভুরুর তাপ আমার গায়ে দিব্য এসে লাগে।

কফি শপে ঘণ্টার পর ঘণ্টা টেবিল আটকে বসে থাকা চোখে লাগা স্বাভাবিক। কনট্রারি টু কমন সেন্স, এখানকার প্রতিটি ক্যাফে এই আচরণকে অ্যাগ্রেসিভলি প্রশ্রয় দেয়। ব্লু টোকাই তো দেয়ই। আশেপাশের সব ক্যাফের থেকে সফলভাবে। বিভিন্ন শহরের বিভিন্ন কফি শপে ঘুরে আমার মত, অর্চিষ্মানেরও, "ক্যাফে" ভাইবটা এরা হান্ড্রেড পারসেন্ট নামাতে পেরেছে। এবং সেটা করতে পেরেছে রেগুলার ক্লায়েন্টেল তৈরি করতে পেরেছে বলেই। সকালে জিমে যাওয়া জিম থেকে ফেরা গ্রুপ, ন'টা টু পাঁচটা গ্রুপ, এগারোটা টু সাতটা গ্রুপ, ন'টা টু ন'টা গ্রুপ, বারোটা টু বারোটা গ্রুপ। রাত আটটা টু সকাল পাঁচটা, ছ'টা, অবস্থা বুঝলে সাতটাও - গ্রুপের ঢেউ উঠছে কারা টুটছে আলো ফুটছে প্রাণ জাগছে জাগছে জাগছে। এখানে যে কোনও উইকডেজে দুপুর দুটোর সময় ঢুকলে গুলিয়ে যাবে এটা কফি শপ না কো-ওয়ার্কিং স্পেস। সন্ধেয় মার্কেটের সব দোকানই চমকায়, কিন্তু এই ব্লু টোকাই সরাদিন, সারারাত, সন্ধে - আশ্চর্য এনার্জি বিচ্ছুরণ করে। পাশ দিয়ে গেলে, ভেতরে জাস্ট কী হচ্ছে দেখার জন্যই ঢুকতে ইচ্ছে করবে। লোকে ঢোকেও। অন্তত সাতজনকে জানি যারা দু 'ঘণ্টা ড্রাইভ করে আসেন, বিকজ ঘর কে পাস কফি শপ তো বহোত হ্যায়, লেকিন অ্যায়সা কুছ নহি হ্যায়।

ঢুকে, সবার প্রতিক্রিয়া, অফ কোর্স, সমান হয় না। আকর্ষণও যেমন আছে, বিকর্ষণও। সবার বিকর্ষণ অ্যাড্রেস করার প্রশ্ন নেই বা সুযোগও হয় না। একজনের হয়েছিল। ভদ্রলোক ঢুকেছেন। কফি শপের রেগুলারদের একটা ছাপ্পা থাকে। কেউ এই দোকানে প্রথম এলেও, অন্য কফি শপের অভ্যেস চলাবলায় ফুটে ওঠে।

এঁর ফুটছিল না। এসে আমার পাশের টেবিলে বসলেন। টেবিলে টোকা দিচ্ছেন। কফি অর্ডার করেছেন, আসছে না। উঠে দাঁড়ালেন। আঙুলে ভর দিয়ে উঁচু হয়ে এসির সামনে দাঁড়িয়ে হাত নাড়াচ্ছেন।

এই পয়েন্টে আমি কান থেকে গান খুলে আই কনট্যাক্ট করলাম। সলিটেয়ারের একটা দান শেষ হয়েছিল।

ডাজ ইট ওয়ার্ক? ভদ্রলোক হাত ওলটালেন।

চার্মিং হওয়ার চেষ্টা করলাম। সামটাইমস।

ভদ্রলোক ধপ করে চেয়ারে বসলেন। আর ইউ ওয়ার্কিং?

ওই আরকি।

ডু ইউ ওয়ার্ক হিয়ার রেগুলারলি?

লজ্জাজনক রেগুলারলি। অ্যাট দিস পয়েন্ট, আই অ্যাম অ্যানাদার পিস অফ দেয়ার ফার্নিচার।

ভদ্রলোক মাথা নাড়লেন। ইট ইজ নট পসিবল টু ওয়ার্ক প্রপারলি ফ্রম আ কফি শপ।

চুপ থাকলাম। কফি শপকে ওয়ার্কিং স্পেস হিসেবে সেল করা আমার কাজ নয়। করলে এক ঘণ্টা আয়ুও বাড়বে না।

তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এখানে কী ধরণের কাজ করে লোকে। বললাম, সবার তো জানি না। সবরকমই আছে। উদাহরণ দিতে গিয়ে মুখ থেকে স্টার্ট আপ বেরিয়েছে কি বেরোয়নি, ভদ্রলোক উৎকর্ণ। এই যে স্টার্ট আপ স্টার্ট আপ বলে, এগুলো কী?

স্বীকার করতে হল, নো আইডিয়া। তবে দেখে তো মনে হয় খুব খাটনি।

যত খাটনিই হোক, এ সব করে বেশিদূর যাবে না। হাউ উড ইউ গ্রো? ফর গ্রোথ ইউ নিড অ্যান অফিস।

হতে পারে।

কথা চালানোর সুবিধে - কতক্ষণ আর অমিল চলবে, একটা না একটা মিল বেরোবেই। কফি শপে কাজ করা নিয়ে মত মিলল না, কিন্তু ধার করে বেড়াতে যাওয়া নিয়ে মিলল। ভদ্রলোক একটা স্ট্যাটস দিলেন, কত পারসেন্ট (শূন্যের বেশি) লোন যেন রিক্রিয়েশনাল ফরেন ট্র্যাভেল খাতে নেওয়া হয় ভারতবর্ষে। মেনে নিলাম, প্রায় ধার করে ঘি খাওয়ার মতোই।

পয়সা নহি হ্যায় তো কেরালা চলে যাও, ব্যাংকক কিউঁ যানা হ্যায়?

ঘাড় নাড়ছি এদিকে বুকের ভেতর ধুকপুক। অর্চিষ্মানকে বলতে হবে, এবার কেরালা না গেলে আর লোকসমাজে বেরোনো যাবে না।

ভদ্রলোকের কফি শেষ হয়। কথোপকথন নিভে আসে। ভদ্রলোক ঘাড় ঘুরিয়ে চারদিকে দেখছেন। আচ্ছা হ্যায়। ইট'স নাইস। টেবিলে টোকা এখনও পড়ছে, কিন্তু শুরুর দ্রুত তেওড়া এখন বিলম্বিত ধামার।

ওকে। চলতে হ্যায়। এখান দিয়ে তো মাঝে মাঝেই যাওয়া হয়, ঢুঁ মারব ফর শিওর। হাত বাড়ান ভদ্রলোক। নাইস টু মিট ইউ।

সেম হিয়ার।

একটা ব্যাপার বলে রাখা দরকার। বিকর্ষণ শুধু একতরফা হয় না। রেগুলার ল্যাপটপওয়ালারা বা ল্যাপটপহীনরাও, যারা রোজ জিমফেরত বা অফিসফেরত আসেন উইদাউট ফেল, বিকর্ষণবিচ্ছুরণে সমান দড়। ব্লু টোকাইয়ের এই শাখাটিতে নিজেদের পছন্দের সিটের প্রতি এঁরাও মারকাটারি পজেসিভ। সহ-রেগুলারদের সিট নিয়েও। একাধিকবার হয়েছে, চেনা মুখেরা নিজেরা সিট পেয়েছেন কিন্তু আমি "আমার" সিট না পেলে আমার থেকে বেশি রেগে উঠেছেন। বাথরুম যেতে ঘুরপথ করে আমার নতুন সিটের পাশে এসে ঝুঁকে পড়ে ফিসফিস করেছেন - আপ যাকে বোলো ইয়ার উনকো, ইয়ে মেরা সিট হ্যায়। হোয়াট ইজ দিস?

কী আর বলব। ব্লাডি টুরিস্টস।

ব্লাডি টুরিস্টস। তিনি বলেছেন।

আমাদের ব্লু টোকাই কাল্টের হেট চ্যান্ট - ব্লাডি টুরিস্টস।

শনিরবিবার এই টুরিস্টদের ভিড় সবথেকে বেশি। এরা সহ্যাতীত ডেসিবেলে হাসে, মেঝেতে চেয়ার টানাটানির চোটে মাড়ি থেকে দাঁত আলগা করে ফেলার উপক্রম করে।

অ্যাট লিস্ট, আমরা টুরিস্টদের নিচু গলায় গালি দিই। টুরিস্টদের কেউ কেউ সেটুকু সহবতও দেখান না। একদিন ঢুকে বসেছি। শ কাঁধে টোকা মেরে বলল, পতা হ্যায় কাল কেয়া হুয়া? আফটার ইউ লেফট?

একদল ব্লাডি টুরিস্টস নাকি এসে বসে চারদিকে দেখিয়ে একে অপরকে বলছিলেন, যাতে সবাই সব শুনতে পায় এমন ভলিউমে, টেবিল টেবিল পে কেয়া হো রহা হ্যায় পতা হ্যায়? অনলাইন স্ক্যাম।

*

বাবা এ সব কিছু বলেননি। কোর্টাডো কড়া লাগল। এক্সটা দুধ এনে দিল বিজয়, মিলিয়ে ম্যানেজ করা হল। 

মনে হল,আমার কফি শপে বসে কাজ করার প্রেফারেন্সটা বাবা বুঝতে পেরেছেন। বাবার যেটা তখনও খচখচ করছে, তা হল কফি শপের স্বার্থ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাকে টেবিল আটকে রাখতে অ্যালাউ করছে কেন? একদিন যদি না করে? যদি অপমান করে তুলে দেয়?

এটা রুকি টেনশন। কফি শপে বসে সব কাজকরিয়েদেরই এ টেনশনের অ্যাডমিশন টেস্ট অতিক্রম করতে হয়।

একটি বাচ্চা মেয়ে, অ, মাঝে মাঝে আসে। চোখ মেঝেতে, কাঁধে বাটখারা। ওর সঙ্গে দৈনিক পাঁচ মিনিট খেজুরের ডোজ চালাচ্ছিলাম যেমন চালাই। একদিন বলল, জানো আমার ভয় করে কফিশপে আসতে। বললাম, ভয় কীসের? বলল, ও নাকি কফি শেষ হওয়ামাত্র চোখ তুলেই দেখতে পায় একজন কর্মচারী, দশ হাত দূরে, ওর দিকে ঠায় তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ততক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে, স্ট্রেট তাকিয়ে থাকে, যতক্ষণ না ও পরের কফি অর্ডার করছে বা ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। হুইচেভার ইজ সুনার।

বললাম, এই যে দোকানটা দেখছ, গমগম শমশম করছে, এখানে খদ্দেরপ্রতি ক'জন কর্মচারী কাজ করে বলে তোমার মনে হয়? তোমার মনে হয় এদের একজনকে সব কাজ ফেলে তোমার দিকে সমস্ত অ্যাটেনশন দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখবে ম্যানেজার?

সে বলল, নিজের চোখকে কী করে অবিশ্বাস করি বলুন।

নিজের উদাহরণ দিলাম। এই যে দেখছ এই কোর্টাডো, টোটাল চার চুমুক থাকে। সকাল ন'টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত দু'চুমুক খাই, একটা থেকে পাঁচটা বাকি দু'চুমুক, রিহিট করিয়ে। কারও দম থাকে তো তুলে দেখাক আমাকে।

(এটা ওকে সাহস দেওয়ার জন্য বাড়িয়ে বলেছি। আমি এত চশমখোর নই। ন'টা থেকে একটা কোর্টাডো খাই, একটা থেকে পাঁচটা একটা অ্যামেরিকানো। সন্ধেবেলা যদি আসি যেদিন আসি - আপেলের জুস। আপেলটাপেল আমার গোটা খেতেই ভালো লাগে, কিন্তু ওই সময় কফি খেলে রাতের সাড়ে তিন ঘণ্টা ছেঁড়া ছেঁড়া ঘুমটুকুও হবে না, আর জুস ছাড়া নন ক্যাফিনেটেড পানীয়ের অপশন গ্রিন টি। নোপ।)

মেয়েটা স্টিল নট কনভিন্সড। তখন অন্য ভদ্রলোকের উদাহরণ দিতে হল। নাম বলিনি, চেহারার বর্ণনাও দিইনি, কাজেই চিহ্নিত করতে পারবে না। বছরখানেক ধরে দেখছি, একদিনও একটিও কফি অর্ডার করতে দেখিনি। বাড়ি থেকে চা বা কফি ফ্লাস্কে করে নিয়ে আসেন। টিফিনবাক্সে করে তরমুজ। গটমট করে গিয়ে কাউন্টারে রাখা কাঁটা নিয়ে এসে বিঁধিয়ে বিঁধিয়ে খান। একদিন একজনকে বলছিলেন, ইহাঁ কা কফি পিনা জরুরি হ্যায় কেয়া? ঘর সে কিউঁ নহি লাতে হো?

এই ভদ্রলোক, আমি, এই ভীরু কন্যা - তিনজনেই একই সময়খণ্ডে একই কফি শপে অবস্থান করছি। অথচ তিনজনের রিয়েলিটি কী সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ আমাদের কনফিডেন্স ভিন্ন, কাজেই পারসেপশন অফ রিয়েলিটি ভিন্ন, আর ইউটিউব শর্টে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া অকাট্য সত্যবচন করেছেন - পারসেপশন অফ রিয়েলিটি ইজ রিয়েলিটি। যদি নিজেকে বিশ্বাস করাই যে আমার কফি শেষ হওয়ামাত্র কেউ এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে তাহলে চোখ তুললেই কাউকে না কাউকে দেখব। আবার আমি যে নিজেকে বুঝিয়েছি যে কেউ আমাকে ভাগানোর জন্য হাঁকপাঁক করছে না, এরা সবাই আমাকে ভালোবাসে, চায় যে আমি এদের টেবিল জুড়ে দিনভর রাতভর অধিষ্ঠান করি, সে জন্যই আমি এদের হাঁকপাঁকানি কমপ্লিটলি অগ্রাহ্য করতে পারছি।

                                                                                                                                    (চলবে)

Comments

  1. প্রথম আর দ্বিতীয় পর্ব দুটো একসাথে পড়লাম। ভালো লাগলো, আর খুবই ইন্টারেস্টিং। পরের পর্বগুলো আসুক।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ রাজর্ষি। আমারও লিখতে ভালো লাগছে। এখন পরের (মোস্ট প্রব্যাবলি শেষেরও) পর্বটা লিখছি। মনে হয় বেশি টাইম লাগবে না।

      Delete
  2. আমার এরকম একটা অদ্ভুত প্রেশার আসে মনে | আগে হতো না, কিন্তু এখন আসে | বয়স হচ্ছে |

    ReplyDelete
    Replies
    1. বয়স তো হওয়ারই জিনিস।

      Delete
  3. প্রদীপ্তNovember 20, 2025 at 11:47 AM

    বেশ লাগলো। ময়ূরাক্ষী কাজ করে মাঝে মাঝে কফিশপে। আমার করা হয়নি কখনো। কোর্টাডো নামটা নতুন আমার কাছে। খেতে হবে। আর পারসেপশন অফ রিয়ালিটি কথাটা সত্যি বটে৷

    ReplyDelete
    Replies
    1. কোর্টাডো খাও কোর্টাডো খাও, প্রদীপ্ত। আমি আমার ক্যাফেতেও লোকজনকে কোর্টাডোর দলে ভেড়াচ্ছি। আই মিন, চেষ্টা করছি।

      Delete
  4. Raka majhe majhei kaaj kore. Ami ek dubar puttusher schooler kachher ekta tea shop e bosechhilam. Music bajay bole amar sohjyo hoyni. Nirlojjyer moton boli kaaj korte amar office cubicle lagei :(

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে, নির্লজ্জের কী সায়ন? অফিসটাই নর্ম। কফিশপের ব্যবসা উঠে গেলে সবাইকে আবার অফিস খুঁজে বার করতে হবে। বাজনাটা ক্যান বি আ ডিস্ট্র্যাকশন, এগ্রিড, কিন্তু আমি নিজের কানে এত জোরে গান চালিয়ে রাখি যে বাকি সব হল্লাগুল্লা চাপা পড়ে যায়। অচিরেই কালা হতে চলেছি।

      Delete

Post a Comment