আরও অন্তত দু'মাস



ইদানীং প্রায়ই মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায়। উশখুশ করি বেশ খানিকক্ষণ। উঠে পড়ি। মেঝেয় বিছোনো পাওয়ার কর্ডের জাল ডিঙিয়ে সাবধানে পা ফেলি। বাথরুমের জানালা দিয়ে এসে পড়া রাস্তার আবছা আলোয় দাঁড়িয়ে মুখে জল ছিটোই। ভেজা আঙুল গলায় বোলাই। কানের পেছনে। ঘাড়ে। বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে ফ্রিজ খুলি। ঠাণ্ডা জলের বোতল রাখা আছে সারি সারি। একটা তুলে মুখে উপুড় করি। গলা জ্বলে যায়। অন্ধকারে হেঁটে ঘরে ফিরি। ফ্যানটা হায়েস্টে চলছে কি না চেক করি। বালিশটা উল্টে অপেক্ষাকৃত কম গরমের দিকটা ঘাড়ের তলায় নিয়ে শুই। এবার বোধহয় ঘুম আসবে। টিপে চোখ বন্ধ করে রাখি, চোখের পাতা থরথর করে কাঁপতে থাকে। ছোটবেলায় স্কুলে প্রার্থনা চলার সময় যেমন কাঁপত।

একমাস তিনদিন হয়ে গেছে। চোদ্দ ঘণ্টা সাঁইত্রিশ মিনিট পনেরো সেকেন্ডও নিশ্চয় হয়ে গেছে। এবার থেকে যত সময় যাবে অস্বস্তি বাড়বে বই কমবে না। রাতবিরেতে ঘুম ভাঙবে। গলা খটখট, পেট কনকন, কান ভনভন---নানারকম সিম্পটমে জর্জরিত হবে শরীর। অফিসে বসে কান্না পাবে। অটো দেখলেই ঝগড়া পাবে।

একমাস তিনদিন হয়ে গেছে, আমরা বেড়িয়ে ফিরেছি। এখন যতদিন না আবার বেরিয়ে পড়া যাচ্ছে ততদিন এই নরকযন্ত্রণায় ভোগা ছাড়া গতি নেই।

মুশকিলটা হচ্ছে একমাস তিনদিন পরপর বেড়াতে যাওয়া যায় না। অফিসে ছুটি পাওয়া যায় না, ব্যাংক ব্যালেন্স কাতর আর্তনাদ ছাড়ে। আমার মনের আর্তনাদের থেকে সে আর্তনাদের জোর অনেক অনেক বেশি। তাছাড়া চক্ষুলজ্জা বলেও একটা ব্যাপার আছে। অলরেডি কর্মহীন বলে বাজারে খ্যাতি আছে। মাসে মাসে বেড়াতে গেলে সবাই বলবে, তোদের চাকরিতেই সম্ভব ভাই। থাকতিস কর্পোরেটে, বুঝতিস।

আরও অন্তত মাসদুয়েক অপেক্ষা করতেই হবে। সে অপেক্ষাকে সহনীয় রাখার একটাই উপায়। প্ল্যানপ্রোগ্রাম। দু’মাস বাদে কোথায় কোথায় যাওয়া যেতে পারে সেই নিয়ে রাত্রিদিন লেবু কচলানো। হাউ টু গেট ইন, হাউ টু গেট অ্যারাউন্ড, হোয়াট টু সি, হোয়াট টু ইট, হোয়্যার টু স্লিপ। ক্ষণে ক্ষণে ব্রেনস্ট্রর্মিং। পাহাড় না জঙ্গল? ট্রিপঅ্যাডভাইসর না লোনলি প্ল্যানেট? সুপার না ডিলাক্স? চেয়ার কার না থার্ড এসি?

আপাতত এই জল্পনার দশা চলছে। সেই জল্পনাকে আশ্রয় করেই আজকের পোস্ট। দু’মাস বাদে কোথায় কোথায় যাওয়া যেতে পারে তার একটা মোটামুটি লিস্ট তৈরি করেছি মাথা খাটিয়ে। সেটা আপনাদের দেখাই। হতেই পারে আদৌ যাওয়াই হল না (যেন হয়, যেন হয়, ভগবান) কিংবা যাওয়ার সময় এদের সবাইকে হারিয়ে নতুন কোন জায়গা আমাদের মনজয় করে নিল, তবু এক্ষুনি সব কাজ টঙে তুলে যেখানে যেখানে চলে যেতে পারলে আমি বেঁচে যাব, এরা তারা।

১. হাফলং: রূপ দিয়ে যদি বিচার করতেই হয় তবে সারা দেশের মধ্যে আসাম আমার দেখা সবথেকে রূপসী রাজ্য। জানি, এইভাবে বলার কোনও মানেই হয় না, কারণ অনেক রাজ্য আমি দেখিইনি। মিজোরাম, কাশ্মীর, গুজরাট। কিন্তু তাতে কিছু যায় আসে না। ওরা আসামের থেকে বেশি সুন্দরী হলেও (যেটা আমি এক মুহূর্তের জন্যও বিশ্বাস করি না) আমার মুগ্ধতার লিস্টে আসাম একনম্বর থেকে যাবে। এ যেন সেই ক্লাস সেভেনে পার্থদার বুদ্ধি দেখে মোহিত হওয়ার মতো। তারপর তো কত অংক-পারা, বেশি-নম্বর-পাওয়া ছেলে দেখলাম, কিন্তু পার্থদার মতো বুদ্ধিমান কি আর লাগল কাউকে?

আসামের এত জায়গা থাকতে হাফলং কেন, সে নিয়েও আমার কোনও ব্যাখ্যা নেই। ‘প্লেসেস টু ভিজিট ইন আসাম’ বলে সার্চ দিতে একগাদা জায়গার নাম বেরোলো, তারা সকলেই এ বলে আমায় দেখ ও বলে আমায়, কিন্তু সবাইকে ফেলে আমার চোখ সোজা গিয়ে পড়ল হাফলং-এর ওপর। ব্যস। এক নজরেই কুপোকাৎ। বেঁকানো রেললাইন দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে, দূরে সবুজ পাহাড়ের ওপর ভিড় করে আছে বৃষ্টিভর্তি মেঘ। পাহাড় ভাসিয়ে এই নামল বলে।

হাফলং হচ্ছে আসামের ডিমা হাসাও জেলায় অবস্থিত একটি হিল স্টেশন। হাফলং-এর নাম আমি কখনও না শুনলেও জাটিঙ্গার নাম শুনেছি, সেই যেখানে দুঃখী পাখিরা দলে দলে এসে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে (উইকি বলছে কথাটা সর্বৈব মিথ্যে, ওগুলো আত্মহত্যা নয়, স্রেফ মার্ডার), সেই জাটিঙ্গা হল হাফলং-এর একেবারে ঘাড়ের কাছে।

মনস্থির প্রায় করেই ফেলেছি, এমন সময় উইকি দেখে জানা গেল ডিমাসা ভাষা অনুযায়ী হাফলং মানে হচ্ছে ‘পিঁপড়ের পাহাড়’। দু’মাস বাদে হোক, দু’বছর বাদে হোক, দু’জন্ম ঘুরে এসেও যদি হয়, পিঁপড়ের পাহাড় চড়তে আমি যাবই। কোনও পাষণ্ডের ক্ষমতা নেই রোখে।

২. লে-লাদাখঃ ম্যাপ দেখলে দেখা যাবে বাড়ির পাশেই (অন্তত হাফলং-এর থেকে কাছে তো বটেই) অথচ মনে হয় যেন নাগালের বাইরে। লে-লাদাখের সম্পর্কে যত শুনেছি, অন্য কোনও বেড়াতে যাওয়ার জায়গা সম্পর্কে তত শুনেছি বলে মনে পড়ে না। আমরা ছাড়া সকলেই লে-লাদাখ ঘুরে এসেছে আর এসে ছবির তলায় ক্যাপশন লাগিয়েছে ‘জার্নি অফ আ লাইফটাইম’। দেখেশুনে আমাদেরও শখ হয়েছে লে-লাদাখ সারার। এই লাইফটাইমেই। আর সারতেই যখন হবে তখন যৌবন থাকতে থাকতেই সারা ভালো। এর পর হাঁটুর ব্যথা বাড়বে বই কমবে না। খুব দুর্গম জায়গা নাকি। আর দুর্গমতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খরচ। আমরা ঠিক করেছি একটা ‘লাদাখ-ফান্ড’ খুলে মাসে মাসে তাতে কয়েন ফেলব। তাতে দু’মাসের জায়গায় দু’বছর লেগে যেতে পারে, কিন্তু কী আর করা।

৩. কক্স বাজারঃ এই জায়গাটায় যেতে চাওয়ার পেছনে আমার উদ্দেশ্যটা আমার নিজের কাছেই পরিষ্কার নয়। মানে কক্সবাজার যাওয়ার মতোই জায়গা, অনেকের মতে এখানেই আছে পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক বালুতট। তাছাড়া জমিবন্দী জায়গায় থেকে থেকে সমুদ্রসান্নিধ্যের লোভ আমার আর অর্চিষ্মানের দুজনেরই তরতরিয়ে বেড়ে এমন জায়গায় ঠেকেছে, সে সমুদ্র দেশেরই হোক বা বাংলাদেশেরই, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।

কিন্তু আমার সন্দেহ কক্সবাজার যাওয়ার আমার এই ইচ্ছের পেছনে যত না সমুদ্রের টান, তার থেকে বেশি বাংলাদ্যাশের। ঠাকুমার নিজস্ব ভূস্বর্গ নিজের চোখে চেখে আসার কৌতূহল। সে জিনিসের ঠিকঠিক স্বাদ পেতে গেলে অবশ্য যেতে হয় ঢাকা কিংবা বরিশাল, কিন্তু আমার সন্দেহ দুই জায়গাতেই গিয়ে এখন আর পুকুর, পুকুরের ওপর বাঁকা নারকেলগাছ, বাঁকা নারকেলগাছের ওপর ঘোড়সওয়ারের ভঙ্গিতে চড়ে বসা দস্যি মেয়ে---এ সব কিচ্ছু দেখতে পাব না, দেখব শুধু বোজানো পুকুরের ওপর সারি সারি হাইরাইজ। সেদিক থেকে কক্সবাজার যাওয়াই ভালো। সমুদ্রও দেখা হবে, দ্যাশও।

৪. মানস অভয়ারণ্যঃ দেখেছেন, আসামের মায়া কাটিয়ে বেরোতেই পারছি না। দেখা জায়গাও আবার দেখতে যেতে ইচ্ছে করছে। জীবনে আমি মোটে যে দুটি জঙ্গলভ্রমণ করেছি তার একটি হচ্ছে রণথম্ভোর, অন্যটি হচ্ছে মানস। যতখানি আলাদা হওয়া সম্ভব, চেহারায় এ দুই অরণ্য একে অপরের থেকে ততখানিই আলাদা। রণথম্ভোরের রূপ অনেক বেশি শুষ্কং কাষ্ঠং। রোদ্দুরে ঝাঁ ঝাঁ ধুলধূসরিত উশকোখুশকো বেঁটে ঝোপের জঙ্গলের কথা মনে পড়লেই তেষ্টায় গলা খটখটায়, অন্যদিকে মানসের কথা মনে পড়লেই অফিস থেকে ফিরে একগ্লাস ঠাণ্ডা জল, সন্ধ্যেবেলার ঝোড়ো বাতাস, মাঝরাত্তিরে ঝমঝম বৃষ্টি। প্রকাণ্ড অকেজো ঝাড়লণ্ঠন ঝোলানো ডাইনিং রুমে রুটি মুরগির ঝোল ডিনার সেরে এসে ইনসপেকশন বাংলোর বারান্দায় বসে আছি আমি বাবা আর মা। আশেপাশে কোথাও কোনও শব্দ নেই, কান পাতলে শুধু জঙ্গলের ডাক শোনা যাচ্ছে। বাংলোর পায়ের কাছ দিয়ে কুলকুল করে বয়ে যাচ্ছে নদী, নদীর ওপারে চুড়ো হয়ে উঠেছে জঙ্গলছাওয়া পাহাড়। ভোটরাজার পাহাড়। নদীর ধারে বাঁধা আছে সারি সারি সরু সরু দাঁড় বাওয়া নৌকো। কাল সকালে লোক এসে আমাদের সে নৌকোয় করে ভোটরাজার ফুলের বাগান দেখতে নিয়ে যাবে।

এমন রাতকে যদি বারবার জীবনে ফিরিয়ে আনা না যায়, তাহলে সে জীবন বেঁচেই বা লাভ কী?

৫. লক্ষণাবতীঃ এটাও আমার দেখা জায়গা, কিন্তু আবার দেখতে যেতে মন করছে। তাছাড়া ভুলভুলাইয়ার মজাটা অর্চিষ্মানকে দেখাতেও ইচ্ছে করছে। গাইড সঙ্গে না থাকলে ওই অমৃতির প্যাঁচ থেকে যে সত্যিই কারও পক্ষে বেরোনো সম্ভব না (ফেলুদার কথা হচ্ছে না, নশ্বর মানুষের কথা হচ্ছে), যে গলিতেই বাঁক নাও সব আগাপাশতলা একরকম, একটার সঙ্গে অন্যটার পার্থক্য অ্যাবসলিউটলি নিল, সে সব ওকে দেখাতে ইচ্ছে করছে, নিজেকেও। তাছাড়াও ইমামবাড়া, গুলিবিদ্ধ রেসিডেন্সি, দিল্লির গরমের পক্ষে পারফেক্ট ঢিলেঢালা চিকনকাজের কুর্তাপাঞ্জাবি . . . এই পর্যন্ত গিয়ে আর যুক্তি খুঁজে না পেয়ে চুপ করে আছি, এমন সময় অর্চিষ্মান ভীষণ হেল্পফুল হয়ে বলে উঠল, ‘বিরিয়ানি আর কাবাব?’

লক্ষণাবতীকে এর পরেও লিস্টে না রাখা জাস্ট না-ইনসাফি।

***

লিস্ট এখানেই শেষ, কিন্তু আবার শেষও নয়। আর একটা জায়গা আছে পৃথিবীতে যেখানে আমার সর্বক্ষণ যেতে ইচ্ছে করে। সে বেড়িয়ে ফিরে একমাস তিনদিনই কেটে যাক কি মোটে তিনদিন। অনেকসময় বেড়াতে বেড়াতেও ইচ্ছে করে। পুরীর মন্দিরে পাণ্ডার লাঠির বাড়ি খেতে খেতে কিংবা শেয়ালদা স্টেশনের মতো ভিড়ওয়ালা দীঘার বিচে হাঁটুজলে ডুব দিতে দিতে যে কতবার আমার মনে হয়েছে, ধুস এর থেকে ওই স্বর্গের মতো জায়গাটায় গেলেই হত, তার লেখাজোখা নেই। সেই জায়গাটার নাম?

দার্জিলিং দার্জিলিং দার্জিলিং! আমি সতেরোবারের বার (ষোলোবার আমি মোটেই যাইনি, মেরেকেটে ছ’বার হবে) দার্জিলিং যেতে চাই কেন-র থেকেও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কেন চান না? কেন আপনি মাংকি টুপি পরে মলে ঘোরাঘুরি করতে চান না? খাঁদা-নাক বালকের হাতে ধরা নোংরা কেটলির চা ডবল দাম দিয়ে কিনে খেতে চান না? খেতে খেতে ঘোড়ায় চড়তে গিয়ে বাঙালি জেঠুজেঠিদের নাকাল হওয়া দেখে হেসে কুটিপাটি হতে চান না? রাত চারটেয় উঠে জিপের ঝাঁকানি খেতে খেতে টাইগার হিল যেতে আপনার এত কীসের আপত্তি? গিয়ে হাওড়া স্টেশনের মতো ভিড়ে ঘাড় উঁচু করে একঘণ্টা দাঁড়িয়ে একগাদা মেঘ দেখে এসে হোটেলের পাশের ঘরের বাসিন্দাদের সত্যিই কি বলতে চান না, ‘সেকী আপনারা কাল কিছু দেখতে পাননি? আজ তো আমরা স্পষ্ট দেখলাম কাঞ্চনজঙ্ঘা, একেবারে ঝকঝকে। খুব মিস করেছেন কিন্তু।’ কেন আপনি কেভেন্টারসে বসে কফি খেতে খেতে ভাবতে চান না, ফেলুদা যেটা করেছিল সেটা আমিও করছি? ভেবে ছাতি ফুলিয়ে ছত্রিশ ইঞ্চি বানাতে চান না?

সিরিয়াসলি, কেন?


Comments

  1. লে-লাদাখ আর কক্সবাজার টা মিলে গেছে | আর হাফলং নাম টা দেখেই যেতে ইচ্ছে করছে | এ ছাড়া আমার লিস্ট-এ আরো আছে ডুয়ার্স-এর কিছু জায়গা - হলং, ঝালং, মূর্তি.. আর দার্জিলিং-এ যাওয়ার সেরকম কোনো ইচ্ছে না থাকলেও সেখানকার গ্রাম গুলোয় ঘোরার ইচ্ছে আছে.. আর আমার অনেক দিনের সাধ ওখানে গিয়ে পর্কসাপ্টা খাব |

    ReplyDelete
    Replies
    1. পর্কসাপ্টাটা কী ব্যাপার অপরাজিতা? পাটিসাপটার মতো ভালো খেতে কি? তাহলে আমিও খাব। নামে অনুস্বর আছে এমন জায়গায় আমারও যেতে ইচ্ছে করে। ঝালং যেমন।

      Delete
    2. আসলে ব্যাপার টার সাথে পাটিসাপটা-র কোনো মিল নেই | তাই বলে ভেবোনা খেতে ভালো নয় | যদিও নিজে কখনো খেয়ে দেখিনি | আর এই নিচের লেখাটা পড়ে ইচ্ছে টা একদম মারাত্মক হয়ে গেছে..
      http://new.my.anandabazar.com/blogs/-/blog/--5/29656

      এই ওয়েবসাইট টার মাথা থেকে পা অব্দি পাল্টে দিয়েছে বলে এই লেখাটা খুঁজে বার করতে একটু কষ্ট হলো | ভদ্রলোকের সব লেখাই আমার বেশ ভালো লাগে - যত না লেখার জন্য টার থেকে বেশি লেখার বিষয়বস্তু-র জন্য |

      Delete
    3. পড়ে আমারও খেতে ইচ্ছে করছে, অপরাজিতা। তুমি যে কষ্ট করে খুঁজেপেতে লিংকটা পাঠালে, সে জন্য অনেক অনেক থ্যাংক ইউ।

      Delete
  2. list ta bhalo...amar jemon akhon Mandu jaoar icche...barshay Mandu naki apurbo..ar Malsejghat ,eta abashya khub choto trip.. 1 din hayto...tor list e Haflong naamta sunei bhishon jete icche korche..Lucknow amaro khub priyo jayga...arekta jayga ami ghurte chai.tor ekhanei akjon bandipur forest er durdanto barnana diechilen,..tarpor theke ota mathar madhye ghurche...:-) ami kintu ektu asha korechilam,next plan er madhye akta maharashtra -r jayga thakbe! - tinni

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে মহারাষ্ট্রের জায়গাটা তো মনে আছে, তাই ওটাকে আর লিস্টে রাখিনি। তোর কথা শুনে আমারও মান্ডু যেতে ইচ্ছে করছে। আমিও বর্ষার ব্যাপারটা শুনেছি কোথায় যেন। তুই ঘুরে আয়, তারপর আমি যাব।

      Delete
  3. ভারতের সুন্দরীতম রাজ্য হল আসাম - এগ্রি
    আসামে বেড়াতে যাওয়া উচিত - স্ট্রংলি ডিসেগ্রি

    আপনার লিস্টের মধ্যে লাদাখ আর লখনউ হল যাবার মত জায়গা। এবং অফকোর্স দার্জিলিং, যদিও অবাঙালিরা আজকাল দার্জিলিঙকে খুব হ্যাটা করে, আর গ্যাংটককে পাতে তোলে। হাফলং এবং মানস ট্যুরিস্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচারের দিক থেকে অত্যন্ত পিছিয়ে, গিয়ে মজা পাবেন না। অন্ততঃ আমি পাই না... বাথরুম নোংরা থাকলে, ভালো খাবার না পেলে আমার বেড়ানোর মজা আদ্ধেক হয়ে যায়। আমার ধারণা কক্সবাজারও একই পদের হবে।

    কোথায় বেড়াতে যান, জানাবেন। বেড়িয়ে আসার পর যে সচিত্র ভ্রমণকাহিনী পাব, তা তো জানাই আছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, আসামে বেড়াতে যাওয়ার হ্যাপা আছে, ঠিকই বলেছেন দেবাশিস। ইনফ্রাস্ট্রাকচার সত্যিই খারাপ। তবুও যেতে ইচ্ছে করে। বাথরুমের ব্যাপারটায় যতখানি উঁচু হাই ফাইভ আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব ততখানিই দিচ্ছি, কারণ আমার ডিকশনারিতে কৃচ্ছ্রসাধন আর ভ্রমণ একজন নর্থ পোলে তো আরেকজন সাউথ পোলে বসবাস করে। তাতে লোকে আমার ভ্রমণ-বেরসিক বলে গালি দেয় তো দিক গে।

      Delete
  4. অনেক ঘুরেছি, পুরী দার্জিলিং সিমলা কুলু মানালি মুসৌরী গ্যাংটক অমৃতসর জৈসলমির কাশ্মীর আন্দামান গোয়া কানহা, কিন্তু লে লাদাখ -এর কোনই তুলনা হয় না, এক কথায় অপার্থিব সৌন্দর্য, এখনো ভাবলে গায়ে কাঁটা দেয় | মনে হয় বার বার যাই, তবে পয়সা সীমিত, যাওয়ার জায়গা অনেক , তাই একবার-ই গেছি | মোটেও এমন কিছু দুর্গম নয় , খরচও তেমন কিছু আহামরি নয় , খালি " বমি হইতে সাবধান " | সেটারও উপায় আছে , যখন যাবে জেনে নিও ! তবে রুক্ষতা যে এমন মনোরম হতে পারে, তা কল্পনারও অতীত !!

    ReplyDelete
    Replies
    1. ইস তিলকমামা, তোমার কমেন্ট পড়ে লাদাখ যাওয়ার ইচ্ছে একেবারে লকলকিয়ে উঠেছে। আমাদের দুজনেরই বমিবিষয়ক ট্র্যাক রেকর্ড অত্যন্ত খারাপ, কাজেই তোমার টিপস কাজে দেবে।

      Delete
    2. হোমিও প্যাথি ওষুধ কোকা ৬ সঙ্গে রাখিবেন লে লাদাখে । নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি ।
      মিঠু

      Delete
    3. তুমিও লাদাখ ঘুরে এসেছ,মিঠু? নাঃ সব ফেলে এবার লাদাখেই যেতে হবে মনে হচ্ছে।

      Delete
  5. আসাম সম্বন্ধে একেবারে একমত| তবে লাদাখ ভীষণ ভীষণ সুন্দর, অন্যরকম সুন্দর| শুধু একটু সময় নিয়ে যেও, না হলে অক্সিজেনের অভাবে খাবি খাবে| Acclimatized হতে একটু সময় লাগে| আর গিয়েই পরের দিন খার্দুংলা পাসে দৌড়িও না, তা হলে শরীর খারাপ হবেই|
    আমি লাদাখ গিয়েছিলাম মে মাসে, দিল্লি থেকে ফ্লাইট যখন ভোরবেলা শিবালিক রেঞ্জের ওপর দিয়ে নামে সে দৃশ্য বর্ণনা করার ভাষা আমার নেই| বরফমোড়া চুড়োর ওপর ভোরের রোদ পড়লে ওরকম লাগে কে জানত! দুটো পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে সে কী দুর্ধর্ষ ল্যাণ্ড়িং| আর থাকতাম এয়ারফোর্স মেসে, পাশেই এয়ারপোর্ট,সকালবেলা ঠিক অমনি করেই দুটো পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে তীরের মত এয়ারক্রাফ্ট টেক অফ করত...না দেখলে ও জিনিস বলে বোঝানো যায় না| সাতদিন লাদাখে কাটিয়ে দিল্লিতে নেমে ভাবলাম কেন ফিরলাম? তারপরে বেলা বারোটার সময় সরোজিনীতে দরাদরি করতে করতে যখন দরদরিয়ে ঘামছি তখন আর ফিরে যাওয়ার উপায় ছিল না এই যা!
    আন্দামানও কিন্তু খুব সুন্দর, তবে সুনামির পরে একটু ঘেঁটে গেছে এই যা|

    ReplyDelete
    Replies
    1. দেখেছ অদিতি, তোমার দেওয়া বন্দীপুরের বর্ণনা পড়ে তিন্নির মন কেমন বন্দীপুরমুখো হয়েছে? ঠিক যেমন লাদাখেরটা পড়ে আমার হল। তোমাদের সবার কথা শুনে আমার এক্ষুনি লাদাখ যেতে ইচ্ছে করছে। আর যাব যখন বেশি সময় নিয়েই যাব, তুমি যেমন বললে। শরীর খারাপ হলে সব বেড়ানো মাটি।

      সরোজিনী নগর?! তাও আবার মে মাসের দুপুরে?! ভাবতেই রোমাঞ্চ হচ্ছে। দিল্লির যে কটা জায়গা আমি প্লেগের মতো এড়িয়ে চলি, তার মধ্যে ওই বাজারটি একনম্বর। একবার গেলে পরের তিনদিন লাগে শক কাটতে।

      Delete
  6. হাহা, তা ঠিক, অতীব রোমাঞ্চকরই বটে। কিন্তু কলকাত্তাইয়া অতিথিরা এলে তাদের নিয়ে ওখানে যে একবার ঢুঁ মারতেই হত। তাঁরা হুমায়ুনের সমাধি টমাধি দেখতে চান না, কুতুব ছবিতে বহুবার দেখেছেন আর না দেখলেও চলবে, কিন্তু সরোজিনী নগর না গেলে তাঁদের দিল্লি ভ্রমণ অসমাপ্ত ।

    বন্দীপুরের বর্ণনা কাউকে উদ্বুদ্ধ করেছে জেনে খুব ভালো লাগল, তবে আমার বন্দীপুর ভ্রমণ অবশ্য প্রাক্-বীরাপ্পন যুগে, এখন অবস্থা কী রকম জানি না। বর্ণনার সহিত না মিলিলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নহে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. এইটা একদম ঠিক। মানে আমরা যখন কলকাত্তাইয়া ছিলাম (আমি অবশ্য রিষড়া) তখন আমার মামাতো দিদির বিয়ে হয়েছিল দিল্লিতে আর আমরা সবাই ওই হুড়োহুড়ির মধ্যেই টাইম বার করে সরোজিনী নগরে গিয়ে পাগলের মতো শালসোয়েটার কিনেছিলাম। মানে মাবাবামামামামিরা কিনেছিলেন, আমরা চূড়ান্ত বোর হয়েছিলাম।

      Delete
  7. McLeodgunj! Gushaini! Kasol! Manali! Mandu! Jhansi! Rishikesh! Udaipur! Jaisalmer! Srinagar!

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই গুশাইনিতেই তোমার সেই রাজুবাবুর কটেজ না? আমি কিন্তু তোমার লিস্টে ম্যাকলাস্কিগঞ্জের নামটা আশা করেছিলাম বিম্ববতী, তোমার লেখায় সেই যে পড়েছিলাম, ম্যাকলাস্কিগঞ্জে চায়ের দোকান খোলা তোমার একটা অন্যতম লাইফ-গোল? নাকি স্মৃতি বিট্রে করছে?

      Delete
    2. McLeodgunj ey chaa er dokan khola. McCluskieganj ey toh jaini kokhono. :P (Oboshyo uporer lister kichhu jaygateo ami jaini.)

      Delete
    3. ওহ, সরি সরি। আসলে কী হয়েছে বল তো, আমার আবার ম্যাকলাস্কিগঞ্জে যাওয়ার দারুণ শখ। তোমার লেখায় ম্যাক...পর্যন্ত দেখেই তাই ম্যাকলাস্কিগঞ্জ ভেবে উৎফুল্ল হয়ে পড়েছিলাম। সাইকোলজির ষড়যন্ত্র আরকি। আমি আশীর্বাদ করছি তুমি ম্যাকলিওডগঞ্জে একটা মারাত্মক হেপ অ্যান্ড হ্যাপেনিং চায়ের দোকান খোলো, আর তারপর আমরা ছুটি পেলেই তোমার দোকানে চা খেতে যাই।

      Delete
    4. ম্যাকলাস্কিগঞ্জে যাওয়া এখন খুব সেফ নয় ।
      মিঠু

      Delete
    5. এই হয়েছে মহামুশকিল, সব ভালো ভালো জায়গাগুলো আনসেফ হয়ে যাচ্ছে, মিঠু।

      Delete
  8. ami kina boddo romantic balok, tai ami dikshunnopur jabo!!!!

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাঃ, এটা তো যাওয়ার মতোই জায়গা অর্ণব। তুমি ঘুরে এসে আমাকে বোলো তো জায়গাটা কেমন।

      Delete
  9. হাফলং আর কক্সবাজারের নাম প্রথম পড়েছিলাম কাকাবাবুর গল্পে। লক্ষনাবতী আর দার্জিলিং এর কথা প্রথম পড়েছি ফেলুদার গল্পে। উঁহু, দার্জিলিংটা ফেলুদার ঠাকুর্দা উপেন্দ্রকিশোরের লেখায় পড়েছিলাম। কিন্তু আমি নিজে এর মধ্যে গেছি শুধুমাত্র লক্ষনাবতীতে। আপনার লিস্টে কিন্তু আমার সবথেকে আকর্ষনীয় মনে হলো বাকি দুটো জায়গা - মানস অভয়ারণ্য আর লে-লাদাখ। যাই হোক, আপনি কোথাও একটা ঘুরে আসুন। ছবি সমেত ভ্রমনকাহিনী পাব আমরা, আমাদেরই লাভ। এই সুযোগে বলি, আমার একটা জায়গা খুব ভালো লেগেছিল, শান্ত নিরিবিলি বলে। অবশ্য জানিনা এখনও সেই ১৯৯৮ সালের মতন আছে কিনা। জায়গাটা হলো কৌসানি। নৈনিতাল থেকে যেতে হয়।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে এক্ষুনি যেতে পারলে তো বেঁচেই যেতাম, কিন্তু নানারকম কনস্ট্রেন্টস, বুঝলেন কি না। কৌসানির কথা আমি প্রতিবার মাথার ভেতর নাড়িচাড়ি, কিন্তু যাওয়ার সময় অন্য কোনও একটা হিলস্টেশন জিতে যায়। নৈনিতালের ওদিকটায় নানারকম ভালো ভালো জায়গা আছে, গেলেই হয়, কিন্তু আমার আবার নৈনিতাল নামটা শুনলেই বুক ধড়ফড় করে। প্রায় দিল্লির মতোই শহর হয়ে গেছে নৈনিতাল।

      লক্ষণাবতীর প্রতি আমারও আকর্ষণের শুরুটা বনবিহারী বাবুর র‍্যাটল স্নেক থেকে। আমার ধারণা, অনেকেরই তাই।

      Delete
    2. anek chotobelay Ranikhet gechilam,asadharon legechilo

      Delete
    3. রানিক্ষেতের গল্প শুনিনি তো, এই উইকএন্ডে শুনব তাহলে।

      Delete
  10. kuntaladi, tomar listi ta eto jompesh hoyeche ki bolbo!! kintu khub asha korechilam kerala thakbe, nei keno? jodio ekhon bangali tar madhuchandrimar dohai diye eto bar ghure ashe kerala theke ke je ekhane na ele jantam e na, oi gutikoek chena shona jayga (aleppi, munnar etc) bad diyeo nirjon kerala onek beshi ruposhi o rohosyomoye..tomake dhore bedhe ante hole, nirjontatar top tai kaje lagbe jani!! ekhon bhora borsha shuru holo bole loke monsson er keralay offseason bole ashe na kintu amar mone hoy sei somoy tai best..onek naam na jana jayga ache, jekhane kerala tourism sadore amontron janchche!! chole esho na lokkhididti..trivandrum ghati kore sundor plan kore nite parbe aar local host (ei adhom) to riloi!!!!
    http://www.ktdc.com/ ei site ta chotpot dekhe felo....ar ei amontron kntu abantorer sob bodhuder kachei rakhlam!! ekta abantor ispecial tour plan kora jay ki??delhi chuye jabo sobai:)

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাঃ বাঃ, কী ভালো নেমন্তন্ন পারমিতা। মন খুশি হয়ে গেল। আরে কেরালা যাওয়ার ইচ্ছে বহুদিনের, কিন্তু আমরা এই উত্তরে, কেরালা সেইইইইই দক্ষিণে, মাঝের এই দূরত্বটা অতিক্রম করতে হবে ভাবলেই গায়ে জ্বর আসে। আমার মতে তো বর্ষায় সব জায়গাই বেশি সুন্দর, গড'স ওন কান্ট্রি যে সুন্দরতর হবে তাতে আর বেশি কথা কি।

      অবান্তর স্পেশাল ট্যুর? কল্পনা করতে গিয়েই আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছি।

      Delete
    2. হোক না ,মন্দ কি ! আমার তো ভাবতেই দারুণ লাগছে।
      চল হে সবাই
      মিঠু

      Delete
    3. আমি শুধু চিড়িয়াখানা যেতে রাজি আছি। তাও যদি কেউ টিফিনবাক্স করে ডিমসেদ্ধ আর স্যান্ডউইচ আনার প্রতিশ্রুতি দেয়, তবেই।

      Delete
  11. লাদাখ jabar khub ichhe korchhe sobbaikar lekha pore. bhabchhi amio ekta লাদাখ fund khule pheli. Darjeeling to ei sob e abar ghure elam.. tobe abar ekhunii jete pari... ekhuni je kono jaigai jete pari.. ekta bag guchhie nilei holo. kintu oi chakrir emoni maya ... se ar holona.. oi minimum 6 month ba 1 year gap na dile berie porai jachhena.. ar oi pnujiro obhab... jakge dukhyo kore ar ki labh tar theke internet.. google kore kore manos bhromon i kore jai. Kerala o top list e roilo. ajkal olos muhurtye oi bhromon er page gulotei ghure mori :-D.

    ReplyDelete
  12. Amar favorite topic.. ei topic er series hole bhalo hoy.. :) Ladakh fund idea ta nilam..

    ReplyDelete
  13. Gechis kina janina. Chup kore himalay er dike cheye bose thakar jonyo shantite sobuje mon pete dewar jonyo.....west sikim er versey ar rinchenpong. ....aami jibone prothom kundu special er naam jenechilam tor kach theke. Berate jawar plan korlei mone pore. Darjeeling gele...RIshop o ache. Khub sundor jayga. Onekbar giyeo mone hoy abar jaai. Etto jaygar naam sobai bollm tor list shonar poreo...tor agami teen bochorer beranor plan hoye jabe bol?

    ReplyDelete
  14. Jah koto ki likhlam gyalo na mone hoy

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে একটা কুইজ চলছিল, কমেন্ট মডারেট করছিলাম, তাই তোর কমেন্টটা আটকে ছিল সাহানা।

      ঠিকই বলেছিস, তিন বছরের রসদ জমে গেছে। তোর বলা জায়গার নামগুলোও লিখে নিলাম। সিকিম যাইনি আমি কখনও, খুব ইছে যাওয়ার। গেলে তোর সাজেস্ট করা জায়গাদুটোয় যেতে খুব চেষ্টা করব।

      Delete
  15. দার্জিলিঙয়ের থেকেও একটা সুন্সুদর জায়গা আছে, ওরই কাছাকাছি। যদি পারো যেও। রিম্বিক। কার্কাশিয়ং থেকে রাস্রতা ঘুরে গেছে। জীপ বা বাস যায়। এত ভালো জায়গা প্সশ্চিমবঙ্গে খুব কমই আছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ওহ, যাব তো। সাজেসশন দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

      Delete

Post a Comment