এক্সপায়ারি ডেট আর মাটন স্টু



প্রতিদিন অফিস আর সি আর পার্ক, সি আর পার্ক আর অফিস করে করে এমন তিতিবিরক্ত হয়ে যাই যে ছুটির দিন অন্য কোথাও যেতে ইচ্ছে করে। কিন্তু সে সব যাওয়ার জায়গাও ক্রমশ একঘেয়ে হয়ে যায়। সেই ঘুরিয়েফিরিয়ে তিনটে হলে সিনেমা দেখা, নয়তো সেই শপিং মলে সস্তা সুশি খেতে যাওয়া নয়তো বাড়ির কাছের নৈবেদ্যমে উত্থাপাম ব্রেকফাস্ট। সেদিন মুখ বদলাতে আমরা গিয়েছিলাম সাউথ এক্সটেনশনে।

একটা কাজের ছুতো করেই যাওয়া অবশ্য। কাজের পর অকাজ হবে, বেংগলি সুইট সেন্টারে ছোলে ভাটুরে খাব খেয়ে এমন অম্বল হবে, আর কিছু দাঁতে কাটা যাবে না, একেবারে ডিনার পর্যন্ত নিশ্চিন্তি।

কিন্তু সাউথ এক্সটেনশনে যাওয়ার একটা সমস্যা আছে, যাঁরা গেছেন তাঁরা জানেন। এক্সটেনশনের দুটি ভাগ, এক এবং দুই। রাস্তার এ পারে একটি ওপারে একটি। মুশকিল হচ্ছে কোন পারে যে কোনটি সেটা আমার বা অর্চিষ্মানের কারওরই মনে থাকে না। অর্চিষ্মানের মনে না থাকার যাও বা অজুহাত আছে, আমার নেই। জীবনের একটা খুব ইন্টারেস্টিং সময়ে মাস চারেক আমি ওই পাড়ায় কাটিয়েছিলাম। তবু ভুলে যাই। যত বার ও তল্লাটে যাই নিজেকে বলি, “সাউথ এক্স ওয়ান বাঁ দিকে, টু ডান দিকে। এই মনে করে রাখলাম, আর ভুলব না” পরের আবার নতুন করে মনে করাতে হয়। আশ্চর্য ব্যাপার। কত শত শক্ত শক্ত কথা মনে করে রাখি, কবে কে কড়া কথা বলেছিল, সেই শুনে আমার গায়ে কেমন ফোসকা পড়েছিল, সেই ফোসকার আকার আয়তন জ্বলুনি সব এখনও ছবির মতো মনে আছে, অথচ এই সামান্য ওয়ান টু ডান বাঁয়ের কম্বিনেশন মনে রাখতে পারি না। মেমোরি মুভস ইন মিস্টিরিয়াস ওয়েস।

যাই হোক, স্মৃতি যখন ফেল পড়ল তখন আমরা আবার ম্যাপের দ্বারস্থ হলাম। ম্যাপে রাস্তার এদিকওদিক পরিষ্কার হল, সঙ্গে সঙ্গে আরও একটা ব্যাপার চোখে পড়ল। দু’পাশের বাজারেই গিজগিজ করছে প্রাইভেট গোয়েন্দার অফিস

এত বয়স হল, তবু গোয়েন্দা ব্যাপারটাকে গল্পের বইয়ের বাইরে দেখলে এখনও অবাক লাগে ছোটবেলায় প্রথম যেদিন কলকাতায় বাসের জানালা দিয়ে হোটেল দেখেছিলাম সেদিন যেমন অবাক হয়েছিলাম প্রায় তেমনই। কলকাতার হোটেল কেন? কারা থাকে এ সব হোটেলে? সবারই তো বাড়ি আছে, যে যার নিজের বাড়িতে গিয়ে থাকে না কেন? অনেকটা তেমনই মনে হয়। এখানে না আছে ভিকারেজ, না আছে হেস্টিংস, না আছে মগনলাল মেঘরাজ, না আছে সত্যবতী আর খোকা। এত সব প্রাইভেট ডিটেকটিভ তবে করে কী?

অর্চিষ্মান গম্ভীর মুখে বলল, সব বিয়ে পার্পাসে।

তাই হবে। বিয়ের আগে লোকে অপর পক্ষের হাঁড়ির খবর নিতে গোয়েন্দা লাগায় জেনেও আমি ভয়ানক অবাক হয়েছিলাম। (বোঝাই যাচ্ছে আমার অবাক হওয়ার রোগ আছে। তবে এ রোগটা কমন। বেশির ভাগ মানুষই যখনতখন অবাক হয়। উল্টো রোগটা, কিছুতেই অবাক না হওয়াটা, রেয়ার। সে রকম একজনকে নিয়ে বাংলায় একটা গল্প লেখা হয়েছিল। তিনি কিছুতেই আশ্চর্য হতেন না, কেবল মনসুরের দোকানের মোগলাই পরোটা আর কাবাব ছাড়া। তাঁর নাম বলতে পারলে হাততালি।)  

অবশ্য সব খোঁজখবরই যে গোয়েন্দা লাগিয়ে নিতে হয় তেমন নয়। যে প্রশ্নগুলো মুখের ওপর জিজ্ঞাসা করতে চক্ষুলজ্জায় বাধে শুধু সেগুলোর জন্যই গোয়েন্দার দরকার। কত মাইনে পায়, গোপন রোগ আছে কি না ইত্যাদি। আর যে বিষয়গুলো নির্দ্বিধায় মুখের ওপর জিজ্ঞাসা করা যায়, সেগুলো লোকে নিজেরাই মিলিয়ে নেয়। আপনাদের জাত, ধর্ম, কুল, গোত্র কী? পাত্র/পাত্রী দেবতা না মানুষ না রাক্ষস? না মাঙ্গলিক? বিয়ে হওয়ার জন্য এ সব জানা জরুরি। আরও কিছু জিনিস জরুরি, যেমন গায়ের রং, তবে সেগুলো বাইরে থেকেই বেশ বোঝা যায়। মেলা প্রশ্ন খরচ করতে হয় না।

যাঁরা বিবেচক তাঁরা এইটুকু মিলিয়েই ক্ষান্ত দেন, কিছু লোক আবার বাড়াবাড়ি রকম খুঁতখুঁতে হয়। তারা পছন্দ অপছন্দ, রুচি অরুচি, মত অমত এইসব আবোলতাবোল ব্যাপার নিয়েও মাথা ঘামায়। অন্যপক্ষ দেরিদার নাম শুনেছে কি না, মাধ্যমিকের সিলেবাসের ‘গাছ’ নামের কবিতাটা বুঝেছে কি না, কমলকুমার পড়েছে কি না, সেই ভেবে ভেবে রাতের ঘুম মাটি করে। আমাদের চেনা একজন একবার বাড়ির লোকের ঠিক করা সম্বন্ধের সঙ্গে ব্লাইন্ড ডেটে দেখা করে এসে প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল। “চেতন ভগত পড়ে! চেতন ভগত?! গোদার উচ্চারণ করতে পারে না, বলছে নাকি গোদার্দ! গোদার্দ?!” তার হাতপা ছোঁড়াছুঁড়ি দেখে আমরা আড়ালে খুব হেসেছিলাম। আমি গোদার জানতাম আর চেতন ভগত পড়তাম না, তাই বেশি জোরে হেসেছিলাম। এক পক্ষ “Chaste” ইংরিজিতে কথা বলতে পারে না বলে সম্বন্ধ ভেঙে যেতে দেখে অবশ্য একটুও হাসি পায়নি, উল্টে ঘাড়ের রোঁয়া খাড়া হয়ে গিয়েছিল।

দুঃখের বিষয় কোন বিষয়টা যে মিলিয়ে নেওয়া জরুরি আর কোনটা যে জরুরি নয় সেটা বিয়ের আগে বোঝা অসম্ভব। বিয়ের পর হয়তো দেখা গেল কমলকুমার চেতন ভগত কোনওটাই পড়ার সময় নেই, এবং আবিষ্কার করা গেল যে গোদার্দ উচ্চারণ ক্ষমা করে দেওয়া নিতান্তই সহজ, বরং অনেক শক্ত হচ্ছে গরিব লোক দেখলেই তুইতোকারি শুরু করার বদঅভ্যেসটা বিয়ের আগে যেটা চেক করে নেওয়ার কথা মাথাতেই আসেনি।

আমার মতে বিয়ের আগে যদি কিছুর খোঁজখবর নিতেই হয় তবে টাকার প্রতি মনোভাবের খোঁজখবর নেওয়া উচিত। যার সঙ্গে সারা জীবনের সম্পর্ক পাতাতে যাচ্ছেন জানতে চান সে কীভাবে টাকা রোজগার করতে পছন্দ করে জিজ্ঞাসা করুন। মাসমাইনেয় না ব্যাংক লুটে? টাকা সে জমায় কোথায়, ব্যাংকে, মিউচুয়াল ফান্ডে না বাগানের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের নারকেল গাছের তলায়? দরকারের বেশি টাকা সে কীভাবে ওড়ায়, বই কিনে, বেড়াতে গিয়ে, ডিজাইনার বুটিকে না রেসের মাঠে। রুচিপছন্দের খোঁজ নিতে হলে জানতে চান অঞ্জন না শিলাজিৎ, কার গান তার পছন্দ (এটা একটা ট্রিক কোশ্চেন, কিন্তু ভীষণ কার্যকরী)

ও, আর এক্সপায়ারি ডেটের কথাটা ভুলে যাবেন না। বিয়ের আগে অবশ্য করে জানতে চাইবেন খাবারদাবারের প্যাকেটের গায়ে যে এক্সপায়ারি ডেট ছাপা থাকে সে সম্পর্কে অপর পক্ষের মতামত কী।

*****


সেদিন শনিবার সকালে আমি খুব তরিবত করে গ্রিলড চিজ অ্যান্ড সালামি স্যান্ডউইচ বানিয়ে এনেছি, অর্চিষ্মান বিছানা তুলে, বারান্দা থেকে কাগজ এনে, টিভি চালিয়ে, চা করে, স্যান্ডউইচের জন্য টমেটো সস আনতে গেছে, আমি বসে বসে টিভির চ্যানেল পাল্টাচ্ছি এমন সময় রান্নাঘরের দিক থেকে একটা আর্তনাদ ভেসে এল।

এ কী? এ কী? এ কী?

আমি ছুটে গিয়ে দেখলাম ফ্রিজ খোলা, দরজার শেলফ থেকে একটা একটা করে শিশিবোতল তুলছে অর্চিষ্মান, সেটার চোখের কাছে নিয়ে ভুরু কুঁচকে কী একটা পড়ছে আর তাক করে ছুঁড়ে ছুঁড়ে রান্নাঘরের কোণে রাখা জঞ্জালের ঝুড়িতে ফেলছে।

প্রত্যেকটা শিশিরই নাকি এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে গেছে।

আমি বলতে বাধ্য হলাম যে এক্সপায়ারি ডেট ব্যাপারটা আমার মতে একটা হোক্স। আমি এই সেদিনই সাপ্তাহিকীর জন্য ঘুরতে ঘুরতে একটা আর্টিকল দেখেছি যেখানে বলছে এক্সপায়ারি ডেট যা লেখা থাকে স্বচ্ছন্দে তার থেকে ছ’মাস পর পর্যন্ত সেটা ব্যবহার করা চলে।

শুনে অর্চিষ্মান খানিকক্ষণ হাঁ করে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। মনে হল ভাবছে, বিয়ের আগে এই ব্যাপারটা জিজ্ঞাসা করার কথা মাথায় আসেনি কেন।  

মেয়োনিজ গেল, মাস্টার্ড গেল, কাসুন্দি গেল, কিসান মিক্সড ফ্রুট জ্যাম গেল, ম্যাগি টমেটো সস গেল। তারপর একটা চৌকো মতো বাক্সের দিকে হাত বাড়াতেই আমি ঝাঁপিয়ে পড়লাম।

নারকেলের দুধের প্যাকেট। চিংড়ির মালাইকারি বানানোর জন্য এই সেদিন কিনেছিলাম। খানিকটা এখনও বাকি আছে। এটা এখনই এক্সপায়ার করতেই পারে না। অন গড ফাদার মাদার।

দেখি।

আমি বলছি তোমাকে এটা এক্সপায়ার করেনি।

দেখিই না। হুম, এখনও করেনি, কিন্তু একমাস বাদেই করবে। আবার যবে মালাইকারি রাঁধবে নতুন কিনে এনো’খন। এটা ফেলে দাও। এই না বলে অর্চিষ্মান তাক করে ছোঁড়ার ভঙ্গি করল।

নাআআঅআআ আর্তনাদ করে আমি বাক্স ছিনিয়ে নিলাম। নাককান মুলে কিরে কাটলাম, এক মাস ফুরোনোর আগেই আমি দুধটুকু ব্যবহার করে ফেলব। দুপুরের রোদ একটু পড়তেই বাজারে গিয়ে মাটন কিনে আনলাম। ম্যারিনেট করে রেখে দিলাম সারারাত, পরদিন সকালে উঠে মাটন স্টু রান্না করে ফেললাম। বেঁচে থাকা নারকেলের দুধটুকু কাজে লেগে গেল।

রান্নাটা সম্পর্কে কয়েকটা কথা বলে নিই। ব্যাপারটা ঠিক আমাদের রগরোগে ঝোলের মতো নয়, কাজেই এটা ভাত কিংবা রুটি দিয়ে খেতে কেমন লাগবে সেটা আমি জানি না। আপনারা ট্রাই করে দেখতে পারেন। যতবারই আমাদের বাড়িতে রান্নাটা হয়েছে ততবারই সঙ্গে আমরা পাঁউরুটি সেঁকে খেয়েছি। মাংস তো খেতে ভালোই হয় কিন্তু ঝোলটা আমাদের বেস্ট লেগেছে প্রথমবার মাংস ফুরোনোর আগেই ঝোল ফুরিয়ে গিয়েছিল বলে পরের বার বেশি করে ঝোল রেখেছিলাম, সেবারও ঝোলটাই আগে ফুরোলো।

দ্বিতীয় বলার কথাটা প্রেশার কুকার নিয়ে। পাঁচশো গ্রাম মাংস, আলু গাজর টমেটো পছন্দমতো সেদ্ধ হতে আমার প্রেশার কুকারে সাত থেকে আটটা সিটি লাগে। আপনার প্রেশার কুকারে ক’টা সিটি লাগবে সেটা আপনিই সবথেকে ভালো বুঝতে পারবেন।    

মাটন স্টু

কী কী লাগবে

পাঁঠার মাংসঃ ৫০০ গ্রাম টুকরো করা
ভিনিগারঃ ১ বড় চামচ
তেলঃ ১ বড় চামচ
ছোট এলাচঃ ৪ টে
লবঙ্গঃ ৪ টা
দারচিনিঃ ২ ইঞ্চি
গোলমরিচঃ ১৫-২০টা
কারি পাতাঃ ১০-১৫টা
পেঁয়াজঃ তিনটে মাঝারি, কুচোনো
আদারসুন বাটাঃ ২ বড় চামচ
আলুঃ ৪টে মাঝারি, অর্ধেক করে কাটা
গাজরঃ ২টো মাঝারি, টুকরো করে কাটা
টমেটোঃ ২টো মাঝারি, টুকরো করে কাটা
গরম জলঃ আধ কাপ (বা ইচ্ছে মতো)
নারকেলের দুধঃ আধ কাপ
কাঁচালংকাঃ ৪টে (চেরা)

কী করে করবেন

পাঁঠার মাংস ভিনিগার দিয়ে মেখে রেখে দিন। চার ঘণ্টা থেকে সারা রাত

প্রেশার কুকারে তেল বসানতেল গরম হতে হতে এলাচ লবঙ্গ দারচিনি গোলমরিচ থেঁতো করুন। গরম তেলে ছেড়ে দিন। নাড়ুনচাড়ুন। কারিপাতা দিন। নাড়ুনচাড়ুন। সুগন্ধ বেরোলে পেঁয়াজকুচি দিন। আঁচ মাঝারি-কমের দিকে রেখে সাত থেকে দশ মিনিট ভাজুন। আদারসুনবাটা দিন। ভালো করে পেঁয়াজের সঙ্গে মেশান। ভিনিগার-মাখা মাংসটা দিয়ে দিন। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে নেড়েচেড়ে মাংসে বাদামী রং ধরান। আলু গাজর টমেটো আর গরম জল দিয়ে ঢাকা দিন।

সাত থেকে আটটা সিটি পড়তে দিন।

গ্যাস নিভিয়ে দিন। প্রেশার নিজে থেকে বেরিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ঢাকনা খুলে মাংস তরিতরকারি সব পছন্দমতো নরম হয়েছে কি না দেখেশুনে নিন। এবার গ্যাস জ্বালিয়ে নারকেলের দুধ আর চেরা কাঁচালংকাগুলো দিয়ে দিন। গোটা ব্যাপারটা নিচু আঁচে (আঁচ বাড়ালে ভিনিগারের সঙ্গে রিঅ্যাকশনে নারকেলের দুধের ছানা কেটে যেতে পারে) মেশামিশি হতে দিন।

ব্যস, রান্না শেষ। এবার রুটি ভাত কিংবা কড়কড়ে করে সেঁকা পাঁউরুটি দিয়ে খান।

কেমন হয়েছিল বলতে গিয়ে আবার একই সমস্যা। বিশেষ করে আমার পরিস্থিতিতে যেখানে রাঁধিয়ের সঙ্গে খাইয়ের নিতান্ত পক্ষপাতের সম্পর্ক (এক্সপায়ারি ডেট সম্পর্কে মতামত না মেলা সত্ত্বেও)। অর্চিষ্মান প্রথমবার খেয়ে বলেছিল “টু গুড”, দ্বিতীয়বার শুধু চোখ বুজে মাথা নেড়েছিল। কিন্তু সে কথা বললে নিন্দুকেরা বেঁকা হেসে বলতে পারেন তা তো নাড়বেই।   

কাজেই রান্নাটা কেমন হয়েছে সেটা আপনাদেরই পরখ করে দেখতে হবে। নারকেলের দুধ বাড়িতে না থাকলে কিনে আনুন। এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে যাওয়ার আগে এই রান্নাটা করে ফেলুন। আমাকে মনে করে জানান কেমন খেলেন।
















Comments

  1. লেখা, রান্না, ছবি সব একেবারে বাঁধিয়ে রাখার মতন। :) নিজের রান্না কেমন হয়েছে, এই প্রশ্নটাই অবান্তর, সেটা নিয়েও কোনো দ্বিমত নেই।
    গল্পটা কি সত্যজিৎ রায়ের লেখা? গল্পের নাম আর চরিত্রের নাম কিছুতেই মনে পড়ছে না। :(

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, অরিজিত। লেখক ঠিক ধরেছেন, গল্পের নাম বৃহচ্চঞ্চু আর চরিত্রের নাম তুলসীবাবু।

      Delete
  2. Brihochonchu golper naam. satyajit ray. kintu character tar naam kichutei one porche na..

    ReplyDelete
  3. Replies
    1. তুলসীবাবু, সঞ্চারী। এই সমস্ত পচা প্রশ্নের এত আগ্রহ নিয়ে উত্তর দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

      Delete
    2. uhuuuuu.. "pocha" byaparta ekta hoax. ;-) proshnogulor relevance osadharon. sotyi.

      Delete
    3. আরে থ্যাংক ইউ, সঞ্চারী।

      Delete
  4. তুলসিবাবু (বৃহচ্চঞ্চু)।
    একটু জ্ঞান দিই? (বুড়ো হবার লক্ষন)
    পাঁঠার মাংস কোথা থেকে কেনা হচ্ছে, এইটা কিন্তু রান্নার ওপরে বিরাট প্রভাব বিস্তার করে। সামনের রান? নাকি পেছনে? সিনা? নাকি চাপ? গর্দান? নাকি রেওয়াজ?
    বললে পেত্যয় যাবেননি দিদিমনি, সেদিন দেকনু একখানা ডকুতে দেখাচ্ছে, ওসমানি সুলতানের রান্নাঘরে (ইস্তানবুলে) নাকি ভেড়ার ডান পা, বাঁ পায়ে স্বাদের পার্থক্য করা হতো। দেখেই খুরে খুরে দন্ডবত হয়েছি, অবিশ্যি ভেড়ার নয়, পাচক ঠাকুরের। তবে যাই বলুন, পাঁঠার মাংস কেনা কিন্তু মামুলি সায়েন্স নয়, অতি উচ্চাঙ্গের আর্ট।
    আপনার ইস্টু (ময়দানের বিভিন্ন ক্লাবের ক্যান্টিনে এই বস্তুটি ইস্টু হিসেবেই চলে, শুধু কারিপাতাটি বাদে), আমার যে টুকু জ্ঞান-বুদ্ধি অবশিষ্ট, তাতে করে কচি পাঁঠার সামনের রানের ওপর দিকের অংশ দিয়ে তোফা হবে।
    আর একটা টোটকা বলি? আদা বাটা না দিয়ে, আদাটা ছেঁচে নিয়ে রস টুকু দিয়ে দেখতে পারেন জল দেবার আগে।

    তবে আপনার লেখা বড় উপাদেয়। রবিবারের দুপুরটা বেশ জমে গেল। আমি আর আমার কন্যা একসঙ্গে পড়লাম। আমরা দুজনে ঠিক করেছি সামনের রবিবার করব। যদিও শীতে জমে ভালো।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সোমনাথ, আমি জানি না এটাকে টেলিপ্যাথির ঠাকুরদাদা না প্রপিতামহ কী বলা উচিত। পোস্টটা লেখার সময়ই আমার মাথায় ছিল যে এইবেলা অবান্তরের পড়ুয়াদের কাছে জিজ্ঞাসা করে রাখি যে পাঁঠার কোন জায়গার মাংস দিয়ে কী রান্না ভালো হয়। আমি এ ব্যাপারে কিস্যু জানি না, কিন্তু জানার লোভ আছে। তারপর পোস্ট পাবলিশ করার তাড়াহুড়োয় সব ভুলে গেলাম। কিন্তু আপনি কেমন আমার মনের কথা বুঝতে পেরে এসে এই অসামান্য তথ্যটি জানিয়ে দিলেন। এরপর থেকে দোকানে গিয়ে গম্ভীর মুখে সামনের রানের ওপরের অংশটা চাইব। ভদ্রলোক ভাববেন, বাবা মহিলা কত জানেন।

      আপনি ঠিকই বলেছেন, রান্নাটা শীতকালে খেলেই ভালো হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় নারকেলের দুধটা অতদিন থাকত না, তাই অগত্যা। আপনি সকন্যা রান্নাটা করবেন, খাবেন এবং আমাকে অবশ্য করে জানাবেন কেমন হল আর কী কী হলে আরও ভালো হতে পারত।

      Delete
    2. কত জানেন এইটা কিছুতেই ভাববেনা দোকানে । আপনি আমি যা ই বলি, সবই তাঁদের কাছে শিশুসুলভ। অন্ততঃ তাকানোটা সেরকম ই হয়। ওঁয়াদের নিকষ্যি কূলিন ডেটাবেসে আপনার নামটি খালি লিখে রাখবেন, আর খামোখা ওজনে মারবেন না।

      Delete
  5. Brihocchonchu golper brihocchonchu ke jini pushechilen tini kichutei obak hoten na. ei prothom kichu akta mone kore uttor dite parlam. tao nam ta bhule gechi.
    date expire hoye jawa cream, saban, shampoo ami khub bemalum use kore ni. nosto korte gaye lage boroi.
    private detective agency dekhe ar tader ki jonne kaje lagano hoy eta prothombar jene amio khubi hotash hoyechilam. kothaye murder, kidnapping, churi r moto exciting bepar, ar kothaye biyer ager khoj khobor er moto mundane unimaginative issue.

    ReplyDelete
    Replies
    1. উত্তরে একেবারে একশোয় নিরানব্বই কুহেলি। তুলসীবাবুর ছুতোয় এক নম্বর কাটলাম, আমার জায়গায় আর কোনও মনুষ্যত্বওয়ালা দিদিমণি থাকলে পুরো নম্বর দিতেন।

      আমারও জিনিসপত্র নষ্ট করতে একদম ভালো লাগে না, কুহেলি।

      Delete
  6. মাটন স্টু তো নিশ্চই করব। দেখেই ভালো লাগছে ... এক্সপায়ারি ডেট দেখা আমার আজকাল খুব অভ্যেস। আমার ও নারকোলের দুধের প্যাকেট ফেলে দিলাম। . :) .. তবে এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে গেলে অনেক জিনিস কিন্তু ঠিক থাকেনা। আমি একবার ভুল করে ফ্রুটজুস খেয়ে ফেলেছিলাম চার পাঁচ দিন আগে এক্সপায়ারড.... একটু খেয়ে সন্দেহ হওয়াতে দেখি পুরো কালো রং এর জল হয়ে গেছে ... দেখে ভয় পেয়ে গলায় আঙ্গুল দিয়ে বমি করেছিলাম ... :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. করিস, করিস, ঊর্মি। করে জানাস আমাকে কেমন লাগল। তোর সাহসের ক্ষুরে ক্ষুরে নমস্কার। বমি করার কষ্ট আটকাতে আমি পচা জুস হজম করে ফেলতাম, বিশ্বাস কর।

      Delete
    2. Hahahahahaha!! Eta pore pet fatano hasi elo.

      Delete
  7. Marhaba, alhumdullillah.... Mangsher jhol a mangsho ar ki....oi jhol ar ALU e to sab...
    Biyer age imp criteria somporke satty khub bhul dharona thake. biye korar din koyek por e bujhlam sab theke imp jinis bhule gechhilam... Khete bhalobase na khaoay badha dite bhalobase.... :( can you please speak to my wife sometimes?

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, আহা বাধা কি কেউ সাধে দেয়? ভালোর জন্যই দেয়। ঝোল আর আলু নিয়ে যে ব্যাপারটা বললেন, সে জন্য আপনাকে পৃথিবীর হায়েস্ট হাই ফাইভটা দিলাম।

      Delete
  8. মুলচন্দ থেকে যাবার সময় সাউথ এক্স ওয়ান ডান দিকে, টু বাঁ দিকে। এককালে সোমদত্তাদেবী ও তাঁর শাশুড়ি মিলে আমাকে এমন নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরিয়েছেন, এখন মুখস্থ হয়ে গেছে।

    কুইজের উত্তর তুলসীবাবু। ডবল রেনবো দেখে অবাক হননি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ঠিক ঠিক, দেবাশিস। সাউথ এক্স-এর দিকও ঠিক, কুইজের উত্তরও ঠিক। একশোয় একেবারে দুশো নম্বর দিলাম।

      Delete
  9. Golpotar naam Brihadchanchu. Bhodroloker naamta Mahimbabu gocher kichu ki?

    ReplyDelete
    Replies
    1. গল্পের নামটা ঠিকই ধরেছ, রুণা। ভদ্রলোকের নাম তুলসীবাবু।

      Delete
    2. Brihadchanchu ki phire elo?

      http://www.thehindu.com/news/national/other-states/death-of-sheep-creates-panic-in-ganjam-region/article19248802.ece

      Delete
    3. রকমসকম দেখে তো সেরকমই মনে হচ্ছে.

      Delete
    4. Abar attack hoyechhe parer ratrei, matro 15 km duur-e.

      http://www.thehindu.com/todays-paper/tp-national/tp-otherstates/ten-sheep-killed-by-unidentified-wild-animal-in-odisha-village/article19256214.ece

      Delete
  10. expiry date ke obogya korar fol aj sokalei ter peyechi kina...sokal bela 3 min thake breakfast er jonne, dermin dudh gorom 30 sec cereals dhala ar bati niye bosa ar baki somoyta khete, ta expiry date e kolyane (ami konodin toyakkao korina, dudh ta din 7ek agei expiry date periyeche) , dudh ta doi hoye gelo gorom kortei! , baki somoye konorokome toast, tai bolchilam expiry date ke obogya korben na

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে প্রদীপ্তা, কী সমাপতন, আমিও পরশু রাতে দুধের বাটি ফ্রিজে ঢোকাতে ভুলে গিয়েছিলাম, কাল সকালে দেখছি দই হয়ে গেছে। ভাগ্যিস বাটি প্রায় ফুরিয়ে এসেছিল তাই চোটটা অল্পের ওপর দিয়ে গেল। আমি অবজ্ঞা করি না, করতে চাই সেটা সত্যি, কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই যুক্তিবুদ্ধির মুখ চেয়ে এক্সপায়ারি ডেট মেনেই চলতে হয়।

      Delete
  11. ei ranna ta kortei hochhe :) Bratati.

    ReplyDelete
    Replies
    1. কর কর, ব্রততী। করে আমাকে জানিও কেমন হল।

      Delete
  12. Tulsibabu....tobe Chakropornir rosh khabaar por Mansoorer moghlai ba tomaar Mutton Stew konotai kheten na :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. Naam mone na porleo second part ta mone hoyechhilo! Apuda dekhchhi ese likhe diye geche!! Lekhata first class hoyeche Kuntala! Jemon protyekbar hoe!

      Delete
    2. অর্পণ, এই কথাটা কিন্তু আমার মাথায় আসেনি। তবে মনে আছে, গল্পটা পড়ে আমার খুব চক্রপর্ণীর রস খাওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল। আমিষনিরামিষের পছন্দঅপছন্দের জন্য নয়, এ রকম ম্যাজিক যে হতে পারে সেটা পরখ করার জন্য।

      তপোব্রত, থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ।

      Delete
  13. Ai tui khub bhalo ranna koris. Ei ranna ta ami korboi korbo.

    ReplyDelete
    Replies
    1. বিশ্বাস কর, ভট্টা, আমি একেবারেই ভালো রান্না করি না। ভালো রান্না করে তারা যারা রোজকার ডাল ভাত বাটিচচ্চড়ি আঙুল চেটে শেষ করে ফেলার মতো বানাতে পারে। এই এলাচফেলাচ নারকেলের দুধটুধের ধার ধারতে হয় না তাদের।

      তবে তুই রান্নাটা করিস সময় হলে আর আমাকে জানাস কেমন খেলি।

      Delete
  14. অনেকদিন পর অবান্তরে এলাম, আর এসেই সোওওজা প্রশ্ন: তুলসীবাবু (বৃহচ্চন্চু) :)
    ইসটু টা দিব্বি হয়েছে, নারকোলের দুধ দেয় জানতাম না! তবে নারকোলের দুধ আমার তো দেখি খুব তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যায়। এই সেদিন কাকড়ার ঝোল রাধ্লাম, এক্স্পায়ারী যেতে না যেতেই ছাতা টাতা ধরে একশা :(
    তোমার এই গল্পটায় মনে পড়ল: আমার মার এই জিনিস না ফেলার আর ওসব এক্স্পায়ারী ডেট ফেট না মানার অভ্যেস আছে খুব ই, শেষ বার বাড়ি গিয়ে আমার পুরো এক দিন গেছিল ফ্রিজ থেকে সব ফেলে ফ্রিজ পরিষ্কার করতে :(

    ReplyDelete
    Replies
    1. একশোয় একশো, স্বাগতা। আমি কাকিমার সমব্যথী।

      Delete
  15. Oi narkel dudher packet kintu amar o fridge e pore pore expire hoye jaye. Boro bhalo ranna ekta dile Kuntala ... shiggiri try korte hobe. Amio ekhono mangsho ki kore kinte hoye bhalo kore jani na ... tomar eyi proshno ta niye ekta post er opekkhaye roilam.

    ReplyDelete
    Replies
    1. রান্নাটা করে দেখো, শর্মিলা, কেমন হল জানিও। নারকেল দুধটুধের ওই ঝামেলা। সব রান্নায় তো দেওয়া যায় না, পুরো প্যাকেট শেষ করাই ঝকমারি।

      Delete
  16. অবান্তর আমি ম্যারাথন ফরমাটে পড়ি। অর্থাৎ পর পর অনেকগুলো পোস্ট।

    এ ম্যারাথনের শুরু মাটনে হল। অসপিশাস।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, আশা করি ম্যারাথনের মাঝখান আর শেষটাও সুস্বাদু হোক।

      Delete
  17. Aj k korlam ... Ektu agei khelam pauruti diye... Besh laglo... Majhe majhei kore khabo bhabchi... Thank u Kuntala di...

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভেরি গুড, ঊর্মি। তুই যে রান্নাটা করলি আর মনে করে আমাকে যে জানালি এ জন্য অগুন্তি, অসংখ্য ধন্যবাদ।

      Delete

Post a Comment