সাতচল্লিশ



শাটার সিনেমাটা দেখেছেন? অরিজিন্যাল থাই কিংবা অ্যামেরিক্যান রিমেক? যারা দেখেননি এবং দেখতে চান এবং স্পয়লারে আপত্তি আছে, তাঁরা এইবেলা চোখ বন্ধ করুন। নেক্সট অনুচ্ছেদ থেকে পড়তে চাইলে পড়তে পারেন। যারা এখনও চোখ খুলে আছেন, তাঁদের জন্য আরেকবার গল্পটা বলি বা মনে করিয়ে দিই। একটি ফোটোগ্রাফার ছেলের জীবনে নানারকম গোলযোগ ঘটতে শুরু করে। তার তোলা ছবিতে নানারকম ভূতুড়ে আলো দেখতে পাওয়া যায়, অন্ধকার রাস্তায় গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় সামনে রাস্তায় রহস্যময় নারী লিফট চায়। এ সবই হরেদরে হরর ছবিতে থাকে, এ নিয়ে উত্তেজনার কিছু নেই। ইন্টারেস্টিং হচ্ছে অন্যান্য ভৌতিক উপসর্গগুলো। ছেলেটির কাঁধে ক্রমাগত ব্যথা হয়, ছেলেটির কাঁধ ক্রমশ ঝুঁকে যায়। ওজন মেশিনে উঠলে যা নম্বর দেখায় ওইরকম রোগাপ্যাংলা ছেলের অত ওজন হতেই পারে না। ছবির শেষে জানা যায় অতীতে ছেলেটি একটি পাপকাজ করেছিল, সে পাপের ভূত আক্ষরিক অর্থেই ছেলেটির কাঁধে চেপে বসে আছে, আর সেই ভারে ছেলেটি ক্রমশ বেঁকে যাচ্ছে। 

গত ক’দিন আমার অবস্থাটা হয়েছে অনেকটা সেইরকম। আমার বয়স বাড়ছে সেকেন্ড মিনিট ঘণ্টা মেপে যেমন বাড়ে, কিন্তু আমার কাঁধের বয়স যেন বাড়ছে একেক লাফে দশ বছর। অন্য কেউ দেখতে পাচ্ছে না, কিন্তু আমি টের পাচ্ছি কাঁধদুটো ধনুকের মতো বেঁকে গেছে, মাঝে মাঝে যখন সোজা করছি, টনটনিয়ে উঠছে। সবসময় মাথা ভার, মুখ হাঁড়ি। চেনা লোক দেখলে বুক ধড়ফড়, এই বুঝি কথা বলতে হয়। 

তিনটে কারণে এটা  হতে পারে।

এক, পুরোনো আর রোজ রোজ নতুন নতুন জমা পাপের ভার
দুই, বাইরের গরম আর ভেতরের এসির দ্রুত পট পরিবর্তন। 
তিন, গোটাটাই মানসিক।

আমার নিজের ধারণা তিনটে কারণের মিশ্রণে গোলমালটা ঘটেছে। মিশ্রণের অনুপাতটা তেত্রিশ, তেত্রিশ, তেত্রিশ নাকি চল্লিশ চল্লিশ কুড়ি নাকি নব্বই পাঁচ পাঁচ, সেটা আমি জানি না। 

রবিবারে আমাদের তাপমাত্রা ছিল সাতচল্লিশ। সোমবার ছেচল্লিশ। এমনিতে তো গতকাল, আজ, আগামীকালের সমস্ত ফারাক ইস্তিরি হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, তার মধ্যে এটা একটা খবর।  খবরটা দিতে মাকে ফোন করলাম। শুরুতে যেমন করতে হয়, কী করছ, কেমন আছ ইত্যাদি, সেসব ভদ্রতা করছি, মা বললেন, “কেমন আর থাকতে পারে মানুষ, সাঁইতিরিশে?” আমি সাতচল্লিশের বাণ মারলে মায়ের সাইতিরিশ অক্কা পেত, কিন্তু আমি চুপ করে রইলাম। একে তো গরম নিয়ে গর্ব করা বংশপরিচয় নিয়ে গর্ব করার থেকেও হাস্যকর। দুই, আমার সাতচল্লিশের কষ্ট মায়ের সাঁইত্রিশের কষ্টের থেকে বেশি এবং মহান এটা নির্ধারণ করার কোনও উপায় আমার কাছে নেই। তিন, নিজেকে মনে করালাম, আমি ঘামছি না, মা ঘামছেন। 

গরমে গোটা শনিরবি বাড়িতে বসে থাকতে হল। বসে বসে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাস মুখস্থ করে ফেললাম।  মোটামুটি যা বুঝলাম সাতচল্লিশের দুঃস্বপ্নের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই, আর সামনের সপ্তাহে, চোদ্দই জুন নাগাদ ধুঁয়াধার বর্ষণের সম্ভাবনা। আরও একটা কাজ হল, এ বছরের নন-ককেশিয়ান গোয়েন্দা জোগাড়ের সিলেবাসের একটা ধাপ পেরোনো গেল। জাপানি লেখক Keigo Higashino-র ইন্সপেক্টর কাগা। তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত এ মাসের বইতে বলব। 

আর যে কাজটা হয়েই থাকে, টিভি দেখা, সেটাও হল দেদার। তবে এই শনিরবি টিভি দেখার পাশাপাশি টিভি দেখাসংক্রান্ত একটা সত্য উদ্ঘাটন করলাম, যেটা হচ্ছে, আমরা টিভিতে অনুষ্ঠান দেখার বদলে চ্যানেল দেখি। এর কারণ আমাদের রিমোট, বা রিমোটের অনুপস্থিতি। বেশিরভাগ সময় আমাদের রিমোট খুঁজে পাওয়া যায় না। যদি বা পাওয়া যায়, সেটা সর্বদা আমাদের থেকে হাত দশেক দূরে অবস্থান করে। এই হাতে করে খাটে নিয়ে এসে বসলাম, এই দেখি ঘরের ও প্রান্তে বুককেসের ওপরে তিনি অবস্থান করছেন। এটা কী করে হয় আমাকে জিজ্ঞাসা করবেন না। রীতিমত ভৌতিক। রিষড়ার বাড়িতে এ ধরণের ঘটনা খুব ঘটত। ফাঁকা ঘরে ফ্যান ঘুরছে, কেউ দেখছে না টিভি চলছে, জানালা এঁটে বন্ধ করা হয়নি, ছাদের কাপড় তুলে এনে দরজা দেওয়া হয়নি। কে করেছে? “আমি না”, “আমিও না”, “আমি তো না-ই”।  তখন ধরে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই যে বাড়িতে আমরা ছাড়াও অন্য কেউ আছেন নির্ঘাত, তিনিই দোষী। অচেনা অশরীরীর কথা ভাবলে ভয় লাগে, তাই আমরা ধরে নিতাম,  ঠাকুরদা করেছেন। কাঁহাতক আর সামনের ঘরের দেওয়ালের ফোটোর ভেতর হাসি হাসি মুখে বসে থাকা যায়, তাই দাদু নেমে এসে এসব নষ্টামো করে বেড়াচ্ছেন।

দিল্লির ভাড়াবাড়িতেও এরকম কেউ আছেন নিশ্চয়। আমরা আসার পর, বাড়িওয়ালা এবং তাঁর স্ত্রী দুজনেই পর পর সজ্ঞানে স্বর্গলাভ করেছেন। তাঁরা হতে পারেন, বা আমরা আসার আগে এই ঘরে কেউ স্বর্গলাভ করেছিলেন, তাও হতে পারে। যিনিই থাকুন না কেন, তাঁর যত রসিকতা রিমোটখানাকে নিয়ে। আমাদের তাতে আপত্তি নেই। রসিকতা যদি রিমোটের বদলে গ্যাসের নব বা জলের কল নিয়ে হত, তাহলে কেলেংকারি। তার থেকে রিমোট ভালো। 

রিমোট খুঁজে না পাওয়া গেলে তো হয়েই গেল, নাগালের বাইরে থাকলেও একই ব্যাপার। ধরুন আপনি সব কাজ সেরে, গ্যাস, কল পরীক্ষা করে, গাছে জল দিয়ে, বাসন মেজে, ও ঘরের লাইট ফ্যান নিভিয়ে, জলের বোতলে জল ভরে এসে খাটে উঠে আবিষ্কার করলেন রিমোট আনা হয়নি। তখন কি আবার নেমে রিমোট আনতে যাবেন? গেলে আমার সঙ্গে আপনার মিল নেই। অর্চিষ্মানের সঙ্গেও নেই। কিন্তু এ ব্যাপারে আমার আর অর্চিষ্মানের ভয়ানক মিল। আমরা তখন টিভিতে যে চ্যানেল খোলা আছে সেটাই দেখতে থাকি। যা-ই দেখানো হচ্ছে তাতেই আমাদের দিব্যি চলে যায়। এই করে করে একসময় আমাদের কেবলই ফক্স লাইফ দেখা হত, সকালে মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া, দুপুরে মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া, রাতে মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া।  এই করে করে নাপতোল দেখেছি। (দেখে দেখে এমন নেশা হয়েছে এখন মাঝে মাঝে খাট থেকে উঠে রিমোট খুঁজে এনে চ্যানেল বদলে নাপতোল দেখি। কিন্তু সে এখনকার কথা, শুরুটা হয়েছিল রিমোট হারানো দিয়েই।) এ সপ্তাহের চ্যানেল ছিল জি সিনেমা বাংলা। টানা দু’দিন জি সিনেমা বাংলা দেখে চ্যানেল দেখে আমি যে সিদ্ধান্তে এসেছি, সেগুলো নিম্নলিখিতঃ

১। বাংলা সিনেমার নামে সবথেকে বেশি ব্যবহৃত শব্দ ‘অত্যাচার’। অন্যায় অত্যাচার। বিধাতার অত্যাচার। শাশুড়ির অত্যাচার। দ্বিতীয় ব্যবহৃত শব্দ ‘প্রতিবাদ’। শুধু ‘প্রতিবাদ’। অন্যায়ের প্রতিবাদ। বৌমার প্রতিবাদ।

২। দেভকে গালি দিয়ে লাভ নেই, বাংলা সিনেমার অভিনেতাদের বেশিরভাগই স্পষ্ট উচ্চারণে বাংলা বলতে পারেন না, কোনওদিনই পারতেন না। রঞ্জিত মল্লিক, শতাব্দী রায় এঁদের মধ্যে কয়েকজন। ইন ফ্যাক্ট, দেখেশুনে আমার ধারণা জন্মেছে, বাংলা সিনেমায় সফল হওয়ার অন্যতম শর্ত বাজে উচ্চারণ। 

৩। উত্তমপন্থীরা যা-ই বলুন না কেন, যত চোখে ঠুলি পরে থাকতে চান না কেন, সোজা কথাটা হচ্ছে, বাংলা ইন্ডাস্ট্রির জন্য প্রসেনজিৎ যা করেছেন, করে চলেছেন এবং করবেনও, সেরকম আর কেউ করেননি। হ্যাঁ, মিথে পরিণত তিনি নাও হতে পারেন (অবশ্য মৃত্যুর পর কী হবে না হবে বলা যায় না। যদিও আমি চাই প্রসেনজিৎ অমর হোন এবং বাংলা সিনেমার রাজার মুকুট পরে সিংহাসনে চড়ে থাকুন) কিন্তু ফ্যাক্ট ইজ ফ্যাক্ট। ব্যাগি জামা থেকে চুলের ছাঁট থেকে শুরু করে আমি, আমার, আমাকে জাতীয় সমস্ত শব্দকে ‘আ-আ-মি”, “আ-আ-মার”, “আ-আ-মাকে” উচ্চারণ পর্যন্ত, বাংলা সিনেমার প্রত্যেকটি ট্রেন্ডের পথিকৃৎ আমাদের প্রসেনজিৎ। জি বাংলা সিনেমা সে কথা জানে এবং সারা দিনে অন্তত তিনটে করে তাঁর ছবি দেখায়। কানাঘুষো শুনি, কারা নাকি প্রসেনজিৎকে ইন্ডাস্ট্রিতে নবজীবন দিয়ে ফিরিয়ে এনেছে। যাঁরা এ গুজব ছড়ান তাঁদের আমি সবিনয়ে বলতে চাই, জি বাংলা সিনেমা দেখুন, প্রসেনজিৎকে ফিরিয়ে আনার দরকার ছিল না, কারণ তিনি যাননি কোথাও, এখানেই ছিলেন। 

৪। কোনও ছেলের কোনও মেয়ের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার উপায়ঃ মেয়েটিকে ধর্ষণ করা
কোনও মেয়ের কোনও ছেলের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার উপায়ঃ ছেলেটির নামে ধর্ষণের মিথ্যে অভিযোগ আনা
কোনও মেয়ের কোনও ছেলেকে ইমপ্রেস করার উপায়ঃ ছেলেটি তাকে ধর্ষণ করা সত্ত্বেও, “আমি তোমাকে ভালোবাসি কাজেই পুলিসে দিচ্ছি না” বলে গলায় আঁচল দিয়ে ছেলেটিকে প্রণাম করে কাঁদতে কাঁদতে দড়ি কিনতে বাজারে যাওয়া।
কোনও ছেলের কোনও মেয়েকে ইমপ্রেস করার উপায়ঃ মেয়েটিকে অন্য ছেলেদের হাত থেকে ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচানো। 

আমরা খাটের ওপর এবং রিমোট টিভির কাছে থাকার জন্য শনিরবি তিন তিন করে ছ’খানা বাংলা সিনেমা দেখা হল, তার মধ্যে ‘চৌধুরী পরিবার’ দু’বার। অসামান্য ছবি। আপনারা দেখার চান্স পেলে ছাড়বেন না। যেমন বিনোদনধর্মী, তেমন শিক্ষামূলক। স্বামীকে দিয়ে স্ত্রীকে শিক্ষা দেওয়া, চরিত্রবান ভাইকে দিয়ে মাতাল দাদাকে শিক্ষা দেওয়া, প্রেমিক দিয়ে বেচাল প্রেমিককে শিক্ষা দেওয়া, জামাইকে দিয়ে শাশুড়িকে শিক্ষা দেওয়া, স্কুলকলেজের চালকলাবাঁধা সিলেবাসের ফাঁক দিয়ে যতরকম শিক্ষা আমাদের হাত ফসকে বেরিয়ে গেছে, অথচ এখন জীবনে চলার পথে প্রতিপদে সে সব শিক্ষার অভাব অনুভব করছি, সে সব আছে চৌধুরী পরিবার-এ। 

আপনার যদি এ সব শিক্ষায় রুচি না থাকে, আপনি যদি গতে বাঁধা, পুঁথিপড়া শিক্ষার পৃষ্ঠপোষক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জন্যও চৌধুরী পরিবার দেখা আবশ্যক। বা জি সিনেমা বাংলা-র অন্য সিনেমা। মাধ্যমিকে বাংলার নম্বর নিয়ে আমার গর্বের শেষ ছিল না, এদিকে হঠাৎ বড়লোক হওয়া বোঝাতে এতদিন সেই “আঙুল ফুলে কলাগাছ”/ “ধরাকে সরা”/ “সাপের পাঁচ পা” “দুইদিনের যুগী…” ইত্যাদি জরাজীর্ণ প্রবাদের চর্বিতচর্বণ চালাতাম। চৌধুরী পরিবার-এ জীবনে প্রথমবার শুনলাম এক চরিত্র আরেক চরিত্রকে তিরস্কার করছেন, “লম্বা লম্বা সিগারেট খেয়ে তুমি আজকাল বিড়ির স্বাদ ভুলে গেছ।”

এর থেকে উদ্ভাবনী এবং যথাযথ উক্তি আপনি অদূর, সুদূর, কোনও অতীতেই আর শুনেছেন কি? ভবিষ্যতেও শুনবেন না। গ্যারান্টি। শেখার পর থেকে গত তিনদিনে আমি ডায়লগটা অর্চিষ্মানের ওপর বারসাতেক প্রয়োগ করেছি, প্রত্যেকবারই অর্চিষ্মান দাবি করেছে যে নিশানা কানঘেঁষে গেছে। কিন্তু আমি তাতে দমছি না। 


Comments

  1. Ha ha. I desperately needed this dose of laughter today. Bratati

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, ব্রততী। আমার দিনখানাও এমন কিছু সুমধুর কাটছে না। সকালে একগাদা বক্তৃতা শুনে এসেছি, এখন আবার বেরোব বক্তৃতা শুনতে।

      Delete
  2. tukhor hoyechhe Kuntala :)
    Haste Haste pet fete gyalo. Choudhury Poribar amaro onyotomo priyo ekta cinema. 1,2,3 ebong 4 - sobgulote Uchho Poncho!
    Seat e bose nagare hese cholechhi.....

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, অরিজিত। জি সিনেমা বাংলা-র প্রেমে পড়ে গেছি। কী সব মণিমুক্তো।

      Delete
  3. Delhi te taratari brishti naamuk ar tomar baki dinguli bhalo hoye uthuk eyi kamona kori Kuntala. Pune r weather ar temperature bole ar mone dukkhu dicchi na.
    Prosenjit amar o khub priyo obhineta.

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্লিজ শর্মিলা, বোলো না, পুনের আকাশ কল্পনা করেই কান্না পাচ্ছে। প্রসেনজিৎ হাই ফাইভ।

      Delete
  4. biri cigarette ta darun pochhondo holo. Apply korteo khub ichhey korchhey kintu mushkil holo Chat konotai khayna. Ar ekta similar type jogar kore dao please.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে চুপকথা, অর্চিষ্মানও খায় না কোনওটাই। আমি তাও বলছি। পরিস্থিতির অভাবে তো প্রবাদ বন্ধ থাকতে পারে না।

      Delete
  5. সেই আদ্যিকালে, যখন আপনি তিন চাকার সাইকেল চালাতেন, তখন দেশ পত্রিকার বিজ্ঞাপন দিত - মনের জানালা খুলে দেয় দেশ। আপনার লেখাও সের'ম মনের জানালা খুলে দেয়। চৌধুরী পরিবার... আহা!

    এগারো বছর আগের কথা, দাদার বিয়ের পর নতুন বৌদিকে নিয়ে আমরা বাসে করে বাড়ি ফিরছি। খিদে পেয়েছে বলে বাসটা দাঁড় করানো হয়েছে, গন্তব্যে পৌঁছতে তখনও ঘন্টা পাঁচেক বাকি। খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়ে বাসে উঠে দেখি, আমাদের আরেক ভাই সিডি কিনে এনেছে... সবাই বোর হচ্ছে কিনা, তাই এখন আমরা সিনেমা দেখব। সিনেমার নাম চৌধুরী পরিবার... আমরাও সক্কলে চৌধুরী কিনা!
    ছবিটার ব্যাপারে দুটো কথা এখনও মনে আছে। প্রথম, একটা ডায়ালগ ছিল - জন জামাই ভাগনা, তিন নয় আপনা। দ্বিতীয়, আমাদের সেই ভাইটিকে থ্রেটেন করা হয়েছিল - ভবিষ্যতে এর'ম ছবি দেখালে মাঝরাস্তায় বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে।

    আপনার কাঁধ যে ক্রমশই ঝুঁকে যাচ্ছে, এটার একটা কারণ কি শারিরিক হতে পারে? বেশি কম্পিউটারে কাজ করলে অনেকেরই এমন হয়।

    ReplyDelete
    Replies
    1. বিয়েতে বাজে সিনেমা দেখা কিন্তু লুচি, টোপরের মতোই একটা ট্র্যাডিশন, দেবাশিস। আমিও সেজকাকুর বিয়েতে দেখেছিলাম, ফুল অউর কাঁটে। তবে বাসশুদ্ধু চৌধুরী বসে চৌধুরী পরিবার দেখার ব্যাপারটা গল্প করার মতো। কাঁধের সমস্যা অত্যধিক কম্পিউটারের জন্য হচ্ছে বলছেন? হতে পারে। সারাদিন তো এটার সামনেই বসে আছি।

      Delete
  6. অনেকদিন ধরে খালি পড়ে যাচ্ছি কমেন্ট করছিনা আমাদের ক্লায়েন্ট নেটওয়ার্ক এর ইস্যুর জন্য। আজ এ লেখাটা পড়ে এতো হাসছিলাম ফের মোবাইল থেকে তোমার ব্লগ খুলে কমেন্ট করতে বাধ্য হলাম।
    তবে ইয়ে এই পিঠে ব্যাথা সিন্ড্রোমটা ভারী কষ্টদায়ক, ব্যায়াম করে দেখতে পারো।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ঝামেলা করে কমেন্ট করার জন্য থ্যাংক ইউ, প্রদীপ্ত। রোজই ভাবছি কাল থেকে ব্যায়াম করব, হচ্ছে আর না।

      Delete
  7. Bhalo laglo lekhata...bishesh kore Bangla cinema niye lekhar jaigata.

    Kaandher byatha ke gurutto din. Pore bere bhpgate pare.

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, কিছু একটা ব্যবস্থা করতে হবে, সুস্মিতা।

      Delete
  8. Khub mojar..😊😊😊 ish ebar tora kolkata ele eksange erakam kichu dekhtei hobe!

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমার কাছে দেখনযোগ্য বাংলা সিনেমার এই মোটা সিলেবাস আছে। নাকতলা ফিল্মোৎসব আয়োজন করলেই হয়।

      Delete
  9. ami to chowdhuri poribaar er fan hoye gelam.jokes apart.ei period er cinema gulor modhye besh ekta simplicity ache..ar nostalgic to botei...

    shutter er hindi holo CLICK...sreyas talpade ache..ritimoto bhoy er..
    prosenjit

    ReplyDelete
    Replies
    1. ওহ, তাই বুঝি? ক্লিক দেখব সুযোগ হলে তবে। থ্যাংক ইউ, প্রসেনজিৎ।

      Delete
  10. Anekdin pore tor blog -e dhokar samay pelam Kuntala ... Ami aar bor Choudhuri Paribar -r shikhhya y hese kuti paati .... thank you :D

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে থ্যাংক ইউ তো আমার বলার কথা, বৈশালী।

      Delete
  11. :lomba lomba cigarette kheye tumi aajkaal biri 'r swad bhule gechho" eta pore ami eka ekai hese gelam :D

    ami ekjon k jani jini hard drinks niye bosle ei movie gulo dekhen, tobe ei post ta anek purono kotha mone poriye dilo, raater bela dur thek ei type er movie gulo paray/bosti te vcd te dekhto .. r raat barle se sob dialogue/gaan sunte paoa jeto :Papiya

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, পাপিয়া।

      Delete
  12. আপনার এই পোস্টটা পড়ার পর থেকে সুযোগ পেলেই লোকজন কে "লম্বা লম্বা সিগারেট খেয়ে তুমি আজকাল বিড়ির স্বাদ ভুলে গেছ" বলে ফেলছি। আজ আবার একটা বাংলা সিরিয়ালে যেই শুনেছি " একটা বাটি ছাড়া ভিখারির আর হারানোর কিছু নেই", মনে হল কমেন্টে বলি। কোন সময়ের পোস্ট ভুলে গেছিলাম,শেষ অবধি সার্চবক্সে "লম্বা লম্বা সিগারেট" টাইপ করে খুঁজতে হলো 😊।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, ভিখিরি আর বাটি কমেন্টটাও দারুণ, ময়ূরী।

      Delete

Post a Comment