বিচার






আজ থেকে প্রায় একশো সাড়ে সতেরো বছর আগে, উনিশশো সালের ডিসেম্বর মাসের এক তারিখ। হাড়কাঁপানো শীতের রাত। নিশ্চিন্তে ঘুমোতে গেলেন আইওয়ার মেডোরা শহরের সমৃদ্ধ চাষী জন হোস্যাক। দু’তারিখ সকালে উঠে বাড়ির লোক দেখলে রাতে কেউ এসে ঘুমন্ত জন হোসাকের মাথা কুঠারের দুটি নিপুণ আঘাতে থেঁতলে দিয়ে গেছে। ঘটনার চারদিন পরে খুনের দায়ে এমন একজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ যে হোস্যাক পরিবারের আত্মীয় বন্ধু প্রতিবেশী, গোটা মেডোরা স্তম্ভিত হয়ে গেল। ক্রমে জন হোসাক হত্যারহস্যের স্ক্যান্ডাল হইহই করে দেশময় ছড়িয়ে পড়ে। শুধু খুনই নয়, ওই খুনপরবর্তী মামলার অংশটুকুও সমান রোমহর্ষক। একটা নমুনা দিলেই আপনারা বুঝতে পারবেন, একসময় জন হোস্যাক হত্যা মামলায় বিবাদীপক্ষের মূল অস্ত্র ছিল বাড়ির কুকুর ‘শেপ’। রাত ন’টা থেকে দশটার মধ্যে শেপ চেঁচিয়েছিল কি না, কতখানি চেঁচিয়েছিল, তারপর সারা রাত আর টুঁ শব্দ করেনি কেন, এই নিয়ে দিনের পর দিন লড়ে গিয়েছিলেন দুই পক্ষের উকিলরা। দেশের সব কাগজ ফলাও করে মামলার গতিপ্রকৃতি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ছেপেছিল।

এই সব যখন হচ্ছিল তখন সুস্যান গ্লাসপেল নামে একজন 'ডে মইন ডেইলি নিউজ' পত্রিকায় সাংবাদিকতা করতেন। তাঁকে যেতে হয়েছিল কাগজের পক্ষ থেকে হোস্যাক মামলা কভার করতে। সতেরো বছর পরে, হোসাক মামলাকে আশ্রয় করে সুস্যান লিখেছিলেন একটি একাঙ্ক নাটিকা, নাম দিয়েছিলেন ‘ট্রিফলস’। তুচ্ছ ব্যাপারস্যাপার। পরের বছর ‘ট্রিফলস’ আট হাজারেরও বেশি শব্দের একটি ছোটগল্প রূপে আবির্ভূত হল, সুস্যান গ্ল্যাসপেল তার নাম দিলেন ‘আ জুরি অফ হার পিয়ারস’।

গত একশো বছর ধরে সুস্যান গ্ল্যাসপেলের ‘আ জুরি অফ হার পিয়ারস’ আর ট্রিফলস নেই। পঞ্চাশের দশকে অ্যালফ্রেড হিচকক তাঁর ‘অ্যালফ্রেড হিচকক প্রেসেন্টস’ ধারাবাহিকের একটা এপিসোড বানিয়েছিলেন গ্ল্যাসপেলের গল্প নিয়ে। উনিশশো আশিতে এই গল্প নিয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের সিনেমাও বানানো হয়। এ ছাড়াও ফেমিনিস্ট সাহিত্য একশো এক-এর যে কোনও সিলেবাসে 'ট্রিফলস' বা 'আ জুরি অফ হার পিয়ারস'-এর জায়গা বাঁধা।

আমি যবে থেকে ছায়া অবলম্বনে গল্প লেখা শুরু করেছি, তবে থেকে সুস্যান গ্লাসপেলের ‘আ জুরি অফ হার পিয়ারস’ আমার চেতনার সামনে জ্বলজ্বল করছে। তবু আমি যে কখনও এই গল্পটার বাংলায়ন বা রূপান্তর যাই বলুন, করার চেষ্টা করিনি সেটা একটা রহস্য। রহস্য আরও ঘনঘোর কারণ সুস্যান গ্লাসপেলের ‘আ জুরি অফ হার পিয়ারস’ এমন দুটো খোপে টিক মারে যা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের।

এক, মেন রোলে মেয়েরা, দুই, প্লটের কেন্দ্রে খুনখারাপি।

এবারের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের মেল ট্রেনের গল্পের কামরায় সুস্যান গ্ল্যাসপেলের ‘আ জুরি অফ হার পিয়ারস’ গল্পের ছায়া অবলম্বনে লেখা আমার গল্প ‘বিচার’-এর লিংক এই রইল।


Comments

  1. ইয়ে এরকম দুম করে শেষ হয়ে গেলো? আমি ঠিক বুঝলাম না , মানে কী হলো?

    ReplyDelete
    Replies
    1. কিছুই না, প্রদীপ্ত।

      Delete
    2. ইয়ে মানে আমি সত্যিই বুঝিনি। যাকগে আমি একটু বোকাটে আছি। রাগ কোরোনা।

      Delete
  2. Shombhu tia k mereche, r shambhu k mereche sulata. Ei bujhlam. Thik ki

    ReplyDelete
  3. Khub bhalo indianize korechho, mul golper bhab okkhunno rekhe.

    ReplyDelete
  4. মোটিভটা কিন্তু সত্যিই বুঝলাম না :(

    ReplyDelete
  5. Aj 4 no platform er facebook page e tomar ei lekhata eseche.. etodin pora hoyni.. ami to munmun kei sondeho korchilam.. comments gulo pore abar guliye gelo..

    ReplyDelete
  6. "ট্রিফলস" পুরোটা পড়ার জন্য কোথায় পাবো?
    আমাকে দেওয়া যাবে কোনো লিংক বা পি ডি এফ?

    ReplyDelete
    Replies
    1. খুঁজে পাচ্ছি না, গুগলে যা দেখাচ্ছে সব সামারি। সরি।

      Delete

Post a Comment