দশম অবতার ও রক্তবীজ
*স্পয়লার আছে। স্পয়লার ছাড়া কিছু নেই।*
দশম অবতার
শহরে সিরিয়াল কিলিং হচ্ছে। সিরিয়াল কিলার যীশু। যীশুকে ধরতে নেমেছেন বড় পুলিস প্রসেনজিৎ, বাংলাসিনেমার আইকনিক থ্রিলারের আইকনিক অ্যান্টিহিরো প্রবীর রায়চৌধুরী। সঙ্গে নিয়েছেন মেজ পুলিস অনির্বাণকে, যিনি বাংলাসিনেমার অতটাও আইকনিক নয় থ্রিলারের ততটাও আইকনিক নন দারোগা বিজয় পোদ্দার। যিনি ভিঞ্চিদা-র কেসে ভিঞ্চিদাকে ধরতে অক্ষম হলেও সত্যিটা ফিগার আউট করে ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন।
সকলেই দেখতে পাচ্ছে যীশু খুনগুলো করছেন, কাজেই হু নিয়ে কোনও ডাউট নেই। হাউ-ও ক্লিয়ার। কয়েকটা খুন রিয়েলটাইমে দেখানো হয়েছে। হোয়াই-ও না বোঝার কিছু নেই। সমাজের ময়লা পরিষ্কার হচ্ছে। মাঝে মাঝে সাদাকালোতে এক ভদ্রলোক একটি বাচ্চাকে দশাবতারের গল্প শোনাচ্ছেন, বাচ্চাটির মুখের সঙ্গে যীশুর মুখের মিল আছে, কাজেই খুনের আন্ডারলায়িং দশাবতারের অ্যাংগলটাও দর্শক ধরে ফেলেছেন।
দর্শক ধরে ফেলবেন আর প্রসেনজিৎ পারবেন না তা তো আর হয় না। বাইশে শ্রাবণে বাংলা কবিতায় প্রসেনজিতের বুৎপত্তি দেখে বাঙালি টলে গিয়েছিল, দশম অবতারে হিন্দু পুরাণ নিয়ে এক্সপার্টাইজে হিলে যাবে। স্পটে পড়ে থাকা পুঁতির মালা, খুনের অস্ত্র, রকম ইত্যাদি থেকে তাঁর দেড় সেকেন্ড লেগেছে ধরতে যে ব্যাপারটার সঙ্গে বিষ্ণুর দশ অবতারের সম্পর্ক আছে। প্রসেনজিতের বাড়ি দেখে সন্দেহ হয় ব্যাকগ্রাউন্ডে প্রিভিলেজ, কালচারাল পুঁজি ইত্যাদি আছে। পুঁজি থাকলেই যে ব্যুৎপত্তি থাকতে হবে তেমন কোথাও লেখা নেই, থাকলে বিস্ময় কম আরকি। যেটা বিস্ময়ের সেটা হচ্ছে বাইজি পাড়ায় বড় হয়ে উঠে বিজয় পোদ্দার যে শুধু হিন্দু মিথোলজি ঝড়াক্সে কোট করেন তাই না, অন্যান্য বাইজীদের বাচ্চাদের পড়াতে বসিয়ে যে স্পিডে মাথার ভেতর গতিবেগ ইনটু সময় করে পলুটোর দূরত্ব বার করেন, হয় বিজয় পোদ্দার জিনিয়াস নয় বিজয় পোদ্দারের মা। ওই পরিবেশে ছেলেকে এমন তালেবর বানিয়েছেন।
হু হল, হাউ হল, হোয়াইও হল। বাকি রইল যীশুকে ধরা। সশরীরে পাকড়াও করে হাতে হাতকড়া পরানো। সুপারকপেরা অফিসে বসে হিন্দু মিথোলজি নিয়ে বোলচাল মারছেন এমন সময় একজন সাইকায়াট্রিস্ট, (সাইকোলজিস্ট বোধহয়, ব্যাকস্টোরি যা দেখাল ওই গোলযোগে ডাক্তারি পড়ার সময় পাননি শিওর) এসে খবর দিলেন যে খুনী তাঁর পেশেন্ট। নাম অমুক, ঠিকানা তমুক। ঠিকানায় রেড করতে যাওয়া হল, সাইকোলজিস্ট সমভিব্যাহারে। মহিলার কাছ থেকেই ইনফরমেশন পেয়ে মহিলাকেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া ভালো দেখায় না। গিয়ে দেখা গেল ঠিকানা ভুয়ো।
রাস্তাঘাটে, দোকানপাটে যীশুর পোস্টার সাঁটা হল। বাজার থেকে ফেরার পথে যীশু সে পোস্টারের সামনে পড়ে ছাতা দিয়ে মুখ আড়াল করলেন। সুপারকপেদের একজনের সাইকোলজিস্টের প্রতি কেমনকেমন জাগল, অন্যজন অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রেমের জোয়ারের বালির বাঁধ দেওয়ার অক্ষম চেষ্টা করলেন। ইনফর্মার ফোন করল। স্যার লোকটা তো ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যীশু স্ট্র্যান্ড রোডের একটা বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে প্রফেটের মতো ডানা মেললেন। হাওড়া ব্রিজের ভিউ ফাটাফাটি, কলকাতা আক্ষরিক তিলোত্তমা। তারপর যীশু কী যেন করতে বাড়ি থেকে নেমে আরেকবার রাস্তায় বেরোলেন, আবার নির্ঘাত কেউ ফোন করে খবর দিল, অমনি দুই সুপারকপ আড্ডা থামিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে যীশুকে তাড়া করলেন। যীশু স্কুটারে, সুপারকপেরা এস ইউ ভি-তে। এইখানে নাকি বাংলা সিনেমার একটা আইকনিক শট তোলা হয়েছে। রিভিউ শুনে দেখতে গেছি বলে ধরতে পেরেছি। ক্যামেরা একটা গাড়ির ভেতর থেকে রাস্তায় বেরিয়ে গেল। এই একই শট নাকি মন্দারেও ছিল, খালি গাড়ির বদলে অটো।
তারপর যীশু স্কুটার থেকে আর সুপারকপেরা এস ইউ ভি থেকে নেমে পড়লেন। এবার ভরসা এগারো নম্বর। এবার বিশুদ্ধ দৌড়। ক্যামেরায় কলকাতার অলিগলি কবিতার মতো ফুটে উঠল। পুলিসের কলিশনে খাঁচা খুলে পাখি উড়ে গেল, ক্যারিয়ার ভেঙে দুধের ক্যান গড়াগড়ি খেল। রুদ্ধশ্বাস চেজ। যীশুকে ধরতে প্রসেনজিৎ আর অনির্বাণের জিভ বেরোনোর জোগাড়। যীশুকে দেখে সন্দেহ হচ্ছিল লাস্ট দেড় বছর সিঁড়ি বেয়ে একতলা দোতলা করেননি, এদিকে প্রসেনজিৎ তিরিশ বছর নাকি ভাত ছোঁননি। পাঁচ বছরে যদি ফুচকা খান, একটা খান। একপ্লেট না, একটা ফুচকা। একটা, একলা, একাকী ফুচকা। অনির্বাণ অবশ্য একটা ইন্টারভিউতে বলেছেন তাঁর বডি বলিউডি নয়। শোভন-বৈশাখী সহ পরপর পাঁচজন বাঙালি সেলিব্রিটির ফিটনেস ভিডিও দেখার পর ইউটিউবে অনির্বাণের ভিডিওটার রেকমেন্ডেশন এসেছিল। অনির্বাণের বডি যেমনই হোক তাঁর বয়সে জোরে দৌড়নো এমন কিছু কঠিন ব্যাপার না, তাছাড়া আরেকটা ইন্টারভিউতে অনির্বাণ বলছিলেন যে দৌড়তে না জানলেও দৌড়নোর অভিনয় করা যায়। এবং হাসিকান্নার অভিনয়ের মতো দৌড়নোর অভিনয়েরও ভালোখারাপ হয়। শাহরুখ খানের উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন, শাহরুখের দৌড়টার মধ্যে একটা স্কিল আছে। আমি সিলিংফ্যানের দিকে তাকিয়ে শাহরুখের দৌড় কল্পনা করার চেষ্টা করেছিলাম। দুটো মনে পড়েছিল। একটা অগ্নিকাণ্ডের ব্যাকগ্রাউন্ডে ‘দিল সে রে’ গানটায় মনীষা কৈরালার হাত ধরে। দুই, সম্ভবতঃ কভি খুশি কভি গম সিনেমাতেই হবে, দৌড়ে দৌড়ে জয়া বচ্চনের কাছে আসা। নাহ্, অনির্বাণ ইজ রাইট, ভালোই দৌড়োন ভদ্রলোক। বিশ্বসিনেমায় দৌড়ের প্রসঙ্গ উঠলে, বলা বাহুল্য, টম ক্রুজের নাম উঠবে। আমার ব্যক্তিগত একটা ফেভারিট দৌড় সিনেমার পর্দায় দৌড়েছেন শবররূপী শাশ্বত। সিঁড়ি বেয়ে, ড্রামের পাহাড় টপকে, কনটেনারের ছাদ থেকে ছাদে লাফিয়ে। শাশ্বতর দৌড় দেখে আমার ধারণা আমি ভালো দৌড়, বা ভালো দৌড়ের অভিনয়ের শর্তটা ফিগার আউট করেছি। গোটা শরীরটা সন্নিবদ্ধ ভাবে দৌড়য়। মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত একই দিকে একই লক্ষ্যে ধাবিত হয়।
রিসেন্টলি আমাকেও দৌড়তে হল। নয়ডার ক্ষেতের বর্ডারে দিওয়ালির লাঞ্চ খেতে গিয়েছিলাম। ছোট ছোট দল বেঁধে বড় বড় গরুরা ঘোরাঘুরি করছিল। দোকানের দু'পাশে দিওয়ালি ডেকোরেশন হিসেবে গাছপালা রাখা ছিল। একটা দল তাদের বেশি কাছাকাছি চলে যেতে কর্তৃপক্ষ তাড়া দিলেন, অমনি একটা বড় সাইজের গরু শিং নেড়ে হরিণের মতো লাফ মেরে আমার দিকে ধেয়ে এল।
'থ্রি মেন ইন আ বোট'-এ একটা রসিকতা ছিল যে মেয়েদের কোনও কাজে পাঠানোর থেকে সে কাজ নিজেরাই গিয়ে করে আসা ভালো কারণ মেয়েরা যাবে, যেতে যেতে রাস্তায় গরু এসে পড়বে, তখন সেই তোমাকেই যেতে হবে গরু তাড়াতে। ফালতু এক্সট্রা কাজ। এই জায়গাটা পড়লে আমার একটুও রাগ হয় না কারণ আমাকে যদি আপনি কোনও কাজে পাঠান আর গরু এসে পড়ে, আমি আমার সমস্ত ইগো বিসর্জন দিয়ে, সমানাধিকারের জন্য এত দিনের এত কষ্টের সংগ্রামের মুখে চুনকালি লেপে মাঠ ছাড়ব।
এখানে তো কাজটাজ ছিল না। দোকানের খাতায় ওয়েটিং লিস্টে নাম লিখিয়ে রোদ সেঁকছিলাম। এমন সময় গরুর তাড়া। আমি দৌড়বীর নই, অভিনয়েও আশ্চর্যরকম কাঁচা। কাজেই মাথা, ধড়, ডান হাত, বাঁ পা, বাঁ হাত, ডান পা চতুর্দিকে ল্যাগব্যাগ করতে করতে দৌড়তে হল। গলা দিয়ে অনৈচ্ছিক 'বাবাগোওও'-ও বেরিয়েছিল খুব সম্ভবতঃ। রাহুল, 'কিছু করবে না, চাপ নিয়ো না' জাতীয় আশ্বাসের ধার ধেরেছিল, অর্চিষ্মান সাড়ে তিনমিনিট পর অতিকষ্টে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল, গরুফরু তো তুশ্চু, ও নাকি ছোটবেলায় দৌড়ে অ্যালসেশিয়ানকে হারিয়েছিল।
যাই হোক, অবশেষে প্রসেনজিৎ আর অনির্বাণ যীশুকে প্রায় ধরে ফেলেছেন, আমি ভাবছি সবে তো সিনেমা শুরু হল, তাহলে কি এটা যীশু নন, যীশুর যমজ ভাই, অমনি রেললাইন। অর্চিষ্মানের দিকে তাকিয়ে 'যাক বাবা' বলতে বলতে না বলতে যীশু লাইন পার হয়ে গেলেন, ঝাঁইঝাঁই করে মেলট্রেন এসে গেল, ট্রেনের এপারে দুই সুপারকপ বোকা হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।
তারপর এক কপের প্রেম হল, প্রেমিকাকে ইমপ্রেস করতে বাইজিবাড়ির ছেলের পান থেকে গোলাপি চিউয়িংগামে শিফট হল, রিলকের কবিতা হল, দুই সুপারকপের মধ্যে আবেগপ্রবণ মারামারি হল এবং যীশু ধরা পড়লেন। মারাও পড়লেন। প্রসেনজিৎকে ফাইন্যাল রিপোর্ট লেখা গছিয়ে অনির্বাণ জয়ার সঙ্গে প্রেম করতে নর্থবেংগলে কাটলেন। আমি ভাবছি, আবাআআআআআর নর্থ বেংগল। ঝাড়গ্রামের দিকটাও খুব রোম্যান্টিক শুনেছি, নায়কনায়িকাকে ওইদিকে পাঠালেও তো পারে। লাস্টে নর্থ বেংগল বাছার কারণটা স্পষ্ট হল, কিন্তু সেটা লাস্টেই উন্মোচন করব। তার আগে হু, হাউ, হোয়াইয়ের পর হোয়াই (২)-এর যে টুইস্টটা উন্মোচিত হল সে প্রসঙ্গে বলি।
বলতে গেলে সিনেমার শুরুতে ফিরতে হবে। শুরু মানে একেবারে শুরুতে। উৎসর্গপত্রে। যেটাতে লেখা ছিল (প্যারাফ্রেজ) আগাথা ক্রিস্টি, যিনি আমাকে (পরিচালককে) রহস্য গল্পের এ বি সি শিখিয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে এ বি সি হচ্ছে এ বি সি মার্ডারস্। একলা একটা পিন খুঁজে বার করার থেকে অনেক পিনের মধ্যে থেকে একটা পিন খুঁজে বার করা শক্ত, এ বি সি মার্ডারস-এর সেই থিওরিতেই দশম অবতারের খুনগুলো হচ্ছে। এ বি সি-র চতুর ওয়ার্ডপ্লে এখানে ইস্যু না, ইস্যু হচ্ছে বাক্যের অন্য দুটি শব্দ। আগাথা এবং ক্রিস্টি। ক্রিস্টির থেকে যদি কিছু শেখার থাকে (বা শেখা সম্ভব হয় আদৌ, ওঁর অধিকাংশ ট্রিকই সাধারণ মানুষের পক্ষে শেখা অসম্ভব বলে আমার বিশ্বাস) সেটা হচ্ছে যত বেশি সন্দেহভাজন, তত বেশি পাঠক/দর্শককে ধন্দে রাখার সম্ভাবনা। এখানে সন্দেহ করার ক্যান্ডিডেট দুজন পুলিস, একজন খুনী আর একজন সাইকোলজিস্ট, যে যেচে তদন্তের মধ্যে নিজেকে গুঁজেছে। টুইস্টটা এর পর আন্দাজ করতে না পারলে চিন্তার কথা।
আরেকটা ব্যক্তিগত গল্পও এই বেলা গুঁজে দিই। আমি আর বাবা একদিন টিভি দেখতে দেখতে রুটি তরকারি খাচ্ছিলাম। টিভিতে সি আই ডি গোছের কিছু একটা চলছিল। সি আই ডি নাও হতে পারে কারণ উইকি বলছে আটানব্বই সালে সি আই ডি শুরু হয়েছে আর আমার স্মৃতিতে ওই মুহূর্তের আমি ডেফিনিটলি আঠেরোর থেকে কম। হয় স্মৃতি ভুল বলছে নয় প্রোগ্রামটা সি আই ডি নয়। অসুবিধে নেই কারণ আমার বয়স বা অনুষ্ঠানটার সি আই ডি হওয়া কোনওটাই ঘটনাটার পক্ষে অপরিহার্য নয়। অপরিহার্য খালি আমি, বাবা, টিভি, টিভিতে খুনখারাপির সিরিয়াল, খুনী আর পুলিস। এক বা একাধিক খুন হয়ে গেছে, খুনীকে ধরতে পুলিস নাকানিচোবানি খাচ্ছে, আমরা রুটিতরকারি চিবোচ্ছি, এমন সময় একজন নিরীহ চেহারার লোক এসে পুলিসকে বলছে, যদি আপনাদের তদন্তে কোনও সাহায্য হয় তাই এলাম। বাবা বলল, এ খুনী। আমি বললাম, কেন? বাবা বলল, জীবনের একটা সত্য জেনে রাখ সোনা, যে পুলিসের কাছে যেচে আসে সে-ই খুনী হয়।
যাই হোক। টুইস্ট উন্মোচন হল। অনির্বাণ চুল ছিঁড়ছেন, কনফিডেন্সের কবচকুণ্ডল চিরে বড় হয়ে ওঠা জনিত যাবতীয় ক্ষত, যাবতীয় আত্মসংশয় নৃসিংহ অবতার হয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। এদিকে রিপোর্ট লিখতে বসে প্রসেনজিৎও অসঙ্গতি আবিষ্কার করে অনির্বাণকে পাগলের মতো ফোন করার চেষ্টা করছেন আর এই সব কনফিউশনের মধ্যে জয়া আহসান মেরেছেন ঝাঁপ। হাফ ঝাঁপ, হাফ ওড়া।
গল্প শেষ। এবার প্রতিক্রিয়া। 'রিভিউ' তো ছেড়েই দিন, প্রতিক্রিয়া দিয়েও পার পাওয়া যাচ্ছে না আজকাল। এই অবান্তরেই কোন একটা সিনেমার প্রতিক্রিয়ার নিচে একজন বলেছিলেন, অসম্ভব মৃদুকণ্ঠে, যে সিনেমার ভালোমন্দ কি শুধু গল্পে? এ রকম একটা সুপার টেকনিক্যাল মাধ্যম, এত রিচ হিস্ট্রি, ফিলোজফি, জিওগ্রাফি, সেগুলো না জেনেই মুখ খোলা...আমি তাঁর মুখের কথা কেড়ে নিয়েই বলেছিলাম, একেবারে ঠিক। কিন্তু আমি যেহেতু কিছুই জানি না, তাই আমার মতামতে পাত্তা দেওয়ারই দরকার নেই। আমি তো উল্টে আরওই বলব, এই সিনেমাগুলো যে এখনও দেখি এবং দেখে আবার তিনহাজার শব্দের হ্যাজ নামাই তাতেই আরও প্রমাণ হয় যে আমাকে সিরিয়াসলি নেওয়া কতখানি সময় নষ্ট।
অনেকের রিভিউতে শুনলাম দশম অবতার তাঁদের ভালো লাগেনি কারণ তদন্তের অংশটা ভালো করে দেখানো হয়নি। অনেকের বোরিং লেগেছে। তার কারণ হিসেবে আমার মনে হল হয়তো এটা দায়ী হতে পারে যে ক্যারেকটারদের ইনট্রোডিউস করার জন্য বড় বড় সিন রাখা হয়েছে যেগুলোর গল্পের সঙ্গে কোনও সম্পর্কই নেই। যেমন ধরা যাক, বিজয় পোদ্দারের ক্লাস নেওয়ার অংশটা। তারপর অফিস যাওয়ার পথে গুলি ছুঁড়ে ট্র্যাফিক জ্যাম ছাড়ানোর দৃশ্যটা। একদিক থেকে এই দৃশ্যগুলো কাজের কারণ ক্যারেকটার বিল্ডিং হচ্ছে, কিন্তু আবার আরেকদিক থেকে অকাজের কারণ গল্প কিছুই এগোচ্ছে না। এফিশিয়েন্ট সিন হচ্ছে সেগুলো যেগুলোতে দুটো উদ্দেশ্যই সাধিত হয়। তারপর, ক্লাইম্যাক্সে দড়াম করে হিরোহিরোইনকে প্রাকবিবাহ মধুচন্দ্রিমায় পাঠানোর সিদ্ধান্তটাও অনেকের অদ্ভুত লাগতে পারে। সে নিয়েও আমার মনে হয় না অত চুলচেরাচিরির কিছু আছে। স্টুডিয়োর/শহরের বদ্ধ পরিবেশে একটানা শুটিং সুপারহিরোহিরোইনদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, তাছাড়া পাহাড়ে না গেলে পাহাড় থেকে ঝাঁপ মারার (হাফ ঝাঁপ, হাফ ওড়া) শট নেওয়া হবে কী করে। আমি অবশ্য একটা বিকল্প কল্পনা করেছি। সমুদ্রে নিয়ে গিয়ে জয়াকে ঝাঁপ দেওয়ালেও হত। জয়ার পানপাতা মুখ জলে ভেসে আছে, এর সঙ্গে বিসর্জনের মেটাফরটা যেত ভালো। যাই হোক, এই সব সিদ্ধান্ত আলটিমেটলি পরিচালকের।
আমি মনে করি না দশম অবতার ভালো না মন্দ সে সব বিচারের জন্য এগুলো আদৌ ধর্তব্য। আইনস্টাইন বলেছিলেন না, আমরা মাছকে বলি সাইকেল চালাও তারপর, ধুস তুমি জিনিয়াস নও বলে মাথা নাড়ি, দশম অবতার যাঁদের খারাপ লাগছে তাঁদের বিচারের মাপদণ্ডও ওই গোত্রের। তাঁরা কোনদিন বলে বসবেন, শচিন তেন্ডুলকরের মতো বাজে দাবাড়ু দুনিয়াতে দুটো জন্মায়নি। কিংবা কুন্তলা? আরে ও তো একটা আগাপাশতলা ফ্লপ সাঁতারু।
সে সব যদি না বলেন তাহলে দশম অবতারকেও খারাপ সিনেমা বলা যাবে না। দশম অবতার কেমন হয়েছে বিচার করতে হলে আগে জানতে হবে দশম অবতার কী হতে চেয়েছিল। এক, বাংলা সিনেমার প্রথম কপ ইউনিভার্স হতে (শুনলাম এই ইউনিভার্সে আরও মিনিমাম দুটো সিনেমা তৈরি হবে) দুই, প্রসেনজিৎ অনির্বাণের ব্রোম্যান্সে টলিউডের নায়িকাদের, বিশেষ করে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের বুকে চাক্কু বিঁধিয়ে দিতে (একটিইউটিউব ভিডিওর শিরোনামে দেখেছি), তিন এবং সর্বোপরি, প্রসেনজিৎকে দ্বিতীয় পুরুষ সিনেমায় পার্ট না দেওয়ার প্রায়শ্চিত্ত করতে। প্রসেনজিৎ এমন ক্ষুধিত নায়ক যে দ্বিতীয় পুরুষ রিলিজ করা এবং রিলিজ করে বাংলা সিনেমার তৃতীয় আইকনিক থ্রিলার হয়ে ওঠার পর সৃজিত মুখার্জিকে ফোন করেন। এবং জানতে চান, এই সিনেমায় প্রবীর রায়চৌধুরী কেন নেই। তখন পরিচালক মাথা চুলকে বলেন, আসলে বাইশে শ্রাবণে প্রবীরবাবু নিজেই নিজের মাথায় গুলি মেরেছেন দেখানোটা একটু প্রিম্যাচিওর হঠকারিতা হয়ে গেছে। নো প্রবলেম, একটা প্রিকোয়েল বানালেই হবে। পরিচালক বুদ্ধিমান, ঠেকে শিখেছেন, ট্র্যাজিক এন্ডিং-এর লোভে পড়ে দশম অবতারে কোনও হিরোকে বলিদান দেননি। কাজেই এর পরের সিনেমাগুলো সিকোয়েল বানালেই চলবে। যদি না যীশু ফোমোতে ভোগেন আর ফোন করে বেঁচে ওঠার বায়না করেন।
উপরোক্ত প্রতিটি টু ডু-তেই দশম অবতার সাফল্যের সঙ্গে টিক মারে, কাজেই দশম অবতারকে খারাপ সিনেমা বললে আপনার হিংসুটেমোই প্রকাশ পাবে। দশম অবতার একটি আদ্যন্ত সফল এবং আগাপাশতলা সার্থক সিনেমা। রিভিউতে বা প্রতিক্রিয়ায় যে যাই বলি না কেন, আসলে আমাদের এগুলোই ভালো লাগে, কারণ আমরা টিকিট কেটে এগুলো দেখতে যাই, দেখে এসে এগুলো নিয়ে তিন হাজার শব্দের হ্যাজ নামাই। নিজের পদবীঘটিত চুটকিটা বিজয় পোদ্দার যতক্ষণ ধরে চালিয়ে যান এবং যতক্ষণ ধরে চুটকিটা চলে ততক্ষণ ধরে নেহরু প্লেস পিভিআর-এর তেত্রিশজন দামড়া দর্শক যে রেটে কুটোপাটি হন, তাতে প্রমাণ হয় যা হচ্ছে ঠিকই হচ্ছে, যা চলছে তাই চলা উচিত। উই ডিজার্ভ দ্য চুটকিজ অ্যান্ড সংস্কৃতি উই গেট।
রক্তবীজ
ভারতবর্ষের বাঙালি প্রেসিডেন্ট বাড়ির দুর্গাপুজো অ্যাটেন্ড করতে এসেছেন। সেই গ্রামেই (কিংবা পাশের গ্রামে) ইসলামিক জঙ্গিরা বোমা বাঁধার ঘাঁটি গেড়েছে, দশমীর দিন ফাটানো হবে। বানাতে বানাতেই বিস্ফোরণ। লোক্যাল পুলিস (কাঞ্চন মল্লিক অ্যান্ড গ্যাং) তদন্তে এলেন। কাঞ্চন পুলিস হলেও কমিক রিলিফ, তদুপরি কিউট। কথায় কথায় সুর করে "বাঁকাচাঁআআদ" বলেন। ব্যাপার সিরিয়াস, কাঞ্চনের কম্ম নয় বুঝে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হেভিওয়েট বাইকে চড়িয়ে মেজ পুলিস মিমি চক্রবর্তীকে পাঠালেন। মিমির ফিগার যতখানি মেয়েদের মতো, বাকিটুকু ততখানিই মেয়েদের মতো নয়। হেভিওয়েট বাইক তো বললামই। মুখের ভাষা শুনলে সিগমা মেলরাও কানে আঙুল দেবেন। ভায়োলেন্সের কল্পনায় জিভের জল সুরুৎ টানেন। বিয়েটিয়ের কথা উঠলে “আহ্ মা, আবার শুরু করলে” বলে ফোন কেটে দেন। এমনকি কোনও কোনও সিনে তো ছেলেদের থেকেও বেশি ছেলেদের মতো। সকালবেলা মর্নিংওয়াকে গিয়ে বড় পূলিস আবীর চ্যাটার্জিকে দৌড়ে হারিয়ে দেন। এবং তুলে ফেলেন। খালি বাচ্চার কষ্ট সইতে দেখলে নিজেকে সামলাতে পারেন না, সে ইসলামিক জঙ্গির বাচ্চা হলেও, জড়িয়ে ধরেন। পুলিসই হও, বাইকই চালাও আর প্যান্টে গুঁজে শার্টই পর, মেয়ে হয়ে জন্মেছ যখন কারও চোদ্দপুরুষের সাধ্য নেই মাতৃত্বকে চাপা দেওয়ার।
দেখুন, এ গল্পও স্পয়েল করার কিছু নেই। বোমা তো আর ফাটবে না। ইসলামিক জঙ্গিরা যত বদের বাসাই হোন না কেন, হিন্দুস্তান এবং হিন্দুদের যত খতরোঁতেই রাখুন না কেন, তাঁদের উদ্দেশ্য অ্যাকচুয়ালি সিদ্ধ হবে, ভাসানের প্রসেশনে বোমা অ্যাকচুয়ালি ফেটে যাবে, মাদুর্গার উইগ চড়বড় করে জ্বলবে, লক্ষ্মীসরস্বতীর সোনার অঙ্গ পুড়ে ছাই হবে, গনেশের শুঁড় খসে পড়বে, কার্তিক গলে ময়ুরের সঙ্গে মিশে যাবেন, প্রেসিডেন্ট ছত্রাকার হয়ে পড়বেন, ফাইন গরদের ধুতি দিয়ে পার্শিয়ালি ঢাকা নিতম্ব (আমি বানাচ্ছি না, রাজীব গান্ধীকে ওই দেখেই শনাক্ত করতে হয়েছিল, আনন্দবাজারের ফার্স্ট পেজে সে ছবিও বেরিয়েছিল) ছাড়া বাকি কোন অঙ্গ কোথায় ছিটকে পড়েছে খুঁজে পাওয়া যাবে না, এদিকে বিধর্মী, ম্লেচ্ছ টেররিস্টরা গড়াগড়ি খাওয়া পুজোর ঘট দিয়ে রক্ত তুলে তুলে ঢকঢক খাবে আর ধাঁইধাঁই নাচবে, এই সব দেখালে পুজোর পুরো মজা কিরকিরে। পুজোতে বই রিলিজ করিয়ে, এত প্রোমোশন করে, সতীর্থ পরিচালকদের নাম না করে চিমটি কেটে, ইউটিউবে, পডকাস্টে নিজেদের স্ট্রাগলের গল্প বলে, ফেস্টিভ্যালে কারা যায় জনগণের ম্যান্ডেটই আমাদের প্রাইজ বলে বলে মুখে রক্ত তুলে ওঁরা এ সব দেখাতে নামেননি। কাজেই চিন্তা করবেন না। পুজোর একটা গাঁদাফুলের আধখানা পাপড়িও এদিক থেকে ওদিক হবে না, প্রেসিডেন্টের টাকের একটি অদৃশ্য চুলও এদিক থেকে ওদিক হবে না, মাদুর্গার শাড়ির একটি প্লিটও ঘেঁটে যাবে না। তিনি সপরিবারে সসম্মানে ঢাকঢোল সহযোগে বিদায় যাবেন। ক্ষমতাসীন লোকেরাও ক্ষমতাতেই থাকবেন।
রক্তবীজের একটা বেসিক স্ট্যান্ড হচ্ছে ক্ষমতার প্রতি মমতা। প্রেসিডেন্ট ভালো। প্রেসিডেন্টের দিদি ভালো। বনেদী পরিবার ভালো। উঁচু বর্ণ ভালো। ছোট পুলিস ভালো। মেজ পুলিস ভালো। বড় পুলিস ভালো। বড় পুলিস আবীরের খালি একটা দোষ ছিল, সিগারেট খাওয়া, লাস্ট সিনে সেটা থেকেও মুক্ত হলেন। অর্চিষ্মানের চোখ এড়িয়ে দুই হাতে টিকটিকি করে বসে ছিলাম, প্লিজ, প্লিজ, যেন সিগারেটের প্যাকেটটাকে ঘৃণাভরে রাজপথের ঝাঁট দেওয়া রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে যাওয়ার সোয়্যাগটুকু আবীরকে শিবুবাবু অ্যালাউ করেন, আমার আশংকা সত্যি করে আবীর গুটগুট করে একটা ডাস্টবিনের কাছে গিয়ে সেখানে প্যাকেটটা ফেললেন। হায় রে বাঙালি হিরো, মুগ্ধ পরিচালকেরা তোমাকে চিরকাল গুড বয় করেই রেখে দিল, হট বয় আর হতে দিল না।
সিনেমা শেষ হওয়ার পর জেনেরালি আমি সিটে বসে থাকি, এত লোক কষ্ট করে বানিয়েছেন তাঁদের নামটা অন্ততঃ পড়া বা পড়ার চেষ্টা করা কর্তব্য মনে হয়। অর্চিষ্মান তাড়া দিতে থাকে, ওঠো ওঠো, অটো বুক করতে হবে, ওদিকে আবার গেট বন্ধ হয়ে যাবে। সেদিন আমি ওঠার তোড়জোড় করছি, পাশের লোকের সাড়াশব্দ নেই। কী গো যাবে না, বলে খোঁচা মেরে দেখি অর্চিষ্মান আতংকিত মুখে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমিও তাকালাম। একপাশে নাম চলছে, একপাশে খবরের কাগজের কাটিং সরে সরে যাচ্ছে। প্রণব মুখার্জি মাথার পেছনে হাত দিয়ে এলিয়ে বসে আছেন। খাগড়াগড় ব্লাস্ট। আরও কত রকম ব্লাস্ট। ইসলামিক সন্ত্রাসের ডকুমেন্টেশন। বাংলায়। বাংলার পশ্চিমে, এগোতে এগোতে, উঠতে উঠতে কাশ্মীর। ভারতের সীমানা ছাড়িয়ে আফগানিস্তান, ইরান (আমার এক্স্যাক্ট জায়গাগুলো মনে নেই, স্বীকার করছি)।
অর্চিষ্মান বলল, মানেটা কী? আমি বললাম, উফ, মানে আবার কী। ওই যে আবীরের ধপধপে শার্টের ধপধপে হাতা বেয়ে দু'ফোঁটা রক্ত মাটিতে পড়ল দেখলে না, সেই থেকে আবার কোটি কোটি টেররিস্ট গজাবে। বছরের পর বছর ধরে গজিয়েছে, গজাচ্ছে এবং আরও গজাবে। শুধু সিনেমায় না, বাস্তবে। তোমার পাছে বিশ্বাস না হয় তাই শিবুনন্দিতা হাতেকলমে প্রমাণ দেখাচ্ছেন। এবং শুধু বর্ধমানে না, ভারতে না, আফগানিস্তানে না, যেখানে যেখানে এদের একফোঁটা রক্তও পড়বে, সেখানে সেখানেই এরা পিলপিল করে গজাবে কারণ এরা এ রকমই। ওঠো ওঠো, অটো পাওয়া যাবে না্ ওদিকে আবার গেট বন্ধ হয়ে যাবে।
রক্তবীজ বানানোর আসল কারণ হচ্ছে এটাই। ওরা কেমন সেটা আন্ডারলাইন করে, ঘষে ঘষে, চোখের পাতা টেনে ধরে বুঝিয়ে দেওয়া। ওরা টেররিস্ট। ওরা গরিব। ওরা কালো। ওরা অশিক্ষিত। ওরা হাফ জোম্বির মতো, প্রতিশোধের স্লোগান বলতে বলতে জীবন কাটায়।
আর ওদের কাউন্টারে আমাদের যে রিপ্রেজেন্টেশনটা রক্তবীজ তুলে আনে সেটাই আসল খেলা। আমরা প্রেসিডেন্ট। আমরা ব্রাহ্মণ। আমরা ফর্সা। আমরা ইংরিজিতে শশী থারুর, বাংলায় সুনীতিকুমার। দৃশ্যের জাক্সটাপোজিশনও অব্যর্থ। এই সিনে ওরা রক্তলটপট খুন সেরে উঠতে না উঠতে পরের সিনে আমাদের পুজোর শাঁখ, ধূপের ধোঁয়া, ভিক্টর ব্যানার্জির স্মিতমুখে পারফেক্ট উচ্চারণে মন্ত্রোচ্চারণ। ওখানে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে চামড়া ফেটে লাল থকথকে মাংস, এখানে প্রেসিডেন্টের ফর্সা পা মাটিতে পড়লে চোখ সরু করে কনফার্ম করতে হয়, পড়ছে তো? নাকি হাফ ইঞ্চি ওপর দিয়েই... ওরা এমন খারাপ, যে দেশের খাবে সে দেশেরই সর্বনাশ করে, আমরা এমন ভালো যে যারা আমাদের দেশেরই খেয়ে আমাদের দেশেরই সর্বনাশ চায় তাদেরও ক্ষমা করে দিই। ভালো মুসলমানদের থেকে পুজোর সামগ্রী কিনি, বাড়িতে কাজের লোক হিসেবে পুষি, হুইলচেয়ারে বসে নতুন জামা বিতরণ করি। 'যে দেশেতে তরুলতা সকল দেশের চাইতে শ্যামল' -এর সিমিলার আবেগে এই সিনেমায় একটা সংলাপও আছে, এ দেশে "ক্ষমতাবানেরা ক্ষমা করতে জানে।" তা বলে কি আর যা খুশি ক্ষমা করে দেব? সীমার মধ্যে ত্যাঁদড়ামি করলে ক্ষমা করব। সীমা পেরোলেই "যদা যদা হি ধর্মস্য" স্লোগান দিতে দিতে ত্রিশূল হাতে লাফিয়ে পড়ব।
লাস্ট বাট নট দ্য লিস্ট, যেখানে ওদের মেয়েরা অ্যাদ্দিনেও বোরখা কেটে বেরোতে পারছে না, আমাদের বালিকারা সেই পঞ্চাশ বছর আগে থেকেই ফায়ারব্র্যান্ড ফেমিনিস্ট, সমাজটমাজকে কাঁচকলা দেখিয়ে নিজে নিজেই চণ্ডীপাঠের এজেন্সি নিয়েছে।
বলেছিলাম হ্যাপি এন্ডিং। অ্যাকচুয়ালি না। ঠাকুর দেখার মজা কিরকিরে হবে না, কিন্তু যতখানি বুকধুকপুক মিশলে এই পাঁচদিনের আমোদ আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে, ঠিক ততটুকু মিশিয়ে তবেই হলের দরজা খুলবে। ওই দু'ফোঁটা রক্ত, আমার বাড়ির পাশেই পড়ল কি? আমি যতক্ষণ পপকর্ন চিবোতে চিবোতে সিনেমা দেখছিলাম পাশের সিটেই কি কোনও রক্তবীজ...?
দুটো সিনেমা দেখলে তুলনা করতেই হয়। সবাই করছে। কালেকশনের অ্যামাউন্টে কে কত জল মেশাচ্ছে সে নিয়ে টুইটারে কুরুক্ষেত্র বেধে গেছে। আমারও একটা মতামত না দিলে ভালো দেখায় না। আমার মতে, রক্তবীজ দশম অবতারের থেকে অনেক বেশি এন্টারটেইনিং। অনেক টানটান, গল্প ফাস্ট মুভ করে, কিছু কিছু জায়গা তো পজিটিভলি থ্রিলিং।
তবু রক্তবীজের পাশে আমি দাঁড়াতে পারলাম না। সমস্যাটা রক্তবীজের না। হামি, পোস্ত, বেলাশেষে, বেলাশুরু, প্রাক্তন এবং রক্তবীজ দেখার পর ক্লিয়ার যে আমার সঙ্গে উইন্ডোজ প্রোডাকশনের অর্থাৎ শিবুনন্দিতার একটা খুব গোড়ায়, গভীরে, অমিল আছে। ওঁরা যত টানটান সিনেমাই বানান না কেন, যত এন্টারটেইনিং, যত শৈল্পিক, যত পপুলার, ব্যাপারটার সঙ্গে আমার একটা নীতিগত ঝামেলা থাকবে। দৃষ্টিগত ফারাক থাকবে। সে সব ফারাক অগ্রাহ্য করে আর্ট অ্যাপ্রিশিয়েট করা যায় কি না সে নিয়ে আমার থেকে অনেক বুদ্ধিমান লোক অনেক কথা বলে গেছেন। আমি শুধু বলছি যে আমি অত পরিণত দর্শক না হতে পারি, এ সব সিনেমাও সে লেভেলের আর্ট না।
দশম অবতার বোরিং এবং বাচাল। রক্তবীজ বিষাক্ত। আমার ভোট দশম অবতারের পক্ষে রইল।
দুনিয়ার ওপর থেকে বিশ্বাস চলে যাচ্ছে। জানেন, পোস্ত হিন্দিতে রিমেক হচ্ছে।
ReplyDeleteভালোই তো। আমরা একা ভুগে মরি কেন।
Deleteআপনার ব্লগ এর একনিষ্ঠ পাঠক, গত ৮ - ৯ বছর ধরেই। নন্দিতা শিবপ্রসাদ এর বিগত ছবি গুলোর ব্যাপারএ আপনার সঙ্গে সহমত হলে ও এবার হতে পারিনি, তাই কলম ধরা। একটু ভেবে দেখুন না, গত ১০০ বছর (কম বললাম মনে হয় ) ”আমরা" কি কম অত্যাচার বা অবিচার এর শিকার হয়েছি? তাহলে আমরা কেন রক্তবীজ হয়ে উঠলাম না, আমরা কি পশ্চিমী শক্তির আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা পাইনি?নাকি অন্য কোনো কারণে? আপনার মত বদলানো আমার উদ্দেশ্য নয় (এবং তা সম্ভবপর ও নয়) কিন্তু প্রশ্ন তো রাখতে ই পারি, তাই না?
ReplyDeleteমন্তব্য এবং প্রশ্ন পেয়ে ভালো লাগল। ঠিকই বলেছেন, প্রশ্ন তো রাখাই যায়। প্রশ্ন রাখলে তবু উত্তরে পৌঁছনোর একটা সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু সে উত্তরে পৌঁছনোর প্রসেসের জন্য সবথেকে খারাপ যদি কোনও জায়গা হয়ে থাকে সেটা হচ্ছে ইন্টারনেটের কমেন্টবাক্স। সাক্ষাতে কথা হলে ব্যাপারটা অনেক সুষ্ঠু এবং আন্তরিক হতে পারে।
Deleteঅবান্তরের সঙ্গে এতদিন থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
দৌড়ের ব্যাপারে মাথায় এলো ফরেস্ট গাম্পে টম হ্যাঙ্কস এর দৌড়। সিনেমা গুলো দেখা হবে না কিন্তু লেখা ভালো লেগেছে।
ReplyDeleteঠিক ঠিক, ওটাও ভালো দৌড়ের উদাহরণ।
Deleteসিনেমাগুলো দেখা হবে না যে ভদ্রতা করে বললেন বুঝেছি। একশো শতাংশ ঠিক স্ট্যান্ড। আমি যে কবে এ সংযম দেখাতে পারব কে জানে।
"দশম অবতার বোরিং এবং বাচাল। রক্তবীজ বিষাক্ত। আমার ভোট দশম অবতারের পক্ষে রইল।"
ReplyDeleteekdom ek mot.
er modhye abaar ami ek mosto bhul korechhilam, jaar phol amaakei bhog korte holo. Saptami-r din hall-e raktabij-er opening credits jokhon dekhachhe, tokhon bujhlam cinema ta kaader direction.
Doshom Obotar ba er ageyr cinema gulo niye kii ba bolbo. nijeke cinema bodhdha moteo bolbo na. kintu oi proti scene-e jodi director bojhate chaan "kemon dilam"..tahole jemon hobaar kotha aar ki...
odike roktobij-er abaar shei shob daye nei. Amra Bhaalo, Pobitro. "ora" baaje. byas.
kono backstory nei, kono charecter ja korlo ta keno korlo shetaar kono karjyo karon nei. Islamic. kajei tar terrorist hobaar jonno otai jotheshto.
jemon Prakton-e kormorota mohila, tai divorce hoyai uchit, Posto te baba ma career er dikey takiye ebong mod khaaye, tai chheler kheyal rakhte paarbe na etai obvious, temoni islamic=jongi . byas.
ora roktobij, zombie. amaader moto manush na. oder bhabnar khomota nei. oder madrasa, oder library maane jihad factory.
Odike Abir er byapartao porombrotor moto. Sonada, Byomkesh, Feluda ki ei role ta. Sob role-eri abir ekta good boy role play kore
আমার না এত কমপ্লেক্স হয় এটা রিয়েলাইজ করে যে বাংলা মেনস্ট্রিম সংস্কৃতি নিয়ে আমি কী পরিমাণ আপডেটেড। তুমি রক্তবীজের ওপেনিং ক্রেডিট দেখার আগে জানতে না ওটা কাদের?!!
Deleteযাই হোক। যা লিখেছ তাতে হাই ফাইভ দেওয়া ছাড়া তো আর কিছু করার নেই। সাফাই দেওয়ার কিছু নেই, লোকে এমনিও "ফেকুলার" গাল পাড়বে, অমনিও, তবুও বলি, ইসলামিক জঙ্গিপনা নিয়ে সিনেমা বানানো নিয়ে অসুবিধে নেই। জিনিসটা তো ফ্যান্টাসি না। কিন্তু বানানোর রকম দেখলে বোঝা যায় উদ্দেশ্যটা কী। ব্ল্যাক ফ্রাইডে-ও ইসলামিক টেররিজম নিয়েই বানানো, অথচ রক্তবীজ দেখে ওঠার পর যে বিকট ফিলিংটা হয় সেটা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। চরিত্রগুলো রিয়েল। মানুষের মতো। রক্তবীজের টেররিস্টরা মানুষের মতো নয়। অবশ্য আমি টেররিস্ট দেখিনি সামনে থেকে (বা দেখলেও চিহ্নিত করতে পারিনি) কাজেই দাবি করতে পারব না টেররিস্ট কেমন হয়। কিন্তু টেররিস্টদের উল্টোদিকে যাদের দেখানো হয়েছে তাদের আজন্ম দেখেছি, হাতের তালুর মতো চিনেছি, কাজেই বুক ঠুকে বলতে পারি ও জিনিস আগাপাশতলা কল্পনা। ওই স্টিরিওটাইপটা বানানো হয়েছে আরেকটা স্টিরিওটাইপের মোকাবিলার জন্য। কাজেই এদের সততা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
যাই হোক, এ নিয়ে বেশি বলাও কাদা ঘাঁটা। হোপফুলি নেক্সট প্রোডাকশন আসার আগে আমার জীবনে মিনিংফুল কাজের আবির্ভাব হবে।
Shudhu Fakular? shonge Sickular, Pseudo Secular, Seku-Maku ityadi. tar opor tumi JNU . oi branding gulo to emnitei thaakbe. ogulo gaali na. amaar kachhe badge of honor. Tao, khamokha tomaar blog-e onno der ei shob bolaar shujog debaar theke ei niye onno kothao alochona kora jaabe.
DeleteJai hok, koto kom meaningful kaaj thaakle director-er naam na jene shoptomi-r din cinema dekhte jai , sheta bujhtei parchho
Bahudin holo ja cinema dekhar baritei dekha hoy. Tai ojotha ticket er daam noshto hoto ta noy. Kintu ekhonkar boyese samay niyeo onektai sotorko. Ojana cinema dekhte bosle onek samayei fast forward kore shesh poreo ota niye dukkho theke jay. To setukyo bachiye dilen, tao erokom nikhad upobhogyo lekhar morok a ....
ReplyDeleteOnek dhanyabad
ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগল, শিবেন্দু। থ্যাংক ইউ।
Deleteসিনেমা দুটোই দেখব কিনা জানিনা, কারণ এই দুজন পরিচালক সম্পর্কেই আমার এখনকার মনোভাব হচ্ছে যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা ধরনের। 😃 আর তোমার লেখাটা পড়ে খুব ভাল লাগল।
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, ঊর্মি।
Deleteভীষণ ভালো লিখেছো! কোনোটাই দেখিনি, কিন্তু সুযোগ পেলে দশম অবতার দেখার ইচ্ছে রইলো শুধুমাত্র এই রিভিউ পড়লাম বলে আর রক্তবীজ- ওরে বাবা!
ReplyDeleteআমি তো বলি কোনওটাই দেখবেন না, অমিতা। দশম অবতার, রক্তবীজের রেস্পেক্টে ভালো। তার থেকে আকাশবাতাস দেখুন।
Delete😀
Delete"নিজের পদবীঘটিত চুটকিটা বিজয় পোদ্দার যতক্ষণ ধরে চালিয়ে যান এবং যতক্ষণ ধরে চুটকিটা চলে ততক্ষণ ধরে নেহরু প্লেস পিভিআর-এর তেত্রিশজন দামড়া দর্শক যে রেটে কুটোপাটি হন, তাতে প্রমাণ হয় যা হচ্ছে ঠিকই হচ্ছে, যা চলছে তাই চলা উচিত। উই ডিজার্ভ দ্য চুটকিজ অ্যান্ড সংস্কৃতি উই গেট।".... 100% satyi.
ReplyDeleteDoshom Avatar dekhini. OTT te ele dekhbo.
Raktobeej dekhe apnar ja ja mone hoyechhe, amar-Rakar-i eki mot. Eta ekta binary kore tolar chesta, ar Bangla Cinemay khubi bhaje ekti shuruyat hoye roilo.
এটা ঠিকই বলেছেন, সায়ন। রক্তবীজের বক্স অফিস কালেকশন দেখে এবার পালে পালে এই মর্মে ছবি তৈরি হবে। সব গোল্লায় যেতে আর বেশি দেরি নেই।
DeleteShiboprosad-Nanditar moto eirom regressive cinema khub kom loke banay ajkal. Er cheye Paglu 2 dyakha onek better. Amazon e eshechhe, dekhe nao.
ReplyDeleteতাই বুঝি। দেখব তাহলে। থ্যাংক ইউ, বিম্ববতী।
Deleteদেখেছেন কান্ড, আমি তো রক্তবীজ দেখে, ওই লাস্ট সিনের খবরের কাগজের কাটিংস দেখে, তার সঙ্গে নামকরণ মিলিয়ে, ভেবে বসেছিলাম যে এরম কোনো মেসেজ দিচ্ছে যে টেররিজম বর্তমান ব্যবহৃত পন্থা দিয়ে আটকানো যাবে না, রূট কউসে ঢুকতে হবে, যেটার কারণে মানুষ ওই দিকে যায়। বলা হচ্ছে যে আমাদের সামাজিক পরিকাঠামোর কোনো না বোঝা খুঁতের জন্যেই এসব হচ্ছে, এবং হতে থাকবে। স্টিরিওটাইপ যে করা হচ্ছে এরম কিছু তখন মাথাতেই আসেনি, শুধু আবীর আর মিমির চরিত্রদুটো একটু "কেমন যেন" মনে হচ্ছিলো।
ReplyDeleteএমনিতে সিনেমাটা ঠিকঠাক টাইমপাস সিনেমা লেগেছিলো, এর বেশি ভাবায়নি।
দশম অবতার এর রিভিউটা পড়া স্থগিত রেখেছি এখনের জন্যে। এটা দেখা হয়নি, আর অনলাইন স্ট্রিমিং-এ এলে দেখার ইচ্ছে আছে, স্রেফ জয়া আহসান আছে বলে। ডুবসাঁতার সিনেমাতে আমি জয়া আহসান কে প্রথম চিনি, আর সিনেমাটা এবং রোলটা জানি না কেন খুব ভালো লেগেছিল, এবং তারপর থেকে ওনার রোল থাকা সিনেমা এলে আশা নিয়ে দেখি।
শেষ থেকে উত্তর দিতে শুরু করি। আমার ইদানীং জয়াতে আশাভঙ্গ হয়েছে সামহাউ। আবার পরে জাগতেও পারে। দশম অবতার নিয়ে আর কিছু বলার নেই, যা বলার বলে দিয়েছি।
Deleteএকদিক থেকে কিছু মাথায় না আসাটা আইডিয়াল, রাজর্ষি। যা-ই মাথায় আসুক না কেন, আমার আজকাল দৃঢ় ধারণা হয়েছে সেটা কোনও একটা গালিবল্ বয়সে/পরিস্থিতিতে ব্রেনওয়াশের ফল। যেদিকে ব্রেনওয়াশ হবে সেইদিকের যুক্তিগুলোই মাথায় আসবে, সেই "সত্যি"গুলোই চোখে প্যাট প্যাট করে ফুটবে। আমি বলছি না, ইন্ডিপেন্ডেন্টলি কেউ নিজস্ব সত্যে পৌঁছতে পারেন না, নিশ্চয় পারেন, কিন্তু আমার মতো হরেদরেদের সব ওপিনিয়নই ধার করা।
Ki bhalo bolle Kuntala , raktabij niye, ami dekhini kintu tumi ja bolle ekdom theek. 'Amra bhalo, amra uchu barno, amra brahman', social engineering kore kore establish korcche, . Addhek Loke bujhtei pare na, bujhleo balar sahosh nei. Anek bhalobasha nio
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ। এটা যে কী বিপজ্জনক, ভাবতে আমার অন্ততঃ বুক কাঁপে।
Deleteদুটোর কোনোটাই দেখিনি তবে দশম অবতার দেখার ইচ্ছে আছে| আর মিথ্যে বলবোনা রক্তবীজ সিনেমা টাও সামনে পেলে হয়তো দেখেই ফেলবো|
ReplyDeleteদশম অবতার নিয়ে কিছু বলবোনা, সিনেমা টা এখনো দেখিনি| আর ভদ্রলোকের পরপর সিনেমা দেখে দেখে হতাশ হওয়ার পরে বুঝেছি, সমস্যাটা ওনার নয়, সমস্যাটা আমার| আমি ওনার থেকে যদি ভালো সিনেমা আশা করি বা ঠিক কিরকম সিনেমা হলে আমার ভালো লাগবে, সেটার দায় ওনার ওপরে দেওয়া টা ঠিক হচ্ছেনা|
অন্যটা নিয়ে আমি তোমার সাথে একমত| ওনাদের সমস্যাটা এতো বেসিক জায়গায়, সেটা যদি কেউ বুঝতে না পারে, তাকে আর বোঝানো যাবেনা, কারণ সেই একই সমস্যা তে তারাও ভুগছে| আর সত্যি কথা বলতে কি ওনাদের সাথে একমত লোকেদের অভাবও নেই| যাই হোক, আমি আবার আজকাল এগুলো দুরছাই করিনা| ভালো/রিয়ালিস্টিক সিনেমা/সিরিজ দেখে anxiety তে ভোগার চেয়ে মনে হয় তার থেকে সিনেমা দেখে ঘন্টা দুয়েক সেটাকে কষিয়ে গালাগাল করবো, তারপরে পেট ভোরে খেয়ে রাতে ঘুম দেব|
আমারও ওই সামনে পেলে দেখে নেওয়া থিওরিতেই সংস্কৃতিচর্চা চলছে, অপরাজিতা। তাছাড়া এটা বাংলার বাইরে থাকার কুফলও বটে। এত কম জিনিস যে বাছাবাছির বিলাসিতা করা যায় না (বা সংযম আমরা দেখাতে পারি না)। না হলে হয়তো এতটা বাড়াবাড়ি করতাম না। আবার অনেক কিছুর জন্য গালে হাত দিয়ে বসে থেকেও দেখতে পাই না। যেমন ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরীর 'মায়ার জঞ্জাল'-এর পথ চেয়ে ছিলাম, এলই না।
Deleteবোঝাবুঝি নিয়ে আর কী বলব। হয়তো আমিই ভুল বুঝছি, আমি আর কাকে কী বোঝাব।