হ্যাপি ফাদার'স ডে



১। বাবার জন্মদিনঃ ১০ জানুয়ারি, ১৯৫২

২। বাবার প্রিয় খাবারঃ আলুপোস্ত। তবে স্ট্রিক্টলি এই ভ্যারাইটির

৩। বাবার প্রিয় বেড়াতে যাওয়ার জায়গাঃ পুরী

৪। বাবা হাজার টাকা পেলেঃ পাঁচশো টাকা জমাবেন বাকি পাঁচশো দিয়ে ঘুরতে যাবেন। দশ হাজার পেলে পাঁচ হাজার জমাবেন, বাকি পাঁচ হাজারে ঘুরতে যাবেন। দশ লাখ পেলেও হিসেবটা পাঁচ পাঁচেরই থাকবে।

৫। বাবাকে বর্ণনা করার তিনটে বিশেষণঃ উৎসাহী, পুঙ্খানুপুঙ্খ, চাপা।

৬। বাবার সঙ্গে আমার মিলঃ তালজ্ঞান, মাত্রাজ্ঞানহীনতা, বসার ভঙ্গি, খাদ্যাখাদ্য রুচি (কলমি শাক, পটল এবং বাঁধাকপি, আমাদের কমন ফেভারিট), মেজাজ।

৭। বাবা ভালো পারেনঃ গান গাইতে, গান শুনতে, বেড়াতে, টেবিল টেনিস খেলতে, আয়ব্যয়ের হিসেব রাখতে, জায়গার জিনিস জায়গায় রাখতে, নানারকম লোকের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে।

৮। বাবা আমাকে শিখিয়েছেনঃ সাইকেল এবং স্কুটার চালাতে, সাঁতার কাটতে, QWERTY মেনে টাইপ করতে, শুরুতে পাটকাঠিতে গুঁজে এবং ক্রমে হাতে ধরে পটকা ফাটাতে, যখন যেটা খেতে ইচ্ছে করছে তখন সেটা অম্লানবদনে খেয়ে ফেলতে। অর্থাৎ এখন ফুচকা খেলে রাতে রুটি ঢ্যাঁড়সভাজা না খেতে পারার আতংকে না ভুগতে।

৯। বাবা অনেক চেষ্টা করেও আমাকে শিখিয়ে উঠতে পারেননিঃ জায়গার জিনিস জায়গায় রাখতে, বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে দরকারি জিনিসের লিস্ট মন্ত্রের মতো আউড়ে মিলিয়ে নিতে, (বাবার মন্ত্র ছিল টাকা, পয়সা, পেন, চাবি, রূমাল, আইডেনটিটি। এ যুগের কথা হচ্ছে না বলাই বাহুল্য কারণ লিস্টে ফোন নেই। যাই হোক, আমি এই অত্যন্ত জরুরি জিনিসটি শিখিনি। প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে এই পরশুই মানি ব্যাগ প্যান্ট্রিতে ফেলে রেখে বাড়িতে ফেলে গেছি মনে করে অটো চড়ে বাড়ি এসে আবার ফেরত গেছি। দশ দশ কুড়ি কিলোমিটার। আটচল্লিশ ডিগ্রিতে।) এখন যা হচ্ছে হোক না কেন, ফাইন্যালি সঅঅব ভালো হবে এই বিশ্বাসে অনড় থাকতে।


Comments

  1. এত সুন্দর লেখার বিষয়গুলো যে কী করে জোগাড় করেন জানিনা। খুব সুন্দর লাগলো লেখাটা। আন্তরিক ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. এ মা এটা তো একেবারে ডেট মিলিয়ে লেখা। যাই হোক, আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগল, সম্বরণ।

      Delete
  2. Eto point kore guchiye lekha puro HS er porikkhar khata.. ☺️ Kakur sathe 4 no point tay kachakachi gechi ami 500 taka diye ghurte jabo 400 jomabo ar 100 takar restaurant e khabo ��

    ReplyDelete
    Replies
    1. আসলে আমার মনে হয় ঊর্মি, আমার মা বাবার ক্ষেত্রে অন্তত, দোকানে খাওয়া যে একটা সেলিব্রেশনের রকম হতে পারে এটাই ধারণায় নেই। এক প্রজন্মে এটা একটা বিরাট বদল হয়েছে।

      Delete
    2. seta thik kotha.. ami oboshyo amar baba maa er thekei park st e chinese khawa sikhechi .. tobe seta baba maa er khetre baki onek kajer pore priority peto ...

      Delete
  3. Khub sundor post. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, অরিজিত।

      Delete
  4. daaaarun laglo.. I wish aamio erokom ghurte partam..

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, ইন্দ্রাণী। আমাদের বাড়িতে একটা পচা রসিকতা চালু আছে, যার চরিত্রে যে বৈশিষ্ট্য/গুণ/দোষ প্রবল তার সেই জন্মের লগ্ন সেই বৈশিষ্ট্য/গুণ/দোষ দিয়ে দাগিয়ে দেওয়ার। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় আমার কুঁড়ে লগ্নে জন্ম, অর্চিষ্মানের লোকলজ্জা লগ্নে। আমরা সবাই একমত, আমার বাবার জন্ম ভ্রমণ লগ্নে।

      Delete
  5. No 2 and No 3 ta amar sange mile gyachey. jotoi ja khai aar berai na keno i come back to alo posto and puri :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাবার তরফ থেকে আমিই হাই ফাইভ দিয়ে দিলাম তোমাকে, শম্পা।

      Delete
  6. আমি আপনার দোকানে খাওয়ার লেখা পড়ে অন‍্যদের খাওয়ার পরামর্শ দিই কিন্তু বাকিটা আপনার বাবা মার মত অর্থাৎ দোকানে খাওয়া যে একটা সেলিব্রেশনের রকম হতে পারে এটা আমারও ধারণায় নেই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. না থাকাই ভালো, নালক। এ রকমই থাকবেন।

      Delete
  7. সাবাস, মাম্মা। বাবার এই রকম চুলচেরা অপারেশন মেয়ে, বিশেষ করে তোমার মত রসকুম্ভ ছাড়া আর কে করিতে পারে! এই মেয়ের বাবার গেঞ্জিছেঁড়া উজ্জ্বল চেহারাটা দেখতে ইচ্ছা করে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, মালবিকা।

      Delete

Post a Comment