পছন্দসই পাঁচ



শমীক আর প্রদীপ্তর কমেন্ট পড়ে মনে পড়ল যে একসময় অবান্তরে বেড়াতে যাওয়ার পোস্ট লেখা হত বটে। আরও আশ্চর্যের কথা, একসময় বেড়াতেও যেতাম।

অবান্তরজাতীয় ব্লগিং-এর ট্রেন্ড উঠে গেছে। ওঠাই উচিত। যতসব পার্সোন্যাল প্যাঁচাল। কিন্তু প্যাঁচালের একটা উপযোগিতা আছে। পাবলিক ডায়রি হলেও ডায়রি তো। ডায়রির মতোই সময় ধরে রাখে।

অর্চিষ্মান দাবি করেছে ও মাঝেমাঝেই আমাদের বেড়াতে যাওয়ার পোস্টগুলো পড়ে। ছবি দেখে। কী করেছিলাম, কী খেয়েছিলাম, কেমন ফুর্তি হচ্ছিল। উদয়পুরের অটোওয়ালাকর্তৃক ঠকা প্রতিরোধের ব্যর্থ চেষ্টা করছিলাম, পাঞ্জিম টু পালোলেম বাসের জানালা থেকে গ্রামীণ গোয়ার গোধূলির মায়ায় চোখ ভাসিয়ে কান ও মন খাড়া করে সহযাত্রী বাঙালি দম্পতির ঝগড়ার প্রতিটি অক্ষর গিলছিলাম, পিচোলা লেকে ভাসছিলাম, চন্দ্রশীলা চড়তে জিভ বার করছিলাম, স্বর্ণমন্দিরের জলের ধারে হাঁটুতে চিবুক রাখছিলাম।

শেষ বোধহয় গিয়েছিলাম ওর্ছা। ছবিগুলো দেখছিলাম। জাহাঙ্গির মহল আর বেতোয়ার স্রোতের থেকে নিজেদের ছবি দেখতে উৎসাহ বেশি ছিল। ছবির মেয়েটা নির্ঘাত আমিই, কিন্তু আবার আমিও কি? ওই মুহূর্তের আমি হয়তো জলের স্রোতের মতো বয়ে গেছে চিরদিনের মতো। অর্চিষ্মানকে দেখলাম। সে জন্য অবশ্য ব্লগ থেকে বেরিয়ে ব্যক্তিগত সংগ্রহের দ্বারস্থ হতে হল। ওই অর্চিষ্মানটাও আর নেই। মুহূর্ত নিয়ে গেছে।

কতদিন বেড়াতে যাই না। খাটে শুয়ে, চেয়ারে এলিয়ে দুই ঠ্যাং মোড়ায় তুলে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করি। লজিস্টিক্সের সম্ভবঅসম্ভব চুলোয় দিই। আংকোরভাটের পাথুরে গলিতে হাঁটি, মাচু পিচুর শৃঙ্গে কোমরে হাত দিয়ে হাঁপাই।

কবে যাব? এই তো আরেকটু কমলেই। কোভিড কিংবা কাজের চাপ। হাঁটা লাগাব স্বপ্নে দেখা জায়গাগুলোর উদ্দেশ্যে। যেগুলো না দেখে মরেও শান্তি পাব না।

কিন্তু যদি বলা হয়, ইয়ার্কি মেরে নয়, সিরিয়াসলি, সারাজীবনে আর পাঁচবার মাত্র অর্চিষ্মানের সঙ্গে বেড়াতে যেতে পারবে, তাহলে এসব জায়গার একটাতেও যাব না। আংকোরভাটকে ভ্যাট বলব, মাচূ পিচুকে হাঁকিয়ে দেব অবলীলায়। ভারতবর্ষ ছেড়ে বেরোবই না। সেই জায়গাগুলোতেই যাব যেখানে আমি আগে গেছি, কয়েকটা জায়গায় অর্চিষ্মানও গেছে। কয়েকটা জায়গায় দুজনে একসঙ্গে গেছি।

নিচে তেমন কয়েকটা জায়গার নাম লিখলাম, যে জায়গাগুলোতে অর্চিষ্মানের সঙ্গে আরেকবার বা একবার বেড়াতে না গিয়ে এ জন্মের মাটি ছাড়ছি না।

১। বিনসরের নামটা লিস্টের প্রথমে এল, কারণ বিনসরের সরকারি বাংলোর পেছনের মাঠে নেমে আসা সন্ধের শৈত্যে, কুয়াশায় উধাও হয় হয় পাহাড়চুড়োর দিকে তাকিয়ে জীবনে প্রথমবার আমি বিয়ে করার ব্যাপারটা তলিয়ে দেখি।

বিয়েটিয়ে লোকের হয় জানতাম কারণ রেগুলার নেমন্তন্ন খেতাম। যেটা জানা ছিল না সেটা হচ্ছে বিয়ে লোকে আদৌ কেন করে। বিয়ের পর হাত পা এক্সট্রা গজাতে দেখিনি, অবিবাহিত থেকে যাওয়ার সামাজিক স্টিগমার ছ্যাঁকাও খাইনি, কাজেই বিয়ে করা বা করা কোনওদিকেই ভাবনা খরচ করিনি।

কিন্তু সেই শেষ বিকেলের কনকনানো রোদে সোনালি পাহাড়চূড়োর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে প্রথম উপলব্ধি করেছিলাম কিছু কিছু দৃশ্য একা দেখা, না-দেখারই সমান। কিছু কিছু মুহূর্ত একা বাঁচা, মুহূর্তগুলো মাটি করা।

কিন্তু কার সঙ্গে বাঁচব? মা বাবা পাঁচ হাতের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও এ উপলব্ধি হচ্ছে যখন মা বাবার সঙ্গে নয় তো বোঝাই যাচ্ছে। গত মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং তার সঙ্গে সঙ্গে স্কুলজীবনও শেষ হয়েছে; ক্লাসের যে মেয়েটির গা ঘেঁষে আর কখনও বসব না যতবার মনে পড়ছে ততবার যে অল্প অল্প মরে যাওয়ার ফিলিং হচ্ছে তার সঙ্গে? নাকি আপ প্ল্যাটফর্মের ধারে ঝুঁকে ট্রেন আসছে কি না পরীক্ষা করা সাদা নীল ইউনিফর্ম পরা ফুটফুটে ছেলেটির, যার জন্য লাস্ট তিন বছর লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদছি, তার?

এদের কারও সঙ্গে না। ওই মুহূর্তের সেটাও একটা ডিপ্রেসিং উপলব্ধি, কিন্তু ওই অসামান্য অস্তরাগের চোখে চোখ রাখতে পারে না ডিপ্রেশন। লাজ তুলে পালায়। সে কুন্তলার সঙ্গে এ কুন্তলার একটাই মিল, আশা। অসীম, অপূরণীয় আশা। তারও সমানে মনে হত, এরও হয়, হয়নি সময়। সময় হলেই সব হবে। এমন স্পেশাল কারও সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে কোনওদিন, যার সঙ্গে বিনসরের সূর্যাস্ত ভাগ করে নেওয়া যাবে।

সেই লোকটার নামই কি বর? তাকেই কি বিয়ে করে ফেলা যায়?

সে রকম একজনের সঙ্গে দেখা হল, বিয়েও হল, সে বিয়ে ক্রমে প্রাজ্ঞ ও অভিজ্ঞও হল। যেটা হল না সেটা হচ্ছে তার সঙ্গে বিনসর যাওয়া। পাহাড়ি মাঠে সন্ধের মুখোমুখি পাশাপাশি দাঁড়ানো।

সে অপূর্ণ সাধ পূরণ করতে যাওয়া বুদ্ধিমানের হবে কি না কে জানে। গত পঁচিশ বছরে লাদেন মরে গেছে, গ্লোবাল ওয়ার্মিং এসে গেছে, প্লুটো আর গ্রহ নেই, সরকারি বাংলোর পরিষেবা ক্লাব মহিন্দ্রার কম্পিটশনে হয় বাপ বাপ বলে শুধরেছে নয় সম্পূর্ণ ধসে গেছে।

ষোলর কুন্তলা একচল্লিশের হয়ে গেছে।

আর যার কাছে যাই হোক আমার মতে জগতের যাবতীয় আজুবার তুলনায় এইটিই অবিশ্বাস্যতম। অদ্ভুত। অচিন্ত্যনীয়।

বিনসর যদি মন্ত্রবলে একই রকম থেকে গিয়েও থাকে, ওই মেয়েটা নিশ্চিতভাবেই নেই। নেই বলেই ওর ইচ্ছে পূরণ করাটা আমার কর্তব্য। কাজেই অর্চিষ্মান, বাক্সপ্যাঁটরা বাঁধো, বিনসর যাব।

২। লেপচাজগত না, সান্তালেখোলা না, অনাবিষ্কৃত, অপরিচিত, ট্যুরিস্ট-অলাঞ্ছিত, নিভৃতচারী ভ্রমণার্থীদের আস্তানা না। ভিড়ভাট্টা, কমার্শিয়ালাইজেশন, জঞ্জাল, জলের অভাব, গিজগিজে ম্যাল ও মাংকিটুপির দার্জিলিং। ম্যালের বেঞ্চে বসে চায়ের পর চা খাব, ঘোড়ায় চড়ব না, রোদ পড়ে আসছে দেখলে উঠে জিনস ঝেড়ে, কনুইয়ে কনুই গলিয়ে ঢালু রাস্তা ধরে নেমে যাব অবিবেচকের মতো, যাতে ফেরার সময় উঠে আসতে জিভ বেরিয়ে যায়। একদিক থেকে ভালোই, পরিশ্রমের চোটে তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে। পরদিন ভোর চারটেয় উঠে মাথা মুড়ি দিয়ে টাইগার হিলও যাওয়া আছে।

নেমে এসে, সবাইকে ফোনটোন করে, ক্লিয়ার সূর্যোদয় দেখার আকণ্ঠ মিথ্যে অবলীলায় উচ্চারণ করে কেভেন্টারসের ছাদে চড়ব। অর্চিষ্মান সালামি সসেজ সাঁটাবে, আমি খাব রোদ আর হট চকোলেট। খেতে খেতে পেট ভরে বাঙালি দেখব। অর্চিষ্মান বলবে, ওরে বাবা কুন্তলা, ও রকম তাকিয়ে থেকো না।

৩। পাহাড় না সমুদ্রের উত্তর সোজা। পাহাড় না জঙ্গলের উত্তরও। জঙ্গল না সমুদ্র বললে কিঞ্চিৎ ফাঁপরে পড়ব। কিন্তু এদের সবার থেকে তফাতে দাঁড়ানো একজন প্রতিযোগী, বা সে হয়তো প্রতিযোগী হতে চায়ও না, ঘাপটি মেরে আছে, যাকে এনে সামনে দাঁড় করিয়ে দিলে ফাঁপরটা অনতিক্রম্য প্রতিভাত হবে

শান্ত জল। অনেক জল। উচ্ছ্বাসহীন, নীরব জল।

পুকুরধারে প্রেম করে কেন লোকে? কারণ মগজের ভেতর প্রেম যে অশান্তি, তীব্রতা, দহনের জন্ম দেয় - তার পারফেক্ট প্রতিষেধক হচ্ছে শান্ত জল।

এই ধরণের জলের কাছে তখনও আমি বেশি যাইনি, পাড়ার পুকুর ছাড়া। সে পুকুরে নামার প্রথম ষোলদিনের অভিজ্ঞতা ঝোড়ো ছিল, কিন্তু সতেরোতম দিন থেকে সব শান্ত হয়ে গিয়েছিল। সে শান্তিতে দুই হাত ছড়িয়ে ভেসে যাওয়া এবং ভেসে থাকা, যে জানে না সে জানে না।

সে পুকুরের থেকে আয়তনে অনেক বড় জলের সামনে জীবনে প্রথমবার পড়েছিলাম মাইথনে গিয়ে। ক্লাস ফোর নাগাদ সম্ভবত। মাইথনের মজুমদার নিবাস ছিল স্থল থেকে ব্রিজ ধরে এগিয়ে জলের মধ্যে। দ্বীপ দ্বীপ ফিলিং। ওই সময় আরেকটি পরিবার ছিলেন নিবাসে, বাবামা, বাচ্চা মেয়ে ও একজন দিদিমা। বাবামা ভেবেছিলেন আমার বন্ধুত্ব হবে মেয়েটির সঙ্গে, হয়ে গেল দিদিমার সঙ্গে। দিদিমার ছিল সুটকেস ভর্তি বই, কিছু আনকোরা, কিছু আলুভাজা। দিদিমা সেগুলোকে যত্ন করে গজ আর আঠার তাপ্পি দিয়ে রেখেছিলেন। শীতকাল ছিল, বৃষ্টিও পড়ছিল। বারান্দায় বসে বসে আমি আর দিদিমা গল্পের বই পড়তাম। আমাদের ঘিরে ড্যামের জলে বৃষ্টি পড়ত। একদিন রাতে সাইটসিয়িং করে ফিরছি, দিদিমাদের ঘরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখেছিলাম, কাকু মশারি টাঙাচ্ছেন। মা চাপা গলায় বলে উঠেছিলেন, উঁহু, অন্যের ঘরের ভেতর তাকাতে নেই সোনা। মায়ের অনেক শিক্ষা অগ্রাহ্য করেছি, কিন্তু অন্যের ঘরের ভেতর তাকানোর চেষ্টা করিনি আর কখনও। না তাকাতে তাকাতে, ইচ্ছেও উবে গেছে।

অর্চিষ্মানের সঙ্গে মজুমদার নিবাসের বারান্দাটায় বসব একবার। বৃষ্টি নামলে, যা আমি জানি নামবেই, ড্যামের জলে টুপুর টাপুর শব্দ হবে। সে শব্দ ভেতরের কোলাহল চাপা দিয়ে দেবে। একে অপরের মনের কথা আবার শুনতে পাব।

৫। সমুদ্র। বালি। বালি-কিচকিচ চটি, জামার হেম। স্বর্গদ্বার। চা। মটর কা পানি। নৃসিংহের খাজা। অ্যালুমিনিয়ামের ডেকচির বাসি চমচম। আরও চা। হিলহিলে ঢেউ, কিলবিলে বাঙালি।

আর কতবার যাবে পুরী? দেখা জিনিস আর কতবার দেখবে? মুখস্থ হয়ে গেছে তো।

মুখস্থ হয়ে গেছে বলেই তো। গোটা সিলেবাস দাঁড়ি কমাশুদ্ধু মুখস্থ করে ফেললেই তো বুক ফুলিয়ে পরীক্ষার হলের দিকে হাঁটতে মজা। হাড়ে হাড়ে চেনা হয়ে গেলেই তো একসঙ্গে থাকতে আরাম। আকাশটা নামতে নামতে সমুদ্র হয়ে যাওয়ার মুহূর্তটার আসা নিশ্চিত থাকলেই তো সমস্ত মনোযোগ জড়ো করে নিষ্পলক প্রতীক্ষা। সে আসবে, প্রতিবারের মতো এবং প্রতিবারের থেকে বেশি, ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। 

৫। যাওয়ার আগে যে ক’টা বিষয় নিয়ে মাথাব্যথা ছিল তার মধ্যে একটা ছিল নেক্সট তিন দিন মাকে কনভিন্স করাতে হবে আমি দিল্লিতেই আছি। ব্যাপারটা শক্ত নয় কারণ মা পনেরোশো কিলোমিটার দূরে, আবার সোজাও নয় কারণ দিনে মিনিমাম তিনবার মায়ের সঙ্গে কথা হয়। অর্থাৎ যদি প্রসঙ্গ ওঠে (উঠবেই) এইচ পি টি ডি সি-র বাসে বসে বলতে হবে অটো চড়ে অফিস যাচ্ছি, পিৎজার প্লেট সামনে নিয়ে ত্রিউন্ডচূড়ার দিকে তাকিয়ে বলতে হবে এই তো এক নম্বরে এসেছি ঝালমুড়ি খেতে। সকালবেলা উঠে সোয়েটার চাদর পরে হাঁ করে ধোঁয়া ছেড়ে অভিযোগ জানাতে হবে, দিল্লিতে এখনও তেমন শীত পড়েনি এ বছর। ক্লাইমেট চেঞ্জ ইজ রিয়েল, বুঝলে মা?

মা ম্যানেজ হয়ে গিয়েছিলেন সহজেই। কঠিনতর ব্যাপারটা ঘটেছিল ম্যাকলয়েডগঞ্জেই। বাস ছাড়তে যখন চারঘন্টা বাকি, কিন্তু আমাদের বেড়ানো শেষ, তখন একটা প্রশ্ন, যা আলাদা আলাদাভাবে হয়তো দু’জনের ভেতরেই এসেছিল, বাইরে এল। এতদিন গুজরাতি স্যান্ডউইচের রেসিপি আর সুমন-চন্দ্রবিন্দুর গান চালাচালি করে, বাজে বাংলা সিনেমা দেখে গড়াগড়ি খেয়ে, বেল জার পড়ে চুপ করে থেকে, ক্যালভিন অ্যান্ড হবস পড়ে হেসে উঠে ফুরফুরে দিন কাটছিল। প্রশ্নটা এসে চোখে চোখ রেখে দাঁড়াল আর আবহাওয়াটা সিরিয়াস হয়ে গেল।

মোড়ের মাথায় বেসমেন্টের ওষুধের দোকানটা থেকে  অ্যাভোমিন আর মাটির ওপরের পানের দোকানটা থেকে চিপ্স কিনে বাসে ওঠার মুহূর্তটা মনে আছে। মনে আছে গোটা রাস্তা ভয়ানক রাফ চালিয়েছিলেন ভাইসাব, বাসশুদ্ধু লোক বমিটমি করেছিল। আবার অনেক কিছু গুলিয়েও গেছে। যেমন অর্চিষ্মান দাবি করছে বাসশুদ্ধু বমিবাজদের মধ্যে আমিও ছিলাম। গুলিয়েছে বমির অংশটা নয়, কারণ বমি সত্যিই হয়েছিল। আমি করিনি, করেছিল অর্চিষ্মান।

যাই হোক, অনেকদিনের কথা, অর্চিষ্মানের স্মৃতিকে দোষ দেওয়া যায় না। দুর্বল হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু ম্যাকলয়েডগঞ্জ থেকে ফেরার পথের একটা স্মৃতি আমার মাথার ভেতর জ্বলজ্বলে। বাস ভয়ানক দুলছে, খ্যানখেনে স্পিকারে হিন্দি গান চলছে, আমি জানালার বাইরে আবছা অন্ধকারে চোখ মেলে ভাবছি, বিনসরের টিকিট বুক করে ফেলতে হবে।

Comments

  1. Khub bhalo laglo pore. Abantor blogging er trend thakuk na thakuk amader kaachhe chirokalin pochhonder.
    Apnar berate jaoar blog Archisman hoyoto pore thaken, kintu aamio somoy pelei golper boi porar moto apnar berate jaoa ebong onyanyo post gulo pore thaki. Apnader beranor post theke amader poroborti beranor byapare poramorsho ni. Apnar berate jaoar post gulo pore sudur China te bose aamio bhabtam kobe monsoon e Western Ghat er ekdhare brishtir modhye dhumayito cha aar pakora khabo othoba Himalay er ek nirjon kone bose ruti mixed veg khete khete pahar dekhbo...

    Haan Binsar ghure aasun. Aamrao post er jonyo wait kore thakbo. Khub bhalo kore ghure aasun.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আহা, সুস্মিতা। কেমন সুন্দর ছবিগুলো মনে পড়িয়ে দিলেন। এই রকম মুহূর্তে মেলোড্রামাটিক হতে ইচ্ছে করে। মনে হয় বলি, ঠাকুর, আর কিছু চাইব না কোনওদিন, খালি আরেকবার পাহাড়ি হোটেলের অপ্রতুল উষ্ণতার ডাইনিং রুমে রুটি মিক্সড ভেজের সুখ যদি ফিরিয়ে দাও।

      হ্যাঁ, এবার একটা বেড়াতে না গেলে চলছে না।

      Delete
    2. Ekdam ghure aasun. Aamra post er wait korchhi. Aamra to deshe ese khub gari niye edik odik korchhi. Bochhorer shurute Mumbai theke Kolkata gelam. Qbqr Diwali er somoy 2400 km drive kore ghurlam. Besh laglo.

      Delete
    3. এইটা তো দারুণ অভিজ্ঞতা!

      Delete
  2. অপেক্ষায় রইলাম! ট্রেন এর জার্নি, পৌঁছে চা পকোড়া, তারপর আসে পাশের পাহাড়ে ইতি উতি হালকা ঘোরাঘুরি .... আবার পর্ব তোমার অনবদ্য কলমে !

    ReplyDelete
    Replies
    1. চপকাটলেট ফুচকা আলুকাবলি পড়ুক তোমার মুখে, কাকলি।

      Delete
  3. khub khub beshi bhalo laglo lekhata.. onek moja korun.. onek ghure asun.. aar aamra jayno poRte bhaag pai..

    amrao je kobe beRate jete paarbo? kobe je aabaar highway r dhaare cha khawa hobe? notun bichanay ghum bhangbe aar janalar baire sob notun hobe?

    khub bhalo thakben..

    Indrani

    ReplyDelete
    Replies
    1. ইস কী ভালো বললেন, ইন্দ্রাণী। জানালার বাইরে সব নতুন হবে। হোক হোক। আমারও হোক, আপনারও হোক। সবার হোক।

      Delete
  4. দ্বিতীয় বার ভ্রমণের জন্যে বিনসর আমার‌ও লিস্টে এক নম্বরে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সত্যি? হায়েস্টেস্ট ফাইভ।

      Delete
  5. বৈজয়ন্তীNovember 28, 2021 at 1:16 AM

    ও বাবা, অবান্তর নামেমাত্রই অবান্তর।
    কত অশান্তির সময়, কত একলা দিন কাটিয়েছি অবান্তরের ভরসায়। বেড়াতে গেছি আপনার বেড়ানোর পোস্টকে গাইডবুক করে।

    অনেকদিন কমেন্ট করিনা, কিন্তু আসছি, দেখছি, পড়ছি। মোদ্দা কথা আছি।

    আমার বারবারের লিস্টে মান্দারমনি। আলসেমি, আরাম, লাল কাঁকড়া, আড্ডা, সমুদ্রে হুলুস্থুল চান, সন্ধ্যে বেলায় আড্ডা সহযোগে কাঁকড়া কষা।
    ৭-৮ বার হয়ে গেছে। তাও ওই নস্টালজিয়া, সুখ, আরাম এসব ভাবলে ওটাই আবার মনে পড়ে। একই লিস্টে দার্জিলিংও আছে। ম্যাল, মোমো, কেভেন্টার্স, সরু সরু রঙিন রাস্তায় হাঁটাহাঁটি।

    বেরিয়ে আসুন, আপনারও ভালো লাগুক। আমিও ঘরে বসে কফি আর কেক খেতে খেতে একটু মনের চোখে দেখে নি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আছেন, আছেন! জেনে ভালো লাগে। সত্যি বলছি। এই অথৈ সমুদ্দুরে ভরসা জাগে।

      এই দেখুন একটা অমিল বেরিয়ে পড়ল। আপনি বলেন মান্দারমণি, আমি বলি মন্দারমণি। বাকি সব মিলে গেছে অবশ্য। আলসেমি, আরাম, লাল কাঁকড়া, আড্ডা ইত্যাদি..

      একবারই গেছিলাম। মায়ের সঙ্গে চান করছিলাম সমুদ্রে। সাড়ে তিন ঘণ্টা মতো। আধঘণ্টা পর থেকে মা বলে চলেছিলেন, সোনা এবার উঠবি? আমি বলছিলাম, এই তো উঠছি। এই করে করে নেক্সট তিন ঘণ্টা কেটেছিল। মা একটুও দুঃখিত/কুপিত হয়েছেন বলে মুখ দেখে অন্তত মনে হচ্ছিল না।

      দার্জিলিং বারবার ফেরৎ যাওয়ার ইচ্ছেয় হাই ফাইভ।

      Delete
  6. madhyamik er pore noy, ucchamadhyamik er bochor dui pore, darjeeeling e tiger hill e sunrise dekhe oi rokom e mone hoyechilo, haha.. kachakachi mileche

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাই ফাইভ, ঊর্মি। হবেই মনে। হতেই হবে। ।আগে আর পরে।

      Delete
  7. ভাগ্যিস কমেন্ট করেছিলাম তাই একটা এমন চমৎকার পোস্ট পেলাম (ধরে নিচ্ছি অবান্তরে একজন প্রদীপ্তই আছে)। বিনসর আমাদেরও যাওয়ার খুউউব ইচ্ছে একবার জ্যোৎস্না দেখতে। এইবারে জ্যোৎস্না দেখতে আমরা গোপালপুর আর রম্ভা দেখতে গিয়ে ফেরাটা ভয়ানক অ্যাডভেঞ্চার হয়ে গেছিল,তোমাদের বাসের কথা পড়ে মনে পড়ল।
    বেড়ানোর গল্প শুনবো, ঘুরে এসো।

    ReplyDelete
    Replies
    1. অফ কোর্স, অবান্তরের প্রদীপ্ত এক ও অদ্বিতীয়।বিনসরে জ্যোৎস্না অসামান্য হবে, তোমার কথা শুনে মনে হল। পূর্ণিমা দেখে যাব তাহলে।

      তোমার বেড়ানোর পোস্টটা পড়েছি। মন্তব্য করব করেও করিনি। দাঁড়াও, করে আসি।

      Delete
  8. আমাকেও এরকম পাঁচটা জায়গার নাম করলে হয়তো আগে যাওয়া জায়গাতেই যাবো।এমন কোন জায়গা,যেখানে বহুদিন যাওয়া হয়নি।
    গতবছর এই ভেবেই একবার দার্জিলিং গেছিলাম

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমার তো সারাদিন মন দার্জিলিং দার্জিলিং করছে, ঋতম।

      Delete
  9. ভাগ্যিস প্রদীপ্ত কমেন্ট করেছিল। ওই ছেলের ব্লগটাও জবরদস্ত, কিন্তু বড্ড ফাঁকি দেয়। এই লেখাটা পড়ে আমিও লিস্টি শুরু করলাম। আর হ্যাঁ, বিনসর সত্যিই দারুণ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. বিনসর ইজ একঘর। প্রদীপ্তর ব্লগও। দুটোতেই হাই ফাইভ, সুদীপ্ত।

      Delete

Post a Comment