কফি শপ ১ঃ পান্না কি তমন্না
জি কে টু এম ব্লক মার্কেটে এখন সব মিলিয়ে আঠেরোটা কফি শপ। একজন বললেন গুনে দেখেছেন চোদ্দ। আমি আঠেরোয় স্টিক করছি। আমার প্রতিপাদ্য - যা হচ্ছে জি কে টু-তে কফি শপের বান ডেকেছে - প্রতিষ্ঠা করার জন্য চোদ্দর থেকে আঠেরো বেশি উপযোগী।
আঠেরোর মধ্যে তিনচারটেয় আমি গেছি। তাও অর্চিষ্মান চল চল করেছে বলে। ওর সব রকম নতুনই চেখে দেখতে ইচ্ছে করে। আমার করে না। কারণ প্রায় পঁয়তাল্লিশে পৌঁছে বুঝে গেছি। কফি শপ, চাকরি, রোম্যান্স, সব ক্ষেত্রেই - আমার কাছে, বাকিদের কাছে জানি না - লং টার্ম বোরডম >>> শর্ট টার্ম ফান।
জি কে টু এম ব্লক মার্কেটে কফি শপে আমার লং টার্ম পার্টনার ব্লু টোকাই। রাস্তার এদিকে ওদিকে দুটো আছে। আমি ওদিকেরটায় যাই। গত এক বছর বা ওর কাছাকাছি সময় ধরে যাচ্ছি। সপ্তাহে সাত দিন। কোনও কোনওদিন ভোর সাড়ে ছ’টায় পৌঁছই, কোনও কোনওদিন রাত তিনটে পর্যন্ত থাকি। জি কে টু -র আঠেরোটা কফি শপের আটটা চব্বিশঘণ্টা খোলা থাকে। আমাদের মতো লোকদের জন্য যাদের বাড়িতে থাকার কোনও কারণ নেই। থাকতে কান্না পায়।
আমি কফি অ্যাডিক্ট কি না জানি না, ডেফিনিটলি কফি শপ অ্যাডিক্ট। কফি শপও না। জি কে টু-র রাস্তার ওইদিকের ব্লু টোকাইয়ের টেবিল নম্বর পাঁচ-অ্যাডিক্ট। ওই টেবিলটি আমার আইডেন্টিটির অংশ হয়ে উঠেছে। ওই অবস্থানটির সঙ্গে আমার একটা কানেকশন স্থাপিত হয়েছে। ওই পাঁচ নম্বর টেবিলে, দেওয়ালে পিঠ দিয়ে বসে দৃষ্টিতে ফুটে ওঠা ওয়ার্ল্ডভিউ আমার পছন্দের।
অর্চিষ্মান বলবে, বাপরে বাপরে বাপ, কফি শপ আইডেন্টিটি ওয়ার্ল্ডভিউ নিয়ে এত ফেনাচ্ছ, একবারও দাঁতের ফাঁক দিয়ে বার করছ না তো কফি শপ তোমাকে কে ধরিয়েছে? কিছু অকৃতজ্ঞ।
উপকারের বদলে যারা কৃতজ্ঞতা দাবি করে তাদের প্রতি মনোভাব গোপন করেই স্বীকার করছি, আমাকে কফি শপ ধরিয়েছে অর্চিষ্মান। নিজেও ধরতে পারতাম। আর্বান ভারতবর্ষে কফি শপ কালচারের উন্মেষ আমার চোখের সামনেই ঘটছিল। বারিস্তা আর ক্যাফে কফি ডে আমার নাকের ডগাতেই খুলছিল। কিন্তু ও সব দোকানে ঢোকার কথা মাথাতেও আনিনি কারণ ও সব দোকানে যারা ঢোকে তাদের ছায়ার সঙ্গেও যে আমার ছায়ার মাখামাখি চলতে পারে না, সে নিয়ে নিঃসংশয় ছিলাম।
অর্চিষ্মান হাই ফাইভ দেয়। ও-ও নাকি এ বাবদে নিঃসংশয় ছিল। গোটা এক জেনারেশন পরে হয়েও। বলি, অর্চিষ্মান, পাঁচ বছরে জেনারেশন বদলায় না, অন্ততঃ বারো বছর লাগে। অর্চিষ্মান কাঁধ ঝাঁকায়। পাঁচ বারো বত্রিশ, আমার কিছু যায় আসে না কুন্তলা, কাজেই আমি কিছু বলছি না। ইন্টারনেট বলছে। তুমি জেন এক্স, আমি মিলেনিয়াল। বোকার মতো লড়ে গেলাম। আমিও মিলেনিয়াল। কারণ আমার ধারণা ছিল গুনতি শুরু হয় শূন্য থেকে। কাজেই মিলেনিয়ালের গুনতি নিশ্চয় আশি থেকেই শুরু হবে। তারপর বেরোল গুনতি শুরু হয়েছে একাশি থেকে। আমি ষোলো দিনের জন্য মিলেনিয়ালের গৌরব মিস্ করে গেছি। আমার মুখ দেখে অর্চিষ্মান বিকট শব্দ করে হাসল, পেট চেপে গড়াগড়ি খেল, হাসি থামিয়ে উঠে বসে হাঁসফাঁস করল, তারপর চোখ মুছে বলল, দুঃখ কোরো না কুন্তলা, পরের জন্মে নতুন যৌবনের দূত হয়ে জন্মিয়ো। এ জন্মটা, অন্ততঃ যেটুকু বাকি আছে, তিনকালে গিয়ে এককালে ঠেকেই কাটিয়ে দাও।
সে না হয় দেব। কিন্তু ওর অত হাসির দরকার ছিল না। আমি জেন এক্স হয়ে যা, অর্চিষ্মান মিলেনিয়াল হয়েও একই পদ। আমি বারিস্তা সিসিডি-তে ঢুকতে পারেনি, ও-ও পারেনি। ওর নাকি দৃঢ় ধারণা ছিল ও সব দোকানে ঢুকলেই অপমান করে বার করে দেবে। অপমানে অর্চিষ্মানের মারাত্মক ভয়। গ্রুপ চ্যাটে মুখ খোলার থেকেও বেশি।
সে সব কফি শপ আর সে সব কফি শপে ঢোকার লজ্জা নিয়ে গল্প আছে। অর্চিষ্মানের আর অর্চিষ্মানের সিনিয়রের গল্প। সিনিয়রের নাম অবান্তরে আগেও বলা হয়েছে বলে আর বলছি না। অর্চিষ্মান আর অর্চিষ্মানের সেই এক সিনিয়র একদিন বিকেলে হোস্টেলের বারান্দায় বসে টাইমপাস করছিল, এমন সময় একজন দিল্লির মহিলা সহপাঠী - যাদের অর্চিষ্মান এবং অর্চিষ্মানের সিনিয়র প্রায় ইটি-র মতো ট্রিট করত - ঝলমল করতে করতে হোস্টেলে ঢুকলেন। ঘরের দিকে যেতে যেতে বললেন, হোয়াই ডু ইউ পিপল অলওয়েজ কিপ সিটিং হিয়ার? গো আউটসাইড, হ্যাভ ফান, এনজয় ইয়োর ইউথ, গেট আ লাইফ।
অর্চিষ্মান আর সিনিয়র কাঁচুমাচু হয়ে বলল, কী যে বল, আমাদের আবার লাইফ, আমাদের আবার ইউথ। তারপর ভদ্রতা করে কৌতূহল প্রকাশ করল যে মহিলা ইউথ উদযাপন করতে কোথায় গেছিলেন। মহিলা বললেন, বারিস্তা। অর্চিষ্মান আর সিনিয়র চোখ স্বাভাবিকের থেকে ওপরে তুলে বলল, ওরে বাবা, ওই সব দোকানে তো আমরা যেতেই পারব না ইত্যাদি। মহিলাও উৎসাহসহকারে পিঠ চাপড়ে দিতে বললেন, আরে ডরনে কি কোই বাত নহি হ্যায়, চলে যানা, কোই কুছ নহি বোলেগা, আমি তো রোজ যাই, ইত্যাদি।
সিনিয়র জুনিয়র বলল, তোমরা ভাই হাইফাই, ও সব জায়গায় তোমাদেরই মানায় ভাই, আমাদের ভাই এই হোস্টেলের বারান্দাতেই...
কন্ট্রোলের কাঁটা কখন ঘুরতে শুরু করেছে মহিলা বোঝেননি। আমি হলেও বুঝতাম না। এখনও বুঝি না, আগে প্রাণঘাতী রকম কম বুঝতাম। সরল মহিলা বলে চললেন, আরে না না হাইফাইয়ের কোনও ব্যাপারই না, তোমরাও চেষ্টা করলেই পারবে, ভয় কাটাতে হবে শুধু। আমি তো রোজ যাই, এত যাই যে আমার গোটা মেনু মুখস্থ হয়ে গেছে।
সিনিয়র জুনিয়র বললেন, ভাবা যায়? শুনি শুনি। মহিলা গড়গড় করে বারিস্তার মেনু মুখস্থ বলতে শুরু করলেন।
মহিলার জন্য মায়াই হয়। কখন যে পাশা পালটেছে, কখন যে ব্যাকফুটে থাকারা ফ্রন্টিয়ারে এসে দাঁড়িয়েছে - বোঝেননি। আমিও বুঝতাম না। ওই বয়সে তো না-ই, এখনও প্র্যাকটিক্যালে কতটা বুঝি জানি না। থিওরিতে জানি ব্যাকফুট ফ্রন্টফুট ধ্রুব নয়। বা কোনটা ফ্রন্ট কোনটা ব্যাক ফস করে চিনে ফেলাও সহজ নয়। কে যে খেলে আর কে যে খেলায়, কে যে নাচে কে যে নাচায়, কে যে ছোটে কে যে ছোটায়-এর মতোই।
*
কফি শপের প্রতি মনোভাব কমন পড়লেও (আলাদা জেনারেশন হওয়া সত্ত্বেও, অর্চিষ্মান মেনশন করতে বলছে) কফি শপ কমন পড়তে আমাদের আরও অনেক বছর লেগেছিল। আমাদের প্রথম বা দ্বিতীয় দেখা। অর্চিষ্মানের শহরে গেছিলাম। অর্চিষ্মান আমাকে সে শহরের - যা ওর পক্ষেও তখন নিতান্তই নতুন - যে তিনটে জিনিস দেখাবে বলেছিল তার মধ্যে একটা নদী, একটা কাবাব (তখনও আমার সিলেবাসে ছিল), আর সম্ভবতঃ একটা সিনেমা।
কাবাব খেয়ে নদীর ধারে ঘোরা হল। সিনেমা রাতের শো, কাজেই অনেক সময়। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি।
তখনও এখনকার মতো আমার পাশে অর্চিষ্মানের উপস্থিতি ধড়ের পাশে ডানহাত বাঁহাতের মতো অনৈচ্ছিক হয়নি, কাজেই ওর প্রতিটি মুভমেন্ট অ্যাকিউটলি লক্ষ করছি। অর্চিষ্মান আমার বাঁদিক দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আচমকা, বিনা ইন্ডিকেটরে ডানদিকে এসে রাস্তা পার হতে লাগল। গন্তব্য, রাস্তার ও পারে একটি কফি শপ।
জেনেরিক কর্পোরেট কফি শপ নয়। কেতি শহরের কেতিতম পাড়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে - অর্গ্যানিক ও আর্টিস্যানাল। সবুজ চুল আর সেপ্টাম নথ পরা বিশ্বের বন্ধুত্বপুর্ণতম বারিস্তারা রোজ সে শপ সকালে খোলা ও রাতে বন্ধ করার আগে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে পুঁজিবাদী কফিমাফিয়াদের ধ্বংস করার ওয়ার ক্রাই ছাড়েন। বারিস্তা সিসিডি-তে ঢোকার সাহস ততদিনে জোগাড় করলেও যে শপে আমি ঢোকার কথা কল্পনাও করতে পারি না। সে রকম একটা কফি শপে অর্চিষ্মান গটগটিয়ে - মানে অর্চিষ্মানের পক্ষে যতটা গটগটানো সম্ভব - ঢুকে গেল।
আমি হতভম্ব। সম্পর্ক শুরু করার আগে তো মিলিয়েই নিয়েছিলাম - বাইক চালায় না, গিটার বাজায় না, সিঁথি কেটে চুল আঁচড়ায়। আগেরগুলোও এ রকমই ছিল, তাদেরই সামলাতে পারিনি। এটাও টিঁকবে না। দীর্ঘশ্বাস চেপে বসে আছি, এমন সময় পতিত ওক গাছের গুঁড়ি কেটে বানানো সাসটেনেবল টেবিলের - যার মধ্যিখানে কোটরের গর্ত ড্যাবড্যাব করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে - ওপার থেকে অর্চিষ্মান ঝুঁকে পড়ল।
শোনো, ইয়ে, একটা ব্যাপার।
আমি ততক্ষণে প্রস্তুত। যে রকম ছুপা রুস্তম বেরিয়েছে, হয়তো ওই কোণের টেবিলে গলায় ট্যাটু করা গথের সঙ্গে প্রেম হয়ে কেটে গেছে কাজেই অকওয়ার্ডনেসে থাকা যাবে না, বেরিয়ে অন্য কফি শপে যেতে হবে।
উঠতে যাব, অর্চিষ্মান বলল, ক্লাসের অনেকের মুখে এই দোকানটার নাম শুনেছি। সবাই বলেছে হেবি নাকি ভালো। এখান দিয়ে প্রায়ই যাই আর আসি, আসি আর যাই, কিন্তু ঢোকার চেষ্টা করিনি। কারণ এই রকম দোকানে ঢুকলে আমার প্যালপিটেশন হয়, গলা খটখট করে, বাংলা ছাড়া সব ভাষা ভুলে যাই। একা থাকলে ঢুকতাম না। তুমি আছ বলে ঢুকেছি। কিন্তু ঢুকতেই আমার সব সাহস খরচ হয়ে গেছে, অর্ডারটা তোমাকে করতে হবে। ভেরি সরি।
ওহ্ এই ব্যাপার? বলে মুচকি হেসে চেয়ারে নতুন করে গ্যাঁট হয়ে বসে মাথার ওপর মেনু নাড়িয়ে তুড়ি বাজিয়ে, "ও দিদি, ও দাদা, হ্যাঁ হ্যাঁ এই যে এই দিকে" চেঁচিয়ে, সারা দোকানের মুণ্ডু আমাদের দিকে ঘুরিয়ে লাফিয়েঝাঁপিয়ে অর্ডার দিলাম। যতক্ষণ আমার লাফাঝাঁপি চলল অর্চিষ্মান ফিসফিস করে বলে গেল, ওরে বাবা কুন্তলা থাক থাক, বরং না হয় একটু পরেই অর্ডার করব, নেহাত যদি না করা যায়, চল বেরোই। সবাই দেখছে।
আমি বললাম, দেখতে দাও। দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণের ঘরের বাইরে উপদেশের বোর্ড পড়নি? লজ্জা ঘেন্না ভয় তিন থাকতে নয়?
*
পরশু পার্চে গেছিলাম। খান মার্কেটের পার্চ নয়, প্রতিবেশী পার্চ। জি কে টু-র। আমার খান মার্কেটেরটা ভালো লাগে, বেশ টং থেকে গোটা মার্কেটের ওপর নজর রাখা যায়। অর্চিষ্মানের এই পার্চও ভালো লাগে। এই পার্চের বাইরে অক্টোবরফেস্টের বিজ্ঞাপন দেখেছে নাকি, কাজেই অক্টোবর থাকতে থাকতে যেতে হবে।
গেলাম। অক্টোবরফেস্ট চলছিল। অর্চিষ্মান অর্চিষ্মানের খাদ্যপানীয় পছন্দ করল, আমি আমারটা পছন্দ করলাম। ঠিক আছে তাহলে, সেই কথাই রইল? বলে মেনু বন্ধ করে অর্চিষ্মান ফোন খুলে দাবা খেলতে শুরু করল। আমি হাত তুলে, শরীর একবার এদিকে একবার ওদিকে বেঁকিয়ে, মুখে অকারণ বোকা হাসি ঝুলিয়ে পার্চের ইথারে দৃষ্টিআকর্ষণী তরঙ্গ পাঠাতে লাগলাম। পনেরো মিনিট পর একজন এলেন। ততক্ষণে অর্চিষ্মান দাবায় তিন দান হেরে র্যাংকিং আরও নামিয়ে ফেলেছে। অর্ডার দিলাম। আজকাল পনেরো মিনিটেই স্মৃতি হালকা হয়ে আসে, অর্চিষ্মানকে জিজ্ঞাসা করলাম তুমি এই খাবারটাই বলেছিলে তো? অর্চিষ্মান বলল, এটাই বলেছিলাম বুঝি? তাহলে এটাই বলেছিলাম। বলে সময় নষ্ট না করে হারতে শুরু করল।
ফিল্মস্টার তমন্না ভাটিয়ার একটা রিল ঘুরে ঘুরে আসে আমার ইউটিউব ফিডে। পডকাস্টার বললেন, কিছু রিলেশনশিপ অ্যাডভাইস দিন ম্যাডাম। তমন্না ভাবছেন। তমন্নার ভাবা হয়ে গেছে।
যে কোনও সম্পর্কের প্রথম কয়েক সপ্তাহে যে ইস্যুগুলো বেরোয়, শেষ পর্যন্ত সেগুলোই "উইল পারসিস্ট।"
সম্পর্ক জট পাকালে তমন্না ভাটিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। মহিলা ভালো উপদেশ দেন। রেফারেন্স হিসেবে আমার নাম করলে আমার আপত্তি নেই।
(চলবে)
Daruuun lekha. Amio Coffee shoper bhokto noi. Raka majhe majhe giye kaaj kore puttush ke school e pathiye. Amar dour barir oi instant coffee. Tobe cold coffee r jonyo majhe majhe coffee shop jai bote.
ReplyDeleteকফি শপে আমার ভক্তিটা আমাকেই চমকে দিয়েছে, সায়ন। এখন তো ভক্তি পরিপূর্ণ আসক্তি।
Deleteইন্সট্যান্ট নেসক্যাফে আমার ফেভারিট কফি। কফি শপ ওটা বেচলে আমি প্রত্যেকবার খেতাম। কিন্তু এরা ইনস্ট্যান্টকে নিচু চোখে দেখে বলে কোর্টাডো অর্ডার করতে হয়।
Lekhata chomotkar. Porer porbo kobe aschhe?
Deleteআজ বা কাল, সায়ন।
DeleteBlue Tokai ijjj lubbbb!
ReplyDelete👊🏾
Delete