ব্রেক আপ বিষয়ে যে দু'কথা আমি জানি




ব্রেক আপ বা ছাড়াছাড়ি, যে ভাষাতেই  বলুন না কেন, শব্দটা মিসলিডিং। শুনতে বেশ সাম্যবাদীই লাগে। দড়ির দুদিকে দুজন সমান শক্তিশালী মানুষ। কথা বলে, লাভক্ষতির বিচার করে অবশেষে সিদ্ধান্তে আসছে যে একসঙ্গে থাকার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। হাসিমুখে হ্যান্ডশেক করে দু'দিকে হাঁটা লাগাচ্ছে। 

এ রকম উদ্ভট ব্রেক আপ তাদেরই হয় যারা উদ্ভট প্রেম করে।  স্বর্গীয় প্রেম। তোমার সুখেই আমার সুখ, তোমার দাঁতে ব্যথাই আমার দাঁতে ব্যথা, তোমার মুক্তিই আমার মুক্তি। জন্মের মতো যাচ্ছ জেনেও তোমার কেরিয়ারের মুখ চেয়ে 'জয়যাত্রায় যাও গো' বলে টিকা পরিয়ে অ্যামেরিকার প্লেনে চড়িয়ে দিয়ে আসব। ও আমার থেকে বেশি মাইনে পায়/ বেশি ফর্সা কাজেই ওর সঙ্গেই জুটে যাওয়াটাই তোমার পক্ষে বুদ্ধিমানের হবে, পরামর্শ দেব।

আমার চেনা কাউকে এ রকম প্রেম করতে আমি দেখিনি। নিজেও করিনি। তবে শুনেছি লোকে এ রকম প্রেম করে। তাদের ছাড়াছাড়িও অন্য রকম হয়।  স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির সময় রবিন উইলিয়ামস বলেছিলেন, ওঁরা বিয়ে করেছিলেন 'উইথ লাভ', ডিভোর্সও করছেন 'উইথ লাভ।'

বেশিরভাগেরই এ রকমটা হয় না। স্বর্গীয় প্রেমের বদলে তাদের হয় পার্থিব প্রেম। আর নারকীয় ব্রেক আপ। এই পোস্টেও ওই রকম ব্রেক আপের বিষয়েই চর্চা হবে।

*****

দ্বিতীয় বলার কথাটা হচ্ছে, ব্রেক আপ দু'জনের মধ্যে হয় বটে, কিন্তু ব্রেক আপের কার্যকারণ লাভক্ষতি দু'জনের সমান হয় না। কারণ মাঝখানের প্রেমটাই যা কমন, সে প্রেমের সংজ্ঞা দুজনের কাছে আলাদা, প্রত্যাশা আলাদা, লাভক্ষতির ফরমুলা আলাদা, প্রেম ছেড়ে পালানোর ইচ্ছের/ প্রয়োজন অনুধাবনের টাইমিং আর তীব্রতা আলাদা। সেই উপলব্ধির  তাড়নায় এক জন ব্রেক আপ করে, আরেকজনের ব্রেক আপ ঘটে। 

ব্রেক আপ যার ঘটে আর যিনি ঘটান, দুজনের প্রতিক্রিয়াও আলাদা আলাদা হবে, বলাই বাহুল্য। প্রথম জনের দুঃখ হবে। দ্বিতীয়জনের আনন্দ। আরেকজনের দুঃখের পাশে সে আনন্দকে বেঁকা চোখে দেখা হয় অনেকসময়, কিন্তু দেখা উচিত নয়। সে আনন্দ মুক্তিরও হতে পারে। ছেড়ে দেওয়া মানেই ঘাড়ধাক্কা ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই, প্রাণ নিয়ে পালানোও হতে পারে। সে রকম পরিস্থিতি হলে যত জোরে পারেন দৌড়বেন। মনে রাখবেন প্রাণের থেকে প্রেম বড় নয়। 

কিছু কিছু ক্ষেত্রে যারা ছেড়ে যান তাঁদের এক রকম দুঃখ হয়। বেশ একটা মিঠে মিঠে দুঃখ। যখন বললাম, আমরা আর কমপ্যাটিবল নই, তখন উল্টোদিকের মুখটা কেমন ম্লান হয়ে গেল, নাকের পাটা কাঁপল, ওকে যে দুঃখ পেলে এত কিউট লাগে ভুলেই গেছিলাম। আপনি যদি ঘনঘন এ রকম দুঃখে ভোগেন তাহলে আমার একটাই পরামর্শ, আয়নায় সামনে আরেকটু কম ঘন ঘন দাঁড়ানো অভ্যেস করুন।


***** 

এই ব্রেক আপ পোস্টে ব্রেক আপের সেই সব ভিকটিমদের কথাই হবে যাদের কেউ ছেড়ে গেছে। আমার অভিজ্ঞতায় এঁরা নিম্নলিখিত সাতটি স্তরের মধ্যে দিয়ে যান।  সকলকেই সব স্তরের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে তেমন না, তাছাড়া ভিকটিমভেদে স্তরের তীব্রতা ও ব্যাপ্তিও ভিন্ন হয়। 

১। শকঃ পায়ের তলা থেকে কার্পেট টেনে নেওয়ার অনুভূতি। অনেকে থাকেন এ রকম। ব্রেক আপ হওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত টের পান না যে ব্রেক আপ হতে চলেছে। চার্লস শোভরাজ গোত্রের কনম্যানের সঙ্গে প্রেম করলে এ রকম হতে পারে, কিংবা তাগাতাবিজবাঁধা বিশ্বাসী হলেও, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ও রকম হয় না। এমনিতে মারাত্মক দুনিয়াদার, কাজের লোকের মাইনে বাড়ানোর প্রসঙ্গ উঠলে, 'ওদের বাড়িতে ফ্রিজ আছে, জানেন?' বলে, তারাও ব্রেক আপের পর শকড হয়। নাকি বোঝেইনি এ রকম কিছু একটা ঘটতে চলেছে।

প্রেম করছিল টের পাওনি? হাসি হাসি মুখে এস এম এস পড়ত, ফোন এলে 'এক মিনিট' বলে সরে যেত নিরালায়?  
ভেবেছিলাম কেটে যাবে। ও রকম তো একটু আধটু হয় শুনেছি।

শেষ তিন মাস দেখা হলেই ঝগড়া হত? দাঁতমুখ খিচোনো ঝগড়া? 
ওটা তো বাসন-তত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা করেছিলাম। পাশাপাশি থাকলে ঠোকাঠুকি লাগেই।

ক্যাজুয়াল অপমান? যা বোঝ না তা নিয়ে কথা বোলো না? ছোটবেলায় মোহরদির বদলে দালের মেহেন্দি শুনে বড় হওয়া নিয়ে খোঁটা? 
একসঙ্গে থাকলে ও গুলো ধরলে চলে না।

হিংস্রতাটাই আমাদের অভ্যেস। গলা সপ্তমে তুলে আঙুল নাচিয়ে ধমকানিটাই নর্ম। ওতেই প্রেম বাড়ে। ও সব মাইন্ড করলে আপনি উন্মাদ। 

অফ কোর্স, এ সব উদারতাটুদারতার ছিটেফোঁটা নেই, প্রেমের তো নেই-ই। রয়েছে ভয়। সম্পর্কের বাজারের চাহিদা-জোগান এবং সে বাজারে নিজের অবস্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা। একটা হয়েছিল, আর যদি না হয়? 

২। দুঃখঃ শক কেটে গেলে আসবে দুঃখ। হাত পা নড়বে না। পুরোনো দোকানে কফি খেতে গেলে কান্না আসবে, চেনা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলে হোঁচট। তেমন সংবেদনশীল হলে বিছানা ছেড়ে ওঠার শক্তি পাবেন না। মনে হবে মরে যাচ্ছেন, নিঃশ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে, আপনি ভীষণ একলা, চাঁদটা কী নিষ্ঠুর, বাতাসে কী জ্বলুনি।

প্রেম চলে যাওয়ার দুঃখজনক, চাকরি চলে যাওয়াও। ফারাক হচ্ছে, চাকরি চলে যাওয়া নিয়ে কেউ কোনওদিন কবিতা লেখেনি। না হলে দুটো দুঃখের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই। চাকরি চলে গেলে আপনি কী করতেন কল্পনা করুন। চাঁদের দিকে আধবারও তাকাতেন না, গ্যারান্টি। কবিতাও লিখতে বসতেন না। এখনও বসার দরকার নেই।

(আপনি যদি অলরেডি কবি হয়ে থাকেন, জীবনের অনুভূতি যদি কবিতার মাধ্যমে প্রসেস করার প্র্যাকটিস থাকে, তাহলে লিখবেন। দাগা-দেওয়া প্রেমের ওপর রাগ করে কবিতার খাতা কুচিকুচি  করবেন না। এই সময়টা জীবনে যে কোনও রকম ঝাঁকুনি এড়িয়ে চলুন। কবিতা, সিগারেট, প্রাণায়াম, প্রতিবেশীর সঙ্গে হেসে কথা বলা, কোনওটাই ধরা বা ছাড়া এড়িয়ে চলুন।)

৩। বৃথা আশাঃ চোখের জলের একটা সীমা আছে। সেটা একসময় ফুরোবে। তখন আশার দেবী এসে মন্ত্রণা দেবেন, আরেকবার চেষ্টা করে দেখোই না, কী হয়। আপনি ক্রমাগত ফোন করবেন, এস এম এসে হাতে পায়ে ধরবেন, আমি আর কখনও এ রকম করব না, যা যা ভুল করেছি ক্ষমা করে দাও ইত্যাদি। আত্মসম্মান বলে কোনও শব্দ তখন অভিধানের দশ মাইলের মধ্যে নেই।

আপনার কপাল ভালো হলে এ সবে কাজ দেবে না, তখন আসবে...

৪। অনুতাপঃ মা পই পই করে বারণ করেছিলেন, বাবা মাথা নেড়েছিলেন, বন্ধুরা গুনে দেখিয়েছিল, এই দেখ এতগুলো রেড ফ্ল্যাগ। বাবামা কিছু বোঝেন না তাই তাঁদের কথা উড়িয়েছিলেন, বন্ধুদের 'ল্যাজকাটা শেয়াল' ভেবে মুচকি হেসেছিলেন। কাজেই কাউকে দোষ দিতে পারবেন না, আপনার এই হেনস্থার জন্য দায়ী এক এবং একমাত্র আপনি। 

৫। রাগঃ ভাবতে ভাবতে আপনি রেগে উঠবেন। দুঃখের মুখোশ ছিঁড়ে এই বার আত্মপ্রকাশ করবে আসল ক্ষতটি। যেখানে আপনার আসল লেগেছে। আঁতে। জানে আমি কে? আমার বাবা গোটা মহকুমার কার্তিক পুজো কমিটির প্রেসিডেন্ট? আমি মাধ্যমিকের পরের তিন মাসে কাফকা শেষ করেছি? সাহস কী করে হয় আমাকে ছেড়ে দেওয়ার? 

৬। প্রতিহিংসাঃ আগের স্টেজের অনুভূতি পেরিয়ে এই স্টেজে অ্যাকশন ঢুকবে। লোকে উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত হয়ে অ্যাসিডের বোতল কিনতে যাবে। ফোনে তুলে রাখা গোপন ছবি/ভিডিও আপলোড করবে ইন্টারনেটে। 

ভাগ্যক্রমে সবাই এত সাহসী হয় না। কারও কারও ক্ষেত্রে আলস্যও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তারা খাটে শুয়ে শুয়ে বিড়বিড় করে, দেখিয়ে দেব। নিজে একটা কেউকেটা না হয়ে ছাড়ব না। পাঁচ সাতের আই আই টি গেছে তো কী হয়েছে, এবার ছয় তিনের এম আই টি পাকড়াও করব। 

অ্যাসিড ছোঁড়াটোড়ার থেকে এই স্ট্র্যাটেজি বেটার। তবে কয়েকটা কথা মনে রাখা ভালো। এক, দেখিয়ে কাউকে দেওয়া যায় না। কারণ কেউ দেখতে বসে নেই। তাছাড়া মোস্ট প্রব্যাবলি আপনার জীবনে দেখানোর মতো কিছু হবে না, যাকে দেখাতে চাইছেন তাঁরই হয়তো বেশি হল। আর যদি দেখিয়ে দেওয়ার মতো কিছু করেও ফেলেন, ধরা যাক পিক আপ নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন, টিভিতে আপনার শপথগ্রহণ দেখে যে আপনাকে ছেড়ে দিয়েছিল, ছো ছো, বাড়ির ভেতর পলিটিশিয়ান? বলে হয়তো তার জীবনে কিস্যু অ্যাচিভ না করা সঙ্গীটিকে জাপটে ধরল। ভাগ্যিস ওকে ছেড়ে তোমাকে ধরেছিলাম।

'দেখিয়ে দেব' ভেবে যদি তাৎক্ষনিক সান্ত্বনা আসে, ভাবুন। কিন্তু ওতে বেশি ভরসা রাখবেন না। রিভেঞ্জ ইজ বেস্ট সার্ভড কোল্ড, এ সব বাজে প্রবাদে ভুলবেন না। আপনার সারা জীবনের যত পরিশ্রম, সাধনা, সাফল্য যদি সেই লোকটাকেই উৎসর্গ করতে হয় যে পঁচিশ বছর আগে আপনাকে দাগা দিয়েছিল, সেটা করুণ হবে। দাগা খাওয়ার থেকেও করুণ। 

বরং বৈজ্ঞানিক ভাবে ভাবুন। দরকার পড়লে খাতাপেনসিল নিন। লম্বালম্বি দাগ কেটে একদিকে 'লাভ' অন্যদিকে 'ক্ষতি' লিখুন। এবার পয়েন্ট করে লিখতে শুরু করুন। লাভের খাতায় লিখুন, যে সব স্থানীয় পার্কে এমনিতে যাওয়া হত না সেখানে যাওয়া হয়েছে। কিছু প্রেমহীন মানুষকে ঈর্ষান্বিত করা গেছে।  ক্ষতির দিকে লিখুন, টেলিফোন বিলের মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি, সি জি পি এ-র অভাবনীয় অধঃপতন, আত্মসম্মান ছারখার। লাভের খাতায় যা যা লাভ অলরেডি ঘটেছে সেগুলোই লিখুন। আপনাদের বিয়ে হলে, সন্তানাদি হলে আপনার বুদ্ধি আর অন্য পক্ষের সৌন্দর্য মিলিয়ে কেমন স্বর্গীয় ব্যাপার হত সে সব কল্পনা করে লিখবেন না। বরং মনুষ্যসমাজের একটি নমুনাকে অন্ততঃ হাড়ে হাড়ে চেনার সুযোগ পেয়েছিলেন, সেইটা সবার ওপরে লিখুন। এই সুযোগের জন্য কৃতজ্ঞ হন। তারপর লাভক্ষতি মিলিয়ে দেখুন, হয়তো স্পষ্ট হয়ে যাবে, যা হয়েছে ভালোই হয়ছে।

এই সব শুকনো বিশ্লেষণে মন না ভরলে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। অনেকে বলে উপকার হয়। তাঁরা কী সাজেশন দেন শুনুন। তবে অ্যাসিড ছোঁড়া-জাতীয় বেআইনি সাজেসশন থেকে দূরে থাকবেন। এটাও মনে রাখবেন সব গোলমেলে সাজেসশনই যে বেআইনি হবে বা আইনি হলেই গোলমেলে হবে না তেমন নয়। এই রকম আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ কিন্তু গোলমেলে সাজেসশনের মধ্যে পড়বে 'ফ্রেন্ডস্‌' থাকার সাজেসশন। বিটারনেস না রাখার সাজেশন। এই সময় এ রকম উদাহরণ প্রচুর দেখবেন, ব্রেক আপ হওয়ার পরেও একসঙ্গে ফেসবুকে ছবি দিচ্ছে, কফি খাচ্ছে। তাদের পরিণতমনস্কতা নিয়ে ধন্য ধন্য পড়ে গেছে বাজারে। 

আপনাকে সে রকম হতে হবে এমন মাথার দিব্যি দেয়নি কেউ। যারা এ সব পারেন তাদের স্যালুট করে সরে আসুন। অলরেডি যথেষ্ট কষ্টে আছেন, এর ওপর ম্যাচিওরড কেন হতে পারলাম না ভেবে যন্ত্রণা বাড়াবেন না। কাঁদতে ইচ্ছে হলে কাঁদুন, অভিশাপ দিতে ইচ্ছে হলে দিন। মনে মনে দিন। না হলে লোকে পাগল বলবে।

আর বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে এড়িয়ে চলবেন ঘটক বন্ধুদের। যারা পালে পালে প্রেমের খবর আনবে। আনবেই। আগেরটা তো ভুল হওয়ারই ছিল, এবারেরটা একেবারে পারফেক্ট ম্যাচ, কাঁটায় কাঁটায় কমপ্যাটিবল। এরও তিনদিন আগে শকিং ব্রেক আপ হয়েছে।  কবিতা, সিগারেট ছাড়া-ধরার ব্যাপারে সতর্ক করেছিলাম শুরুতে, সেসবের ঝাঁকুনি যদি রিখটারস্কেলে টু পয়েন্ট থ্রি হয় তাহলে প্রেম হচ্ছে সুনামি। হরমোনেরা এখন ভয়ানক উচাটন, তাদের এই স্ট্রেসের মধ্যে  ফেলবেন না। ছ'মাস, খুব ভালো হয় এক বছর অপেক্ষা করতে পারলে। আগেরটার বাৎসরিকী সেরে আবার হৃদয়ের দরজা খুলুন।

৭। নির্মোহঃ আর অপেক্ষা করুন সেই দিনটার যখন সব ঝড় শান্ত হয়ে যাবে। আরও কত লোকে দাগা দেবে, কত লোকে মাথায় তুলবে। তারপর দেখবেন আপনাকে আলাদা করে চেষ্টা করতে হয়নি, ব্রেক আপটা লাভক্ষতি, ন্যায়অন্যায়, মানঅপমানের আঁশ ছাড়িয়ে, আপনার জীবনের আরও অসংখ্য ঘটনার ভিড়ে জাস্ট একটা ঘটনা হয়ে গেছে।  

আজ আপনি সেই দিনটাকে কল্পনা করতে পারছেন না কারণ আজ সেই দিনটা নয়। কাল কিংবা পরশু কিংবা তরশুও নয়। কিন্তু সে দিন খুব দূরেও নেই। বাঁকের ওপারেই দাঁড়িয়ে আছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে আপনি কী করেন। আপনি তার দিকে হাঁটতে শুরু করুন, সেও আপনার দিকে হাঁটতে শুরু করবে। করবেই।



Comments

  1. বেশ বেশ। ব্রেকাপের পরের অধ্যায় পরবর্তী কালে খুবই ক্লেশের তো বটেই,আরো ক্লেশের নেক্সট প্রেমিকা বা প্রেমিককে বাড়িতে আলাপ করানোর মুহূ, অবধারিত অনুচ্চারিত শব্দ, "আবার"?

    ReplyDelete
    Replies
    1. আর একটা কথা, ইয়ে এটা কি তোমার পুরোনো পোষ্ট? মানে বলার ধরনটা ঠিক লাস্ট চার বছর মাফিক না মনে হচ্ছে।

      Delete
    2. না নতুন পোস্টই, প্রদীপ্ত। এক কথা এতবার বলেছি যে দেজা ভু ফিলিং দিচ্ছে।

      Delete
    3. আহা তা না এক কথা মোটেও না।

      Delete
  2. অনেক ধন্যবাদ এটার জন্য!

    ReplyDelete
  3. এই রকম আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ কিন্তু গোলমেলে সাজেসশনের মধ্যে পড়বে 'ফ্রেন্ডস্‌' থাকার সাজেসশন। বিটারনেস না রাখার সাজেশন। এই সময় এ রকম উদাহরণ প্রচুর দেখবেন, ব্রেক আপ হওয়ার পরেও একসঙ্গে ফেসবুকে ছবি দিচ্ছে, কফি খাচ্ছে। তাদের পরিণতমনস্কতা নিয়ে ধন্য ধন্য পড়ে গেছে বাজারে। nekami gulo dekhe sotyi khub matha grom hoy

    besh laglo lekhata

    prosenjit

    ReplyDelete
  4. Khub khub bhalo laglo ... onekdin pore tumi tomar moton kore abaar likhle. :-)

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, থ্যাংক ইউ, শর্মিলা।

      Delete
  5. দেখিয়ে দেব' ভেবে যদি তাৎক্ষনিক সান্ত্বনা আসে, ভাবুন। কিন্তু ওতে বেশি ভরসা রাখবেন না। রিভেঞ্জ ইজ বেস্ট সার্ভড কোল্ড, এ সব বাজে প্রবাদে ভুলবেন না। আপনার সারা জীবনের যত পরিশ্রম, সাধনা, সাফল্য যদি সেই লোকটাকেই উৎসর্গ করতে হয় যে পঁচিশ বছর আগে আপনাকে দাগা দিয়েছিল, সেটা করুণ হবে। দাগা খাওয়ার থেকেও করুণ।
    .....Ei upolobdhi ta boro satto. Shudhu ei khetre noi jiboner kono kheterei kauke dekhiye deoa ki jai?? Pratyeker perspective somoyer sathe sathe ba pariparshik er sathe bodle jai.

    Aar satti bolte ki udjapon kore ba ajibon friends theke samporke iti tana....aami oto udaarmona noi. AAmi boroi sadharon manush.

    Bhalo laaglo pore. Besh manograhi lekha.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমিও তাই, সুস্মিতা। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  6. 6 point ta to darun likhecho.. ami koyekjon k jani jara 5-6 yrs ba tar besidiner somporko break up er pore mane koyek mas porei ekjon ar ekjoner biyete giye kheye eseche.. photo tuleche.. era prem ba bondhutto konotai thikthak koreche kina k jane.. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্রেমের ঠিকভুল অবশ্য বলা মুশকিল, ঊর্মি। আমি শিওর আমার প্রেমগুলোও কারও না কারও সংজ্ঞায় ভুল হয়েছিল। সেই জন্যই বলছি প্রেমপরবর্তী কোনও আচরণকে ঠিক বলে মেনে নিজের আচরণ নিয়ে সংকোচে না থাকতে। এ সব জিনিস যে যার মতো করে করাই ভালো।

      Delete
  7. Ei lekhatar jonno highest of fives! :D

    ReplyDelete
    Replies
    1. হায়েস্ট ফাইভ তোমাকেও, কুহেলি।

      Delete
  8. দুরন্ত| তবে "ছো ছো, বাড়ির ভেতর পলিটিশিয়ান? বলে হয়তো তার জীবনে কিস্যু অ্যাচিভ না করা সঙ্গীটিকে জাপটে ধরল। " - এটা সঙ্গিনীই হবে তো?

    ReplyDelete
    Replies
    1. সে রকম বাধ্যবাধকতা নেই, অন্বেষা। আমার পিসির সম্বন্ধ দেখার সময় 'পার্টি করা ছেলে' (লালসবুজ নির্বিশেষে, তখন আর কোনও রং ছিল না) নাকচ করা হত। আমার বাড়ির লোক বিশ্বাস করতেন পার্টির নেশা মদের নেশার থেকেও মারাত্মক।

      Delete
    2. সব্বোনাশ| শেষমেষ রংবিহীন ছেলে পাওয়া গেছিল তো ?

      Delete
    3. উঁহু। এই অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে পিসিই পালালো, দু'বছর কিডনির রোগে ভুগে।

      Delete

Post a Comment