কসৌলি/ পর্ব ২




রেজিস্টারে সই করিয়ে ভদ্রলোক বাতাসে মুখ ভাসিয়ে ডাকলেন, ‘ভূতরাম, এ-এ-এ ভূতরাম।’

আমাদের আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হল। হলই বা খটখটে দুপুর, অফ সিজনের বাজারে চারদিক খাঁখাঁ করছে। সেই যে কালকে গেটের ছবি দেখিয়েছিলাম---সেই গেট থেকে বেশ কিছুটা হেঁটে, আস্ত একটা বাগান পেরিয়ে রিসেপশনে এসে পৌঁছেছি, মাঝপথে দেখা হয়েছে স্রেফ দুটো ফাঁকা দোলনা আর চাতালে গুটিসুটি মেরে রোদ পোয়ানো একটা স্বাস্থ্যবান কুকুরের সঙ্গে। ব্যস্‌। মনে হচ্ছে এ উইকএন্ডে হোটেলে আমরাই প্রথম অতিথি। এই পরিস্থিতিতে আবার তাঁদের ডাকাডাকি করা কেন।

আমরা যে খুব প্ল্যানট্‌ল্যান করে অফ সিজন দেখেশুনে বেড়াতে গেছি তেমন নয় কিন্তু। বেড়ানোবিহনে প্রাণ বেরোনোর জোগাড় হয়েছিল বলেই যেদিকে দুচোখ যায় ভাব করে বেরিয়ে পড়েছি। তাতে কয়েকটা সুবিধে হয়েছে। ভাড়া এবং ভিড়, দুটোতেই বিস্তর ডিসকাউন্ট পেয়েছি। নিজেরা আপাদমস্তক টুরিস্ট হলে কী হবে, অন্য টুরিস্টদের প্রতি আমাদের বিতৃষ্ণা দেখার মতো। অন্যদেরও যে বেড়াতে আসার সাধ হয়, অন্যদেরও যে আমাদেরই মতো শহর ছেড়ে দু’দিনের জন্য নিরিবিলির সন্ধানে বেরোতে ইচ্ছে হতে পারে, সবথেকে বড় কথা অন্যদের মনে যে আমাদের দেখেও ‘উফ্‌, যেখানেই যাও বোকা টুরিস্টের হাত থেকে নিস্তার নেই’ ভাব জাগতে পারে, এটা আমরা ভাবতেই পারি না।

যাই হোক, ভূতরামজীর আবির্ভাব ঠেকাতে আমরা তড়িঘড়ি বললাম, ‘আরে না না, আমাদের মালপত্র বেশি কিছু নেই, আমরা নিজেরাই ঘর পর্যন্ত বয়ে নিয়ে যেতে পারব।’ বলেই আর একমুহূর্ত দেরি না করে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ছুট ছুট ছুট।

ছুটে অবশ্য ভূতরামজীর দর্শন থেকে আমাদের নিষ্কৃতি মেলেনি। (পাওয়া কি সম্ভব? কেউ কি পৃথিবীতে পেয়েছে কখনও?) নিষ্কৃতি কথাটা অবশ্য ঠিক হল না, কারণ ওঁর সঙ্গে দেখা না হলে আমাদের একটা দেখার মতো জিনিস না-দেখা রয়ে যেত। ভূতরামজী প্রায় ভূতের মতোই দ্রষ্টব্য জিনিস।

এইবারে আপনারা আমাকে চেপে ধরতে পারেন, যে আমি কি ভূত দেখেছি যে জানব সেটা দ্রষ্টব্য না অদ্রষ্টব্য? অতশত চুলচেরা যুক্তি জানি না, আমি শুধু জানি আমি ভূতরামজীকে দেখেছি, আপনারা দেখেননি। কাজেই এই খেলাটাতে আপাতত আমিই জিতছি।

দেখার চোখ যদি থাকে, তাহলে ভূতরামজীকে দেখলে প্রথমেই আপনার চোখে পড়বে ভদ্রলোকের হাঁটা। বা না-হাঁটা। ভূতরামজী হাঁটেন না, ভীষণ আস্তে করে জমির ওপর দিয়ে ভেসে ভেসে চলে যান। দো কাপ চায়ের অর্ডার দিয়ে আমরা বাগানের রৌদ্রছায়ায় ঘুরে ঘুরে পাহাড় দেখছিলাম, জ্বলন্ত তারাবাজির মতো পাইনের পাতা দেখছিলাম, পাতার আড়ালে আঙুলের মতো জেগে থাকা কচি ফল দেখছিলাম। ফল না ফুল, কে জানে বাবা। যত পাকে তত আঙুলের গা ঢেকে উঁচু উঁচু শক্ত শক্ত খোঁচা খোঁচা জিনিস বেরোয়, বুড়ো হলে সেগুলো টুপটাপ ঝরে ঝরে মাটিতে পড়ে, আর আপনি সেগুলো কুড়িয়ে বাড়ি নিয়ে এসে, তার গায়ে রং করে বা না করে শো-কেসের ওপর তাকে সাজিয়ে রাখেন। মাসতিনেক পর ডেকোরেশন দৃশ্যদূষণে পরিণত হয়, তখন সেটাকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করেন।

যাই হোক, সে আপনার পাইনকোন আপনি রাখবেন না ফেলবেন আপনার খুশি, আমরা ভূতের . . . আই মিন, ভূতরামজীর কথায় ফেরত আসি। আমরা ছবির মতো দৃশ্যাবলী দেখছিলাম, মাঝেসাঝে নিজেদেরও ছবিটবি তুলছিলাম, এমন সময় দেখি দূর থেকে কেউ একজন আমাদের দিকেই আসছে। পরনে কোটপ্যান্ট, হাতে চায়ের ট্রে। আসছে, কিন্তু আবার আসছেও না। বেসিক্যালি ভাসছে। দেখে কী রকম বুক ধড়াস করে উঠেছিল আন্দাজ করতে পারছেন নিশ্চয়। লাফ দিয়ে দুজনে দুজনের হাত চেপে ধরেছি, এমন সময় চোখের নজর মাটিতে পৌঁছতে দেখি, উঁহু, পা তো মাটিতে রীতিমত গাঁথাই আছে। (আমি টুক করে ভদ্রলোকের পেছনে লম্বা হয়ে পড়া ছায়াটাও দেখে নিয়েছিলাম।) আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে, ভদ্রলোক হাঁটার পেছনে অসম্ভব কম, যতখানি না হলে নয়---ঠিক ততখানিই এনার্জি খরচ করেন। মাথার চকচকে টাক থেকে শুরু করে কোমর পর্যন্ত ঝাঁকুনি প্রায় পড়েই না। কোমরের নিচের অংশেও আন্দোলন প্রায় অদৃশ্য, খালি পায়ের পাতাটা মিলিমিটারখানেক এগোয়। এই স্পিডে ভদ্রলোক সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সব কাজ করেন। ঘরে ঘরে চা পৌঁছোন, ঘর ঘর থেকে চায়ের খালি কাপ ফেরত আনেন। লাঞ্চ ডিনারও রুম ডেলিভারি হয় ভূতরামজীর হাতে। আমরা দুজনেই ভীষণ পরিশ্রমী কি না, তাই আমরা সব খাওয়াদাওয়া ঘরেই অর্ডার করছিলাম, আর ভূতরামজীর সঙ্গে আমাদের প্রায়ই দেখা হচ্ছিল। ওঁর কথা ভেবেই আমরা চিকেন হট অ্যান্ড সাওয়ার সুপ অর্ডার করতে গিয়েও করলাম না, কারণ আমাদের ঘরটা আবার হোটেলের পেছন দিকে, রান্নাঘর থেকে খানিকটা দূর। ভূতরামজী বাহিত হয়ে সে সুপ আমাদের ঘর পর্যন্ত পৌঁছতে পৌঁছতে তার হট-নেসের যে আর কিছুই বাকি থাকবে না, সে নিয়ে সন্দেহ নেই।

শুনে নিন্দে মনে হলেও ভূতরামজী, ভূতরামজীর সহকর্মী এবং দ্য রস কমন সম্পর্কে আমাদের প্রশংসা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। পরিষ্কার ঘরদোর, ভদ্র বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার, সর্বোপরি দুর্দান্ত রান্নাবান্না দিয়ে ওঁরা আমাদের মন জয় করেছেন। পেছনদিকের ঘরগুলো থেকে ভিউও অতীব মনোগ্রাহী।


ভিউ তো ভালো লেগেছেই, প্রায় ভিউর মতোই ভালো লেগেছে আমার এই দোলনাখানি। আমাদের ঘরের এক্কেবারে নাকের ডগায়। সকালবিকেল, যখনতখন দোল খেয়েছি।

শুক্রবার বিকেলটা আমরা বিশেষ কিছু করিনি, আশপাশটা একটু ঘুরেঘারে দেখছিলাম। কয়েকটা ছবি আপনাদের দেখাই চলুন।


বাসস্ট্যান্ড। বেসিক্যালি এই হচ্ছে কসৌলির এসপ্ল্যানেড।


এই হচ্ছে কসৌলির চার্চ। আঠেরোশো তিপ্পান্ন সাল নাগাদ তৈরি। শোনা যায়, যে পরিবারের লোকজন কসৌলির আদি বাসিন্দা ছিলেন, এ চার্চ তাঁদেরই প্রতিষ্ঠা করা।

হেরিটেজ বাজার। এই বাজারেরই নরিন্দর টি স্টল জগদ্বিখ্যাত তার বান-সামোসার জন্য। আমরা লোভীর ডিম, বেলা একটা নাগাদ ভরপেট লাঞ্চ করার পরও সাড়ে তিনটের সময় বান-সামোসা সাঁটিয়েছিলাম। অথেনটিক কুইজিন বলে কথা। তাছাড়া সত্যি বলতে কি পাহাড়ি পথে হাঁটাচলা করলে ক্ষিদে পেয়েও যায় বড় তাড়াতাড়ি।


আমরা ঠিক করেছিলাম কসৌলির যতখানি পারা যায় হেঁটে দেখব। বা যতটা হেঁটে দেখা যায়, ততটুকুই দেখব, তার বেশি একচুলও দেখব না। গাড়ি চেপে সেভেন পয়েন্টস, নাইন পয়েন্টস চেখে বেড়াব না। এই পয়েন্টস নিয়ে অনেক মজার গল্প আছে, তার মধ্যে সবথেকে বস্তাপচাটা আপনাদের বলছি। এক ভদ্রলোক কোনও এক জায়গায় বেড়াতে গিয়ে গাড়ি চেপে পয়েন্টস দেখতে বেড়িয়েছেন। গাড়িওলা ইলেভেন পয়েন্টস দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছে, এদিকে ঘোরা শেষ করে ভদ্রলোক দেখছেন গুনতিতে হয়েছে মোটে সাতটা কি আটটা। ভদ্রলোক আবার বিষম দুনিয়াদার টাইপ, কেউ তাঁকে টুপি পরিয়ে দু’পয়সা কামাক, প্রাণ থাকতে তিনি তা অ্যালাউ করতে পারেন না। তিনি ড্রাইভারের কলার চেপে ধরে বললেন, ‘আবে, বাকি চার পয়েন্টস কাঁহা গয়া? হোয়াট অ্যাবাউট দ্য সানসেট পয়েন্ট?’

ড্রাইভার আকাশ থেকে পড়ে বলল, ‘সে কী স্যার, সানরাইজ পয়েন্ট দেখলেন যে? সূর্য ডোবার সময় ওটাই সানসেট পয়েন্ট হয়ে যাবে তো।’

ভদ্রলোক দমলেন না। বললেন, ‘আর ডিয়ার পয়েন্ট?’

ড্রাইভার ঝাঁকুনি মেরে কলার ছাড়িয়ে ঘাড়ে হাত বুলোতে বুলোতে বলল, ‘ডিয়ার কি আপনার ডার্লিং নাকি মশাই, যে পয়েন্টে এসে পোজ মেরে দাঁড়িয়ে থাকবে? ওই যে মোড়ের মাথায় চারটে ছাগল দাঁড়িয়ে পাইনপাতা চিবুচ্ছিল ওটাই ডিয়ার পয়েন্ট।’

ভদ্রলোক নিবু নিবু গলায় বললেন, ‘আর জলপ্রপাত পয়েন্ট?’

ড্রাইভার এবার ভদ্রলোকের কলার চেপে ধরে বলল, ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এ সব ওয়াটার বডি শুকিয়ে গেছে জানেন না? এটা কোথাকার উজবুক র‍্যা?’

ড্রাইভারের ধমক খাব না বলে আমরা নিজেরাই যা পারি দেখব বলে স্থির করলাম। কী দেখব সে নিয়ে বেশি রিসার্চও করার দরকার নেই, হোটেলের গেটের উলটোদিকেই তীরচিহ্ন দিয়ে গোটা গোটা অক্ষরে লেখা আছে MANKI POINT THIS WAY.

গল্প এগোনোর আগে এইবেলা একটা প্রশ্নের অবতারণা করা যাক। ওপরে তীরচিহ্ন দিয়ে দেখানো যে পয়েন্টটার কথা বললাম, লোকে যখন সেটা মুখে বলে তখন শুনতে ‘মাংকি’ পয়েন্ট লাগে। পয়েন্টের নাম ‘মাংকি’ হওয়াটা একেবারেই অযৌক্তিক নয়, কারণ ওখানে বদমাশ মাংকির অভাব নেই। পয়েন্টের চূড়ার মন্দিরে সসম্মানে বিরাজ করছেন, পৃথিবীর তাবৎ মাংকির মহারাজ, শ্রী হনুমানজী। তাঁর লাই পেয়েই মাংকি পয়েন্টের মাংকিদের বেয়াড়াপনার কোনও সীমাপরিসীমা নেই। গাছের ডালেডালে তারা তাণ্ডব করে বেড়াচ্ছে, ভ্রমণার্থীদের হাতে প্লাস্টিকগোছের কিছু দেখলে সেটা কেড়ে নিয়ে ল্যাজ পতাকার মতো আকাশে তুলে দৌড় লাগাচ্ছে, কেউ কিছু বলতে গেলে জন্মে না মাজা হলুদ হলুদ দাঁত বার করে ভেংচাচ্ছে---বাঁদরামির আর অন্ত নেই। সরকারি খাতায় যাই লেখা থাকুক না কেন, জায়গাটার আসল মালিক যে ওরাই, সে নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। কাজেই পয়েন্টের নাম ওদের নামে রাখাটাই যুক্তিযুক্ত।

আবার অন্য দিকে---আসতে যেতে, পথের ধারে, চায়ের দোকানে, ব্যানারে, ট্রিপঅ্যাডভাইসরে---সর্বত্র পয়েন্টের নামের বানান লেখা আছে MANKI. লিখিয়েরা কেউই মাংকি শব্দের ঠিক বানান জানেন না, এটা কি হতে পারে? আমার বিশ্বাস হয় না। অগত্যা স্থিতাবস্থা। পয়েন্টটা ‘মাংকি’ পয়েন্ট, না ‘মন-কি’ পয়েন্ট? অর্থাৎ যে পয়েন্টে গেলে মনের উন্নতি/মুক্তি ঘটে?

যাই হোক, নাম মাংকি/মন-কি যাই হোক, পয়েন্টের কথায় আসি। এই পয়েন্ট হচ্ছে কসৌলির উচ্চতম বিন্দু। সেই গল্পটা নিশ্চয় আপনাদের সবারই মনে আছে? বীর মেঘনাদের গুঁতো খেয়ে লছমনজী কেতরে পড়লেন, আর হনুমানজীকে পাঠানো হল বিশল্যকরণী আনতে। তিনি পাহাড় হাঁটকে বিশল্যকরণীর গাছ খুঁজে না পেয়ে, বুদ্ধি খাটিয়ে গোটা গন্ধমাদনটাই ঘাড়ে তুলে নিয়ে মারলেন এক লাফ। লাফের মাঝপথে হনুমানজীর স্পিড কমে যাচ্ছিল বোধহয়, তাই তিনি বাঁ ঠ্যাংটা একটা র‍্যান্ডম পাহাড়ের চূড়ায় একবার ঠেকিয়ে গতি বাড়িয়ে নিলেন। সেই দ্বাপর ত্রেতাযুগে শ্রীহনুমানজীর শ্রীঠ্যাঙের স্পর্শপ্রাপ্ত সেই পূত পর্বতপিকই হল আজকের মাংকি পয়েন্ট বা মাংকি টপ।

মাংকি (বা মন-কি) টপে চড়ার রাস্তাটি বেশ। মিলিটারি দখলদারি কিনা, তাই দিব্যি পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন, সবাই সব নিয়মকানুন মানছে। ঢোকার আগেই আমাদের ফোন, ক্যামেরা সব কেড়ে নিয়েছিল, কাজেই প্রমাণ আনতে পারিনি। তাতে সুবিধেটা হয়েছে যে খালি চোখে অনেক বেশি দেখতে পেয়েছি।

মাংকি টপে ওঠানামা মাংকিদের পক্ষে সোজা হতে পারে, তাদের বংশধরদের পক্ষে রীতিমত শক্ত। খাড়া পাহাড়ের গা বেয়ে উঠে যাওয়া সিঁড়ি বাইতে হারকিউলিসের হাঁটু দরকার। কর্তৃপক্ষ অবশ্য সাহায্যের হাত বাড়াতে কসুর করেননি। পথিমধ্যে প্রতি একশো মিটার অন্তরঅন্তর খাম্বার টঙে লাউডস্পিকার টাঙানো আছে, তার ভেতরে বসে অনুরাধা পড়োয়াল ভারি দরদ দিয়ে হনুমান চালিসা গাইছেন। কখনও রামজী কি ভজন। ভক্তিগীতি হলে কী হবে, তাললয় আছে, মনে চনমনে ভাব জাগানোর জন্য কার্যকরী। আমার অবশ্য গানের থেকে মন টেনেছে কোটেশন। সিঁড়ির পাশের পাথরে লেখা নানাবিধ, ভালো ভালো উপদেশমূলক কোটেশন। কয়েকটা তো রীতিমত সংগ্রহ করার মতো। নোটবই সঙ্গে থাকলে আমি টুকে আনতামই আনতাম। গোটা তিনেক স্মৃতিতে পুরে এনেছি, দাঁড়ান আপনাদের শোনাই।

১. কম বোলো, ধীরে বোলো, মিঠা বোলো। (আমার ফেভারিট)

২. নিয়ম মে বড়ি শক্তি হোতা হ্যায়; ইনসান কো বদলনে কি শক্তি।

৩. বর্তমান কি ললাট মে পসিনো কি বুঁদে, ভবিষ্যৎ কি মোতি হ্যায়।

মাংকি পয়েন্টের ওপরটা বিশেষ ঘটনাবহুল নয়। একটি মন্দির, মন্দিরের চাতালে একটি সাদা রং করা হেলিকপ্টার নামার জায়গা, ঘুমন্ত দুটি কুকুর, অগুন্তি বাঁদর আর একজন দুঃখী দেখতে স্থানীয় মহিলা লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর কাজ সারাদিন লাঠি উঁচিয়ে বাঁদরদের মন্দিরে ঢুকে পড়া থেকে প্রতিহত করা।

আমরা হাঁটু ধরে দাঁড়িয়ে চারপাশ অবলোকন করতে লাগলাম। যতদূর চোখ যায় পাহাড় আর খাদ, খাদের ওপারে আবার পাহাড়। কাছের পাহাড়গুলোয় সভ্যতার হাত পড়েছে। পাইনের বন খাপচাখাপচা করে কেটে বসেছে টাওয়ার, ডিশ অ্যান্টেনা, সাদাসবুজ রং করা কোয়ার্টারস। এই খাদটা মেঘলা তো ওই পাহাড়ের কোল রৌদ্রঝলমল। সে রোদ্দুরের গা বেয়ে চোখ নামাতে নামাতে দেখি অনেক নিচে দেখি একটা একলা ঘর। কে থাকে ওখানে? কাকে এই খাড়া পাহাড় বেয়ে ওঠানামা করতে হয়? রোজ রোজ, সকালবিকেল?

ভাবতেই আমার হাঁটু টনটন করে উঠল। বললাম, ‘চল চল, আবার কতখানি ফিরতে হবে।’ নামার সময় হাতের নাগালে নেমে আসা একটা চকচকে ঘণ্টা জোরসে বাজিয়ে দিলাম। টং শব্দটা অনেকক্ষণ আকাশবাতাস ছেয়ে রইল।


টপ থেকে নেমে এসে বাজারে দু’বার এদিকওদিক হেঁটে হোটেলে ফিরলাম। ফিরে ভূতরামজীর হাতের ভেজ পকোড়া আর চা সহযোগে টিভি খুলে বসা হল। জি সিনেমায় শাহেনশাহ-র ক্লাইম্যাকস চলছিল, রুদ্ধশ্বাসে সেটাই দেখলাম। কোর্টের কড়িকাঠ থেকে ঝুলে ফাঁসি গেলেন অমরীশ পুরী। কোর্টভর্তি লোক, পুলিশ, জাজ---সবাই ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখল।

আপনার যদি মনে হয়, এ আবার কেমন বেড়াতে যাওয়া? চা খেতে খেতে জি সিনেমাই যদি দেখতে হয় তবে সি আর পার্কে থাকলেই হয়, অত হাঙ্গামা করে পাহাড় ঠ্যাঙাতে যাওয়ার দরকার কী? তাহলে আপনার সঙ্গে আমাদের ঘোরতর মতের অমিল হবে। জি সিনেমাটাই কি সব? কোথায় বসে সেটা দেখছি সেটা কথা নয়? ঘরের বাইরে মাছের বাজারের বদলে বরফঢাকা পাহাড় আর মাথার ভেতর কাল অফিস যাওয়ার টেনশনের বদলে একরাশ শান্তি---জি সিনেমার চেহারাটাকে আমূল বদলে দেয়। কসৌলির জি সিনেমার ননসেন্সের সঙ্গে সি আর পার্কের জি সিনেমার ননসেন্সের তিলমাত্র মিল নেই, আমার কথা কোনওদিন পারলে মিলিয়ে নেবেন।

টিভি দেখতে দেখতে কখন আধশোয়া হয়েছি, কখন শবাসন হয়েছি, কখন নাক ডাকতে শুরু করেছে, কিচ্ছু টের পাইনি। ঘুম হঠাৎ চটকা দিয়ে ভাঙল আমাদের যুগ্ম নাসাগর্জনের থেকেও জোরে একটা শব্দে। কিন্তু একী, কিছু দেখা যাচ্ছে না কেন? কী গো? ওঠ ওঠ, লোডশেডিং হয়ে গেছে। বাইরে ভীষণ ঝড় উঠেছে।

বাইরে শোঁশোঁ করছে হাওয়া। পাইনগাছের জ্বলন্ত তারাবাজির মত পাতাগুলোর ফাঁক দিয়ে পাগলের মত হাওয়া দৌড়চ্ছে, দাপাচ্ছে, শাসাচ্ছে। আমার হঠাৎ পুরীর কথা মনে পড়ে গেল। পুরী হোটেলের সমুদ্রের দিকের ঘরগুলো থেকে মাঝরাতে সমুদ্রের গর্জন শোনা যায়, অনেকটা সেই রকম আওয়াজ।

হ্যাঁ গো, দরজামরজা ভেঙে যাবে নাকি?

ভ্যাট্‌, অত সোজা নাকি। ঘরে মোমবাতি দেওয়া ছিল কি না খেয়াল করেছিলে?

আমি মাথার ভেতরে হাতড়াতে শুরু করলাম। ঘরে ঢুকে দুটো মোমবাতি দেখেছিলাম মনে পড়ছে যেন, টিভি ক্যাবিনেটের তলায়? নাকি বাথরু...

দরজার ওপরের কাঁচের ফালি দিয়ে একটা আলোর ঝলসানি ঢুকে মুহূর্তের জন্য সারা ঘরটা ধপধপে সাদা আলোয় ধাঁধিয়ে দিয়ে মিলিয়ে গেল। আলোটা চলে যেতে ঘরটা এখন আরও অন্ধকার। আগে খাটের ওপাশে অর্চিষ্মানের ছায়াটা দেখতে পাচ্ছিলাম, এখন শুধু নিকষ কালো।

আলো যখন জ্বলেছে তখন গর্জনও থাকবে তার পিছু পিছু। সেকেন্ডখানেক পরেই আকাশ যেন ফেটে গেল বাজের ডাকে। লেপের তলায় চোখকান টিপে শুয়ে রইলাম আমি। কী হবে, যদি বাড়িটা উড়ে যায়, যদি আমরা মরে যাই, আর বাড়ি ফিরতে না পারি? যাঃ কী আজেবাজে বলছ। অত সোজা নাকি মরা? এক্ষুনি ঝড় থেমে যাবে, দেখবে।

আমাদের আশা পূর্ণ করার কোনও লক্ষণই দেখালো না ঝড়। বরং আগের থেকেও জোরে আছড়ে পড়ল দরজার ওপর। এখন আর সমুদ্র রাস্তার ওপারে নেই, এখন আমরা সমুদ্রের মাঝখানে আটকা পড়ে গেছি। আমাদের চারপাশে ঢেউ পাগলের মতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

হাওয়ার গর্জনের ফাঁকে ফাঁকে আরেকটা শব্দ শোনা যাচ্ছে কি?

ক্যাঁচ কোঁচ, ক্যাঁচ কোঁচ, ক্যাঁচ কোঁচ।

দোলনাটা দুলছে। জোরে জোরে। ভীষণ জোরে জোরে। হাওয়ার দাপটেই তো? তাই যেন হয় ভগবান, তাই যেন হয়। আমি প্রাণপণে লেপের ভেতর মাথা গুঁজে প্রার্থনা করতে থাকলাম।
        
                             (পরবর্তী সংখ্যায় সমাপ্য)


Comments

  1. jio K jio.....tomar kolom er dogay ful chondan poruk, kagoj e shonar akshor poruk aar bank account er mohor er barshan hok:)

    ReplyDelete
    Replies
    1. যেন তাই হয়, যেন তাই হয়, যেন তাই হয় শম্পা। তোমার তিনটে আশীর্বাদই যেন অক্ষরে অক্ষরে ফলে।

      Delete
  2. বর্তমান কি ললাট মে পসিনো কি বুঁদে, ভবিষ্যৎ কি মোতি হ্যায়।-- eta nirghat tor banano ..:D:D..eta pore hesei chalechi ..darun hoyeche leka ar chobi :) শাহেনশাহ to dekhtei hobe mone hocche :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. অন গড ফাদার মাদার, ওটা আমার বানানো নয়। আর এত শক্ত হিন্দি আমার মস্তক থেকে বেরোত না। যদিও বেরোলে আমি খুবই গর্ববোধ করতাম, নিঃসন্দেহে, কারণ কথাটা ডাহা সত্যি। শাহেনশাহ্‌ দেখিসনি কীরে? ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছিস। শিগগিরি প্রায়শ্চিত্ত কর।

      Delete
  3. এক কথায় দারুন। ..

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ ইনিয়া।

      Delete
  4. Shampa r moton amaro eki kotha -
    "tomar kolom er dogay ful chondan poruk, kagoj e shonar akshor poruk aar bank account er mohor er barshan hok" .
    Sorirer khabor ki?

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, থ্যাংক ইউ ইচ্ছাডানা। আপনারা সবাই মিলে চাইছেন যখন তখন নিশ্চয় এ সব হবে।

      শরীর ঠিকই আছে। যতক্ষণ বসে থাকছি ততক্ষণ ব্যথা নেই, একটু অ্যাডভেঞ্চারাস হয়ে ঘোরাঘুরি করতে গেলে টনটন করছে। তবে পেন কিলার চলছে, সেটাও কেটে যাবে নিশ্চয় শিগগিরি।

      Delete
  5. Ek taana pore ekhon dom phellam. Ufff ... pahare jhor brishti .. ki lucky tomra.
    Amar jhor brishti khub bhalo lagey ... Kangra te experience korechilam oirokom durdanto jhor brishti. Ar hain ... ek gada pine cone eneochilam ar bochor na ghurte pheleo diyechilam.
    Next post er opekkha e roilam ... tobey shorir ar koshto shamle likho kintu.

    ReplyDelete
    Replies
    1. সত্যি ওয়েদার নিয়ে আমাদের লাকের শেষ ছিল না এই ট্রিপে, শর্মিলা। রাতে ঝড় বৃষ্টি, সকালে ঝকঝকে রোদ। কাংড়া যাইনি আমরা, টু গো লিস্টে লিখে নিলাম।

      নিশ্চয় নিশ্চয়, এখন বেশি কষ্ট হচ্ছে না। থার্ড এবং শেষ কিস্তিটা লিখে ফেললেই হয় এবার।

      Delete
  6. Ufff, ki daroon. Oi bortomaaner lolatey ghaamer bindoo wala quote ta mokkhom. Ar kirom jhanu lekhoker moto ekta cliffhanger ey shesh korechho. :D

    Paa kamon achhe?

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহাহা বিম্ববতী, সত্যি বলছি, আমার এমনি লেখার থেকেও ওই (চলবে), (পরবর্তী সংখ্যায় সমাপ্য) ইত্যাদি লিখতে রোমাঞ্চ হচ্ছে বেশি।

      পা আগের থেকে ভালো। অনেক ভালো না, একটু ভালো। তাই সই।

      Delete
  7. নির্মল আনন্দ পেলাম, চালিয়ে যান। ইস স্টোরি মে ইমোশন হ্যায়, ড্রামা হ্যায়, ট্র্যাজেডি হ্যায়। আচ্ছা, ট্র্যাজেডি নেহি হ্যায়, কিন্তু অনবদ্য হয়েছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে ট্র্যাজেডি তো খোদ লেখককে লাইফ মে হ্যায়। ভালো লাগছে? জেনে হ্যাপি বোধ করছি, দেবাশিস। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  8. হনুমানের বীরত্বের কাল হল ত্রেতাযুগ।
    দ্বিতীয় পর্বটা হল নিখাদ আড্ডা। আগের দিন হলে আমরা খাটের উপর বসে গরম সিঙারা, ভাজাভুজি এবং চেঁচামেচি, হাহা হিহি সহযোগে এইসব গল্পে মজতাম অল্প কয়েকজন মিলে। আর আজ তুমি বোতাম টিপে টিপে ছাপার অক্ষরে এই আড্ডাটাকে ছড়িয়ে দিলে সবার মাঝে। সত্যি বলছি কুন্তলা, ফ্লেভারটা কিন্তু একটুও ঘেঁটে যায়নি। দারুণ লাগল।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ছি ছি ছি, কী বাজে ভুল। এই এটা কিন্তু আমি জানতাম, এই এটা কিন্তু আমার কেয়ারলেস মিসটেক হয়েছে। ভাগ্যিস ধরিয়ে দিলেন মালবিকা। থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ। কসৌলির গপ্প ভালো লাগছে জেনে খুশি।

      Delete
  9. শাহেনশাহ্‌-র ক্লাইম্যাক্সের চেয়ে আপনার ক্লাইম্যাক্সটা বেশি ইন্টারেস্টিং হবে, আমি শিওর! তবে বেশিক্ষণ দোলনাটা দোলাবেন না, প্লিজ। :)

    জি-সিনেমার পরিবর্তনের বিষয়ে আমি একমত, আর শাহেনশাহ্‌ আমারও খুব প্রিয় সিনেমা :P

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে বেশিক্ষণ দোলনা দুললে আমার নিজেরই হার্ট অ্যাটাক হবে অরিজিত, কাজেই শিগগিরি থামিয়ে দেব, নো চিন্তা। অমিতাভ বচ্চনের মেক আপটার জন্যই শাহেনশাহ লক্ষবার দেখা যায়। ভদ্রলোক গোটা সিনেমাটা এক চোখ দিয়ে দেখে কাটিয়েছেন, মেগাস্টার কি আর সাধে বলে।

      Delete
    2. আমার অনুরোধ রক্ষা পাবে জেনে খুশি হলাম। :)

      আচ্ছা, এক চোখ দিয়ে দেখেছেন বলে উনি মেগাস্টার, নাকি মেগাস্টার বলেই এক চোখ দিয়ে দেখতে পেয়েছিলেন, কি মনে হয়??

      Delete
    3. মনে হয় দুটোই হবে, অরিজিত।

      Delete
  10. shabash kuntala-debi. Osadharon. Chotobelar anandamela-r pore ato suspense bohudin paini. Chaliye jaan.

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ ঘনাদা। খুব ভালো লাগল আপনার প্রশংসা পেয়ে।

      Delete
  11. Khub bhalo lekha.......
    Aar khub bhalo ekta realization.....prothom jedin tomar photo dekhechilam, dekhe mone hoyechilo kothaye dekhechi tomake. Kintu jiggesh korte saahosh paaini mainly bcz line ta khub cliche.
    Ekhon bujhte perechi....tumi Bethune er chaatri right? Amio Physics Department er. I guess tumi aamar theke 1-2 years junior kintu aami tomake dekhechi college. Tumi kon year e graduation complete korecho aamake bolbe plz?

    ReplyDelete
    Replies
    1. ঠিক ঠিক, বেথুনই বটে। কলেজে দেখা হয়েছিল বুঝি নীলাঞ্জনা? আমার গ্র্যাজুয়েশন ১৯৯৯-২০০২। তুমিও কি সমসাময়িক? সেটা হলে সত্যিই খুব মজার ব্যাপার।

      Delete
    2. Amar 1997-2000. Ei meye amake mone porche na? Ami GS chilam college er 1998 and 1999. Nischoi ek adhta boka kheyecho amar kache

      Delete
    3. কী সাংঘাতিক। আরে তুমি জি এস ছিলে, তাই আমি তোমাকে দেখলেই নির্ঘাত উল্টোদিকে দৌড়তাম ভয়ে, তাই মুখটা মনে করে রাখতে পারিনি। সরি সরি নীলাঞ্জনা। তবে আমার বন্ধু-cum-ননদ তিন্নি, ও-ও আমার ব্যাচেই পড়ত বেথুনে, ইতিহাসের ছাত্রী, ও তোমাকে মনে করতে পেরেছে ছবি দেখে।

      Delete
  12. তোমার লেখার বেশ কয়েকটি আশ্চর্য গুণাবলী আছে। অনেকবার লিখব লিখব করে আজ না লিখে পারলাম না। মাঝরাতে একা ঘরে, ভুত ও পরের দিন সকালে বসের ঝাড় খাওয়ার ভয় তাড়াতে আশ্চর্য রকম ভাবে সক্ষম, মন খারাপ করে বাড়ির কথা মনে পরলে মনভাল করতে এর জুরি নেই, আর এই ভরসন্ধ্যে বেলা অম্বল এর ব্যাথা আর সামনে চলতে থাকা "আদালত' এর জন্ত্রনা কমাতেও আজ দেখলাম খুব কার্যকরী। খুব বেশি বেশি করে লেখ, আর বেড়াতে যাওয়ার ছুতি পাও। আর একদিন সুচিত্রা বা নবনিতা দিদির থেকেও ঢের ভাল লেখার আমার ধারনাটার রয়্যালটি তে প্রমান পাও।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ওরে পারমিতা রে, তুই নির্ঘাত আমাকে ভালোবাসিস বলে এসব বললি। কী ভালো লাগল। থ্যাংক ইউ। তোর মুখে তুই যা খেতে ভালোবাসিস তাই পড়ুক। আর অবান্তরের (অবান্তরের লেখিকার প্রতিও) তোর ভালোলাগা অটুট হোক, সেই প্রার্থনা করি।

      Delete
  13. যেমন সুন্দর লেখা, তেমনি সুন্দর ছবি। আমার দুর্ভাগ্য যে ঠিক ঠিক দিনে পড়ে কমেন্ট করতে পারিনি। তবে তাতে লাভটা হলো এই, যে সাসপেন্স নিয়ে একটা দিন কাটাতে হবেনা, এখুনি পরের লেখাটা পড়তে পারব।
    তবে এটা পড়ে কসৌলি যাওয়ার ইচ্ছে যতটা হচ্ছে, শাহেনশাহ দেখার ইচ্ছে তার থেকে কিছু কম হচ্ছেনা, কারণ আমি সিনেমাটা দেখিনি। দেখি আজ সন্ধ্যেবেলা ওটা দেখা যায় কিনা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভালো হয়েছে? খুশি হলাম শুনে। শাহেনশাহ দেখবেন। একবাক্স টিসু নিয়ে বসবেন, অনেক কাঁদতে হবে (অনেক সময় হাসির চোটেও চোখে জল চলে আসবে)।

      Delete
  14. নিজেরা আপাদমস্তক টুরিস্ট হলে কী হবে, অন্য টুরিস্টদের প্রতি আমাদের বিতৃষ্ণা দেখার মতো। - eta puropuri amar moner kotha. jekhanei jai 'boka' tourist dekhe mukh bekate thaki ami.
    Ei Bhootram nam ta shune bohudin age pora akta golper kotha mone porlo. Bhootram Babu-r Bhoot. kar lekha kichutei mone porche na. sekhane ei bhootram nam niye besh akta jotil conflict er bepar chilo. bhootram babu jodi bhoot hon, tale ram nam korle ki tar haat theke poritran pawa sombhob? karon tar nijer nam er modhyei to ram, etc etc.

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, গল্পটা ভালো মনে হচ্ছে, কুহেলি। ট্যুরিস্ট দেখে মুখ বেঁকানোয় হাই ফাইভ।

      Delete

Post a Comment