জাকোই/ অসম ভবন ক্যান্টিন



ভারতের বাকি রাজ্যগুলো সম্পর্কে আমার ধারণা এতই কম যে পরজন্মে কোন রাজ্যের অধিবাসী হয়ে জন্মাতে চাও জিজ্ঞাসা করলে আমি মাথাটাথা চুলকে ‘পশ্চিমবঙ্গ’ই বলব। কিন্তু যদি আমাকে কেউ বলে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া ভারতবর্ষের অন্য কোন রাজ্যের বাসিন্দা হয়ে জন্মাতে চাও, তা হলে আমি এক সেকেন্ডও না ভেবে বলব ‘আসাম’।

আমার আসাম ভালো লাগে, আসামের আকাশবাতাস নদীপাহাড় বনজঙ্গল ভালো লাগে, আসামের মানুষজন ভালো লাগে। অথচ আসামের খাবারদাবারের সঙ্গে আমার পরিচয় প্রায় শূন্য কেন সেটা একটা রহস্য।

আবার রহস্য নয়ও। আসাম এবং আসামের যাবতীয় ভালো জিনিসের সঙ্গে আমার পরিচয় শুরু যখন আমি দিল্লি শহরে একা একা হোস্টেলে থাকি, মেসের অকথ্য খাবার খাই, পড়াশুনো করার বদলে ধাবায় বসে আড্ডা মারি। আমার মা তখন আসামের ধুবড়ি শহরে একা একা থেকে চাকরি করেন, প্রতিদিন সন্ধ্যেবেলা গৌরীপুরের প্রকাণ্ড মাঠ আর মাঠের কোণে দাঁড়িয়ে থাকা অশ্বত্থগাছ পেরিয়ে বাড়ি ফেরেন, শনিরবিবার বিকেলে ব্রহ্মপুত্রের ঘাটে বসে দূরে সবুজ চরের দিকে তাকিয়ে বাদামভাজা খান।

মায়ের বাদামভাজায় ভাগ বসাবো বলে ছুটি পেলেই আমি ধুবড়ি রওনা দিতাম। ট্রেনের জানালা দিয়ে গলা বাড়িয়ে দেখতাম খাঁ খাঁ প্ল্যাটফর্মে রোগা এক ভদ্রমহিলা দাঁড়িয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। তারপর রিকশা চড়ে দুলে দুলে বাড়ি। পথনির্দেশ অতি সোজা। ধুবড়ি থানা? থানার উলটোদিকে সেনগুপ্তদের বাড়ি? সেই বাড়ি যাব ভাই।

সেনগুপ্তরা ছিলেন মায়ের বাড়িওয়ালা। তিন না চার ভাই ভুলে গেছি। দুই না তিন বোন সেটাও মনে নেই। বোনেরা সব কাছাকাছিই থাকতেন। ভাইরা সবাই থানার উলটোদিকের পৈতৃক বাড়িতে থাকতেন। আলাদা আলাদা সংসার কিন্তু বেশ মিলমিশ আছে। সেজ সেনগুপ্তের দাপট ছিল সবথেকে বেশি। সেজদা এককালে পুলিশ ছিলেন, ভালো ফুটবল খেলতেন। চেনা লোকের অভাব ছিল না। কাগজওয়ালা, দোকানওয়ালা, হাবিলদার, রিকশাওয়ালা, প্রাতঃভ্র্মণার্থী। যে-ই যেত তাকেই ডেকে সেজদা আলাপ করতেন। মাঝে মাঝে ব্রহ্মপুত্রের চর থেকে আনা সবজির ঝুড়ি নিয়ে সবজিওয়ালা যেত। সে সব শাকসবজির সঙ্গে আমাদের শহুরে বাজারের শাকসবজির কোনও তুলনা হয় না। এগুলো আসে সব হিমঘর থেকে আর ওগুলো সোজা ক্ষেত থেকে। সেজদা হাঁক পাড়তেন। গলায় গামছা পেঁচানো গরিব সবজিওয়ালা ছুটে আসত। সেজদার পায়ের কাছে ঝুড়ি রেখে উবু হয়ে বসত। পুলিশ রিটায়ার করলেও তার সামনে সবাই চোর। সেজদা হাঁটুতে হাত রেখে ঝুড়ির ওপর ঝুঁকে দাঁড়াতেন।

লাউ কত কইর‍্যা?

ভীমের গদার সাইজের একএকটা লাউ। সবুজ, ডাঁটো।

পাস ট্যাহা দিবেন স্যাজদা।

এক থাপর দিমু। তিন ট্যাহার এক পয়সা বেশি না। উঁহুহুহুহু, অইডা না অইডা না, বড়ডা, বড়ডা।

মায়ের শোওয়ার ঘর ছিল ফুটবল মাঠের সাইজের আর রান্নাঘর ছিল এই এত্তটুকু। কিন্তু তার মধ্যেই মা নানারকম ম্যাজিক করতেন। দু’বেলা সে রান্নাঘর থেকে ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত, মাখন, ঝুরিঝুরি আলুভাজা, টমেটো দিয়ে মুসুর ডাল, কাঁচালংকা কালোজিরে দিয়ে মাছের শান্ত ঝোল, শনিরবিবার সকালে লুচি দিয়ে আলুর তরকারি, সঙ্গে সিমুই কিংবা সুজির পায়েস বেরোত। ঘরের মেঝেতে শতরঞ্চি পেতে আমরা বসতাম, আমাদের সামনে পুরোনো আনন্দবাজারের ওপর থালাবাটিরা বসত। জানালার বাইরে নর্থ ইস্টের জেদী বৃষ্টি ঝরত অবিরাম।

সেনগুপ্তদের বাড়ির যে ব্যাপারটা আমাকে সব থেকে অবাক করত তা হচ্ছে যে প্রায় তিনপুরুষ ধরে ধুবড়ি শহরে বসত করা সত্ত্বেও অসমিয়া সংস্কৃতির সঙ্গে তাঁদের কোনওরকম মিলমিশ হয়নি। ছেলেদের জন্য বউ আর মেয়েদের জন্য জামাই আসত সেই হাওড়া, হুগলী, বর্ধমান থেকে। বিয়ের বাজার করতে সবাই কলকাতায় আসত। সব ভাইবউরাই মাকে বেশ পছন্দ করতেন। মাঝেমাঝেই তাঁদের হেঁশেল থেকে মায়ের জন্য বাটি ভরে নানারকম সুখাদ্য আসত। আপাদমস্তক বাঙালি সুখাদ্য।

মোদ্দা কথা হচ্ছে তিন বছরে অন্তত বার পাঁচেক আসামে গিয়ে মাসখানেক করে থাকা সত্ত্বেও আমি আসামের রান্না খেয়ে উঠতে পারিনি।

বান্টি বলল, ‘বাজে এক্সকিউজ দিও না। বাড়িতে না হয় ভেতো বাঙালি, দোকানে গিয়ে খেলেই পারতে। টানা একমাস তুমি রেস্টোর‍্যান্টে না গিয়ে সারভাইভ করেছিলে সেটা আমাকে বিশ্বাস করতে বলছ?’

বললাম, ‘বলছি না তো। সাতদিনে না হলেও দশদিনে একবার তো বটেই। তবে ও সব জায়গায় তখনও ‘ওহ্‌ ধুবড়ি’ মার্কা রেস্টোর‍্যান্ট গজায়নি যে সেখানে গিয়ে কবজি ডুবিয়ে অসমিয়া খানা খাওয়া যাবে। বাইরে খাওয়ার ইচ্ছে হলে আমরা যেতাম ব্যাম্বু গার্ডেনে। গিয়ে সেজুয়ান নুডল্‌স্‌ আর হিউনান চিকেন খেতাম মজাসে। ধুবড়ির বাকি সবাইও ওখানেই যেত নির্ঘাত। কখনওই গিয়ে আধঘণ্টার আগে বসতে পেয়েছি মনে পড়ে না।

তাই গোয়া নিবাসের পর আবার কোনও একটা স্টেট ক্যান্টিনে খেতে যাওয়ার কথা উঠল যখন আমি বললাম, ‘আসাম ভবন গেলে কেমন হয়?

দিল্লিতে আসাম ভবনের ক্যান্টিন আছে দুটো। একটা আসাম ভবনে, আরেকটা আসাম হাউসে। ভবনের ক্যান্টিনটির নাম জাকোই। এটার নামই বেশি লোকে জানে। আসাম হাউসের ক্যান্টিনটা নামগোত্রহীন। রসিকেরা দাবি করেন ওই ক্যান্টিনটিতেই আসল অথেনটিক আসামিয়া খানা পাওয়া যায়। কিন্তু অনলাইনে ছবিটবি দেখে আমাদের জাকোই বেশ পছন্দ হল। রংচঙের মুখ চেয়ে আমরা অথেনটিসিটি গোল্লায় দেওয়া মনস্থ করলাম। আগে তো দর্শনধারী, পরে তো গুণবিচারি?

জাকোই দেখে মন ভরে গেল। বারান্দায় বাঁশের জালির দেওয়াল, মাটির বাসনকোসন, গাছপালা। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বসার জায়গায় ঢোকার দরজায় বাঁশের হ্যান্ডেল। ভেতরে মেখলার সাজ, জালি কাটা লণ্ঠনের ভেতর থেকে নরম হলুদ আলো ছিটকোচ্ছে। দেওয়ালে অসমিয়া তারকাদের সাদাকালো ছবি। মিঠে গলার গান বাজছে, ‘জিরি জিরি জিরি পাহারো জুরি ভোয়া মলয় বই যায়’।

আমাদের হাতে সময় শুধু লাঞ্চব্রেকটুকু। কাজেই নজর সাজসজ্জার থেকে খাবারদাবারের দিকে ফেরাতে হল। জাকোই হচ্ছে চোঙার মতো একটা মাছ ধরার যন্ত্র। মেনুকার্ডের আকৃতি অনেকটা জাকোইয়ের আদলে তৈরি। মেনুতে ‘লুসি ভাজি’ আর ‘সিরা পুলাও’ দুটোই ছিল, দুটোই আমাদের দুজনেরই অত্যন্ত প্রিয় খাবার, কিন্তু আমরা দুটোর একটাও অর্ডার করলাম না। আমরা অর্ডার করলাম একটা নিরামিষ আর একটা আমিষ থালি।


দুটো থালিতেই ছিল ভাত, অমিতার ক্ষার (অমিতা হল পেঁপে আর ক্ষার হল ক্ষার। অর্থাৎ কি না সোডিয়াম বাইকার্বনেট), ডাইল, ভাজি (আলু পেঁয়াজকলি), আলু পিটিকা (আলুসেদ্ধ), পায়স, দই। দুটো থালির পাশেই ছোটো প্লেটে করে রাখা ছিল খরিসা (বাঁশের ডগা বাটা), খরোলি (সর্ষেবাটা), কাহুডি (টক সর্ষেবাটা) আর কাঁচালংকা।

নিরামিষ থালিতে এছাড়া ছিল পনীরের তরকারি, মাহর বর টেংগা (মটরডালের বড়ার টক) আর আমিষ থালিতে ছিল টেংগা রোহু (রুই মাছের টক) আর চিকেন কারি।

খুব খেলাম। থালিতে যা যা ছিল সব তো শেষ করলামই, আলাদা করে বাটিতে বাড়তি যে ভাতটুকু দেওয়া ছিল সেটাও চেঁচেপুঁছে নিলাম। দারুণ ভালো লাগল তবে টেংগার দাপট আর সামান্য কম হলে আরও ভালো লাগত। আবার এটাও মনে হল যে সেটা হলে রান্নাগুলোর সঙ্গে বাঙালি রান্নার আর কোনও তফাৎই থাকত না। কাজেই এই বেশ হয়েছে।

খেয়েদেয়ে বেরিয়ে পুদুচেরি ভবনের সামনে ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুরে দাঁড়িয়ে অটো ধরার চেষ্টা করতে করতেই অবশ্য টের পাচ্ছিলাম যে বেশ হয়নি। দরকারের থেকে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেছি। কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিল না।

সত্যিকারের জাকোই


Comments

  1. আহা, থালাদুটো দেখেই বেজায় খিদে পেয়ে গেল। :)
    সুস্বাদু লেখা, দারুণ। :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, অরিজিত।

      Delete
  2. বান্টি এতো ভালো মাছের প্রিপারেশন'টা খেলো/খেলেন না?

    ReplyDelete
    Replies
    1. বান্টি তো যায়নি, অনির্বাণ।

      Delete
    2. Darun kuntala di.... Delhi thakar sob theke baro prapti.... Sob pradesher khabar r ichhe korlei Himalaya E ghurte jawar swadhinata...
      Doyeli

      Delete
    3. একদম, দোয়েলি। দিল্লির অসুবিধে অনেক, কিন্তু সুবিধেগুলো এত ভালো ভালো যে ছেড়ে যেতে মন চায় না। বিশেষ করে পাহাড়ের নৈকট্যের সুবিধেটা।

      Delete
  3. খুব এনজয় করলাম । আমারও যাবার ইচ্ছে রইল ।
    মিঠু

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, সময় পেলে যেও, মিঠু। মনে হয় ভালো লাগবে।

      Delete
  4. Ei goto hoptatei ami Delicacy giyechhilam! Delicacy holo Assam House er naamgotroheen, besh lojjhore canteen khana. Kintu khabar kheye ekebare chitpotang hoyechhi! (Sob khabar ekebare barir moto. Abar thik barir moto noy-o. Pork fry ta aloo pneyajer torkarir modhye pork meshano jano. Aha, omrito.) Porer baar okhane jeo pakka. :-)

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমারও ঠিক এই কথাটাই মনে হয়েছিল। বাড়িরই মতো কিন্তু আবার বাড়ির মতো নয়ও। কোথায় যে আলাদা সেটা ধরে দেওয়া মুশকিল। ডেলিকেসিতে যাব নিশ্চয়, বিম্ববতী।

      Delete
  5. Replies
    1. বান্টি আমার এক পুরোনো পরিচিত। যে বান্টির কথা অবান্তরে উল্লেখ করা হয় তার সঙ্গে এই আসল বান্টির কোনও সম্পর্ক নেই। এ একেবারেই কাল্পনিক। তবে নামটা রয়ে গেছে।

      Delete
  6. Jakoi mane ki? Tukri gochher kichu? Lekha ta darun bhalo! "Oh Dhubri"ta asadharon. Dilli te thakar ei ekta subudhe. State bhawan gulo hater kachhe.

    ReplyDelete
    Replies
    1. জাকোই হচ্ছে ওই যে শেষের ছবিটায় দেখছ সিলিং থেকে ঝুলছে, সেই জিনিস, রুণা। তেকোণা টুকরি। মাছ ধরার কল। লেখাটা তোমার ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগল। স্টেট ভবন ক্যান্টিনের জবাব নেই সত্যি।

      Delete
  7. Besh bhalo khabar dabar... ar khabarer naamgulo darun misti...

    ReplyDelete
    Replies
    1. জাকোই থেকে ফিরে ইস্তক তো আমরা আমাদের খাবারদাবারগুলোকেও সব ওই নামেই ডাকছি, ইচ্ছাডানা। যেমন ধরুন বলছি; কোনি (ডিম) সেদ্ধ খাবে নাকি কোনি সানি সাইড আপ? বা, আহা কতদিন লুসি খাইনি। বা, পেটটা কেমন যেন ঠেকছে, ভাবছি সিরা দই খেয়ে শুয়ে পড়ব ইত্যাদি ইত্যাদি।

      Delete
  8. JNU-er North East Dhabay kheyechho? Ota tomader student life e chhilo na...notun hoyechhe bochhor 5ek holo...

    ReplyDelete
    Replies
    1. না শ্রমণ, খাওয়া হয়নি।

      Delete
  9. রুই মাছের টক ta shune one porlo r ki....Aami Dilli chhere ashaar ekdom last dike ota notun hoyechhilo......Amaro ei Assam Bhaban e kokhono khawa hoyni.....tobe Kashmir House-e khete giye raatribela poth haariye ekbaar Manmohan Singh-er baari dhuke porechhilam :) Tarpor Manmohan Singh-er barir darowan-i amader Kashmir House dekhiye diyechhilo.

    ReplyDelete
    Replies
    1. জম্মুকাশ্মীর ভবনের কিছু তুকতাক আছে বোধহয়, শ্রমণ। আমরাও যেতে গিয়ে রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলাম না।

      Delete
  10. Bujhtei paarchho Assam-er ak besh kam alochito bishay niye lekha poRe khub khushi hoye gelam. Atotai je aamaar moto aalse lok-o comment kore felchhe. Eta akebare thik katha bolechho je Assam-er Bangalira kakhonoi nijera Asomiya ranna karena. Antoto takhon korto na. Tar karon Bagalira nijeder rannake anek superior mone korto. Aar sotyi bolte ki oder khabar amader khabar-e bisesh parthokyyo nei. Shudhu oder ranna khub kam mashla aar anek simple. Tar modhhyei besh kichhu nijoshhota achhe. Jamon khar. Ota kintu kalagachh puriye sei chhai theke toiri kara hay. Setai bisheshotto. Aar machher tenga khete to amar besh bhaloi laage. Simple hole ki habe, khub satisfying. Aamra chhoto thekei Asomiya baRite bhaat kheye baRo hoyechhi, Banglar theke beshi Asomiya boltaam baRite. Asomiya medium school-eo porechhi. Taai onnyo anek Bangalir moto kono unnasikota chhilona. Kono dessert-er katha likhle na to? Til pitha akrakom unique Asomiya pithe. Jakoi naam-ta besh onnyorakom. Jaapi barong anek common Asomiya symbol. Tomaar Asomiya khaabaar bhaalo legechhe shune bhalo laaglo. BaRite je khbarguloke Asomiya naam-e ullekh korchho seta bhishon majaar. Doi sira-darun!
    By the way, Bunty kalponik shune khub dukhho pelaam. Abantor-er Bunty ki chirokal-i kalponik chhilo?
    Amita

    ReplyDelete
    Replies
    1. বান্টি কাল্পনিক নয় একেবারেই, অমিতা। বান্টি বলে রক্তমাংসের একজন লোক আছে। সে ভীষণ ভালো, ভীষণ মজার। তবে তার সঙ্গে আমার অনেক অনেক দিন দেখা হয় না। তাই তার মতো একটা চরিত্র খাড়া করে নিয়েছি অবান্তরের ছুতো করে।

      ভাগ্যিস ডেসার্টের কথা তুললেন আপনি। পায়স দিয়েছিল তো, ভুলেই গিয়েছিলাম। ঠিক করে দিয়েছি। পিঠার একটা সেকশন ছিল মেনুতে যদ্দূর মনে পড়ছে। কিন্তু থালিতে শুধু পায়সই ছিল।

      আসামের সঙ্গে আপনার এত নিবিড় সম্পর্ক দেখে খুব খুশি হচ্ছি। কী ভালো জায়গায় বড় হয়েছেন আপনি, অমিতা।

      Delete
  11. আঃ, টিফিনের লো ক্যালোরি ব্যাগেল থিন চিবোতে চিবোতে আপনার লেখাটা পড়লাম, আর জিভে জল এসে গেল! সুযোগ পেলেই আসামের খাবার খেতে হবে দেখছি!

    ReplyDelete
    Replies
    1. ব্যাগেল থিন! এর থেকে টিফিনে সিরা দই খেলে বেশি আরাম পাবেন তো। ভেবে দেখতে পারেন।

      Delete
  12. ami o khete chai esab khabar :(...tinni

    ReplyDelete
    Replies
    1. দিল্লি চলে আয় শিগগিরি, তিন্নি। সবক'টা ভবনে নিয়ে যাব তোকে।

      Delete
    2. আমাকেও হদিশ দাও
      মিঠু

      Delete
    3. এই লিংকটা কাজে লাগে কি না দেখতে পার, মিঠু।

      http://littleblackbookdelhi.com/5082/state-bhawans-eat

      Delete
  13. "oh dhubri" ta darun.. :) ami kokhono assam jaini.. kintu jete eibar icche korche..

    ReplyDelete
    Replies
    1. ঘুরে এস ঊর্মি। ব্রহ্মপুত্রর ধারে বসে বাদামভাজা খাওয়ার মজাই আলাদা।

      Delete
  14. নভেম্বর এ দিল্লি আসছি... তোমার সাথে দেখা করার খুব ইচ্ছে, হবে কি? :)

    মনস্বিতা

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ হ্যাঁ, নিশ্চয়। তোমার সময় হলে বোলো, দেখা করব।

      Delete
    2. কি যে বলো! 'তোমার' সময় হলে বোলো, আমি আর অরিন্দম কোনো এক মেট্রো স্টেশন যেটা তোমার/তোমাদের সুবিধে বা এরমই কোনো স্টেট ক্যান্টিন হাউস এ হাঁ করে বসে থাকব 'তুমি আসবে বলে তাই' ... ওহ ফেবারিট লেখিকাদের মধ্যে এক অন্যতমার সাথে দেখা, ভাবা যায়? আহা! :D

      মনস্বিতা

      Delete
  15. শুধু শুধু সর্ষেবাটা ? আবার টক / রেগুলার? বাহ.. এইতো দুটো অল্প পরিশ্রমের মেনু আইটেম পাওয়া গেল !

    ReplyDelete
    Replies
    1. আর tenga রোহু শুনে মনে হচ্ছে অসম আমাদের বর্ধমান এর পাশে না হয়ে যায় না। দারুন!

      Delete
    2. আপনি বর্ধমানের লোক, কাকলি? আপনারাও মাছের টক খান বুঝি? আমাদের বাড়িতে এই রান্নাটা একেবারেই হয় না, কেন কে জানে।

      Delete
  16. আমি কেন জানি না আধিকারিক দায়িত্বেও আসাম যাই নি কখনও। তবে খাওয়া দাওয়া নিয়ে ব্লগ হলেই তা আমার কাছে মাসাল্লাহ...!


    মারহাব্বা

    ReplyDelete
    Replies
    1. মাসাল্লাহ্‌, মাসাল্লাহ্‌, সৌরাংশু। নিশ্চয়ই কখনও আসাম যাওয়ার সুযোগ আসবে। এই আমি আপনার হয়ে বলে রাখছি।

      Delete
  17. Aapnar lekha Ami niyomito pori. Aapnar lekhai kothao Ekta suchitra Bhattacharjee 'r chowa khuje pai. Ami Assam er meye. Amader rannai bengali aar asomiya dutor influence aache. Macher jhol er sathe chunga pitha, til er pitha o khawa hoy. Bari Silchar e, kokhono ele Aasben. Nabanita.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে নেমন্তন্নের জন্য অনেক ধন্যবাদ, নবনীতা। শিলচর আমি কখনও যাইনি বটে। গেলে হয় একবার। তখন আপনার বাড়ি যাব আর গিয়ে চুঙ্গা পিঠা খেয়ে আসব।

      Delete
  18. Ami Assam er khabar konodin khaini tobey maacher tauk ta barite hoto. Amio banai ektu shorshe bata diye. Ar kaancha shorshe ta r kotha toh jantam na!
    Oi house canteen gulo'r kotha onek shunechi. Khub icche ache ekbaar try korar. Porer baar Delhi gele mone hocche du tinte din eyi khawar jonne e rakhte hobe.

    ReplyDelete
    Replies
    1. দিল্লি এলে একটাদু'টো স্টেট ক্যান্টিনে অবশ্য যেও শর্মিলা। বিশেষ করে জম্মু কাশ্মীর আর গোয়া ভবনের ক্যান্টিনে।

      Delete
  19. " ক্ষার হল ক্ষার অর্থাৎ কি না সোডিয়াম বাইকার্বনেট " এই কথাটা একটু গোলমেলে। দিল্লির কথা জানিনা তবে আসল অসমীয়া রান্নাতে ক্ষার হল কলা ক্ষার যা কিনা কলা গাছের খোল রোদে শুকিয়ে আগুনে পুড়িয়ে তারপর জল দিয়ে তৈরী করা হয়। এর রাসায়নিক সঙ্কেত জানা নেই বটে তবে অসমে গ্রামের দিকে কিছুদিন আগে অব্দি এ দিয়েই কাপড় পরিস্কার করা হত।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ অভীক, আপনি ঠিকই বলেছেন। কলা গাছের খোলকে নানা রকম করে ক্ষার বার করা হয়। তবে আমি পড়লাম যে আধুনিক রান্নায় সে জায়গায় সোডিয়াম বাইকার্বনেট ব্যবহার করা হয়। আমার সেটা পরিষ্কার করে লেখা উচিত ছিল।

      Delete
  20. " আবার রহস্য নয়ও। আসাম এবং আসামের যাবতীয় ভালো জিনিসের সঙ্গে আমার পরিচয় শুরু যখন আমি দিল্লি শহরে একা একা হোস্টেলে থাকি, মেসের অকথ্য খাবার খাই, পড়াশুনো করার বদলে ধাবায় বসে আড্ডা মারি। আমার মা তখন আসামের ধুবড়ি শহরে একা একা থেকে চাকরি করেন, প্রতিদিন সন্ধ্যেবেলা গৌরীপুরের প্রকাণ্ড মাঠ আর মাঠের কোণে দাঁড়িয়ে থাকা অশ্বত্থগাছ পেরিয়ে বাড়ি ফেরেন, শনিরবিবার বিকেলে ব্রহ্মপুত্রের ঘাটে বসে দূরে সবুজ চরের দিকে তাকিয়ে বাদামভাজা খান।

    মায়ের বাদামভাজায় ভাগ বসাবো বলে ছুটি পেলেই আমি ধুবড়ি রওনা দিতাম। ট্রেনের জানালা দিয়ে গলা বাড়িয়ে দেখতাম খাঁ খাঁ প্ল্যাটফর্মে রোগা এক ভদ্রমহিলা দাঁড়িয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। তারপর রিকশা চড়ে দুলে দুলে বাড়ি। "


    তাই নাকি, এতো আমারো গল্প। মানে আমার কলেজ জীবনের আর আমার বাবার চাকুরীজীবনের শেষটুকু এভাবেই কেটেছিল।

    তবে একটা প্রশ্নঃ আপনি যে সময়ে (কলেজে পড়ার মতো) ছোটো ছিলেন সে সময়ে দিল্লী বা কলকাতা থেকে ধুবুড়ী আসবার ট্রেন ছিল? কোন সালের কথা?

    ReplyDelete

Post a Comment