সিম্পলের মধ্যে গর্জাস/ ওরছা ৩ (শেষ পর্ব)




অল ফরওয়ার্ড! অল ব্যাক! স্টপ! আমাদের মতো নবীশদের জন্য আর বেতোয়ার অপেক্ষাকৃত শান্ত নদীবক্ষের (অন্তত আমার যে অংশটুকু পার হব) জন্য এই তিনটে ইন্সট্রাকশনই যথেষ্ট। বললাম, আমরা কিন্তু জীবনে এইসব র‍্যাফটিংম্যাফটিং করিনি। পুষ্পেন্দ্রজী আর লক্ষ্মীনারায়ণজী বললেন, 'চিন্তা মত কিজিয়ে, আজ করা দেঙ্গে।' ওঁদের কনফিডেন্সকে অবিশ্বাস করার কোনও কারণ নেই। শুধু যে হৃষীকেশ গিয়ে র‍্যাফটিং-এর ট্রেনিং নিয়ে এসেছেন তাই নয়, গত সেপ্টেম্বরে বেতোয়ায় যে বান এসেছিল আর যাতে বেশ কিছু লোক আটকা পড়ে গিয়েছিলেন তাঁদের উদ্ধারের জন্যও এঁদেরকেই পাঠানো হয়েছিল।

হলিডিফাই আর ট্রিপোটো আরও প্রভূত সাইট থেকে ইমেলে ক্রমাগত বেড়াতে যাওয়ার সাজেশন আসে। বাজেট, লাক্সারি, রোম্যান্টিক, পকেট ফ্রেন্ডলি, উইকএন্ড,লং উইকেন্ড, যে রকম চান সে রকম। ডেডলাইন সামনে থাকলে আমি সে মেলগুলো খুলে খুলে দেখি, এমনকি ফরেন ট্রিপগুলোও বাদ দিই না। সেই আমিও কোনওদিন অ্যাডভেঞ্চার ডেসটিনেশনের লিংক খুলে দেখিনি। 

অর্চিষ্মানকে জিজ্ঞাসা করিনি কিন্তু ওর আচরণ অন্যরকম কিছু হওয়ার আশংকা নেই।

সেই আমরা হঠাৎ রিভার র‍্যাফটিং করার সিদ্ধান্ত নিলাম কেন? হতে পারে এ বারের বেড়ানোটা রেবেলিয়াস হবে নিয়তিনির্ধারিত ছিল। একে তো পাহাড়ের মায়া ত্যাগ করা, তারপর বেড়াতে গিয়ে কিছুই না করে ফিরে আসার বদনামটা ঘোচানোরও সুযোগ এবারেই আসার ছিল।


আর র‍্যাফটিং যদি করতেই হয় তাহলে বেতোয়ার টলটলে জলে করলেই ভালো। এর আগে হৃষীকেশের গঙ্গায় র‍্যাফটারদের ট্র্যাফিক জ্যাম দেখেছি। ইচ্ছে থাকলেও ওই ঠেলাঠেলিতে যেতাম না। সে তুলনায় বেতোয়া স্বর্গ। যেমন পরিষ্কার জল, তেমনি ভিড়ভাট্টাহীন।

বেতোয়া রিট্রিট থেকেই সব বুকিংটুকিং হয়। র‍্যাফট পিছু আড়াই হাজার টাকা ভাড়া। ঘণ্টাখানেক সাড়ে চার কিলোমিটারের নদীবক্ষে দাঁড় বাওয়া। একটা র‍্যাফটে সব মিলিয়ে ছ'জন বসতে পারে। ম্যানেজারবাবু এসে বললেন, আরও দুজন যাচ্ছেন আমাদের এখান থেকে, আপনাদের সঙ্গে করে দেব?

অর্চিষ্মান লাজুক আর আমি অসামাজিক, কাজেই মানা করে দিলাম। ম্যানেজারবাবু আমাদের লোভ দেখাতেই বোধহয় বললেন, টাকা শেয়ার হয়ে যাবে, তাছাড়া ওঁরা আউটলুকের ফোটোগ্রাফার ... আমি ভাবছি, থামুন থামুন আর এগোবেন না, কিন্তু উনি বলে বসলেন। 

আপলোগোকা আচ্ছা ফোটো ভি আ যায়েগা।

অর্চিষ্মান আঁতকে উঠে বলল, নেহি নেহি, হাম অকেলে হি যায়েঙ্গে। 

ততক্ষণে উক্ত ফোটোগ্রাফাররা এসে পড়েছেন। আমরা একটু লজ্জাতেই পড়ে গেলাম, কে জানে শুনতে পেয়েছেন কি না। আমরা যে ওঁদের সঙ্গে নিতে চাইছি না। ভদ্রতা করতে আলাপ করলাম। বললাম, কাল আপনাদের লাইট অ্যান্ড সাউন্ডে দেখলাম, র‍্যাফটিং-এ যাচ্ছেন বুঝি, আমরা তো কোনওদিন করিনি, কে জানে কেমন হবে, আপনারা আগে করেছেন নাকি হ্যানাত্যানা। 

মহিলা জানালেন যে উনি জাম্বিয়াতে বাঞ্জি জাম্পিং থেকে শুরু করে জান্সকারায় রিভার র‍্যাফটিং থেকে শুরু করে ঈশা সদগুরু ফাউন্ডেশনের যোগপুকুরে নিয়মিত যোগডুবকি দিয়ে থাকেন। আমি ভয়ানক ইমপ্রেসড হলাম। এ রকম একটা অভিজ্ঞ লোককে সঙ্গে রাখলে সুবিধে হতে পারে। বললাম, আপনাদের আমাদের সঙ্গে যেতে আপত্তি নেই তো? উনি বললেন, আপত্তি তো নেইই, বরং সেফটির দিক থেকে ভাবলে একসঙ্গেই যাওয়া ভালো কারণ র‍্যাফটের ওজন কম হলে ঢেউয়ের ধাক্কায় উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। 

অর্চিষ্মানও মেনে নিল, র‍্যাফট উল্টে বেতোয়ার জলে হাবুডুবু খাওয়ার থেকে দু'একটা ছবি উঠে যাওয়ার ঝুঁকি নেওয়া বেটার। সবাই মিলে জিপে করে চলে গেলাম র‍্যাফটিং শুরুর পয়েন্টে। তারপর ঘণ্টাখানেক ধরে চলল অল ফরওয়ার্ড! অল ব্যাক! রাইট ব্যাক, লেফট ফরওয়ার্ড! স্টপ! আমার সত্যি কথা বলতে কি বেশ জোশ এসে গিয়েছিল। অন্যদের ভুলটুল ঠিক করে দিচ্ছিলাম। বেতোয়ার র‍্যাফটিং, অন্তত আমরা যে অংশে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, বোঝাই যাচ্ছে সোজার দিকে, মাঝে মাঝে একটু দোলাচল। একবারই একটা 'র‍্যাপিড' এসেছিল। সে কী উত্তেজনা।


উত্তেজনার সঙ্গে সঙ্গে ভিউও রিভার র‍্যাফটিং-এ যাওয়ার একটা প্রধান কারণ হতে পারে। জামনি নদী হল বেতোয়ার একটি প্রধান উপনদী। জামনি এসে ওরছার কাছেই বেতোয়াতে এসে মিশেছে। নদীর দুপাশে জলে ঝুঁকে পড়েছে কাঠজামুনের গাছ। আর ছোট ছোট ঘূর্ণি আর ঘূর্ণির ওপর ফড়িং। জেগে থাকা শিলাখণ্ডের ওপর পাখা মেলে শুকিয়ে নিচ্ছে পানকৌড়ি। পার থেকে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে প্রাসাদের ভাঙা দেওয়াল আর মন্দিরের চুড়ো।

শুনি মহিলা বলছেন, নদীতে নামা যায় না?  পুষ্পেন্দ্র আর লক্ষ্মীনারায়ণ দেখি উৎসাহ দিচ্ছেন। আউটলুকের দুজন পত্রপাঠ নেমে পড়লেন। এঁরা কেউ সাঁতার জানেন না। র‍্যাফটের পাশে দড়ি লাগানো আছে, লাইফভেস্ট পরা আছে, নেমে দড়ি ধরে ভেসে থাকবেন। আমার প্রেস্টিজ নিয়ে টানাটানি। তাড়াতাড়ি জলে নেমে খানিক খেলা দেখাতে হল।


এই সব করে আমাদের ভীষণ খিদে পেয়ে গেল।

ছোট শহরের একটা সমস্যা যেটা আমরা বোধ করেছি সেটা হচ্ছে ভালো খাবার বলতেই কন্টিনেনটাল চাইনিজ ইটালিয়ানের দাপাদাপি। নিজেদের ঘরের খাবারকে বাজারের সাজ পরিয়ে দর বাড়াতে এঁরা এখনও অতটা দড় হননি। কিন্তু তবু চেষ্টা তো চালিয়ে যেতেই হবে। বুন্দেলখণ্ডের প্রাচীন ভূমিতে গিয়ে হট অ্যান্ড সাওয়ার সুপ আর  পনীর টিক্কা মসালা খাওয়া যায় না। যা পড়ে বুঝলাম বুন্দেলখণ্ডী খানায় বেশি পরিমাণে মশলার ব্যবহার হয়, একটা ক্ষীর খুব পপুলার, আর একটা খাবার আছে যার নাম ইন্দ্রহার। ভিডিও দেখে বোঝা গেল সেটা হচ্ছে কঢ়িতে ডোবানো ধোঁকা। আমার ধোঁকা অত ভালো না লাগলেও কঢ়ি খুবই ভালো লাগে। স্যাডলি, অনেক খুঁজেও ইন্দ্রহার পাওয়া গেল না। তবে তক্কে তক্কে আছি, পেলেই খাব।

ওরছাতে রাস্তার পাশের ধাবাও যেমন আছে, তেমনি লাক্সারি হোটেলের রেস্টোর‍্যান্টও আছে, আবার বিদেশী টুরিস্টদের আকর্ষণ করার জন্য “হ্যান্ড ক্রাফটেড” ক্যাফেও আছে। একটা জায়গার রেটিং দেখলাম খুব হাই। অরগ্যানিক ফুড, অধিকাংশ খদ্দেরই বিদেশী। সকলেই রান্না করছে, মাটিতে বসে খাচ্ছে। সুপার হিপি ব্যাপারস্যাপার। আমাদের চেখে দেখার ইচ্ছে ছিল, লোক্যাল খাবারও হয়তো ওখানেই পাওয়া যেত, কিন্তু এ সব জায়গার একটা আতংকের পয়েন্ট হচ্ছে এখানে ফেলো ফিলিং-এর জোয়ার খুব বেশি হয়। চুপচাপ বসে খেলে চলবে না, হয়তো রান্নাও করতে হল কিংবা হাততালি দিয়ে কোরাস গান। তার থেকে নন-হিপি দোকানে বসে জালফারেজি খাব, সেও ভি আচ্ছা। 


অমর মহল বলে একটি হোটেলের রেস্টোর‍্যান্টে খাওয়া হল একদিন দুপুরে। আমার মহারানি থালিতে ছিল পোলাও, নান, ডাল, সবজি, পনীর, পাঁপড়, রায়তা, রসগোল্লা কাচুম্বর। আমি আলাদা করে বেগুনভর্তা অর্ডার করছি দেখে পরিবেশক ভাইসাব স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে বললেন, ওটা নাকি উনি থালির মধ্যেই করে দেবেন। আমি কৃতজ্ঞতায় নুয়ে পড়ে বললাম, তাহলে প্লিজ পোলাওটা বাদ দিয়ে দেবেন। আশ্বাস দিলেন, কর দেঙ্গে।

আর কোনওটাই শেষ করতে পারিনি, কিন্তু ভর্তার বাটি প্রায় মুখ দেখার মতো পরিষ্কার করে ফেলেছিলাম।

বুন্দেলখণ্ডী থালিতে রসগোল্লা রাখাটা শুধু কৌতূহলোদ্দীপক। ফলাফলও আশানুরূপ হয়েছে। আমি দোষ দিই না। আমাদের মেনুতে ডেজার্টে ঠেকুয়া রাখলে তার দশাও এই হত। কেন যে গুলাব জামুন রাখেননি সেটা একটা রহস্য।


ওরছার সিগনেচার লুক - ক্যালেন্ডারে, ফোটোশুটে, ট্যুরিজম কোম্পানির ব্রশিওরে যে ছবিগুলো থাকে সেগুলো রাজমহলেরও না, মন্দিরেরও না, বেতোয়ারও না। সেগুলো হচ্ছে এই ছত্রীর। ছত্রী হচ্ছে রাজারাজড়ার স্মৃতিতে বানানো সৌধ। ছত্রীগুলো খুবই সুন্দর করে দেখাশোনা করা হয়েছে। বাগানে ঘুরে ঘুরে বেশ অনেকটা সময় কাটানো যায়। অসামান্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ।  পরে আবার কখনও ওরছা যাই, এই ছত্রীর ধারে বসে নদীর দিকে তাকিয়ে অনেকটা সময় কাটাব।


ব্যস, হয়ে গেল আমাদের ওরছা ঘোরা। ঝাঁসি থেকে নতুন দিল্লি শতাব্দী ছাড়ে প'নে সাতটা নাগাদ। বারোটায় চেক আউট করে বেরিয়ে হাতে প্রচুর সময় থাকবে। সে সময় ঝাঁসি ঘুরে দেখা যেতে পারে। ঝাঁসিতে দেখার জিনিস মূলতঃ ঝাঁসি দুর্গ, যা বানানো হয়েছিল বুন্দেলা মহারাজ বীর দেও সিং-এর জমানাতেই।



বীর দেও সিং, যিনি জাহাঙ্গিরের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে ওরছার জাহাঙ্গির মহল বানিয়েছিলেন। বুন্দেলাদের হাত থেকে মারাঠাদের হাতে বুন্দেলা রাজা ছত্রশালের আমলে। ছত্রশালের আমলে মহম্মদ খান বাঙ্গাশ ওরছা আক্রমণ করেন। সারাজীবন ধরে অনেক যুদ্ধবিগ্রহ করে ছত্রশাল ততদিনে চুল পাকিয়েছেন, বুঝলেন শুধু বুন্দেলা শক্তির ওপর ভর করে এ যুদ্ধ জেতা যাবে না। ডাক পাঠালেন মারাঠা বীর পেশোয়া বাজিরাও (প্রথম)কে। যুদ্ধজয়ের পর কৃতজ্ঞতার টোকেন হিসেবে ঝাঁসির দুর্গ মারাঠাদের অর্পণ করলেন।

এ দুর্গের সবথেকে বিখ্যাত অধিবাসীর আসল নাম বলিউডের সুবাদে এখন ভারতবর্ষের সবাই জানে। মণিকর্ণিকা, আমাদের লক্ষ্মীবাঈ। যে 'জাম্পিং পয়েন্ট' থেকে ঘোড়ায় চড়ে শিশুপুত্রকে নিয়ে রানি ঝাঁপ দিয়েছিলেন, সেখানে দাঁড়িয়ে কেমন মনখারাপ হয়ে গেল।


আরও তো কত যে সব কেল্লা দুর্গ দেখেছি, যাদের গল্পগুলো হয় জানি না জানলেও ওপর ওপর পড়েছি,সেগুলো গল্প হয়েই রয়ে গেছে। চোখে জল কিংবা গায়ে কাঁটা জাগায়নি। কিন্তু ছোটবেলা থেকে শোনা গল্পের  জায়গায় গেলে এখনও সে অনুভূতিগুলো অবিকল জাগে। চিতোরে গেলেই যেমন মনে হয়, এই মোড় ঘুরলেই ঝনঝন যুদ্ধ হচ্ছে, ওই পদ্মাবতী জানালায় দাঁড়িয়ে আছেন (কোনওদিন নাকি ছিলেন না, কিন্তু এতদিনের মিথ ভাঙবে কে?), তেমনি ঝাঁসির দুর্গের জাম্পিং পয়েন্টে দাঁড়িয়ে আমার শুধুই মন খারাপ হতে লাগল।


অবশ্য দৃশ্যশব্দগন্ধেরও এই মনখারাপে অবদান থাকতে পারে। বিকেলের রোদে ছড়ানো ঝাঁসি শহর। শহরের বাঁ প্রান্ত থেকে মাইকে রামভজন, মাঝখানে ক্রিকেট মাঠ থেকে ধারাবিবরণী এবং ওভার শেষ হলে পিলে চমকানো পাঞ্জাবী নাম্বারস, ডানদিক থেকে বিকেলের আজানের ককটেল বেশ একটা মোহময় ভাব জাগিয়েছিল। যাদের কানের কাছে বাজছে তাদের অবস্থা কল্পনা করতে অবশ্য মোহটা ঝপ করে অনেকটা কমে গেল।

ওরছা থেকে অটো নেওয়া হয়েছিল এই কড়ারে যে সোজা ঝাঁসি ষ্টেশন ছেড়ে দিলে তিনশো, আর ঝাঁসি ঘুরিয়ে ছাড়লে পাঁচশো টাকা দেওয়া হবে। দুর্গের ঠিক নিচেই নাকি রানিমহল। অটোভাইসাবকে বললাম, একটু চলুন দেখে আসি। তিনি চোখ কপালে তুলে বললেন, পাগল? ওখানে গাড়ি ঢুকতে দেয় না, বলে আমাদের হ্যাঁ না-এর অপেক্ষা না করে স্পিড তুললেন। নিজেদের সান্ত্বনা দিলাম, ইউটিউবে দেখে নেব।

ফেরার সময় দেখি স্টেশনচত্বরে শামসুদ্দিন ভাইসাব, যিনি আমাদের যাওয়ার সময় ঝাঁসি স্টেশন থেকে ওরছা পৌঁছে দিয়েছিলেন, ঘোরাঘুরি করছেন। বললেন, ফির আনা। আমরা বললাম, জরুর জরুর। 

আপনারাও সময় পেলে ওরছা যাবেন। রাজাগজার প্রাসাদ দেখবেন, রিভার র‍্যাফটিং করবেন, নদীর ওপারে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নেচার ওয়াকে যাবেন।

আর সন্ধের মুখে বেতোয়ার তীরে অবশ্যই বসবেন। প্রচণ্ড টানের স্রোতে কালোকোলো দস্যি ছেলেদের উল্লসিত সাঁতার দেখবেন। গেরুয়াধারী যে সাধুবাবা অস্ফূট "সীতারাম" অভিবাদন জানিয়ে জঙ্গলের দিকে গিয়েছিলেন তাঁকে মিনিট দশ বাদে পরিষ্কার শার্টপ্যান্ট পরে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে চমৎকৃত হবেন। সন্ধে নামার মুখে দূরে মন্দিরে ঢং ঢং ঘণ্টা শুরু হবে, ছাতিমের গন্ধ ছেয়ে ফেলবে আকাশবাতাস। বীর দেও সিং-এর বানানো চারশো বছরের বুড়ো ব্রিজের ওপর দিয়ে লেটেস্ট মডেলের বাইক হর্ন দিতে দিতে যাবে, পাখির দল চেঁচামেচি করতে করতে ছত্রীর মাথার ওপর রং বদলাতে থাকা আকাশ দিয়ে কে জানে কোন যুগের উদ্দেশ্যে উড়ে যাবে, আর আপনি নতুন করে টের পাবেন, সিম্পলের মধ্যে গর্জাস কাকে বলে।



(শেষ)


Comments

  1. বৈজয়ন্তীNovember 2, 2019 at 3:04 PM

    এই পর্বটাও যা হয়েছে না! এক্কেবারে সিম্পলের মধ্যে ঝাক্কাস।
    কবে হবে জানিনা, তবে আমার খুব ওরছা আর মান্ডু যাবার শখ। কেল্লা, ছত্রি সবই কেমন যেন ভেজা ভেজা রং। আপনার এই শেষ পর্বটায় এমন একটা মনকেমন জাগালেন, আরো বেড়ে গেলো ইচ্ছেটা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, বৈজয়ন্তী। মান্ডু আমাদেরও খুব যাওয়ার ইচ্ছে। কিন্তু ও জায়গাটা শুনেছি বর্ষায় বেস্ট। আগের পোস্টে যে মেয়েদুটোর কথা লিখেছি তারা বলেছিল বুরহানপুরও নাকি খুব সুন্দর জায়গা। কবে যে হবে সব।

      Delete
  2. bah Orchha khub bhalo laglo... tumi helmet ta khulle aro bhalo photo uthto kintu .. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, এইটা ঠিক বলেছিস, ঊর্মি।

      Delete
  3. সবসময়ের মত দারুণ।
    সাধুর গল্পটা বেশ মজার লাগল।

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, আত্মদীপ। সাধুবাবা আমাদেরও মজা দিয়েছিলেন বেশ।

      Delete
  4. খুব ভাল লাগল। এদেশে আমার দেখতে চাওয়া জায়গার লিস্টে আরেকটা নাম যোগ হল|

    ReplyDelete

Post a Comment