মাস্টারশেফ



আজকাল অফিস থেকে ফিরে এক বদভ্যেস হয়েছে, রুটি তরকারি খেতে খেতে টিভি খুলে মাস্টারশেফ দেখা। আপাতত অ্যামেচার হোম কুক্‌স্‌দের কমপিটিশন চলছে, তাতে একদল আপাতদৃষ্টিতে দিব্যি সুস্থ নারীপুরুষ একে অপরের সঙ্গে রান্নার লড়াইয়ে নেমেছেন। আর সে কি লড়াই বাস্‌রে। রিষড়ার লেবুগুণ্ডার দলও সে সংগ্রাম দেখলে লজ্জায় নাককানমুলে অহিংসার পথ ধরবে। এপিসোডের পর এপিসোড ধরে তাঁরা প্লেটের ওপর বিমূর্ত শিল্প সৃষ্টি করছেন, উদ্যত ছুরি নিয়ে সেটময় দৌড়ে বেড়াচ্ছেন, বোঝাই যায় অপ্রত্যাশিত বাধা পেলে সে ছুরির সদ্ব্যবহার করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবেন না। বিচারকদের দেখে স্যালুট দিয়ে গোড়ালি ঠুকে অ্যাটেনশনের ভঙ্গিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছেন। আর এত শ্রদ্ধাভক্তির পরেও সেই বিচারকদের একজনের মুখ থেকে তাঁদের প্রতি গালাগালির বন্যা ছুটছে তো আরেকজন প্লেট থেকে খাবার মুখে পুরেই থু থু করে ফেলে দিচ্ছেন। সেদিন তো এক রগচটা জাজ এক বেচারা প্রতিযোগীর গোটা প্লেটটাই তুলে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেললেন। প্রতিযোগীর গাল বেয়ে কান্নার ধারা নামল আর সঙ্গে ব্যাকগ্রাউন্ডে প্যাঁপ্যাঁ করে করুণ স্যাক্সোফোন বাজতে লাগল।

এঁদের দেখি আর আমার নিজের দেখা অ্যামেচার হোমকুক্‌স্‌দের কথা মনে পড়ে। তাঁদের মধ্যেও কেউ কেউ দূরদূরান্তের আত্মীয়স্বজন পাড়াপ্রতিবেশীদের মধ্যে একএকজন মাস্টারশেফ ছিলেন। সেসব শেফের নিজস্ব “স্টেশন” ছিল না, বারোয়ারি তেলকালি মাখা রান্নাঘরে পিঁড়ির ওপর উবু হয়ে বসেই তাঁরা একের পর এক কামাল দেখিয়ে গেছেন। শান দেওয়া ঝকঝকে ছুরির নিজস্ব সেট ছিল না, ছিল খালি এক ভীষণদর্শন বঁটি, সেই দিয়ে বোয়ালমাছের গর্দান নেওয়া থেকে ভেজিটেবিল্‌স্‌ জুলিয়েন করা পর্যন্ত সবই চলত।

আমার চেনা অনেক লোকের মুখেই ঠাকুমাদিদিমার রান্নার সুখ্যাতি শুনেছি। আমার কপাল খারাপ, দিদিমাকে আমি চোখেই দেখিনি, আর ঠাকুমা রান্না করা ব্যাপারটা দু’চক্ষে দেখতে পারতেন না। যতদিন দায়ে পড়ে করতে হয়েছে, করেছেন। যেই না ঘরে একটিদুটো করে বউ আসতে শুরু করেছেন, ঠাকুমা হাতাখুন্তি ছুঁড়ে ফেলে “বাঁচাও” বলে সেই যে ছুট লাগিয়েছেন, আর রান্নাঘর মুখো হননি। তবে ঠাকুমার কপাল ভালো ছিল, তাঁর বউরা সকলেই রান্না করতে পারতেন। বউদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে বড়, অর্থাৎ আমার জেঠি, তাঁর হাতের রান্না তো যে একবার খেয়েছে সে আর ভোলেনি। জেঠিমার রান্নার স্বাদের কথা তো ছেড়েই দিলাম, কিন্তু তাঁর রান্নার যে বিষয়টা আমার সবথেকে ভালো লাগে সেটা হচ্ছে ব্যাপারটার অনায়াসতা।

আর এইখানেই টিভির অ্যামেচার হোমকুক্‌স্‌দের সঙ্গে জেঠির সবথেকে বড় তফাত। জেঠি ছোটেন না, ঘামেন না, দুধ উথলে পড়ে গেলে “জিসাস্‌ @#$% ক্রাইস্ট” বলে মাথার চুল ছেঁড়েন না। কোনওদিন রান্না খারাপ হলে কেউ জেঠিকে কেঁদে ফেলতে দেখেনি। শান্তির প্রতিমূর্তি হয়ে আমার জেঠি ঘণ্টাদেড়েকের মধ্যে তেতোচচ্চড়ি থেকে শুরু করে চাটনি পর্যন্ত রেঁধে ফেলতে পারেন, ধারেকাছে কোনও সু-শেফ ছাড়াই। সু-শেফ হওয়ার দায়িত্ব যাদের ওপর বর্তাতে পারত (উচিত ছিল), তারা ততক্ষণ খাটের ওপর চিৎপাত হয়ে ফ্যানের হাওয়া খায় আর এমটিভি দেখে হাহাহিহি করে। তারপর জেঠি খাবার বেড়ে করে সবাইকে “আয়রে আয়রে” সাধ্যসাধনা করে খেতে বসান। আমরা একএকটা পদ দিয়ে ভাত মেখে মেখে মুখে তুলি আর বলাবলি করি, “এটা কি আগের পদটার থেকেও ভালো হয়েছে? সেটা কি আদৌ হওয়া সম্ভব?” জেঠি এসব ফাঁকা প্রশংসা গায়েই মাখেন না। আরেক হাতা ভাত ধপ্‌ করে পাতের ওপর ফেলে দিয়ে বলেন, “ভালো লাগে তো আরেকটু খাও।”

দুঃখের বিষয়, এই গোত্রের মাস্টারশেফের সংখ্যা হু হু করে কমে আসছে। আজকাল আর কেউ পেট ভরানোর জন্য রান্না করে না, সকলেই চমকে দেওয়ার জন্য রান্না করে। ঘরেই ম্যাঙ্গো মকটেল থেকে শুরু করে চিকেন সাশলিক থেকে অ্যাপেল মালপোয়া। কুচিনা চিমনি লাগানো মডুলার কিচেন থেকে টপাটপ সব বেরিয়ে আসে। আর এদিকে সোনামুগের ডাল, পোস্তবাটা আর লইট্যা মাছের চচ্চড়ি গিয়ে ওঠে ভজহরি মান্নার মেনুতে। রীতিমতো টাকা রোজগার না করতে পারলে আজকাল আর ওসব খাবার খাওয়ার জো নেই বাঙালির।

তবে আশা যে একেবারে নেই তা নয়। নেমন্তন্ন খেতে সেদিন গিয়েছিলাম তিলকমামার বাড়িতে। বসেবসে অনেক গল্প হল, কোনওটা পেটফাটা হাসির, কোনওটা চোখ কপালে তোলার। মামা, মামি, দুই সেট দাদু দিদা, তিনটি ভীষণ মজার কন্যা---সবাই মিলে সন্ধ্যেটা অসম্ভব আনন্দে কেটে গেল।

তবে সব গল্প হাসি নাচগানের মধ্যেও লাইটহাউসের মতো জ্বলজ্বল করে জেগে রইল সুমিতামামির রান্না। কিছু ভালো রাঁধতে পারেন বটে মামিমা। শরবত, দইবড়া, খাঁটি কলকাতার পাঁঠা বিরিয়ানি, মুরগির বড়া, অনবদ্য একটা আমসত্ত্বখেজুরকিশমিশের চাটনি। এত রেঁধেও মামিমার মুখের হাসিটি উজ্জ্বল, পরিপাটি চুলের একটিও এদিক থেকে ওদিক হয়নি। কোনটা ফেলে কোনটা খাই। শেষে নিজের পেটের ক্ষমতা অতিক্রম করে সবকটাই খেলাম। মামিমা বললেন, “ঘাবড়াস না, আমি ওষুধ দিয়ে দিচ্ছি।” এই না বলে ছোট্ট বাটিতে করে বাড়িতে শুকিয়ে রাখা টকমিষ্টি আমলকির টুকরো এনে সামনে ধরলেন। তখনই বুঝে গিয়েছিলাম। শেষে আসবার সময় আমরা যখন বললাম, “কী ভালো রাঁধো তুমি মামি...” আর তার উত্তরে মামি যখন বললেন, “ধুর, ভালো আবার কী। তোদের ভালো লাগলেই আমার ভালো। আবার আসবি কিন্তু, নেমন্তন্ন করতে যেন না হয়...” তখন আমার আর কোনও সন্দেহই রইল না।

স্টারওয়ার্ল্ড যাই দাবি করুক না কেন, আমার মাস্টারশেফের ভোট সুমিতামামিমাই পাচ্ছেন।  
    

Comments

  1. uff! guru tomar biyeta hoye abantor pathak der khub labh hoyechey....post e manikkya gulo berochhe :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. বলছ? থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ।

      Delete
  2. aha...লইট্যা মাছের চচ্চড়ি! pore-e dilta garden garden hoye gelo..dukhho ektai..ai gorom e bajar e tar dekha pawa jachhe na..:(
    achha shutki mach sombondhe apnar ki motamot ache jodi ektu bekto koren..ektu suni...:)

    ReplyDelete
    Replies
    1. শুঁটকি নিয়ে আমার মতামত খুবই সরল সৌমেশ। রান্না হওয়ার আগে নারকীয়, রান্না হওয়ার পরে স্বর্গীয়। ব্যস।

      Delete
    2. Bha..to the point ans..full marks..je bangal shutki bhalobasena...se abar bangal kiser..high five..:D

      Delete
    3. হাই ফাইভ সৌমেশ।

      Delete
  3. Shutki maachh ekta darun pod bote ! Ami nije jaake bole kolkattaiya, kintu khabaar byapare oi bangal-ghoti bhedabhed ta korte motei raaji noi. ota jara kore tara nijerai thoke. Amader paray ek kakima thakten, oshadharon chhilo tnaar haater shutki maachh ranna. Ekhono likhte boshei jibhe jol chole ashchhe !
    eimatro ek thala gorom mangsho bhaat kheye eshe comment lihchhi, tobuo shutki maachher kotha mone porei mon ta kemon udaash hoye gelo.
    olpo laalche gorgore tel goriye pore shutki maachher gaa beye beye, gorom bhaat diye bhaalo kore mekhe, paate ekta knacha lonka niye boshe shei jhaal shutki maachher smriti boroi shukher ebong eki shonge dukkher. Dukkher maane oi khete khete prayi naaker jole chokher jole hote hoto aar ki. Konokrome chokh naak muchhei pher shotaan knacha lonkay aar ekta kaamor. Ahaa !! ki din chhilo sob !!
    "Amaar je din bheshe gechhe, chokher jole............."

    ReplyDelete
    Replies
    1. "olpo laalche gorgore tel goriye pore shutki maachher gaa beye beye, gorom bhaat diye bhaalo kore mekhe, paate ekta knacha lonka niye boshe shei jhaal shutki maachher smriti boroi shukher ebong eki shonge dukkher. Dukkher maane oi khete khete prayi naaker jole chokher jole hote hoto aar ki. Konokrome chokh naak muchhei pher shotaan knacha lonkay aar ekta kaamor. Ahaa !! ki din chhilo sob !!"

      এই ভাবে কি মন খারাপ করে দিতে আছে ভাই?

      Delete
    2. Ami jantam kobita matha theke ba hridoy theke beroy, akhon dekhchi pet thekeo dosturmoto berote pare, othoba karor karor hridoy tai pete odhisthan korte pare! :P :P

      Delete
  4. tomake dekhle saloot korte ichchhe hay, - ki sundor office koreo, garome maromaro hoyeo, ruti chochchori baniyeo, archismandar sathe romance tomance koreo - ato kichchur por-o tumi samay kore erom akkhan jadrel post namiye felo!

    Ar amay dekho, ghoste ghoste nimteto mukhe office ese, saradin faaki mereo, shakbhaja dal namate namatei nakal hoye, bor-ke mukh jhamta diyeo, - ar ami kichchhutir samay manage korte pari na. Dhik ei jibon! (D-i-r-g-h-o-s-h-w-a-a-s)

    ReplyDelete
    Replies
    1. মনস্বিতা, রুটি চচ্চড়ি আমি বানাই না। উত্তম বলে এক ভদ্রলোক বানান, বানিয়ে ডাব্বা করে আমাদের দিয়ে যান, আমরা খেয়ে প্রাণরক্ষা করি।

      একে শাকভাজা তার ওপর আবার ডাল? তুমি তো প্রতিভাবান দেখছি।

      Delete
    2. আর তুমি যে অত্ত ভালো রাঁধ প্লাস এত সুন্দর করে পরিবেশন কর? বুঝলে? তুমি এই শনি রোববার দু দশটি পদ রেধে অর্চিষ্মানদাকে খাওয়াবে.... সুন্দর করে আসন পেতে, হাতপাখা, নিদেনপক্ষে ফ্যান চালিয়ে, পাতের পাশে বসে সনাতন ভাবে, " আমার মাথা খাও যদি আর দুটো ভাত বেশি না নাও" টাইপস... তারপর আমাদের সুন্দর করে গল্পটা বলবে...

      অস্বাভাবিক ভালো লেখ জানি, কিন্তু অবান্তরে এই কিছুদিন আমরা প্রেমের গল্প চাই... সব পাঠকের এক-ই দাবী...

      Delete
    3. এইটা যদি করি, বুঝলে মনস্বিতা, অর্চিষ্মান ভাববে গরমে আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সেটা কি ভালো হবে বল?

      Delete
  5. kuntala, tomar kono ek post e ami amar na parar list er top e mention korechhilum na cooking skill zero howar dukhho? ota eisob onayas-rondhon-potiyoshi der dekhei ashe.. jara kirom ek khabla eta, ek khabla ota chure chhure koray diye, helay ektu nere chere, pore jokhon poribeshon kore, tokhon amrito k competition diye dey. ami to machh-mangsho r thekeo oi niramish torkari, eta bata, ota bhaja eisob e tader skill dekhe mugdho hoe jai..
    jethir theke ei bilupto hoye jawa recipe gulo jene nao, nahole koto je moha-mulyoban moni-manikyo jug poribortone hariye jabe, pore sudhu afshosh i hobe !

    ReplyDelete
    Replies
    1. সিরিয়াসলি গো সোহিনী। আরে জেঠি মহা ঝামেলা করে। যত বলি তেতোচচ্চড়ির রেসিপিটা দাও, হিহি করে হেসে বলে, এই দেখ মেয়ে কী বলে, রেসিপি আবার কীসের। এই তো এটা দিবি সেটা দিবি ওটা থাকলে দিবি না থাকলে দিবি না...এই রকম করে চরম আনসায়েন্টিফিক ওয়েতে কী যে ছাই রেসিপি দেয়, কিচ্ছু মাথায় ঢোকে না।

      Delete
  6. বুঝলে কুন্তলা, লেখাটা তো দিব্য । কথাগুলো একেবারে ঠিক । মিলের দিকটা হল মা'র কাছে শুনেছি আমার ঠাকুমা ওই নিজের রান্নাটুকু করতেন ,তার বেশি নয় । এদিকে আমার পিসিরা এবং তাদের মেয়েরা একেকজন দিকপাল ডাকসাইটে রাঁধুনি । তোমার ওই মামি আর জেঠির মতো । আমার মা এবং দিদার দিক থেকে কিছু ইঙ্গ বঙ্গ যোগ হওয়াতে আমাদের বাড়িতে খাবার দাবারের ট্র্যাডিশনটা বেশ ভাল সমৃদ্ধ হয়েছে । আমার ভাই একজন অসম্ভব ভাল রাঁধিয়ে।
    মাস্টারশেফটা আমরাও মাঝে মাঝে দেখি । মজার কথাটা হল, আমার ভাই কিন্তু জানে খারকোল কি। মানে আমাদের বাড়ি মাস্টারশেফদের গ্যালাক্সি । তবে কিনা in laws রা এব্যাপারে ঠিক সুবিধের নন ।

    মিঠু

    ReplyDelete
    Replies
    1. যাক, খারকোল আর কেউ জানে না দেখে আমার নিজেরই সন্দেহ হচ্ছিল। এত বছর ধরে কি ব্যাপারটা আমি গোটাটাই কল্পনা করে এসেছি নাকি? এত প্রতিভা কি আমার থাকতে পারে? নেই সেটা জেনে শান্তি পেলাম।

      তোমাদের বাড়িতে এত লোক ভালো রাঁধতে পারেন যেন খুব ভালো লাগল মিঠু। এ শিল্পটি উবে যেতে বসেছে প্রায়।

      Delete
    2. লীলা মজুমদারের রান্নার বই পড়াটা একটা আলাদা আনন্দ । এদিকে ঠাকুরবাড়ির প্রজ্ঞা সুন্দরী দেবীর দুই খণ্ড রান্নার বই কী সুন্দর ডকুমেন্টেশনের দৃষ্টান্ত । অথচ আমাদের বাড়িতে এনাদের জিজ্ঞেস কর কিছুতেই উদ্ধার করতে পারবে না পুরো ব্যাপারটা । মন্ত্রগুপ্তির মত । তবে হাতের তার কি আর শেখানো যায় ? হাতা কড়াই খুন্তি?না রাঁধে তোমার মনটি । এরা সক্কলে খুব নির্মল মনের মানুষ । এরাই হারিয়ে যাচ্ছে দ্রুত ।

      মিঠু

      Delete
    3. আমি তো অনেকসময় গল্পের বইয়ের অভাব হলে লীলার রান্নার বইটা পড়ি। কী ভালো না? আচ্ছা আমাকে একটা কথা বল মিঠু। আমি রোজ আনন্দ-তে গিয়ে একবার করে প্রজ্ঞাসুন্দরীর বইদুটোয় হাত বুলিয়ে রেখে আসি। কিনে ফেলব?

      Delete
    4. যদি রান্নার আগ্রহ থাকে বা রান্নার বই পড়তে ভাল লাগে তবেই কিনো ।

      মিঠু

      Delete
  7. 1. Lebugunda kader bole?
    2. Murgi'r bora kirokom hoy?

    Amar pishi r kakader biye amader bari tei hoyechilo. Tokhon biye'r 7din aagey theke lokjon aste thakto barite. Tai local cook 'Banamali' ke khobor deoa hoto. Tini oi 7 din + biye'r kodin dupur bela'r ranna korten. Songe asten ekjon jogare. Komore gamchha bendhe, shil nora tei oto moshla bete, bishal bishal korai te oto loker khabar ranna korten. Proti ta khabar darun hoto khete. Specially ekta kanta-chochchori ba chhyachra jake bole. Oi tradition ta hariye jachhe. Onarao kichu kom masterchef na. Shesh amar mastuto didi'r biye khelum, puro ranna tai caterer ra koreche. Ami toh oi kanta-chochchori miss korchilam. :(

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে টিনা, আমাদের রিষড়ায় লেবু নামের এক ভদ্রলোকের একটা গুণ্ডার দল আছে। খুবই বিখ্যাত দল। সেজন্যই বললাম লেবুগুণ্ডার দল।

      মুরগির বড়া-টা আমি একটু কায়দা করে বলেছি আরকি। মামি বানিয়েছিলেন চিকেন কাবাব। আমি আবার বাঙালিদের ননবেঙ্গলি রান্নাকে ঠেস দিয়ে পোস্ট লিখছিলাম কি না, তাই কাবাবকে কায়দা করে বড়া বলে চালাচ্ছিলাম আর কি।

      বনমালী যাঁর নাম তিনি যে রাঁধবেন সে নিয়ে কারও কোনও সন্দেহই থাকতে পারে না। তোমার সঙ্গে আমি একমত টিনা, কোনও ফিশ মুনিয়ার ঠাকুরদার সাধ্য নেই কাঁটাচচ্চড়ির সঙ্গে পাঙ্গা নেয়।

      Delete
    2. aami kintu pantha chorchori khabo...mane bandhakopi'r main dnata aar panthar baan dite panjor er haar...sange chota kancha lonka, ektu ada ektu hing.

      Delete
    3. আম্মো খাব।

      Delete
  8. এমন একটা জিনিস প্রমাণ করার জন্য লিখলি যেটা সবাই জানে। সুমিতামামিরা ভোট পাবেন না তো কি ওরা পাবে নাকি? :O

    ReplyDelete
  9. ২০১১-র পয়লা বৈশাখ সল্টলেক এর অনেকগুলো রেস্তোরাঁ ঘুরে দেখেও খেতে পারি নি - কেনো জানো? সব জায়গায় মাটির থালায় শুক্তো আর কচি পাঁঠার ঝোল পাওয়া যাচ্ছিলো। দাম অন্তত: ৩৯৯ টাকা। শেষে Family Chicken-এ এই উপদ্রব থাকবে না এই আশা নিয়ে গিয়ে মুর্গী ভাজা, মুর্গীর ঝাল, টক মুর্গী এইসব খেয়ে প্রাণ ধারণ করি। !@#%^$&* মুগের ডাল, ভাত, শুক্তো খেয়ে ৪০০ টাকা দেওয়ার চেয়ে গলায় কলসী বেঁধে জলে ডুব দেওয়া ভালো।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সিরিয়াসলি কৌশিক। আমি চাইনিজ, জাপানিজ, বার্মিজ সব দোকানে খেতে যেতে রাজি হই, কেবল ও ক্যালকাটা মার্কা রেস্টোর‍্যান্টে যেতে আমার পা সরে না। প্যান ফ্রায়েড লেডিসফিংগার দেড়শো টাকা প্লেট কিনে খেতে আমার কান্না পায়।

      Delete
  10. আমার দিদা মানে ঠাকুমার কিছু সিগ্নেচার ডিশ ছিল যেমন- পটল সেদ্ধ (পটল আগে উনুনের নিভু আঁচে হাল্কা পুড়িয়ে নিয়ে তারপর নারকোল, কাঁচালঙ্কা আর সর্ষের তেল দিয়ে মাখা), মটর ডাল সেদ্ধ (তার ও বিশেষ রেসিপি ছিল), কলমি শাকের ঝোল, পালং শাক ভাজা, ডুমুরের তরকারি- আরে লিখতে গিয়ে দেখছি দিদার সবকটা ডিশ ই সিগনেচার ডিশ আমার কাছে!!!
    আর আমার দিদুভাই মানে দিদিমার হাতের ভুনি খিচুরি, নারকোলের পায়েস, পাঁঠার মাংশ, কুচো চিংড়ি দি লাল শাক এখনো মুখে লেগে আছে
    আজ দিদাও নেই, দিদুভাই ও নেই...এই স্বর্গীয় পদগুলো আর জোটে না!!!!
    আমার মার হাতের রান্নাও বেশ খ্যাতি প্রাপ্ত আর তাঁর প্যাশনও রান্না. আমার বিয়ের পর আমারা যখন দ্বিরাগমনে আসি আমার মা সব দিদাদের নেমতন্ন করে খাইয়েছিল. দিদারা এবং তাদের সবার পরিবার এবং আমাদের সকলকে নিয়ে জনা ৪০ জন ছিল. মা আর আমার বৌদি তাদের সবাইকে রান্না করে খাইয়েছিল মা নিরামিশ-সুক্তো, সোনামুগের ডাল নারকোল কুচি দিয়ে, লালশাকের ঝোল, ইঁচোড়ের তরকারি, পাঁর রকমের ভাজা আর আলু ছান্র ডালনা আর পায়েস. বৌদি আমিশ পদগুলো করেছিল- চিংড়ি মাছের মালাইকারি আর পাঁঠার মাংশ. সবকটা পদই অসাধারন ছিল!
    আর আমি আমার মেয়ের জন্মদিনে ১০ জনের রান্নার কথা ভেবেই আঁতকে উঠি!!!! আরপর যা রাঁধি তা মা, দিদিমা, ঠাকুমা এমনকি বৌদির কারুর ই ধারে কাছে আসে না!!!
    বাইরে গিয়ে মুগের ডাল, ভাত, শুক্তো খেয়ে পকেট খালি করতে মন চায় না. তার থেকে আমার চাইনিজ ই ভালো!!!
    তবে কি জানো তো মাস্টারশেফ আমার মত ফাঁকিবাজদের জন্য বেশ ভালো অনেক আইডিয়া পাওয়া যায়...আর চটজলদি ভরাট নাম দিয়ে ফাঁকিবাজির খাবার তারী করা যায় :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. ওরে বাবা দেবশ্রী, তোমাদের বাড়িতে তো রান্নার মহামহোপাধ্যায়রা থাকতেন মনে হচ্ছে। ইস, লালশাকের ঝালটা এক্ষুনি খেতে ইচ্ছে করছে গো। কী হবে...

      মাস্টারশেফ দেখে তুমি আইডিয়া পাও! বাড়ির ভালো রান্নার জিনটা তুমিও পেয়েছ তার মানে। আমার তো ওঁদের রান্না সব ট্যান হয়ে যায়।

      অবান্তরে প্রথম কমেন্ট বুঝি? স্বাগতম।

      Delete
  11. eirakom ekta post ar tar sob comments pore mone hochhe ... jibontai britha. Tar modhye abar Lila Majumdar...amar kachhe ekhon nidenpokhye ekta hojmigulio nei ... ki dukhuu.

    ReplyDelete
    Replies
    1. সেকি বাঙালি হয়ে হজমিগুলি ছাড়া চলাফেরা করেন ইচ্ছাডানা?

      Delete
    2. Setai to, bhulei jai LIla Majumdar bole gachhen, khider byapare onyer upor nirbhorsil na hoe du ekta hojmiguli niden pokhye adhchibano chewing gum kachhe rakhte, kal je somoi ei post ar comments porchhilam takhon hater kachhe kono sukhadyo chhilona. Ar eisob recipe ar khabarer nam pore to ..... kichhuu randhtei sikhini ami Kuntala..... dukhyo ki sadhe.

      Delete
  12. এত ভালো ভালো রাঁধুনিদের গল্প হল, আর ধনঞ্জয়ের নাম নেই? যিনি ঝাল, ঝোল, ডালনা, কালিয়া, মুগের ডাল নারকোল দিয়ে, অড়হর ডাল হিং দিয়ে, মটর ডাল চালতে দিয়ে রান্না করতে পারেন? যিনি বাঁধাকপির মেন ডাঁটা, পাঁঠার বাঁদিকের পাঁজরের হাড়, ছটা কাঁচালঙ্কা, একটু আদা, একটু হিং দিয়ে পাঁঠাচচ্চড়ি রাঁধতে পারেন?
    এই লেখাটা আর ওপরের কমেন্টস গুলো পড়ে মনে হল গিয়ে একটু মাটন কিনে আনা যাক, আজ রাতে কষা মাংস খাওয়া যাবে। তারপর মনে হল একটু বেশি করে মাটন কিনে আনলে কাল একটু বিরিয়ানি করা যাবে। তারপর মনে হল দু লিটার ফুলক্রিম দুধ কিনে আনলে পায়েস করা যেতে পারে। একটি দেড় কিলো ওজনের ইলিশের লোভও মনে জেগেছিল, কিন্তু গুগল ম্যাপে দেখাচ্ছে যে আমার বাড়ি থেকে সিআর পার্ক এক নম্বর মার্কেট পঁচিশ কিলোমিটার।
    যাই, উঠি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. :-) bhabnagulo darun :-)

      Delete
    2. amar abar dhananjoy er koi poyodhi ta beshi pochondo!

      Delete
    3. দেবাশিস, আপনি কি গতকাল আমাদের পাড়ায় ফাইন্যালি মাছ কিনতে এসেছিলেন?

      Delete
    4. bhabna gulor koddur kaje porinoto holo jante ichhe korchhe :)

      Delete
    5. নাঃ আসিনি। ইনফ্যাক্ট, মাটন বা দুধ কিছুই কিনিনি। তার একটা বড় মর্মবিদারক কারণ আছে, পরে কোনদিন ফুরসৎ পেলে বলব।

      Delete
  13. Ei post tate ranna, masterchef,sumita mami r ranna esob niye kichu bolbona. jeta bolbo seta hoche dujone kamon eksathe bose dinner korcho r enjoy korcho bolo.biyer age tomar mone hoto na kivabe sobkichu share korbo and all.etar moja ta abar onyorokom.khuub bhalo thako, chutiye prem koro r masterchef dekhte dekhte aro beshi beshi ruti khao......haha

    ReplyDelete
  14. Master-blogger er kono competition hochhe naki? amar vote kintu tomar dike :-)

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ স্বাগতা।

      Delete
  15. ei lekhata barbar pori kintu lekha hoye othena..amar room partner obosso ei masterchef dekhe bole nah tomar dara holona..ete amar dukhoo nei,kintu maa-thakumar moto radte parina keno ke jane? thakumar hater kochur sak,kharkol pata bata ahhaa..tobe loitya mach ta amio ropto korechi kichu maharastrian bandhur theke oi mach bhaja kore baba-maa ke khaiye procur prosongsha peyechi.ora obosso sob kichutei bhalo bolen..je meye rannar dhar dhartona se kina loitya mach kore khawachee..tumi erokom lekha aro lekho.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আহা রে, আরও একজন খারকোল বাটা জানে। মন ভরে গেল সুমনা।

      Delete

Post a Comment