তবু যদি কখনো



কেমন আছেন? সপ্তাহান্তে কী করলেন? ডার্ক নাইট রাইজেস দেখলেন নাকি? কেমন হয়েছে? আমারও দেখতে যাওয়ার কথা ছিল এসপ্তাহে, কিন্তু লোকজন জুটিয়ে, মেলের পর মেল পাঠিয়ে, হাতে পায়ে তেলমালিশ করে, সবার সব সুবিধে অসুবিধের জায়গা করতে করতে শেষপর্যন্ত আর যাওয়াই হল না। আমারই দোষ। একা একা চলে গেলেই হয়। কিচ্ছু খারাপ লাগে না একা একা সিনেমা দেখতে, আমি পরীক্ষা করে দেখেছি। বরং অনেক বেশি ভালো লাগে। পপকর্ন খেতে খেতে হাহা হাসো, ফ্যাচফ্যাচিয়ে কাঁদো---কে কী ভাবল, আমার বোকামো দেখে হাসল কিনা সেসব নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না। ইন্টারভ্যালে বাথরুমে লম্বা লাইন দিয়ে ফিরতে ফিরতে সিনেমা শুরু হয়ে গেলে “এক্সকিউজ মি এক্সকিউজ মি” বলতে বলতে সবার পা পাড়িয়ে সিটে এসে বসে পাশের লোককে টোকা মেরে “কী হল দাদা এতক্ষণ?” জেনে নিলেই হয়। কেউ কিচ্ছু মাইন্ড করে না, বরং হাত পা নেড়ে অভিব্যক্তি সহযোগে গল্প বলতে পেরে বর্তেই যায়। কিন্তু সিনেমা দেখতে যাওয়ার আগে এত কথা মনে থাকলে তো। সমাজবদ্ধ জীব হওয়ার এই ঝামেলা, সব ব্যাপারে প্রথমেই দল পাকানোর কথা মাথায় আসে। আইসক্রিম খেতে যাবি রে? সিনেমা দেখতে যাবি রে? দোলনা চড়তে যাবি রে?

যেন একা যাওয়ার নিয়ম নেই। গেলে পুলিশে ধরবে। জঘন্য। সিরিয়াসলি জঘন্য।

মেজাজটা এই মুহূর্তে একেবারে গাঁদালপাতা-তেতো হয়ে আছে। জীবনের যেসব ছেঁড়াফাটাগুলোর ওপর অবান্তরের কম্বল চাপা দিয়ে ভুলে থাকি রোজ রোজ, সেগুলো একটু আগে দাঁতনখ দেখিয়ে গেল। আমার হাসি হাসি মুখখানার ওপর দুখানা হেভিওয়েট ঘুষি বসিয়ে, কানটা কষে মুলে, নাকটা জোরসে টেনে, বক দেখাতে দেখাতে আবার যে যার জায়গায় ফিরে গেল।

কী ভালো ভালো গম্ভীর আর্থসামাজিক বিষয়ের ওপর দুখানা পোস্ট ভেবে রেখেছিলাম অবান্তরের জন্য, লেখা হলনা। কাজেই এখন আবার একটা হালকাচালের পোস্টই লিখতে হবে আমাকে। যত না আপনাদের জন্য তার থেকে বেশি নিজের জন্য। আপনারা বুঝবেন জানি। বুঝবেন না?

*****

আমাকে ছোটবেলায় সকালে ঘুম থেকে উঠে আর রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঠাকুরকে নম করতে শেখানো হয়েছিল। মনে মনে বলতে বলা হয়েছিল---ঠাকুর যেন সবাই ভালো থাকে, যেন আমি বড়দের কথা শুনে চলি, যেন আমার পড়াশোনায় মতি থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি। সকালে ঘুমচোখে নম-র ব্যাপারটা কী হত, বা আদৌ হত কিনা আমার মনে নেই। কিন্তু রাতেরটা স্পষ্ট মনে আছে। কারণ রাতে ঠাকুরের কাছে আমি আমার মনের সব কথা খুলে বলতাম। রাখঢাক না করে। যেমন ধরুন, ঠাকুর বুচিদিদি যেন আমাকে ওর চাঁদমামাটা পড়তে দেয়। বা কাল স্কুলে যেন দ আমার পাশে বসে। পরিস্থিতিভেদে চাওয়াগুলো পাল্টে পাল্টে যেত। কিন্তু যে প্রার্থনাটা কখনও বদলাত না সেটা হচ্ছে, “ঠাকুর আজ রাতে যেন আমাদের বাড়িতে ডাকাত না পড়ে।”

এত কিছু থাকতে হঠাৎ ডাকাত কেন সেটা বুঝতে হলে আপনাদের তৎকালীন রিষড়ার আর্থসামাজিক পরিস্থিতিটা একটু জানতে হবে। চারদিকে টপাটপ কারখানা বন্ধ হচ্ছে আর তার সাথে জিওমেট্রিক প্রোগ্রেশনে বাড়ছে ডাকাতদলের সংখ্যা। একবছরের মধ্যে খুব কম করে হলেও পাঁচটা বাড়িতে ডাকাত পড়েছে আমাদের পাড়ায়। ডাকাতদের রুখতে গিয়ে কম করে হলেও সাতজনের মাথা ফেটেছে, কানের দুলের সঙ্গে সঙ্গে জনাপাঁচেক মহিলার কানের লতিসুদ্ধ ছিঁড়ে ডাকাতের হাতে চলে এসেছে, ডাকাতদলের ছোঁড়া বোমায় পাড়ার আরও অনেকের সাথে আমার সেজকাকু আহত হয়ে হাসপাতালে গেছেন---সে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। মাৎস্যান্যায়।

ছবি গুগল ইমেজেস থেকে

ঠাকুর আছেন কিনা জানিনা, আমার প্রার্থনার জোরে কিনাও জানিনা, তবে আমাদের বাড়িতে ডাকাত পড়েনি। ইন ফ্যাক্ট কিছুদিনের মধ্যে গোটা অঞ্চল থেকেই ডাকাতির হিড়িকটা চলে গিয়েছিল। ডাকাতেরা সব ডাকাতির পয়সায় বড়লোক হয়ে গিয়ে মাফিয়াগিরিতে প্রোমোশন নিয়ে চলে গেলেন। তারপর থেকে তাঁরা একে অপরকে টাইট দিতেই ব্যস্ত থাকতেন, মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবীর বাড়ির গোদরেজ আলমারি ভেঙে হাত গন্ধ করতেন না।

আমার বিশ্বাস, ওই সময় নাগাদই ঠাকুরকে নম করার ব্যাপারটা আস্তে আস্তে আমার জীবন থেকেও বিদায় নিল।

কিন্তু আবার সেটাকে ফেরত আনার দরকার পড়েছে মনে হচ্ছে। গত মাসে আমার পাড়ার দুটি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন কীভাবে লেগেছে কে জানে। গুজব বলছে না নেভানো সিগারেট থেকে। যেখান থেকেই লাগুক লেগেছে যে সেটাই সত্যি। মাঝরাতে হঠাৎ কানের পর্দা ফাটানো তীক্ষ্ণ সাইরেনে ঘুম ভেঙে আকাশে গনগনে কমলা আভা দেখেছি। সারা পাড়ার লোককে ভয়ার্ত মুখে গুটিগুটি রাস্তায় জড়ো হতে দেখেছি। জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে দমকলকর্মীদের লাফ মেরে ঢুকে যেতে দেখেছি, যাঁদের বাড়িতে আগুন লেগেছে তাঁদের কান্নায় ভেঙে যাওয়া মুখ দেখেছি, শোকে পাথর হয়ে যাওয়া দৃষ্টি দেখেছি। ওই গরম আঁচের নিচে দাঁড়িয়েও বুকের ভেতরটা সাইবেরিয়ার মতো ঠাণ্ডা হয়ে গেছে।

আর এতবছর পর মাথার ভেতর আবার সেই গলাটা ঘুম ভেঙে উঠে বসেছে। ভরগ্রস্তের মতো ক্রমাগত উচ্চারণ করে গেছে “ঠাকুর আমার সঙ্গে যেন না হয়...না হয়...না হয়...”

যাই হোক। ভালো ব্যাপারটা হচ্ছে দুটো ঘটনাতেই প্রাণের ক্ষতি কিছু হয়নি, যা গেছে কাঠ কংক্রিটের ওপর দিয়ে গেছে। ইনশিওরেন্স কম্পানিরা সে ক্ষতি পূরণ করে দেবে।    

তবুও সবাই এখনও সতর্ক। নাগরিক মিটিং হয়েছে। বেসিক সাবধানতার ব্যাপারগুলো আরেকবার করে ঝালিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার অঙ্গ হিসেবেই আমি বাড়ি ফিরে কয়েকটা জিনিস একজায়গায় করে রেখেছি। আগুন যদি লেগেই যায় তাহলে যাতে শুধু সেগুলো হাতে নিয়ে ছুটে বেরিয়ে আসতে পারি। পাসপোর্ট। সারাজীবন ধরে তিলে তিলে জমানো ছাতার মাথা সার্টিফিকেটের বান্ডিল। টেবিলের ওপর রাখা ফোন, হ্যান্ডব্যাগ, ল্যাপটপ, চাবির গোছা। পুরোনো ছবির খাম। কয়েকটা হলুদ হয়ে যাওয়া চিঠি। ঠাকুমার দেওয়া সোনার আংটিটা। মেজমামির দেওয়া মুক্তোর দুলজোড়া।

বইয়ের আলমারিটার দিকে তাকিয়ে শুধু কান্না পেয়ে গিয়েছিল। বইগুলো চাইনা, বইয়ের ভেতরের হাতে লেখা শব্দগুলো যদি তুলে নিয়ে যেতে পারতাম। মাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরোনোর পর গীতবিতান গিফট করেছিল ছোটনদি, আর “স্নেহের সোনাকে” ‘সেই সময়’-এর দুটো খণ্ড বইমেলা থেকে কিনে দিয়েছিল সেজমাসি । অসংখ্য বইয়ের শুরুতে পাতায় পাতায় লেখা “আমার সোনাকে মা”, অসংখ্য বইয়ের শুরুর পাতা থেকে “জন্মদিনে সোনাকে অনেক ভালোবাসা সহ, বাবা ও মা” শব্দগুলো আমার দিকে চেয়ে আছে। এগুলোকে ফেলে কী করে যাব আমি? কোথায়ই বা যাব?

শেষপর্যন্ত শুধু মলাটছেঁড়া ধুদ্দুড়ে “পথের পাঁচালী”টা ব্যাগে ঢুকিয়ে রেখেছি। আর গানের খাতাদুটো। একটায় সা রে গা মা থেকে শুরু করে শুদ্ধ কল্যাণ। আরেকটায় “শুকনো পাতার নূপুর পায়ে” থেকে শুরু করে “ভরিয়া পরাণ শুনিতেছি গান”। ওদুটো তো শুধু গানের খাতা নয়, ক্লাস থ্রি থেকে থার্ড ইয়ার পর্যন্ত কুন্তলার হাতের লেখার অভিযোজনের প্রামাণ্য দলিল। পেনসিল থেকে কালিপেন হয়ে সেলো গ্রিপারে উত্তরণের কাহিনী। মাধ্যমিকের মার্কশিট গেলে যাক, ওদুটো গেলে আমি আর উঠে দাঁড়াতে পারব না।

আমি কক্ষনো চাই না আপনাদের কারো সঙ্গে কোনোরকম দুর্ঘটনা ঘটুক। আপনারা সবাই স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে সুখে জীবনযাপন করুন এই আমার একমাত্র কামনা। তবু। তবু যদি কখনো এককাপড়ে বেরিয়ে আসতেই হয়, তাহলে সঙ্গে করে কী কী নেবেন আপনি?   

Comments

  1. Shotyi, haate taali maarte hoto bole Gupir tobu Bagha laagto, aamra je keno beraate berole lok khuji ke jaane, aamio khuji, othocho maane hoy na kono...

    Aar aagun laga proshonge boli, kichhudin aage ekdin aami ready-to-cook noodles gorom korte diyechhilam University'r ekta microwave-e....Kintu bebhul hoye paatre jol na diye shukno noodles dhukiye diyechhi...sheshmesh pure-ture eksha...aar poraar gondho beriyechhe baire...shei shune emergency siren baajiye, police deke main entrance atke diye chonga phnuke bipod-shonket diye se ek mahabharat srishti korlo University.....chaaridike police-e chhoylaap...emon shomoy amaar monche aagomon...shob police-er shaamne diye collar tule gotgotiye hnete giye microwave-er bhitor theke noodles-er paatro-ta jokhon ek jhotkaay baar kore ekta taachchhilyer haashi chhure dilam police-kuler dike, amaar bhul-er jonto amay boka to durer kotha , shobai kemon bheble giye shurshur kore shore porlo nijeder bokaami dekhe...aar omni aamio mone mone michki haashi heshe taader bollam, "Elementary, my dear Watson."...jore bolaar shahosh hoyni jodio..:)

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাবাঃ শ্রমণ একেবারে অ্যাডভেঞ্চার করে ফেলেছ তো। তবে তুমি খুবই সাহসী ছেলে। আমি হলে পত্রপাঠ অকুস্থল ত্যাগ করতাম। নুডলসের মায়া ত্যাগ করে।

      Delete
  2. কে জানে, আমি তো আবার বেড়াতে যাওয়া মানে দল পাকানোই বুঝি... ছোট, সমমনস্ক বন্ধুর দল। নইলে "ওই দেখ কাঞ্চনজঙ্ঘা" থেকে শুরু করে "আহা, এখানে যদি থেকে যাওয়া যেত"... বলবো কাকে? অচেনা, তোম্বামুখো, মাঙ্কিক্যাপ পরা লোকটাকে, নাকি তার ছিচকাঁদুনে বাচ্চাকে? :)
    দেখে এলুম TDKR, (বন্ধুবান্ধব নিয়েই) তোফা হয়েচে... দেখে আসুন।

    ছোট বেলায় একবার স্যার লিখতে দিয়েছিলেন, 'ঘরে আগুন লাগলে কি বাঁচাবে'... কেউ লিখেছিল বাবা, কেউ মা, কেউ পোষ্য। একজন লিখেছিল হট হুইল্‌স্‌ এর গাড়িগুলো, আর আমি লিখেছিলাম- 'চুক আর গেক'... এটা মনে আছে, কারণ হট হুইল্‌স্‌ এর কথাটা জেনে আমার ভারি দুঃখ হয়েছিল... তাই তো! ওটার কথা তো ভাবিনি!
    এখন? সার্টিফিকেট আর পরিচয়পত্রের কথা ভাল বলেছেন... ওগুলো অবশ্যই, তার সাথে বোধহয় থাকবে বাঁশিগুলো,ক্যামেরা(কোন সেন্টিমেন্টাল মূল্য নেই, নেহাতই আর একটা কেনার ক্ষমতা নেই বলে) আর কিছু পুরনো ছবির অ্যালবাম, যাদের নেগেটিভও আর নেই... যে বইগুলো পড়া হয়নি, সেগুলোর জন্য বেজায়, বেজায় খারাপ লাগবে...

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্রথমেই দুটো প্রশ্ন করি।

      --দল পাকানোর প্রেফারেন্সে সমমনস্কতা বুঝলাম কিন্তু "ছোট" কেন?

      --চুক আর গেক কী?

      তুমি ভাগ্যবান সুনন্দ। লোকে তোমার সাথে বেড়াতে বা সিনেমা দেখতে যেতে রাজি হয়। আমার সাথে হয় না।

      Delete
    2. এই রে, বিশেষণটা ঠিক জায়গায় পড়েনি তো? মানে বন্ধুরা ছোট নয়, দলটা ছোট।
      আর যদি সেটাই প্রশ্ন হয়, তবে বলবো, খেয়াল করে দেখেছি, দল বড় হলেও বিশেষ চাপ হয় না... কিন্তু ওই 'এক যাত্রায় পৃথক ফল' ব্যাপারটা হয়, বেশি রকম- সেই যে আমাদের বেড়ানোর গল্পে অরুণাভ লিখেছিল না, একটা দল হাতি দেখল, অন্য দল পেলো না... সেই রকম... আমি না দেখতে পাওয়া দলে ছিলাম :(
      চুক আর গেক: http://www.childrenslibrary.org/icdl/BookPreview?bookid=gaichuk_00900019&route=simple_26_0_0_English_320&lang=English&msg=&ilang=English

      Delete
    3. সুনন্দ হাতি দেখার কথা মনে হয় অরুণাভ লেখেনি...

      Delete
    4. এই হল বেশিদিন গো-এষণা র ফল... "আমায় সাইট করো, আমায় সাইট করো" করেই একদিন মরবি... :P

      Delete
    5. তা মোটেই নয়, ভুল সাইটেশন হলে যদি নম্বর কাটা যায়, তাই বললুম...:D

      Delete
  3. পাঠকের আবদারঃ তুমি একটা 'like' button অ্যাড করে দাও... :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. করে দিয়েছি সংহিতা।

      Delete
    2. এই খুব আর ভীষণ ভালো ছাড়া অন্য অপশন না রাখা ব্যাপারটাকেও আমি 'খুব ভালো' দিলাম...

      Delete
    3. হ্যাঁ, ইয়ার্কি নাকি। আমারই ব্লগে এসে আমাকেই খারাপ বলে যাবে...

      Delete
  4. বাহ্‌, 'ভীষণ ভালো' ব্যাপার... :)

    ReplyDelete
  5. Amader ekta "agun lagar" khub khorak golpo ache. Mt. Rainier berate gechi ami ar Arnab, royechi ekta kather barite. Emon somoy raat 2:30 e fire alarm bajte shuru koreche. Amar emoni ghum, ami uthioni. 10 min amay thelatheli kore Arnab jacket pore, pocket e garir chabi, wallet, etc sob bhoreche. Tokhon ami uthechi. Uthe dorja khule mundu ber kore baire dekhe Arnab ke bolchi, "arey, shuncho! agun legeche!!!"
    Tarpor amader sob niche giye boshalo. Ami bhabchi eke kather bari te agun, ekhon jodi sobai ke ber kore daye, baire to 14 foot borof. Jaboi ba kothay ei t-shirt pore? Tokhon ek moha-murtiman elo, eshe haat tule ghurte ghurte sobai ke bollo, "I'm sorry, my bad!" ki hoyeche byapar ta? Na keu khub gorom jole steam bath type er nichhilo, ei murtiman sei steam dekhe dhoya bhebe fire alarm teneche!!! Chanda kore petano uchit chilo takey amader, kintu nehat kopal bhalo tai chhokra beche gelo :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহাহা রিয়া, তোমার অর্ণবকে আগুন লাগার নিউজ দেওয়াটা ফাটাফাটি। এদের এই সব কিছুতে মাই ব্যাড বলে দেওয়াটা আমার দুচক্ষের বিষ। তাও যদি ব্যাকরণটুকু শুদ্ধ বলত।

      Delete
    2. Sotyi..."my bad" shunlei ami kan khara kore thaktam agey... arey my bad ki? kirokom mone hoy baki ta ar bollo na...my bad luck, bad move, bad decision...kichu to ekta bol!!! Odbhut!!! Ma to ekhane eshe Queen's english bolchilo obhyesh moto. Keu 50% o bojheni. Ami ar Arnab english-to-english translation korchilam, tokhon Ma fyaashh kore uthe bollo - "eder pallay pore dekhi english ta abar shikhte hobe". Kal abar "My Fair Lady" dekhchilam, Dr. Higgins jekhane English bhashar kothay bolche "well, in America they haven't used it for years" shune khub hashi pelo :D :D

      Delete
  6. blog-e jokhon gaaner khatar abirbhaab hoyechhey, tokhon du ekta gaan-o ashuk. ki bolo?

    ReplyDelete
  7. এ দেশে আসার কিছুদিন পরে দুটো অভিজ্ঞতা হয়েছিল |
    একদিন দুপুরে টিফিন খেয়ে ল্যাবের চেয়ারটাকে পিছনে হেলিয়ে দিয়ে কানে গান লাগিয়ে সবে ঝিমুনি এসেছে, হঠাত ফায়ার এলার্ম বেজে উঠলো | বিল্ডিং খালি করতে বলা হচ্ছে | কোনো মতে হেড-অফিসের বড়বাবুর মতন করে লাফিয়ে উঠে বাইরে ছুট লাগালাম | বাইরে গিয়ে দেখি গোটা ডিপার্টমেন্ট সেখানে জড়ো হয়ে আড্ডা দিচ্ছে | কেউ জানেনা কি হয়েছে | আমার খালি মনে হতে লাগলো ইশ ল্যাপটপ টা আনলামনা কেন? যদি সত্যি আগুন লেগে থাকে? যদি পুড়ে যায়? ধনে-প্রানে মারা পড়ে যাব একেবারে | যাই হোক, একটু পরে ক্যাম্পাস সিক্যুরিটি একটা দেশী ছেলেকে কান ধরে বের করে নিয়ে গেল, সে বেচারা পাগলা দাশুর মতন হাত পা ছুঁড়ছে আর বলছে "আমি দেখতে চেয়েছিলাম ফায়ার সিগনালটার ঢাকনা খুললে কি হয় |"
    দ্বিতীয় ঘটনাটা হলো আমাদের এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে | বাড়ি ফিরে সবে গুছিয়ে বসেছি, হঠাত তিনখানা দমকলের গাড়ি এসে দাঁড়ালো, তার পরেই ভারী বুটের আওয়াজ আর দরজায় ঠক ঠক | একজন অফিসার বললেন "বিল্ডিং-এ কার্বন মনোক্সাইড বেশি হয়ে গেছে | এখুনি বাইরে যাও |" আমিও টি শার্টের ওপরে একটা জ্যাকেট চাপিয়ে বাইরে গেলাম | যেহেতু আগুন লাগেনি তাই কিছু নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি | বাইরে গিয়েই খেয়াল হলো যে আমেরিকার অক্টোবর আর দেশের অক্টোবর এক জিনিস নয়, চটি পরে বেরোনোটা উচিত হয়নি, কিন্তু তখন টু লেট | পাক্কা চল্লিশ মিনিট পরে যখন আবার বাড়িতে ঢোকার পারমিশন পেলাম, ততক্ষণে পায়ের আঙ্গুলগুলো ফ্রস্ট বাইট হয়ে বাদ দিতে হবে কিনা তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছি |
    তাই আপনার প্রশ্নে আমার জবাব ওই ল্যাপটপ | আর ফোন | আর ইয়ে.. চাবি | চাবি ফেলে বেরিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত ভয়াবহ - কিন্তু সে গল্প আরেকদিন |

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহাহাহাহাহাহাহা। হোহোহোহোহো সুগত। এ ছেলের হবে। দেশী মগজ যে কী সাঙ্ঘাতিক চেনেনা তো।

      কার্বন মোনোক্সাইড বেশি হয়ে গেছে, সেটা আবার মেপে বার করছে, সেই নিয়ে আবার লোককে জ্বালিয়ে খাচ্ছে। আমার বাবা আমাদের দেশের মডেলটা অনেক বেটার লাগে, যতক্ষণ না লোকে টপাটপ মরতে শুরু করছে ততক্ষণ কেউ চাপ নেয় না, নিজের মনে থাকে। ১২৫ কোটি লোক হওয়ার একটা সুবিধা আছে, প্রাণের দামটাকে লোকে আননেসেসারি ওভারএস্টিমেট করে না।

      Delete
  8. bhari chap kheye gelam lekha ta pore.sotti-e to-ki nebo ami songe?ba bola bhalo ki phele jete parbo?amar bhishon jomanor swabhab.tukro takra kichhui ami prane dhore phelte parina.kauke phelte di-o na.jomte thake,jomte thake.jomte jomte hariyeo jay majhe majhe-kintu amay ora chhare na,ba amio chhere/phele dite parina.baba rag kore bole ekdin ami sob aborjona-jonjal(??!!!) chapa pore mara jabo.
    amar dadur dewa Pelican(jetay ami konodino likhte parini,kintu dadu office a bose likhto),didar bondho hoye jawa biyer ghori,guchcho chithi-amar ek gada diary,boi,cassette,amar ahladi pana putul(ami dhere hoye jawar pore jeta prokashye atmoprokash na korleo amar onek ogochhalo ekanto muhurter songi),amar adh-bhanga purono hoye jawa pencil box gulo,r chhoto hoye asha eitukui pencil(konotay abar pen er khap o atkano atkano),kali shes hoye jawa pen-jar protyek tai kono na kono barer janmodine karur na karur dewa,album...amar list shes hochche na j-amar sob gulor opor bhari moho...:( ei re certificate r konokale pawa prize tize gulo o achhe...ami bodhoy sob aglate aglate purei more bhut hoye jabo r jokher dhoner moto pahara dite thakbo sob ...:P tai ki?

    ReplyDelete
  9. Amaro eki abostha - desher baRite thakle oi bandho hoye jawa ghoRi, chhoto hoye jawa pencil, futo hoye jawa fountain pen ar bhanga pencil box samle berono khub mushkil hoto. Nehat USA te ese chhotto baRite thaki bole ato sahoje laptop ar cellphone bolte parlam.

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই তোমাদের/আপনাদের মতো হোর্ডারদের নিয়ে আর পারা গেল না। আমি তো সব টান মেরে ফেলে দিই। যাতে মায়া বাড়ার চান্সই না পায়।

      তবে পেলিক্যানটা আমিও ফেলতে পারতাম না। ওটা সারিয়ে নাও না হিয়া, নাকি সে স্টেজ পেরিয়ে গেছে? আর তোমার শেষ লাইনকটা প্রায় স্টিফেন কিং-এর নভেলের মতো শোনাচ্ছে। পড়েই শিউরে উঠছি। ওসব কিচ্ছু হবে না দেখ। তুমি তোমার জঞ্জাল আর আবর্জনা নিয়ে মনের সুখে হ্যাপিলি এভার আফটার ঘরকন্না করবে।

      Delete
    2. Pelican ta ektu special jotne thake-besh ohonkari ketay..didar ghori tao.kintu baki gulor mayao boro kothin,bujhle kuntaladi?pencil gulo ke tao oto patta dichchi na.kintu, uffff!!amar chithir jhnapi!neel inland letter-holud post card a chena hater lekha- sei 5 bochhor theke shuru kore 25 par kora chithir pahar-eke take lekha obantor prolaper firti uttor.ekhon chaileo oneker thekei r sara milbe na.tai purono guloi sombol.onek na pathano chithi-o ache sei bhire.
      r koto purono pen!prothom bar pen-a lekha shuru korar somoy babar dewa-tarpor bibhinno janmodine pawa.
      koto card,kono tay schooler bondhur hate lekha "happy new year"-konotay byatha pawa premik bondhutir "tobu mone rekho" marka line(segulo o felini!bhabo ekbar!!)- r hale, bhaipor knacha hater lekhay "happy birthday pi"..
      maya katanor sohoj upay jana thakle bolbe please??

      Delete
    3. আছে তো হিয়া, নতুন একটা সর্বগ্রাসী মায়ার খপ্পরে পড়া। যে মুহূর্তে সেই মায়াটা তোমাকে গিলতে শুরু করবে, ওটাই হবে তোমার পুরনো মায়া কাটানোর ব্রাহ্মমুহূর্ত। পেলিক্যান আর দিদার ঘড়ি বাদে, সব গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়ে আসবে।

      তুমি না পাঠানো চিঠিও জমিয়ে রাখো! প্রতিভা।

      Delete
    4. prothom duto line- superlike!ekdom moner kotha bolecho.
      r bujhtei parcho,eta amar-o moner kotha mane ei solution ta amar jana.kintu beronor prochesta nei. :)gongay bhasanor hole seta jekonodin possible.barir ekdom kachhei j!
      protibha?-hmm-esab habijabi te somoy nasto-bhabna opochoy korar jonyo lage hoyto..:) :D
      ami erokom e.hoyto ektu udbhot.afshos nei bishes.asole amar ei maya-r oporeo ekta maya type achhe bodhoy.tai jotoi akkhep kori,r mukhe boli "dhuss!ki j kori"..ami ei byapar ta k enjoy o kori.Bhulswarge chhilo na?"r to para jay na bole sobai akkhep kore,r bhari khusi hoy!"?amaro hoyeche serokom dosha!
      jak,r prolaap boke tomar eto sundor blog tar comment er bhar barate chai na.
      aro lekho.bhalo lagche porte. r tomakeo. :)amar majhe majhei khub bhalobasa pay..tomar lekha porte porte tomakeo besh bhalobaschi mone hochche. :P

      Delete
    5. হিয়া, কী বলব ভেবে পাচ্ছি না। অনেকে অনেক ভালোমন্দ কথা বলেছে এর আগে কিন্তু তোমার কথাটা একেবারে মার দিয়া কেল্লা। এত কিছু লেখালিখি ঘষামাজার পেছনে তো আসল উদ্দেশ্যটা নিজেকে ভালোলাগানোরই ছিল। সেটা সফল হয়েছে দেখে আমি অভিভূত। থ্যাঙ্ক ইউ থ্যাঙ্ক ইউ। প্রাণপণে কামনা করি যেন আমার প্রতি ভালোবাসা আর ভালোলাগা দুটোই তোমার দিনে দিনে বাড়ে।

      মন খুব ভালো করে দিলে হিয়া, সত্যি বলছি।

      Delete

Post a Comment