শুভ মহরৎ



আমার মতে যে কোনও জায়গার সঙ্গে দেখা হওয়ার সেরা সময় বর্ষাকাল। একযুগ আগে যখন দিল্লিতে প্রথম থাকব বলে পা রেখেছিলাম, স্পষ্ট মনে আছে সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। একটানা। এমন ঝম্‌ঝম্‌ও না যে বাবামা অটোর ত্রিপল জোর করে নামিয়ে দেবেন যাতে বাইরে কিচ্ছু দেখার জো থাকবে না, আবার এমন আস্তেও না যাতে একটুও ছাঁট লাগবে না, গা খটখটে শুকনো থেকে যাবে। অটোর সাইডে বসে গলা যতদূর সম্ভব বকের মতো বাড়িয়ে দিয়ে আমি বর্ষার দিল্লিকে প্রাণভরে দেখছিলাম। ঠিক মনে হচ্ছিল আমার সঙ্গে দেখা হবে বলেই পুরো শহরটা স্নান করে উঠেছে। রাস্তার দুপাশের সবুজকে ঘষামাজা করে ঝকঝকে করে তুলেছে, দুরন্ত ধুলোদের বৃষ্টির চড়চাপড় মেরে ঠাণ্ডা করে রেখেছে, গরমের কান মুলে বলেছে, “চুপ করে থাক, নইলে দেখাব মজা।”

ফার্স্ট ইম্‌প্রেশন ইস দ্য লাস্ট ইম্‌প্রেশন। দিল্লি সেদিনই আমার মন ভুলিয়েছিল। তারপর অসহ্য গরমে ভাজাভাজা হয়েছি, অমানুষিক শীতে ঠকঠক করে কেঁপেছি, জুনজুলাইআগস্ট মাস ধরে যখন সারা ভারতের লোক “আর তো পারি না ভগবান, এবার বৃষ্টি থামাও” বলে শনিমঙ্গল নিরামিষ খেয়েছে, তখন পার্থসারথি রকে বসে নীল নির্মেঘ আকাশের দিকে চাতকপাখির মতো তাকিয়ে ভেবেছি, প্রথম দিন যা দেখেছিলাম সে কি তবে মরীচিকা?

তবু ফেরার সময় দিল্লি ছাড়া আর কারও কথা এক নিমেষের জন্যও মনে আসেনি।

কাল দুপুরে অনেক হাঁটাহাঁটির ব্যাপার ছিল। এই অফিস থেকে ওই অফিস। এই টেবিল থেকে ওই টেবিল। মাঝখানে পনেরো মিনিটের ব্রেকে ন্যাতানো দোসা আর তথৈবচ কফি। মাথার ওপর সূর্য দাউদাউ করে জ্বলছিল, পায়ের নিচে ধুলোর সমুদ্র। দুহাতে এত বোঝা যে ছাতা খোলার প্রশ্নই নেই। কাজ সেরে অফিসে ঢোকার মুখে একটা লিমকা না কিনে থাকা গেল না। জানি একেবারে ভুল, তবু দোকানের সামনে দাঁড়িয়েই ছিপি খুলে গলায় উপুড় করে ধরলাম। ঠাণ্ডায় গলার ভেতরটা জ্বালা করে উঠল।

অফিসে এসে দেখি কাজ জমে রয়েছে। সেগুলো দ্রুত সারছি, এমন সময় চিকুর আবির্ভাব।

-বাহার কেয়া হাল হ্যায় দেখা?

-দেখা বলে দেখা? একেবারে চক্ষুকর্ণের বিবাদভঞ্জন করকে দেখা, বাপ্‌রে বাপ্‌। শহর বানিয়েছ বটে একটা।

আমি মনে মনে চিকুর প্রশ্নের উত্তর দিই।

-কিতনা অন্ধেরা ছা রহা হ্যায়...ম্যায় তো অভি নিকল রহা হুঁ।

এত গরমে সাধ করে রাস্তায় বেরোতে চায়, পাগল নাকি? বাইরের অবস্থাটা দেখার জন্য আমি ব্লাইন্ডবন্ধ জানালার দিকে তাকাই।

কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না। ঘুটঘুটে অন্ধকার। দু’সেকেন্ড লাগে আমার ব্যাপারটা বুঝতে। তারপর সিটে বসেই লাফিয়ে উঠি।

-বারিষ!

যার উদ্দেশ্যে বলা সে ততক্ষণে পগার পার। তার সঙ্গে সঙ্গে আমার হাফ খাওয়া চায়ের কাপও।

আমি পাগলের মতো টাইপ করতে থাকি। ছোটবেলায় মাস্টারমশাই যখন কারও হারমোনিয়াম বাজানোর প্রশংসা করতেন, বলতেন, বাব্বা অমুকের আঙুলে যেন ব্যাটারি লাগানো আছে। সেই মুহূর্তে কি-বোর্ডের ওপর আমার আঙুল দেখলেও মাস্টারমশাইকে একই কথা বলতে হত।

কোনওমতে ‘সেন্ড’ টিপে, টেবিলের ওপর থেকে পেন খাতা টিফিনবাক্স ব্যাগে ঠুসে, মুরাকামিকে কোলে তুলে আমি ছুটে রাস্তায় বেরিয়ে আসি। বেরোনো মাত্র ঠাণ্ডা ভিজে হাওয়া জাপটে ধরে। আহ্‌। বৃষ্টি নেমেছে বেশ কিছুক্ষণ। এখন একটু ধরেছে। প্রমাণ হিসেবে রাস্তার এখানেসেখানে জল জমে আছে। পথচারীদের মাথায় রুমাল, মুখে হাসি। না খেতে পাওয়া বদমেজাজি কুকুরগুলো পর্যন্ত একে অপরের সঙ্গে ঢুঁসোঢুঁসি করে খেলা করছে।

আমি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিই। মেট্রোর সভ্য সুশীতল দরজাজানালা আঁটা কামরার কথা মনে করেই শিউরে উঠি। এই স্বর্গীয় মুহূর্তের উপযোগী কোনও বাহন যদি দিল্লির রাস্তায় থেকে থাকে তাহলে সে আর কেউ নয়---সোনালি সবুজে রাঙানো, রাজসিক অটো।

বৃষ্টিকে আমি এইজন্য এত ভালোবাসি। লক্ষ নিয়মের বাঁধন, পুলিশের রক্তচক্ষু, যাত্রীদের অভিশাপ যা পারে না, বৃষ্টি সেটা পারে। অটোচালকদের মেজাজ ভালো করে দিতে। প্রথমজনই রাজি হয়ে গেলেন। সাদরে, “জরুর যায়েঙ্গে ম্যাডাম, আইয়ে, বৈঠিয়ে” বলে নিজেই পেছন ফিরে বোতাম টিপে মিটার চালু করে দিলেন।

ব্যস্‌। পক্ষীরাজের মতো আমরা উড়ে চললাম। হুহু করে চারদিক থেকে হাওয়া এসে গায়ে আসতে লাগল, সঙ্গে সঙ্গে পথভোলা দু-চারটে জলের ফোঁটা। অটোচালকের মাথার সাদা রুমাল জয়পতাকার মতো পতপত করে উড়ছিল। আমার পিঠের কাছের স্পিকার থেকে রেডিও মিরচিতে কান ফাটিয়ে “সাওন বরসে তরসে দিল” বাজছিল। চারপাশের কাঁচতোলা বি এম ডবলিউ, অডি, স্কোডাদের কাঁচকলা দেখিয়ে আমরা এঁকেবেঁকে ছুটে চললাম।

শুধু বড় নয়, বড়লোক হলেও সবাই কেমন হোঁৎকা হয়ে যায়। না হলে কেউ ওই সময় এসি চালিয়ে কাঁচ তুলে রাখে?

ইন্ডিয়া গেট পেরোলাম, দলে দলে আইসক্রিমের গাড়ি লাইন দিয়ে দাঁড় করানো, আইসক্রিমওয়ালারা সেদিনের মত ব্যবসা তুলে দিয়ে গোল হয়ে ভেজা সবুজ মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। লুৎইয়েন’স ডেলহি-র গাছে ঢাকা নরম ছায়ার পথ ধরে চললাম। এ রাস্তা বারোমাসই সমান সুন্দর কিন্তু জলের ছোঁয়া একেও আরও মোহময় করে তুলেছে। ফ্লাইওভারের ওপর থেকে দিল্লির দিগন্ত দেখলাম। স্টেডিয়ামের গোল মাথা, লে মেরিডিয়ানের কাঁচঘেরা শীতল উপস্থিতি, সবুজ জঙ্গল। লাজপতনগরের আপাদমস্তক দিল্লিপনার পাশ কাটিয়ে এলাম। রিকশার লাইন। এর মধ্যেও দুহাতে ভারি শপিংব্যাগ ঝুলিয়ে আন্টিজীরা রিকশাওয়ালাদের সঙ্গে দরাদরির যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। এঁদের ঠকায় কার সাধ্য।

বাড়ির কাছে এসে অটোভাইসাবকে মুক্তি দেওয়া গেল। ঘর তক ছোড় দেতা হুঁ? নেহি ভাইসাব, থ্যাংক ইউ। মুঝে মার্কেট মে যানা হ্যায়। খুচরো ছিল না, ভাইসাব মিটারের থেকে একটাকা কম নিয়েই চলে গেলেন। আরে ম্যাডাম এক দো রুপেয়া মে কেয়া যাতা হ্যায়। আমিও তো তাই বলি। গুটিগুটি মার্কেটের দিকে এগোলাম। মার্কেটের ভেতর ওই কাদা ঠ্যাঙাতে যাওয়ার আমার কোনও সাধ ছিল না। আমার লক্ষ্য ছিল মার্কেটের বাইরে বটগাছের তলার দাঁড় করানো একটা ভ্যানগাড়ি। একজন ভীষণ শান্ত ভদ্রলোক এই ক’মাস সেখানে দাঁড়িয়ে ভুট্টা সেঁকেন। কয়লার ছোট্ট আগুনের ওপর জালি, জালির ওপর ভুট্টা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সেঁকা হয়। এক হাতে ভুট্টা ঘোরে, আরেক হাতে তালপাতার হাল্কা হাতপাখা। আগুনের ফুলকি উড়ে উড়ে ভদ্রলোকের ঘর্মাক্ত কপালে, চুলে লেগে যায়। আজ ওঁর অত কষ্ট নেই। বিক্রিও বেশি হচ্ছে। অনেক ভিড়। 

মিনিট পাঁচেক পর আমার পালা আসে। দু’খানা ভুট্টা খোলায় মুড়িয়ে আমি বাড়ির দিকে হাঁটা লাগাই। ফোন বার করে স্পিড ডায়ালের ‘ওয়ান’ টিপে বলি, “মা চা বসাও। আমি প্রায় এসেই গেছি।”

       

Comments

  1. Ishhh. Ki sundor, ki sundor lekha! Brishtir somoy India Gate er samne ta ekdom breathtaking hoye jay na? Ekta tourist brochure er chhobir moto!

    Kalke amar somosto kaajer barota bajiye ami amar Noidar knaach ghera apisher janla diye shudhu megh dekhechhi. Instant anti-depressant.:)

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ বিম্ববতী। সিরিয়াসলি, কাল বিকেলে দিল্লির আকাশটা একেবারে যাকে বলে ঝিং চ্যাক হয়েছিল, তাই না?

      Delete
  2. এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘনঘোর বরিষায়, এমন দিনে মন খোলা যায়...

    মন খুলে সত্যিই বলতে পারি, যে এটা আপনার সর্বশ্রেষ্ঠ লেখাগুলোর মধ্যে অন্যতম, পড়েই মনটা ভালো হয়ে গেল।

    আমার ছেলেবেলা কেটেছে এমন জায়গায়, যেখানে পরপর তিনদিন বৃষ্টি না হলে সেটা খবরের কাগজের হেডলাইন হত... একি, তিনদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে না? সেই আমি দিল্লি আসার পর মে মাসের এক বিকেলে আপিসে বসে আছি, তখন আমার এক সহকর্মী ছুটে এসে বলল - বাহার বারিষ হো রহি হ্যায়। আমি তো যাকে বলে থ। মানে বাহার বারিষ হো রহি হ্যায় তো এতে এত উল্লাস করার কি আছে রে বাবা! তারপর গত কয়েক বছরে আমি এখানের বৃষ্টিকে মর্যাদা দিতে শিখলাম... বছরে সাকুল্যে হয়তো দশদিন বৃষ্টি হয়, সেলিব্রেট না করলে কি চলে!

    আগে বৃষ্টির পর আমিও গাড়ির কাঁচ নামিয়ে দিতাম... বড়লোক তো হইনি, তবে আস্তে আস্তে বুড়ো হচ্ছি, তাই বোধহয় হোঁতকা হয়ে যাচ্ছি... আজকাল সর্বক্ষণ কাঁচ তুলেই রাখি... বাইরে ঝমঝম বৃষ্টি হয়, আর ভেতরে এসি চলতে থাকে, গান বাজতে থাকে, আমি পরেরদিনের থিংস-টু-ডু গুলোর কথা ভাবতে থাকি। এই আমি ছোটবেলায় সাধ করে বৃষ্টিতে ভিজতাম, জানেন?

    গতকালের বৃষ্টির পর উত্তর প্রদেশের কোন একটা জায়গায় গ্রিড ট্রিপ করেছে, আমাদের সারা রাত কারেন্ট ছিল না। শুনতে পাই, আগামী তিনদিন বিজলি আসবেন কম, যাবেন বেশি। মেজাজটা একটু খিঁচে আছে।

    ওহ, গেল বছর একদিন এক পশলা বৃষ্টির পর আমার মামা আমাকে ফোন করে বললেন- তোমরা তো হে প্রিভিলেজড সিটিজেন, তোমাদের শহরে বৃষ্টি হলে সারা দেশ টের পায়। এনডিটিভিতে প্রোগ্রাম দেখাচ্ছে - এনসিআর মে বরসাত।

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ। আপনি বুঝি বৃষ্টির দেশের লোক? খুব হিংসে করলাম। দিল্লিতে থাকলে বৃষ্টিকে মাথায় তুলে নাচতেই হবে, কোনও রাস্তা নেই। আর হোঁৎকা হবেন কেন বালাই ষাট, আমি ওটা ইয়ার্কি করে লিখেছি।

      Delete
  3. Ishh ei garomer klantir bhitor tomar lekhata jeno bristir sotej snoda gandho die galo. khub khub bhalo likhechho. mon bhalo hoe galo. ar Bristi- r byapartai ekkebare high five naki highest five :-D .

    ReplyDelete
    Replies
    1. হায়েস্টেস্ট ফাইভ ইচ্ছাডানা। বৃষ্টি নিয়ে কোনও কথা হবে না।

      Delete
    2. chhute chhute ekta khabor dite elam, aj ekhaneo bristi porchhe ekhon. sokkal sokkal ei post tai mone hoi bikeler ei sundor bristi nie elo. darun kalo megh ar bristi.

      Delete
    3. ইস্‌ কী লাকি আপনারা ইচ্ছাডানা। আমাদের সেই বিকেলের পর আবার যে কে সেই। জঘন্য।

      Delete
  4. Ehh..ki romantic type lekha..bristi nia romanticism..darun! lekhata porte porte nicher linegulo e mathay elo..r ai lineta besh hoyeche..
    ঠিক মনে হচ্ছিল আমার সঙ্গে দেখা হবে বলেই পুরো শহরটা স্নান করে উঠেছে

    ekdin bristite bikele
    thakbena sathe kono chhata
    sudhu dekha hoye jabe majhrastay
    bhije jabe choti jama matha

    thakbena rastay gari ghora
    dokan paat shob bondho
    sudhu tomar amar hridoye
    bhije maatir shnoda gondho

    ekdin bristite bikele
    mone pore jabe shob kotha
    kotha diye kotha ta na rakha
    fele asha chena chena byatha

    ReplyDelete
    Replies
    1. অঞ্জন দত্তর যে আঙুলে গোনা ক'টা গান আমার ভালোলাগে তার মধ্যে এইটা একটা সৌমেশ। মনে করিয়ে দিলেন বলে অনেক ধন্যবাদ।

      Delete
    2. অসংখ্য ধন্যবাদ সৌমেশ, এই অতি সুন্দর গানটাকে মনে করিয়ে দেবার জন্য। এখন লুপে চলছে। মনটাও কেন জানিনা, ভারী হয়ে যাচ্ছে ...

      Delete
    3. Asol dhonnobad ta Kuntala Banerjee-er pawar kotha..onar lekha theke ai line gulo mathay ase amar..
      Ganta sotti khub sundor..amar o cholche loop e :)

      Delete
    4. এই গানটা আমারও খুব প্রিয়। আর সবচেয়ে প্রিয় লাইন -

      "একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে আমরা ধরা পড়ে যাব দেখ ঠিক,
      ধুয়ে যাবে যত আছে অভিমান, ধুয়ে যাবে সিঁদুরের টিপ।"

      Delete
    5. একটা অদ্ভুত এক্সপেরিমেন্ট করলাম গানটার সাথে। একটা ইউটিউব উইন্ডোতে একটানা বৃষ্টির শব্দ (যেমন 'Rainy Mood') ও চালিয়ে দিলাম। বেশ ভালো লাগল, আর তাই আপনাদের সাথে ভাগ করলাম।

      Delete
  5. phone, ma, brishti, bhutta, cha aar...aar murakami...aha aar ki chai :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমার তো আর কিছু চাই না। কিন্তু আমার বসের কাজ চাই। জঘন্য।

      Delete
  6. কুন্তলাকে ধন্যবাদ এই বৃষ্টি ভেজায় সবাইকে সামিল করার জন্য। এতটাই যে সৌমেশের মন থেকে নেমে এল ঝরঝর বরিষে বারিধারার মত সুন্দর এই কবিতাটা। এটার জন্যও ধন্যবাদ

    ReplyDelete
    Replies
    1. Ebaba..chi chi!! amar lekha noy..eta Anjan Dutta-er ekti ganer line..amar khub e priyo..ami erom romantic line likhte parle amar e jonmo sarthok hoto.. :)

      Delete
    2. বাঃ এটা আপনি আমাদের সবার জন্য লিখে দিলেন, সে জন্যই না হয় ধন্যবাদ থাকল সৌমেশ।

      মালবিকা, ভালো লেগেছে জেনে খুশি। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  7. কুন্তলা......কী ভীষণ ভালো । এখন সারা গায়ে বৃষ্টির গন্ধ, সেঁকা ভুট্টার গন্ধ।
    সৌমেশের কবিতাটা যেন একটা ছবি ।
    আরেকটা কথা, সত্যি বর্ষাকালে কোন কোন জায়গা ভারি ভালো । গত বর্ষায় মহাবালেশ্বর পঞ্চগনি অসাধারণ লেগেছিল ।
    মধ্যপ্রদেশে তামিয়া বলে একটা অখ্যাত জায়গা আছে,সেখানে একটি মাত্র সরকারি রেস্ট হাউস
    আছে শুনেছি , জায়গাটা নাকি যাকে বলে একেবারে বর্ষায় একেবারে অতুলনীয়।
    মিঠু

    ReplyDelete
    Replies
    1. বৃষ্টির পঞ্চগনির ছবি আমি দেখেছি মিঠু, সত্যি অদ্ভুত ভালো। তামিয়া-তে যেতে হচ্ছে তো। থ্যাংক ইউ খবর দেওয়ার জন্য।

      Delete
  8. Dekhecho, ami pathalam bolei kina brishti holo! :D

    Ki sundor lekha! Mon bhalo hoye gelo. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ টিনা, বৃষ্টি পাঠানোর জন্য। তোমাকে আমি অনেক আশীর্বাদ করছি, তুমি যা চাও তাই যেন পাও।

      Delete
  9. তোমার লেখাটা শিমলার কথা মনে পড়িয়ে দিল । পাহাড়ি জায়গায় বর্ষা, বেশির ভাগ লোকই পছন্দ করেনা । কিন্তু শিমলা এত সুন্দর লাগত একেবারে পিকচার পারফেক্ট । মেঘের দল ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে চারদিক ,একেবারে গাভীর মতই চরছে আমাদের আশপাশে ,এক পশলা বৃষ্টি হলেই রামধনু। নিচু জায়গা থেকে মেঘ কুণ্ডলী পাকিয়ে উপরে উঠছে।এ জন্মে ভুলবো না সেই সব ছবি।
    মিঠু

    ReplyDelete
    Replies
    1. তুমি সিমলায় থেকেছ বলেছিলে না মিঠু? ইস কী লাকি।

      Delete
  10. Replies
    1. ধন্যবাদ ধন্যবাদ।

      Delete
  11. Kuntala,
    Lekhata khubi snigdho-sundor, tobe proper borsha aste ekhono anek deri, protibochhor ta aseo na Dilli-te. Tumi to palabe baire, amader ki hobe ?....Tilakmama

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে তিলকমামা, আপনারা প্রেমসে থাকবেন, খাবেনদাবেন মজা করবেন। দেখা হলে আবার অনেক গল্প হবে।

      Delete
    2. ei comment ta porei hatat doiboda, mangsher biriyani aar aam-satya-khejur-kismis chatni mone porchey je :)

      Delete
    3. হাহাহা শম্পা, মোক্ষম ধরেছ।

      Delete
  12. সোঁদর হইসে! কিন্তু একদম প্রথম লাইন-"আমার মতে যে কোনও জায়গার সঙ্গে দেখা হওয়ার সেরা সময় বর্ষাকাল"- এটার সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতার কারণেই একমত নই... আমার সঙ্গে বম্বের দেখা হয়েছিল বর্ষায়, মেঘের ওপর থেকে বিরাট উঁচু পাহাড়ের মতো নিম্বাসের মধ্য দিয়ে সূর্যাস্তের কিছু আগের আকাশ এত ভাল লেগেছিল, যে ভেবেছিলাম মেঘের নিচেও না জানি কত ভাল লাগবে- কোথায় কি- বিচ্ছিরি ঝুপঝুপে বৃষ্টি সারাক্ষণ-ওই স্যাঁতানো আলোয় মেরিন ড্রাইভও ভাল করে ফুটছিলো না...
    অধিকাংশ সময়েই হয়তো তোমার কথাটা ঠিক, তবু আমার কিন্তু বর্ষার বম্বে মোটেই ভাল লাগে না।

    ReplyDelete
    Replies
    1. এখানে বম্বের অনেক জনতা আছে সুনন্দ, তারা তোমাকে ঠ্যাঙাবে। আমি অবশ্য বর্ষার বম্বে দেখিনি, দেখার ইচ্ছে আছে খুব।

      Delete
    2. emmaa naa, borsha-r Bombay khub sundor. ektuo baRiye bolchi na!

      Delete
    3. This comment has been removed by the author.

      Delete
    4. amio sumanar sange akmot,...barshar bombay darun,eito akhoni kirakam jhamjhamie megh deke brishti hocche ar ki sundar thanda haaoa

      Delete
    5. আচ্ছা আচ্ছা বুঝেছি।

      Delete
  13. একমাত্র!! একমাত্র, ঐ লিমকাটার জন্যই এই বৃষ্টি নামলো, এটা বুঝতে পেরেছ তো? '... সঙ্গে সঙ্গে পথভোলা দু-চারটে জলের ফোঁটা' - আহা আমিও ভিজে গেলাম।

    ReplyDelete
    Replies
    1. তবে? কারা যে লিমকার সঙ্গে হতভাগা থামস আপের তুলনা করে আবির...

      Delete
  14. লেখাটা সুন্দর হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই, তবে আপাতত বৃষ্টির বিষয়ে একটু বিরক্তি ধরে গিয়েছে। মা বাবা এখানে এসে থেকে প্রায়ই সপ্তাহে ৪-৫ দিন করে বৃষ্টি চলছে, আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঠান্ডা, যেটা আমার কাছে বেশি না লাগলেও মা বাবার কাছে কলকাতার শীতকালের মতন। কাল বিকেল থেকেও টানা বৃষ্টি চলছে, ফ্লোরিডায় কি ঝড় এসেছে সেজন্য, আজকেও সারাদিন চলবে। বেড়ানোর দফারফা। আপনি হয়ত বলবেন হোঁৎকা হয়ে গেছি, কিন্তু আপাতত বৃষ্টি আর ভালো লাগছেনা।

    আমি অবশ্য চিরকাল এরকম হোঁৎকা ছিলামনা। বৃষ্টি অল্প পরিমানে আমার ভালই লাগে, আর গরমের পর প্রথম বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। মামার ছোটবেলাটা কেটেছে এলাহাবাদে, যেটা গরমকালে বৃষ্টির অভাবের দিক দিয়ে দিল্লিরও ওপরে যায়। সাধারণত ১৫ অগাস্টের আগে বর্ষা নামতনা। তখন হাঁ করে আকাশের মুখ চেয়ে বসে থাকতাম, যদি ভুল করে একটু বৃষ্টি হয়ে যায় কোনদিন। আর আমার সবথেকে প্রিয় বৃষ্টি কিরকম জানেন? সারারাত ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, সকালে উঠে দেখলাম রাস্তায় জল জমে আছে, ইস্কুল ছুটি। কাগজের নৌকো বানিয়ে ভাসানো ছাড়া আর কোনো কাজ নেই সারাদিন। নিউ ইয়র্কের বৃষ্টিতে সেরকম তেজও তো নেই, যে ভালো লাগবে। এমন ভাবে হয়, যেন হবে কি হবেনা ঠিক করে উঠতে পারছেনা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. বুঝেছি। আপনার ছোটবেলার বৃষ্টির সঙ্গে বড়বেলার বৃষ্টি পাল্লা দিতে গিয়ে গোহারান হেরেছে। আমাদের সবারই একই অভিজ্ঞতা।

      Delete
    2. আপনার কমেন্টটা পড়ে এই গানটার কথা মনে পড়ে গেল। আমিও ছোটবেলায় আমাদের জলজমা উঠোনে আদরের নৌকা ভাসাতাম।

      http://www.youtube.com/watch?v=o4nuVLkIfUA

      Delete
  15. Maa aar brishti, dutoi eksathe! bhari moja bolo. kodin ekhaneo jommer brishti hochhe. office e A.C. bondo kore, janla khule gaye haoa lagiye ghurghur korchi amra. Besh araam hochhe.

    ReplyDelete
    Replies
    1. ইস্‌ কী মজা তোমাদের সুমনা।

      Delete
  16. 'ফার্স্ট ইম্‌প্রেশন ইস দ্য লাস্ট ইম্‌প্রেশন'-ই বটে । আমি দিল্লীতে প্রথম যাই মে মাসের চাঁদিফাটা গরমে। গরমের ঠেলায় আর পেটখারাপে কাহিল হয়ে (তার জন্য অবশ্য হোস্টেলের খাবারও দায়ী) যেদিন কলকাতায় পালিয়ে এলাম সেদিনই কলকাতায় বৃষ্টি নামল। জটায়ুর ভাষায় "From the frying pan to the Frigidaire"। সেই বিভীষিকা কোনদিন ভুলব না। এখন অবশ্য দিল্লী আমার মনে একটা তুলতুলে কোন (soft corner) করে নিয়েছে কারণ প্রতিবার দেশে ফেরার সময় আমি দিল্লীতে থামি আর কলকাতার ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষার ওই দু-তিন ঘন্টার মত আনন্দের মুহূর্ত আমি জীবনে খুব কমই কাটাই ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই তো মুশকিল। তুমি বেশি সময় নিয়ে দিল্লিতে এস পিয়াস, ইন্ডিয়া গেটে দাঁড়িয়ে লিকললিস/চুসকি খাও, তুঘলকাবাদের ভাঙা পাঁচিলে বসে পা দোলাতে দোলাতে রবীন্দ্রসংগীত গাও, আমি কথা দিচ্ছি ভালো লাগবে।

      Delete
    2. তাহলে পরেরবার কলকাতার পথে দিল্লীতে দুটো দিন কাটিয়ে যাই, কি বলেন? আমার কিন্তু পুরনো দিল্লীর চার্মটা ভালই লেগেছিল, বিশেষ করে কুতুবের চারপাশটা - তখনই আবার নারায়ণ সান্যালের 'লা জবাব দেহলী'-টা পড়ছিলাম কিনা। ওই গরমটাই সব মাটি করে দিল!

      Delete
    3. নিশ্চয় পিয়াস।

      Delete
  17. mon bhalo kora lekha kuntala di :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ পৌষালী। আচ্ছা আমি তোমার নামের বানানটা ঠিক লিখি? হ্রস্ব ই না দীর্ঘ ঈ?

      Delete
  18. isshhh ki bhalo..brishti chaiii... ekhane aj raatbhore ak poshla brishti hoyechilo, tar alto shobdo shunte shunte ami swopno dekhlam college street e haatchi, kadhe college er bag ar ojhor brishti; ghum theke utheo mon ta bhije-bhije lagchilo :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. দারুণ স্বপ্ন তো স্বাগতা। দেখো এইবার বৃষ্টি হবে।

      Delete
  19. Darun likecho, aami amar praner Dilli-ke khub miss kori; bishesh kore ei brishtir din guloke. Amar onek purono sriti ghuriye aanle tumi e visualization er maddhome kichu khushi/kichu bimorshota bhora. Ami ek probashi Bangali, Dillite boro hoyechi, ekhon USA thaaki. Dilli Meri Jaan thi, hai aur rahegi. Kintu aaj 10 bochor hoye gaelo Dilli chere, bhabteo kemon laage, aar hoyto phera hobe naa. Kintu tomar blog ta pore shei koyekta onubhuti pelam jeta aami khub miss korchilam. Thanks for coming up with this :) .

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে থ্যাংক ইউ তো আমার আপনাকে দেওয়ার কথা। খুব ভালো লাগল কমেন্ট পড়ে। তাঁর থেকেও বেশি ভালো লাগল আরেকজন দিল্লিপ্রেমীর খোঁজ পেয়ে। দিল্লির জবাব নেই, সত্যি।

      Delete
    2. This comment has been removed by the author.

      Delete
  20. Sheta thik aami Dilli ke kono din bhulte parbo naa. Dilli ke-o Thank you bolte hocche ekhane. Jodio lokey Dilli ke nana karone Demonise kore thaken, shei karon gulo kintu gota Bharotborsho ke affect kore. Rajdhani bole Dilli beshi highlight hoy aar ki. Ekta kotha shunechi chotobela thekei, Dilli sabki hai, magar Dilli kisi ki nahi hai. Orthat Dillir upor kono Jaat,Dhormo ba group er chauvinistic malikana shotto nei, even though they might like to believe so. Ei purono shohor; Mahabharat, Mughal samrajjo, East India Company koto kichui na dekheche tobu shohortir ekta nijoswo porichiti aache jeta konodin harabe naa thik jemon Kolkata. Jai hok amar Dilli monsoon er best memories holo Connaught Place, Karol Bagh, Red Fort e katano dingulo. Brishti bheja thanda hawar shei aram dayok anubhuti ekhane pawa jay na. Ekhane brishti mane haar kapano thanda hawa jeta winter e borof er rup nay. Comment ta likhte giye ekta gaan hothat mone pore, "Chorh aaye hum woh galiya".

    ReplyDelete
  21. উফ!! কি অসাধারান লিখেছ!! দিল্লি সম্পর্কে আমার নস্টালজিয়া কাজ করে সন্দেহ নেই, তাই দিল্লি কি গরমি, দিল্লি কি সর্দি আর দিল্লি কি বারিশ, আমার সবই ফাটাফাটি রকমের ভাল লাগে। এখন হায়দ্রাবাদে বৃষ্টি চারিদিকে সবুজে সবুজ তবু কেন জানিনা দিল্লি এর জন্য মাথা কুটে মরি। প্রচুর লাড্ডু খেয়েছিলাম সন্দেহ নেইঃ)

    ReplyDelete
    Replies
    1. দিল্লির লাড্ডু একবার যে খেয়েছে তার আর নিস্তার নেই। সারাজীবনের অম্বল। তবে সে বুকজ্বালার একটা আলাদা মজা আছে, তাই না রে পারমিতা?

      Delete

Post a Comment