ম্যাকলয়েড গঞ্জ ৩/ ত্রিউণ্ড জয়




ম্যাকলয়েডগঞ্জে (২০৮২ মিটার) পৌঁছে আমাদের মনে হল যথেষ্ট উঁচুতে ওঠা হয়নি, আরও খানিকটা পাহাড় চড়লে বেশ হয়। কাজেই ত্রিউণ্ড (২৮৪২ মিটার) যাওয়া ঠিক হল। যাওয়ার পথ অতি সোজা। ম্যাকলয়েডগঞ্জ থেকে দু’কিলোমিটার দূরে ধরমকোট (কাল বিকেলে হেঁটে হেঁটে যেখানে গিয়েছিলাম), ধরমকোট থেকে সাত কিলোমিটার দূরে ত্রিউণ্ড। ত্রিউণ্ডে গেলে নাকি ধওলাধারকে হাত বাড়ালেই ছুঁতে পারি বলে মনে হয়। অন্তত, অর্চিষ্মান সেরকমই দাবি করল। ও ছাত্রাবস্থায় একবার গিয়েছিল। 

শনিবার সক্কালসক্কাল ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পড়া গেল। টেম্পল রোডে মুনপিক ক্যাফের ঠিক পাশের দোকান মান্ডালা ক্যাফে। সেখানে আমি খেলাম পালং শাক দেওয়া অমলেট, অর্চিষ্মান খেল ইজরায়েলের বিখ্যাত ব্রেকফাস্ট শাকশুকার অনুকরণে বানানো টমেটো অমলেট। খেয়েদেয়ে একটা অটো ধরে আমরা চলে গেলাম ধরমকোট। কাল এ পর্যন্ত হেঁটে এসেছিলাম, কাজেই আজ এখান থেকে হাঁটা শুরু করব।

গোড়ার দিকে হাঁটতে তেমন কষ্ট হচ্ছিল না। একে তো ট্রেকিং করছি ভেবে মনে বেশ গর্ব অনুভব করছিলাম, তার ওপর আকাশ বেশ মেঘলা ছিল, বেশি ঘামটাম হচ্ছিল না। তাছাড়া আরেকটা ইনসেনটিভও ছিল। আমাদের পেছন পেছন একটা দল উঠছিল, তারা বেশ পরোপকারী গোছের। হাঁটার কষ্ট কমানোর জন্য অনেকেই কানে গান গুঁজে হাঁটে, এরা সবাইকে শোনানোর জন্য জোরে জোরে হানি সিং-এর গান বাজাতে বাজাতে হাঁটছিল। সে গানের গুঁতো থেকে বাঁচার জন্য আমরা দ্রুত পা চালাচ্ছিলাম। যেই না একটু থেমে হাঁপ ছাড়ছি অমনি পেছন থেকে গানের আভাস কানে আসছিল আর আমরা প্রাণভয়ে ছুট লাগাচ্ছিলাম।

ত্রিউণ্ড যাওয়ার রাস্তাকে খাটুনির ভিত্তিতে তিনটে ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম অংশটুকু হচ্ছে ধরমকোট থেকে গোলুদেবীর মন্দির পর্যন্ত। খাড়া কিন্তু মোটামুটি মসৃণ পথগোলুদেবীকে টা টা করার পর শুরু হয় আসল পাহাড়। রাস্তা কম, পাথর বেশি। এই পথে ঘন্টাখানেক চলার পর আসে ম্যাজিক ভিউ আর বেস্ট ভিউ ক্যাফে। এটা হচ্ছে ত্রিউণ্ড ট্রেকের মধ্যবিন্দু। ম্যাজিক ভিউ ক্যাফে পেরোনোর পর দেড়ঘণ্টার পথটা জাস্ট টর্চার
ম্যাজিক ক্যাফে থেকে দেখা ম্যাজিকাল ভিউ।

আমি অত্যন্ত লজ্জার সঙ্গে স্বীকার করছি ওই দেড়ঘণ্টার শেষ পঁয়তাল্লিশ মিনিটে আমাকে দেখলে আমার ছোটবেলার পাড়ার লোকেরা ভাবতেন, "এই কি সেই শান্ত, বাধ্য, সাত চড়ে রা না কাড়া সোনা?" পায়ের ব্যথায় মেজাজ টং, আশেপাশের প্রতিটি লোককে দেখেই কারণে অকারণে গা জ্বলে যাচ্ছে। যারা উঠছে তাদের দেখে মনে হচ্ছে, এরা এত দাঁত বার করে হাসছে কেন? কই আমার তো একটুও হাসি পাচ্ছে না? যারা নামছে তাদের দেখে সন্দেহ হচ্ছে, ব্যাটারা নির্ঘাৎ পুরোটা যায়নি, সামনের মোড় থেকে ফেরত পথ ধরেছে। কতগুলো বাচ্চা ছেলে ওপর থেকে নামছিল, পাথরে পা হড়কে যেতেই তাদের একজন মা/বোন সম্পর্কিত একটা বাজে কথা বলে সামলাল।

আমি জ্বলন্ত চোখে অর্চিষ্মানের দিকে তাকিয়ে বললাম, “শুনলে? ভাষার ছিরি? গোটা জেনারেশনটায় ঘুণ ধরে গেছে।”

বেচারা অর্চিষ্মান। ওরও নিশ্চয় শারীরিক কষ্ট হচ্ছিল, তার ওপর বিষফোঁড়ার মতো আমাকে ঠাণ্ডাও করতে হচ্ছিল। “ওই দেখ, ওই লোকটার কী দুরবস্থা”, “ধরমকোট থেকে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে যে গ্রুপটা হাতে এককাঁদি কলা নিয়ে হাঁটতে শুরু করেছিল, আমাদের দেখে আবার মোবাইলে ‘আমি বাংলার গান গাই’ বাজাচ্ছিল, কে জানে আমাদের ঠাট্টা করে কি না, তারা দেখগে এখনও ম্যাজিক ভিউ ক্যাফেতে বসে কলা খাচ্ছে, আর আমরা কতদূর চলে এসেছি”, “দেখেছ কুন্তলা, তোমার ভ্রূকুটি দেখে গরুটা ভয় পেয়ে কেমন গাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়ল” ইত্যাদি নানারকম করে বেচারা আমার মনোরঞ্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।


এই হচ্ছে রাস্তার ছিরি

চলতে চলতে যখন মনে হচ্ছে মহাপ্রস্থানের পথে চলেছি, এ রাস্তা আর ফুরোবে না, অমনি দেখি একটা মাঠ, সেখানে ইগলুর মতো ছোট ছোট লালনীল তাঁবু পাতা, মাঠের ওপর কিছু লোক, কয়েকটা গরু আর কুকুর ইতিউতি হাত পা ছড়িয়ে বসে রয়েছে।

ত্রিউণ্ডে পৌঁছে, এক কাপ গরম চা হাতে পেয়ে মেজাজ খুশ।


ধওলাধার আমরা দেখতে পাইনি। সাদাকালো মেঘে আকাশ টইটম্বুর হয়ে ছিল, মাঝে মাঝে একটা শৃঙ্গ মুণ্ডু বার করেই আবার লুকিয়ে পড়ছিল, আর সেই মুহূর্তে ত্রিউণ্ডের মাঠ হই হই আর ক্লিক ক্লিক শব্দে ভরে উঠছিল। আমরা ঘণ্টাখানেক মাঠে ঘোরাঘুরি করলাম, গরুদের সঙ্গে ছবি তুললাম, চা খেলাম আর আমাদের পাক্কা পঁয়তাল্লিশ মিনিট বাদে কলাবাহিনীকে হাঁপাতে হাঁপাতে আসতে দেখে খুব হাসাহাসি করলাম।

মাঠে ভিড় জমতে শুরু করেছিল। যারা আজ রাতে এখানেই থাকবে তারা তাঁবু পাততে শুরু করেছিল, যারা কাল রাতে থেকেছিল তারা তাঁবু গুটিয়ে ফেরার তোড়জোড় করছিল। আমরাও প্যান্ট ঝেড়ে উঠে পড়লাম।

নামার সময় একটাই বলার মতো ঘটনা ঘটেছিল ক্যাম্পওয়ালারা অনেক সময় নিচ থেকে গাইড, তাঁবু ইত্যাদি নিয়ে আসে। তাঁবুর কাপড়টা আলাদা করে কাঠামোটা গুটিয়ে নিলে সেটা একটা লম্বা ডাণ্ডার মতো হয়ে যায়। যত বড় তাঁবু, তত বড় ডাণ্ডা। তার সামনের দিকটা একজন ধরে, পেছনদিকটা একজন। অনেকটা আমাদের ছোটবেলায় ইলেকট্রিক অফিসের লোকজন যেভাবে ল্যাম্পপোস্টে চড়ার মই ধরতেন সে রকম। মইয়ের সামনের দিকের একটা ফোকরে একজন হাত গলাতেন, আর পেছনের দিকের ফোকরে আরেকজন। প্র্যাকটিস থাকলে ওইরকম ভাবে সাইকেলও চালানো যায়।

যাই হোক, পাহাড়ে সাইকেল চালানোর ব্যাপার নেই, তাই গাইডেরা তাঁবুর ডাণ্ডা নিয়ে হাঁটেন। আমরা নামতে শুরু করার পরই দেখি দুজন গাইড লম্বা একটা তাঁবুর ডাণ্ডা হাতে নিয়ে নামছেন। নামছেন মানে আমরা যেভাবে গুটি গুটি পায়ে, “দেখে দেখে, সামলে সামলে” বলতে বলতে আর এত সতর্কতা সত্ত্বেও মাঝে মাঝে হড়কাতে হড়কাতে নামছিলাম, সে রকম ভাবে নয়। তাঁরা নামছিলেন নিজেদের মধ্যে জোরগলায় গল্প করতে করতে, হাসতে হাসতে, বড় বড় পা ফেলে। আমি সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফেরার সময় নেহরু প্লেস মেট্রো স্টেশনের সিঁড়ি দিয়ে যে ভঙ্গিতে নামি, সেই ভঙ্গিতে। বলাই বাহুল্য তাঁরা অচিরেই আমাদের ফেলে এগিয়ে গেলেন।

অ্যাট লিস্ট, তাই তো মনে হলমিনিট দশেক পরেই দেখি দুজন গাইড একটা তাঁবুর ডাণ্ডা নিয়ে আবার আমাদের ওভারটেক করলেন।

সাত মিনিট পর আরও দুজন।

এককালে সমমনস্ক কিছু মর্ষকামী বন্ধুর সঙ্গে রাত তিনটের সময় জে এন ইউ-র জঙ্গলে ঢুকে ভূতের গল্প শোনার অভ্যেস ছিল। সে সময়কার একটা গল্প মনে পড়ে গেল। একজনের দাদু নাকি ছোটবেলায় সন্ধ্যেবেলা বসে পড়া তৈরি করছিলেন। লোডশেডিং চলছিল কাজেই দাদুর টেবিলে একটা লণ্ঠন জ্বলছিল। যে রকম লন্ঠনের মুখ খোলা থাকে আর যার গায়ে ভয়ানক কালি পড়ে আর যে রকম লণ্ঠন না থাকলে ভূতের গল্প জমে না, সে রকম লণ্ঠন। পড়তে পড়তে দাদু চোখের কোণ দিয়ে দেখতে পেলেন একটা সাদা রঙের বেড়াল তাঁর পাশ দিয়ে লাফিয়ে সামনের জানালা দিয়ে বাইরে চলে গেল। খানিক পরে আরেকটা ঠিক ওই ভঙ্গিতে, ওই ভাবেই লাফিয়ে জানালার বাইরে চলে গেল। এটারও রং ধপধপে সাদা। খানিক পর আরেকটা। দাদুর একবার মনে হল, “বাব্বা, এত বেড়াল আসছে কোত্থেকে, যাচ্ছেই বা কোথায়?” কিন্তু তিনি মনোযোগী ছাত্র ছিলেন, পড়া থামালেন না। কিন্তু এক এক করে যখন খানসাতেক সাদা বেড়াল জানালা টপকালো তখন দাদু আর থাকতে না পেরে মুখ তুললেন আর কালিপড়া লণ্ঠনের ঘোলাটে হলুদ আলোয় দেখলেন তাঁর সামনের জানালাটি পাটে পাটে বন্ধ।

অর্চিষ্মানেরও দেখি ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছে। বলল, “হোপফুলি, এরা সব নতুন নতুন গাইড।”

সত্যি বলছি, তা যদি নাও হত আমার কিছু যেত আসত না। পায়ের ব্যথায়, ক্লান্তিতে তখন আমার আধমরা দশা। রাস্তা যে আদৌ শেষ হবে সেরকম কোনও দুরাশা নেই, কিন্তু যেহেতু মাঝপথে বসে পড়া যায় না, তাই হেঁটে চলেছি। কী করে যে আমি নেমে এলাম, কখন যে দূর থেকে গোলুদেবীর মন্দিরের চুড়ো দেখা গেল, সেটা আমার অ্যাকচুয়ালি মনে নেই। সবথেকে কষ্ট হয়েছিল গোলু দেবীর মন্দিরের পর থেকে ধরমকোট পর্যন্ত রাস্তাটুকু পেরোতে। তখন রাস্তা সোজা, পড়ে গিয়ে হাতপা ভাঙার শঙ্কাটুকু কেটে গেছে আর আমার সমস্ত চেতনা, বোধ, অনুভূতি জড়ো হয়েছে আমার শারীরিক ব্যথার বিন্দুগুলোতে। আমার পাতলা, পাহাড়ি পথের পক্ষে আপাদমস্তক অনুপযুক্ত পুরোনো কনভার্সের ভেতরে, যেখানটায় আমার আঙুলের ডগাগুলো গত সাতঘণ্টা ধরে ক্রমাগত ঘষা খেয়েছে। আমার হাঁটুদুটোতে, ফেরার পথের টানা সাড়ে তিনঘণ্টা ক্রমাগত ব্রেক কষতে কষতে যাদের সহ্যশক্তি শেষ সীমায় এসে দাঁড়িয়েছে। শেষটা মনে হচ্ছিল এবার বোধহয় নামার বদলে আবার কোনও পাহাড়ে চড়তে বললে কষ্ট কম হবে।

ধরমকোট থেকে অটো যেই ম্যাকলয়েডগঞ্জের দিকে চলতে শুরু করল অমনি মনে পড়ে গেল যে সকালে মান্ডালা ক্যাফের অমলেট আর দুপুরে একটা ফাইভ স্টার চকোলেট ছাড়া সারাদিন কিছু পেটে পড়েনি। খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে। তখন যদি দোকান খুঁজতে হত তাহলে আর দেখতে হচ্ছিল না। কিন্তু এতদিনের রিসার্চের ফল ফলল, আমরা জানতামই কোথায় খেতে যাব।

কার্পে ডিয়েম।



ম্যাকলয়েডগঞ্জের মোড় থেকে সামান্য দূরে পোস্ট অফিসের কাছে মোটামুটি নতুন দোকান কার্পে ডিয়েম। নতুন, কিন্তু এর মধ্যেই বেশ নাম করেছে। খাওয়ার ব্যবস্থা দোতলায়। চেয়ারটেবিলও যেমন আছে, তেমনি মাটিতে গদি পেতে বসার ব্যবস্থাও আছে। সেখানে বসলে ধওলাধার রেঞ্জের ভিউ ফাউ।

সে মুহূর্তে ভিউ কেন, ফুচকার লোভেও পা মুড়ে বসার সাধ্য আমার ছিল না, কাজেই আমরা টেবিলে গিয়ে বসলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই সাহেবমেমে কার্পে ডিয়েমের সব চেয়ারটেবিল গদি ভর্তি হয়ে গেল। সবাই দেখলাম বিয়ার অর্ডার করলেন। বোঝা গেল স্যাটারডে নাইট উদযাপন করার এদের এটা চেনা ঠেক। এক কোণে অল্পবয়সী মেয়ের একটা বেশ বড় দল কলকল করছিল। কেউ কেউ নিজেদের মধ্যে গল্প করছিল, কেউ কেউ উদাস মুখে ধওলাধারের দিকে তাকিয়ে সিগারেট টানছিল। দুয়েকজন দেখলাম ব্যাগ থেকে ল্যাপটপ বার করেছে। হয়তো বাড়ির লোকের সঙ্গে স্কাইপ করবে এইটুকুটুকু মেয়ে সব, কুড়ি একুশ বছর বয়স হবে। আমি ওই বয়সে কাঁধে সেফটিপিন দিয়ে ওড়না সেঁটে কলেজ যেতাম আসতাম, আর এরা পিঠে ব্যাকপ্যাক নিয়ে দুনিয়া দেখতে বেরিয়ে পড়েছে। মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল, তারপর নিজেকে বোঝালাম দুনিয়ার পথে পথেই হোক কি হাওড়া ব্যান্ডেল লাইনের লোকাল ট্রেনেই হোক, অভিজ্ঞতা ইজ অভিজ্ঞতা। তার কোনও ছোটবড় ভালোমন্দ হয় না।

খাবার এসে গেল। কার্পে ডিয়েমের পিৎজার নামডাক আছে বেশ। আমরা নিলাম মাটন মোমো আর ননভেজ পেপেরোনি পিৎজা। পিৎজার নাম শুনে আমি একটু ভেবলে গিয়েছিলাম, তারপর বুঝলাম যে সব পেপেরোনি পিৎজায় পেপেরোনির সঙ্গে নানারকম ভেজিটেবল থাকে তাকে বলে ভেজ পেপেরোনি পিৎজা আর যে পেপেরোনি পিৎজায় ভেজিটেবল থাকে না তাকে বলে ননভেজ পেপেরোনি পিৎজা। ভেজ, ননভেজ, পেপেরোনি, ননপেপেরোনি, সব রকমের পিৎজাতেই থাকে চিজ। প্রচুর, পর্যাপ্ত।


পিৎজার থেকেও বেশি ভালো অবশ্য আমার লেগেছিল মাটন মোমো, ছবি তোলার আগেই যেগুলো শেষ হয়ে গিয়েছিল।

দোকান থেকে বেরিয়ে হোটেলের দিকে হাঁটছি যখন হঠাৎ ডানদিকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি দুটো বাড়ির ফাঁক দিয়ে দূরে আকাশ দেখা যাচ্ছে। মেঘ কেটে ঝকঝকে রোদ উঠেছে। আর সেই রোদ পড়ে নীল আকাশের গায়ে হিরেমুক্তো বসানো মুকুটের মতো ঝকমক করছে ধওলাধারের চুড়ো।

*****

ম্যাকলয়েডগঞ্জের একটা প্রধান অসুবিধে হচ্ছে চেক ইন চেক আউটের সময়টা। বেলা বারোটার সময় ঘর ছেড়ে দিতে হয় এদিকে দিল্লির বাস ছাড়ে সব সন্ধ্যে নাগাদ। ছ-সাত ঘণ্টা রাস্তায় ঘোরা ছাড়া উপায় থাকে না। আমি আর অর্চিষ্মান দু’জনেই আতুপুতু গোছের, অত ধকল আমাদের সয় না, আমরা ওই ছ’ঘণ্টা অপেক্ষাকৃত সস্তা কোনও হোটেলে ঘর নিই। সে ঘরে হয়তো থাকা হয় না, হয়তো এদিকসেদিক ঘোরাঘুরি করতে আর দুপুরের খাবার খেতেই সময়টা কেটে যায়, তবু নিই। যদি ক্লান্ত লাগে? যদি ঘুম পায়?

আগের দিন চোদ্দ কিলোমিটার পাহাড় ঠেঙানোর পর এ নিয়মের অন্যথা করার কোনও কারণই নেই। সকালে উঠেই সেটা মালুম হল। পায়ের পাতা মাটিতে ফেললে সারা গায়ে কারেন্ট লাগছে মনে হচ্ছে। রোবোকপের ভঙ্গিতে হেঁটে হেঁটে বাথরুমে গেলাম, রুমসার্ভিসের চা নিয়ে আসা ছেলেটাকে দরজা খুলে দিলাম। ব্রেকফাস্ট খেতে বেরোতেই হত, যাওয়ার পথে পেমা থাং-এর রিসেপশনে ঘরের কথা জিজ্ঞাসা করলাম। গত দু’রাত ফুল ভিউওয়ালা তিনতলার ঘরে ছিলাম, আংশিক কিংবা ভিউহীন ঘর থাকলে সামনের ছ’ঘণ্টা কাটাতে পারি। তাহলে আর অন্য কোথাও যেতে হয় না, কারণ হাঁটা অ্যাভয়েড করা তখন আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু পেমা থাং-এ ঘর নেই।

যো হোগা দেখা যায়েগা বলে আমরা ব্রেকফাস্ট খেতে বেরোলাম। ব্রেকফাস্টও হল, সমস্যার সমাধানও হয়ে গেল।

ব্রেকফাস্ট খেতে আমরা গিয়েছিলাম গ্রিন হোটেলের রেস্টোর‍্যান্টে। ম্যাকলয়েডগঞ্জের মোড় থেকে যে রাস্তাটা ভাগসুনদের দিকে গেছে, সেই রাস্তায় তিনশো মিটার মতো হাঁটলেই গ্রিন হোটেলের সবুজ রঙের চালা চোখে পড়ে। একতলায় রেস্টোর‍্যান্ট। রেস্টোর‍্যান্টের মূল ঘর পেরিয়ে বারান্দা। সেখানেও বসার জায়গা আছে। আমরা সেখানেই গেলাম।



ম্যাকলয়েডগঞ্জের খাবার দোকানগুলোয় একটা নতুন রকম জিনিস লক্ষ্য করেছি। এখানে মেনুর সঙ্গে একটা কাগজ আর পেনও দিয়ে যায়। যার যা চাই সেটা সেই কাগজে লিখে দিতে হয়।



এই হচ্ছে আমাদের অর্ডার। অর্ডার সম্পর্কে দু’কথা বলি। আসার দিন থেকে ম্যাকলয়েডগঞ্জের যে ক’টি দোকানে খেয়েছি সব দোকানে প্রায় সব সাহেবমেমকে তিন নম্বর খাবারটা খেতে দেখেছি। তাই ডিম পাউরুটির প্রতি আমার আজন্মের আনুগত্য কাটিয়ে আমিও অর্ডার করলাম ম্যাকলয়েডগঞ্জের মার্কামারা হিপস্টার ব্রেকফাস্ট। অর্চিষ্মান খুব হাসছিল, বেড়াতে এসে শেষে কি না দই কলা পেঁপে? কিন্তু ওর সব হাসাহাসি মিথ্যে করে দেখা গেল যে খাবারটা অত্যন্ত সুস্বাদু। (শুধু পেঁপেটা না থাকলে ব্যাপারটা সর্বাঙ্গসুন্দর হত। এর পরের বার কোথাও এ জিনিস অর্ডার করলে, “নো পেঁপে, প্লিজ” বলে দিতে হবে।


অর্চিষ্মানের অস্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু ব্রেকফাস্ট। আলু, ডিম, চিজ।


আমার স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু ব্রেকফাস্ট। দই, মধু, ফল, মুয়েসলি।

খেয়েদেয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে (অর্চিষ্মান এখানে স্পষ্ট করে বলতে বলছে যে ও খোঁড়াচ্ছিল না, একা আমিই খোঁড়াচ্ছিলাম।) রিসেপশনে টাকা দিতে এসে হঠাৎ কী মনে হল, ভদ্রমহিলাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ঘর পাওয়া যাবে?

যাবে।

কত দাম?

দাম আমাদের প্রত্যাশার সঙ্গে একেবারে মানানসই। কথা হয়ে গেল। বারোটার সময় আমরা ব্যাগপত্র নিয়ে চলে আসব, ঘর তৈরি থাকবে।

ঘর অবশ্য তৈরি ছিল না, ঘণ্টাখানেক রেস্টোর‍্যান্টে হাতপা ছড়িয়ে বসে আদালেবু চা খেতে খেতে ওয়াইফাইয়ে ইন্টারনেট চেক করতে হয়েছিল। (ম্যাকলয়েডগঞ্জের দোকান রেস্টোর‍্যান্টের ওয়াইফাই পাসওয়ার্ডগুলো চমৎকার। মুনপিক ক্যাফের পাসওয়ার্ড ছিল পেন্টেড লিফ, মান্ডালা ক্যাফের পাসওয়ার্ড ছিল নো পাসওয়ার্ড, গ্রিন হোটেল ও রেস্টোর‍্যান্টের পাসওয়ার্ড ছিল ব্যানানা লস্যি) খানিক পরে একজন এসে খবর দিল ঘর রেডি।

সত্যি বলছি, ঘর নিয়ে আমাদের কোনও প্রত্যাশা ছিল না। পিঠ টান করার মতো একটা পরিষ্কার বিছানা আর পরিচ্ছন্ন বাথরুম পেলেই আমরা বর্তে যেতাম। সে জায়গায় ঘরে ঢুকে আমরা দেখলাম পেমা থাং-এর ঘরের থেকে ছোট হলেও হাতপা খেলানোর যথেষ্ট জায়গাওয়ালা একটা ঝকঝকে ঘর, তকতকে বাথরুম, আর . . . আর সে ঘরের বিছানায় শুয়ে শুয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়।


ইচ্ছে করছিল বাস ছাড়া পর্যন্ত শুয়ে শুয়ে দৃশ্য দেখেই কাটিয়ে দিই, কিন্তু এও জানতাম শরীরের জমে যাওয়া গাঁট আর পেশিগুলোকে নাড়াচাড়ার মধ্যে না রাখলে বিপদ। তাছাড়া আমাদের আরেকবেলার খাওয়া বাকি আছে, আর সেই সঙ্গে বাকি আছে ‘টু ইট’ লিস্টের আরেকটা দোকানে টিক মারার সুযোগও।

“হেঁইও” বলে শরীরকে বিছানা থেকে টেনে তুলে বেরিয়ে পড়লাম মোড়ের মাথার দোকান থেকে একপাতা পেন কিলার কিনে ব্যাগে পুরে আমরা ঢুকে পড়লাম লামো’স খোঁয়াসঁ-তে।

লামো’স খোঁয়াসঁ একটি পরিবার-পরিচালিত ছোট্ট দোকান। একতলার ঘেরা বারান্দায় কাউন্টার এবং শোকেসে সাজানো কেকপেস্ট্রি। বারান্দা পেরিয়ে একটা বড় ঘর, ঘরের মাঝখানে একটা বড় টেবিল। ফেরার সময় এই টেবিলে বাবা মা মেয়ের একটা পরিবার বসে খাচ্ছিল, কিন্তু ঢোকার সময় আঁকার খাতা, রং পেনসিল ছড়িয়ে ছবি আঁকছিল একটা ছোট মেয়ে। আঁকছিল আর চিৎকার করে ''লুঙ্গি ড্যান্স লুঙ্গি ড্যান্স' গাইছিল।



দোতলার বসে সেই গান শুনতে শুনতে আমরা খাবার খেলাম। সারারাত বাসজার্নি করতে হবে, তার ওপর আবার আমাদের দু’জনেরই পাহাড়ি রাস্তায় বমির ব্যারাম আছে। সেই সব ভেবেচিন্তে স্বাস্থ্যকর খাবার অর্ডার করা হল। স্যালাড আর গ্রিন টি।


ব্যস, ম্যাকলয়েডগঞ্জের গল্প এখানেই শেষ। খেয়েদেয়ে ফিরে ঘণ্টাখানেক শুয়ে শুয়ে জানালা দিয়ে আকাশ পাহাড় মেঘ দেখতে দেখতেই ছ’টা বেজে গেলহোটেলের বিল মিটিয়ে দিয়ে বেরিয়ে এলাম। তারপর এবারের মতো শেষবার ম্যাকলয়েডগঞ্জের মোড় পেরিয়ে, পেস্ট্রির দোকানের ভিড় এড়িয়ে, অটোস্ট্যান্ড ছাড়িয়ে বাসস্ট্যান্ড। বাস দাঁড়িয়েই ছিল। উঠে পড়লাম বাস আধঘণ্টা দেরি করে ছাড়ল কিন্তু আই এস বি টি-তে আমাদের নামিয়ে দিল কাঁটায় কাঁটায় ভোর সাড়ে পাঁচটায়। বাড়ি এসে বড় সাইজের দু’কাপ ভর্তি কড়া চা খেয়ে ঠিকসময়ে অফিস পৌঁছতে কোনও অসুবিধেই হল না

*****


অ্যান্টিবমি ওষুধ খেয়ে ঘুম লাগিয়েছিলাম বাসে। রাতে দু’বার ঘুম ভেঙেছিল শুধু। প্রথমবার দেখেছিলাম আকাশে সোনার মতো গোল চাঁদ উঠেছে। তার আলোয় জঙ্গলের গাছের ছায়াগুলো কেমন যেন জ্যান্ত হয়ে নড়াচড়া করে বেড়াচ্ছে। আর দ্বিতীয়বার ঘুম ভেঙে দেখেছিলাম জঙ্গল ফুরিয়ে এখন শুধু চারদিকে ধুধু ক্ষেত, আর ক্ষেতের মাঝে মাঝে সিডনি, মেলবোর্ন ইত্যাদি কৌতূহলোদ্দীপক নামওয়ালা বিরাট বিরাট ফার্মহাউস। সে রকম এক ফার্মহাউসের গেট দেখি ওই শেষরাতেও আমাদের পাড়ার কালীপুজোর প্যান্ডেলের মতো টিউবলাইটের আলোয় জমজমাট আর গেটের ওপর দপদপ করে জ্বলছেনিভছে লালনীলসবুজ আলোর অক্ষরে লেখা জীবনের সারাৎসারঃ “জাস্ট চিল”
                                                                                                                               (শেষ)


Comments

  1. Khabar fele rekhe ek nisshash e pore ekhon dom nilam. :)
    Hats off to you Kuntala ... trek kore oi pahadi rastaye oto opore gele! Student thakte trek kortam ... nama ta je koto koshtokor jani. Kintu ki bhalo adventure! Ar chobiguli khub shundor!
    Maajh raatre bus e kore jongol diye jawa ta besh romantic mone hocche. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. বমি করার ভয়টা না থাকলে সত্যিই রোম্যান্টিক, শর্মিলা। ট্রেক করার কষ্টটা এখন ভুলে গেছি কি না, তাই মনে হচ্ছে দারুণ মজা হয়েছিল। ওপরে যতক্ষণ ছিলাম ততক্ষণ সত্যি ভালো লাগছিল, কিন্তু ওঠানামাটা জঘন্য।

      Delete
  2. Hahaha..seshta darun..dokaner password guloto chamatkar

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমি ভাবছি বাড়ির ওয়াইফাই-এ এরকম একটা কিছু পাসওয়ার্ড বসাই, তিন্নি।

      Delete
  3. ফাটাইয়া দিসেন, দিদিমণি। ওস্তাদের মার শেষরাতে, অ্যাঁ? দারুণ হয়েছে লেখাটা।
    আপনাদের ট্রেকের কষ্টের গল্প শুনে বড় কষ্ট পেলাম। বিনি পয়সায় একটা সদুপদেশ দি?

    ট্রেক করার সময় কোনদিন টার্গেট রাখবেন না। ট্রেকের লক্ষ্য হাঁটা। যাদের লক্ষ্য গন্তব্যে পৌঁছনো, তারা বাস, ট্রেন ইত্যাদি করে নেয়। আমি যদিও ওই পথে ট্রেক করিনি, তবু আমার জোড়াগোঁফ বাজি রাখতে পারি, যে গন্তব্যের চেয়ে রাস্তাটা অনেক বেশি সুন্দর ছিল। আর সেই রাস্তাটা কিনা আপনি ভুরু কুঁচকে পেরিয়ে এলেন?

    তবে লেখাটা জব্বর। তেন্ডুলকরের ব্যাটিং-এর সাথে বেশ মিল খুঁজে পেলাম।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধনব্যয়াদ, ধন্যবাদ, দেবাশিস। আপনি ঠিকই বলেছেন, আমার কাছে হাঁটাটা শেষে একটা রেসের মতো হয়ে গিয়েছিল। শেষের দিকে রাস্তার কিছুই দেখিনি, কখন রাস্তা ফুরোবে সেই অপেক্ষায় ছিলাম।

      Delete
  4. Chhobi gulo dekhe mon bhore gelo... Trek ta pore Amar Sikkim er mulkharka lake e jawar kotha mone pore gelo... Namar somoy pathore pathore paa fele besh osubidha hoy... Tobe ei chotokhato trek khub refreshing kintu... Lekha ta jommjomat..sesh ta khub sundor...

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, ঊর্মি। আমার সিকিম যাওয়ার খুব শখ। কবে যে হবে।

      Delete
  5. আপনার লেখা সম্পর্কে তো কিছু বলাই বাহুল্য, ছবিগুলোও সত্যি ম্যাজিকাল হয়েছে। লেখার শেষটা ভারী সুন্দর করেছেন।ট্রেকিং-এর গল্পটা শুনে একটু ভয় ভয় করছে অবশ্য, আমাদেরও সামনের মাসে একটু তেনজিঙ্গি করার প্ল্যান আছে, এখন থেকে জিমে গিয়ে স্ট্যামিনা বাড়াতে হবে দেখছি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে না না, আমার ফিটনেসের অবস্থা খুব খারাপ। আপনারা দারুণ করবেন সে নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই, সুগত। ঘুরে আসুন, তারপর ব্লগে সে গল্প পড়ব।

      Delete
  6. Tui amader school er susunia ar arekta ki trekking ( nam bhule gechi ) te gechili ?? Tor lekha ta porte porte otai mone pore gelo... Tobu je tui ato hetechis tate bolte hoi tor fitness amar theke anek gun besi... 7 k.m sunei amar hal tight hoye jeto... Hatte gele sure pa gulo khule jeto... Archisman toh darun fit ! Ot paye byatha holona ? Chobi gulo darun... Ar as usual khabar gulo o..

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, অর্চিষ্মান বেশ ফিট, এটা আমিও খেয়াল করেছি এবং করে খুবই হিংসেও করেছি, ভট্টা। ক্লাস সেভেনে শুশুনিয়া আমি গিয়েছিলাম তো। এই দেখ, তুই যে গিয়েছিলি সেটা আমার মনে আছে, কিন্তু আমি যে গিয়েছিলাম সেটা তোর মনে নেই। নেহাতই দুঃখ পেলাম। তার পরের বছর বোধহয় মাঠা বলে একটা কোনও জায়গায় যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেটায় আমি যাইনি, তুই গিয়েছিলি?

      Delete
    2. Ami gechilam re Matha te... Mukutmanipur eo gechilam... School theke seta toh amader last eksonge trip chilo... Ish re , dukkho pas na... Susunia te darun moja hoyechilo. Seta mone kor , dukkho kete jabe...

      Delete
    3. মুকুটমণিপুরের তোর একটা খুব সুন্দর ছবি আমার কাছে আছে ভট্টা, মানে একটা গ্রুপ ছবি, যেটাতে সবাই আছি। তুই একটা ঘিয়ে আর লাল মেশানো সালওয়ার কামিজ পরে খুব হাসছিস।

      Delete
  7. Darun darun. Aro koyekta episode hole aro bhalo hoto. Tomar trekking er golpo shune amar Pelling to Pemayantse ar Rabdentse jawar kotha mone porchilo. Puro rasta hete gechilam o phirechilam ar seta ato onayase je amar nijer fitness niye bhari gorbo hoyechilo. Tobe tumi nijeke moteo underestimate koro na. Oi rasta hete tarpor sara rasta bus journey kore pordin office gecho. Tumi dhonyo! Ami hole oi hangover er chote aro dudin chuti niye shuye thaktam.
    Tomar bor jevabe tomar mood bhalo korar chesta korchilo seta bhari chomotkar. Ami kothao gele fellow 'insensible, uncultured' Indian tourist ke sarakhoni mone mone gali dite thaki ar gojgoj korte thaki ar amar sohojatri ra amar taale taal miliye amake khushi rakhar chesta kore.

    ReplyDelete
    Replies
    1. পেলিং-ও আমি যাইনি। ইস, কত জায়গা যাওয়ার বাকি আছে, কুহেলি, এদিকে বয়স হু হু করে বাড়ছে। কী যে হবে।

      Delete
  8. eto sundor bornona dile je ardhek ghora hoyei gelo.. :) tabe trek kore koshto peyechho bole ektu kharap laglo, darun sahosikota r patience er porichoy diechho..
    experience is experience: ekshobaar high five !!
    Tomar handwriting bhishon sundor..
    oi salad ta amar ekkhuni khete ichhe korchhe.. - Bratati.

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, ব্রততী। আরে, সত্যিকারের ট্রেকিয়েরা ওটাকে ট্রেক বলেই মানেন না, তুমি এইসব সাহসিকতাটিকতা বললে তাঁরা হেসে খুন হবেন। কে কতক্ষণ বসে থাকতে পারে সেই কমপিটিশন দেওয়ার চাকরি যারা করে, যেমন আমি, তাদের হঠাৎ করে অত হাটতে বললে একটু বিপদ হয়ে যায় আরকি।

      Delete
  9. kdin dhore aschhhi ar chhobi dekhe ar lekha pore mugdho hoe jachhi. ki darun , ekhuni ekta lomba chhutir plan korte ichhe korchhe... khabar dabar darun. Trek kore katota gachho, amar to ar ei buro haar e holona... mane konodini hoeni.. ei boyese tai ar ashao rakhina... tobe keu trek korechhe shunle mone mone ki khusi hoe jai ar tomar treking galpo pore to tomar songe songei khanik hnete nilam. :-)

    ReplyDelete
    Replies
    1. এটাকে ট্রেক বলে লজ্জা দেবেন না,ইচ্ছাডানা। একটু লম্বা হাঁটা বলুন বরং। লেখাটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  10. Aajkey Tanmay Mukherjee r kachhey apnar kotha shunlam. Sotti blog post porey ami obhibhutoh!

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ। আপনাকে, তন্ময়কে, দুজনকেই। আশা করি অবান্তর আপনার আরও অনেকদিন ভালো লাগবে।

      Delete

Post a Comment