একদিন লাঞ্চব্রেকে/ গোয়া নিবাস ক্যান্টিন



আমি মিলিয়ে নিয়েছি, পরীক্ষার নম্বর ছাত্রের ভবিষ্যতের ভবিষ্যদ্বাণী যত না নিখুঁতভাবে করতে পারে, তার থেকে অনেক বেশি ভালো পারে টিফিন পিরিয়ড। আমাদের প টিফিনে কোনওমতে নাকেমুখে চারটি ঠেসেই দৌড়ে মাঠে নেমে পড়ত, সে এখন ইনকাম ট্যাক্স অফিসে চাকরি করে আর বিকেলবেলা পাঁচবছরের ছেলে ট্যাঁকে গুঁজে পাড়ার ক্লাবে ক্রিকেট শেখাতে নিয়ে যায়। ছেলে খেলে, প দেখে। শুনলাম ছেলের স্টান্স কিছুতেই ঠিক হচ্ছিল না দেখে ‘আরে বোকা, এই দেখ এইভাবে দাঁড়াবি’ বলে ওড়না কোমরে বেঁধে ব্যাট উঁচিয়ে নেমে পড়তে দেখে চমৎকৃত হয়ে কোচ প-কে আন্ডার ফাইভ ছাত্রদের ওয়ার্ম আপ করানোর দায়িত্বে নিয়োগ করেছেন। বিনাপয়সায়, বলাই বাহুল্য। কিন্তু তাতে প-এর ফুর্তি কিছু কম পড়েনি। টাকার জন্য তো সারাদিন খাটছেই, বিকেলবেলা না হয় ভালোলাগার জন্যই খাটল। অ খাওয়ার সময় কারও সঙ্গে কথা বলত না, মুখ নিচু করে একমনে বাড়ি থেকে আনা তিনতলা টিফিনবাক্সের প্রতিটি তলা চেঁছেপুঁছে আয়নার মতো চকচকে করত। সেদিন ঘুরতে ঘুরতে অ-এর ফুডব্লগের সন্ধান পেলাম। পাঁচফোড়ন অ্যান্ড পোয়েট্রি। স্ক্রিনজোড়া জিভে জল আনা সব ছবি, স্যান্ডউইচের অল্প হাঁ করা ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে চুঁইয়ে পড়ছে গলন্ত অথেনটিক সুইস চিজ, চকোলেটে চুবোনো চামচ থেকে ঝুলন্ত ফোঁটা নত হয়ে রয়েছে অসূর্যম্পশ্যা কুমারীর মতো নিষ্কলঙ্ক প্লেটের ওপর, জং ধরা পেতলের ঘটি থেকে গোলাপি রঙের ল্যাজ উঁচিয়ে ‘উইংক’ দিচ্ছে সর্ষেবাটা মাখোমাখো জাম্বো প্রন।

আমার ক্ষেত্রেও টিফিন পিরিয়ডের ভবিষ্যদ্বাণী মিথ্যে হয়নি। সব স্কুলের সব ক্লাসেই কিছু টিফিন পিরিয়ডের তারকা থাকে, আমাদেরও ছিল। এক নয়, একাধিক। টিফিন শুরু হলে আমি তাড়াতাড়ি টিফিনবাক্স নিয়ে হাঁটু দিয়ে ঠেলেঠুলে খানিকটা জায়গা করে কোনওমতে তাদের বৃত্তে নিজেকে সেঁধোতাম, তারপর অত্যন্ত অনাগ্রহের সঙ্গে রুটি আলুভাজা ঠুকরোতে ঠুকরোতে তাদের বলা জোকস শুনে লুটোপুটি খেয়ে হাসতাম। খাওয়া শেষ হলে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা হত, আমি সবার আগে আউট হয়ে গিয়ে সাইডলাইনে বসে ঘাস ছিঁড়ে গরুর মতো মুখে পুরে চিবোতাম।

সে ট্র্যাডিশন এখনও সমানে চলছে। 

অফ কোর্স, ঘাস চিবোনোর ব্যাপারটা ফিগারেটিভ। লাঞ্চব্রেকে আমার একা-চোরা-ব্যাঁকা-মোষ অবস্থাটা বোঝাতে ওটা বললাম। অফিসে মাঠই নেই তো ঘাস থাকবে কোত্থেকে। মাঠ নেই, ঘাস নেই, ছোঁয়াছুঁয়ি খেলাও নেই। অবশ্য নেই বলে যে খেলার ইচ্ছেও থাকবে না এমন তো কোনও কথা নেই। কত লোকের মনেই যে বড় হয়ে যাওয়ার পরেও ছোটাছুটির ইচ্ছে ঘাপটি মেরে বসে থাকে ভাবা যায় না। লাঞ্চব্রেকের কাছাকাছি একটা ভদ্রস্থ সময় এলেই তাঁরা টেবিলের তলায় গুঁজে রাখা পাশবালিশের সাইজের একটা মস্ত ব্যাগ ঘাড়ে করে জিমের দিকে গুটি গুটি রওনা দেন। শুনেছি জিমের ছাদে একখানি টলটলে পুকুর আছে। ছোটাছুটির ইচ্ছে না থাকলেও সে পুকুরের জলে নেমে দাপাদাপির ইচ্ছে যে আমার নেই এমন মিথ্যে কথা বলব না। কিন্তু ইচ্ছের মুখে পাথরচাপা হয়ে বসে থাকে সুইমিং কস্টিউম। কস্টিউম না পরলে এইসব দামি পুকুরে নামতে না দেওয়ার নিয়মের প্রতি আমার রাগ বহুদিনের। কারণটা নাকি নিরাপত্তাজনিত। যত বেশি কাপড়, তত নাকি গলায় ফাঁস লেগে জলে ডুবে মরার সম্ভাবনা। শুনে হাসব না কাঁদব ভেবে পাই না। আমাদের বারোয়ারি পুকুরে, যেটা এদের এই পুতুলখেলা পুকুরের থেকে অন্তত দশহাত বেশি গভীর আর পঞ্চাশ হাত বেশি লম্বাচওড়া, দু’বেলা লোককে এ’পার ও’পার করতে দেখেছি। বারোহাত শাড়ি, হাঁটুর কাছে তুলে কোমরের কাছে গিঁটবাঁধা চেকচেক লুঙ্গি, দড়িবাঁধা পায়জামা, বুকে হাঁস আঁকা টেপফ্রক (এই অধমের কস্টিউম)। কোনওদিন কেউ দমবন্ধ হয়ে মরেছে বলে শুনিনি। এইসব সুইমিং কস্টিউমফস্টিউম হচ্ছে মহার্ঘ জিমকে প্রোলেতারিয়েতের ছায়া থেকে বাঁচিয়ে রাখার বুর্জোয়া চক্রান্ত। আর কিস্যু না।

অগত্যা লাঞ্চব্রেকে আমি কর্মহীন। সঙ্গহীনও বটে। তবে কর্মহীনতার ব্যাপারটা যেমন বাধ্যতামূলক, সঙ্গহীনতাটা স্বেচ্ছারোপিত। ক্যান্টিনে রোজই চেয়ার দিয়ে গোল বানানো হয়, পুরি-সবজির সঙ্গে হোমমেড এনচিলাডাসের জোরকদমে বার্টার চলে, জোকসেরও যে অভাব পড়ে না সেটা উচ্চকণ্ঠে হাহাহিহি শুনে আঁচ করতে পারি। সেখানে নাম লেখানোই যায়, সকলেই ভয়ানক বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সুজন। কষ্টমষ্ট করে টেবিলের পাশে আরেকখানা চেয়ার গুঁজে তেঁতুলপাতায় ন’জন হতে তাঁরা কেউই আপত্তি করবেন না, কিন্তু আমিই যাই না। তার বদলে মনিটরের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে চামচ দিয়ে ঠাণ্ডা চাউমিন (বারোয়ারি মাইক্রোওয়েভে গরম করলে করাই যায়, কিন্তু সকলের সামনে দিয়ে গিয়ে খাবার গরম করে আবার গটগটিয়ে ফিরে আসার অভদ্রতার থেকে ঠাণ্ডা চাউমিন খাওয়া ভালো) তুলে মুখে পুরি। মি-টাইম যে রেটে কমে আসছে, দিনের মধ্যে আধঘণ্টাও যদি পাওয়া যায়, সামাজিকতার মুখ চেয়ে সেটা বলিদান দিতে মন চায় না।

সেদিনও ঘড়ির কাঁটা গুটি গুটি এগিয়ে চলেছে, ডেস্কের ওপর রাখা টিফিনবাক্সের ভেতর বিরসবদনে অপেক্ষা করা চিঁড়ের পোলাওয়ের প্রতি ক্ষিধে আর মি-টাইমের প্রতি লোভ দুটোই হইহই করে বাড়ছে, এমন সময় স্ক্রিনের কোণায় পিং হল।

'কাজ কী রকম?'

'কী রকম আবার, চরম বিরক্তিকর এবং কান্নাউদ্রেককারী। আমরা কবে বেড়াতে যাব?'

'যাব যাব। বলছি, আজ লাঞ্চে বেরোতে পারবে? একটা ইন্টারেস্টিং জায়গা পেয়েছি, তোমার অফিসের নাকের ডগায়।'

লাঞ্চ ডেট! তাও আবার এমন লোকের সঙ্গে যার জোক শুনে হাসতে হবে না, বরং নিজের বস্তাপচা জোক শুনিয়ে তাকে হাসতে বাধ্য করা যাবে! উৎসাহব্যঞ্জক যতরকম স্মাইলি পাওয়া গেল, সবগুলো টাইপ করে এন্টার মেরে দিলাম। চিঁড়ের পোলাওয়ের বাক্স বারোয়ারি ফ্রিজে চালান হয়ে গেল, মি-টাইম গজগজ করতে করতে ফিরে গেল, আমি সময় বুঝে মানিব্যাগটি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। বেরোবার আগে জিনস থাবড়ে দেখে নিলাম মেট্রোকার্ডটি যথাস্থানে আছে কি না, আর ডেস্কের ওপর কাগজপত্র যথাসম্ভব ছড়িয়ে, পেনের ঢাকনা খুলে রেখে এলাম। যাতে আমার প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে কারও সন্দেহ না থাকে।

আমি সাধারণত ‘সারপ্রাইজড’ হওয়ার সম্ভাবনা দেখলে ভয়ে ভয়ে থাকি। বছরপাঁচেক আগে সারপ্রাইজ উপহার হিসেবে ‘দ্য মংক হু সোল্ড হিস ফেরারি’ হস্তগত হওয়া থেকে এই ভয়টা মনে দানা বেঁধেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে দোকানের নাম জানার জন্য জোরাজুরি করলাম না। যার সঙ্গে বিশ্বাস করে ব্যাংকে অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড শেয়ার করেছি, তার দেওয়া সারপ্রাইজের প্রতি অবিশ্বাস রেখে লাভ নেই। কোনও প্রশ্ন না করে, যেখানে আমাকে আসতে বলা হয়েছিল, মুখটি বুজে মেট্রো চেপে সোজা সেই স্টেশনে চলে এলাম।

চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে মাটি ফুঁড়ে যেখানটায় উঠলাম, চেহারা দেখেই সে জায়গাটাকে দামি বলে চেনা যায়। যাওয়াই স্বাভাবিক। খোদ নরেন্দ্র মোদিজীর পাড়া বলে কথা। চওড়া রাস্তা, রাস্তার দু’পাশ ও মাঝখানের বুলেভার্ডে ঘন সবুজ পাতাছাওয়া মোটা মোটা গাছ, চওড়া রাস্তা, রাস্তায় গাড়ি যৎসামান্য, মানুষ প্রায় নেই। ফোনের ভেতর ভেসে আসা ‘এদিকে তাকাও’, ‘উফ্‌ ওদিকে না, এদিকে’ নির্দেশ মেনে সেকেন্ডখানেক এদিকওদিক তাকানোর পর দেখি রাস্তার উল্টোদিকে কোণাকুণি মেট্রো স্টেশনের আরেকটা গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ফোন কানে ধরে অর্চিষ্মান হাত নাড়ছে।

হাতের কাছেই একটা মস্ত অমলতাসের নিচে কতগুলো অটো বসে জটলা করছিল, নীলচে-ধূসর জামাপ্যান্ট পরা কয়েকজন অটো ভাইসাব যে যার অটোর হলদে ছাদে হাতের ভর রেখে একে অপরের সঙ্গে আলাপ করছিলেন, আমরা তাঁদের দিকে রওনা দিলাম।

যে ক’টা বিষয়ে দিল্লি আমাকে পুনঃপুন চমৎকৃত করে, তার মধ্যে অন্যতম হল বৈষম্য করার ক্ষমতা। ধনীগরিব, এলিটপ্রোলেতারিয়েত নিয়ে ভেদাভেদ সবাই করে, কিন্তু দিল্লি যে কী নিয়ে করে না, এ আমি এখনও বুঝে উঠতে পারিনি। গায়ের রং, হিন্দি উচ্চারণ, ইংরিজি উচ্চারণ, শরীরের দৈর্ঘ্য প্রস্থ উচ্চতা, জামার ব্র্যান্ড, জুতোর ব্র্যান্ড, গালি দেওয়ার ক্ষমতা, ট্র্যাফিক এবং অন্যান্য নাগরিক আইনকানুনকে কমপ্লিট কাঁচকলা প্রদর্শনের বীর্য---এ সব এবং আরও কোটি কোটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে দিল্লি স্থির করে সে আপনাকে পাত্তা দেবে কি দেবে না।
 
কিন্তু কুকুর থাকলে তার মুগুরও থাকে। দিল্লির অসাম্যবাদের একমাত্র মুগুর হল অটো। শহরের ওন্দোলেখোন্দোলে ছড়িয়ে থাকা আরবান ভিলেজ – গালভরা ইংরিজি নামের আড়ালে যেখানে পরিষেবার পরিপূর্ণ অনুপস্থিতি ও নিজস্ব আইনব্যবস্থার রমরমা উপস্থিতি – তার কাঁচাগলি থেকে শুরু করে খোদ নরেন্দ্র মোদিজীর পাড়া পর্যন্ত একা যে বুক ফুলিয়ে বিনা মিটারে ঘুরে বেড়াতে পারে, সে অটো ছাড়া আর কেউ নয়।

মোদিজীর বাড়ির পাশের অটোস্ট্যান্ডের একটা অটোর দিকে এগিয়ে গিয়ে অর্চিষ্মান যখন ঝুঁকে পড়ে বলল, ‘গোয়া নিবাস চলেঙ্গে ভাইসাব?’ আনন্দে হৃৎপিণ্ড একেবারে ডিগবাজি খেয়ে উঠল। নতুন করে টের পেলাম, একে ভরসা করার সিদ্ধান্তটা ভুল হয়নি।

দিল্লির শত বাঁদরামো সহ্য করার যে হাজারটা কারণ আছে, তার মধ্যে একটা হচ্ছে এই শহরের স্টেট ক্যান্টিনগুলো। বিভিন্ন রাজ্যের ভবন আছে দিল্লি শহরে, প্রত্যেকটি ভবনের আছে নিজস্ব ক্যান্টিন। সে ক্যান্টিনে নিজ নিজ রাজ্যের ধ্রুপদী খাবার পাওয়া যায় এবং নিতান্ত অদিল্লিচিত ঢঙে, যে কেউ এইসব ভবনে ঢুকে খাবার খেতে পারে। ক্যান্টিনের মালিকানা যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেসরকারি ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের হাতে, ব্যাপারটার গায়ে সরকারি গন্ধ আছে বলে এসব ক্যান্টিনে খাবারের দামও বেশ ধরাছোঁয়ার মধ্যে। আমাদের দিল্লির ‘টু ডু লিস্ট’-এর মধ্যে বেশ ওপরের দিকে একটা হচ্ছে সব স্টেট ক্যান্টিনে অন্তত একবার করে খাওয়া। দুঃখের বিষয়, জীবনের বাকি সব টু ডু লিস্টের মতো এই লিস্টও আর ফুরোচ্ছে না। ঊনত্রিশটা রাজ্যের মধ্যে (অবশ্য সবক’টা রাজ্যেরই ভবন আর সব ভবনেরই ক্যান্টিন আছে কি না জানি না, বিশেষ করে এত দ্রুত তেলেঙ্গানা ভবন বানানো হয়েছে কি না সে বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে) আমরা গিয়ে উঠতে পেরেছি মোটে তিনটে ক্যান্টিনে। অন্ধ্র ভবন, জম্মুকাশ্মীর ভবন, আর এই গোয়া নিবাস। বাকি গুলোয় যে যাব যাব করেও যাওয়া হয়নি তার এক নম্বর কারণ কুঁড়েমি, দু’নম্বর কারণ বাড়াবাড়ি রকম বেশিবার অন্ধ্র ভবন গমন। চান্স পেলেই আমরা অন্ধ্র ভবনের ক্যান্টিনে গিয়ে লাইন দিই। কারণ এক, খাবার ভালো লাগে; দুই, যতবার গেছি ততবার একজন না একজনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে যিনি শ্রীরামপুরের লোক। এখন এমন হয়েছে যে অন্ধ্র ভবনে গিয়ে শ্রীরামপুরের কারও দেখা না পেলে আমার ওদের তেলতেলে ফিশকারি আর রগরগে মাটনকারি হজম হয় না।

আমরা উঠে পড়লাম, ভাইসাব অটো চালু করলেন। আমি ক্ষীণস্বরে একবার মিটার চালানোর পরামর্শ দিতে হাত নেড়ে বললেন, ‘কেয়া মিটার ম্যাডাম, চালিস দে দেনা।’

দিল্লিতে খেপেখেপে প্রায় আট বছর বাস করা হয়ে গেল অথচ এখনও যে দুটো জায়গায় গেলে আমার অবস্থা থর মরুভূমিতে কম্পাসহীন পথিকের মতো হয় সে দুটো জায়গা হল কনট প্লেস আর চাণক্যপুরী। কনট প্লেসের কোটিকোটি সার্কলের চক্রব্যূহ আর চাণক্যপুরীর ন্যায়, নীতি, সত্য, শান্তি, বিনয় আরও যতরকম বিতিকিচ্ছিরি নামওয়ালা পথের গোলোকধাঁধা আমার মাথায় এখনও পরিষ্কার হয়নি। এ জন্মে হওয়ার আশাও দেখতে পাচ্ছি না। কিন্তু এখন আমাদের স্মার্টফোন আছে, আমরা কি ডরাই সখি ভিখারি রাঘবে? ম্যাপের সার্চবারে গোয়া নিবাস টাইপ করে শ্বাস রুদ্ধ করে অপেক্ষা করে আছি, থ্রিজি খাবি খেয়ে খেয়ে নেটওয়ার্ক ধরছে, এমন সময় ঘ্যাঁচ করে ব্রেক কষে সামনের আয়না দিয়ে অটো ভাইসাব আমাদের চোখে চোখ ফেলে দাঁত বার করে বললেন, ‘আ গয়া ম্যাডাম, অর ম্যাপ দেখনে কি জরুরত নেহি হ্যায়।’

পিত্তি জ্বলে গেল। একগাদা দশটাকা থাকা সত্ত্বেও একশো টাকার একখানা নোট বাড়িয়ে ধরে বললাম, ‘খুল্লা নেহি হ্যায়।’ ভাইসাবের বোধহয় রসিকতার শখ মিটে গিয়েছিল, বিনা বাক্যব্যয়ে নোংরা নোটে ষাটটাকা ফেরত দিয়ে দিলেন। আচ্ছা প্রতিশোধ নেওয়া গেছে ভেবে আমি গটগটিয়ে গোয়া নিবাসের ভেতর ঢুকে গেলাম। তখনও কি জানি, ভেতরে কী বিপদ আমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে?

গোয়া নিবাসের ক্যান্টিনের নাম ভিভা ও ভিভা। তার আকারপ্রকারের বর্ণনা আর আমি দিলাম না, আমার থেকে ঢের ভালো করে জোমাটো দিয়ে রেখেছে, দেখে নিতে পারেন। অর্চিষ্মান দেখলাম লিটারেচার সার্ভে করেই এসেছে। বলল, ‘এখানে একটা গোটা কাঁকড়ার ডিশ পাওয়া যায়, আমরা সেটা খাব কিন্তু।’ আমি বললাম, ‘খাব খাব।’ ভিভা ও ভিভায় দেখলাম ছাপা মেনু নেই, হোয়াইট বোর্ডে কালো মার্কার দিয়ে খাবারের লিস্ট লেখা আছে। লিস্টের একেবারে ওপরে জ্বলজ্বল করছিল কাঁকড়ার নাম, আমরা সটাং সেটা অর্ডার করে দিলাম। সঙ্গে অর্ডার করলাম বাসা মাছের কারি আর সাদা ভাত।

আর তক্ষুনি প্রথম সমস্যাটার আবির্ভাব হল।

একটা বাচ্চা মতো মেয়ে, বাচ্চা কিন্তু ভীষণ চালাকচতুর আর ভীষণ ভালো ইংরিজি বলে, আমাদের অর্ডার নিচ্ছিল। অর্ডার নেওয়ার পর রান্নাঘরের দিকে যেতে গিয়েও থমকে দাঁড়াল। কী যেন ভেবে আমাদের আপাদমস্তক একবার জরিপ করে নিয়ে খুব ভদ্রভাবেই জিজ্ঞাসা করল, ‘ডু ইউ নো হাউ টু ইট আ হোল ক্র্যাব? আই মিন, উই উইল প্রোভাইড ইউ উইথ ক্রাশার অ্যান্ড অল, বাট ইউ উইল বি এবল টু ম্যানেজ দ্য রেস্ট, রাইট?’

আমি খুব চালিয়াত একখানা হাসি দিয়ে, ‘আই ওন্ট বি, বাট আই অ্যাম শিওর হি উইল ম্যানেজ ইট জাস্ট ফাইন,’ বলে অর্চিষ্মানের দিকে আঙুল দিয়ে দেখাতে গিয়ে দেখি অর্চিষ্মান অলরেডি আমার দিকে আঙুল দেখিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

ভাবা যায়? সাঁড়াশি দিয়ে কাঁকড়ার খোলা ছাড়িয়ে খাওয়ার মতো একটা বেসিক লাইফ স্কিল আমাদের সংসারে কারও নেই? আমার কেমন জেদ চেপে গেল। মেয়েটা অপেক্ষা করছিল, আমরা কাঁকড়ার বদলে অন্য কিছু অর্ডার করি কি না, আমি পিছু হটলাম না। বললাম, ‘যা থাকে কপালে, কাঁকড়া না খেয়ে আমরা এখান থেকে বেরোচ্ছি না আজ।’

যেটা বললাম না সেটা হচ্ছে, ভগবান অলরেডি বত্রিশখানা প্রাকৃতিক ক্রাশার দিয়ে রেখেছেন, আবার অন্য ক্রাশার লাগবে কীসে? এই না ভেবে কনফিডেন্টলি টেবিলে এসে বসেছি এমন সময় অর্চিষ্মানের মুখটা দেখি হঠাৎ কেমন গম্ভীর হয়ে যাচ্ছে। আমি ভেবেছি আসন্ন কাঁকড়া খাওয়ার টেনশনে বোধহ্য়, ভেবে ‘আরে ঘাবড়াও মাত’ বলে সান্ত্বনা দিতে গেছি, এমন সময় অর্চিষ্মান পকেট থেকে মানিব্যাগ বার করে তার ভেতর উঁকি দিতে দিতে জিজ্ঞাসা করল, ‘তোমার কাছে কত ক্যাশ আছে?’

আমি টেবিলে তবলা বাজাতে বাজাতে বললাম, ‘প্রায় নেই বললেই চলে।’

অর্চিষ্মান ভয়ানক ভুরু কুঁচকে বলল, ‘এরা তো দেখছি কার্ড নট অ্যাকসেপ্টেড লিখে রেখেছে। আমার কাছে ক্যাশ আছে মোটে ____। এখানে তো এ টি এমের টিকিটিও দেখলাম বলে মনে পড়ছে না . . .’

আমার তবলা থেমে গেল। তাড়াতাড়ি হোয়াইট বোর্ডে লেখা দাম যোগ করে দেখি, সর্বনাশ।

টেবিল থেকে ছিটকে উঠে পড়লাম দুজনেই। মেয়েটাকে অর্ডারের নোটখাতা হাতে হেলেদুলে রান্নাঘরের দিকে যেতে দেখেছি দু’মিনিট আগেই। সেদিকে ছুট দিলাম। ছুটতে ছুটতে অর্চিষ্মান খুব আগ্রহভরে জিজ্ঞাসা করল, ‘কাঁকড়া ক্যানসেল তবে?’

‘নোওওপ্‌। বাসা মাছ ক্যানসেল।’

মেয়েটা রান্নাঘরের দরজা দিয়ে সবে বেরোচ্ছিল, আমরা চেঁচিয়ে উঠলাম, ‘রোককে, রোককে, বাসা কারি রোককে।’

মেয়েটা নিমেষে অ্যাবাউট টার্ন করে রান্নাঘরের ভেতর অদৃশ্য হয়ে গেল। শুনতে পেলাম চিৎকার করে কাকে একটা বলছে, ‘রোককে রোককে, বাসা কারি রোককে!’ দু’মিনিট বাদে নোটখাতা হাতপাখার মতো নাড়তে নাড়তে হাসিমুখে বেরিয়ে এসে বলল, ‘খুব বাঁচা বেঁচেছ। কুক সবে বাসার ল্যাজ ধরে কড়াইয়ের ওপর দোলাচ্ছিল, এমন সময় গিয়ে থামিয়েছি।’

আমরা আমাদের বিপদ খোলসা করে বললাম। মেয়েটা শুধু ইংরিজি ভালো বলতে পারে না, সহানুভূতিটুতিও আছে দেখলাম বেশ। বলল, ‘আহা, টাকা নেই বলে না খেয়ে ফিরে যাবে? বাসা না হোক, অন্য কিছু খাও?’

হোয়াইট বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে অনেক যোগবিয়োগ করে আমরা অবশেষে বাসা কারির বদলে পর্ক ভিন্দালু অর্ডার করলাম। হিসেব করে দেখলাম, খাবারের দাম আর টিপসের পর আর টায়েটায়ে চল্লিশ টাকা বেঁচে থাকবে, যেটা দিয়ে আমাদের অটো ধরতে হবে। তারপর যে যার অফিসে পৌঁছে আগে এ টি এম, তারপর অন্য কথা।

সেই কাঁকড়া। আমি দাবি করছি না যে ক্যামেরা সঙ্গে থাকলে আমি অ্যাওয়ার্ড-উইনিং ফুড ফোটোগ্রাফি করতাম, কিন্তু ফোনে তোলা ছবির থেকে একটু ভালো তো হতই। 

কাঁকড়ার পাশে প্লেটে রাখা সাঁড়াশি দেখতে পাচ্ছেন? ও জিনিস যেমনকার তেমন পড়ে ছিল। কাঁকড়াটা অবশ্য একটুও পড়ে ছিল না। 

সেই অমৃতসমান পর্ক ভিন্দালু। 

খুব খেলাম। যথাসম্ভব মুখ নিচু করে কাঁকড়ার ঠ্যাং দাঁত দিয়ে কড়মড় করে চূর্ণবিচূর্ণ করলাম, পর্কের লাল ঝোল দিয়ে ভাত মেখে হাপুসহুপুস করে খেলাম। যা হয় সব ভালোর জন্যই হয় যে বলে সবাই, মিথ্যে বলে না। পর্ক ভিন্দালুটা যা খেতে ছিল, আহা। আপনারা যদি কেউ যান, বাসা কারি অর্ডার করুন না করুন, পর্ক ভিন্দালুটা মিস করবেন না। প্রাণ ভরে খেলাম আর খেতে খেতে বলাবলি করলাম, এখন যদি মেয়েটা বেরিয়ে এসে বলে যে 'সরি, বোর্ডে যা লেখা আছে তার থেকে ভিন্দালুর দাম বেড়ে গেছে', তাহলে আমরা কী করব। বাসন মেজে দিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিতে হবে, আর কিছু করার নেই।

কিন্তু অত রোমহর্ষক কিছু ঘটল না। খেয়েদেয়ে, টিপসের পাত্র থেকে নির্লজ্জরকম বেশি পোলো চুরি করে নিয়ে, মেয়েটাকে টা টা বলে আমরা গোয়া নিবাসের বাইরে বেরিয়ে এলাম। পর্ক ভিন্দালুটা পয়া ছিল নির্ঘাত, বেরোতেই অটো পেয়ে গেলাম। সে আবার চল্লিশ টাকাতেই মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত যেতে রাজি হয়ে গেল। সাত নম্বর রেসকোর্সের একদম পাশ দিয়ে এল অটোটা। আমি ঘাড়টাড় উঁচিয়ে খুব চেষ্টা করলাম, কিন্তু মোদিজীকে দেখতে পেলাম না। ভিন্দালুটা অতটাও পয়া ছিল না বোঝা গেল।

গোয়ানিবাসের সামনে। খেয়েদেয়ে যত না খুশি, বাসন মাজতে হয়নি বলে তার থেকে অনেক বেশি খুশি। 

   

Comments

  1. দিল্লীতে থাকার এই এক সুবিধে| আমরা পুনেতে ছাতার মাথা খালি মারাঠি খাবার খেয়ে খেয়ে পচে গেলাম| তাও যদি ভালো খেতে কিছু থাকত তাদের লিস্ট-এ| আমার এখন পর্ক ভিন্দালু খেতে ইচ্ছে করছে আর বাড়িতে গিয়ে ঠান্ডা আলুনি মুসুর ডালের সাথে বেগুনের তরকারী খেতে হবে| কান্না পাচ্ছে|

    ReplyDelete
  2. এই পাওনগরীতেও তাই। বম্বে পুনের থেকে অন্ততঃ খাবারের ব্যাপারে আদৌ এগিয়ে নেই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সেকি, আমাদের তো নেক্সট গন্তব্য মহারাষ্ট্র ভবন! আমি বেশি মারাঠি খাবার খাইনি, তাই ভালো কি খারাপ জানি না। তবে তোমাদের কোকুম শরবত বলে কী একটা আছে না লাল রঙের? ওটা একবার খেয়েছিলাম, দিব্যি লেগেছিল। আর অফ কোর্স, পাওভাজি তো খেয়েইছি, কিন্তু সে খাদ্য এখন আর মারাঠি নেই, জাতীয় স্ট্যাটাস লাভ করেছে।

      অপরাজিতা, দেখেছ, তোমার কমেন্ট পড়ে এখন আবার আমার মুসুর ডাল আর বেগুনপোড়া খেতে ইচ্ছে করছে।

      Delete
    2. amader barir kache Mangoes bole akta choto goan doan ache,ekti goan family dokanta chalan.sekhan theke majhe majhei amra pork vindaloo ar neer dosa order kore khai :) se baro sukher byaper ...
      Mharashtra Bhabone jadi jash oti abashyai Surmai curry taste korish ..sange Bombil fry ar Sol kari..e na khle jibon britha ..
      Viva o Viva te dekhlam Bibinka paoa jay..ota ami kheyechi,narkel,mayda chini ar dim die banano cake ar pither majhamajhi akta jinish,amar durdanto lage .ebare goa theke nie o esechilam ... porer bar gele kheye dekhte parish ..
      sorry baddo beshi boklam ,kintu maharashtra ar goar khabarer alochona dekhe ar nijeke sthir rakhte parlam na :) :)

      Delete
    3. tor tiffin time er barnonata darun , :-) satti lokjaner chotobelar prakriti jerakam chilo akhono sbai thik serakamoi ache,amader classmate der khtreo dekhechi - tinni

      Delete
    4. বেশি মোটেই বকিসনি, তিন্নি। তোর পরামর্শের জন্য থ্যাংক ইউ, মারাঠা ভবনে গিয়ে যেগুলো বললি সেগুলো খাব। গোয়া নিবাসে মিষ্টির দিকে তাকাইনি, তার একনম্বর কারণ বাড়ন্ত ক্যাশ। দু'নম্বর যে কারণটা সেটা খুব খারাপ। আমি এ পর্যন্ত যত কুইজিনের মিষ্টি খেয়েছি---চাইনিজ, ফ্রেঞ্চ, মেক্সিকান, অ্যামেরিকান, ভারতের মধ্যে উড়িয়া, কাশ্মীরী, তামিল, নাগা, মোটামুটি আপামর বিন্ধ্য হিমাচল যমুনা গঙ্গা --- খেয়েদেয়ে আমার এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে যে মিষ্টিটা বাঙালিই বেস্ট পারে। এ ধারণা ভুল হতে পারে, কিন্তু ভুল ঠিক করার মতো প্রমাণ এখনও কিছু পাইনি, সত্যি বলতে কি পেতে চাইও না।

      প্রকৃতি বদলায় না তিন্নি, ও জিনিস বদলানোর নয়। তার ওপর ডিগ্রি, আদর্শ, ঝকঝকে সিনিয়রের মগজধোলাইয়ের পরত পড়তে পারে, কিন্তু কোনওক্রমে ধাক্কাধুক্কি লেগে সে পরত একটুখানি চটে গেলেই আসল প্রকৃতি হইহই করে বেরিয়ে পড়ে।

      Delete
  3. Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ, চন্দ্রচূড়।

      Delete
  4. Aj shokal theke mood ta khichre chilo...lekha pore just khush hoye gelam...love you

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, থ্যাংক ইউ রণিতা।

      Delete
  5. Eesh eta porei amar lunch date-e jege ichhe korchhe! Baro bhalo likhechho. Majhe phanki dichhile ar amio ektu busy chhilam aj ek sathe tinte lekha peye dil khush ho giya!

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, ঠিকই ধরেছ রুচিরা। আগের সপ্তাহে পোস্ট মারাত্মক রকম কম পড়েছে। তোমার লেখাটা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম, আমাদের সে দুপুরটা দারুণ ভালো কেটেছিল।

      Delete
  6. dillite ese gechi .Goa bhawan list e tule nilam
    mithu

    ReplyDelete
    Replies
    1. সুস্বাগতম মিঠু! তুমি তো সঙ্গে করে বৃষ্টিবাদলা নিয়ে এসেছ দেখা যাচ্ছ। থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ। গোয়া ভবন অবশ্য করে যেও। অন্য ভবনগুলোকেও অবহেলা কোরো না প্লিজ।

      Delete
  7. পর্ক ভিন্ডালু খেতে আমিও খুব ভালবাসি। :)
    তবে এই লেখাটা পর্ক ভিন্ডালুর মতই সুস্বাদু, দারুণ লাগল। :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, অরিজিত।

      Delete
  8. Keu jodi beshi khao ..
    khabar hisab nao ..
    kenona anek lok ,
    SE SUJOG PAI NA :P ... Atmodip

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাঃ, আমিও যে আপনাদের প্রাক্তন মানসী সিনেমা হলের পাশে/উল্টোদিকের মদনের সুবিখ্যাত কাটলেট খাওয়ার সুযোগ পাচ্ছি না, কিংবা দিলীপের লেবু চা, সে বেলা?

      Delete
    2. Arey, apni tow dekhchhi sanghatik rokomer jhagrutey yea ..... :)
      Atmodip

      Delete
  9. darun hoeche lekha ta.. r lunch r aage porlam bole aaro bhalo laglo mone hochhe..:)

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা সঙ্গীতা, সেই কোন মনীষী যেন বলেছিলেন, হাংগার ইস দ্য বেস্ট সস, এখানেও সে রকমই কিছু একটা ঘটেছে আরকি।

      Delete
  10. lekhata darun as ususal...lunch date-er idea-ta phataphati....amar-o icche hocche...tabe jani na kabe habe.....tomar shathe amar edikeo mil je ami o lunch amar desk-e boshe khai nijer shathe shamay kata-te...r janoto ami office theke bari and vice-versa auto ba hente jaoya pachando kori nijer shathe shamay katanar jonnei...Goa-e khabar to amar khub priyo...infact Goa state tai amar khub priyo...shamudra r uttal shamudro-r jonne shathe khabar-o ashadharan....maharashtr-er khabare sherakam byapar nei tabe Kolhapuri variety try korte paro...

    ReplyDelete
    Replies
    1. লাঞ্চ ডেট অতি কাজের জিনিস দেবশ্রী। তুমি কাজে ফাঁকি দিয়ে হলেও ট্রাই করতে পার মাঝে মাঝে। ডেস্কে বসে লাঞ্চ করা আরেকজনকে পেয়ে খুশি হলাম। হেঁটে অফিস যেতে পারলে আমি বর্তে যেতাম গো। দৈনিক এক্সারসাইজের কোটা পূরণ করতে তাহলে আর কাকভোরে উঠে ধড়াচূড়া পরে বেরোতে হত না। কিন্তু আমার অফিসে হেঁটে যেতে গেলে আর পৌঁছতে হবে না।

      কোলাপুরি রান্নার তো নাম শুনেছি খুব। কোলাপুরি মাটন ইত্যাদি। তোমাদের রেকমেন্ডেশন শুনেটুনে মহারাষ্ট্রা ভবনে যাওয়ার ইচ্ছেটা ক্রমেই চেগে উঠছে। দেখি কবে যাওয়া হয়।

      Delete
  11. আপনি এ দেশে রেস্টুরেন্টে গোটা লবস্টার খেয়েছেন? ঐরকম জাঁতির মতন ক্রাশার তো দেয়ই, তার সঙ্গে প্লাস্টিকের এপ্রন দেয় পরে খাওয়ার জন্য, যাতে লবস্টার ভাঙ্গার সময়ে ছিটকে জামায় না লাগে। আপনার ছবিটা খুব ভালো হয়েছে। লোকের সামনে গরম করার লজ্জায় ঠান্ডা চাউমিন খাওয়ার ব্যাপারে হাই ফাইভ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ দেখেছি। তবে অত কায়দার ভয়েই কখনও খাইনি। লোকলজ্জা যে কত কিছু করিয়ে নিল সুগত, ঠাণ্ডা চাউমিন তো তাদের কাছে তুশ্চু।

      Delete
  12. :) :) :) tui ekirokom achis.

    ReplyDelete
    Replies
    1. বলছিস? কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, একরকম থাকাটা ভালো হয়েছে না খারাপ, সেটা আজকাল মাঝে মাঝে গোলমাল হয়ে যাচ্ছে। হয়তো আরেকটু উন্নতি করা উচিত ছিল।

      Delete
  13. Pork Vindaloo r chobita dekheyi jibhey niagra falls!

    ReplyDelete
    Replies
    1. ছবিতে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না পৌষালি। ব্যাপারটা খেতে সত্যিই ভালো ছিল।

      Delete
  14. দারুন হয়েছে লেখাটা। আমার বউ টাকে মিস করলাম আবার খানিক :( ...কদ্দিন হয়ে গেল বেরোই না

    ReplyDelete
    Replies
    1. শিগগিরি বেরিয়ে পড়ুন। শুভ কাজে দেরি করবেন না।

      Delete
    2. আমার অবস্থা ত আখন ওই যক্ষ টার মত তাই উপায় নেই :( ...যত watsapp r skype থাক নিরবাসিত যক্ষের অবস্থা বদলায় না

      Delete

Post a Comment