বিয়ে নিয়ে


বিয়ে ব্যাপারটা মোটেই সুবিধের নয়। ছেলেদের পক্ষে যে নয়, ‘জীবিত-বিবাহিত’ জাতীয় চুটকির কল্যাণে সেটা আর কারও জানতে বাকি নেই, কিন্তু আমার মতে মেয়েদের পক্ষেও ব্যাপারটা খুবই অসুবিধেজনক। শর্ট এবং লং-টার্ম, সব দিক থেকেই। 

এই এখন সারাদিন নির্জলা উপোস করে বিয়ে কর---আচ্ছা মানছি উপোস আজকাল কেউ করে না, কিন্তু বিউটি পার্লারে তো যেতেই হয়? সেখানে গিয়ে নাকেমুখে অচেনা লোকের ময়দা-ঠাসা সও, সয়েসয়ে আর শুয়েশুয়ে শোন, এক্ষুনি নিয়মিত পার্লারে এসে গোছাগোছা টাকা গচ্চা দিতে না শুরু করলে কী করে মুখের চামড়া ঢিলে হতে হতে একদিন শেষে খুলেই পড়ে যাবেচুলের দিকে তো অলরেডি তাকানো যাচ্ছে না “টাকা খরচ করতে এতই গায়ে লাগে তো বাড়িতেই কন্ডিশনিং করতে পারেন না একটু? কী এমন রাজকার্য করেন?”, “ভুরু দুটোরই বা কী ছিরি, যেন ছালছাড়ানো শুঁয়োপোকা ছেতরেমেতরে মরে পড়ে রয়েছে...”

আত্মসম্মানের পক্ষে বিউটিপার্লারের থেকে বেশি ক্ষতিকারক জায়গা আমি পৃথিবীতে খুব কম দেখেছি

যাই হোক, পার্লারের হাত থেকে কোনওমতে পালিয়ে যদি বা বাঁচা যায়, বিয়েটা যদি ভালোয়ভালোয় মিটেও যায়, তারপর তো গোটা জীবনটা পড়েই রইল। যে জীবনটার প্রতিটি দিনরাত, মিনিট, সেকেন্ড, সেভিংস অ্যাকাউন্ট, মাত্র ক’দিনের চেনা আরেকটা লোকের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে। প্রতিবার কলকাতা গেলে একের বদলে দুই সেট মাসিপিসির বাড়ি ভিজিট দিতে যেতে হবে একের বদলে দুই সেট পাড়াপড়শির কাছ থেকে চেহারা ভালো করার টিপ্‌স্‌ নিতে হবে। এরই মাঝে একদিন শঙ্খ আর হুলুধ্বনির মধ্যে দিয়ে আমার শরীর ছিন্নভিন্ন করে একটা জিনিস বেরিয়ে আসবে, যার চোখ-না-ফোটা, চিলচিৎকার কান্নায় বিকৃত মুখের দিকে তাকিয়ে আমি বাহ্যজ্ঞান বিস্মৃত হব। পাবলিক ফোরামে যার লক্ষলক্ষ ছবি ছেপে ফ্রেন্ডস্‌দের হাততালি কুড়োনো আমার একমাত্র হবিতে পরিণত হবে। যার ক্লাস ফাইভের অংক পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যেবেলা আমি বসের হাজার গালি অগ্রাহ্য করে, দিকবিদিকশূন্য হয়ে গাড়িচাপা পড়তে পড়তে ছুটেছুটে বাড়ি ফিরব অফিস যাওয়ার আগে যার ন্যাড়ামাথায় কেশুত পাতা মাখাতে গিয়ে আমার নিজের স্নান করার সময় হবে না।

আর ক’বছর পর থেকে এই লোকটাই আমার সমস্ত সাবধানবাণী, উপদেশ, অনুরোধ, কাকুতিমিনতিকে ফিগারেটিভ মধ্যমা প্রদর্শন করে নিজের পায়ে একের পর এক কুড়ুল মারতে শুরু করবে। আমি হাঁড়িকাঠে বন্দী অসহায় পাঁঠার মতো সে রক্তাক্ত দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে থাকব আর মনে মনে ভাবব, ভাগ্যিস সময় থাকতে থাকতে একখানা সংসার পেতেছিলাম। একলা থাকলে না জানি কী কেলেংকারিটাই না হত।

তবু সবাই বিয়ে করে। আমিও করছি। মা বলছেন, “বেশ করছ মা, আমায় উদ্ধার করছ।”

আমার নষ্ট করার মতো বাজে সময়ের অভাব নেই কি না, কাজেই আমি ব্যাপারটা নিয়ে ভেবেছি। যে সংসারচিতায় দগ্ধ হতে হতেও লোকে অন্যকে সে চিতায় টেনে তোলার জন্য এত ব্যস্ত হয় কেন। অবভিয়াস উত্তরটা হচ্ছে, চিতা বলেই হয় জ্যাকুজি হলে কিছুতেই হত না। উল্টে কী করে সবাইকে নাগালের বাইরে রাখা যায়, আদানুন খেয়ে সেই চেষ্টায় লাগত।

Andreas L Motor Yacht (ex Amnesia)  - The Jacuzzi Pool By Night With Lighting
কেনই বা কেউ এ জিনিসে খামোকা ভিড়ভাট্টা চাইবে? সুস্থ মস্তিষ্কে?

কিন্তু আরেকটাও যুক্তি থাকতে পারে। যে যুক্তিটার কথা আমার আগে মাথাতেই আসেনি। এই সেদিন ডাক্তারখানায় বসে বসে একটা ব্যাকটেরিয়াভর্তি পুরোনো ম্যাগাজিনের পাতা উল্টোতে উল্টোতে প্রথম এল। সইফ আলি খানের একটা সাক্ষাৎকার পড়তে পড়তে। সাক্ষাৎকারটা যখনকার, তখন সইফের অমৃতা খানের সঙ্গে সদ্য ডিভোর্স হয়েছে, তিনি মুক্ত বিহঙ্গের মতো পাখা ফরফরিয়ে ইতালিয়ান সুন্দরী রোজার সঙ্গে পার্টিতে পার্টিতে উড়ে বেড়াচ্ছেন।

প্রশ্নকর্তা সইফের কাছে জানতে চাইলেন, "আচ্ছা এই যে আপনি এতদিনের সঙ্গীকে ছেড়ে, ছেলেমেয়েদের গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়ে, স্রেফ নিজের সুখের কথাটা ভেবে সংসার ছেড়ে বেরিয়ে এলেন, লোকে আপনাকে কিছু বলল না? ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে গণধোলাই না দিক, পার্টিতে দেখা হলে মুখের ওপর দামি শ্যাম্পেন ছুঁড়ে মারল না?"

সইফ বললেন, "না সে মারেনি, তবে মারলেও কিছু বলার ছিল না।"

প্রশ্নকর্তা এবং আমি দুজনেই ছিটকে সোজা হয়ে বসলাম। বলে কী লোকটা?! এ কি নবাব না দেবতা?!

সইফ বুঝিয়ে দিলেন। বললেন, আসলে বিয়ে ব্যাপারটা হল গিয়ে সমাজের একটা অত্যন্ত গোড়ার কথা। ভিতের ঢালাই। সে ঢালাই যে ভাঙার দুঃসাহস দেখায়, তাকে কি চট্‌ করে বিশ্বাস করতে আছে? নিজের কচিকচি ছেলেমেয়ের কাছে ঘেঁষতে দিতে আছে?

আমার সইফের কথাটা খুব মনে ধরল। ডিভোর্সের জায়গায় সিংগল বসিয়ে নিলেও যুক্তিটা খেটে যায়। সিংগল লোকেরা হল সমাজের পদ্মবনে মত্তহস্তী। কখন কী করে ফেলে তার ঠিক নেই। দম্পতি বন্ধুরা যখন টেবিলের এপারেওপারে বসে স্মলটক করতে করতে ডিনার করেন, তখন একে অপরকে নিয়ে তাঁদের কোনও সংশয় থাকে না। কারণ তাঁরা জানেন, বাইরের চেহারাগুলোই যা আলাদা। দু’দলেরই গ্রিনরুমের চেহারাটা অবিকল এক। সেই হিংসে, সন্দেহ, ঝগড়াঝাঁটি। কে পাছে ফাঁকি দিয়ে কম কাজ করে ফেলল, সেই নিয়ে নিক্তি মেপে দরকষাকষি।

কিন্তু সিংগলদের মাথার ভেতর আরও কত কী প্যাঁচঘোঁচ, শয়তানি লুকিয়ে আছে, কে জানে? অজানা শত্রু সবসময়েই বেশি সাংঘাতিক।

মা’কে বললাম। মা খুব দুঃখ পেয়ে বললেন, “সোনা, শেষে শর্মিলা ঠাকুরের ছেলের কাছ থেকে জীবনদর্শন ধার করছ?”

আমি বললাম, “এত প্রেজুডিস থাকলে চলবে মা? ফিল্মস্টার বলে কি ফ্যালনা?”

মা মৌনং সম্মতি লক্ষণম্‌ জানিয়ে চোখ গোলগোল করে বসে রইলেন।

আমি বললাম, "তবে তুমিই বল কেন লোকে বিয়ে করে, কোন্‌ সুখের মুখ চেয়ে?"

মা চোখ কপালে তুলে বললেন, "ওমা সুখ আবার কীসের? সুখ বলে পৃথিবীতে কিছু আছে নাকি যে তার মুখ চাইবে? লোকে বিয়ে করে দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার জন্য। এই লম্বা জীবনটা ধরে লোকের কাছে যত কথা শুনবি, যতবার ঠকবি, যতবার ঘরেবাইরে লোকজনের অভদ্রতার বহর দেখে বিস্ময়ে হাঁ হয়ে রইবি, মনে মনে জানবি তোর সবথেকে কাছের, সবথেকে পাশের লোকটাও একইরকম হাঁ হয়ে যাচ্ছে। অটোওয়ালার অপমান কিংবা বসের বকুনি, দুটোই একা সওয়া বড় শক্ত রে সোনা। একছাদের তলায়, চারদেওয়ালের মধ্যে, দিনরাত আরেকজনকে একইরকম নাকাল হতে দেখলে কষ্টটা অনেক কম হবে।"

আমি এখনও স্থির করিনি, বিয়ে জাস্টিফাই করার জন্য কোন্‌ কারণটাকে বাছব। সইফ আলি খান না মা, কার যুক্তিটাকে মানব। তবে তাড়া তো কিছু নেই, এখনও গোটা জীবনটাই পড়ে আছে। একদিন না একদিন পরিষ্কার হয়েই যাবে, লোকে কেন বিয়ে করে।

Comments

  1. ১) সঈফের যুক্তিটা বিশেষ সুবিধের নয়। কাকিমারটা যুক্তিটা অনেক বেশি সুন্দর। তুই যদি সারা পৃথিবীর কাছেও হেরে যাস্‌, পদে পদে ধাক্কা খাস্‌, মুরগি হোস্‌, এমন একজন তোর জন্য আজীবন থাকবে যার কাছে তুইই সবথেকে স্পেশাল। এটা কিছু কম পাওয়া নয়। আর তাছাড়া বেশি বয়সের জন্য স্বাস্থ্যবীমা তো আছেই।

    ২) ন্যাড়ামাথায় কেশুত পাতা মাখানোর ব্যাপারটা কী? ইহজন্মে শুনিনি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ স্বাস্থ্যবিমা নিয়ে আমরাও মাথা ঘামাচ্ছি। বড় ঝামেলার কাজ। জঘন্য।

      আরে কেশুত পাতা মাখলে মাথার চুল ঘন কালো লম্বা ইত্যাদি হয়। ন্যাড়ামাথায় মাখালে একেবারে ডিরেক্ট রুটে ঢুকে গিয়ে বেশি ভালো কাজ করবে বলে বোধহয় আমার মা আমাকে বারো মাস ন্যাড়া করিয়ে রাখতেন আর কেশুত পাতা মাখাতেন। কিসুই কাজ দেয়নি বলাই বাহুল্য।

      Delete
    2. তা বলিনি। বললাম, বিয়ের একটা উপকারিতা হল প্রৌঢ় বয়সের জন্য স্বাস্থ্যবীমা।

      Delete
  2. "সিংগল লোকেরা হল সমাজের পদ্মবনে মত্তহস্তী। কখন কী করে ফেলে তার ঠিক নেই। দম্পতি বন্ধুরা যখন টেবিলের এপারেওপারে বসে স্মলটক করতে করতে ডিনার করেন, তখন একে অপরকে নিয়ে তাঁদের কোনও সংশয় থাকে না। কারণ তাঁরা জানেন, বাইরের চেহারাগুলোই যা আলাদা। দু’দলেরই গ্রিনরুমের চেহারাটা অবিকল এক। সেই হিংসে, সন্দেহ, ঝগড়াঝাঁটি। কে পাছে ফাঁকি দিয়ে কম কাজ করে ফেলল, সেই নিয়ে নিক্তি মেপে দরকষাকষি। কিন্তু সিংগলদের মাথার ভেতর আরও কত কী প্যাঁচঘোঁচ, শয়তানি লুকিয়ে আছে, কে জানে? অজানা শত্রু সবসময়েই বেশি সাংঘাতিক।"

    খুব, খুব সত্যি কথা। দারুন লিখেছেন।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সত্যি কিনা বলুন। কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি, আমি ডবল হয়েও সিংগলদের পেছনে হাত ধুয়ে পড়ব না। এইটা আমার নিজের কাছে নিজের শপথ।

      Delete
    2. ঠিক। পৃথিবীতে যুদ্ধ ছাড়া সবই সমানে সমানে হওয়া উচিত।

      Delete
  3. amar kakimar kotha r golpo gulo sunte daruun lage :)
    khub bhalo likhechho.

    ReplyDelete
  4. Hmmmm...khubi chintamoy byapar. Ami ei du bochor aadh mashe ekhono ei rohoshyer shomadhan korte pari ni. Tobe kina, tandem cycle er partner, ghotirecipe dimer jhol, ar phokote daktari - ei ba kom ki?

    ReplyDelete
    Replies
    1. Not to mention, shared parenting of a handsome puppy goggie.

      Delete
    2. শকুন্তলাআআআআ, মিল মিল। আমার যে কী শখ ওই জোড়া সাইকেল চালিয়ে ঘোরাঘুরি করার। কিন্তু দিল্লিতে সেটা করতে গেলে প্রথমত সবাই ঢিল ছুঁড়তে পারে, আর অর্চিষ্মান "আমাকে খোঁজবার চেষ্টা করো না" নোট লিখে রেখে পগার পার হতে পারে।

      কৌশিক, হ্যাঁ শকুন্তলার কুকুরছানার গল্প আমিও পড়েছি। খুবই মজার।

      Delete
    3. অর্চিষ্মান "আমাকে খোঁজবার চেষ্টা করো না" নোট লিখে রেখে পগার পার হতে পারে। khub haschi ea pore:-)

      Delete
    4. শকুন্তলা অপরিসীম বাজে বকে। ওর বরের মত ভাল ছেলে এই পৃথিবীতে নেই।

      Delete
  5. Subidha osubidha na bhebe sidhhanto jokhun niachen moja kore bia ta sere felun...'তবু সবাই বিয়ে করে। আমিও করছি।' mojar ukti but bhabbar bisoy...kichu bisoy bhabbar jonno dewa e jete parto apnake, kintu thak...
    r lekha ta khub e bhalo hoyeche...

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ সৌমেশ। আমিও এই কথাটা অক্ষরে অক্ষরে মানি, বেশি ভেবেছ কি মরেছ। সে বিয়ে নিয়েই হোক কি স্নান করা নিয়ে।

      Delete
  6. প্রথমে, কনগ্র্যাচুলেশন্‌স্‌ অনেক অনেক। সুখী বিবাহিত জীবনের জন্য শুভেচ্ছা জানাই আমার এবং আমার স্ত্রীর পক্ষ থেকে; আমরাই দু'জনেই তোমার ভক্ত পাঠক-পাঠিকা কিনা!

    দ্বিতীয়ত, ওই জীবিত-বিবাহিত চুটকিটা এক্কেবারে বাজে কথা; ওই কথা যারা তোলে এবং যারা তাতে মদত দেয়, দু'পক্ষই জীবনের সংজ্ঞার ব্যাপারে বিন্দুমাত্র অবহিত নয়। কর্মকেন্দ্রিক, বন্ধুত্ব, প্রেম, বিবাহ, যে কোন সম্পর্ক - এমনকি রক্তের সম্পর্ক পর্যন্ত - বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন উভয়তঃ চিন্তন-মনন, অনুশীলন এবং পরিশ্রম। তার পরেও অনেক সময়ে অনেক সম্পর্ক শেষ অব্দি সামলে ওঠা যায়না। জীবনে প্রতিনিয়ত বহু রকমের চ্যালেঞ্জ আসে - সেগুলোর মোকাবিলা করে উঠতে পারাটাই না বেঁচে থাকা! আদারওয়াইজ, "য়ে জীনা ভি কোঈ জীনা হ্যায় লল্লু?"

    তৃতীয়ত, তোমার মা-কে আমার শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করি; উনিই বিবাহিত জীবনের আসল সত্যিটা কত সহজে প্রাঞ্জল করে তুলে ধরেছেন। জীবনে সাফারিং এমনিতেও আসে, ওমনিতেও। সেটাকে কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারলে চলার পথটা একটু সহজ হয়। শেয়ার্ড সাফারিং ক্রিয়েট্‌স্‌ অ্যান ইন্‌ডেলিব্‌ল্‌ বন্ড। অনেকেই বলতে পারে যে তার জন্য বিয়ের প্রয়োজন কি? বিয়ে না করেই তো অনেকে অনেকের সঙ্গে সুখেই আছে। সত্যি কথা। আসল কথা হোলো সম্পর্কের দুই অংশীদারের মধ্যে কমিটমেন্ট, যেটা ভালবাসা থেকে হতে পারে, আবার হতে পারে সুবিধার বা কনভিনিয়েন্স-এর কারণে, অথবা পিওরলি অর্থনৈতিক কারণেও। সে যেই হোকনা কেন, বিয়েটা একটা ফর্মালাইজেশন অফ দ্যাট কমিটমেন্ট, একটা সামাজিক কন্ট্র্যাক্ট। সামাজিক পরিস্থিতি বা দেশের আইন অনুযায়ী তার কিছু কিছু এফিকেসি আছে। কিন্তু প্রাইমারীলি, সম্পর্কের ভিত, তার সোজা-উল্টো, তার এগোনো-পিছোনো - সে সব একান্তভাবেই ইউ অ্যান্ড ইয়োর্স-এর মধ্যেকার ব্যাপার।

    স্যরি, অনেক বক্তৃতা দিয়ে ফেললাম। ভাল থেকো, আবার শুভেচ্ছা জানালাম।

    ReplyDelete
    Replies
    1. "দ্বিতীয়ত, ওই জীবিত-বিবাহিত চুটকিটা এক্কেবারে বাজে কথা; ওই কথা যারা তোলে এবং যারা তাতে মদত দেয়, দু'পক্ষই জীবনের সংজ্ঞার ব্যাপারে বিন্দুমাত্র অবহিত নয়। কর্মকেন্দ্রিক, বন্ধুত্ব, প্রেম, বিবাহ, যে কোন সম্পর্ক - এমনকি রক্তের সম্পর্ক পর্যন্ত - বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন উভয়তঃ চিন্তন-মনন, অনুশীলন এবং পরিশ্রম। তার পরেও অনেক সময়ে অনেক সম্পর্ক শেষ অব্দি সামলে ওঠা যায়না। জীবনে প্রতিনিয়ত বহু রকমের চ্যালেঞ্জ আসে - সেগুলোর মোকাবিলা করে উঠতে পারাটাই না বেঁচে থাকা! আদারওয়াইজ, "য়ে জীনা ভি কোঈ জীনা হ্যায় লল্লু?""

      হাই হায়ার হায়েস্ট ফাইভ কৌশিক। ওই চুটকিটা ঠিক না ভুল, সে পর্যন্ত যাওয়ারও দরকার নেই, ওই চুটকিটা কেউ করছে শুনলেই আমি মাথার ভেতর তার নাম কেটে দিই।

      তোমার বাকি মন্তব্যের সঙ্গেও আমি একমত।

      আর শুভেচ্ছার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। খুব খুশি হলাম।

      Delete
  7. লোকে কেন বিয়ে করে, এই প্রশ্নটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল এই, যে কুন্তুলা দেবী এই প্রশ্নটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। বেশ একটা বিয়ে বিয়ে মরশুমি হাওয়া চলছে... বেশ একটা ঠান্ডা, সুগন্ধি হাওয়া। জয় হো!

    ReplyDelete
    Replies
    1. আর বলবেন না দেবাশিস। কোথায় ভাবি একটু প্রোগ্রেসিভ হয়ে এইসব বিয়েফিয়ের ঊর্ধ্বে উঠে থাকব, বাড়ির লোকের ঠ্যালায় তার জো আছে? টোয়েন্টিফোর সেভেন খালি ওই গবেষণা চলছে। বর কে আনতে যাবে, এই নিয়ে প্রায় কুরুক্ষেত্র বাধার উপক্রম। ইনোভা না বোলেরো, এটা যে সুস্থমস্তিষ্কের অ্যাডাল্ট লোকজনের একটা আধঘণ্টাব্যাপী আলোচনার বিষয় হতে পারে, এটা না দেখলে বিশ্বাস করতাম না।

      আমি সত্যি বলছি এসব নিয়ে মাথা ঘামাই না, সব ওদের দোষ।

      Delete
    2. ওর গায়ে এখন গুছিয়ে বিয়ের হাওয়া লেগেছে। এইসব বলে মেক-আপ দেওয়ার চেষ্টা করছে।

      Delete
    3. বঙ্গসমাজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আন্‌। নিজে বর আনতে যা।

      Delete
    4. সেটাই করব ভাবছি।

      Delete
  8. amar mayer didima akta katha bolten bangaal bhashay,jeta amader barite khub chalu... "bia korle bakaner( bakuni deoar ) akta lok paoa jay" :-) kathata 100% sotti ,eita ami bujhechi!!

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহাহাহা, দিদিমাদের সিরিয়াসলি জবাব নেই। "বাকানের লোক"... ভালো বলেছিস। এইবার থেকে সেইভাবেই চলব।

      Delete
  9. প্রচুর অভিনন্দন প্রথমেই। শাদি কা লাড্ডু ভালই লাগবে দেখবে। কাকীমার কথাকটা অসম্ভব সুন্দর। দুঃখ ভাগ করে নেওয়াটাই তো কঠিন। দারুণ কথা, দারুণ কথা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ আবির।

      Delete
  10. Bie khub bhalo jinis! Nischinte kore phelo! Bhabar jonno theory of relativity achhe tomader law of diminishing returns (i have no clue what that is) achhe! Bie ta ebong bibahito jeebon ta beshee na bhebe enjoy koro! darja lock korechho kina bhule gie jakhon pher dekhte chhutbe, takhon pasher lokta thamie bolbe korechho ami dekhechhi! Chabi ta purse-e dhukiechho kina bhebe jakhon atonkito hobe, takhon pasher lokta bole debe pocket-e rekhechho! Jakhon arekjon drive korbe takhon 'eesh amar drive kora uchit chhilo' bole aporadh bodh hobe na. Raat birete berote hole 'sange chalo' bolar ekta lok thakbe. Ranna eka tomake korte hobe na. baree ese jedin kichhu korte ichhe korbe na, sedin nischinte arekjon ke bolte parbe please amar kaj gulo ajke tumi kore dao! boss-er opore raag hole nischinte arekjoner kachhe bose gajor gajor korte parbe! egulor jonnoi bie kore phela jai! baki ja sab raga ragi, jhagra jhanti sesab-o hobe. kintu boyfriend-ra sesab hole palie jabar bhoi thake, borera generally chhotokhato issue-te palay na!

    ReplyDelete
    Replies
    1. তোমার মুখে চপকাটলেট ফুলুরি বেগুনি মাছের চপ সব পড়ুক রুচিরা। যেন এরকমই হয় ঠাকুর।

      Delete
    2. Ei re eto gulo bhaja khabar? Ektu salad talad dile hoto na?

      Delete
    3. আমাকে দিস্‌ বরং।

      Delete
  11. jakhon patro nirbachon kore phelechho, apatato sudhu khub khuub anondo kore bieta kore phalo, ar amar obhignata ja bole ei somoi puro control ta barir ar sob lokjon daityo nie nie nai, tai kono byaparei kichhu bhebona, keu kaano debena tomar kothai, kono bhabnachinta noi ekdom nirbhejal anondo koro.
    Ar tomar ma-ke amar srodha janio, kothata je ki khnati bolechhen uni. ekebare sotti kothati sahoj sur-e bola. khub bhalo laglo pore.

    ReplyDelete
    Replies
    1. উফ্‌ মা যা খুশি হবে না শুনলে।

      হ্যাঁ আমিও সেইরকমটাই করেছি ইচ্ছাডানা। গোড়াতেই নিজের শর্তগুলো বলে দিয়েছি, তারপর বলেছি, এগুলো বাঁচিয়ে তারপর যা খুশি করো। আমার কিছু এসে যায় না। তবে আমাকে স্বীকার করতেই হবে, আমার মা বাবাও আমার কথা প্রায় সবই শুনেছেন।

      Delete
    2. ekebare thik kaj Kuntala. Jesob khetre nijer mot lagano dorkar, seta agei bole neoa bhalo. :-)

      Delete
  12. biye bodhoy ultimately korte hoy bolei kora. confirmed bachelor/spinster ra sobai ki jibon ta khub dukkhe katay? ami jani na, but mante badhche. r spouse bolei take dhore amar sobrokom dukkher kahini shonano ki uchit? mane ami ektu kadune type er lok. amar khub guilty feeling hochhe eta bhebe. amar partner er toh life durbisoho hoye jabe! tachhara sobai orokom supportive type er hoy o na. 'amake khojbar chesta koro na' bole note likhe pogar paar hote pare. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. সে তো অবশ্যই টিনা। আমিই খুব স্বার্থপর টাইপের মানুষ, আমার কানের কাছে চব্বিশঘণ্টা কেউ ঘ্যানরঘ্যানর করলে আমিও নোট লিখে পালাব। কিন্তু যদি ব্যাপারটা জুলুম না হয়, আর ন্যাচারেলি হয়, তাহলে অত খারাপ লাগে না বোধহয়। অনেকগুলো 'যদি', 'কিন্তু', 'বোধহয়-এর ব্যাপার আছে। তবে আমি একটা কথা খেয়াল করে দেখেছি জান তো, এক্সট্রা ঘ্যানঘানানো লোকেদের সঙ্গে সবসময় এক্সট্রা ধৈর্যওয়ালা লোকেরই জুটি হয়। আমার চোখের সামনে এরকম কেস আমি নয় নয় করে চারখানা দেখেছি।

      Delete
    2. ওহ, আর ওই স্পিনস্টার বা ব্যাচেলররা যে দুঃখে থাকে সেটা আমিও বিশ্বাস করি না। তাহলে তো বলতে হয় মিস মার্পল, শার্লক, হারকুল, ফেলুদা, সবাই ভয়ানক দুঃখে জীবন কাটাচ্ছে। মোটেই না। আমার বরং ওই জীবনটা নিয়ে বেশ একটা ফ্যান্টাসি আছে।

      তবে যারা একা থাকতে পারে না, তাদের সে এক্সপেরিমেন্ট না করতে যাওয়াই ভালো। বিয়ে করলে তারা একজনকে জ্বালাবে, না করলে দশজনকে। কাজেই।

      Delete
  13. Replies
    1. এগুলো এখন বললে, আর কিছুই সারপ্রাইজ বাকি থাকবে না। আর মা বাবা আমাকে ধরে ঠ্যাঙাবে।

      Delete

Post a Comment