Posts

Showing posts from April, 2023

ইদানীং দিনরাত

Image
আগেই বলা উচিত ছিল। আগামী মাসদেড়েক অনিয়মিত হবে অবান্তর। আমার দোষেই কারণ চব্বিশ ঘণ্টা সব কাজ সামলানোর পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু আমি যেহেতু আমি, সব সামলাতে গেলে সবক'টাই ছত্রাকার করব। কিছু প্রায়োরিটি এসেছে যা ছত্রাকার হলে খুবই খারাপ হবে। অবান্তর ডকে তুলে সে সব প্রায়োরিটি পালন করতে গেলে আবার মানসিক স্বাস্থ্য টলমলাবে। কাজেই মাঝে মাঝে ঘাই মেরে ফাঁকিবাজি পোস্ট করে ডুব দেব। কিছু মনে করবেন না আশা করি। আজকের ফাঁকিবাজি পোস্টে দুটো গান। অনিমেষ রায়ের গান, ইউকুলেলে এবং নয়ন রায়ের ডুবকি - সকলেই শুনে ফেলেছেন, আমার এত দেরি হল কেন কে জানে। সবেতেই দেরি বলে বোধহয়। অনিমেষ কোক স্টুডিও ইত্যাদিতেও গেয়েছেন, কিন্তু আমার ওঁর ঘাটেমাঠে বা ঘরের ভেতর বসে গাওয়া গানগুলো বেশি টেনেছে। সে রকম দুটো গান রইল। প্রথম গানটা এমনিই ভালো। দ্বিতীয় গানটা এক্সট্রা ভালো করে তুলেছে 'দ্যাখ কেমন লাগে'র অ্যাংগলটা।

দিবসোপযোগী

সকাল থেকে মুখ এক্সট্রা হাঁড়ি করে বসেছিলাম। ঠিক করেছিলাম, নিজে থেকে তো জানাবই না, হোয়াটসঅ্যাপে কেউ শুভ নববর্ষ জানালেই মনে মনে তার গর্দান নেব। যত ফিরতি শুভেচ্ছা পাঠাব, সব ওপর ওপর, ফাঁপা। পাড়ার বাংলা স্কুলে মাইকে রোজ প্রার্থনায় গায়ত্রীমন্ত্র হয়। রোজ এই সময়টা এমন মুখ করে থাকি যেন নিজে একটা আস্ত হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। তারপর নিজেকে মনে করাই আমাদের ভয়ানক অন্যরকম ইস্কুলে, যার দেমাকে মাটিতে পা পড়ত না আমার, আমার অনেক বন্ধুর এখনও পড়ে না, রোজ সকালে শৃণ্বন্তু বিশ্বে , মধুবাতা ঋতায়তে, একবার সংস্কৃতে, একবার বাংলায়, একবার শুরু থেকে শেষ, একবার শেষ থেকে শুরু গাওয়ানো হত। সরস্বতীটতি তো ছেড়েই দিলাম, রামকৃষ্ণ সারদামা বিবেকানন্দর বাণীতে মুড়ে বড় করা হয়েছিল আমাদের। মন্ত্রোচারণ শেষ হল। বাঁচা গেল ভেবে হাঁফ ছাড়তে যাব, একজন মাইকে ঘোষণা করলেন আজ নববর্ষ বাবদ ক্লাস শুরু হওয়ার সময় সামান্য পিছিয়ে সংক্ষিপ্ত ফাংশান হবে। এস হে বৈশাখ হল। স্লাইট বেসুর, কিন্তু গলাটা মিষ্টি। সকালবেলা বাড়ির সামনে দিয়ে বাবার সাইকেলে বসে যারা গম্ভীরমুখে যায়, তাদের কেউ? জীর্ণপুরাতনকে ঝাঁটাপেটা করার মর্মে একজন কবিতা বলল। বরিষ ধরা মাঝে

নতুন চশমা

অর্চিষ্মান যেদিন চেয়ারের পেছন দিয়ে পাস করতে করতে আমার স্ক্রিনের ছত্রিশ ফন্টের দিকে চোখ ফেলে, “বস্‌স্‌স্‌স্‌…” বলে উঠল বুঝলাম আর দেরি করা যাবে না। বিকেলেই দয়াল অপটিকস। গটগটিয়ে ঢুকে গেলাম। কোনদিকে যাব, কার সঙ্গে কথা বলব ইত্যাদি নার্ভাসনেস দেখালাম না। চেনা দোকান। চেনা মুখ। করণীয় কাজের পারম্পর্য জানা। প্রথমে যেতে হবে দোকানের অন্যপ্রান্তে স্বচ্ছদেওয়াল কিউবিকলে, যার ভেতর একজন বৃদ্ধ ভদ্রলোক বিবিধ যন্ত্রপাতি সাজিয়ে বসে আছেন। ট্রে মতো একটা জিনিসে চিবুক রাখলাম। উত্তলমতো একটা জিনিস কপালে সেঁটে গেল। সবুজ মাঠ, নীল আকাশ, সবুজ ট্রাক। ঝাপসা হল,স্পষ্ট হল। যন্ত্র সরিয়ে, চশমার কংকাল নাকে বসিয়ে, গোল কাচ ঢুকিয়ে, ঘুরিয়ে, বার করিয়ে দূরের বোর্ডের বর্ণমালা পড়ানো হল। সেই সাড়ে পাঁচ থেকে পড়ে আসছি। সাড়ে পাঁচে ওই ট্রাকের ফোকাসের ব্যাপারটা হত না। বদলে ডাক্তারবাবু একটা হলুদ আলোর বিন্দু নিয়ে আমার চোখের মধ্যে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। চশমা হওয়ার গল্পটা আগে বলেছি, আবার শুনুন। কেজি টু শেষ আর ক্লাস ওয়ান শুরুর মাঝখানে আমার চশমা হয়। হওয়া উচিত ছিল অনেক আগেই। কিন্তু আমি তো বুঝিনি যে আমি কম দেখি। আমি ভেবেছি আমি যেমন দে

পাকে পাকে বাঁধা

গত বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরে, প্রতিভাস থেকে প্রকাশিত কৃত্তিবাস পত্রিকায় আমার একটা ছোটগল্প বেরিয়েছিল। ভদ্রস্থ পরিমাণ সময় অতিবাহিত হয়েছে আশা করে জানতে চেয়েছিলাম গল্পটা এবার আমি আমার ব্লগে দিতে পারি কি না। অবশ্যই পারি জানতে পেয়ে গল্পটা অবান্তরে দিয়ে রাখলাম। পাকে পাকে বাঁধা কুন্তলা বন্দ্যোপাধ্যায় ১ সবথেকে সহজ এবং সাফসুতরো হচ্ছে সায়ানাইড। খাবে, মরে যাবে। আর্সেনিক হলে কষ্ট বেশি। পেটব্যথা, খিঁচুনি, ডায়রিয়া। বমি করে করে ন্যাতা হয়ে যাবে, তখনও শরীর মোচড় দিয়ে দিয়ে নিশ্চিত করতে চাইবে যাতে বিষ ভেতরে না থেকে যায়। মোমের মতো চামড়া ফেটে ঘা বেরোবে। সারা শরীরে কালশিটে। এখনও তোমার সুবিধের কথা ভাবছি। আমার সুবিধে আর্সেনিকেই। আজকাল সুপারমার্কেটগুলোতে সব পাওয়া যায়। আমি ওদিক থেকে এঞ্জিন কুল্যান্ট তুলব, তুমি এদিক থেকে হারিসা আর অরগ্যানিক ডিম, ব্রাউন খোলের। ব্রাউন আর সাদা খোলের মধ্যে স্বাদ গন্ধ এমনকি নিউট্রিশন্যাল ভ্যালুরও কোনও তফাৎ নেই, বলার চেষ্টা করেছিলাম একবার। বাঁকা হেসেছিলে। দামের আছে। কিন্তু সায়ানাইডকে যতটা ইন্সট্যান্টেনিয়াস বলা হয়, ইন্টারনেট দাবি করছে ততটাও না। কারা যেন খেয়ে মরে যাওয়ার আ

আরও একবার

Image
গত আটচল্লিশ ঘণ্টা সব রাস্তা খাদের ধারে এসে থেমেছিল। নিজের রাস্তা ফুরোনোটায় অত কান্না পায় না, যত টুঁটি টিপে ধরে অন্যদের রাস্তা অনন্ত সম্ভাবনা, প্রাপ্তি ও অর্জনের দিকে ধাবিত হওয়াটা। ষষ্ঠ রিপুটা এমনি এমনি ষষ্ঠ নয়, যথার্থেই ওস্তাদের মার শেষ রাতে। এই সব সময়ে উইল পাওয়ারটাওয়ার পাগলের প্রলাপ। ডোপামিনের যে কটা বাহ্যিক অনুঘটক আছে তার মধ্যে, হার্ভার্ডের বিজ্ঞানীরা পর্যন্ত একমত, সকালের সূর্য অন্যতম। নিজেকে ঠেলে মেলা গ্রাউন্ডে পাঠিয়েছিলাম ভোরে। ফিরে এসে বুঝলাম ঠেলা যথেষ্ট হয়নি। অর্চিষ্মানের ঘুম ঠেলে ভাঙাতে হবে। অটো চড়ে গেলাম কফি খেতে। ডিফেন্স কলোনির কফি শপ। আগে যাইনি কখনও। দোকানে ঢুকে মাছির মতো ধাবিত হলাম আলোকিত জানালার দিকে। দুটো চেয়ারের যেটাতে রোদ পড়েছে, অর্চিষ্মানকে সুযোগ না দিয়েই দখল করলাম। করার পর একবার বলেছিলাম অবশ্য, আমার চেয়ারটা বেটার, তুমি আসবে এদিকে? ওর 'না' বলার পূর্ণ নিশ্চয়তা নিয়েই। ক্রমাগত ঝড়বৃষ্টি হয়ে দিল্লির বসন্তটা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। দোসরা এপ্রিল বেলা সাড়ে এগারোটার সময় ফ্যান চালাতে হচ্ছে না, স্মৃতিতে প্রথম। সেই বসন্তের আঁচ পোয়াতে পোয়াতে কফি খেলাম। ঘণ্টাখানেক ধরে সূর্য