Posts

Showing posts from February, 2020

কুসংস্কার প্রসঙ্গে

সকালবেলা অফিসে ঢুকে দুম দাম দড়াম খটাস ধুপ ধাপের মধ্যে পড়তে হল। এমনিতে আমার অফিসে শ্মশানের স্তব্ধতা বজায় থাকে। আমি তা নিয়ে খুশি। নতুন অফিসের পরিবর্তিত শৈলীতে আমার লটারি লেগেছে, আশেপাশে যত মুখচোরা আর অপ্রাণবন্ত সহকর্মীরা জায়গা পেয়েছেন। ঘটনাটা আবিষ্কার করে তিন সেকেন্ডের জন্য অবিশ্বাস সরিয়ে রেখে মনে মনে ভগবানকে থ্যাংক ইউ জানিয়েছিলাম। তবু সেদিনের আওয়াজটায় অবাক হলাম না, কারণ ক’দিন আগে আরেকটা আওয়াজ পেয়েছিলাম যার মাঝে এর ভবিষ্যদ্বাণী লুকিয়ে ছিল। সে আওয়াজ ছিল এই শব্দকল্পদ্রুমের তুলনায় ঢের মৃদু এবং নম্র। ওহ। মাই। গড। শ্বাসের নিচে প্রায় চাপা পড়ে যাওয়া তিনটি সংক্ষিপ্ত শব্দ। তার মধ্যেই যা আতংক, ত্রাস ও হতাশা ঠাসা, রাগী লিবারালদের ফেসবুক পোস্টও ফেল পড়বে। ভেবেছি আরশোলা বা মাকড়সা বা ওই জাতীয় কিছু হবে। উঠে যেতে হল। নিজের থেকে সাইজে ছোট জীব দেখলেই অনেকের প্রথম ইনস্টিংক্ট হয় অ্যাটাক। চটি তুলে চপেটাঘাত। গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আরশোলা বা টিকটিকি বা মাকড়সা যেটুকু যা নড়াচড়া করছে তা প্রাণ নিয়ে পালানোর জন্যই। আমি মানুষ হয়েও মানুষ দেখলে পালাই, ওদের গা ঘেঁষাঘেঁষি করতে চাওয়ার কোনও কা

On Love

কবিতাটা নিল গেমন লিখেছিলেন তাঁর একজোড়া বন্ধুর বিয়ে উপলক্ষ্যে। কিন্তু এ কবিতাকে শুধু বিয়ের কবিতা বলে দাগিয়ে দেওয়া পাগলামি। এটা আসলে ভালোবাসার কবিতা, তাই আজকের দিনের জন্য একেবারে অর্ডার দিয়ে তৈরি। যাঁদের বিয়ে হয়েছে, হয়নি, হবে না, হতেও পারে, না হলেই বা কী, না হলে বুকফাটা কষ্ট - সবার জন্য কবিতাটা রইল। রইল আমার আর অর্চিষ্মানের জন্যও। হ্যাপি ভ্যালেনটাইনস ডে। ALL I KNOW ABOUT LOVE Neil Gaiman This is everything I have to tell you about love:  nothing. This is everything I've learned about marriage:  nothing . Only that the world out there is complicated, and there are beasts in the night, and delight and pain, and the only thing that makes it okay, sometimes, is to reach out a hand in the darkness and find another hand to squeeze, and not to be alone. It's not the kisses, or never just the kisses: it's what they mean. Somebody's got your back. Somebody knows your worst self and somehow doesn't want to rescue you or send for the arm

পার্সোনালাইজড

জানুয়ারির গোড়ার দিকে সুইগি থেকে মেল এলো। অমুক লিমিটের বেশি টাকার অর্ডার দু'বার করলে একটি হেলথ প্ল্যান অ্যাপে ৩০ দিনের পার্সোনালাইজড ডায়েট প্ল্যান ফ্রি। এই হেলথ অ্যাপের মূল খেলাটা হচ্ছে সারা দিনে যা খাচ্ছেন সব টাইপ করলে আপনি দরকারের কত বেশি খাচ্ছেন, যা খাচ্ছেন তাতে আপনার পুষ্টিগুণ কত কম পড়ছে ইত্যাদি সব বলে দেওয়া। খাবারের লিস্ট চমকে দেওয়ার মতো। পোহাও যেমন আছে, চিঁড়ের পোলাও, চিঁড়ের পুলাও ও আছে; বাথুয়া সাগের পাশাপাশি বেতো শাকভাজা - সব খাবারের সব রকম সংস্করণ এন্ট্রি করা আছে, খালি আপনার টাইপ করার অপেক্ষা। তাছাড়া নানারকম অনুপ্রেরণামূলক কেস স্টাডিও মাঝে মাঝেই পপ আপ করতে থাকে, ভারতবর্ষের কোন প্রান্তে কে মোটা থেকে রোগা হয়ে রোগশোকতাপ জয় করে ফেলেছেন। সায়কের কাছে অ্যাপটার কথা জেনে আমি অর্চিষ্মান দুজনেই ডাউনলোড করেছিলাম। অর্চিষ্মান সপ্তাহখানেক পরেই ক্ষান্ত দিয়েছে, আমি চালিয়ে গেছি। খুব নিষ্ঠাভরে নয়; সকালবেলা চা আর বিস্কুট ইনপুট দেওয়ার যতটুকু উৎসাহ থাকে, সন্ধেবেলায় ঝালমুড়ি আর আলুকাবলিতে পৌঁছতে পৌঁছতে অন্তর্হিত হয়। একদিক থেকে ভালোই, নিজে হাতে আর নিজের পাপের খতিয়ান লিখতে হয় না। বলা বাহু

কয়েকটা পছন্দের লিংক

মেনোপজ। অভিযোজনের মির‍্যাকল।   পৃথিবীর বৃহত্তম সেকেন্ড হ্যান্ড বইয়ের বাজার। অনিশ্চয়তায় দীর্ণ। আপনি সম্ভবত এই বাজারে বাজার করেছেন। ভারতবর্ষের আমদানি দ্রব্যে র তালিকায় নতুন আইটেম । চিতা। ফ্রেঞ্চ রান্নার সূক্ষ্মতা সম্পর্কে লিজেন্ড শুনেছিলাম, রাঁধুনিরা নাকি রেসিপিতে রসুনের মাত্রার নিদান বুঝে, কোনও কোনও রান্নায় সত্যি সত্যি রসুন দেন আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে গোটা রান্নাটা হওয়ার সময় উনুনের ধারে একটি কোয়া রসুন রেখে দেন। তাতেই যা কাজ হওয়ার হয়ে যায়। মাঝে মাঝে মাশরুম পিৎজা অর্ডার করে খেতে বসে আমরা ভাবি, সম্ভবত এর রেসিপিতেও মাশরুম পাশে রাখার কথা হয়েছিল, পিৎজায় দেওয়ার নয়। খিদের মুখে খেলে খারাপ লাগে না। আর খাওয়ার যা উদ্দেশ্য, পেট ভরানো, সেটা তো সাধিত হয়ই। এখন গবেষকরা দাবি করছেন, প্লেসিবোর এমনই মহিমা যে তা ব্যবহার না করলে, স্রেফ বাড়িতে রাখলেও নাকি তা কাজে দিতে পারে। মানে ধরা যায় অম্রুতাঞ্জন একটি প্লেসিবো প্রভাবওয়ালা মলম। (জাস্ট উদাহরণ দেওয়ার জন্য বলছি, আমার অম্রুতাঞ্জন কোম্পানির ওপর কোনও ক্ষার নেই।) অর্থাৎ আসলে না কমলেও আপনি ভাবছেন অম্রুতাঞ্জন মাখলে ব্যথা কমবে। কিন্তু এই পেপার দাবি করছে

শেষের পাঁচ মিনিট

পৃথিবীতে দু’রকম লোক হয়। যারা বাড়ি থেকে বেরোনোর আগের পাঁচ মিনিট মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারে আর যারা পারে না।  আমার মা দ্বিতীয় দলের লোক ছিলেন।  অফিস বেরোনোর আগের পাঁচ মিনিট; পাঁচ কেন, গোটা সকালটাই মা হন্যে হয়ে দৌড়তেন। অবশ্য মায়ের দৌড়ের কারণ ছিল। মা না দৌড়ে, ধীরে সুস্থে হেঁটে গড়িয়ে চললে দুটো ঘটনা ঘটতে পারত। হয় মাকে অফিস যেতে হত না। নয় আমরা কেউ স্কুল কলেজ অফিস পৌঁছতে পারতাম না। না খেয়ে মরাও আশ্চর্যের ছিল না।  ভেবে দেখলে ব্যাপারটা খুবই ভয়ের, কিন্তু কেউই ভয় পেত না কারণ সবাই জানত এ জিনিস ঘটার চান্স নেই। কারণ মা দৌড়বেন। মা দৌড়তেন। এবং বাকি সবাই শুয়ে বসে হাই তুলে চা কোথায়, কাগজ কোথায়, কেন সেটা পরিপাটি ভাঁজ করা নেই, ভাঁজহীনতার পেছনে দোষী কে, এই সব তদন্ত, জেরা, প্রমাণ জোগাড় করত। বাদী বিবাদী সাক্ষীসাবুদ জোগাড় হয়ে যখন 'ঠিক পেপার ভাঁজ না করতে পারার জন্যই যে এ বাড়ির কারও কিছু হবে না' রায় ঘোষণা হচ্ছে তখন আমার মা নিজের এবং সবার বিছানা তুলে, চা করে লোককে খাইয়ে এবং নিজে খেয়ে, পাঁচ পদ রান্না করে, দরজায় দুধ এলে সেটা নিয়ে এসে জ্বাল দিয়ে, টিফিন বানিয়ে অন্যেরটা গুছিয়ে এবং নিজে নিয়ে, সবাই