Posts

Showing posts from September, 2019

এ বছরটা কি অন্যান্য বছরের তুলনায় তাড়াতাড়ি গেল?

হাওয়াই চটি সুটকেসে পুরতে পুরতে প্রশ্নটা করেছিল অর্চিষ্মান। একই প্রশ্ন চালাচালি হচ্ছে অফিসের প্যান্ট্রিতেও। আসলে সিজনটাই এই প্রশ্নটার। প্রত্যেক বছরই একটা বড় ঘটনার মুখে, যেমন পুজো, আগের বছরের পুজোটার স্মৃতি যখন জ্বলজ্বলে, মনে এই প্রশ্নটা জাগে। কিংবা আশপাশটা যখন বদলাতে শুরু করে। অবশেষে এসি নিভিয়ে দেওয়া যায়। হঠাৎ একদিন ভোরবেলা দরজা খুলতে বেরিয়ে গা শিরশিরোয়।  আর অমনি মনে হয়, অলরেডি? বললাম, অন্যান্য বছরের মতোই নিশ্চয় গেছে। তাড়াতাড়ি আর কী করে যাবে, এ বছরেও তো মাসে তিরিশ কিংবা একত্রিশ দিন ছিল, সপ্তাহে সাত, দিনে চব্বিশ ঘণ্টা, ঘণ্টায় তিরিশ মিনিট… অর্চিষ্মান অস্থির মাথা নাড়ল। সে তো গেছেই। ঘড়ি তো আর তাড়াতাড়ি ঘোরেনি। আমি বলছি মনে হওয়ার কথা। তোমার কি মনে হচ্ছে না এ বছরটা আগের বছরগুলোর থেকে তাড়াতাড়ি গেছে? যদি মনে হয়েও থাকে, তারও সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা আছে। আমরা যত বুড়ো হই আমাদের কাছে সময়ের স্পিড তত বাড়ে। ক্লাস ওয়ানে রুলটানা পাতা জুড়ে কবিদের গুরু রবীন্দ্রনাথ হাতের লেখা প্র্যাকটিস করতে ঘড়িতে মোটে সাড়ে সাত মিনিট কাটলেও মনে হত নরকের কটাহে অনন্তকাল ভাজাভাজা হচ্ছি, এখন চোখের পাতা ফ

From Tribe and Fire

Small Kindnesses   By Danusha Laméris I’ve been thinking about the way, when you walk down a crowded aisle, people pull in their legs to let you by. Or how strangers still say “bless you” when someone sneezes, a leftover from the Bubonic plague. “Don’t die,” we are saying. And sometimes, when you spill lemons from your grocery bag, someone else will help you pick them up. Mostly, we don’t want to harm each other. We want to be handed our cup of coffee hot, and to say thank you to the person handing it. To smile at them and for them to smile back. For the waitress to call us honey when she sets down the bowl of clam chowder, and for the driver in the red pick-up truck to let us pass. We have so little of each other, now. So far from tribe and fire. Only these brief moments of exchange. What if they are the true dwelling of the holy, these fleeting temples we make together when we say, “Here, have my seat,” “Go ahead — you first,” “I like

ডাকনাম

র এসেছিল বাড়িতে। হাসিঠাট্টা হচ্ছিল। বন্ধুবান্ধব, পরনিন্দাপরচর্চা, সিনেমাথিয়েটার পেরিয়ে বাড়ির কথা উঠল। কাকু কেমন আছেন, কাকিমা ভালো? দিতেই হল খবরটা।  হাসিঠাট্টায় একটা বিশ্রী বাধা পড়ে গেল। সামলে নিয়ে র বলল, তোমার মা তোমাকে কী একটা বলে আদর করে ডাকতেন যেন...   আমি বললাম সোনা? র বলল, হ্যাঁ হ্যাঁ, কী সুন্দর করে ডাকতেন কাকিমা। বুঝলাম, র ভেবেছে ওটা আমার জন্য আমার মায়ের স্পেশাল নাম। ভুল ভাঙালাম। বললাম, মা আদর করে ডাকলেও ওটাই আমার সত্যিকারের ডাকনাম। চেঁচিয়ে বকার সময়ও ওই নাম ধরেই বকতেন মা।  র বলল, ও তোমার ডাকনামই সোনা? সোনা নিয়ে এই কনফিউশনটা আগেও হয়েছে। হওয়া স্বাভাবিক। ডাকনাম যাই হোক না কেন, নিরানব্বই শতাংশ বাঙালিই জীবনে কখনও না কখনও কারও না কারও দ্বারা কোনও না কোনও স্পেশাল মুহূর্তে “সোনা” সম্বোধিত হয়েছেন। এ সম্বোধন নিয়ে হাসিমশকরাও কমন। মান্যবর মোহে-র বিজ্ঞাপনে ভিরুষ্কা যেমন একে অপরের সঙ্গে কী কী বোকামো করবেন না লিস্টে নিষিদ্ধ ডাকনামের মধ্যে সোনাও রেখেছেন। আমি অবশ্য দুঃখ পাই না। আমি বরং বিশ্বাস করি ডাকনাম বোকা না হলেই অদ্ভুত। মানে আপনার ভালো নাম বাল্মীকি আর ডাকনাম বিবস

প্লাস্টিক

বই পড়া কী করে আরও সুবিধের করা যায়, সে খোঁজ আমার সর্বক্ষণের। কাগজের বই পড়তেও অসুবিধে হচ্ছিল না কিন্তু কিন্ডল এসে আরও সুবিধে করে দিল। তাতেও আমার মন ভরেনি। ভেবে দেখলাম, এই যে বই পড়তে দর্শনেন্দ্রিয়কে অকুপায়েড রাখা, এটা অসুবিধেজনক। চোখকে ছুটি দিয়ে যদি কানকে কাজে লাগানো যায় তাহলে মনে হয় আরেকটু সুবিধে হবে। মানে আমি ক্যান্ডি ক্রাশ খেলব, কেউ আমাকে বই পড়ে শুনিয়ে দেবে। অ্যামাজন প্রাইমে অডিবল তিনমাসের জন্য ফ্রি দিচ্ছিল, অ্যালেক্স নর্থের ডেবিউ রহস্য উপন্যাস হুইসপার ম্যান-এর ধন্য ধন্য চলছিল চারদিকে, ভাবলাম ঝাঁপ দিয়েই ফেলি। সাইন আপ করলাম, কার্ড ডিটেলস দিয়ে। এক মাস তেরো দিনের মাথায় এস এম এস এল আমার অডিবল থেকে কেউ তেরো ডলারের বই কিনেছে। আমি বই কেনার বিরুদ্ধে নই। আলমারি ভর্তি না-পরা জামা আর বুকশেলফ ভর্তি না-পড়া বইয়ের মধ্যে আমি দ্বিতীয়টারই পক্ষে। কিন্ত আমাকে না জানিয়ে আমার কার্ড ব্যবহার করে বই কেনা বাড়াবাড়ি। নীতিবিরুদ্ধ। তাছাড়া ঝামেলাটা শুধু নীতিরও নয়। অসুবিধেজনকও বটে।  কার্ডখানা ব্লক করতে হল।  কার্ডও নেওয়া সুবিধের জন্যই। আজকাল আর কে ক্যাশ নিয়ে ঘোরাঘুরি করে। চরম অসুবিধেজনক। সুবিধেজনক

টু লেট?

Image
স্রষ্টা:  Michelle Rial

চৌকোড়ী ২/২

Image
চৌকোড়ীতে আমরা থাকতে থাকতেই একটি বাঙালি দল এসে উপস্থিত। আসাটা অপ্রত্যাশিত নয় কারণ উত্তরাখণ্ডে আসা ভ্রমণার্থীর একটা বিরাট অংশ (ক্যান্টিনের ভাইসাব বললেন, এইটি পার সেন্ট। একটু কমিয়ে ধরলেও ফিফটি পার সেন্ট এর বেশি ধরেই নেওয়া যায়)। অ্যান্থনিজি আরও এক পা এগিয়ে বললেন যে পাহাড়ের অনেক অল্পজানা জায়গাই নাকি বাঙালি ভ্রমণার্থীরাই তাঁদের চিনিয়েছেন।   দলটির অর্ধেক এসেছেন কলকাতা থেকে, অর্ধেক মুম্বই থেকে। দিল্লিতে মিলিত হয়ে ইনোভা ভাড়া করে কৌশানি গেছেন, তারপর চৌকোড়ী এসেছেন, চৌকোড়ী থেকে মুন্সিয়ারি হয়ে বিনসর ঘুরে বাড়ি যাবেন। আমরা কাল রাতে এসেছি আবার কাল ভোরে বেরিয়ে যাব শুনে অবাক। এ রকম ঘোরার মানে কী? আসতে যেতেই তো সব সময় চলে গেল। একটু বেশি দিন না থাকলে পাহাড়ের ফিলিংস হৃদয়ঙ্গম করা যায় নাকি? তাছাড়া কাছাকাছেই পাতাল ভুবনেশ্বর, মাটির তলায় টোটাল গুহাসিস্টেম; বিরথি জলপ্রপাত, পঁচিশ কিলোমিটার দূর থেকে যার সাদা পপাতমান ফেনা দেখা যায়; আর মুন্সিয়ারি, যেখান থেকে হাত বাড়ালেই হিমালয়ের রেঞ্জ। এগুলোর সবকটাই আমরা না দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি শুনে ওঁরা আগেই এত অবাক হয়ে ছিলেন বলেই আর অবাক হতে পারলেন না। চৌকোড়ীতে গ

দশ

অবশেষে সেই দিন সমাগত। দিনটা নিয়ে, মিথ্যে বলব না, ভেবেছি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস নিয়ে ভাবিনি, অথচ এই তুচ্ছ ব্যাপারটা নিয়ে একটা চাপা উত্তেজনা বরাবর ছিল বুকের ভেতর।   এই বিশেষ পোস্টটা কি কখনও লেখার সময় আসবে? লিখতে ইচ্ছে করবে? লেখার কথা মনে থাকবে? লেখার জন্য বেঁচে থাকব তো আদৌ?   দেখাই যাচ্ছে আছি। দিব্যি আছি, চেয়ারখানি চেপে। মোড়ায় পা তুলে, কোলে ল্যাপটপ রেখে খটাখট টাইপ করছি। টাইপ করছি এই খবরটা যে অবান্তর আজ দশ বছরের হল।   দশে পা নয়, দশ পূর্ণ। অবান্তরের প্রথম পোস্ট লেখার সময় যারা ক্লাস ওয়ানে যারা পড়ত, তারা এখন মাধ্যমিক দেবে। (নাকি দিয়ে দিয়েছে অলরেডি?) অথচ আমি কিছুই টের পাচ্ছি না। নো শিহরণ, নো রোমাঞ্চ, নো গলা টনটন, কান কটকট, চোখ ছলছল, নো নাথিং। বেজায় গরমে এসি চালিয়ে বসে আছি। এত বোর হচ্ছি, এক কাপ চা শেষ করে ভাবছি পরের কাপের আগে কতখানি বিরতি ভদ্রস্থ হবে। দশ মিনিট? পনেরো মিনিট? আধ ঘণ্টা!!!!!??? ভাবছি ফাঁকা ফ্রিজ ভরতে কি নিজেরাই বেরোব, নাকি বিগ বাজার থেকে অর্ডার করার নির্লজ্জতাটা ঘটিয়েই ফেলব? আর যদি বেরোইই, পরিশ্রমের প্রতিশোধ শুধু ফুচকায় কি উশুল হবে, নাকি আলুর চপও

চৌকোড়ী ১/২

Image
জায়গাটা দূর জানতাম। দিল্লি থেকে কাঠগোদাম, কাঠগোদাম থেকে দু'শো কিলোমিটার। কিন্তু দূরের মাপ গুগলে আর রাস্তায় নামলে আলাদা হয়ে যায়।   শুরু থেকেই ভুল। ভেবেছি শতাব্দীর চেয়ার কারে বসে ভোরবেলা দৃশ্য দেখতে দেখতে ভেজ কাটলেট খেতে খেতে চলে যাব, ভুল হয়েছে। শতাব্দী কাঠগোদাম ঢোকে এগারোটা পঞ্চাশ। অর্ধেক দিন ওইখানেই হাওয়া। আপনারা যদি যান, রানিক্ষেত এক্সপ্রেস নেবেন। ওভারনাইট জার্নি। ভোরভোর কাঠগোদাম থেকে যাত্রা শুরু করে দুপুর দুপুর চৌকোড়ী পৌঁছনো। পরের ভুল, ভেবেছি কাঠগোদাম কিংবা হলদোয়ানি থেকে সরকারি, বেসরকারি, মোদ্দা কথা লোকাল বাস পাওয়া যাবে। যায়নি। বাস যদি বা থেকে থাকে সেগুলো ছেড়ে যায় সকালের দিকে, বেলা বারোটা পর্যন্ত আমাদের মতো ভুলে ভরা প্যাসেঞ্জারের মুখ চেয়ে বসে থাকে না। মিনমিন করে জিজ্ঞাসা করলাম শেয়ার ট্যাক্সি পাওয়া যায় কি না, হাসি দেখেই বুঝলাম প্রশ্নটা কী মারাত্মক ভুল হয়ে গেছে।  জায়গাটার নামটা পর্যন্ত ঠিকঠাক বলতে পারিনি। ইংরিজি বানান দেখে বলছি চৌকোরি, চৌকোরি, আর সবাই, ক্যা? ক্যা? করে যাচ্ছে। তারপর বলছে, ওওওও চকোওড়ি? পাঁচ হাজার দে দেনা। ওনলি ড্রপ। (বাই দ্য ওয়ে, চৌকোরি একটু ভুল,

মধুরিমা

Image
আমার মানসিক অবস্থার কথা জেনেই হয়তো সোমেন বলেছিলেন, এবার কি গল্প দিতে পারবেন কুন্তলা? না পারলে কোনও চিন্তা নেই, যখন পারবেন তখনই ছাপা হবে। আজীবন আমার শুধু ভালো লোকদের সঙ্গেই পালা পড়ে, এ আমি বার বার ঠেকে শিখেছি। আমি বললাম, পারব না মানে? চার নম্বর, এক মাস অন্তর অন্তর একটা করে গল্প লেখার ডেডলাইন দিয়ে আমার যে কী উপকার করেছে। এ না থাকলে আমার একটাও ফিকশন লেখা হত না, সে ছায়া অবলম্বনে হলেও। এবারের গল্পটা যদিও ছায়া অবলম্বনে নয়। আগা থেকে গোড়া, চরিত্র থেকে ঘটনাপ্রবাহ সব আমার ঊর্বর মস্তিষ্কজাত। কিন্তু শত হলেও আমাকে গোড়াতে ভাবানুবাদেরই বরাদ দেওয়া হয়েছিল তাই আমি সাপ মেরেও একটুখানি ল্যাজা রেখে দিয়েছি। এ মাসে চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে বেরোনো আমার লেখা ছোটগল্প 'মধুরিমা'র একটা গুরুত্বপূর্ণ টুইস্ট পড়লে আপনাদের কারও কারও আরেকটা গল্পের টুইস্ট মনে আসতে পারে, যদি সেই গল্পটা পড়া থাকে, যে গল্পটার নাম হচ্ছে Rain, Rain Go Away আর যে গল্পটা লিখেছিলেন আমার প্রিয় লেখক আইজাক আসিমভ। গল্পের শেষে তাই তাঁর ঋণটুকু স্বীকার করে রাখলাম।   এই রইল 'মধুরিমা'র লিংক। কেমন লাগল জানাবেন, প্লিজ।