Posts

Showing posts from October, 2021

আমি শুনছি, আপনারাও শুনুন

Image
 

মিডনাইট রেন

Image
ভার্বাটিম বলতে পারব না; শিশুশিক্ষা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ একজায়গায় লিখেছিলেন, ছোটদের শিক্ষাপ্রক্রিয়ার একটা আবশ্যিক বৈশিষ্ট্য হওয়া দরকার যা প্রয়োজন তার থেকে বেশি শেখানো। রবীন্দ্রনাথ একটি মচৎকার ছবি এঁকেছিলেন বক্তব্যটি রাখতে গিয়ে। শিক্ষা যেন ছোটদের অঞ্জলি উপচে পড়ে। অর্থাৎ বাচ্চাদের শেখানোটা চোখ সরু করে, লালসাদা টিউব টিপে টুথপেস্ট বার করার মতো হতে পারে না। অকাতরে ঢেলে দাও, যার ছোট হাতে যতটুকু ধরে সে ততটুকু শিখুক, কিন্তু কারও হাত যেন খালি না থেকে যায়। অর্থাৎ কোন বাচ্চার কতটুকু শিক্ষা কাজে লাগবে বিচার করতে না বসাই কাম্য। বা কোন শিক্ষা কাজে লাগবে। সোজা কথায় কাজে লাগালাগির বিষয়টাকেই পাত্তা না দেওয়া। আরেকটু টানলে ধরে নিতে পারি, বক্তব্যের মাধ্যমে অকাজের শিক্ষার প্রতি লেখকের পক্ষপাতও প্রকাশ পেয়েছে। বিষয়টা তর্কের। অফিসের এক সহকর্মী একবার সিলেবাসের বাইরের বইয়ের প্রতি লোকের উদগ্র আগ্রহে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। ওই বইগুলির মানুষের জীবনে কার্যকারিতা নিয়ে তাঁর প্রভূত সন্দেহ ছিল। আমার নেই, বলাই বাহুল্য, উল্টে আমার আমি হয়ে ওঠার পেছনে সিলেবাসবহির্ভূত বইয়ের কলকাঠিই বেশি (এই জেনে সহকর্মীর সিলেবাসের বাই

একটা গোয়েন্দা, একটা প্রেম

Image
Troubled Blood Robert Galbraith রবার্ট গ্যালব্রেথ ছদ্মনামে লেখা জে কে রোলিং-এর করমোরান স্ট্রাইক সিরিজের চতুর্থ উপন্যাস 'লিথ্যাল হোয়াইট' পড়ার পর নাককান মুলেছিলাম, ওই রাস্তায় আর যাচ্ছি না বলে। কিন্তু কুড়ি বছরের ওপরের সম্পর্ক, রাতে ঘুমোনোর আগে পড়ার অভ্যেসটা যখন ফিরিয়ে আনা স্থির করলাম, 'ট্রাবলড ব্লাড'-এর কথা মনে পড়ল। রবার্ট গ্যালব্রেথ ছদ্মনামে লেখা জে কে রোলিং-এর করমোরান স্ট্রাইক সিরিজের পঞ্চম এবং নবীনতম উপন্যাস। ধরতাই হিসেবে বলি, স্ট্রাইক সিরিজের হিরো হচ্ছেন করমোরান স্ট্রাইক, যুদ্ধ ফেরত সৈনিক, একটি পা হাঁটুর নিচ থেকে উড়ে গেছে, আপাতত প্রসথেটিক পা নিয়ে হাঁটেন চলেন। বিখ্যাত রকস্টারের অবিবাহিত গ্রুপির সন্তান। বাবা ছিলেন না কোথাও বেড়ে ওঠার সময়, মা ছিলেন তাঁর সমস্ত নেশাভাং ও বিশৃঙ্খল জীবনযাপন নিয়ে। একপিস প্রাক্তন প্রেমিকা আছেন শার্লট, যথার্থেই একপিস। করমোরানের সহকারী রবিন এলাকট। ছোটবেলা থেকে গোয়েন্দা হতে চেয়েছিল, মারাত্মক ভালো গাড়ি চালায়, স্ট্রাইকের এজেন্সিতে ব্যক্তিগত সহকারীর পদে যোগ দিয়ে দক্ষতা প্রমাণ করে আপাতত পার্টনার। শৈশব আনন্দময়, কিন্তু কৈশোরে ভুল লোকের সঙ্গে

আলোর উদ্দেশে

Image
এ রকম দাবি করতে পারলে ভালো হত হয়তো যে আমাদের পাড়ার পুজো আজ থেকে তিরিশপঁয়ত্রিশ বছর আগে এর থেকে ঢের বেশি জমকালো ছিল। আরও ঝকমকে, আরও চনমনে, আরও ভিড়ভাট্টামণ্ডিত। সে রকম দাবি করতেও চাই না তেমনটা নয়, কারণ বাবার পাঠানো এই ছবিটা দেখে আমারও প্রথম সেই কথাটাই মনে হয়েছিল। কী ছিল, কী হয়েছে। কিন্তু সেটা মিথ্যাচার হবে। আমাদের পাড়ার পুজো, আমার স্মৃতি যতই গলা ফাটাক না কেন, পঁয়ত্রিশ বছর আগেও এ রকমই ছিল, বরং আরও ম্যাড়মেড়েই ছিল সম্ভবত। অন্যরকম থাকার কোনও কারণ নেই। পাড়ার লোকের চাঁদায় পুজো, কর্পোরেট স্পন্সর বলতে পাড়ার ছেলের ক্যাটারারের থেকে ডিসকাউন্টে অষ্টমীর রাতের ভোগ খাওয়ানোর প্রতিশ্রুতি আর প্রতিবেশী পাড়ার ডেকোরেটরের ডিসকাউন্টে বাঁশ বেঁধে লাল সাদা প্যান্ডেল খাটিয়ে দিয়ে যাওয়া। বিস্ময়টা ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য ফোন রাখার আগে নাকতলার মাকে জিজ্ঞাসা করলাম, কুলটির পুজো আপনার মনে পড়ে মা? বড় বয়সে ফিরে গিয়ে দেখেছেন কখনও সে পুজো? মা হতাশ করলেন না। দেখিনি আবার। দেখেছি আর অবাক হয়ে ভেবেছি, এমন মিটমিটে ছিল বুঝি আলো? আমার স্মৃতিতে তো ওর থেকে জমকালো পুজো আর নেই ভূভারতে। আমি এ পুজোয় প্রতিমার মুখ দূর অস্

পদস্খলনের পর

যত বুড়ো হচ্ছি, পদস্খলনের প্রবণতা তত বাড়ছে। এই যেমন সেদিন রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে দুম করে পড়ে গেলাম। অর্চিষ্মান বলল, তুমি অ্যাকচুয়ালি হাঁটলে? হাঁটার সম্ভাবনা নিয়ে ভার্চুয়ালি জল্পনা হয়েছিল। একজায়গায় যাওয়ার ছিল। গুগল ম্যাপে দেখাল পায়ে হেঁটে পঁয়তাল্লিশ মিনিটের রাস্তা। একেবারে অগস্ত্যযাত্রায় যাব না যখন, ফিরতেও হবে। আবার পঁয়তাল্লিশ। একমত হয়েছিলাম, পিঠে ভারি ব্যাগ না থাকলে ব্যাপারটা ডুয়েবল। ডুয়েবল মানেই যে করতে হবে, তেমন দিব্যি নেই। অধিকাংশ ডুয়েবল জিনিসই আমি করি না। করলে সারাদিনে অনেক রকম কাজ করা যায়, করি না। অনেক বেশি গল্পের বই পড়া যায়, পড়ি না। অনেক বেশি লেখা যায়, লিখি না। কিন্তু হেঁটে যাতায়াতের অ্যাটেম্পটটা নিলাম। এই ভেবে যে পৌনে একচল্লিশ বছর বয়সে পঁয়তাল্লিশ মিনিট হাঁটতে পারব না? ছোটবেলায় এই করে আলাদা রান্নার ঝামেলা এড়াত বাড়িতে। সোনা এটা খেতে পারবে না, ঝাল হয়েছে। সোনা সেই ভয়াবহ ঝাল তরকারি খেয়ে বসে থাকত। চোখ ছাপিয়ে জল আসত কিন্তু টুঁ শব্দ করত না, কারণ প্রমাণ করার ব্যাপার ছিল যে সোনা বড় হয়ে গেছে। পৌনে একচল্লিশের কুন্তলাও যে এদিকে পঁয়তাল্লিশ, ওদিকে পঁয়তাল্লিশ মিনিট হেঁটে ম্য