Posts

Showing posts from January, 2020

চারটে বই

Image
My sister the serial killer/ O yinkan Braithwaite “Two packets of pocket tissue, one 30-centiliter bottle of water, one first aid kit, one packet of wipes, one wallet, one tube of hand cream, one lip balm, one phone, one tampon, one rape whistle. Basically, the essentials for every woman.” বইটা ভয়ানক সাড়া জাগিয়েছিল। আমার সঙ্গে মত মেলে এমন কিছু রিভিউয়ার বইটিকে দারুণ বলেছিলেন আবার কিছুজন বলেছিলেন ওভারহাইপড। মানুষের চরিত্র, অন্তত আমার চরিত্র হচ্ছে অনেক পজিটিভের মধ্যেও নেগেটিভটাকেই মনে গেঁথে নেওয়া, কাজেই আমি বইটা জোগাড় করে পড়ার বেশি চেষ্টাচরিত্র করিনি। কিন্তু বছরের শেষে প্রায় সব 'টপ বুকস অফ ২০১৯' লিস্টে যখন মাই সিস্টার, দ্য সিরিয়াল কিলার-এর নাম বেরোলো, আর সংযম প্র্যাকটিস করা গেল না।  'মাই সিস্টার, দ্য সিরিয়াল কিলার' উপন্যাসের অন্যতম মূল বিষয় নামেই বলে দেওয়া হয়েছে। দুই বোন। ছোটজন একেকটা করে প্রেম করে এবং প্রেমিকদের খুন করে। গল্প যখন শুরু হচ্ছে তখন সে সম্ভবত তৃতীয় খুনটা করেছে। প্রতিটা খুন করার পর যে গল্পটা ছোটবোন দেয় সেটা হচ্ছে গোটা ব্যাপারটাই

পাড়া

Image
উবার সৌরভের সমর্থনে একটা কথা বলা যায়, দিল্লি রোড থেকে বাঁক নেওয়ার পর খানিকটা জায়গা সত্যি গ্রামের মতই। 'বাংলাদেশের গ্রামের বৈশিষ্ট্য যাহা জান লিখ' প্রশ্ন এলে শহরের ছাত্ররা যা যা লিখবে তার সবই ওই কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে আছে। গাছ? আছে। পুকুর? আছে। বাঁশবন? আছে। মাঠ? আছে। মাঠের প্রান্তে প্রাথমিক বিদ্যালয় (স্থাপিত ১৮৯৯)? আছে। সদ্য পোঁচ দেওয়া কটকটে কমলা রঙের শিবমন্দির? আছে। ছাদের ওপর শিক বার করা আধপাকা বাড়ি? আছে। বাঁশবনের মাথা ছাড়িয়ে দূরে দোতলা বাড়ির মাথায় উঁচু সবুজ রঙের মুখব্যাদান করা, আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে থাবা তোলা মানুষপ্রমাণ ডাইনোসরের স্ট্যাচু? আছে। আমাদের পাড়ায় একটা বাড়ি ছিল যার বারান্দার মাথাটা জাহাজের মতো তিনকোণা ছিল বলে বাড়িটার নাম হয়ে গিয়েছিল জাহাজবাড়ি। কাউকে ঠিকানা বলতে গেলে দারুণ সুবিধে। জাহাজবাড়ি থেকে তিনটে বাড়ি এগিয়ে বাঁদিকের বাড়িটা। ছোট শহরে এ রকম ল্যান্ডমার্ক থাকে। ট্রেনের জানালা দিয়ে হামেশাই চোখে পড়ে, ঘেঁষাঘেঁষি ছাদের মাথায় সিনটেকস কিংবা প্যাটন ট্যাংকের ভিড়ে আচমকা একটা মস্ত বড় ফুটবল। মারাত্মক রিয়েলিস্টিক। কে বলবে জলের ট্যাংক। আমার মায়ের এই রকম একটা ল্যান্ডমার

শিবুদের কলকাতা ভ্রমণ

Image
কই আমার তো ঠাণ্ডা লাগছে না। কেন বল তো? কারণ আমি রোজ চান করি। তোরা চান করবি না, ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা করে চেঁচাবি… ভোরবেলা অর্চিষ্মানকে ঠেলে তুলতে ব্যর্থ হয়ে, “তুমি চালিয়ে এস, আমি বন্ধ করে আসব,” এই সব প্রমিস মিথ্যে জেনেও পাম্প চালিয়ে এসে শুয়ে শুয়ে এই বাণী শুনতাম। রোজ। বচন সামান্য আলাদা আলাদা। একেকবার মনে হত লেপের আরাম ছেড়ে উঠে গিয়ে চানদাদাকে দেখে আসি। আর যাকে রোজ সকালে জ্ঞানের ভিকটিম হতে হচ্ছে সে বেচারাকেও। বাড়ি গেলে পাম্প চালানোটালানোর দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হয় না। অর্চিষ্মানের কথা বলতে পারি না, নাকতলা এবং রিষড়ার আমার প্রধান দায়িত্বটা থাকে আরাম করার। যতক্ষণ পারা যায় মুড়িশুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকব, মা চা করে ডাকবেন, বাথরুম থেকে এসে দেখব বাবা বিছানা তুলে রেখেছেন, এইরকমই চালচলন। এইবার একটু অন্যরকম হল কারণ বাবা মা দুজনেই অন্যত্র ব্যস্ত, কাজেই নাকতলার বাড়িতে আমরা দুজন। এবারের ছুটি অন্যবারের থেকে বেশি ছিল। খানিকটা কাজের জন্য, খানিকটা আনন্দ করার জন্য। আর আনন্দই যদি করব তবে একেবারে চুটিয়েই করব। কিন্তু আনন্দ করার ধকল মারাত্মক। শেষদিনে এমন অবস্থা হয়ছিল, জীবনে প্রথম মজা করার টু ডু লিস্

চক্রপর্ণী

নতুন বছর গুজরাট ভবনে ডিনার দিয়ে শুরু করায় অবান্তরের বন্ধুদের অনেকেরই ভুরু ওপরে উঠেছে, কেউ কেউ দুঃখের স্মাইলি দিয়েছেন। আমি তাঁদের ইমোশনটা বুঝি। এটা ইউজুয়াল নয়। ইউজুয়ালি আমার মতো লোকেরা চায়না ড্রাগন-এর পর্ক মোমো, মেডিটেরিনিয়ান দোকানের ল্যাম্ব শাওয়ারমা, ওহ ক্যালকাটা!র ডাব চিংড়ি খেয়ে নতুন বছরে পা রাখে। তিন বছর আগে হলে আমি এভাবেই নববর্ষকে জীবনে স্বাগত জানাতাম।  কিন্তু গত তিন বছর ধরে অবান্তরে আমার (অর্চিষ্মানের নয়) যা যা খাওয়ার লিস্ট দিয়েছি, তা যদি কেউ খেয়াল করে থাকেন, তাহলে বুঝতেন নিরামিষ খাওয়াটা আমার ধাতে সয়ে এসেছে। অবাক লাগে না, দুঃখ তো হয়ই না। কিন্তু এক, আমি যত মন দিয়ে অবান্তর লিখি, তত মন দিয়ে অবান্তর পড়া কোনও মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, দুই, হিন্টের থেকে অকার্যকরী জিনিস পৃথিবীতে কমই আছে।   কাজেই এবার খোলাখুলিই বলি, দু’হাজার সতেরোর ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আমি নিরামিষাশী। ভেজিটারিয়ান। অবান্তরে, যেখানে প্রিন্ট আউটের কাগজে আঙুলের ডগা কেটে গেলেও লাফ দিয়ে পোস্ট নামাই, সেখানে এমন একটা সিদ্ধান্তের কথা, যেটা আমি স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে জীবনে প্রয়োগ করেছি এবং আক্ষরিক অর্থেই যেটা আমার প্রতি

কিস ফর কিসলোস্কি

Image
যদিও ভেটেরান গল্প লিখিয়ে নই, তবু যা বুঝেছি, গল্প লেখার থেকেও শক্ত হচ্ছে গল্পের নামকরণ। আরও যেটা বুঝেছি, নামকরণের সার্থকতা রচনায় যা যা লিখতাম, আগাপাশতলা ইমপ্র্যাক্টিকাল। গাঁজাখুরি। কী সব যেন লিখতাম? গল্পের সার্থক নামকরণ মূলতঃ পাঁচ প্রকার পদ্ধতি অনুসারে হয়ে থাকে। যথাক্রমে, চরিত্রপ্রধান, বিষয়ভিত্তিক, ব্যঞ্জনামূলক, পটভূমিকেন্দ্রিক ও আঙ্গিকনির্ভর।   (দেড় মিনিটের গুগল সার্চে পাওয়া একটা বাংলা রচনা থেকে ওপরের পাঁচটা প্রকার টুকেছি। আমার, অন গড ফাদার মাদার, পাঁচ কেন, এক প্রকারও মনে ছিল না।) এ বারের চারনম্বর প্ল্যাটফর্মের গল্পের নাম রাখার জন্য পাঁচটার কোনওটাই মেনে চলা হয়নি। প্রথমতঃ, গল্পটা কিস বা চুমু নিয়ে নয়। দ্বিতীয়তঃ, কিসলোস্কিও মেন রোল পাননি। কিস এবং কিসলোস্কি দুজনেই আছেন, নেপথ্যে। যদি ওই সব আঙ্গিকমাঙ্গিক, ব্যঞ্জনাট্যাঞ্জনা মেনে নাম রাখতে হত তাহলে ররং রাখতে হত কর্তামশাইয়ের কেদারা। কিস ফর কিসলোস্কির থেকে ঢের বেশি সার্থক।   কিন্তু ‘কিস ফর কিসলোস্কি’ আর ‘কর্তামশাইয়ের কেদারা’, আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করেন, কীসে আর কীসে। কাজেই নাম ‘কিস ফর কিসলোস্কি’ই রইল। চরম অসার্থক হওয়া স

তিন দলকেই

Image
প্রথম দল, যারা মনে করেন তারিখে কিছু এসে যায় না। একত্রিশে ডিসেম্বর আর পয়লা জানুয়ারির মধ্যে আকৃতিতে প্রকৃতিতে, ইতিহাসে ভূগোলে, রাসায়নিক কম্পোজিশনে কোনও তফাৎ নেই। তিরিশে ডিসেম্বরে যদি শেষের বাঁশি কেউ না শোনে, একত্রিশেও শোনার কোনও চান্স নেই। পয়লা জানুয়ারির রাত বারোটার ঘণ্টা বা সূর্যোদয় (যে ভাবেই আপনি দিনের শুরু গুনুন না কেন) কোনও আলাদা আশা বা আরম্ভ নিয়ে আসে না। দ্বিতীয় দল বিশ্বাস করেন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের প্রতিটি দিন সমান নয়। এঁরা বছরের শুরুতে রেজলিউশন নেন। এঁরা মনে করেন প্রতিটি জন্মদিন একটা নতুন মানুষকে, বেটার মানুষকে জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। প্রতিটি মাসের শুরু, সপ্তাহের শুরু, এমনকি এক্সট্রিম কেসে দিনের শুরুও, আসলে জীবনটা নতুন করে শুরু করার ক্লু। নিউ ইয়ার বা নববর্ষ নিয়ে এঁদের উত্তেজনা দেখার মতো। সকাল না হতে প্রিয়জনদের ফোন করে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করেন এবং নিজেকে ক্রমাগত মনে করান যে উত্তেজনায় হ্যাপি বার্থডে! বলে ফেলা চলবে না। তৃতীয় দলের দেখা, আমি সত্যি বলছি কালকের আগে পাইনি। তাও এত ঘরের কাছে, ওয়েল, ঘরের ভেতর! এঁরা মনে করেন, পয়লা জানুয়ারি, জন্মদিনের মতোই, আসলে একট