Posts

Showing posts from May, 2021

আত্মপরিচয় ২ঃ পুষে রাখো পাঁজরাতে

ডাকবাংলা বলে একটা ওয়েবপোর্টাল খুলেছে, সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক এবং সেলিব্রিটিকেন্দ্রিক। পোর্টালে একজন সেলিব্রিটি নস্ট্যালজিয়া নাড়াঘাঁটা করতে করতে বলছিলেন যে তিনি ছোটবেলায় অমুক ইউনিভার্সিটির সামনের তমুক ক্যাসেটের দোকান থেকে ক্যাসেট কিনতেন। অমনি অর্চিষ্মানের মুখচোখ জ্বলজ্বলিয়ে উঠল। "ওই দোকান থেকে আমিও ক্যাসেট কিনতাম! সুমন আর চন্দ্রবিন্দুর কনসার্টের টিকিটও পাওয়া যেত ওই দোকানেই।" বলতে বলতে আমার দিকেই তাকিয়ে থাকা সত্ত্বেও পষ্ট দেখলাম আসলে ও আমাকে দেখছে না, ওর দৃষ্টি আমার কপাল ফুঁড়ে, বাড়ির দরজা ভেদ করে পৌঁছে গেছে পনেরোশো কিলোমিটার দূরে। মুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ক্যাসেটের দোকানের সামনে। ঘরে ঘরে এ জিনিস ঘটল। যারাই শুনল প্রথিতযশা গায়কের নস্ট্যালজিয়ার ইতিবৃত্ত, সে বৃত্তে ওই ক্যাসেটের দোকানটার অবস্থান, যারা ওই দোকানে যেত, যারা পাশ দিয়ে যেত, যারা আর কোনওদিন যাবে না ঠিক করেছিল এবং যারা দোকানটার অস্তিত্ব সম্পর্কে এ যাবত সম্পূর্ণ অনবধান বা উদাসীন ছিল, তাদের সবার দৃষ্টি এবং চেতনা নিজের নিজের অবস্থান থেকে ধাবিত হল দোকানটার দিকে। আর সেই সম্মিলিত মনোযোগ আত্মস্থ করে দোকানটা ক্রমশঃ বড় হতে শুরু করল

ব্রোঞ্জ

অনেক টাকা পেলে কী করবে? উত্তরে একসময় বিশ্বভ্রমণটমন বলতাম। এখনও বলি, তবে আগে একটা বাড়ির কথা মনে আসে। যদিও বাড়ি আমরা কিনছি না দিল্লিতে, ডিসাইডেড। যেখানে থাকার ইচ্ছে সেখানে কিনতে পারব না সেটা একটা কারণ, কিন্তু মূল কারণ অক্ষমতাটা নয়। আরও একটা কারণ ছিল, ভাবতাম দুজনেই যা কুঁড়ে, আবার বাড়িটাড়ি জুটিয়ে পরিশ্রমের একশেষ। এখন সব কারণ ছাপিয়ে একটা কারণ শেকড় গাড়ছে, সেটা হচ্ছে আমরা এখানে শেকড় গাড়তে চাই না। যুধিষ্ঠির ঠিকই বলেছিলেন, জগতে প্রবাসীর থেকে দুঃখী কেউ নেই। আর অর্চিষ্মানের জানি না, দুঃখ আমার অলরেডি গিজগিজ করছে, দরকারের বেশি এক মিনিটও প্রবাসে থেকে তার বোঝা বাড়াতে চাই না। চাকরি ফুরোলে প্রাণ হাতে করে পশ্চিমবঙ্গে দৌড়ব। তবু অভ্যেসবশতঃ রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে বাড়ি দেখি আর একে অপরকে কনুই টেনে দেখাই। দুজনেই বিশ্বনিন্দুক তাই দৃষ্টান্তগুলো মূলত ঘোরাঘুরি করে কীরকম বাড়ি আমরা বানাব না তার চারপাশে। বাড়ির বদলে দুর্গ, ডিজাইনের নামে সারা শরীর খুঁড়ে-লেপে শেষ, এক মিলিমিটার যাতে কোনও ব্যাটা মেরে না দিতে পারে সে জন্য প্রায় মাঝরাস্তা থেকে দেওয়াল উঠে গেছে। সে রকম বানাব না। তা বলে কি দৃষ্টিতে আলো একেবারেই নেই?

বিজনস্বপনবিহারী

Image
তিন্নি বলেছে আমার পছন্দের রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে একটা পোস্ট দিতে। সে পোস্ট লেখার জন্য আমার থেকে অযোগ্য কেউ নেই পৃথিবীতে, তবু লিখব কারণ যোগ্যতার মুখ চেয়ে বসে থেকে কেউ কখনও বিখ্যাত হয়নি। যতদিন না লেখা হচ্ছে, আজকের দিনটা পার হয়ে যাওয়ার আগে, একটা গান আপনাদের শোনাতে ইচ্ছে করল। চোদ্দ-পনেরোর ঝড়ে এই গানটা, এই গায়কের গাওয়া এই গানটা , আমার নিঃশ্বাসপ্রশ্বাসের জায়গা নিয়েছিল। দেখুন তো আপনাদের ভালো লাগে কি না। 

আত্মপরিচয় ১/ রেখেছ বাঙালি করে

নাউ গো অ্যাহেড অ্যান্ড রিআইডেন্টিফাই ইয়োরসেলফ। দু'ঘণ্টা পার করে একটা যে ঘোর লেগেছিল - তাকিয়ে আছি কিন্তু দেখছি না, শব্দ পাচ্ছি কিন্তু শুনছি না, বন্ধ ঠোঁটের পেছনে ছাদের সমান হাইয়ের পর হাই তুলে চলেছি - সব কেটে গিয়ে একেবারে ঘেঁটি ধরে হুঁশ ফিরিয়ে দিল। গত দু'ঘণ্টা ধরে আইডেন্টিটি নিয়ে কথা হচ্ছিল। কার আইডেন্টিটি কী? কে ঠিক করে? যার আইডেন্টিটি সে? না পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি? আপনাকে যদি নিজের আইডেন্টিটি নিজেই বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় আপনি কোনটা বাছবেন? (সোজা কথায়, পরজন্মে কী হয়ে জন্মাতে চান? কিন্তু সব জায়গায় প্রশ্নের এই ভার্শানটা ফস করে করে বসা যায় না। প্রথমত, কে পরজন্মে বিশ্বাস করে না-করে জানার উপায় নেই, তাছাড়া নিজের বিশ্বাসের তাসও লোকে দেখাতে না চাইতে পারে। আমি তো চাই না। কোথায় কোন প্রগতিশীল ঘাপটি মেরে বসে আছেন। 'অল্প সন্দেহ গোড়া থেকেই হচ্ছিল বটে' বলে মুচকি হাসবেন।) আমাদের সকলেরই একাধিক আইডেন্টিটি থাকে। তারা কমবেশি আমাদের মনে ধরে। তাদের কোনওটাকে নিয়ে আমরা আদেখলাপনার চূড়ান্ত করি, কোনটাকে হেলাছেদ্দার একশেষ। আমার পরিবারের দু'তিন প্রজন্ম আগে অনেকেই তাঁদের ব্রা

সাফাই

কেমন আছেন সবাই? আমি সরি, ভেরি সরি, এতদিন অবান্তরকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য। ব্যস্ততার কথা গেয়ে রেখেছিলাম বটে, কিন্তু ব্যস্ততার জন্য কিছুই আটকায়নি, আটকায় না কখনও। অবান্তর তো নয়ই। আসল কথা হচ্ছে ব্যস্ততা অন্তে হাতে যা সময় ছিল, তাতে টাইপ করার ইচ্ছে ছিল না। ঢের লোভনীয় ঠেকছিল সিলিং-এ চোখ সেঁটে শুয়ে থাকার প্রস্তাব। ইচ্ছেটা কখন প্রথম জাগল ঠিক মনে করে বলতে পারি না, তবে বাড়ি বয়ে দরজা খটখটিয়ে ওঁরা যখন দেখা করতে এলেন তখনই হবে। অনেকদিন আসেননি তাই খিলটিল ঢিলে দিয়েছিলাম, কড়ার আওয়াজ পাওয়ামাত্র না ভেবেচিন্তে  খুলে দিয়েছি। দেওয়ামাত্র, হ্যালো ডার্কনেস, মাই ওল্ড ফ্রেন্ড। যখন আসেন দল বেঁধেই আসেন। কারওর নাম আমি জানি না, সম্পর্কটা ঠিক নামধাম জেনে বন্ধুত্ব পাতানোর নয়। কাজ দিয়েই পরিচয়। এবার যারা এসেছিলেন এবং আমাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে ঘরে ঢুকে পড়েছিলেন তাদের একজনের নাম আমি রেখেছি, "কীসের জন্য?' কারণ তিনি যাবতীয় কুশলবিনিময় এড়িয়ে, আমার টুঁটি টিপে ধরে বিশ্রী গন্ধওয়ালা মুখ আমার মুখের আপত্তিজনকরকম কাছে নিয়ে এসে কেবলই জানতে চাইছিলেন, "কীসের জন্য? কীসের জন্য?" আরেকজন দাঁড়িয়ে ছিলেন সামান্য তফাতে, দাঁড়

বার বার ফিরে আসুক এমন জন্মদিন

যে গানটা আপনাদের শোনানোর এবং নিজে শোনার তালে ছিলাম সেটার ভিডিও প্রাইভেট হয়ে গেছে, কাজেই সরিয়ে নিলাম। বাকি যে ভার্শানগুলো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর অধিকাংশ শুনলেই আনন্দের থেকে কান্না পাচ্ছে বেশি, তাই দিচ্ছি না। মোদ্দা কথা, আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে।