Posts

Showing posts from March, 2022

অখাদ্যকুখাদ্য

নাও, কী খাবে বল, অর্চিষ্মান জানতে চাইলে বলি, কী আর। করুণাদির মোমো, কাবলিদার ঝালমুড়ি, দাদুর চপ, অন্নপূর্ণার উল্টোদিকের ছেলেটার আলুকাবলি আর ফুচকা (শওয়ার্মার উল্টোদিকের ভদ্রলোকের ওপর আমার রাগ নেই, কিন্তু ভদ্রলোকের ফুচকার জলে পুদিনার গন্ধ ম’ ম’ যেটা ডিস্টিংক্টলি নন-বাঙালি ফুচকার বৈশিষ্ট্য বলে আমার বিশ্বাস), অন্নপূর্ণার লর্ড চমচম আর সিঙাড়া… ফুচকা দিয়ে শুরু করব তো জানাই, শেষ করে চপের দিকে এগিয়ে দেখি দাদু পাটিসাপটাও বানাচ্ছেন আজকাল। ফাঁকিবাজি না, রীতিমত ষণ্ডা, নারকেলের পুর ফাটোফাটো। খেতে না খেতে আমারও সেই দশা হল। অর্চিষ্মান বলল, এই যে এম এল এ ফান্ডিং-এর বেঞ্চ। বসে পড়। সারকাজমের সুরটা ভালো লাগল না। এম এল এ ফান্ডিং দিয়ে ক্যাডারদের কালীপুজো স্পনসর না করে আমার মতো চোখের খিদের খাউনিদের রেস্ট নেওয়ার জন্য বেঞ্চ বানানো কাজের। খাওয়ার সঙ্গে তো ঠিক খিদের সম্পর্ক নেই। যখন ফুচকা খাচ্ছি তখন কি ফুচকা খাচ্ছি? খাচ্ছে আসলে উনিশ বছরের মেয়েটা কলেজের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে, রোজ। ওই মেয়েটা আমাকে চেনে না। আমি কোথাও নেই ওর চেতনায়। সেটা আমাকে কষ্ট দেয়। মনে হয় দেখুক একবার চোখ তুলে। উল্টো সন্দেহও হয়। ওই মেয়েট

এই ভার্শানটাও ভালো

Image

চেনা বাড়ি চেনা পাড়া

কাল দোসা খেতে গিয়েছিলাম নৈবেদ্যম-এ। পাশের পাড়ার দোকান। জোম্যাটো রিভিউ পড়ে নয়ডা থেকে উজিয়ে ফুডিরা আসবেন না, কিন্তু পাড়ার কালরা, ভাটিয়া, দত্ত ও ব্যানার্জিরা প্রতি রোববার সাড়ে দশটায় লোকলস্কর নিয়ে হাজির হবেন। আমরাও হয়েছি। রবির সকাল, শনির বিকেল, বৃহস্পতির রাত। যেদিন বসের বকা, যেদিন ফ্রিজে পেঁপে, যেদিন মেলা গ্রাউন্ডের অমলতাসে প্রথম কুঁড়ি। বটল গ্রিন মেনু নাড়াচাড়ার ভঙ্গি সেরে অর্চিষ্মানের মাইসোর মসালা দোসা, আমার প্লেন দোসা, অন্তে দুজনের ফিল্টার কফি অর্ডার করেছি। অর্ডার নিয়ে যেই না পেছন ঘুরেছেন সাদা ফতুয়া, সাদা ধুতি, সাদা উড়নি কাঁধে ভদ্রলোক, পিছু ডেকেছে অর্চিষ্মান। সরি সরি ভাইসাব, এক মাইসোর পাক ভি লানা প্লিজ, কফি কে সাথ। আর আমি রেডি হয়েছি। সেই ঘটনার প্রত্যাশায়, যা এগারো বছর ধরে ঘটে চলেছে। মাইসোর পাক আসবে আর অর্চিষ্মান, ট্রাই করে দেখো, ভালো না লাগলে খেতে হবে না, বলে অনুমতির অপেক্ষা না করে মাইসোর পাকের দুইয়ের পাঁচ ভেঙে, হাতে গুঁজে দেবে। মা যেমন দিতেন ঊনচল্লিশ বছর ধরে। প্লেটে করে পাকা পেঁপে নিয়ে এসে 'একপিস, আচ্ছা আধপিসই না হয় মুখে দিয়ে দেখ, ভালো না লাগলে খেতে হবে না' আশ্বাস সহকারে

দশ

১। দ্বিতীয় আইনস্টাইন হবেন না পৃথিবীর সরথেকে সুখী মানুষঃ সুখ ধুয়ে কি জল খাব? তার থেকে আইনস্টাইন হব। রিলেটিভিটি নিয়ে বক্তৃতা দেব আর জিভ বার করে পোজ। ২। প্রথম প্রেমের দ্বিতীয় পছন্দ হবেন না দ্বিতীয় প্রেমের প্রথম পছন্দঃ আইনস্টাইনেরও এ প্রশ্ন বুঝতে ঘাম ছুটে যেত। আমি পাঁচ মিনিট চেষ্টা করে ক্ষান্ত দিচ্ছিলাম, তারপর প্রিয়বন্ধুর বাবার পরামর্শ মনে পড়ল। কাকু বলেছিলেন, কোনওদিন প্রশ্ন ছেড়ে আসবি না। এক্স্যাক্ট উত্তর না হোক, আশেপাশের কোনও কিছু নিয়ে যা জানিস লিখে আসবি। আমার কোনও কাজ ফার্স্ট অ্যাটেম্পটে ঠিক হয় না। গোটা জীবন ট্রায়াল অ্যান্ড এরর। ঠেকতে ঠেকতে শেখা। কাজেই প্রথম প্রেমকে আমি মারাত্মক গুরুত্ব দিই না। তাছাড়া প্রত্যেক প্রেমই, যদি নতুন লোকের সঙ্গে করা হয়, প্রথম। পুরোনো লোকের সঙ্গেও নতুন করে প্রেম করলে প্রথম প্রেমের মতোই রোমহর্ষক হবে, শিওর। কাজেই প্রেমের প্রথম দ্বিতীয় র‍্যাংকিং অর্থহীন।  তাছাড়া হওয়া না হওয়ার গুরুদায়িত্বই বা নেব কেন ঘাড়ে? সে বল অন্যের কোর্টে ফেলব। এমন কারও পছন্দ হব যে এক টক্কায় সব ঠিক করে। ৩। ব্যক্তিত্ব বদলাবেন না চেহারাঃ চেহারা বদলে বিশেষ লাভ নেই। অনিত্য ব্যাপার। লিমিটেড

আপাতত লুপে

Image
 

বইমেলার ছবি

দু’নম্বর মার্কেট থেকে বাড়ির পথটুকুতে সৌরভ স্টোর্সের ছেলেটা - শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, ভোট, দাঙ্গা নির্বিশেষে যার মুখ ঝলমলে - অনেকসময় মালপত্র এলোমেলো করে ফেলে। অবশ্য ওকে শুধু দোষ দিয়ে লাভ নেই, আমাদের হাতেও হয় হামেশাই, ব্যাগের মধ্যে মুখ উল্টে পড়ে থাকে দু'লিটারের লিমকা, বাড়ি এসে প্যাঁচ খোলা মাত্র সর্বত্র উদ্গারিত। দশের মধ্যে সাড়ে ন’বার আমার হাতেই। প্যাঁচ খুলছি, গলগল করে ফেনা বেরোচ্ছে, আর অর্চিষ্মান, 'দেখে দেখে!' চেঁচাচ্ছে - কমন ব্যাপার, আমাদের বাড়িতে। ইন্দ্রাণীর বইমেলা ঘুরে আসার খবরে মনের ভাব সেই রকম উপচে উঠল। কলকাতা আমাকে পাত্তা দিক না দিক, নিজের বলে স্বীকার করুক না করুক, “জিলা” কিংবা “মফো” বলে যত খুশি মুচকি হাসুক, একটি বিষয়ে আমি কলকাতার শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিয়েছি। কলকাতা বইমেলার মতো মেলা আমি পৃথিবীর কোথাও দেখিনি। রথের মেলা দেখেছি, দোলের মেলা দেখেছি, শকুন্তলা কালীবাড়ির মেলা, হস্তশিল্প মেলা, কুটিরশিল্প মেলা, আরও গোটা পাঁচেক বাঘা বাঘা শহরের বাঘা বাঘা বইমেলা - কলকাতা বইমেলার মতো আর একটিও মেলা জীবনে দেখলাম না। দেখবও না, সে বাবদে আমি নিশ্চিত। কতকিছুর জন্য বাবামাকে ধন্যবাদ দ