Posts

Showing posts from February, 2018

সিক্রেট ট্রিক

দু’নম্বর মার্কেটে চা খেতে খেতে একজন বলল, ফোন করে বলল দু’জন, অর্চিষ্মানকে গ্রুপ চ্যাটেও নাকি তিনজন বলেছে। সেদিন ওলাতে উঠে একজন আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হোয়্যার ইজ ইয়োর ড্রপ? ওহ, সি আর পার্ক? বাই দ্য ওয়ে, আমিনিয়া খুলেছে শুনেছেন তো, গেছেন নাকি? যাওয়া হয়নি। তবে সামনে দিয়ে হাঁটাহাঁটি করেছি। আর সেকেন্ড বেষ্ট অপশন যেটা, ইন্টারনেটে রিভিউ পড়া, তাও করেছি। কেউ কেউ লিখেছেন, খেয়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল, ছেঁড়া ঘুড়ি রঙিন বল… কেউ লিখেছেন, জঘন্য, পাতে দেওয়া যায় না। অবশ্য গোটা জাতটার যে রকম অধঃপতন হয়েছে তাতে বিরিয়ানি পাতে দেওয়ার মতো থাকলেই অদ্ভুত হত। একজন দেখলাম লিখেছেন, বিরিয়ানি ভালো তবে কলকাতার আমিনিয়ার বিরিয়ানির মতো নয়, কিন্তু তাতে এঁদের কোনও দোষই নেই। দোষ দিল্লির জলের, যেটা কলকাতার জলের থেকে আকাশপাতাল অন্যরকম। যারা জানে না তারা মাংসের সুসিদ্ধতা, চালের দৈর্ঘ্য, আলুর সংখ্যা, ডিমের থাকা না-থাকা নিয়ে লাফায়, যারা জানে তারা জানে বিরিয়ানির বাঁচামরা এগুলোর কোনওটার ওপর নির্ভর করে না। বিরিয়ানির বাঁচামরা নির্ভর করে রান্নার জলের ওপর। জলটাই হচ্ছে বিরিয়ানির সিক্রেট ট্রিক। ***** আমাদের চেনা একজ

আমার জীবনে কিছু না হওয়ার আসল কারণ

Image
উৎস গুগল ইমেজেস গত দশদিনে এক সন্ধ্যেয় বাজারের দু’দিকের দুই ফুচকাওয়ালার ফুচকা (আড়াই মিনিটের তফাতে) + আলুকাবলি (একদিকের, থ্যাংক গড) খেয়ে এমন পেটব্যথা, বুকজ্বলুনি, গা-গোলানি হয়েছিল যে রাতে ডিনার তো দূর অস্ত,পরের চব্বিশঘণ্টা কিছু গলা দিয়ে নামবে কিনা সন্দেহ হচ্ছিল। পরদিন ভোর চারটেয় অ্যালার্ম ছাড়া ঘুম ভাঙল। চোখ খোলারও আগে টের পেলাম ক্ষিদের অসহ্য কামড় । পেটের থেকে নির্লজ্জ এ জগতে আর কিছু আছে কি? আরেকদিন ওলা ভাইসাবের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হল। আমি ওঁকে 'এক’ রেটিং দিলাম। উচিত শিক্ষা দেওয়ার গর্বে মাথা উঁচু করে সফল-এ ঢুকে হলুদ ঝুড়িতে সবুজ করলা পুরছি, মনে পড়ল যা চেঁচিয়েছি তাতে একের বেশি রেটিং আমার কপালেও জুটবে না। মেজাজটাই গেল খারাপ হয়ে। আরেকদিন অর্চিষ্মানের বন্ধু ‘অ’ এসেছিল। সেই অনারে ফ্রিজের আলুকপি ফেলে রেখে আমরা ‘মা তারা’য় গেছিলাম। আলু দিয়ে পাঁঠার ঝোল, ভাত, রুটি, আলুপোস্ত, আলুভাজা, থামস আপ আর টমেটো শশা গাজর লেবু কাঁচালংকার স্যালাড খাওয়া হল। লংকাগুলো তো ঝাল ছিলই, তার থেকেও ঝাল ছিল বাংলার আধুনিক সংস্কৃতির ধারকবাহকদের নিয়ে আমাদের নিন্দেমন্দ। উইকএন্ডে মা বাবা এসেছিলেন। তাঁর

নিউটনের পাপ

Image
ষোলোশো বাষট্টি সালে, টিনএজার আইজ্যাক নিউটন ডায়রিতে তাঁর পাপের লিস্ট বানিয়েছিলেন। কয়েকটা নমুনা নিচে দেওয়া হল, পুরো লিস্ট পড়তে এখানে ক্লিক করুন।  Putting a pin in John Keys hat on Thy day to pick him.  Wishing death and hoping it to some.  Striking many.  Having uncleane thoughts words and actions and dreamese.  Punching my sister.  Robbing my mothers box of plums and sugar.  Beating Arthur Storer. কৃতজ্ঞতাস্বীকার

শেষ দিন

Image
মেয়ের সঙ্গে সবাই ক্যাশটাকা সোনাদানা খাটবিছানা ফ্রিজ মাইক্রোওয়েভ শ্বশুরবাড়ি পাঠায়, দ্বিতীয় সংগ্রাম সিংহের শ্বশুরমশাই পাঠিয়েছিলেন মেয়ের আটচল্লিশ জন সখী। তাঁদের থাকার জন্য রংবেরঙের ফুল লতাপাতা, মার্বেলের হাতিঘোড়া আর ফোয়ারা দিয়ে সাজিয়ে রাণা বানিয়ে দিয়েছিলেন নয়নাভিরাম সহেলিয়োঁ কি বাড়ি।   সেই বাড়ি আমরা দেখতে এসেছি সক্কাল সক্কাল। আরেকটু পরে এলেও হত, আনন্দ ভবনের প্রায় ফুটবল মাঠের সাইজের খাটে লেপমুড়ি দিয়ে ঘুমটাও এসেছিল দিব্যি। কিন্তু সেই খাটের মাথার কাছে জানালা, জানালার ওপারে মোটা মোটা গাছ আর সেই গাছের ডালে অজস্র পাখি সূর্য উঠতে না উঠতে চেঁচামেচি লাগাল। সে যে কী চেঁচামেচি যে নিজে কানে না শুনেছে জানে না। অ্যালার্মের স্নুজ টেপা যায়, পাখিদের গলা টেপা যায় না। কাজেই উঠতে হল। উঠে কমপ্লিমেন্টারি চা ব্রেকফাস্ট খেয়ে আমরা গেলাম সহেলিয়োঁ কা বাড়ি দেখতে। মরুভূমির দেশ বলেই বোধহয়, ফোয়ারা এদের কাছে সৌন্দর্যায়নের একটা বিশাল অঙ্গ। লেকের মাঝে ফোয়ারা, প্রাসাদের মাঝে ফোয়ারা, যেদিকে তাকাও সেদিকে ফোয়ারা। তবে ফোয়ারার চরম বাড়াবাড়ি দেখলাম সহেলিয়োঁ কা বাড়িতে। ফোয়ারায় ফোয়ারায় ছয়লাপ, পিছল! সাবধান! সত

ঘুমর ঘুমর ঘুমর ঘুমর

Image
ফতে সাগর লেকের ধারের উঁচু টিলার ওপর রাজকীয় গেস্ট হাউস হিসেবে তৈরি হয়েছিল, একসময় রাজারাজড়া আর ব্রিটিশ বড়সাহেবদের আপ্যায়ন করা হত, মেওয়ার রাজ্যের প্রধানমন্ত্রীও নাকি আনন্দ ভবনে থেকেছেন কিছুদিন। স্বাধীনতার পর এ বাড়ি হয়ে যায় সরকারি হোটেল। গত বছর অন্য কিছু সরকারি হেরিটেজ হোটেলের সঙ্গে সঙ্গে আনন্দ ভবনের প্রাইভেটাইজেশনের কথাও উঠেছিল। এই সব হেরিটেজ হোটেল সংরক্ষণের দায়িত্ব সরকারের কিনা, নাকি এসব হাতি না পুষে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দৃষ্টিপাত করাই সরকারের প্রায়োরিটি হওয়া উচিত সে সব আলোচনার জন্য চ্যানেলে চ্যানেলে প্যানেল বসবে’খন, আমি শুধু জানি প্রাইভেটাইজেশন হলে আমরা আনন্দ ভবনে থাকতে পারতাম না, সরকারি হোটেল বলে পারছি। মাউন্ট আবু থেকে সোয়া ন’টার বাসে (যেটা কাঁটায় কাঁটায় সোয়া ন’টাতেই ছেড়েছে) উদয়পুর এসে পৌঁছেছি দেড়টা নাগাদ। এই ফেব্রুয়ারির শুরুতে যে রকম রোদের তেজ, মে জুন মাসে কী হবে ভগবানই জানেন। বাসস্ট্যান্ড থেকে অটো নিয়ে আনন্দ ভবন। রিসেপশন থেকে বলে দেওয়া হল, এখন লাঞ্চ মিলবে না, মিনিমাম একঘণ্টা আগে নাকি অর্ডার দিতে হয়, আর দু’টোয় লাঞ্চটাইম শেষ। তাতে আমরা একটু দমেই গেলাম, মাউন্ট আ

নক্কি লেক + সানসেট পয়েন্ট

Image
পায়ের নখ দিয়ে খোঁড়া হয়েছিল বলে লেকের নাম নক্কি সে নিয়ে কোনও মতভেদ নেই, কিন্তু নখ দিয়ে একটা গোটা লেক কেন খোঁড়া হয়েছিল সে নিয়ে আছে। কেউ বলে, দানবের হাত থেকে পালানোর জন্য দেবতারা নখ দিয়ে লেক খুঁড়ে তার নিচে আশ্রয় নিয়েছিলেন, কেউ বলে রসিয়া বালম নামে একজন লোক রাজার মেয়ে বিয়ে করার জন্য খেপে উঠতে রাজা শর্ত দিয়েছিলেন যে নখ দিয়ে এক রাতের মধ্যে লেক বানিয়ে দিলে তবেই রাজকন্যা মিলবে না হলে নয়, আবার একজায়গায় লিখেছে দেখলাম নখ দিয়ে সত্যি সত্যি লেক খুঁড়ে ফেলছে দেখে জাল মুরগির আওয়াজ শুনিয়ে তাড়াতাড়ি সময়ের আগেই ভোর করিয়ে দেওয়া হয়েছিল ইত্যাদি। মোদ্দা কথা, নখ দিয়ে নক্কি লেক খোঁড়া হয়েছিল আর দিলওয়ারা মন্দির দেখে আমরা সে লেক দেখতে যাব। জিপে বসেই সিদ্ধান্ত ফাইন্যাল হল আর ভাইসাব আমাদের বাংলা কথা পরিষ্কার ধরে ফেলে বললেন উনি আমাদের নিয়ে যেতে পারেন। এঁদের বাংলা বুঝে ফেলা মোটেই অস্বাভাবিক নয়, কারণ হোটেলের ভাইসাব জানিয়েছেন পুজোর পর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত যত টুরিস্ট মাউন্ট আবুতে আসে তার নাইনটি পারসেন্ট বাঙালি।   নক্কি লেকের চারদিকে চা, বুড়ির চুল, আইসক্রিম, হস্তশিল্পের জমজমাট বাজার। লেকের মধ্য

আদারওয়াইজ

Image
মহর্ষি বশিষ্ঠের ফেভারিট গরু নন্দিনী একবার খাদে পড়ে গিয়েছিল। অনেক চেষ্টাতেও নন্দিনীকে উদ্ধার করতে না পেরে বশিষ্ঠ শিবের সাহায্য চাইলেন। শিব পাঠালেন সরস্বতীকে। মা সরস্বতী স্রোতস্বিনী হয়ে খাদ ভাসিয়ে নিয়ে গেলেন, নন্দিনী সাঁতরে পারে উঠল। কাজ সেরে পল্লু ঝেড়ে মা সরস্বতী বাড়ি চলে গেলেন, খাদ আবার হাঁহাঁ করতে লাগল। নন্দিনী ভারি লক্ষ্মী মেয়ে ছিল, তার কালো চোখ আর লম্বা লেজ ছিল, কিন্তু বুদ্ধি কতখানি ছিল সে নিয়ে বশিষ্ঠ সন্দিগ্ধ ছিলেন। তিনি বললেন, রিস্ক নিয়ে লাভ নেই, এ খাদ চিরকালের মতো ভরিয়ে দেওয়া হোক। অর্বুদ নামে এক ভয়ানক শক্তিশালী সাপ তখন সে জঙ্গলে বাস করতেন। বিষ্ণুর আদেশে তিনি পাক খেয়ে খেয়ে খাদ ভরিয়ে দিলেন। খাদ তো ভরলই, উপচে পড়ে অর্বুদপর্বতের সৃষ্টি করল। সেদিনের সেই অর্বুদ পর্বতই আজকের মাউন্ট আবু। মাউন্ট আবুতে হিন্দু পুরাণের তেত্রিশ কোটি দেবদেবী হয় বাস করেছেন,   নয় কখনও না কখনও ভিজিট করেছেন। তেত্রিশ না হলেও কয়েক কোটি হোটেল যে মাউন্ট আবুতে আছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। সিজনে এ জায়গার চেহারা ভাবতেও গায়ে কাঁটা দেয়। আমরা থাকব আর টি ডি সি-র হোটেল শিখর-এ। রাস্তা চেনা খুব সোজা। বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার ঠিক