ঘুমর ঘুমর ঘুমর ঘুমর
ফতে সাগর লেকের ধারের উঁচু টিলার ওপর রাজকীয় গেস্ট হাউস হিসেবে তৈরি হয়েছিল, একসময় রাজারাজড়া আর ব্রিটিশ বড়সাহেবদের আপ্যায়ন করা হত, মেওয়ার রাজ্যের প্রধানমন্ত্রীও নাকি আনন্দ ভবনে থেকেছেন কিছুদিন। স্বাধীনতার পর এ বাড়ি হয়ে যায় সরকারি হোটেল। গত বছর অন্য কিছু সরকারি হেরিটেজ হোটেলের সঙ্গে সঙ্গে আনন্দ ভবনের প্রাইভেটাইজেশনের কথাও উঠেছিল। এই সব হেরিটেজ হোটেল সংরক্ষণের দায়িত্ব সরকারের কিনা, নাকি এসব হাতি না পুষে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দৃষ্টিপাত করাই সরকারের প্রায়োরিটি হওয়া উচিত সে সব আলোচনার জন্য চ্যানেলে চ্যানেলে প্যানেল বসবে’খন, আমি শুধু জানি প্রাইভেটাইজেশন হলে আমরা আনন্দ ভবনে থাকতে পারতাম না, সরকারি হোটেল বলে পারছি।
মাউন্ট আবু থেকে সোয়া ন’টার বাসে (যেটা কাঁটায় কাঁটায় সোয়া ন’টাতেই ছেড়েছে) উদয়পুর এসে পৌঁছেছি দেড়টা নাগাদ। এই ফেব্রুয়ারির শুরুতে যে রকম রোদের তেজ, মে জুন মাসে কী হবে ভগবানই জানেন। বাসস্ট্যান্ড থেকে অটো নিয়ে আনন্দ ভবন। রিসেপশন থেকে বলে দেওয়া হল, এখন লাঞ্চ মিলবে না, মিনিমাম একঘণ্টা আগে নাকি অর্ডার দিতে হয়, আর দু’টোয় লাঞ্চটাইম শেষ। তাতে আমরা একটু দমেই গেলাম, মাউন্ট আবুর আর টি ডি সি তে কেমন প’নে তিনটেতেও বিনা বাক্যব্যয়ে লাঞ্চ খাইয়েছিলেন ওঁরা সেটা মনে পড়ে গেল সঙ্গে সঙ্গেই, কিন্তু তারপর একজন সুটবুট পরা মানুষ কোথা থেকে বেরিয়ে এসে বললেন, ‘কী খাবেন?’ আমরা তাড়াতাড়ি বললাম ‘সির্ফ ডাল রোটি কাফি হ্যায়, চাওল ভি নহি চাহিয়ে।’
স্বর্গীয় ডালরুটি খেয়ে আধঘণ্টা গড়িয়ে, দুই বাড়িতে ফোন করে আনন্দ ভবনের লম্বা লম্বা বারান্দা, বারান্দা থেকে ফতে সাগর লেকের ভিউর যথাসম্ভব বর্ণনা দিয়ে আমরা বেরোলাম। যা বোঝা যাচ্ছে, এই রোদে বেশি দেখাদেখি করা যাবে না। তাতে অসুবিধে নেই, রিসার্চে জেনেছি শহরে উদয় আর্ট ক্যাফে বলে একটা গ্রিক কফির দোকান আছে। রিভিউতে একজন লিখেছেন, দু’বছর ভারতে থাকা এবং অক্লান্ত খোঁজার পর তিনি সিদ্ধান্তে এসেছেন উদয়পুরের ঘিঞ্জি গলির ভেতরের এই দোকানেই ভারতবর্ষের সেরা কফি পাওয়া যায়।
কফির ভালোমন্দে আমাদের কিছু এসে যায় না, কিন্তু আরাম করে বসার জন্য কফিশপের থেকে বেটার জায়গা পাওয়া শক্ত।
আগেই বলেছি, আনন্দ ভবন ফতে সাগর লেকের ধারে আর উদয় আর্ট ক্যাফে হচ্ছে লেক পিচোলার কাছে জগদীশ টেম্পল রোডে। কিলোমিটার দুয়েক দূর আর রোদও আছে, তবু হেঁটেই গেলাম। কারণ হেঁটে ছাড়া শহর দেখে মজা নেই, আর উদয়পুর দেখার মতোই শহর। দুপাশে বোগেনভিলিয়া ছাওয়া চওড়া পরিষ্কার রাস্তাও যেমন আছে, ইউরিন্যালের গন্ধওয়ালা সরু গলিও আছে, ঘোড়া আছে, ষাঁড় আছে, হিপি আছে, টুরিস্ট আছে। ছোট ওয়াকিং ব্রিজ বেয়ে লেকের একটা লেজুড় ক্রস করে আমরা এসে পড়লাম সিটি প্যালেসের দিকে। প্যালেস অবশ্য আমরা আজ দেখব না, আরাম করে সময় নিয়ে দেখব আগামীকাল। আজ খালি কফি খাওয়া আর নৌকোবিহার।
ক্রমে রাস্তা সরু হয়ে এল, চতুর্দিকে আর্টের দোকান, কফি শপ এবং হিপির সংখ্যা বিপজ্জনক রকম বৃদ্ধি পেল। হাঁটছি তো হাঁটছিই। আমার আবার ধৈর্য থাকা আর ফুরোনোর মধ্যে ট্রানজিশনটা অবিশ্বাস্য দ্রুত। হাঁটছি হয়তো আধঘণ্টা ধরে, কিন্তু হঠাৎ মনে হবে, ওরে বাবা আর পারছি না। পারছি না মানে আর হাঁটলে মরেটরেও যেতে পারি। মনের ভাব সবে সেরকম হয়েছে, এমন সময় বাঁয়ে বেঁকেই উদয় আর্ট ক্যাফে বেরিয়ে পড়ল।
এই হচ্ছে সেই বিখ্যাত গ্রিক কফি, আমার পক্ষে একটু বেশিই কড়া। তাই আমি নিয়েছিলাম আইস ক্যাপুচিনো। কফি খেতে খেতে আমরা আবোলতাবোল বিষয় নিয়ে আড্ডা মারলাম, দোকানের অন্যান্য খদ্দেরদের আড়চোখে দেখে জাজমেন্ট পাস করলাম, মোদ্দা কথা সময় দারুণ ভালো কাটল। এত ভালো কাটল যে কফি শেষ হওয়ার পর দুটো হানি লেমন জিঞ্জার চা-ও নেওয়া হল। ততক্ষণে রোদ্দুরও মিইয়ে এল বেশ খানিকটা। বিল মিটিয়ে ক্যামেরার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।
উদয় আর্ট ক্যাফে থেকে মিনিট তিনেক হাঁটলেই লেক পিচোলার ধারে গনগৌর ঘাট। গন হচ্ছেন শিব আর গৌর হচ্ছেন গৌরী, এই দুজনের দাম্পত্য উদযাপন করা গনগৌর উৎসব রাজস্থানের প্রিয় উৎসব। হোলির পরদিন থেকে শুরু হয়ে পরের দু’সপ্তাহ ধরে উৎসব চলে, শেষদিন পালকি, রথ, গরুর গাড়ি সহযোগে মিছিল শহর পরিক্রমা করে এই ঘাটে এসে থামে, হর গৌরীর মূর্তি লেকে ভাসান দিয়ে উৎসব সাঙ্গ হয়।
সেসব জগঝম্পের মধ্যে যে এসে পড়িনি, সে জন্য কপালকে ধন্যবাদ দিয়ে ঘাটের সিঁড়িতে এসে বসলাম। বসাটা খুব যে শান্তিপূর্ণ হচ্ছিল তা নয়। ঘাটের চাতালে নানারকম গোলযোগ হচ্ছিল, পায়রাগুলো শান্তিতে খাচ্ছিল, সেই সব পায়রাদের উড়িয়ে সেই উড়ন্ত পায়রার ঝাঁকের মধ্যে দাঁড়িয়ে সেলফি নেওয়ার জন্য কিছু লোক আপ্রাণ পরিশ্রম করছিলেন, প্রথমে হাসি পাচ্ছিল, তারপর গা জ্বলছিল, তারপর ‘যা হচ্ছে হোক’ বলে গোটা ব্যাপারটা থেকে মন তুলে নিলাম যখন, তখন চোখে পড়ল সামনের জলে পড়ন্ত সূর্যের রশ্মি আর কানে এল দিশি সারেঙ্গীর আওয়াজ।
এই ছবিটায় আমাকে যদিও তেমন রূপসী লাগছে না, এ ছবি তুলতে গিয়ে ক্যামেরাম্যান প্রায় জলে পড়ে যাচ্ছিলেন তাই তাঁর কমিটমেন্টের মর্যাদা দিতে অবান্তরে ছাপলাম।
এই গনগৌর ঘাটের গায়েই সপ্তদশ শতাব্দীতে মেওয়ার রাজবংশের প্রধানমন্ত্রী অমরচাঁদ বানিয়েছিলেন বাগোর কি হাভেলি। হাভেলির একশো আটত্রিশটি ঘর, অসংখ্য বারান্দা, করিডর জুড়ে এখন মিউজিয়াম বসানো হয়েছে। টাইম ম্যানেজমেন্টের ভুলে সে মিউজিয়াম আমাদের দেখা হয়নি, আপনারা গেলে অবশ্য করে যাবেন। তবে মিউজিয়াম ছাড়াও এই বাগোর কি হাভেলি-তে আরও একটা রোমহর্ষক ব্যাপার হয়, সেটা হচ্ছে প্রতি সন্ধ্যেয় সাতটা থেকে আটটার মধ্যে নামের রাজস্থানি লোকনৃত্যের অনুষ্ঠান ‘ধরোহর’। মিউজিয়াম হল না, অন্তত হাভেলির বারান্দায় বসে নাচ দেখার ইচ্ছে আমাদের খুবই, কিন্তু আবার বোটিং না করলেও চলবে না।
গনগৌর ঘাট থেকে বোটিং-এর ঘাট অটোতে নেবে একশো টাকা। নো দরাদরি অ্যালাউড। দূরত্বের পক্ষে একশো টাকা ভাড়াটা অত্যন্ত বেশি, কিন্তু হেঁটে যাওয়া সম্ভব নয়, সময়ও নেই। সূর্য ডোবে ডোবে। বোটিং সেরে আবার অটো নিয়েই ফিরতে হবে এই গনগৌরে, নাচ দেখার জন্য।
বেড়াতে এসেছি কাজেই এসব নিয়ে ভেবে লাভ নেই বলে আমরা অটোতে চড়ে চলে গেলাম লেক পিচোলা বোটিং পয়েন্টে। আয়তন বিশাল (প্রায় সাত বর্গ কিলোমিটার) বলেই বোধহয় নক্কি লেকের মতো প্যাডেল বা দাঁড় টানা বোট দেখলাম না। লেক পিচোলায় খালি চলে ভটভটি বোট। ছোট বড় সব রকমই আছে। আপনি কুড়ি জনের সঙ্গেও বোটে উঠতে পারেন, আবার বেশি টাকা দিয়ে ছোট প্রাইভেট ভটভটিও (উইথ চালক) ভাড়া নিতে পারেন।
লেক পিচোলায় সূর্যাস্তকালীন নৌকাবিহার নাকি জীবনের সেরা কয়েকটি রোম্যান্টিক ‘টু ডু’র মধ্যে পড়ে। সে রোম্যান্সের মর্যাদা দিতে হলে হয়তো আমাদের প্রাইভেট বোটই নেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তারা সবাই অলরেডি বুক হয়ে লেকে নেমে পড়েছে, খালি বড় বোটই বাঁধা আছে ফেরিতে। আরও আঠেরোজন সহযাত্রীর সঙ্গে নৌকাবিহার করে যতটুকু রোম্যান্স হবে তাই দিয়েই চালিয়ে নেব’খন স্থির করে আমরা বোটে উঠে পড়লাম।
সূর্যাস্ত তো ভালোই, সমান ভালো হচ্ছে সেই লেকের দুপাশের এবং মধ্যের প্রাসাদ-অট্টালিকার শরীরের ওপর সূর্যাস্তের আলোর প্রলেপ।
এই বাড়িতে নাকি পপস্টার কেটি পেরি বিয়ে করেছিলেন।
বোট থেকে নেমে অটো নিয়ে আমরা গনগৌর ঘাটে বাগোর কি হাভেলিতে ফিরে এলাম। ‘ধরোহর’ দেখার জন্য অলরেডি লাইন পড়ে গেছে। নিজেদের আর ক্যামেরার টিকিট কেটে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় পৌঁছলাম এবং চোখ কপালে উঠে গেল।
গিজগিজ করছে লোক। দোতলার চাতালটা একটা অ্যাম্ফিথিয়েটার, তার সিঁড়িতে পাতা গদিআঁটা বেঞ্চি তো টইটম্বুরই তাছাড়াও দুপাশের ব্যালকনি, ঝরোখা, রেলিং সর্বত্র থেকে মানুষ ঝুলছে। এই বাজারেও মূল অ্যাম্ফিথিয়েটারের মূল বসার জায়গায় দুটো বসার জায়গা খালি দেখে আমাদের সন্দেহ হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তখন ফাঁকা জায়গা দেখে উত্তেজনার চোটে লাফিয়ে গিয়ে বসেছি, আর বসামাত্র ফাঁকা সিটের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। নাকের ডগায় একখানি আম না জাম গাছের প্রকাণ্ড কাণ্ড, ‘আমিও নাচ দেখব’ বলে গ্যাঁট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে রকম উদ্যোগী হলে আবার সিট শিকারে বেরোনো যেত, কিন্তু অর্চিষ্মান আর আমার আবার এই ব্যাপারে মারাত্মক মিল। চালিয়ে দেওয়া গেলে আমরা সর্বদা চালিয়েই নিই। অসুবিধে কিছু হয়নি, মাঝেমাঝে একটু এদিকওদিক গলা বাড়াতে হচ্ছিল, কিন্তু নাচগান পুতুলখেলা সবই স্পষ্ট দেখা গেছে।
বিশ্বের পূর্বপশ্চিম উত্তরদক্ষিণ থেকে দর্শক এসেছেন, তাঁদের হাতে গাইডবুক, মুখে হাসি আর ভাঙাচোরা না-মা-স-ঠে। দুয়েকজন আমাদের চত্বরেই বসেছিলেন আর গাছের কাণ্ডে তাঁদের দৃষ্টি প্রতিহত হচ্ছিল। আমাদের আশেপাশে দুচারজন, আমাদেরই দেশের লোক, ভিড় বাসট্রেনে চড়ে চড়ে সিট আবিষ্কারে যাঁদের দক্ষতা শিকারী বাজের পর্যায়ে পৌঁছেছে তাঁরা খুঁজে খুঁজে ভালো সিট বার করে নিজেরা না গিয়ে বিদেশী বন্ধুদের সেই সব ভালো সিটে পাঠাতে লাগলেন।
কিতনে দূর সে আয়ে হ্যায়, সোচো। দে শুড সি।
বুকের মধ্যে কেমন একটা ফিলিং হল।
এই ফিলিংটা আরও অনেকবার হল সেই সন্ধ্যেয়। মাথায় আগুন নেওয়া নাচ দেখে, মহিষাসুরমর্দিনী নাচ দেখে মাথায় দশখানা মাটির হাঁড়ি নিয়ে স্টেজ ঘিরে শিল্পীর পাঁই পাঁই দৌড় দেখে সেই সব বিদেশী বন্ধুরা যখন চোখ কপালে তুলছিলেন, দুই হাত মাথার ওপর তুলে তালি দিচ্ছিলেন, হুপ হাপ শব্দ করে (নির্ঘাত অ্যামেরিকান) উৎসাহব্যঞ্জক উল্লাস প্রকাশ করছিলেন, আমার বারবার সেই ফিলিংটা হচ্ছিল।
সিনেমাহলে সিনেমা শুরুর আগে জনগণমন বাজার সময় উঠে দাঁড়াতে বাধ্য হওয়ার সময় যেটা এককুচিও হয় না।
*****
ডালরুটি খেতে চমৎকার, কিন্তু তা বলে বেড়াতে গিয়ে সর্বদাই ডালরুটি খেলে কেমন না? তাই আমরা ঠিক করলাম উদয়পুরের শেষ রাতে বাইরে খাব। উদয়পুরে খাবার জায়গার অভাব নেই, খাবার জায়গার রেকোমেন্ডেশনেরও অভাব নেই। কোনও দোকানের খাবার অথেনটিক, কোনও দোকানের ভিউ অতুলনীয়, কোনও দোকানে নাকি অ্যান্থনি বোর্দে খেয়েছিলেন। শেষটা ভিউই জিতল, আর আমরা গেলাম আম্বরাই রেস্টোর্যান্টে ডিনার করতে।
সতেরোশো চৌত্রিশ থেকে সতেরোশো বাহান্নর মধ্যে মহারাণা দ্বিতীয় জগৎ সিং-এর আমলে বানানো আমেট হাভেলি হয়ে গেছে হোটেল আমেট হাভেলি, আর সেই হোটেলের রেস্টোর্যান্টই হচ্ছে আম্বরাই। লেকের ধারের বিস্তৃত ব্যালকনিতে সারি সারি টেবিল। কোনওটা একটু জলের একেবারে ধারে, কোনওটা তার দু’রো পেছনে। যেখানেই বসুন না কেন লেকের ওপারে আলোকজ্জ্বল সিটি প্যালেসের ভিউ গ্যারান্টিড। যথারীতি, টেবিল পাওয়ার অপেক্ষা করতে হল। আমাদের সঙ্গে আরও কিছু লোক অপেক্ষা করছিলেন, মাপমতো টেবিল খালি হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সকলেই জায়গা পেয়ে গেলেন, (খেয়াল করলাম, কোনওটাই জলের একেবারে ধারের রয়ের টেবিল নয়,) কেবল আমরাই হাঁদার মতো বসে রইলাম।
অবশেষে ডাক এল। সুটবুট পরা এক ভদ্রলোকের পিছু পিছু টেবিলের সারির মধ্যে দিয়ে আমরা এঁকেবেঁকে চললাম, চললাম…চললাম… কোথায় আন্দাজ করতে পারছেন নিশ্চয়?
একেবারে জলের ধারের একটা টেবিলে!
জীবনের সব গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধের হেরোরাই শুধু এইসব তুচ্ছ জয়ের তৃপ্তির মর্ম বুঝতে পারবেন।
খুব খাওয়া হল। মকটেল থেকে শুরু করে স্টার্টার থেকে মেনকোর্স। এত খাওয়া হল যে ডেজার্টের আর জায়গা রইল না। সুবেশ, সুভদ্র একজন বয়স্ক ভদ্রলোক আমাদের খাওয়াদাওয়ার দেখাশোনা করছিলেন। বলছিলেন, কোনও তাড়াহুড়ো নেই, ‘ভিউ দেখতে রহিয়ে অর খাতে রহিয়ে।’ আম্বরাইয়ের খাবার অতি ভালো, অতি সুস্বাদু। আমাদের আর আশপাশের টেবিলের মোমবাতির যতটুকু-না-হলে-নয় আলোয়, ঝলমলে প্রাসাদের আলো আর সেই আলোর প্রতিবিম্ব ভেঙেচুরে দেওয়া ঢেউয়ের অতি মৃদু ছলাৎ ছলাৎ শব্দে সে স্বাদ কোটিগুণ হয়ে উঠল।
আশ্বাস পেয়ে আমরা এত ধীরেসুস্থে আরাম করে খেলাম যে ভাইসাবকে এসে খাটো হয়ে যাওয়া মোমের ওপর নতুন মোম বসিয়ে দিয়ে যেতে হল। ক্রমে রাত গভীর হল, হাওয়া ঠাণ্ডা হল, ফেরার অটো পাওয়া যাবে কি না চিন্তা গুঁড়ি মেরে মাথায় ঢুকল।
প্রাসাদের দীপাবলীর দিকে আরেকবার তাকিয়ে দেখলাম। কী উজ্জ্বল। চোখ সরে এসে থামল টেবিলের উল্টোদিকে। সেখানে বসে থাকা লোকটার চশমার আড়ালের দু’চোখের উজ্জ্বলতা? এককোটি প্রাসাদেরও সাধ্য নেই পাল্লা দেয়।
‘ওঠা যাক, নাকি?’
‘ওঠা যাক।’
(চলবে)
মাউন্ট আবু - উদয়পুর ভ্রমণঃ প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব, তৃতীয় পর্ব, চতুর্থ পর্ব, পঞ্চম ও শেষ পর্ব
মাউন্ট আবু - উদয়পুর ভ্রমণঃ প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব, তৃতীয় পর্ব, চতুর্থ পর্ব, পঞ্চম ও শেষ পর্ব
Kuntala di, ekta jinis sotyi e jante chai.. kothao berate jaowar age ki ki site theke seta somporke dekhen? ami to trip advisor, tripoto ar khabarer byapare zomato chara kichui jani na ei byapare..
ReplyDeletenaki kono blog follow koren? ektu janaben..
আমি সেই জায়গাটার নাম + ট্র্যাভেল দিয়ে সার্চ করি, ঋতম। নির্দিষ্ট কোনও ব্লগ ফলো করি না, তবে জায়গার নাম + ট্র্যাভেল ব্লগ/ ট্র্যাভেলগ দিয়ে সার্চ করি কখনও কখনও, তাতে বেশ গল্পের মতো লেখা পাওয়া যায়, ট্রিপঅ্যাডভাইসরের থেকে পড়তে ঢের আরামের। ব্যস, নাথিং এলস।
Deletebah, eta besh helpful hobe to..thank you :)
DeleteKhub valo hoyeche lekhata.Chabigulo o khub sundor hoyeche.Apnar chabita dekhe bes valo laglo.Amar ekhon berate jabar upay nei,tai apnar lekhar jonno apekha kare base achi.-Sunanda.
ReplyDeleteধন্যবাদ, সুনন্দা।
Delete...চোখ সরে এসে থামল টেবিলের উল্টোদিকে। সেখানে বসে থাকা লোকটার চশমার আড়ালের দু’চোখের উজ্জ্বলতা? এককোটি প্রাসাদেরও সাধ্য নেই পাল্লা দেয়।...
ReplyDelete👏👏👏👏👏👏
থ্যাংক ইউ, চন্দ্রচূড়।
DeleteKhub Bhalo likechen....pore Bhalo laglo.. Amor toh kono bhasatei 2 line lekha hoina...abhik
ReplyDeleteধন্যবাদ, অভীক।
DeleteAmra o Anand bhavan e chilam ... sheeter shokaal e lawn e boshe gorom gorom aloor porota kheyechilam .... tobe onek bochor agey. Chobigulo shotti khub shundor ar tomar chobi ta o.
ReplyDeleteAbar kokhono gele oi Ambarai te jaboi.
আনন্দ ভবনের লনটা সত্যি চমৎকার, শর্মিলা। আম্বরাইও আমাদের খুব ভালো লেগেছে। পরেরবার যেয়ো।
DeleteTumio???!!!!!! Exactly kobe kobe Udaipur e chile??
ReplyDeleteTumi gechile Greek Cafe ar amra gechilam Cafe Edelweiss.
এডেলওয়াইসে আমরা শেষ দিন গিয়েছিলাম, কুহেলি। আমরা উদয়পুরে ছিলাম তেসরা ফেব্রুয়ারির দুপুর থেকে চৌঠার সন্ধ্যে পর্যন্ত।
Deleteah. amra chilam 25th-26th Jan.
Deleteআপনার লেখা পড়ে খুব সুন্দর মানসিক ভ্রমণ হচ্ছে
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, নালক।
Deleteকদিন ছিলাম না , বেড়িয়ে ফিরে দেখি অনেক লেখা পড়ে গেছে । অফিসে ব্লগ খোলে না , আজ একটু জলদি ফিরেই চা এ চুমুক দিতে দিতে...পর পর সব কটা পর্ব পরে ফেললাম ।
ReplyDeleteরাজস্থানের উদয়পুরের দিকটা যাওয়া হয়নি । বেজায় ভালো ঘুরছি । কয়েকটা জায়গা খুব ভালো লেগেছে । উদয়পরে গেলে এই লেখা ফের গাইডের কাজ দেবে । ^_^
থ্যাংক ইউ, প্রদীপ্ত। কোথায় বেড়াতে গিয়েছিলে?
Deletekerala :)
Deleteআরে বাঃ। আমাদের যাওয়া হয়নি কেরালা, যেতে হবে।
Delete