Posts

Showing posts from May, 2019

শুনতে যতটা ভালো, কাজে ততটাও...

হলে গিয়ে বড় পর্দায় সিনেমা দেখা   ইমার্সিভ অভিজ্ঞতার আশায় গলা কাটা পেপসি + পপকর্ন, সিটে নিরন্তর লাথি, আশপাশ থেকে অবিরাম ‘আই অ্যাম ইন দ্য মুভি, ক্যান আই কল ইউ লেটার?’ নো স্ট্রিং অ্যাটাচড রিলেশনশিপ   হাতিও ওড়ে আর জিরাফেও গান গায়।   নেশাকে পেশা করা নেশা ছুটিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ওয়ার্কিং ফ্রম হোম   আরও আধঘণ্টা ক্যান্ডি ক্রাশ খেলা থেকে আটকাচ্ছে কে? টিম ওয়ার্ক   কাজ যদি বা করা যায়, টিমমেম্বারের ইগো সামলানো যায় না। (উক্ত টিমমেম্বার অনেকক্ষেত্রেই আমি। আমার টিমের মেম্বারেরা একমত হবেন।) দল বেঁধে বেড়াতে যাওয়া   থিওরি প্র্যাকটিকাল সমান খারাপ। কাকাজির গোটা এক প্যাকেট (যা লে’স এর চারটে প্যাকেটের সমান) চিপস দিয়ে ডিনার সারা   কী করে জানলাম জিজ্ঞাসা করবেন না। লোককে ভালো সিনেমা, ভালো বই, ভালো বেড়াতে যাওয়ার জায়গার সাজেশন দেওয়া   কপাল তেমন খারাপ হলে সে আবার ফিডব্যাক দিতে আসতে পারে আপনার সাজেশন কত খারাপ ছিল। মনের কথা বলে হালকা হওয়া   চুপচাপ শুনে গেলে একরকম। কিন্তু সকলে অত বুদ্ধিমান হয় না। অ্যাডভাইস দেয়। যা কখনই মনের মতো হয় না। এক সপ্তাহ বাদে অন্য এক

দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন

Image
উৎস গুগল ইমেজেস অনেকদিন পর মধুর বিস্ময়। বাড়ির কাছে বাংলা সিনেমা রিলিজ করেছে। গত বেশ কয়েকটা বাংলা সিনেমা নয়ডার লজিক্সে গিয়ে দেখেছি। এটাও সেভাবেই দেখতে রাজি ছিলাম। এমন কিছু পরিশ্রমের ব্যাপার নয়, মেট্রোতে মিনিট চল্লিশ। শুক্রবার কাজের চাপ ছিল। বললাম, শনিবার যাই চল। সবুরে সুস্বাদু মেওয়া ফলল, উইকএন্ডে দেখি বাড়ির কাছের হলেও দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন। চল্লিশ মিনিটের মেট্রো হয়ে গেল দশ মিনিটের অটো। বুকমাইশো-তে টিকিট কেটে চলে গেলাম। ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’-এর গল্প হচ্ছে এইরকম। বনপুকুরিয়ার দেবরায় বাড়ি থেকে একটি অ্যান্টিক ছুরি চুরি যায়। সেই চুরি হওয়া ছুরি সোনাদার হাতে পড়ে এবং ছুরিতে লুকোনো গুপ্তধনের ধাঁধা দাদা পড়ে ফেলেন। বোঝাই যাচ্ছে সেয়ানা কোনও লোক বা লোকেরা ছুরির পেছনে পড়েছে, এবং দেবরায় বাড়িতে লুকোনো গুপ্তধন হাতানোর ফন্দিতেই। তাই যখন বেরোল দেবরায় বাড়ির ছোট ছেলে সোনাদার ছাত্র এবং তার ভারি ইচ্ছে যে এবার দুর্গাপুজোয় সোনাদা, আবীর (অর্জুন চক্রবর্তী) ও ঝিনুককে (ঈশা সাহা) নিয়ে বনপুকুরিয়ার দেবরায় বাড়ির পুজো দেখতে আসেন, তখন আর সোনাদা না করলেন না। পরিচালক ধ্রুব ব্যানার্জির সোনাদা ওরফে সুবর

দুটি পাঁচতারা পাঠ

Image
Lincoln in the Bardo/ George Saunders সেকেন্ড চান্স বিশেষ দিই না আমি কাউকে। কিন্তু সবসময় সেটা যে ভালো কথা নয় তা নতুন করে প্রমাণ করলেন জর্জ সন্ডার্স। প্রভূত প্রশংসা পড়ে জর্জ সন্ডার্স-এর ছোটগল্প সংকলন ‘টেনথ ডিসেম্বর’ খুলে বসেছিলাম এবং ছিটকে গিয়েছিলাম। একটাদুটো গল্প শেষ করতে পারিনি, সত্যি বলতে। রিভিউ পড়ে জেনেছিলাম জর্জ সন্ডারসের অনুরাগীদের ওই গল্পগুলোই নাকি অসামান্য লেগেছে। পাঠক লেখকের যে মেলবন্ধন ঘটলে পাঠের আরাম ঘটে, আমার দিক থেকে সেটা সম্পূর্ণ অধরা থেকে গিয়েছিল। তবু যে আমি ‘জয় মা’ বলে জর্জ সন্ডার্সের প্রথম উপন্যাস ‘লিংকন ইন দ্য বার্ডো’ নিয়ে বসলাম সে জন্য নিজের পিঠ নিজেই চাপড়াচ্ছি। সেকেন্ড চান্স অনেকসময় যে পাচ্ছে তার থেকেও কখনও কখনও যে দিচ্ছে তার পক্ষে বেশি জরুরি। সন্ডার্স তো জীবনের প্রথম উপন্যাস লিখে বুকার পেয়েই গেছেন, আমার সেকেন্ড চান্স দেওয়া না দেওয়ায় তাঁর মাথার একটা চুলও এদিকওদিক হবে না। কিন্তু আমি যদি ‘টেনথ ডিসেম্বর’-এর অভিজ্ঞতা পুষে 'লিংকন ইন দ্য বার্ডো’ না পড়তাম, তাহলে আমার এ বছর এবং শুধু বছর কেন গোটা পাঠজীবনের নিরিখেই, অন্যতম একটি শক্তিশালী রচনা না-

যদি কাজে লাগে

কাল বেলা দশটা নাগাদ এক সহকর্মী কাঁদো কাঁদো মুখে এল। নার্ভাস ব্রেকডাউনের কিনারে থরথরাচ্ছে। বললাম, চল প্যান্ট্রিতে। চায়ে চুমুক দিয়ে খানিকটা ধাতস্থ হয়ে সে বলল, দেখছ কী হচ্ছে? আমি বললাম, উঁহু। আমার কথা যদি শোন তো তুমিও দেখো না। সে বলল, আরে আমিও দেখতে চাইছি না, নার্ভের ওপর মারাত্মক চাপ পড়ে যাচ্ছে কিন্তু লোকে ক্রমাগত খবর দিয়েই যাচ্ছে। থামছেই না। বললাম, লোককে কাটিয়ে দাও। ফোনের মোড আলটিমেট পাওয়ার সেভারে নিয়ে যাও যাতে ফোনে শুধু ফোনই করা যায়। আর এস এম এস পড়া। কম্পিউটারে নেট বন্ধ কর। যে পেপারটা লিখছ সেটার ওপর ফোকাস ফেরাও। ঘাড় গুঁজে শেষ কর। যাতে দ্রুত পাবলিশ করতে পারো। যাতে সিভি ভালো হয়, মাইনে বাড়ে, অনেক টাকা হয়। যাতে দেশ গোল্লায় গেলেও তুমি বেঁচে যাও। ঘণ্টাখানেক পর তার সিটের পাশ দিয়ে যেতে যেতে দেখলাম সে ভুরু কুঁচকে একমনে টাইপ করছে। নিষ্প্রাণ ফোন পড়ে আছে কোণে। ভালো লাগল। এই বাজারে একঘণ্টার জন্য কারও কাজে লাগলেই অনেক। ভেবে ভেবে কয়েকটা টোটকা আরও লিখলাম। আপনারাও যদি কেউ দুঃখিত, স্তম্ভিত, বিপর্যস্ত হয়ে থাকেন, কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন। আপনার যদি নাও লাগে, আমার নিজের জন্যই জমিয়ে রাখলাম। ক

আপাতত ফ্যামিলিতে

মাবাবার অফিস থাকলে সাধারণত সন্তানদের সে সব অফিসে যাওয়ার গল্পও থাকে। তারা সেখানে গিয়ে নানারকম প্রতিভার পরিচয় দেয়। কবিতা বলে, নাচে, গায়। গোটা অফিস দুদ্দাড় দৌড়ে অ্যাথলেটিক প্রতিভার স্বাক্ষর রাখে। মায়ের অফিসে গিয়ে আমি সেরকম কোনও নমুনাই দেখাতে পারিনি। কারণ দেখানোর মতো প্রতিভা আমার ছিল না। খালি সবাই যখন বিস্ময় প্রকাশ করেছিল, বাবা এইটুকু মেয়ের এত ভারি চশমা? বলেছিলাম, আমাদের ফ্যামিলিতে সকলেরই চশমা।   মায়ের মুখ রাখতেই বোধহয় সবাই ওই ‘ফ্যামিলি’টুকু শুনে হেসেছিল। মাও ওই স্মৃতিটাকেই আদর করে রেখেছেন, মাঝে মাঝে ঝেড়েঝুড়ে দেখেন। আমি কোনও কৃতিত্ব দেখি না। কারণ শব্দটা বলতে আমার কোনও কল্পনাশক্তি খরচ করতে হয়নি। নিখাদ সত্যবচন। আমাদের ফ্যামিলিতে সত্যিই সকলের চশমা ছিল। সকলেরই পাকাচুল, সকলেরই চশমা। ঠাকুমাদাদুর কাঁচের মাঝখান দিয়ে দাগ টানা কালো ফ্রেমের চশমা। পিসির রিমলেস, কাকুর ফ্যাশনেবল। আমার বাবামা আমারই মতো, গতে বাঁধা বোরিং চশমা। ফ্যামিলিতে আমার বাবা সম্ভবতঃ সর্বাধিক কম বয়সে চশমান্বিত হওয়ার গৌরবের অধিকারী ছিলেন ( ক্লাস এইটে)। আমি বাবাকে গোহারা হারালাম। স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগেই নাকের ডগায় চশ

মা আর লেখা-পড়া

বিশ্ব মাতৃদিবসের পুণ্য অবসরে অবান্তরে কী পোস্ট করা যায় ভাবছিলাম। একেবারে ফাঁকা রাখা ভালো দেখায় না এদিকে খুব খেলিয়ে লেখার সময় নেই, ইচ্ছেও না। ইউটিউব থেকে একটি মম রাইটিং ট্যাগ জোগাড় হল। আমি সেই ট্যাগটি ছেঁটেকেটে, আমার এবং আমার মায়ের উপযোগী করে এখানে দিলাম। ১। How has your mother impacted your writing? মারাত্মক রকম। আমি মূলতঃ যা লিখি (ব্লগপোস্ট), যেভাবে লিখি (কম্পিউটারে) এবং যেখানে ছাপি (ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে) তার সঙ্গে মায়ের দূরদূরান্তের সম্পর্ক নেই (ভরসাও না) কিন্তু লেখার ব্যাপারটা মা-ই শিখিয়েছিলেন। আক্ষরিক লেখার কথা যদি বলেন, বাংলা ইংরিজি দুই লেখাই মা হাতে ধরে শিখিয়েছিলেন, যার প্রমাণ হাতের লেখায় আজীবন বয়ে চলেছি। আর যদি মনের মাধুরী মিশিয়ে লেখার কথা বলেন তার পেছনেও আমার মায়েরই অবদান। সে অবদানের একটা দিক তো বই পড়তে শিখিয়ে, নিয়মিত বই কিনে দিয়ে, লাইব্রেরির মেম্বার করে দিয়ে। মায়ের আমাকে লেখা শেখানো সংক্রান্ত একটা গল্প আছে। আমার চিরকালই কল্পনাশক্তি কম, যে কারণে কবিতা হল না। গদ্য লেখাতেও কিছু বানিয়ে লিখতে বললে আমি ফ্ল্যাট। স্কুলের প্রবেশিকা পরীক্ষায় নিজের পাড়া সম্পর্কে পাঁচ

লোহা

স্বপ্ন ব্যাপারটাই গোলমেলে। কাজেই স্বপ্নের পুরুষ, নারী, চাকরিও গোলমেলে হবে স্বাভাবিক। স্বপ্নের চাকরি আমি পাইনি কাজেই মন্তব্য করতে পারব না, স্বপ্নে নারীদেরও দেখিনি। অন্তত এমন নারী দেখিনি যার কথা ‘যে ছিল আমার স্বপনচারিণী’ গানটা যতবার শুনব ততবার মনে পড়বে। স্বপ্নের পুরুষ, অন দ্য আদার হ্যান্ড, ছিল কিছু এক সময়। বা সময় সময় বলা উচিত। অন্তত আমি ভেবেছিলাম ছিল। মানে না থাকার কোনও কারণ নেই। লিখতে গিয়ে কনফিডেন্সে টান পড়ে যাচ্ছে। ছিল না এ কি হতে পারে? যদিও স্বপ্নে কী দেখেছিলাম কবে দেখেছিলাম কিছুই মনে করতে পারছি না। ভাসাভাসা লাগছে সব। কেমন ছিল আমার স্বপ্নের পুরুষ?   চশমা ছিল মোটামুটি ধরে নেওয়া যায়। গিটার ছিল (এই আরেকটা রহস্য। নিজে আজীবন বাঁয়া তবলা হারমোনিয়াম, অথচ স্বপ্নে সর্বদা গিটার), হাইট (বেশির দিকে), ওয়েট (কমের দিকে), মায়াদয়া (বেশির দিকে), বাজে কথা আবার কমের দিকে। তাগাতাবিজ, ডেফিনিটলি… নাঃ, এইবার খেয়ালের পোলাওতে ঘি ঢালছি। আমি মোটেই স্বপ্নের পুরুষের এত সব বৈশিষ্ট্য কল্পনা করিনি। বড় জোর কাউকে কাউকে দূর থেকে দেখে ভেবেছি স্বপ্নের পুরুষ এই রকম বা এর কাছাকাছিই হবে নির্ঘাত। ব্যস।  

অভিশপ্ত

Image
উরসুলা কে লে গুইনের ছোটগল্প The Wife’s Story-র ছায়া অবলম্বনে আমার চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের এ মাসের ছোটগল্প ‘অভিশপ্ত’ গল্পটি সম্পর্কে দুটো কথা বলার। এক, লে গুইনের অন্য সব রচনার মতো এই গল্পটাও দৃষ্টি বদলের খেলা খেলে। দুই, এই প্রথম আমার একটা প্রেমের গল্প লেখা। প্রথম বলাটা অবশ্য ভুল হল, রহস্যের রানি, পরে যা 'নয়'-এ ‘রানি’ নামে ছেপে বেরিয়েছে, সেটাও একপ্রকার প্রেমের গল্প বলেই আমি মনে করি, কিন্তু আগাপাশতলা প্রেমের গল্প এই প্রথম। এই রইল লিংক।

জালৌরি পাস, সেরওলসর লেক, চেহনি কোঠি/ ৩ (শেষ)

Image
সোঝায় একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন চরিত্রের ক্লায়েন্টেলের সঙ্গে মোলাকাত হল। গোশৈণীতে যাঁদের দেখেছিলাম তাঁরা হয় স্পিরিচুয়াল হিলিং-এর খোঁজে এসেছিলেন নয় ভিড় মোটে সহ্য হয় না বলে শহর ছেড়ে পালিয়েছিলেন। সোঝাতে যাঁদের দেখলাম তাঁরা একা বেড়ানোয় নেই। দলে যত বেশি লোক হয় তত ভালো। এঁদের টিমে অন্তত চল্লিশ শতাংশ শিশু থাকে। যারা যতক্ষণ জেগে থাকে হয় চেঁচায় নয় কাঁদে নয় ধুপধাপ দৌড়য়। রাতে নারী এবং শিশুরা নেপথ্যে চলে যাওয়ার পরও অনেকক্ষণ পাতলা দেওয়ালের ওপাশ থেকে টুং টাং ঠুং ঠাং ভেসে আসে আর সেই সঙ্গে মোটা গলায়, সবই তো বুঝলাম, বাট ডু উই হ্যাভ এনি অলটারনেটিভ? এঁরা তৈরি হতে শুরু করেন ভোর পাঁচটায়, তৈরি হয়ে বেরোতে, সেলফি তুলতে, লোক গুনতে, জিনিস বাঁধতে সাড়ে ন’টা বাজান। ন’টা পঁয়তাল্লিশে যখন শেষ এস ইউ ভি-টি বাঁক ঘুরে অদৃশ্য হয় তখন বোঝা যায় যে জায়গাটায় এসেছি সেটা আসলে একটা শান্ত, সুন্দর জায়গা। রাতেও বোঝা যায় অবশ্য। শিলাবৃষ্টিতে ভিজে কাঁপতে কাঁপতে ফিরেছি। চা পকোড়া খেয়ে ঘণ্টাদুয়েক শুয়ে শুয়ে বই পড়ে আর ক্যান্ডি ক্রাশ খেলে (আর পাশের ঘর থেকে ভেসে আসা বিকল্পহীনতার হাড়হিম করা নিদান শুনে) খাওয়াদাওয়াও সেরে নিয়েছি। রুটি মি