Posts

Showing posts from November, 2020

B negative

এই পোস্টটা যেদিন, যখন শুরু করেছিলাম, সেদিন, পোস্টটা শুরু করার আধঘণ্টা আগে আমার একটি "পিয়ার রিভিউ" হস্তগত হয়। কাজেই একটা হিংস্র কিছু করার ইচ্ছে প্রবল ছিল। কাউকে, যাকে হাতের কাছে পাই, আঘাত করার তাড়না তুঙ্গে ছিল। এই সব তাড়নাগুলোর সময় সাবধানে থাকতে হয়। বলা যায় না, নিজের গালেই চড় মেরে বসতে পারি। সেটা যদি এড়াতে চাই, অন্য কারও গাল দেখতে হয়। সেটাও আবার নিজের সেফটির পক্ষেই ক্ষতিকর। এই সময় বেস্ট হচ্ছে গুছিয়ে কারও নিন্দেমন্দ করা। আড়ালে, বলা বাহুল্য। প্রকাশ্যেও করা যায়, তবে সেলিব্রিটি কাউকে বাছা দরকার। ওঁদের চামড়া যথেষ্ট মোটা হয়েছে ধরে নেওয়া যায়, আমার মতো হেঁজিপেঁজি কী বলল মাইন্ড করবেন না। সেই সময়েই আদ্যন্ত নেগেটিভ একটি বই/লেখকসংক্রান্ত ট্যাগের মুখোমুখি পড়ি, যা ঝাল ঝাড়ার পক্ষে আদর্শ। এই সব বই এবং লেখকরা শুধু যে সেলিব্রিটি তাই নয়, অনেকেই গত হয়েছেন এবং/অথবা নক্ষত্রের জায়গা নিয়েছেন। আমার মতামতে তাঁদের সত্যিই কিছু এসে যায় না। কিন্তু সে আগের সপ্তাহের ব্যাপার ছিল। এখন হিংস্রতা কমে এসেছে। ভাবছি কী হবে ভালোমন্দ বলে। তারপর ভাবলাম, এই বাজারে টাইপ হয়ে যাওয়া আটশো ঊনত্রিশখানা শব্দ নষ্ট করার মানে

বিট্রেয়াল

কাল একটা গোটা আইসক্রিম খেলাম। কিড সাইজ নয়, লার্জ। ফুল ফ্যাট। উইথ রিয়েল সুগার। ভ্যানিলা, বাটারস্কচ, কেসরপিস্তা আর চকোলেটের বাইরে যে তিনটে গন্ধ আমার আইসক্রিমে আমি অ্যালাউ করি, তার মধ্যে একটা ফ্লেভারের। কফি। উইথ চকোলেট চিপস। গোটা খাওয়ার সময়টা জুড়ে আইসক্রিমটা গলে যায়নি। আবার ইটের মতো জমেও ছিল না। আইসক্রিম আর কাপের মাঝের ফাঁকটায় স্লাইটলি তেরছা করে চামচ ঢুকিয়ে অল্প গলা অংশটা চেঁছে নিচ্ছিলাম। আইসক্রিমের মসৃণ গা বেয়ে চামচ স্মুদলি বয়ে যাচ্ছিল। কিছু কিছু আইসক্রিমে যেমন দানাদানা বরফ জমে বন্ধুর হয়ে থাকে, তেমন নয়। আইসক্রিম ফুরোলে কাপের কোণ দোল খাওয়া কফি ফ্লেভার্ড চকোলেট ক্রিম চামচ দিয়ে যতটা সম্ভব উদ্ধার করে, কাপ মুখের ওপর উপুড় করে শেষ বিন্দুটার সদ্ব্যবহার করলাম। তারপর অপেক্ষা করলাম। কখন দুঃখ আসবে। ফাঁকা কাপের দিকে তাকাব।  অদৃশ্য, নন-এক্সিস্টেন্ট আইসক্রিমের ফোঁটা আবিষ্কার করার চেষ্টায় কাপের শরীরে চামচ চালিয়ে খরখর তুলব। লাস্ট বারের মতো চামচটা একবার চাটব। তারপর সত্যিটা মেনে নিয়ে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দেব। (শুধু বাক্সটা। চামচটা মেজে নিলে ধনেগুঁড়োর শিশিতে দিব্যি এঁটে যাবে। আপাতত ওই একটা মশলা

তখনও যা, এখনও তাই

কালই বাছাবাছি নিয়ে ভাবছিলাম। কেন এটা, কেন ওটা নয়। একেবারে আলটপকা ভাবনা নয়। কাজ ফেলে ক্যান্ডি ক্র্যাশ খেলছিলাম, কাজেই জীবনের চয়েস এবং চয়েসজনিত পরিণতি নিয়ে ভাবার উপযুক্ত সময় ছিল। ভাবতে ভাবতে অন্যমনস্ক হয়ে চালে ভুল হয়ে গেল, দান হেরে গেলাম, লাইফ ফুরিয়ে গেল। ওই মুহূর্তে কাজে ফেরত যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত কিন্তু আমি বাছাবাছি বিষয়ে গুগল কী বলছে সেটা নেড়েঘেঁটে দেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। ঘুম থেকে উঠে থেকে লাফ দিয়ে খাট থেকে নামব না নেক্সট পঁয়তাল্লিশ মিনিট ইন্টারনেটে আড়ি পাতব? দাঁত মাজব নাকি নিজেকে বাঘের সঙ্গে তুলনা করে আড়াই মিনিট বাঁচাব? ক্যান্ডি ক্রাশ খেলব নাকি পড়তে বসব? নতুন পেজ নতুন উইন্ডোতে খুলব না নিউ ট্যাবে? আপডেট নাউ নাকি রিমাইন্ড মি লেটার? ট্রাই টুনাইট? ইন অ্যান আওয়ার? রিমাইন্ড মি টুমরো? - এইসব হিজিবিজি এবং গুরুত্বপূর্ণ মিলিয়েটিলিয়ে নাকি সারাদিনে আমরা গড়ে পঁয়ত্রিশ হাজার সিদ্ধান্ত নিই। ভাবুন সারাজীবনে কত হবে। তার থেকেও সাংঘাতিক হচ্ছে যে এই প্রত্যেকটা সিদ্ধান্ত আমাদের একটি বিকল্প থেকে অন্য বিকল্পে সরিয়ে নিয়ে যায়, যেগুলো জুড়তে জুড়তে আমাদের জীবনের ফাইন্যাল চেহারাটা তৈরি হয়। যে বিকল্পগু

পোয়্যারোর শতবর্ষে

Image
অক্টোবরে দুটো জিনিসের শতবার্ষিকী ছিল। একটা জন্মদিন। একটা আত্মপ্রকাশ। উনিশশো কুড়ির অক্টোবরে জন্ম নিয়েছিলেন এরক্যুল পোয়্যারো, আর বহু  রিজেকশন পার হয়ে প্রথম উপন্যাস 'দ্য মিস্টিরিয়াস অ্যাফেয়ার অ্যাট স্টাইলস' সহকারে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন আগাথা ক্রিস্টি। আমার পক্ষে প্রথমটার থেকে দ্বিতীয় উপলক্ষ্যটা উদযাপন করা বেশি স্বাভাবিক। আফটার অল, আগাথা ক্রিস্টি আমার প্রিয়তম লেখক আর পোয়্যারো প্রিয় গোয়েন্দার লিস্টে প্রথম তিনেও আসবেন না। টিভিতে ডেভিড সুশে আর রেডিওতে জন মোফ্যাট না থাকলে পোয়্যারোকে ও লিস্টে খুঁজে পাওয়া যেত কি না সন্দেহ। তবু জন্মদিনটা উদযাপন করছি, কারণ পোয়্যারো আমার ঘরের লোক। আমার মনের ভেতর গোয়েন্দাগল্পের যে পার্মানেন্ট ঘরখানা আছে, যে ঘরের জানালার ওপাশে সর্বদাই সন্ধে নয়তো মেঘলা দিন, মাঝে মাঝে ছিটে, মাঝে মাঝে ঝমঝম, গ্যাঙর গ্যাং গ্যাঙর গ্যাং। জানালা ঘেঁষে খাট, চেয়ার হলে এমন বড়সড় যাতে পা মুড়ে বসা যায়। হাতের কাছে কাপভর্তি চা, মন্ত্রবলে কখনও ঠাণ্ডা হয় না। ত্রিসীমানায় জনমানুষ নেই, খালি আমি আর বত্রিশ ক্যালিবারের বন্দুক, চকচকে ছোরা, ডিজিটালিসের খালি শিশি, ঠোঁট গড়িয়ে একফোঁটা রক্ত আর দৃষ

অটবী ও জারুল

Image
আমার একটা আফসোস যে স্টিফেন কিং- এর 'অন রাইটিং' বা অ্যান ল্যামটের 'বার্ড বাই বার্ড'-এর মতো লেখা নিয়ে লেখা, বা লেখাকে ঘিরে আত্মজীবনী বাংলা ভাষায় কেউ লিখলেন না কেন। লীলা মজুমদার যদি বলে যেতেন ওইরকম মায়া কী করে সৃষ্টি করা যায়, নীললোহিত যদি লিখে রেখে যেতেন কী করে দৃষ্টিকে ঘুরিয়ে নিয়ে একটা সাধারণ মানুষ/দৃশ্য/গল্পকে অসাধারণ করে তোলা যায়, শীর্ষেন্দু যদি এখনও লিখে রেখে যান রোজকার হরেদরে ভাষা ব্যবহার করে ওই রকম নাব্য গাম্ভীর্য কী করে বুনে চলা যায় - বাংলার লেখককুল এবং বাংলা ভাষা, সম্পদশালী হত। কেউ কেউ বলবেন, কচু হত। ও সব কি আর শেখানো যায়? একজন বিদেশের এম এফ এ জাতীয় প্রোগ্রামে লেখা শেখানো হয় শুনে মুখ বেঁকিয়ে বলেছিলেন, কই আমাদের বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর, মানিককে তো ওই সব কোর্স করে লেখা শিখতে হয়নি, যত্তসব। অনেক লোকে এখনও বিশ্বাস করেন, সাহিত্যকর্ম, বগল বাজাতে পারা বা কান নাচাতে পারার মতো একধরণের ক্ষমতা, যা নিয়ে জন্মাতে হয়। টিপস দিয়ে শেখানো যায় না। বোঝাই যাচ্ছে, আমি তাদের দলে পড়ি না। কারণ আমি অসুবিধেজনকরকম আশাবাদী। যদিও চল্লিশ বছর বয়স হল, আমি এখনও বিখ্যাত হওয়ার আশা ছাড়িনি, উ