বিট্রেয়াল
কাল একটা গোটা আইসক্রিম খেলাম। কিড সাইজ নয়, লার্জ। ফুল ফ্যাট। উইথ রিয়েল সুগার। ভ্যানিলা, বাটারস্কচ, কেসরপিস্তা আর চকোলেটের বাইরে যে তিনটে গন্ধ আমার আইসক্রিমে আমি অ্যালাউ করি, তার মধ্যে একটা ফ্লেভারের। কফি। উইথ চকোলেট চিপস।
গোটা খাওয়ার সময়টা জুড়ে আইসক্রিমটা গলে যায়নি। আবার ইটের মতো জমেও ছিল না। আইসক্রিম আর কাপের মাঝের ফাঁকটায় স্লাইটলি তেরছা করে চামচ ঢুকিয়ে অল্প গলা অংশটা চেঁছে নিচ্ছিলাম। আইসক্রিমের মসৃণ গা বেয়ে চামচ স্মুদলি বয়ে যাচ্ছিল। কিছু কিছু আইসক্রিমে যেমন দানাদানা বরফ জমে বন্ধুর হয়ে থাকে, তেমন নয়।
আইসক্রিম ফুরোলে কাপের কোণ দোল খাওয়া কফি ফ্লেভার্ড চকোলেট ক্রিম চামচ দিয়ে যতটা সম্ভব উদ্ধার করে, কাপ মুখের ওপর উপুড় করে শেষ বিন্দুটার সদ্ব্যবহার করলাম।
তারপর অপেক্ষা করলাম। কখন দুঃখ আসবে। ফাঁকা কাপের দিকে তাকাব। অদৃশ্য, নন-এক্সিস্টেন্ট আইসক্রিমের ফোঁটা আবিষ্কার করার চেষ্টায় কাপের শরীরে চামচ চালিয়ে খরখর তুলব। লাস্ট বারের মতো চামচটা একবার চাটব। তারপর সত্যিটা মেনে নিয়ে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দেব।
(শুধু বাক্সটা। চামচটা মেজে নিলে ধনেগুঁড়োর শিশিতে দিব্যি এঁটে যাবে। আপাতত ওই একটা মশলার শিশিতেই চামচের অভাব।)
দুঃখ এল না, কারণ আনন্দও আসেনি।
আইসক্রিম খাচ্ছিলাম আর পাঁচটা খাওয়ার জিনিসের মতো করেই। আধঘণ্টা আগে রুটি পেঁচিয়ে বেগুনের তরকারি মুখে পোরার সময় আমার মন ও মেজাজের অবস্থা যেমন ছিল, আইসক্রিম খাওয়ার সময়ও অবিকল তাই থেকে গেছিল।
এই আশ্চর্য ঘটনার কথা অর্চিষ্মানকে বলতেই হল। যে, আইসক্রিম খেলাম অথচ আনন্দ হল না। অর্চিষ্মান লাফিয়ে উঠল। বলল পরশু নাকি ও ওর ফেভারিট টমেটো ফ্লেভারের লে'জ চিপস কিনে খেয়েছে প্রায় মাসতিনেক পর। এবং কোনও সুখ অনুভব করেনি। খাওয়া শেষে পড়ে ছিল খালি হাতে ফাঁকা প্লাস্টিক, আঙুলে লাল ছোপ, আর মুখ জুড়ে কষটা নুন আর সিনথেটিক টমেটো ফ্লেভারের বিস্বাদ। নাথিং মোর, নাথিং লেস।
ওই বিস্বাদটা আমি চিনি। কারণ আমারও আজকাল চিপস খেলে অবিকল ওই অনুভূতি হয়। চিপসের কোয়ালিটি খারাপ হয়ে গেছে? হতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের, সংস্কৃতির, ফার্নিচারের কোয়ালিটি যদি খারাপ হয়, চিপস-ই বা ব্যতিক্রম হতে যাবে কেন।
তা হলে বলতে হয় চকোলেটেরও কোয়ালিটিও খারাপ হয়েছে। আর পিৎজারও। এখন অনেক পিৎজা মুখে দিয়েই ময়দার তাল মনে হয়। টমেটো বেসিল সস নিয়ে ঠাট্টা করি, বেসিলটা বোধহয় রান্নার সময় জানালার পাশে টবে রাখা ছিল, না গো?
এমন ভাবার কারণ নেই যে আমরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দারুণ ফুডি হয়ে উঠেছি। বেসিলের জায়গায় থাইম চালিয়ে দিলে রেস্টোর্যান্টে “ম্যানেজার কো বুলাও” বলে ওয়েটারকে ধমকে উঠব। তফাৎ যেটা হয়েছে আগে পিৎজা খেতে খারাপ লাগলেও পিৎজা খাচ্ছি ভেবে চালিয়ে নিতাম, এখন মনের কোণে একটা হৃত সম্ভাবনা উঁকি মেরে যায়। এর থেকে বাড়িতে ভাত মুসুরডাল সেদ্ধ খাওয়া যেত।
আজকাল চলনসই পিৎজার খেতে খেতে ডালসেদ্ধর জন্য বুক হুহু করে, ফ্রিজের দরজায় চকোলেটের বেগুনী-সোনালি চাকচিক্য থেকে চোখ সরিয়ে শেলফ হাঁটকাতে হাঁটকাতে বলি, হ্যাঁ গো লর্ড চমচমগুলো সব শেষ? সামনে আইসক্রিম আর রাবড়ি ধরলে, ক’বছর আগেও একটা মারকাটারি দ্বিধায় পড়তাম, এখন?
দুটোর মধ্যে একটা বাছতে আমার এক মাইক্রো সেকেন্ড ভাবতে হবে না।
কোনটা বাছব বলুন দেখি? একটা হিন্ট দিতে পারি। ঠাকুমা যেটা বাছতেন সেটা।
বেসিক্যালি, আমি বুড়ো হয়েছি।
খবরটা নতুন নয়। আরও অনেক ক্ষেত্রে আমার প্রাচীনত্ব অস্বীকার করার কোনও জায়গাই নেই, করতে চাইও না। বহু বিষয়ে আমি লাফিয়ে আমার সেকেলেপনাকে জীবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছি, খালি জিভের বুড়োনোটাকে চোখ ঠারানোর কেন যেন চেষ্টা করে গেছি প্রাণপণ।
অবশেষে একদিন আর অভিনয় করা গেল না। মুহূর্তটা এখনও স্পষ্ট মনে আছে। অতি কায়দার এক দোকান। সজ্জার অঙ্গ হিসেবে ছাদ থেকে আস্ত হারলে ডেভিডসন ঝুলছে, প্লাস্টারহীন দেওয়াল পাইথনের মতো বাইছে খোলা পাইপ। ঘরের একমাত্র আলোর উৎস গুদামঘরের এক কোণে রাখা একটি পুঁচকে, ঘুরন্ত সাইকেডেলিক বল। একেকবার ঘরের একেকটি জায়গায় চমকে চমকে উঠছে। ঘুরঘুট্টে অন্ধকারে তক্কে তক্কে আছি, যেই না আমাদের টেবিলের কোণা ঘেঁষে আলো পিছলে যাচ্ছে টপ করে পিৎজা তুলে মুখে পুরছি।
দিব্যি লাগছিল। অর্চিষ্মানের সঙ্গে বসে আছি। অবান্তর পয়সা খরচ হচ্ছে। খারাপ লাগার কোনও কারণ নেই। তার মধ্যে চেরি অন টপ, আমাদের ঠিক পেছনের টেবিলে বসবি তো বস একজোড়া বাঙালি। ননস্টপ বকে নিজেদের এন্টারটেন করার দায় থেকেও মুক্তি। গলা শুকোলে মাঝেমধ্যে চুপ করে ওঁদের কথায় আড়ি পাতলেও দিব্যি টাইমপাস।
সেই ঝিংচ্যাক আলোবাজির মধ্যে বসে প্রথম স্বীকার করেছিলাম, গোটা ব্যাপারটার মধ্যে পিৎজাটাই সবথেকে খারাপ। অথচ জোম্যাটোয় কী ভালো রেটিং। ফোর পয়েন্ট এইট না কত। সেই দোকানও আমাদের খারাপ লাগছে?
জোম্যাটোর রেটিং ততদিনে আমাদের আরও বেশ ক’বার ঠকিয়েছে। কলেজপ্রধান কোনও অঞ্চলের দোকানের রেটিং যতই চোখ ধাঁধানো হোক না কেন, আমরা যাওয়া বন্ধ করেছি। ঠকে শিখেছি। স্বাভাবিক কারণেই ওই সব অঞ্চলের দোকানের দাম বেশ সুবিধেজনক জায়গায় থাকে। চমৎকার ডিল ভেবে সে সব দোকানে গিয়ে প্রত্যেকবার যাই মুখে পুরেছি, স্যান্ডউইচ, পিৎজা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, সবই হতাশাজনক ঠেকেছে।
কিন্তু সে শুধু আমাদেরই। আশেপাশের টেবিলের কলেজের বাচ্চারা সব ক্যালরব্যালর করেছে, পিৎজার পর পিৎজা, বালতির পর বালতি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, লালনীল শরবতের - যেগুলোর রঙের জৌলুস দেখে এবং চিনির পরিমাণ কল্পনা করেই আমার দাঁত কিরকির করে - ফোয়ারা ছুটছে চারদিকে।
আমি ব্যাপারটাকে অন্য একটা সমস্যা বলে ধরে নিয়েছিলাম। বিগত ক’বছর ধরে আমার একটা অসুখ হয়েছে, কোনও বদ্ধ জায়গায় একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি বিলো-পঁচিশ পপুলেশন থাকলে আমার শারীরিক কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। অল্প মাথা ঘোরা দিয়ে শুরু করে, হালকা দপদপানি দেখতে না দেখতে ছাদ পেটাইয়ের তীব্রতা নেয়।
প্রথমটা ভেবেছিলাম খাবারগুলো আমার খারাপ লাগছে দোকানভর্তি খদ্দেরদের ডেমোগ্রাফিটার জন্য। তারপর অন্য একটা সম্ভাবনা খতিয়ে দেখলাম। মেবি আমার খাবার খারাপ লাগার জন্য অন্যের যৌবন দায়ী নয়। দায়ী নিজের গতযৌবন। সম্ভাবনাটা মেনে নেওয়ার পর প্রমাণের লাইন পড়ে গেল। চিপস, পিৎজা, পরশুর কফি উইথ চকোলেট চিপস আইসক্রিম।
অর্চিষ্মান আমার সোলমেট, আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে আতংকও ভাগাভাগি করে। বলল, একটা জিনিস খেয়াল করে দেখেছ, বুড়োরা কিন্তু লাইন দিয়ে রোল খায় না। তার মানে আমি যখন বুড়ো হব আমারও রোল খেতে খারাপ লাগবে? এগ রোল, চিকেন রোল, মাটন রোল, এগ চিকেন, এগ মাটন, ডবল চিকেন, ডবল মাটন…
অর্চিষ্মানকে সান্ত্বনা দেওয়ার অবস্থায় আমি ছিলাম না। কারণ ততক্ষণে অর্চিষ্মানের রোল খারাপ লাগার থেকেও মারাত্মক একটা সম্ভাবনা আমার মাথায় এসেছে।
বেশ ক’বছর ধরে আমি গিয়ে দাঁড়ালেই ফুচকাওয়ালার চারপাশের ভিড়ের গড় বয়সটা আকাশপানে লাফ মারে। অগ্রাহ্য করি। কারণ আমি জানি ম্যাটার করে খালি মনের বয়স, আর আমার মনের বয়স ফুচকা খাওয়ার বয়সের একেবারে খাপে খাপ।
জিভেরও যে বয়স আছে, আর সে ব্যাটার বয়স যে মনের বয়সের তোয়াক্কা না করেই বেড়ে চলেছে সে বিপদ মাথাতেই আসেনি।
হয়তো একদিন জিভের বয়স বাড়তে বাড়তে এমন ভয়ানক জায়গায় পৌঁছবে যে ফুচকা মুখে পুরে শক খাব। বাপরে বাপরে বাপ, এত তেঁতুল সহ্য করে কী করে মানুষে?
বাড়ির সামনে দিয়ে ফুচকাওয়ালা যেত মাঝে মাঝে। ঠাকুমা তখন পাঁচশো টাকা পেনশন পান আর আমি পাঁচটাকা রিকশা অ্যালাওয়েন্স। ঠাকুমা আমাকে ফুচকা খাওয়াতেন, নিজে খেতেন না। ভাবতাম, কী জানি, পাড়ার মধ্যে বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়াজনিত ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা বুঝি। তারপর একবার সবাই মিলে হরিদ্বার বেড়াতে গেলাম, সেখানে ইয়া বড় বড় গোলগাপ্পা, একবারে মুখে পোরা যায় না। ঠাকুমাকেও খাওয়ানো হল, তীর্থে ফুচকায় দোষ নেই বলেটলে। খেতে খেতে ঠাকুমার চোখ ঠোঁট কুঁচকে একাকার। তারপর থেকে ঠাকুমা আর ওমুখো হননি। আমি আর বাবা রোজ হাপুসহুপুস গোলগাপ্পা খেতাম, ঠাকুমাও খেতেন গলির হালওয়াইয়ের দোকানের শালপাতা ভর্তি ঘন, মোটা সরফেলা রাবড়ি। রোজ।
ঠাকুমা ম্যাগি দেখলেও ম্যাগো বলতেন। কিলবিলে, ফ্যাটফেটে, স্বাদহীন ময়দার জট - কার, কেন, কোন অবস্থায় ভালো লাগতে পারে ঠাকুমার মাথায় ঢুকত না।
মায়ের কথা মনে পড়ে। কত অত্যাচার করেছি। টানতে টানতে কফিশপে নিয়ে গেছি। মা বার্গারে কামড় দিয়েছেন, শ্যেনচক্ষে তাকিয়ে থেকেছি, আমার যতখানি ভালো লাগছে মায়েরও নিক্তি মেপে ততখানি ভালো লাগছে কি না। প্রত্যেকবারই মা বলেছেন, দারুউউউণ সোনা। এখন সন্দেহ হয় বার্গারের বদলে বাড়িতে বসিয়ে ভাত মুসুরডাল পেঁয়াজি খাওয়ালে হয়তো মায়ের একশোগুণ বেশি ভালো লাগত। আবার এও মনে পড়ে যে সে ভাত ডাল পেঁয়াজির ব্যবস্থাও মাকেই করতে হত। মা অবশ্য নিশ্চিতভাবেই দাবি করতেন আমার জন্য সেটা করতেও নাকি তাঁর মচৎকার লাগছে। তার থেকে ওই যে অটো চেপে শপিং মলে গিয়ে জানালার পাশের গদিআঁটা চেয়ারটায় মুখোমুখি মা-মেয়ে বসে হিজিবিজি বার্গার অর্ডার করে নিজে খাচ্ছিলাম আর মাকে খেতে বাধ্য করছিলাম, সে একরকম ভালোই হয়েছিল।
খুশি হয়ে বাস্তবে ফিরে দেখি অর্চিষ্মান তখনও কী সব বলে চলেছে। বক্তব্যের শেষটুকুতে মনোযোগ দিলাম।
…বাই দ্য ওয়ে, রোল না খেলেও বুড়োরা চপ খায়। রোলের কাউন্টারে না হলেও, দাদুর দোকানের চপের কাউন্টারের সামনে ছ’টা বাজতে এই নভেম্বর-ডিসেম্বরের বাজারে মাংকিক্যাপের জোয়ার আসে, খেয়াল করোনি? তার মানে বুড়ো হলেও চপের পরিণতি চিপসের মতো হয় না।
অর্চিষ্মান রীতিমত চাঙ্গা হয়ে উঠল। বাগবাজারের চপের দোকানে মিত্রদের পৃষ্ঠপোষকতার ইতিহাস বহুপ্রজন্মের। আমি অত চপরসিক নই, মুচমুচে বেগুনী বাদ দিলে বাকি সবই হলে-ভালো-না-হলেও-অসুবিধে-নেই ক্যাটেগরিতে পড়ে। কাজেই অর্চিষ্মানের মতো খুশি হতে পারলাম না। ক্ষত চাটতে বসলাম। আমার জন্য তাহলে কী কী পড়ে রইল?
লর্ড চমচম আর রাবড়ি। মাঝেসাঝে বেগুনী।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে সিদ্ধান্ত নিলাম, এবার থেকে ফুচকা আরেকটু ঘনঘন খেতে হবে, যাতে জিভ বিট্রে করার আগেই…
ভয়ের থেকে আনন্দ হল বেশি। সেই ছোটবেলা থেকে এখন অব্দি পিৎজা বনাম আলুসেদ্ধ, ডালসেদ্ধ, ডিমসেদ্ধ ভাত বেছে এসেছি। এখনো বাসছি।
ReplyDeleteঠাকুমা পেনশনের টাকায় আপনাকে ফুচকা খাওয়াতেন - এটা পড়ে আমার ঠাকুমার আঁচলে বাঁধা (ঠাকুমার ভাষায় খুঁটে বাঁধা) খুচরো দিয়ে আমার রসগোল্লা খাওয়ার কথা মনে পড়ে গেল। চোখে একটু জলও এলো।
তারপর একথাটা কেন মনে হল জানি না। অবান্তর নিয়ে আপনার ঠাকুমার আর মায়ের কিরকম reaction ছিল কোনদিন পড়েছি বলে মনে পড়ছে না। একটু লিখুন না। যখন প্রথম বই বেরোল, ওঁরা পড়লেন বা শুনলেন কি বলেছিলেন?
আসলে আপনার মায়ের আর ঠাকুমার গল্প পড়লে মনের মধ্যে একটা আলাদা আনন্দ হয়। তাই idea দেওয়ার ধৃষ্টতা করলাম।
খুব ভালো থাকবেন। দারুণ হয়েছে।
পোস্টের আইডিয়াটা ভালো চন্দ্রচূড়। দেখি, লিখব কখনও। ঠাকুমার আমাকে দেওয়াথোওয়া নিয়েও লেখা যায়, কিন্তু সে পোস্ট লিখতে গেলে অনেক আক্ষেপ আর গ্লানির পাহাড় টপকাতে হবে। সে অমূল্য প্রাপ্তিগুলোর যথার্থ মর্যাদা না করার গ্লানি। তবে সেটাও প্রায়শ্চিত্ত হবে একরকম।
Deleteদোকানের পাস্তা সত্যি আর নেওয়া যায় না। হয় না টক না মিষ্টি টমেটোর ঝোলে সাঁতার নয় দলা দলা চিজে থকথক। ওর সঙ্গে আমাদের রোজকার মাড় গালা ভাতের তুলনাও যদি কেউ করে তার মাথা খারাপ।
ReplyDeleteAmar o boyos hocche realise korlam. Archisman da mitra bujhi. Amio Mitra.
ReplyDeleteওহ, তাই নাকি। গুড গুড।
Deletekuntaladi, tomar lekhati pore ekti gaaner kotha mone holo..maa gaiten khub, আমি মেলা থেকে তাল
ReplyDeleteপাতার এক বাঁশি কিনে এনেছি
বাঁশি কই আগের মতো বাজেনা
মন আমার তেমন কেন সাজেনা
তবে কি ছেলেবেলা অনেক
দূরে ফেলে এসেছি?
https://youtu.be/IOndzKBlx58
ekhon sotyi gaantar mane bujhte apri...etake ki bole janina...shikorer taan na ki nostalgia...sei dal bhate fire jaoa...
তোর ছেলেবেলা আমার স্মৃতিতে অক্ষত, অমর আছে, পারমিতা। গানটা সত্যি সুন্দর। থ্যাংক ইউ।
DeleteJah! Amar bon ajkal majhei majhei boley botey, "Didi, tor boyesh hochhe!"
ReplyDeleteEkhon dekhchhi shetao shotyi... o khub perceptive... mane when she is not aar ki... but seriously, nothing beats ba gorom bhaat aar mushur dal (aar oi je opore ekjon bollen, deem shedhho!) - aage mukh teriye bekiye khetam kintu ekhon maachher jhol, shukto onek onek beshi bhalo lage...
Kintu ei je phuchka appreciate korte parbo na bhebe monta hu hu korchhe... but sochne ki baat ye hain, goto 4-5 maash, ami phuchka chhuweo dekhini!
Ki chaap re baba, bhebechhilam corona odhyay shesh hole chul ta rong chong highlight kichhu ekta korbo, ekhon mone hochhe paka chul er gocha gulo thhik'i aachhe...
পাকা চুল নিয়ে ঘাবড়াও মৎ। প্রচুর লোকে সন্দেহ করে একটা বিশেষ "লুক" তাক করে আমি আমার চুল রং করছি না। অর্থাৎ পাকা চুলের একটা মার্কেট আছে। আমাকে যদি এখন কেউ ভালো শুক্তো রেঁধে খাওয়ায়, নেক্সট এক মাস তার কেনা হয়ে থাকতে পারি। কিন্তু ভালো শুক্তো রেঁধে খাওয়ানোর লোক জীবনে হুড়মুড়িয়ে কমছে। নিজেকেই কাঠখড় পুড়িয়ে শিখে নিতে হবে মনে হচ্ছে।
Deleteআমিও ভ্যাকসিন নিয়ে প্রথমে ফুচকা খেতে যাব। বাকি সব পরে দেখা যাবে।
এ তো বড় ভয়ের কথা বললেন। আমি তো ভাবছিলাম চকোলেটে অরুচিটা বেশি চকোলেট খাওয়ার ফলে হয়েছে। এখন তো মনে হচ্ছে... কি সাংঘাতিক! আর ওই যে এক ঘরে বেশি বাচ্চাকাচ্চা থাকলে অসুবিধে হওয়া, ঐটাও হয়, কিন্তু আমি কিনা ওই পঁচিশ বছরের কমেদের পড়াই, তাই অসুবিধেটা গায়ে মাখলে চলেনা।
ReplyDeleteতাও তো বটে, সুগত। তবে মাস্টারমশাইরা মুখে যাই বলুন, মনে মনে বাচ্চাকাচ্চা ভালোইবাসেন, অভিজ্ঞতায় দেখেছি। চকোলেটে অরুচি নিয়ে দুঃখ পাবেন না, রাবড়ি ধরুন। ওখানে পাবেন না, এইটা একটা দুঃখের ব্যাপার। ভালো কোয়ালিটির লাড্ডু, যেটা এক্সপোর্ট হয় আর রেখে খাওয়া যায়, সেটা একটা বিকল্প হতে পারে, জাস্ট সেয়িং।
Delete"রেখে খাওয়া যায়" কথাটার দুরকম মানে আছে। আপনি হয়তো বলতে চাইছেন "রাখলে পচে যায়না", কিন্তু আমি বলবো রেখে খাওয়া যায়না, কারণ ওই লাড্ডু বাড়িতে থাকলে রেখে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। ওই নো ওয়ান ক্যান ইট জাস্ট ওয়ান টাইপের ব্যাপার আর কি। দিশি মিষ্টিতে অরুচিটা থ্যাঙ্কফুলি এখনও হয়নি। এক বছর আগে বেনারসে রাবড়ি খেয়েছিলাম, এখনও সে স্বাদ মুখে লেগে আছে।
DeleteSereche go ..!! Comments gulo pore aro ghabre gelam.. amar je restaurant er khabar 3 din pore porei khete icche kore... na parle baritei serokom kichu baniye khai.. ! chap to mone hocche.. :)
ReplyDeleteদারুণ খবর তো ঊর্মি। তোর যৌবনকাল এ রকমই অক্ষয় হোক, আশীর্বাদ করলাম।
Deleteএই লেখাটা পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো কারণ আমার তো সব সময়েই মনে হয়ে এসেছে বাড়িতে সেদ্দোভাত অনেক ভালো যে কোনো রেস্টুরেন্টের খাবার থেকে | অনেকগুলো পয়সা খরচ হলো অথচ তৃপ্তিও হলোনা| অথচ এই ব্যাপারটা কারো সাথে ঠিক শেয়ার করা যায়না সবাই ভাববে কি বাঙাল রে বাবা| বরং বুড়ো বয়েসে রেস্টুরেন্টে খাওয়া একটু বেড়েছে ছেলে মেয়েদের জন্য| খাওয়ার জন্য না, কিন্তু একসাথে সবাই সময় কাটানো তা নইলে হয়না, বাড়িতে থাকলেও সবাই যে যার রুমে| আগের থেকে আর একটু বেশি টেস্ট ডেভেলপও করেছে| কিন্তু মেয়ে ভেগান আমিও অলমোস্ট ভেগান হয়ে চয়েস কমে গেছে| তবে রেস্টুরেন্ট যাওয়া বহুকাল বন্ধ করোনাকালে|
ReplyDeleteমায়ের বার্গার খাওয়া সম্বন্ধে যা লিখেছো একদম ঠিক| মায়ের ভালো না লাগলেই বা কি হয়েছে, মেয়ের যেটা ভালো লাগে সেটা মা এক্সপেরিয়েন্স করেছিলেন, খেতে ভালো না লাগলেও সেই অভিজ্ঞতা নিশ্চই জরুরি ছিল | ডাল ভাত পেঁয়াজি তো থাকবেই| একদম ঠিক করেছিলে মাকে বার্গার খাইয়ে!
Deleteসেদ্ধভাত যুগ যুগ জিও, অমিতা। যত সময় যাচ্ছে, জন্মসূত্রে পাওয়া বাঙালপনা, দাঁত নখ উঁচিয়ে, যাবতীয় পালিশ চটিয়ে আত্মপ্রকাশ করছে। মাকে বার্গার খাওয়ানোর ব্যাপারটায় সাপোর্ট করার জন্য থ্যাংক ইউ। তাছাড়া দোকানে গিয়ে খাবার খাওয়ার মধ্যে খাবারটাই তো বড় নয়; ওই যে রোজকার বাড়ির রান্নার বাইরে গিয়ে সুন্দর চেয়ারটেবিলে বসলাম, লোকে খাবার মুখের সামনে ধরল, বাসন মাজল, জল, চা যা চাইলাম পত্রপাঠ এনে দিল আর আমরা এলিয়ে বসে গল্প করলাম, সেই আরামটাও তো অনেক। ওই কফিশপের দুপুরগুলো, বেশি নয়, হাতে গোনাই, ঝকঝক করছে মনের মধ্যে। মায়েরও হয়তো করত।
Delete