Posts

Showing posts from September, 2020

পরাপরি বিষয়ে

স আমাদের নিচের তলার সহভাড়াটে। চাকরিসুবাদে কাশ্মীরের গুলিগোলার মধ্যে স-এর নিত্য যাতায়াত। আমি, বলা বাহুল্য, ইমপ্রেসড। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বেলাতে আমাদের বন্ধু না পড়লেও শত্রু কমন পড়েছে, কাজেই ভাব হতে দেরি হয়নি। মোদ্দা কথা, স-এর সামনে পড়লে আমি নিজের বেস্ট ফুট ফরওয়ার্ডের চেষ্টায় থাকি। হাসি না পেলেও হাসি, খবর নেওয়ার দরকার না থাকলেও নিই, বাথরুম চেপে দাঁড়িয়ে দেশের-দশের আলোচনা শুনতে শুনতে ঠিক ঠিক জায়গায় মাথা নাড়ি। অন্ততঃ নাড়ার চেষ্টা করি। ভুলভ্রান্তি হয় না বলব না, তবে চেষ্টার অভাবে নয়। সেই স-এর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। অথচ দেখা হওয়ার কথা ছিল না। সাড়ে ন’টা বাজতে যাচ্ছিল, কী খাব কী খাব গবেষণায় সন্ধে থেকে যত সময় বইয়েছিলাম তাতে বিরিয়ানি রেঁধে খেয়ে ফেলা যেত। কিন্তু জেদ চেপে গেছিল, অর্ডার করেই খাব। বিশ্বশুদ্ধু কুইজিন পার হয়ে কাঠি রোলে এসে ডুবে মরলাম। আমি খাব মাশরুম রোল, অর্চিষ্মান চিকেন না কীসের রোল অর্ডার করেছে। বাড়িওয়ালার সঙ্গে সারা বিকেল বসে ইলেকট্রিক বিলের হিসেব কষে এসেছে, লজ্জার মাথা খেয়ে ওকে আবার খাবার আনতে বলা যায় না। অগত্যা আমিই গেছি। ডেলিভারি ভাইসাবের দেখা নেই, আমার নার্ভাসনেস ক্রমশ চড়

গেছে যে দিন

টুইটারে একজন ছবি তুলেছেন, দিল্লির সব আইকনিক জায়গার ছবি। পার্ক, অফিস, মাঠ, রেস্টোর‍্যান্ট, সিনেমা হল, মাঠ, মসজিদের সিঁড়ি, মন্দিরের চুড়ো, চায়ের ঝুপড়ি, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছোলে ভাটুরে খাওয়ার উঁচু টেবিল। সবাই ভাবে, অন্ততঃ একসময় ভাবত, আমরা হচ্ছি টো টো কোম্পানি। শুক্রবার সন্ধেয় ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলে হাওয়াই চটি হাতে গলিয়ে সেই যে ছুট লাগাই, রবিবার রাতের আগে বাড়িমুখো হই না। নিজের এই চরিত্রবিশ্লেষণে অর্চিষ্মান মনের ভাব কী হত কে জানে, আমি নিতান্ত অপ্রসন্ন হতাম। আমার চিরদিনের শখ লোকে জানবে আমি অন্তর্মুখী টাইপস। মনুষ্যসংসর্গ এড়িয়ে চলি। অফিস থেকে ফিরে গম্ভীর মুখে যখন প্রবন্ধসংকলন খুলে বসি, আশেপাশের লোকজন ফিসফিস করে কথা বলে আর টিপটিপ পায়ে হাঁটে। অর্চিষ্মান বলল, দেখো তো চিনতে পারো নাকি জায়গাগুলো। আইকনিক জায়গা চেনার প্রসঙ্গ আসছে কোত্থেকে যদি জানতে চান, আসছে কারণ ছবিগুলো তোলা হয়েছে লকডাউনে। আর এটা অস্বীকার করার কোনও জায়গাই নেই যে ভারতবর্ষের যাবতীয় ভাস্কর্য, স্থাপত্য, মন্দিরমসজিদ, ভাটুরার থেকে একশো গুণ বেশি আইকনিক হচ্ছে ঠাসাঠাসি গাদাগাদি ভিড়। এ রকম আমার সঙ্গে তো হামেশা ঘটে। খাঁ খাঁ মাঠের ছবি দেখে ভাব

রোল মডেল

Image
কে কার গল্প বলার অধিকারী সেটা একটা ভেবে দেখার মতো প্রশ্ন। এবং বেশিরভাগ ভাবনা-উসকানো প্রশ্নের মতোই এ প্রশ্নের এককথার উত্তর নেই। একটা বিরাট রেঞ্জ আছে, নর্থ পোল টু সাউথ পোল। ওই পোলে যিনি বসে আছেন তিনি বলবেন, যার যার নিজের গল্প বলেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত। একজনের শুধু সেই বাস্তবকেই গল্প করে বলারই অধিকার আছে যে বাস্তবের মধ্য দিয়ে সে নিজে গেছে। অন্যের বাস্তব নিয়ে গল্প ফাঁদতে যাওয়া পরের ধনে পোদ্দারি করতে যাওয়া ছাড়া আর কিছু না। এই পোলের লোক অমনি লাফিয়ে পড়ে বলবেন, যাব্বাবা, এ যুক্তিতে তো রবীন্দ্রনাথের পোস্টমাস্টার লেখা উচিত হয়নি, দৈর্ঘ্য প্রস্থ কোনওদিক থেকেই তো ভদ্রলোকের সঙ্গে বালিকা রতনের কোনও মিল পাওয়া যায় না। আর শরৎচন্দ্রের মহেশ-এর জীবনচরিত লেখা নিয়েও তাহলে প্রতিবাদ করতে হয়। এগুলো যদি ছাড় দেওয়া যায়, ত্রৈলোক্যনাথের লুল্লুভূতের গল্প? সে তো সব অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনের তুঙ্গ অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন। এ যুক্তিতে তো স্রেফ আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা ছাড়া সাহিত্যে আর কোনও রকমের ঘরানাই থাকা উচিত না। বলা বাহুল্য, এর উত্তরে নেহাৎ ত্যাঁদড় না হলে কেউ বলে না, উচিত তো না-ই। বলে, আহা তা বলা হচ্ছে না। বলতে চাওয়া হচ