Posts

Showing posts with the label সিনেমা

তালমার রোমিও জুলিয়েট , অল উই ইম্যাজিন অ্যাজ লাইট

*স্পয়লার আছে। স্পয়লার ছাড়া কিছু নেই।* পুজো পার করে দিল্লির হলে টেক্কা এসেছিল, বহুরূপীও। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজও এসেছিল। কাটছি কিন্তু। হুমকি বললে হুমকি, মত নেওয়া বললে মত নেওয়া। টিকিট কাটা হল, দুটো সিনেমাই দেখা হল। সে সব নিয়ে কিছু না বলাই ভালো। তার থেকে তালমার রোমিও জুলিয়েট নিয়ে বলা বেটার। বাংলার গ্রামীণ সেট আপে রোমিও জুলিয়েটের পুনর্কল্পনা ও নির্মাণ। আমার ভালো লেগেছে। আমি মন্দার দেখিনি। অর্চিষ্মান মন্দার দেখেছে। অর্চিষ্মান বলেছে তালমার মন্দারের থেকে বেটার। আর কিছু বুঝি না তাই গল্প নিয়েই বলতে হবে। গল্প আর অভিনয়টভিনয়। অভিনয়ও বুঝি না। জীবনে করিনি। অর্চিষ্মানকে জিজ্ঞাসা করতে গেলাম ও অভিনয় বোঝে কি না। ইফ ইয়েস, ভালো অভিনয় বলতে ও কী বোঝে। আজকাল আমাদের টাইমপাসের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে অভিধান তৈরি করা। বা দুজনের অভিধান মিলিয়ে নেওয়া। ছোটবেলায় ধারণা ছিল যে ভাষা ধ্রুব। টাকার মতো। কাবলিদার তিরিশ টাকা যা আমার তিরিশ টাকা এক্স্যাক্টলি তা না হলে বিকেলের ঝালমুড়ির সিসটেম ধসে যাবে। তেমনি 'না মানে না', 'হ্যাঁ মানে হ্যাঁ' না হলে মানবসভ্যতা দাঁড়াবে না। কিন্তু ঝালমুড়ি এক বেলার‍, সংসার চব্...

চালচিত্র এখন

হ্যাবিটাট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অর্চিষ্মান কয়েকটা সিনেমা দেখেছে; তাদের মধ্যে একটা তিন্নির সম্পাদনা করা অসমিয়া সিনেমা। সিনেমার উদ্দেশ্য: উত্তরপূর্ব ভারতে সমাজব্যবস্থার "মাতৃতান্ত্রিকতা" নিয়ে আমাদের মনে যে ওয়ার্ম ফাজি ফিলিংটা আছে সেটা ধ্বসিয়ে দেওয়া। সিনেমাটা ভালো লেগেছে অর্চিষ্মানের। সিনেমার থেকেও ইন্টারেস্টিং লেগেছে সিনেমার পর পরিচালকের সঙ্গে কথোপকথন। পরিচালক নাকি বলেছিলেন যে সিনেমা যে গ্রামে শুট হয়েছে সে গ্রামে পরিচালকের চেনা এক মহিলা মিলিটারি দ্বারা গণধর্ষিত হয়েছিলেন। ধর্ষণের পর তিনি গর্ভবতী হন এবং গর্ভপাত করানোর সিদ্ধান্ত নেন। ক্লিনিকের পথে মহিলার বোন ভগবানের দান ইত্যাদি বলে মহিলাকে সন্তানটি রাখতে রাজি করান। ছেলে হয়। ওই তল্লাটের মানুষদের সম্পূর্ণ বেমানান চেহারায়। ছেলেটি বুলি হতে শুরু করে। স্কুলে, পাড়ায়, সমাজে। সমাজ থেকে বাতিল হতে হতে অবশেষে সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। অর্চিষ্মানের নাকি পরিচালককে বলতে ইচ্ছে করছিল, এই গল্পটা কেন বললেন না আপনি? তাহলে কি ইমপ্যাক্টটা আরও বেশি হত না? অফ কোর্স, পরিচালক কোন গল্প বলবেন না বলবেন সেটা সম্পূর্ণ তাঁর সিদ্ধান...

অতি উত্তম

গুড ফ্রাইডের উইকেন্ডে তো আমরা কসোল চলে গেলাম। অতি উত্তম দেখার প্ল্যান কাটিয়ে। সোমবার সকালে ফিরলাম। আশায় ছিলাম অর্চিষ্মান ভুলে গেছে। ভোলেনি। সোমবার চুপ করে ছিল মঙ্গলবারে ঠিক টিকিট কেটে ফেলেছে। নেহরু প্লেসে চলছে কুন্তলা। না দেখলে পরে যদি হইচইতে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার না হয় কেঁদে কূল পাবে না। কাজেই অতি উত্তম দেখা হল। অবান্তরে এ বিষয়ে কিছু লিখব না ভেবেছিলাম। এবার লোকে ভাববে নির্ঘাত পারসোন্যাল রাগ কিছু আছে। দেখিসই বা কেন নিন্দেই বা করিস কেন? কিন্তু না করলে ইমিডিয়েটলি আরেকটা ভ্রমণকাহিনীতে ঝাঁপাতে হয়। একটা বই নিয়েও লিখব লিখব ভাবছি কিন্তু তাতে খাটনি আছে। তাই ফাঁক ভরাতে নিন্দেমন্দ রইল। সৃজিত মুখার্জির প্রশংসা বন্ধুদের মুখে তিনটে শুনেছি। এক, ভ্যারাইটি। ফিল্ম স্টার, নেতাজী, ফ্লোরা অ্যান্ড ফনা, স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্মৃতিভ্রংশ, জন্মান্তর, ফেলুদা, ব্যোমকেশ, কাকাবাবু। ইয়ার্কির মতো শোনাচ্ছে কিন্তু ইয়ার্কি করছি না। সত্যিই এক চিক্কুর পাড়েন না ভদ্রলোক। দুই, গান। কোন গান জনগণ ধরবে সেটা বোঝার কান ওঁর তৈরি। গত দশ বছরে বাংলা ভাষার অধিকাংশ মনে রাখা গান ওঁর সিনেমা থেকেই বেরিয়েছে। তার ক্রেডিট যেমন সংগীত পরিচালকদে...

দশম অবতার ও রক্তবীজ

*স্পয়লার আছে। স্পয়লার ছাড়া কিছু নেই।* দশম অবতার শহরে সিরিয়াল কিলিং হচ্ছে। সিরিয়াল কিলার যীশু। যীশুকে ধরতে নেমেছেন বড় পুলিস প্রসেনজিৎ, বাংলাসিনেমার আইকনিক থ্রিলারের আইকনিক অ্যান্টিহিরো প্রবীর রায়চৌধুরী। সঙ্গে নিয়েছেন মেজ পুলিস অনির্বাণকে, যিনি বাংলাসিনেমার অতটাও আইকনিক নয় থ্রিলারের ততটাও আইকনিক নন দারোগা বিজয় পোদ্দার। যিনি ভিঞ্চিদা-র কেসে ভিঞ্চিদাকে ধরতে অক্ষম হলেও সত্যিটা ফিগার আউট করে ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন। সকলেই দেখতে পাচ্ছে যীশু খুনগুলো করছেন, কাজেই হু নিয়ে কোনও ডাউট নেই। হাউ-ও ক্লিয়ার। কয়েকটা খুন রিয়েলটাইমে দেখানো হয়েছে। হোয়াই-ও না বোঝার কিছু নেই। সমাজের ময়লা পরিষ্কার হচ্ছে। মাঝে মাঝে সাদাকালোতে এক ভদ্রলোক একটি বাচ্চাকে দশাবতারের গল্প শোনাচ্ছেন, বাচ্চাটির মুখের সঙ্গে যীশুর মুখের মিল আছে, কাজেই খুনের আন্ডারলায়িং দশাবতারের অ্যাংগলটাও দর্শক ধরে ফেলেছেন। দর্শক ধরে ফেলবেন আর প্রসেনজিৎ পারবেন না তা তো আর হয় না। বাইশে শ্রাবণে বাংলা কবিতায় প্রসেনজিতের বুৎপত্তি দেখে বাঙালি টলে গিয়েছিল, দশম অবতারে হিন্দু পুরাণ নিয়ে এক্সপার্টাইজে হিলে যাবে। স্পটে পড়ে থাকা পুঁতির মালা, খুনের অস্ত্...

#ফেলুদাব্যোমকেশেরপাশথেকেসরেদাঁড়ান

Image
সিরিজখানা খুন হয়ে গেছে কাস্টিং টেবিলে। পরমব্রতকে দেখে মনে হচ্ছে খোকাকে বুড়ো সাজতে বলা হয়েছে। ঋতব্রতকে দেখে মনে হচ্ছে বুড়োকে খোকা সাজতে বলা হয়েছে। রুদ্রনীলকে কী সাজতে বলা হয়েছে আমি শিওর নই। বুড়িয়ে গেলাম বুড়িয়ে গেলাম কঁকিয়ে মরি, চেহারায় বয়সের ছাপ না পড়লে কী ভয়ানক কাণ্ড হয় তার কশনারি টেল পরমব্রত। উনি যে চরিত্রেই অভিনয় করুন না কেন আসলে যাদবপুর ইংলিশ-এর চরিত্রে অভিনয় করেন বলে এতদিন বেঁকা হাসতাম, সাবাস ফেলুদা-র পর থেকে হাসছি না। সত্যি, স্বধর্ম ত্যাগ ইজ নেভার আ গুড আইডিয়া। এই সিরিজে উনি যাদবপুর ইংরিজির বদলে ফেলুদা সাজতে গেছেন। এমন একজন মানুষ যার ছাত্রদশা ঘুচে প্রাপ্তবয়স শুরু হয়েছে। সেটা করতে গিয়ে মুখের যাবতীয় পেশিকে জমিয়ে ফেলতে হয়েছে, যাতে ভুলক্রমেও তারা কোনওরকম অপ্রাপ্তবয়স্ক বাচালতা প্রকাশ না করে ফেলে। গলার আওয়াজ মন্দ্রসপ্তকে বেঁধে ফেলতে হয়েছে, পাছে তা শিশুসুলভ উচ্ছ্বাসে ভেসে যায়। চোখে কষে সুর্মা মাখাতে হয়েছে, সম্ভবতঃ দৃষ্টিকে অন্তর্ভেদী করে তোলার দুরাশায়। ঋতব্রতর চুলে অত জেল মাখিয়ে প্রায় সুনামির ঢেউয়ের হাইটের টেরি বাগানোটাও কৌতূহলোদ্দীপক। আমি মান্ধাতার আমলের হতে পারি, কিন্তু এই আমলের ...

বল্লভপুরের রূপকথা ও হত্যাপুরী

বল্লভপুরের রূপকথা শুরুতেই অপ্রিয় সত্যিটা ক্লিয়ার করে দেওয়া ভালো। বল্লভপুরের রূপকথা আমার সুবিধের লাগেনি। অনেকেরই লেগেছে। সুন্দর দেখতে লোকজন সুন্দর জামাকাপড় পরে বড় পর্দায় ঘুরছে ফিরছে নাচছে গাইছে, অসুবিধে লাগবেই বা কেন। মা না হয় বাড়াবাড়ি অল্পে সন্তুষ্ট ছিলেন, মায়ের থেকে যদি আরেকটু কড়াও হই আর সুন্দরের বাড়তি অন্য কিছু খুঁজি তাতেও সুবিধের উপাদান কম পড়বে না। যেমন ধরা যাক, ভালো অভিনয়। আমার মতে মনোহর বেস্ট। শ্যামল চক্রবর্তী নাটকের ভেটেরান, তিনি আমার সার্টিফিকেটের জন্য বসে নেই, তবু দিলাম। রাজকুমারের বন্ধুও চমৎকার। রাজকুমারীর বাবা মা, রাজকুমার ভালো, রাজকুমারীও খারাপ কী? মঞ্চসজ্জা সুন্দর। রাজবাড়ির ভাঙাচোরা জায়গাগুলো ভাঙাচোরাই মনে হচ্ছে, আলোকসম্পাতটম্পাতও কত ভালো যদি নাও বুঝি খারাপ হলে ধরতে পারতাম নিশ্চয়। হইচই-এর সিরিয়ালগুলোয় মধ্যবিত্তর প্রকাণ্ড হলঘরের তিন কোণে তিনটে পেপারফ্রাই-এর ঘোমটাপরা এথনিক ল্যাম্পপোস্টের আলোর অখাদ্যতা  যেমন পারি। রাতের মাঠের ছমছম, সকালবেলার স্পষ্ট সূর্যালোক সব যেমন চাই। বল্লভপুরের মুদিদোকানের মালিক থেকে কোটপ্যান্ট আঁটা নব্য ক্যাপিটালিস্ট - সবার মানানসই সাজপোশাক।...

দোস্তজী

নেহরু প্লেসে শনিরবি বিকেলের শো-তে চলছিল 'দোস্তজী'। খ্যাতি কানে এসেছিল, গেলাম। হল থেকে বেরিয়ে দোসার দোকান পর্যন্ত হেঁটে এসে, খেতে খেতে ভাবলাম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেসুরো চিৎকারের মাঝে আচমকা একটা সুরেলা গান শুনতে পাওয়ার স্বর্গানুভূতি কি গানটার গুণ নাকি চিৎকারগুলোর দোষ? 'দোস্তজী' দেখার ভালোলাগাটা কি 'দোস্তজী'-র কৃতিত্ব? নাকি অন্য ভাষার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এই রকমের সিনেমা হরেদরে? যা আমাদের বসে-দেখা-যায়-না, পাতে-দেওয়া-যায়-না র পাঁকে পঙ্কজ প্রতিভাত হচ্ছে?  বাবরি মসজিদ ভাঙার ছ’মাস কেটেছে। মুর্শিদাবাদের গ্রামে টেনশন বুড়বুড়ি কাটছে। একটি মসজিদের খুনের বদলা আরেকটি মসজিদের জন্ম। আরেকটি মসজিদের জন্মের বদলা কলকাতা থেকে দল এনে রামরাবণের যাত্রাপালা। এর মধ্যে ক্লাস থ্রি-তে পড়া দুটি বালক, শফিকুল আর পলাশ, ঘুড়ি ওড়ানো নিয়ে, বচ্চনের কায়দায় দাঁড়ানো নিয়ে, টকটকি বাজানো নিয়ে মশগুল। 'দোস্তজী' ধীর। এবং একটুও বোরিং না। আপাতদৃষ্টিতে ব্যাপারদুটো ইনকমপ্যাটিবল, কিন্তু আসলে নয়। একজন বিখ্যাত লেখক টিপস অ্যান্ড ট্রিকস দিতে গিয়ে বলেছিলেন গল্পের যে জায়গাটা বোরিং লাগছে সেই জায়গাটা স্পিড...

হাঙ্গামা হ্যায় কিউঁ

একেকটা গান দড়াম করে মাথায় এসে যায়। এই গানটা অবশ্য দড়াম করে আসেনি। একটা প্রম্পট ছিল। এলই যখন, নস্ট্যালজিয়ার খাতিরে গানটা খুঁজতে গেলাম ইউটিউবে। গিয়ে দেখি হইহই ভিউজ। যা ভেবেছি তাই, প্রথম অন্তত একশোটা কমেন্ট বলছে তারা সেম প্রম্পট শুনে এই ভিডিওয় এসে হাজির হয়েছে। কেউ কেউ আবার মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করছে যে গানটার অস্তিত্ব তারা আগে জানত না, ওই প্রম্পটটি জানার আগে। তাদের জাজ করে গানটা শুনলাম। প্রম্পট নিয়ে রহস্য করার দরকার নেই। নেটফ্লিক্সের অধুনা সম্প্রচারিত বহুচর্চিত চার গল্পের সিরিজ ‘রে’। ওরই একটা গল্পের নাম এই গানটির নামে। রে সম্পর্কে মতামত জানতে চেয়েছিলেন সুগত। বেশি কিছু নেই। বোধহয় দুটো অ্যাডাপ্টেশন দেখেছি,  একটাও না দেখার ইচ্ছে ছিল। এমনকি ট্রেলর দেখতেও আমি উৎসাহিত বোধ করিনি বিশেষ। তারপর আড়মোড়া ভেঙে দেখলাম ফরগেট মি নট, যেটা ওই বিপিন চৌধুরীর স্মৃতিভ্রম নিয়ে আর  হাঙ্গামা হ্যায় কিউঁ, যেটার সূত্র বারীন ভৌমিকের ব্যারাম।  দেখব না ভেবেছিলাম কারণ জানতাম হতাশ হব। আমার আবার অন্ধ হয়ে প্রলয় বন্ধ রাখার দুরাশাপোষণের ব্যামো আছে। না দেখেই কী করে জানলাম হতাশ হব জিজ্ঞাসা করলে, জবাব দেব যেমন...