Posts

Showing posts from December, 2014

লখনৌ/ পর্ব ১

Image
‘গাট ফিলিং’ ব্যাপারটা বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে খুব কাজে দেয় দেখেছি। অন্তত আমার দেয় । লক্ষ লক্ষ বছর আগে আমি আর অর্চিষ্মান একবার ঘন্টা তিরিশেকের জন্য ম্যাকলিওডগঞ্জ বেড়াতে গিয়েছিলাম। হোটেল বুক করা ছিল, আবহাওয়ার পূর্বাভাস আশানুরূপ ছিল, বাসট্রেন সব টাইমে ছিল। শুধু আমার মনটাই ছিল কেমনকেমন। মোচড় দিতে গিয়ে তানপুরাটার কান হয় একচুল বেশি ঘুরে যাচ্ছিল নয় কম। বন্দিশ ঘুরে ফিরে সমে পড়ছিল ঠিকই, কিন্তু মাথা দুলে উঠছিল না। বাসের জানালা থেকে দূর পাহাড়ের মাথায় ম্যাকলিওডগঞ্জের ছায়া দেখা যেতে না যেতে আবহাওয়া অফিসকে কাঁচকলা দেখিয়ে অঝোর বৃষ্টি নামল, নামী হোটেলের দামি গিজার বিগড়ে গেল, জানালা দিয়ে বাইরের মেঘলা টিপটিপে পিছল কনকনে দুপুরের দিকে তাকিয়ে থেকে থেকে বিরক্ত হয়ে আমরা ঘুমোতে চলে গেলাম। ঘুম যখন ভাঙল তখন সবথেকে লম্বা পাইন গাছটার মাথা থেকেও রোদ্দুর হাওয়া, খাদের নিচ থেকে কুয়াশা পাকিয়ে পাকিয়ে উঠতে শুরু করেছে। শুধু বৃষ্টিটাই রয়েছে আগের মতো, চলছে সেই ঢিমে তেতালায়। চা দিতে এসে ভাইসাব জানালেন, “আরে সাব, কেয়া বাত কর রহে হো, ধূপ নিকলা তো থা! পুরে দো ঘণ্টে কে লিয়ে। বঢিয়া ধূপ। ওয়ান টু থ্রি-কা সাবমেমসাব খুব ঘু

শুভ বড়দিন

Image
খুব করে কেক খান, মাংকিটুপি পরুন, চিড়িয়াখানা ঘুরতে যান। আপনাদের সবার বড়দিন খুব আনন্দে কাটুক, এই শুভেচ্ছা রইল।

রয়েছি বাঙালি হয়ে

নিজেকে যতই কসমোপলিট্যান হিসেবে চালাতে চাই না কেন, সত্যিটা হচ্ছে আমার মধ্যে বাঙালিভাব প্রবল। যত দিন যাচ্ছে তত সেটা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই ভাবের কাছে নতিস্বীকার করে নিচের তালিকা বানালাম। তালিকা যথেষ্ট বাঙালি হল কি না সে বিচারের ভার আপনাদের ওপর।     *****  ১। সারাদিনের চায়ের গুনতিঃ আট থেকে দশ কাপ। প্রথম কাপ দুধ সহ। বাকিগুলো দুধচিনি ছাড়া। ২। চায়ের সঙ্গে প্রিয় টাঃ মারি বিস্কুট। ব্রিটানিয়া মারি। প্রিয়া/পার্লে/বিস্কফার্ম নয়। ৩। মারি না মেরি? মারি। ৪। চায়ে ডুবোনো না শুকনোঃ লোকসমক্ষে শুকনো, একলা ঘরে ডুবিয়ে। ৫। প্রিয় আওয়াজঃ নিজের গলার স্বর। ৬। প্রিয় ঋতুঃ বর্ষা ৭। প্রিয় ব্যস্ততাঃ বই পড়া ৮। প্রিয় অবসরঃ দিবাস্বপ্ন। ঘুম। ৯। প্রিয় খেলাঃ পরনিন্দা পরচর্চা ১০। সুপ্ত দেমাকঃ হায়দরাবাদি, আওয়াধি, লখনওয়ি – বিরিয়ানি যদি খেতেই হয় তবে কলকাতা বিরিয়ানি ছাড়া আর কিছু খাওয়ার মানে হয় না। মাংস আর ভাতটা তো কথা নয়, কথাটা হচ্ছে আলু আর গোটা ডিমসেদ্ধ। ১১। গুপ্ত ঈর্ষাঃ কলচর যে দরজায় মাথা খুঁড়ে মরে, কাঞ্চনমূল্য হাসতে হাসতে তা পার করে চলে যায়। ১২। প্রিয় শব্দঃ রুচি ১৩। অ

রোজ ক্যাফে

Image
আমাদের পছন্দের বেশিরভাগ খাওয়ার জায়গারই সন্ধান আমরা পাই লোকমুখে। সে রাস্তাটাই নিরাপদ মনে হয়। যে সব বন্ধুর সঙ্গে বইয়ের পছন্দ, সিনেমার পছন্দ, ধ্যানধারণা ন্যায়নীতির পছন্দ মেলে তাদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়ার পছন্দও মিলবে, এই ভরসাতেই আমরা চলি এবং তার পুরস্কারও পাই হাতেনাতে। রবিবার সে নিয়ম ভাঙতে হল। মোটামুটি দীর্ঘ প্রবাস সেরে অর্চিষ্মান বাড়ি ফেরার পর ‘কিছু একটা করা’, ‘কোথাও একটা খাওয়া’র ইচ্ছে আমাদের এমন প্রবল হয়ে উঠল যে হাতের কাছে উল্লেখযোগ্য রেকমেন্ডেশন না থাকায় আমরা ইন্টারনেটের দ্বারস্থ হলাম। স্ক্রিন থেকে লাফ মেরে চোখে বিঁধে গেল রোজ ক্যাফে -র নাম। দিল্লির হট অ্যান্ড হ্যাপেনিং ফুড সিনের ‘হিডেন জেম’। যা থাকে কপালে বলে সি আর পার্কের মোড়ের কাছে একখানা চলন্ত অটো থামিয়ে উঠে পড়লাম। যাচ্ছি তো যাচ্ছিই, যাচ্ছি তো যাচ্ছিই। দিল্লির চেহারা বদলাচ্ছে, রাস্তাঘাটের চেহারা বদলাচ্ছে, দোকানপাটের নাম বদলাচ্ছে। অনেকক্ষণ যাওয়ার পর সাকেত মেট্রো স্টেশন পেরিয়ে আড়াইশো মিটার মতো এগিয়ে গিয়ে বাঁদিকে মুড়েই একটা খাঁ খাঁ রাস্তা এসে পড়ল। এই রাস্তার ওপরেই থাকার কথা ‘হিডেন জেম’ রোজ ক্যাফের। হাতে কথা-বলা ম্যাপ ব