দিল্লি পার্সি অঞ্জুমানঃ মিসেস বাগলির কিচেন
আমার আসন্ন জন্মদিনে
অর্চিষ্মান বাড়ি থাকবে না তাই আমরা অলরেডি জন্মদিন উদযাপন শুরু করে দিয়েছি। উদযাপন
বলাটা অবশ্য বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। শহরে থেকে আনন্দ করার বিকল্প মাত্র তিনটে। হয়
খাও, নয় সিনেমা দেখো, নয় বই কেনো। সে রকম সব প্ল্যান ছকাও হয়ে গিয়েছিল। শনিবার
রাতে ইংরিজি সিনেমা ও জাপানি নৈশাহার, রবিবার দুপুরে পার্সি মধ্যাহ্নভোজন সেরে
বইয়ের দোকান গমন।
শনিবার সন্ধ্যে যখন নামল, বাইরে বাতাসের তাপমাত্রা দ্রুত পড়ল, ঘড়ির ঘুরন্ত কাঁটা আমাদের দিকে চোখ পাকিয়ে হুমকি দিল, “এই বেলা ঢিলেঢালা পায়জামা ছেড়ে আঁটোসাঁটো জিনস পরো, শালের আরাম ছেড়ে সোয়েটারে মাথা গলাও” তখন আমাদের দুজনেরই কান্না পেয়ে গেল। প্ল্যান বি ছকা হল চটপট। জাপানি ডাইন আউটের বদলে ইতালিয়ান হোম ডেলিভারি আর সিনেমার বদলে ইউটিউবে জিভস অ্যান্ড উস্টার।
দারুণ কাটল সন্ধ্যে। জোর
ফাঁড়া কাটানো গেছে বলে নিজেরাই নিজেদের হাই ফাইভ দিলাম। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে এও
প্রমিস করলাম যে কাল কোনওরকম কুঁড়েমিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না, কাল পার্সি খাবার
খাওয়া হচ্ছেই হচ্ছে।
কারণ, খালি জন্মদিন
উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে নয়, নিজের গুরুত্বেই পার্সি খানা গুরুত্বপূর্ণ। অর্চিষ্মান
পার্সি খাবার আগে খেয়েছে, আমি খাইনি। সেই শুনে থেকে আমাকে পার্সি খাবারের
স্বাদগ্রহণ করানোর জন্য হন্যে হয়ে অর্চিষ্মান পার্সি দোকান খুঁজছিল দিল্লিতে। ‘সোডাবটলওপেনারওয়ালা’
নামের একখানা রেস্টোর্যান্ট পাওয়াও গিয়েছিল। খান মার্কেটে সেটার শাখা খুলেছে শুনে
একদিন অফিসফেরতা আমরা সেটায় গিয়েওছিলাম। গিয়ে মসালা পেপসি, বেরি পোলাও আর তরেলি মচ্ছি
খেয়ে আমার দিল এমন তর্র্র্ হয়ে গেল যে ঠিক করলাম এখানে একবার নয়, বারবার আসতে
হবে।
মুশকিল হচ্ছে
সোডাবটলওপেনারওয়ালা বেশ মহার্ঘ দোকান, বারবার সেখানে খেতে যাওয়া ব্যাংক ব্যালেন্সের
স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। কী করা যায় কী করা যায় বসে বসে ভাবছি এমন সময় অর্চিষ্মান
বলল, “দাঁড়াও দাঁড়াও, আমার কেমন যেন আবছা আবছা মনে পড়ছে আমি আরেক জায়গায় পার্সি খেয়েছিলাম।
এই দিল্লিতেই। যখন খেয়েছিলাম তখন আমার পক্ষে দামি দোকানে যাওয়া প্রায় চাঁদে যাওয়ার
মতোই অসম্ভব ছিল, কাজেই . . .”
আমি বললাম, “ভাবো ভাবো,
শিগগিরি ভাবো . . .”
অর্চিষ্মান মাথা টিপে ধরে
বলল, “কী যেন নাম, খুব অন্যরকম, সুন্দর একটা নাম . . .”
আমি বললাম, “নওরোজি?
রুস্তমজি? জরিওয়ালা? কনট্রাকটর? এনজিনিয়ার? উমরিগড়? মোদি? মিস্ত্রি?”
অর্চিষ্মান আর্কিমিডিসের
মতো লাফ দিয়ে বলল, “অঞ্জুমান! অঞ্জুমান! পার্সি অঞ্জুমান!”
‘দিল্লি পার্সি অঞ্জুমান
(ডি পি এ)’ হল দিল্লির পার্সি সম্প্রদায়ের সংগঠন। দিল্লির পার্সি সম্প্রদায়ের আয়তন
ক্ষীণ হতে পারে, ইতিহাস অতি দীর্ঘ। উত্তর ভারতে পার্সিরা এসেছিলেন সম্রাট আকবরের
সময়। উনিশশো পঁচিশ সালে যখন ডি পি এ প্রতিষ্ঠা
হয় তখন দিল্লিতে পার্সিসংখ্যা ছিল পঁচিশ। দু’হাজার চোদ্দোয় সেটা এসে দাঁড়িয়েছে
সাড়ে সাতশোয়।
ডি পি এ দিল্লিতে একটি
পার্সি ধর্মশালা চালায়, জোরোঅ্যাস্ট্রিয়ান ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত পাঠাগার
পরিচালনা করে, তাছাড়াও উত্তরভারতের একমাত্র আগুন-মন্দির Kaikhusuru Palonji Katrak Dar-e-Meher-এর মালিকানাও ডি পি এ-র হাতে। দিল্লি পার্সি অঞ্জুমানের
কম্পাউন্ডে ঢুকেই দেখতে পেলাম মন্দিরের লালচে, পাথুরে, কাঠামোর ওপর জ্বলন্ত আগুনের
শিখার আদলের ধপধপে সাদা রঙের চুড়ো।
বুঝতেই পারছেন, পার্সি না
হলে বা জোরোঅ্যাস্ট্রিয়ান ধর্ম, ইতিহাস, সংস্কৃতিতে বাড়াবাড়ি রকম উৎসাহ
না থাকলে কারও পক্ষে ‘দিল্লি পার্সি অঞ্জুমান’-এর নাম জানার সম্ভাবনাই যথেষ্ট কম,
আর তার থেকেও সম্ভাবনা কম হচ্ছে রবিবার ভরদুপুরে ক্যামেরা কাঁধে সেখানে গিয়ে উদয়
হওয়ার। ডি পি এ-র দারোয়ানজি যে সে কথা জানেন সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল যখন তিনি আমাদের
দেখে এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলেন,
“বুকিং হ্যায়?”
বুঝলাম কালোকোলো
রং, এবড়োখেবড়ো স্কিন আর খাঁদাবোঁচা নাক দেখেই দারোয়ানজি বুঝে ফেলেছেন আমাদের চোদ্দ চোদ্দ আঠাশ
পুরুষের গায়ে পারস্য দেশের হাওয়া লাগেনি কোনওদিন। সে বুঝুন গে, আমার
তাতে দুঃখ নেই। চেহারা নিয়ে আমার আর কোনও কমপ্লেক্স নেই। ছোটবেলায় বেশ
বাড়াবাড়ি রকম ছিল। ক্লাস সেভেনে পড়াকালীন এক সহপাঠী যখন, “আর কেউ হলে বলতাম না,
তুই বলেই বিশ্বাস করে বলছি কুন্তলা – উন্নতনাসা লোকেরা কোয়ালিটেটিভলি বেটার হয়, চাইলে
তুই মিলিয়ে নিতে পারিস’ বলে নিজের উন্নত নাসাটিকে সগর্বে উঁচিয়েছিল, আমি খুবই
বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম। তারপর ক্রমে পরিষ্কার হয়ে গেল যে আমার দ্বারা উন্নত কিছু হবে
না, বড়জোর একখানা দশটা-পাঁচটা চাকরি। সে জন্য উন্নতনাসা আর প্রশস্ত ললাট না হলেও দিব্যি চলে যাবে। হাতের কাছে নিজের
মাবাবা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। ভোঁতা নাক নিয়ে দুশ্চিন্তা জন্মের
মতো ঘুচে গেল।
যেটা দেখে আমার একটু একটু
দুঃখ হল সেটা হচ্ছে যে আমাদের দেখেই দারোয়ানজি ধরে ফেললেন যে আমরা কেউই ইনটেলেকচুয়াল
নই। আমরা হচ্ছি আহার নিদ্রা মৈথুন ইত্যাদি ইন্দ্রিয়সম্ভোগের ফেরে দিন কাটানো নিতান্ত নশ্বর মানুষ। শতাব্দীপ্রাচীন জোরোঅ্যাস্ট্রিয়্যান ধর্ম, সংস্কৃতি, ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের
কৌতূহল জিরো।
আর তাই তিনি ভ্যানতাড়া না
করে সোজা জিজ্ঞাসা করলেন, “খানে কা বুকিং হ্যায় আপলোগোকা?”
“হ্যায়” বলাতে দারওয়ানজি
আমাদের অফিসঘরে নিয়ে গেলে, আবছা আলোঅন্ধকারে আমাদের দেখা হল সেই মানুষটির সঙ্গে
যিনি দিল্লি পার্সি অঞ্জুমানের সবথেকে জনপ্রিয় অংশটির তত্ত্বাবধায়ক।
মিসেস বাগলি।
পার্সি অঞ্জুমানের
গেস্টহাঊসের মেসে খেতে যেতে চাইলে মিসেস বাগলির মুখোমুখি আপনাকে পড়তেই হবে। একদিন
আগে ফোন করে মিসেস বাগলির কাছে নামধাম ফোন নম্বর খাইয়ের সংখ্যা ইত্যাদি জমা রাখতে
হবে। আমরাও রেখেছিলাম। ফোনে মিসেস বাগলির ব্যক্তিত্বসম্পূর্ণ গলা শুনেই সম্ভ্রম
জেগেছিল, এখন চেহারাটা দেখে মনের সে ভাব বাড়ল বই কমল না। পার্সি দিদিমাদের
সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না প্রায় কিন্তু হলে যে তাঁরা অবিকল মিসেস বাগলির মতোই
হবেন নির্ঘাত। গোলগাল ছোটখাটো চেহারা, পারসি কায়দায় পরা ধূসরনীল শাড়ি,
কুঁচি দেওয়া আঁচল বাঁ কাঁধের বাহারি রুপোলী ব্রোচ দিয়ে আটকানো। মিসেস বাগলির
অফিসঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে আমার মনে বহুযুগ আগের একটা অনুভূতি হল। চিত্রাদিদিভাইয়ের
(আমাদের হেডমিস্ট্রেস) ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমি আর একটা মস্ত টেবিলের ওপার থেকে
দিদিভাই আমার দিকে চোখ তুলে তাকিয়েছেন। কিছুই বলেননি, হয়তো একটু পরেই তাঁর মুখে
হাসি ফুটে উঠবে, বলবেন “ও কুন্তলা, হ্যাঁ তোমাকে খুঁজছিলাম, ভেতরে এস” অথচ ওই
মাঝখানের নীরবতাটুকুতেই আমার হাঁটুটাটু কেঁপে একশা।
মিসেস বাগলি আমাদের
নামঠিকানা মিলিয়ে দেখে সন্তুষ্ট হলেন। আমরা দারওয়ানজির পিছু পিছু গিয়ে মেসে ঢুকে
পড়লাম। আর অমনি আমাদের চারপাশ থেকে দিল্লি উবে গিয়ে একটা অন্য জগৎ উদয় হল।
প্রথমেই চোখে পড়ল দরজার
সামনের বড় টেবিলটা জুড়ে বসে আছে একটা বিরাট দল। নারীপুরুষ, জোয়ানবুড়ো মেশানো। সকলেরই মাথার চুল থেকে পায়ের জুতো পর্যন্ত
টিপটপ, সকলেরই গায়ের রং ফেটে পড়ছে, সকলের নাকই দরকারের থেকে সামান্য বেশি লম্বা।
সকলকে দেখেই বেশ বোঝা যায় শিক্ষাদীক্ষা আর টাকাপয়সা, দুটোর কোনওটাই কেউ নতুন
দেখছেন না। আর এটাও সন্দেহ হয় যে ভয়ানক রেগে গেলেও এঁদের গলা একটা নির্দিষ্ট
ডেসিবল ছাড়াবে না।
আমাদের দিকে ঘুরে
তাকালেন না তাঁরা কেউই, আগের মতোই নিচু গলায় নিজেদের মধ্যে হাসি, কথা চালিয়ে যেতে লাগলেন কিন্তু
সেই মুহূর্তে ক্যান্টিনের দরজায় দাঁড়িয়ে আমাদের যে কেমন ন যযৌ ন তস্থৌ অবস্থা
হয়েছিল বোঝানো শক্ত। শুধু চেহারায় নয়, গোটা ব্যাপারটায় আমি আর অর্চিষ্মান এতটাই
আলটপকা, যে সেটা কেঊ চোখে আঙুল দিয়ে না দেখালেও বুঝতে একটুও অসুবিধে হচ্ছিল না।
একটা ফাঁকা দেখে টেবিলে গুটিগুটি
গিয়ে বসলাম দুজনে। হাতের ডি এস এল আর আস্তে করে টেবিলের নিচে গুঁজে রাখলাম। এই
পরিস্থিতিতে ক্যামেরা খুলে খচাৎ খচাৎ ছবি তোলার কলজে আর যাদেরই থাক, আমাদের নেই। কাজেই এই ছবিহীন পোস্টই রইল আপনাদের জন্য। রাগ করবেন না, প্লিজ।
ঘাড় ঘুরিয়ে চারপাশ
পর্যবেক্ষণ করলাম। হলুদ দেওয়ালওয়ালা একটা বড় ঘর। সিলিং থেকে ঝোলা কেজো
ল্যাম্পশেডের ভেতর ততোধিক কেজো সি এফ এল ল্যাম্প। এদিক ওদিক টেবিল, এক কোণে
স্টিলের ওয়াটার কুলার, দরজার পাশে একটা ছোট টেবিলের ওপর টোস্টার। একটা ছোট সাইজের
প্লাস্টিকের কুলার, যার গা থেকে বেরিয়েছে একটা ছোট্ট কল। কুলারের পাশে কতগুলো
কাঁচের গ্লাস উপুড় করে রাখা। আর রাখা একটা পিচবোর্ডে হাতে লেখা “প্লিজ হেল্প
ইয়োরসেলফ”। তার ওপরেই পার্সি ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটের নোটিস।
ঘরের কোণে একটা নকল
ফায়ারপ্লেস চোখে পড়ল। তাঁর ওপরে সাজানো বেশ অনেকগুলো বাঁধানো ছবি। ছবির পুরুষদের কারও
কারও মাথায় বসানো টুপি, মহিলাদের কারও কারও মাথায় ব্যান্ডানার মতো বাঁধা রুমাল। দরকারের
থেকে সামান্য বেশি লম্বা নাকটা সব ছবিতেই কমন।
একটু একটু করে সব টেবিল
ভরতে শুরু করল। একজনদু’জন করে লোক আসতে শুরু করল যাদেরও চোদ্দো পুরুষের গায়ে কোনওদিন পারস্যের হাওয়া লাগেনি। দেখে আমাদের আত্মবিশ্বাস একটু বাড়ল। সেটা আরও
খানিকটা বাড়ল যখন অর্চিষ্মানের পাশে বসা পার্সি প্রতিবেশী নিজে থেকে আমাদের সঙ্গে
যেচে আলাপ করলেন। বললেন দিল্লিতে অথেনটিক পার্সি খানা খেতে চাইলে ডি পি এ-র এই
মেসে আসা ছাড়া গতি নেই। সোডাবটলওপেনারওয়ালার কথা তুলতে বললেন ওখানকার মেনুতে
নাকি পার্সির থেকে ইরানি প্রভাব বেশি।
এই সব কথোপকথন চলতে চলতেই
খাবারদাবার আসতে শুরু করে দিল।
পার্সি অঞ্জুমানের মেসে
খেতে গেলে আপনার “এই খাব, সেই খাব না” প্যাকনা চলবে না। মেসের দৈনিক মেনু আছে,
আপনি যেদিন যাবেন আপনাকে সেদিনের মেনুই খেতে হবে। মিসেস বাগলি ফোনেই মেনু জানিয়ে
রেখেছিলেন রবিবার দুপুরে ননভেজ লাঞ্চের মেনুত থাকবে রাইস, রোটি, কাচুম্বর, কাবাব,
মাটন ধানশাক, পাতরা মচ্ছি অ্যান্ড কুলফি। খাবার সব নিজে হাতে রান্না করেন মিসেস
বাগলির পুত্রবধূ, মিসেস বাগলি জুনিয়র। টেবিলের পার্সি প্রতিবেশী জানালেন, মিসেস
বাগলি জুনিয়রের নাম বেনিফা (বা বেনিফা-র কাছাকাছি কিছু, আমার শুনতে ভুল হতে
পারে)। মিসেস বেনিফা বাগলি রাঁধেনবাড়েন, টেবিলে টেবিলে এসে খোঁজ নেন সব ঠিক আছে কি
না, কর্তৃত্ব আর মমতার পারফক্ট মিশেল দেওয়া কণ্ঠে বাবুরামকে নির্দেশ দেন।
ডি পি এ-র
ক্যান্টিনে বেনিফা বাগলির পর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ লোক হচ্ছে বাবুরাম। দৈর্ঘ্যের
খামতি বাবুলাল পুষিয়ে দিয়েছে গগনচুম্বী ব্যক্তিত্ব দিয়ে। মুখের একটি পেশিও না
নাড়িয়ে বাবুলাল ঝড়ের বেগে টেবিল পরিষ্কার করে, জল দেয়, খাবার দেয় ও খালি প্লেট
তুলে নিয়ে যায়। যে একটুআধটু কথা বাবুরামের মুখ থেকে বেরোতে শুনলাম ওই এক ঘণ্টায়
সবই সহকর্মীদের (নামেই সহ, কাজে তারা সকলেই বাবুরামের অধস্তন আমি নিশ্চিত) প্রতি টুকরোটাকরা
নির্দেশ। নতুনদের কথা তো ছেড়েই দিলাম, পুরোনো খাইয়েরাও দেখলাম বাবুরামকে সমীহ করে
চলেন।
মিসেস বাগলি জুনিয়র আর
বাবুরামের নিখুঁত তত্ত্বাবধানে একে একে খাবার আসা শুরু হল। বড় স্টিলের পাত্রে চুড়ো
করে এল হলুদ রঙের রাইস, চারপাশে টেনিস বলের সাইজের চারটি কাবাব বসানো। প্লেটে করে এল হাতে
গড়া পাতলা রুটি, সঙ্গে পেঁয়াজ শশা টমেটোর কাচুম্বর। তারপর এল মাটন ধানশাক, তারপর
সবুজ পাতায় মোড়া দুখানি পাতরা মচ্ছি। লাস্টে কুলফি।
হাতা ডুবিয়ে পাতে ভাত তুলে
নিলাম আমরা, কাবাব তুলে নিলাম। আমি ফিসফিস করে অর্চিষ্মানকে জিজ্ঞাসা করলাম,
“স্যালাড খাবে না?” অর্চিষ্মান ফিসফিস করে জবাব দিল, “আগে কাবাব আর ভাত মাছ খাই,
রুটি দিয়ে ধানশাক খাবার সময় স্যালাডটা খাব’খন।” “আমিও বাবা তাহলে
তখনই খাব” বলে যেই না আমি কাবাবে কাঁটা বিঁধিয়েছি অমনি আমাদের টেবিলের পার্সি
প্রতিবেশী একটি সংক্ষিপ্ত গলা খাঁকারি দিয়ে খুব মিষ্টি করে বললেন, “দ্যাট ইস
কাচুম্বর, ইউ নো? আ ভেরি ট্র্যাডিশনাল স্যালাড। উই জেনার্যালি হ্যাভ ইট উইথ
রাইস।”
পত্রপাঠ কাচুম্বর উঠে এল
পাতে।
আমার মা আগেও বলতেন, এখনও
বলেন - দুনিয়ার সবথেকে শক্ত রান্না হচ্ছে ভাত। না গলা, না শক্ত, পারফেক্ট ভাত
রান্না করতে আজও শিখলেন না মা, এই দুঃখ তাঁর আজও গেল না। মিসেস বাগলির হাতের ভাত
খেলে মায়ের সে দুঃখ আবার চাড়া দিয়ে উঠত। প্রতিটি সুতনুকা দানা নিজস্বতা ও
পারসোন্যাল স্পেস বজায় রেখেছে। পূর্ণিমার চাঁদের মতো গোল রুটি, সম্পূর্ণ সেঁকা অথচ
ব্লেমিশবিহীন, ঠাকুমার হাতে বানানো কাঁথার মতো নরম এবং উষ্ণ। কাচুম্বরের পেঁয়াজশশা
দেখে বোঝা গেল যিনি কেটেছেন নাইফ স্কিলে তিনি জাপানি শেফদের সঙ্গে টক্কর দিতে
পারেন। একটাই অভিযোগ, কাচুম্বরে নুন ছিল না। কেন ছিল না সেটা সহজেই ব্যাখ্যা করা যায় অবশ্য। নুন
দেওয়া মাত্র স্যালাড নেতিয়ে যেতে শুরু করে। এ খবরটা আমি জানি আর জুনিয়র মিসেস
বাগলি জানবেন না সেটা তো হতে পারে না। তাছাড়া বাবুরাম তো মনে করে সব টেবিলে নুন
গোলমরিচদানি দিয়েই রেখেছে, নালিশ না করে, সেটা তুলে ঝাঁকিয়ে নিলেই হয়।
কাবাবটা আমাদের দুজনেরই খুব
পছন্দ হয়েছিল। নানারকম তরিতরকারি দিয়ে বানানো কাবাব, ধরণ অনেকটা আমাদের ভেজিটেবিল চপের
মতো। তবে মিষ্টি নয়, কাজেই ভেজিটেবিল চপের
থেকে ভালো খেতে। আমাদের দেওয়া হয়েছিল ভেজিটেরিয়ান কাবাব, কিন্তু ননভেজ কাবাবও
পাওয়া যায়। আমাদের পাশের টেবিল আগে থেকে বলে রেখেছিল বোঝা গেল, তাঁদের জন্য আলাদা করে ননভেজ
কাবাব এল।
নেক্সট আইটেম পাতরা মচ্ছি।
পাতরা যা, পাতুরিও তাই। পাতায় জড়িয়ে ভাপানো মাছের টুকরো। পাতরা মচ্ছি নিয়ে আমি সত্যি বলছি বিশেষ উৎসাহী ছিলাম না। এর আগে যত পাতুরি খেয়েছি সবই
নেমন্তন্ন বাড়িতে এবং কোনওটাই সুবিধের লাগেনি। সর্বত্রই মাছের থেকে মোড়ক মুখ্য হয়ে উঠেছে। মাইলখানেক লম্বা কলাপাতার প্যাঁচ খুলে শেষে বেরিয়েছে হাফ কড়ে আঙুলের সাইজের
মাছ।
ডি পি এ-র মেসের পাতরা
মচ্ছি খেয়ে আমার সে দুঃখ ঘুচল। এখানে পাতার মর্যাদা শুধু মোড়কের, লাইমলাইট পুরোটাই
মাছের ওপর। প্রমাণ সাইজের মাছের গায়ে পুরু টক মিষ্টি মশলার প্রলেপ দিয়ে পাতায় মুড়ে
তাকে ভাপানো হয়েছে। কাটা দিয়ে তুলে মুখে পোরা মাত্র সে মাছ মিলিয়ে যাচ্ছে জিভের
ওপর।
তৃপ্তিসূচক নানারকম শব্দ
সহযোগে মাছ শেষ করে আমরা ধানশাকের প্লেটের দিকে হাত বাড়ালাম। যে পার্সি সংস্কৃতি
সম্পর্কে কিচ্ছু জানে না (যেমন, আমি) সেও ধানশাক জানে। তবে ধানশাক কিন্তু পার্সিরা
ইরান থেকে আনেননি, ভারতে এসে বানাতে শুরু করেছিলেন। এই রান্নাটি ইমিগ্র্যান্ট
মাবাবার আপাদমস্তক ভারতীয় সন্তান। ধানশাককে আপনি ফুল মিল বলে চালাতে পারেন। কারণ ধানশাকে
আছে মুসুর, ছোলা, অড়হর ইত্যাদি একাধিক
রকমের ডাল আর আলু, টমেটো, কুমড়ো, বেগুন ইত্যাদি একাধিক রকমের তরিতরকারি। চিকেন, ল্যাম্ব, একাধিক
রকমের প্রোটিন দিয়েই ধানশাক বানানো যেতে পারে, কিন্তু পার্সিরা আজীবন বানিয়ে
এসেছেন মাটন দিয়ে। তাঁরা ধানশাক খান মূলত সানডে লাঞ্চে, কারণ এক, খাবারটি খুবই
ভারি, দুই, রাঁধতেও প্রচুর সময় লাগে। প্রথমে ডাল তরকারি সবের সঙ্গে মাংস রান্না
করা হয়, তারপর মাংস তুলে নিয়ে বাকিটুকুকে এমন মোক্ষম ঘ্যাঁট দেওয়া হয় যে ডাল
তরকারি সব মিলেমিশে এক হয়ে যায়, কোনটা অড়হর কোনটা বেগুন আর কিচ্ছু আলাদা করে টের
পাওয়া যায় না।
ধানশাকের বাটি শেষ হল যখন
তখন আমাদের পেটে আর একফোঁটা জায়গা বাকি নেই। কিন্তু কুলফি বাকি আছে। মিসেস বাগলির
কিচেনের কুলফির চেহারা অভিনব, চন্দ্রপুলির মতো, কিন্তু মুখে দিলেই সেই আদিঅকৃত্রিম
স্বাদ। মিষ্টি ঘন জমাটবাঁধা দুধে এলাচ, জাফরানের ছোঁয়া।
মিসেস বাগলি বা মিসেস বাগলির পুত্রবধূর রান্নাঘরের খাবারদাবার সম্পর্কে একটা কথা আপনাকে বুঝতে হবে, এটা কোনওমতেই “রেস্টোর্যান্ট কোয়ালিটি” নয়। এমনকি ফুডব্লগ কোয়ালিটিও না। কারণ ভাতের চাল যথেষ্ট সরু এবং দীর্ঘ হলেও সেটা থেকে ভুরভুরিয়ে সুগন্ধ বেরোচ্ছে না, বা কন্ট্রাস্ট ফুটিয়ে তোলার জন্য উঁকি মারছে না কোনও অবান্তর ধনেপাতা। রাঁধুনির কেরামতির আস্তিনে লুকোনো নেই কোনও ফুডকালারের শিশি তাই ধানসাকের রং মাকালীর জিভের মতো নয়। খাওয়া শেষ করার পর থালার ওপর তেলের পুকুর জমছে না।
মিসেস বাগলির রান্নাকে যদি
কোনও বিশেষণে ডাকতেই হয় তবে তাকে ‘বাড়ি’ বা ‘মামাবাড়ি’ কোয়ালিটি নামে ডাকাই ভালো। পেট
ভরে যাওয়ার পরও যে খাবার আরও অনেকক্ষণ ধরে খাওয়া যায় আর খাওয়া শেষ করে মনে হয় বলি,
“বাবুরাম, বিলের সঙ্গে দুটো বালিশও দয়া করে নিয়ে এস ভায়া, এই টেবিলের তলাতেই একটু গড়িয়ে
নিই।”
*****
মিসেস বাগলির কিচেনের ঠিকানা
Delhi Parsi
Anjuman
Delhi Gate,
Parsi Dharamshala, Bahadurshah Zafar Marg, Near Daryaganj, New Delhi
Contact: +91-11-23238615, +91-11-23231228, +91-9871536402
গিন্নি সেদিন সোডাবটলওপেনারওয়ালাতে এগ কেজরিওয়াল খেয়ে এলেন।
ReplyDeleteদেবীপ্রসাদ কেজরিওয়াল, নামটা শুনেই হেরাফেরি ছবিটির কথা মনে পড়ে যায়, ছিলেন এক নিরামিষাশী পরিবারের আমিষপ্রিয় সদস্য। বাড়িতে ডিম ঢুকত না, তাই ভদ্রলোক মহালক্ষ্মী ক্লাবে এসে নিজের জন্য পারসোনালাইজড এগ স্যান্ডউইচ অর্ডার করতেন। সে থেকে খাবারটির নাম পড়ে যায় এগ কেজরিওয়াল।
আপনারা তো ভয়ানক খাইয়ে লোক মশাই। ইদিকে ফিগারটিও ধরে রেখেছেন বেশ। আমার তো নেয়াপাতি ভুঁড়িটি বেড়েই চলেছে। দাড়িগোঁফ কামিয়ে, আনারকলি স্যুট পরে মেট্রোতে উঠলে লোকে হয়ত সিট ছেড়ে দেবে, বুঝলেন। তবু হাল ছাড়ছি না, আপনার সবগুলো রেফারেন্স শেষ করবো একদিন। বাঙালির বাচ্চা, মৎস্য মারিব, খাইব সুখে।
আরে দেবাশিস , আমরাও মেনুতে এগ কেজরিওয়াল দেখেছিলাম তো। খাব খাব ভাবছিলামও। সার্ভারকে জিজ্ঞাসাও করেছিলাম কী জিনিস। বর্ণনা করতে গিয়েই তার একেবারে চোখ কপালে উঠে, জিভে জল এসে একশা। পরের বার গিয়ে নিশ্চয় নিশ্চয় খাব।
Deleteফিগারের প্রশংসা করলে কী বলতে হয় সুপারমডেলদের থেকে শিখে রেখেছি। বলতে হয়, "ইট'স অল অ্যাবাউট জিনস।" আমিও তাই বলছি। আমার কোনও কেরামতি নেই। সবটাই আমার চিংড়িমাছের মতো চেহারার মায়ের কেরামতি।
পার্সি অঞ্জুমানে একদিন যাবেন, দেবাশিস। আমি বলছি, পস্তাবেন না।
Apni lov bariyei jaben... ar kichu na..
ReplyDeleteOh btw, Jonmodiner agam onek onek subhechha!!!
Deleteহাহা, থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ, অর্ণব। তবে জন্মদিনের দিনও কিন্তু ঠ্যালাধাক্কা দিয়ে শুভেচ্ছা চাইব, তখন আমাকে হ্যাংলা বলে গাল পেড়ো না, প্লিজ।
Deleteঅঞ্জুমন কথাটা কী সুন্দর না? মানেটা জানো? এটা ঊর্দুতে বেশি প্রচলিত হলেও আসলে এসেছে পারস্য দেশ থেকেই। মূল শব্দটা নজম যার মানে তারকা বা নক্ষত্র। যেখানে নক্ষত্রের সমাবেশ হয় সেটাই হল অঞ্জুমন। সেই থেকে চলতি কথায় বড় বড় ব্যক্তিদের জমায়েত বলতে অঞ্জুমন শব্দটা ব্যবহৃত হতে লেগেছে। যাহা গুজরাটি মণ্ডলী তাহাই পারসি অঞ্জুমন আর কি!
ReplyDeleteমনে আছে তো সেই উমরাওজান অদা-ইস অঞ্জুমনমে আপকো আনা হ্যায় বার বার...
তুমি এত সুন্দর একটা কথার মানে জানালে, ততোধিক সুন্দর একটা গানের কথা মনে পড়িয়ে দিলে, অদিতি, কী বলে ধন্যবাদ দেব বুঝতে পারছি না। গানটা কেবল ঘুরে যাচ্ছে মাথার ভেতর। থ্যাংক ইউ।
Deleteকুন্তলা, তোমার ইতিহাস বর্ণনা ব্যাপারটাই দুর্দান্ত, ঐতিহাসিক। তাই ছবি না থাকাটা কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি করল না। কি চিত্রকল্প বর্ণনা ! তুমি কি টের পেয়েছিলে আমিও তোমার পাশে বসে খাচ্ছিলাম?
ReplyDeleteজন্মদিনে অনেক আদর নিও। আলাদা করে অর্চিষ্মানকেও শুভেচ্ছা জানালাম ( ও যে অনেক নিকটজন, পাড়ার ছেলে কিনা )।
এ মা, এটা তো সবে জন্মদিনের প্রিপারেশন চলছে, মালবিকা। আসল জন্মদিনেও শুভেচ্ছা চাই কিন্তু। আপনার পাড়ার ছেলের কাছে শুভেচ্ছা পৌঁছে দেব মনে করে।
Deleteআপনি যদি দিল্লি আসেন কখনও আমাকে বলবেন, আপনাকে পার্সি অঞ্জুমানে নিয়ে যাব, তখন সত্যি সত্যি পাশাপাশি বসে খাওয়া যাবে।
সোডাবটলওপেনারওয়ালাতে এই শনিবার খুব এঞ্জয় করে খাওয়া হল । তোমার সঙ্গে পুরো টা কেমন মিল মিল হয়ে গেল যে! মিসেসে বাগলি ট্রাই করছিই ।
ReplyDeleteমিঠু
লেখাটা বড্ড ভাল । যাবার লোভ আরো বেড়ে গেল । আমার আপিসও বাহাদুর শাহ জাফর মারগে কিনা
ReplyDeleteমিঠু
তাহলে তো তোমাকে একদিন টিফিনে বেরিয়ে হেঁটে হেঁটে মিসেস বাগলির কিচেনে যেতেই হবে (আগে থেকে ফোন করে যেও মনে করে), কোনও অজুহাতই চলবে না। সোডাবটল ভালো না? আমাদেরও খুব ভালো লেগেছিল।
Deleteeto sundor bornona thakle chhobir abhab pushiye jay .. bhishon bhalo likhechho.. jonmodiner agam shubhechha.
ReplyDeleteaj nijer sathe juddho chalachhilam je aage deadline, then Abantor, but you won..ese dekhchhi amar i labh holo . he he he..lekha pore mon bhore gelo..
যাক, ব্যাটা ডেডলাইনকে অবান্তর হারিয়ে দিতে পেরেছে বলে দারুণ গর্বিত বোধ করছি। আমি নিজে কখনওই ডেডলাইনকে হারাতে পারি না কি না, সবসময়ই নিজে হেরে ভূত হই।
Deleteকিন্তু তোমার ডেডলাইন রক্ষার জন্য অনেক অনেক অল দ্য বেস্ট রইল। সব ঠিক ঠিক হয়ে যাবে, দেখবে।
Thank you Thank you Kuntala -- Bratati.
Deletekal desh e jachhi to tai ekhon proti muhurte notun notun deadline uposthit hoche akash phunre !!!
tumi khub anonde jonmodin katio...
agam shubhechha for jonmodin :)
ReplyDeleteসেম টু ইউ! সেম টু ইউ! (১৪ তারিখ আবার বলব।)
DeleteScottish music er Moto chhondoboddho othocho ethnic style e apnar bishoy nirbachon o Nipun lekhar chitrokolpo Amar khubi valo lage. JNU te conference achhe samne...tai ei kodin odrissho thakbo. Sei fnake jonmodiner shubhechchha agam janiye dilum. Abantor- debota apnake omorottwo prodaan korun....
ReplyDeleteওরে বাবা, কী ভালো ভালো প্রশংসা করেছ, হীরক। থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ। জন্মদিনের শুভেচ্ছার জন্যও অনেক ধন্যবাদ। তুমি ভালো করে কনফারেন্স সামলে এস। পরে আবার দেখা হবে।
Deleteজন্মদিনের আগাম শুভেচ্ছা... দোকানের হদিস পেয়ে যারপরনায় আপ্লুত... ধন্যবাদ!
ReplyDeleteএ বাবা! ম্যাপ দেখতে গিয়ে কি দেখলাম জানেন? নভেম্বর ১০ তারিখ পর্যন্ত গত এক বছরের বেশী সময় ধরে আমার অফিসটা মাত্র ১২ মিনিট দূরত্বে ছিল। যাঃ!
ReplyDeleteএইটা সত্যি যাঃ, সৌরাংশু। কোই বাত নেহি, পুরোনো সহকর্মীদের জন্য কি একটুও মন কাঁদবে না মাঝে মাঝে? তখন একদিন এসে খেয়ে যাবেন। আগাম শুভেচ্ছার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ, তবে সেদিনের শুভেচ্ছার দাবিও ছাড়ছি না, মনে থাকে যেন।
Deleteনা মানে শুধু আমি সরে যাই নি... আমার অফিসটাই নতুন বিল্ডিঙে উঠে গেছে। তবে আমিও গোঁR... I will go....
DeleteKolkatay ki pabo erom kichu???
ReplyDeleteরাখী, আমি জোম্যাটো খুঁজে তো তেমন কিছু পেলাম না, এখন কোনও কলকাতাবাসী বন্ধু যদি খবর দিতে পারেন তবে দেখা যাক।
Deleteআমি সেরকম খাদ্যরসিক এর মধ্যে পড়ি না.. .কিন্তু তোমার বর্ণনার গুনে আমার সব খাবারগুলোই খুব লোভনীয় লাগে ... অঞ্জুমনে চলেই গেছিলাম প্রায় ...ভেবেছিলাম ছবি থাকবে ... তারপর দেখলাম না দেখলেও অসুবিধে হলনা .... সব খাবার পোস্ট এর মত এটা পড়েও একইরকম খিদে পাচ্ছে ....zomato খুলে দেখেও নিলাম কলকাতায় পারসী আছে কিনা। . একটাই পেলাম ..কোনো রিভিউ নেই .. কেউ যায়নি কোনদিন বোধয় ... :/ তোমার জন্মদিন কবে গো?
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ, ঊর্মি। আমার জন্মদিন হচ্ছে গিয়ে চোদ্দোই ডিসেম্বর।
Deletedarun...baro khide pacche (ei matro lunch sharlam).janmodin-er agam shubheccha...bhalo theko bhalo kore kheo r anek anek bhalo likho
ReplyDeleteঅনেক অনেক ধন্যবাদ, দেবশ্রী। লেখাটা তোমার ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হয়েছি।
DeleteMathai rakhlam, dilli berate gele etateo try korbo ekbar ..... ojosro dhonnobad erom ekta lobhoniyo piece er jonno :)
ReplyDeleteOho jonmodin er agam subhechha ... oidin o ki erom kono oitihasik jaigai jaoa hochhe ?
ReplyDeleteসময় হাতে নিয়ে দিল্লি এলে এই মেসটায় সত্যি মনে করে যেও, শুভব্রত, ভালো লাগবে দেখবে। আরে জন্মদিনের দিন একাবোকা কোথাও যেতে ইচ্ছে করবে না বলেই তো আগেভাগে ঘুরে নিচ্ছি।
Deleteকুন্তলাদি, জন্মদিনের আগাম শুভেচ্ছা নিন ('নিও'ই বলি এবার থেকে ?) । দিল্লি যেতে পারলে মাটন ধানশাক আর পাতরা মচ্ছির ট্রিট চাইতাম। কিন্তু সে কবে যে হবে? :-(
ReplyDeleteআমিও কলকাতায় পার্সি খানার কোন নামগন্ধ খুঁজে পেলাম না ...
অ্যাবসলিউটলি, পিয়াস। এবার থেকে তুমি আমাকে তুমি বলেই ডেকো। একবার দিল্লি ঘুরেই যাও না। হাতে দু'দিন বেশি সময় নিয়ে?
Deleteসেতো যাবই কুন্তলাদি! পর্ক ভিন্দালু, চিকেন বয়েল, ফিশ খাপ্পা, মাটন ধানশাক - এসব শোনার পর না গিয়ে পারি ? :-p
Deleteএই কদিন পরেই দিল্লি হয়ে কলকাতা ফিরছি, কিন্তু দিল্লিতে মেয়াদ ওই দু-তিন ঘন্টা। পাক্কা দু'বছর পর মাত্র দিনকুড়ির ছুটি, তাই ইচ্ছে থাকলেও দিল্লিতে যে দুটো দিন কাটিয়ে যাব তার উপায় দেখছি না ! :-(
দিল্লিতে আমার একটা পুঁচকে ভাইপো আছে। মানে শেষ যেবার সেই ২০০৯ সালে দিল্লিতে একদিন থেকে কলকাতা ফিরেছিলাম তখনও পুঁচকে ছিল, আর এখন শুনছি লম্বায় আমাকেও ছাড়িয়ে গেছে প্রায়! ভাল্লাগে, বল ? এই Phd'র ঠ্যালায় সব সম্পর্কগুলো ঘেঁটেঘুঁটে গেছে !
Piyas Mumbaite gele Parsi khabar khaaor aro subidhe. Prochur Parsi restaurant Fort area te.
Deleteইশ! সর্বত্র আছে, শুধু কলকাতা ছাড়া।
DeleteDelhi te gie eto eto lobhonio jaigai jete hole sudhu Delhi r jonyei besh koyekta din rakhte hobe dekhchhi :-) ... darun lekha.. jodio chhobi thakle besh hoto kintu tomar barnona eto bhalo hoechhe je khabar dabar gulo ekkebare dekhtei pachhi bola jai... ar jaigata to chinei phellam.
ReplyDeleteধন্যবাদ, ইচ্ছাডানা। দিল্লি হয়ে তো বেড়াতে যাওয়া হয়ই, ইচ্ছাডানা, নেক্সট বার একটু থেমে যাবেন।
Deleteআঞ্জুমান এর মিসেস বাগলির রান্না কেমন সুস্বাদু ছিল তার খানিক আন্দাজ করছি, কিন্তু বেশ কিছুদিন পর এ পটে এসে মিসেস অর্চিষ্মানের হাতের আদিঅকৃত্রিম মুচমুচে মনভালো করা লেখা পরে .. ঢেকুর না তুলেও বললাম .. আহ: ....
ReplyDeleteপুন: পটে শব্দ তা বাংলা সিরিয়াল এ উড়িয়া নায়িকার মুখে শুনে বেশ ভালো লাগলো বলে লিখে দিলাম :)
বাংলা সিরিয়ালে উড়িয়া নায়িকা, আত্মদীপ? চমৎকার ব্যাপার কিন্তু, খুবই উন্মুক্তমনা। লেখা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম, থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ।
DeleteJonmodiner aagam shubhechha :)
ReplyDeleteধন্যবাদ, অদ্বিতীয়া।
Deleteআহা, বড় মুখরোচক লেখা, একদম ধনশাকের মতন। :)
ReplyDeleteধন্যবাদ, অরিজিত।
Deletenext time kono bishesh akjon jodi amake dilli jete invite koren, tenake ei condition ta nischoi debo je amake parsi khabar khawate niye jete hobe eikhane.
ReplyDeletelojjar matha kheye duto chobi tule felte parte :(
আরে, পরিস্থিতি গম্ভীর ছিল, কুহেলি, ছবি তুলতে গেলে অপরিসীম সাহসের দরকার হত। সেটা আবার আমাদের দুজনের কারওরই নেই।
Delete