Posts

Showing posts from January, 2024

পুরী ৬ (শেষ): স্নানযাত্রা ও সূর্যমন্দির

রাস্তায় বিগ বাজার গোছের একটা দোকানে দাঁড় করালেন পূর্ণচন্দ্র। কাল সকালে স্নানের উপযুক্ত চটি জামাকাপড় কিনতে হবে। জুতো খুলে ঢুকতে হল। এদিকে দোকানের মেঝেজোড়া কাঁটা কাঁটা কার্পেট। কিছু আনকমফর্টেবল। ঢোকার মুখে আরেক ড্রামা। এক বালতি জল রাখা ছিল; একটা ফুল সাইজ গরু এসে সে জলে মুখ দিতে গিয়ে পাশাপাশি দাঁড় করানো খানসাতেক সাইকেল ফেলে দিয়েছে। অর্চিষ্মানের সাইজের ফুল ট্র্যাকপ্যান্টস পাওয়া গেল না। হাফপ্যান্ট ওর আছে। আমার পোশাকগুলোর সবক'টার বুকেই চুমকির প্রজাপতি কিংবা হেলো কিটি। এক ভদ্রলোক, দোকানেরই কর্মচারী, এমন কিছু শিশু নন, আমার সমবয়সী বা বছর পাঁচেক বড়ও হতে পারেন, কাউন্টারে কনুই রেখে কোমর বেঁকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমনিই। দুটো বাচ্চা ছেলেমেয়ে আমাদের জিনিসপত্র দেখানোর দায়িত্ব দিব্যি পালন করছিল। উনি অধিকন্তু ন দোষায়। আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত খুব ক্রিটিক্যালি দৃষ্টি ওঠাচ্ছিলেন নামাচ্ছিলেন এবং মতামত প্রকাশ করছিলেন কোন সাইজ ম্যাডামের "আ যায়েগা।" ফ্রাস্ট্রেটিং হচ্ছে এঁরা বদ নন, জাস্ট সোশ্যাল সেনসিটিভিটি নেগেটিভে। জামার আশা ছেড়ে চটির সন্ধানে নামলাম। অর্চিষ্মানকে দিব্যি সুন্দর একজোড়া হাল

পুরী ৫ঃ চিলিকা ঘোরা ও ফেরা

Image
বাবা শিখিয়েছিলেন বাইরে গিয়ে গাড়ি, বাস, অটো যা-ই চড়বি, নম্বরটা সবার আগে মুখস্থ করবি। আমাদের বোটের নম্বরও মুখস্থ করেছিলাম, এখন মনে নেই। এখন শুধু মনে আছে নৌকোর মুখে বাঁধা লাল চেলি, ঝিরি ঝিরি সোনালি পাড়। নৌকোয় নেমে ছাউনির তলায় বসলাম। অর্চিষ্মান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জেটির ওপর ডাঁই করা লাইফজ্যাকেটের দিকে থটফুল দৃষ্টিপাত করতে লাগল। জ্যাকেটগুলো যা ধুলোধূসরিত, ডুবে গেলেও আমি ও জিনিস গায়ে ঠেকাব না। পূর্ণচন্দ্র বললেন, এ হাঁটুজল, পড়লেও ডুববেন না। কিন্তু এ সাঁতার না জানা শহরের ছেলে। বলল, এমারজেন্সি পারপাসে থাক। পূর্ণচন্দ্র উবু হয়ে পাহাড় ঘেঁটে দুটো জ্যাকেট, যাদের কমলা রং তখনও বোঝা যাচ্ছে, বেছে দিলেন। পরার দরকার নেই, সঙ্গে রেখে দেন। মাঝি ছেলেটা একটা লম্বা বাঁশ দিয়ে নৌকো জলে ঠেলে, লাফ দিয়ে নৌকোয় উঠে আমাদের মাঝখান দিয়ে স্প্রিন্ট টেনে অপর প্রান্তে পৌঁছে গেল। সে প্রান্তে একটা লম্বা ডাণ্ডা, মাথায় সুদর্শন চক্র সাঁটা। এঞ্জিন চালু করতে চক্র বনবন ঘুরতে শুরু করল। আস্তে করে চক্রটাকে জলের মধ্যে ডুবিয়ে দিয়ে হাল ধরল ছেলেটা। পূর্ণচন্দ্র চেঁচিয়ে বললেন, সব ভালো করে দেখিয়ে দিবি, নো কমপ্লেন। প্রথম দ্রষ্টব্য ক্র্যাব

তিন্নির জন্য

ইয়ে দুখ কাহে খতম নহি হোতা বে-র মতো আমারও এখন ভাবখানা হচ্ছে ইয়ে পুরী ভ্রমণবৃত্তান্ত কাহে খতম নহি হোতা বে। আড়াই দিনে এত কিছু করেছি ভেবে নিজেই অবাক। যখন অ্যাকচুয়ালি ঘুরছিলাম তখন তো সময়টা ফস করে ফুরিয়ে গিয়েছিল। লিখতে গিয়ে এত স্মৃতি ঝাঁকানি খাওয়া বোতলের লিমকার মতো বেরোচ্ছে কেন, কোথা থেকেই বা বেরোচ্ছে জগন্নাথই জানেন। হয়তো আমিও জানি। বুড়ো হয়েছি তার আর একটা প্রমাণ। এক কণা কথা ফেনিয়ে ফেনিয়ে এক পাহাড় করে তোলার রাইট অফ প্যাসেজটাটা পেরিয়ে গেছি। তিন্নি খুবই ভদ্র ননদ, সেটা মুখের ওপর সোজা বলতে পারছে না। ঘুরিয়ে তা দিচ্ছে, নতুন বছরের নতুন রেজলিউশনের পোস্টের জন্য। জিজ্ঞাসা করলাম তুই কি রেজলিউশন নিলি বল, তাতে দুঃখী গলায় বলল, সেটাই তো ঝামেলা হয়ে গেছে, তোরা কে কী রেজলিউশন নিলি জানালে তাদের মধ্যে থেকে একটাদুটো পছন্দ করে নিজের জন্য রাখতে পারি। রেজলিউশন নিয়ে আমার এ বছর একটা স্ট্র্যাটেজি ছিল। রিভার্স সাইকোলজি। বছরের পর বছর আমাকে রেজলিউশনরা ঘোল খাওয়ায়, এ বছর রেজলিউশনদের আমি ঘোল খাওয়াব। প্রেমকে যেমন ঘৃণা দিয়ে ঘোল খাওয়ানো যায় না, উদাসীনতা লাগে, রেজলিউশনকে ঘোল খাওয়ানোর উপায় হচ্ছে আস্তে করে তাকে কাটিয়ে দেওয়