Posts

Showing posts from 2016

হংসেশ্বরী

Image
বাঁশবেড়িয়ার রাজারা পাটুলির লোক ছিলেন শুনে আমি খুব উৎসাহিত হয়েছিলাম তারপর বুঝলাম এ পাটুলি সে পাটুলি না, এ হল গিয়ে বর্ধমানের পাটুলি। ষোলশো তিয়াত্তরে জমিদার রামেশ্বর রায় চলে এলেন বাঁশবেড়িয়ায়। ত্রিবেণী আর ব্যান্ডেলের মাঝখানে গঙ্গার ধারে চারশো বিঘা জমি দিলেন ঔরঙ্গজেব আর দিলেন রাজা উপাধি। তাঁর তিন প্রজন্ম পরের রাজা নৃসিংহদেব সংস্কৃত পণ্ডিত ছিলেন এবং যোগসাধনা তন্ত্রমন্ত্র ইত্যাদিতে তাঁর উৎসাহ ছিল। তিনি বিলেত না গিয়ে বাঁশবেড়িয়ার জমিতে তিনি বানালেন এক মন্দির যার পাঁচটি তলা আমাদের কুণ্ডলিনী শক্তির পাঁচটি অংশ ইড়া, পিঙ্গলা, সুষুম্না, বজ্রাক্ষ আর চিত্রিণীর প্রতিনিধি। রাজামশাইয়ের মন্দির তৈরিতে ভয়ানক উৎসাহ ছিল। সে যুগে প্রায় লাখ টাকা খরচ করে নিজে গিয়ে চুনার থেকে মন্দির বানানোর পাথর কিনে এনেছিলেন। দুঃখের বিষয় মন্দিরের কাজ এগোতে না এগোতেই রাজামশাই মারা গেলেন। বড়রানী রাজার সঙ্গে চিতায় উঠলেন, ছোটরানী শংকরী মন্দির শেষ  করলেন আঠেরোশো চোদ্দয়।  তেরোটা পদ্মের কুঁড়ির মতো চুড়োওয়ালা মন্দিরের ভেতরে নিমকাঠের নীলবর্ণ দেবী। মাকালীর এক রূপ, যদিও হংসেশ্বরী নামটা নৃসিংহদেবের মায়ের নাম থেকে দেওয়া। 

Monday Club

ক্লাবের সভ্যরা সকলেই বুদ্ধিমান লোক ছিলেন, কাজেই ইটিং ছাড়া মিটিং যে জমবে না তা তাঁদের জানা ছিল। ক্লাবের অধিবেশনের চিঠি-কাম-নেমন্তন্নপত্রের ক’টি উদাহরণ কামাক্ষীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘সুকুমার রায় ও Monday Club ’ লেখায় দিয়েছেন। আমি অবান্তরে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না।  ‘আঃ! আবার খাওয়া!! এই-তো সেদিন সবাইকে বুঝিয়ে বললুম যে আর ‘খাই খাই’ কোরো না - এর মধ্যে সুনীতিবাবু খাওয়াতে চাচ্ছেন। আমার হাতে কতকগুলো টাকা গছিয়ে দিয়ে এখন বলছেন, না-খাওয়ালে জংলিবাবুকে দিয়ে মোকদ্দমা করবেন। আমি হাতে-পায়ে ধ'রে নিষেধ করলুম, তা তিনি কিছুতেই শুনলেন না, উলটে আমায় তেড়ে মারতে আসলেন। দেখুন দেখি কী অন্যায়! তা আপনারা যখন উপদেশমতো চলবেন না, কাজেই অগত্যা সুকুমারবাবুকে ব’লে-ক’য়ে এই ব্যবস্থা ক’রে এসেছি যে তাঁর বাড়িতে আগামী মঙ্গলবার (৩০শে জুলাই) সন্ধ্যা ৭ টার সময় আপনি সুস্থদেহে হাজির হবেন। সুনীতিবাবুর ভোজের পাত সেখানেই পড়বে। এখন খুশি হলেন তো?                                                                                                                             তক্ত্যবিরক্ত                            

এ বছর বড়দিনে আমি যা যা জানলাম

Image
১ ।   কলকাতা আগের থেকে অনেক পরিষ্কার । অনেক মানে অনেক । চোখে পড়ার মতো । ২ ।   পশ্চিমবঙ্গের , অন্তত আমাদের পারিবারিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিটি আর আগের মতো পরিষ্কার নেই । বেশ ঘোলাটে হয়েছে । সেই সব সোনালি দিন গেছে যখন বাড়ির সবাই হয় সি পি এম , নয় অ্যান্টি সি পি এম । এখন চয়েস বেড়েছে , একই সঙ্গে রাজনৈতিক স্থিতাবস্থাটিও উধাও হয়েছে । খাবার টেবিলে আর পলিটিক্স পাড়া যাচ্ছে না । উৎস গুগল ইমেজেস ৩ । সাদাসিধে হওয়াটাকে আমি এতদিন শুধু গুণের লিস্টেই রাখতাম , ডবল ফেলুদা দেখে বুঝলাম সেটা কখনও কখনও বিপক্ষেও যেতে পারে । ফেলুদাকে হাতে রজনীগন্ধার মালা পেঁচিয়ে মুজরোতে পাঠানোর দরকার নেই , কিন্তু শুধু বালি আর বামনগাছিতে ঘুরিয়ে মারলে একটু বোরিং লাগে বইকি । এবার প্লিজ হত্যাপুরী হোক , প্লিজ । ৪ । ডবল ফেলুদা দেখতে গিয়েছিলাম সাউথ সিটি আইনক্সে । পার্কিং লটের বারান্দা থেকে সাউথ সিটির ফ্ল্যাটগুলো দেখতে দেখতে দেভের কথা মনে পড়ল । ওই বাড়িরই কোনও একটা ফ্ল্যাটে থাকেন আমাদের বাংলার সুপারস্টার । আমি দেভের প্রতি পার্শিয়াল । তার কারণ , এক , দেভ লম্বা , দুই , দেভ নিজের কাজে সফল । বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে

সাপ্তাহিকী

Image
How much better is silence; the coffee cup, the table. How much better to sit by myself like the solitary sea-bird that opens its wings on the stake. Let me sit here for ever with bare things, this coffee cup, this knife, this fork, things in themselves, myself being myself.                                                                        ---Virginia Woolf, The Waves একজন চলচ্চিত্রনির্মাতা নিজের ফোন ইচ্ছে করে চুরি করিয়ে তারপর অ্যাপের সাহায্যে সেই ফোন/চোরকে ফলো করে একখানা সিনেমা বানিয়েছেন। অনেক চেষ্টা করেও আমি মন থেকে এই ভাবনাটা ঝেড়ে ফেলতে পারছি না যে এখানে চলচ্চিত্রনির্মাতার নীতিবোধটা বেশি প্রশ্নযোগ্য।   আমাদের দৃষ্টির একটা স্পিড লিমিট আছে জানতেন? মানে কোনও বস্তু যদি সেই লিমিটের বেশি জোরে ছোটে তাহলে আপনি সেই বস্তুটিকে স্থির দেখবেন। পৃথিবীর সবথেকে বড় পিরামিড কোন দেশে খুঁজে পাওয়া গেছে বলুন দেখি। ঠিকই ধরেছেন, দেশটার নাম ম দিয়েই শুরু বটে। কিন্তু মিশর নয়। মেক্সিকো।  হাউ নট টু টেক আ সোশ্যাল মিডিয়া ব্রেক।  Bad choices, good stories.  লেক মাথেসন। ভোর

বাড়ি

এ বছর প্রথম (এবং শেষ)বারের জন্য বাড়ি যাচ্ছি। আমরা রেডি, দু’তরফের বাবামা রেডি, বসের সম্মতি আদায় হয়ে গেছে, টিকিট তো কাটা হয়ে গেছে, জানালার ধারের সিট বেছে চেক ইনও করে ফেলব, কেনাকাটা সারা, ব্যাগ গোছানো হয়নি কিন্তু হয়ে যাবে। বড়দিনে কী করছ?র উত্তরে যেই বলছি, বাড়ি যাচ্ছি, সবাই হিংসে হিংসে মুখে তাকাচ্ছে। তারপর জিজ্ঞাসা করছে, ক’দিনের জন্য? আমি বলছি এই তো শনিবার বেরোব, বুধবার ফিরব।  অমনি হিংসে উধাও।  মাত্র? আরেকটু বেশিদিনের জন্য যেতে পারতে।  ছুটি পেলে না নাকি? আমি সুযোগ পেয়ে প্রশ্নটা ধরে ঝুলে পড়ি। ছুটির কথা আর বোলো না, যা টানাটানি। কিন্তু এটা মিথ্যে কথা। সত্যি কথাটা হচ্ছে ছুটি পেলেও আমি এর থেকে বেশিদিনের জন্য বাড়ি যেতাম না।  তার কারণ এই নয় যে আমার মাবাবাঠাকুমাকে যথেষ্ট ভালোবাসি না। মা যখন এনে জলের গ্লাসটা হাতে ধরান, আমার মনে হয় না, ওরে বাবা খেটে খেটে মরলাম। বাবা যখন সকালবেলা উঠে, কী সোনামা, কী খবর বলে খাটের পাশে এসে বসেন, বেড়ানোর গল্প করেন, চেনাঅচেনা জায়গার খোঁজখবর দেন, আমার মোটেই মনে হয় না যে এসব গল্প করার থেকে বরং রাজনীতির হেডলাইনগুলোতে চোখ বোলালে ভালো হত। ঠাকু

স্ট্রিট কুইজিন / দ্য মসালা ট্রেল, জনপথ

Image
আন্টিজির দোকানে ফিকি চায়ের আলাদা ব্যবস্থা নেই। সসপ্যানে চিনি দেওয়ার আগে যদি পৌঁছতে পারো তাহলে তোমাকে ‘ফিকি চা নিকালকে’ দেওয়া হবে, চিনি দেওয়া হয়ে গেলে হয় মিষ্টি চা খাও নয় পরের ব্যাচের চায়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাক। তবে আন্টিজির দোকানের যা বিক্রি তাতে পরের ব্যাচের জন্য দাঁড়াতে হলেও সেটা মেরেকেটে আট মিনিট। অনেক সময় আমাকে দেখে বৌমা ঘোমটার আড়াল থেকে হাসেন। চিনি ডাল দিয়া। আমি মুখে হতাশার ভাব ফুটিয়ে বলি, কোই নহি কোই নহি, কিন্তু মনে মনে ভয়ানক খুশি হই। বৌমা ভেজা ন্যাতায় সসপ্যানের গরম হাতল জড়িয়ে কেটলিতে চা ট্রান্সফার করে খালি সসপ্যানে জল ঢালেন। নর্ম্যাল ব্যাচের থেকে কম পরিমাণে, যাতে আমাকে বেশি দাঁড়াতে না হয়।    কিন্তু আমার দাঁড়াতে ভালো লাগে। কারণ আমার ডেস্ক যতখানি বোরিং আন্টিজির দোকান ততখানিই জমজমাট। আন্টিজির দোকান হচ্ছে আন্টিজির সংসার। ছেলে বৌমা, নাতিনাতনি, আংকলজি। আর খদ্দের। তাঁরা অটো, স্কুলবাস, বাইক, গাড়ি থেকে নেমে আসেন, আংকল আন্টির খোঁজখবর নেন, নাতিনাতনির কান মুলে চুল ঘেঁটে দেন। কেউ আবার একেবারেই অপরিচিত। আসেন, খান, টাকা দেন, চলে যান। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখি। আন্টিজির নাতিনাতনি থাকলে

এ মাসের বই/ নভেম্বর ২০১৬ঃ তিনটি নভেলা

Image
নভেম্বর মাসের বইয়ের পোস্টের নাম হওয়া উচিত ছিল 'একটি নভেল ও তিনটি নভেলা'। নভেলটা বাদ গেল, কারণ সেটার প্রতি আমার মনোভাব এত জটিল এবং অসংবদ্ধ যে লিখতে গিয়ে প্রাণান্ত হচ্ছে। এদিকে ডিসেম্বর মাস শেষ হতে আসছে প্রায়। তাই আমি নভেল বাদ দিয়েই পোস্ট ছাপলাম। নভেলের কথা পরের মাসের (ডিসেম্বরের) বইদের সঙ্গে থাকবে। এত দেরি করে বইয়ের পোস্ট লেখার জন্য আমি সত্যিই দুঃখিত।  একটা কথা আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে।  লেখক কী করে ঠিক করেন যে কোন গল্পটা ছোটগল্প হবে, কোনটা নভেলা, আর কোনটা উপন্যাস? যে কোনও আইডিয়াকেই কি ইচ্ছে করলে ছোটগল্প, ইচ্ছে করলে নভেলা আবার ইচ্ছে করলে টেনে উপন্যাস বানানো যায়? নাকি আইডিয়াদের নিজস্ব সম্ভাবনা থাকে? লেখকের কেরামতি শুধু সেই সম্ভাবনাটাকে চিহ্নিত করায়? ***** The Hangman/ Louise Penny লুইস পেনির আরম্যান্ড গামাশ সিরিজের নভেলা ‘দ্য হ্যাংম্যান’। কানাডার কিউবেক অঞ্চলের থ্রি পাইনস গ্রামের পাশের জঙ্গলের একটি গাছ থেকে একদিন একটি মৃতদেহ ঝুলতে দেখা যায়। চট করে দেখে মনে হবে আত্মহত্যা। কিন্তু অফ কোর্স, চিফ ইন্সপেক্টর গামাশ একবার তাকিয়েই বুঝে ফেলবেন যে ওটা আত্মহত্যা নয়

Quote of the Week

পরদিন সকাল আন্দাজ সাড়ে সাতটার সময় ব্যোমকেশ বসবার ঘরে খবরের কাগজটা মুখের সামনে উঁচু করে ধরে গত রাত্রের থিয়েটারের খুনের বিবরণ পড়ছিল। সত্যবতী সকালে বাড়ি ফিরেছে, ব্যোমকেশকে এক পেয়ালা চা খাইয়ে গড়িয়াহাটে বাজার করতে গেছে, ফিরে এসে ব্যোমকেশকে আর এক পেয়ালা চা ও প্রাতরাশ দেবে। বাড়িতে কেবল অজিত আছে।                                                            ---শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশুপাল বধ (অসমাপ্ত)

সাপ্তাহিকী

"We have inherited from somewhere—maybe from the era when there was only an hour of news available a day—the belief that having a superficial awareness of the day’s most popular issues is somehow helpful to those most affected by them." খবরের কথাই যখন হচ্ছে তখন খবর তৈরি করিয়েদের কথাও হোক। আসল নয়, নকল ।  The world presented to us by our perceptions is nothing like reality.   স্বপ্ন কী ও কয় প্রকার? পৃথিবীর প্রথম ‘সফট’ রোবট। রূপকথার আসল রূপ। 20 Places No One Pronounces Correctly. এ সপ্তাহের গান।

36 Things I Do Not Want To Do Before I Die

Image
১। ম্যারাথন দৌড়তে ২। এরোপ্লেন থেকে ঝাঁপ দিতে ৩। সিনেমায় নামতে ৪। টেড টক দিতে (ইন ফ্যাক্ট, কোনও রকম পাবলিক স্পিকিং করতে)  ৫। আয়ান র‍্যান্ডের বই পড়তে ৬। মদগাঁজাসিগারেট ধরতে ৭। চা ছাড়তে ৮। ডলফিনদের সঙ্গে সাঁতার কাটতে ৯। গণ-বেড়াতে যেতে ১০। লিডারশিপ/ওয়েলনেস মার্কা ট্রেনিং-এ গোল হয়ে বসে মনের কথা বলতে ১১। অষ্টমীর রাতে কলকাতায় ঠাকুর দেখতে বেরোতে ১২। অর্চিষ্মানকে ছেড়ে থাকতে ১৩। বিগ বসের বাড়িতে পা রাখতে ১৪। যুদ্ধের মধ্যে পড়তে ১৫। এভারেস্ট চড়তে ১৬। চিটফান্ডে বিনিয়োগ করতে ১৭। অর্ণব গোস্বামীর অটোগ্রাফ নিতে ১৮। বাবা/মাতা/সংঘ/মিশনের পাল্লায় পড়তে ১৯। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হতে ২০। ট্যাটু আঁকতে ২১। যাঁরা বলেন নারীবাদের দরকার কী, একেবারে মানববাদ হলেই তো ভালো হয়, তাঁদের সঙ্গে কথা বাড়াতে ২২। খ্যাপা ষাঁড়ের সামনে হাজার হাজার লোকের সঙ্গে দৌড়তে ২৩। হাজার হাজার লোকের সঙ্গে পাকা টমেটো গায়ে মাখতে ২৪। একলা ঘরে ভূতের সিনেমা দেখতে ২৫। ভূতুড়ে বাড়িতে রাত কাটাতে ২৬। রাজনীতিতে নামতে ২৭। শুক্কুরবার শুক্কুরবার সন্তোষী

সাহিত্য, শেক্সপিয়ার, বব ডিলান

I was out on the road when I received this surprising news, and it took me more than a few minutes to properly process it. I began to think about William Shakespeare, the great literary figure. I would reckon he thought of himself as a dramatist. The thought that he was writing literature couldn't have entered his head. His words were written for the stage. Meant to be spoken not read. When he was writing Hamlet, I'm sure he was thinking about a lot of different things: "Who're the right actors for these roles?" "How should this be staged?" "Do I really want to set this in Denmark?" His creative vision and ambitions were no doubt at the forefront of his mind, but there were also more mundane matters to consider and deal with. "Is the financing in place?" "Are there enough good seats for my patrons?" "Where am I going to get a human skull?" I would bet that the farthest thing from Shakespeare's mind was the

বার্ষিক জমাখরচ ২/৪ঃ ২০১৬ রেজাল্ট, ২০১৭ রেজলিউশন

২০১৬ রেজাল্ট ফেল করার আসল ডেঞ্জার আমার মতে ফেল করা নয়। আসল ডেঞ্জার হল ফেল করা অভ্যেস হয়ে যাওয়াটা। আমার দ্বারা যে পাশ করা সম্ভবই না সেই জানার বীজ বপন হয়ে যাওয়াটা। নতুন বছরের রেজলিউশন নেওয়ার আগে পুরোনো বছরের রেজলিউশন রাখতে পারার পরীক্ষার সময় যখন এল, আমার এক্স্যাক্টলি এই কথাটা মাথায় এল। যে দেখে কী লাভ। ফলাফল তো জানাই।  কিন্তু দু’হাজার সতেরোর আমার একটা রেজলিউশন হল সাহসী হওয়া। পাশ ফেল যাই হোক না কেন, সত্যেরে লওয়া সহজে। এখন থেকেই তার অন্যথা করা উচিত হবে না মনে করে আমি দেখতে গেলাম দু’হাজার ষোলোতে আমি কত খারাপ করে ফেল করেছি। গিয়ে দেখলাম,আমার দু'হাজার ষোলোর রেজলিউশন ছিল  রোজ সকালবিকেল পড়তে + লিখতে বসা, রোজ আধঘণ্টা করে সারেগামা সাধা, রোজ মেলাগ্রাউন্ডের মাঠে সাত পাক হাঁটা - জীবনের যে কোনও কাজে, প্রতিটি কাজে, 'রেগুলার' হওয়াই আমার দু'হাজার সালের রেসলিউশন।  আরও একটা ছিলঃ রেগুলার বই পড়া। সাহসী হওয়ার পুরস্কার হাতে গরম পেয়েও গেলাম। অ্যাকচুয়ালি, দু’হাজার ষোলোর রেজলিউশন আমার রাখা হয়েছে। জীবনের অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে আমি রেগুলারিটি আনতে পেরেছি। দুটি সচেতন চেষ্টায়, অন

সাপ্তাহিকী

Children have never been very good at listening to their elders, but they have never failed to imitate them.                                                    ---James Baldwin, Nobody Knows My Name এই মেরেছে। আমি তো নিজেকে বেশ এমপ্যাথেটিক বলেই মনে করতাম। এরা বলছে ইমপালসের সঙ্গে নাকি এমপ্যাথি যায় না। বিশ্বমানচিত্রের ভুল নিয়ে কিছুদিন আগে সাপ্তাহিকীতে একটা লিংক দিয়েছিলাম। এই ভিডিওটাতে আরেকটু প্রাঞ্জল করে বলা আছে বলে আবার দিচ্ছি। Love is complicated, IKEA is simple. জ্ঞানসংগ্রহ নয়, তথ্যআবিষ্কার নয়, বাস্তব থেকে পালানোর জন্য নয়, জীবনে ড্রামার খাঁই মেটানোর জন্য নয়। আমি ওই বারো পার্সেন্টের মধ্যে পড়ি, যারা বই পড়ে আরাম করা আর একলা থাকার জন্য। সারা বিশ্ব কীভাবে বই পড়ে জানতে হলে ক্লিক করুন। (ইন্ডিয়া নিয়ে চাঞ্চল্যকর একটা তথ্য জানতে হলেও।)  ডাইনোসরের লেজসংক্রান্ত ‘রোম’হর্ষক খবর! ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এ বছরের সেরা পঞ্চাশটি ছবি।  আমরা নির্ঘাত সাই-ফাই সিনেমার মধ্যিখানে বাস করছি।   এ সপ্তাহের গান।

একটি নিখুঁত খুন

মূল গল্পঃ Blackfriars Bridge লেখকঃ Anthony Horowitz বিবেকানন্দ? ওহহ্‌ বালি ব্রিজ। বালি ব্রিজের ঘটনাটা শুনতে চান? না না, আপত্তি কীসের। সেই রাতের আগে শুনতে চাইলে আপত্তি থাকত, ফর অবভিয়াস রিজন্‌স, কারণ তখন ওটা ছিল একটা টপ সিক্রেট প্ল্যান, কিন্তু এখন তো আর সে রকম কিছু নেই। এখন বললেও যা, না বললেও তাই। বরং বলাই ভালো।  ডিসেম্বর মাসের রাতে বালি ব্রিজের ওপর আমি যাকে খুন করেছিলাম তার নাম ছিল অগোছালো নীল, ব্র্যাকেটে বাপি। ওর মধ্যে একমাত্র বাপিটুকু পিতৃমাতৃদত্ত। স্কুলের নাম ছিল নীলকণ্ঠ, কবিতা লিখতে শুরু করার পর কণ্ঠ খসল, ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলার পর অগোছালো জুড়ল। মুশকিল হল বিখ্যাত হওয়ার পর। ম্যাগাজিন থেকে লোক এসে “অগোছালো নীলবাবুর বাড়ি কোথায়” জিজ্ঞাসা করলে কেউ বলতে পারত না। কাজেই বাপিটা ব্র্যাকেটে রাখতে হল।  অগোছালো বাপিকে আমি কেন খুন করলাম? নাঃ, রোমহর্ষক কোনও কারণ আশা করলে পস্তাবেন। মানুষের খুনখারাপির ইতিহাসে যে দুটো মূল কারণ, সম্পত্তি আর সেক্স, তার একটার জন্য। অগোছালো বাপি আমার বউ সুনন্দার সঙ্গে সেক্স করছিল। তখন খুব রাগ হয়েছিল, এখন বুঝি, সুনন্দার দোষ ছিল না। আনন্দবাজারের বিজ্ঞা