হংসেশ্বরী
বাঁশবেড়িয়ার রাজারা পাটুলির লোক ছিলেন শুনে আমি খুব উৎসাহিত হয়েছিলাম তারপর বুঝলাম এ পাটুলি সে পাটুলি না, এ হল গিয়ে বর্ধমানের পাটুলি। ষোলশো তিয়াত্তরে জমিদার রামেশ্বর রায় চলে এলেন বাঁশবেড়িয়ায়। ত্রিবেণী আর ব্যান্ডেলের মাঝখানে গঙ্গার ধারে চারশো বিঘা জমি দিলেন ঔরঙ্গজেব আর দিলেন রাজা উপাধি। তাঁর তিন প্রজন্ম পরের রাজা নৃসিংহদেব সংস্কৃত পণ্ডিত ছিলেন এবং যোগসাধনা তন্ত্রমন্ত্র ইত্যাদিতে তাঁর উৎসাহ ছিল। তিনি বিলেত না গিয়ে বাঁশবেড়িয়ার জমিতে তিনি বানালেন এক মন্দির যার পাঁচটি তলা আমাদের কুণ্ডলিনী শক্তির পাঁচটি অংশ ইড়া, পিঙ্গলা, সুষুম্না, বজ্রাক্ষ আর চিত্রিণীর প্রতিনিধি। রাজামশাইয়ের মন্দির তৈরিতে ভয়ানক উৎসাহ ছিল। সে যুগে প্রায় লাখ টাকা খরচ করে নিজে গিয়ে চুনার থেকে মন্দির বানানোর পাথর কিনে এনেছিলেন। দুঃখের বিষয় মন্দিরের কাজ এগোতে না এগোতেই রাজামশাই মারা গেলেন। বড়রানী রাজার সঙ্গে চিতায় উঠলেন, ছোটরানী শংকরী মন্দির শেষ করলেন আঠেরোশো চোদ্দয়।
তেরোটা পদ্মের কুঁড়ির মতো চুড়োওয়ালা মন্দিরের ভেতরে নিমকাঠের নীলবর্ণ দেবী। মাকালীর এক রূপ, যদিও হংসেশ্বরী নামটা নৃসিংহদেবের মায়ের নাম থেকে দেওয়া।
ষোলশো ঊনসত্তরে, মূল হংসেশ্বরী মন্দিরের অনেক আগে রাজা রামেশ্বর বানিয়েছিলেন টেরাকোটার এই অনন্ত বাসুদেব মন্দির। সারা গায়ে রামায়ণ মহাভারতের গল্প আঁকা।
এই ছবিটা এখন দেখে এ আর এমন কী মনে হচ্ছে, কিন্তু আমি যখন দেখছিলাম তখন কুয়াশায় দূর থেকে আজানের আওয়াজ আর একটা উনুনধরানো গন্ধ ভেসে আসছিল।
হংসেশ্বরী মন্দির আমি এর আগেও গেছি, স্কুলের সঙ্গে, বাড়ির সঙ্গে, কিন্তু সে বহুযুগ আগে। তবে ভালো লাগাটা মনে ছিল। এবারেও ভালো লেগেছে। ধর্মের ঘটা কম। নিজের মতো ঘুরেফিরে দেখা যায়। পুকুরের পাশে একটা নৌকোর উল্টোনো গায়ে নতুন আলকাতরা, আরেকটা নৌকো পুকুরঘাটে বাঁধা। আমরা যতক্ষণ ছিলাম ততক্ষণ ভিড়ও পাতলা ছিল। ফ্যামিলি আর কোচিংফেরত ছেলেমেয়ে। সন্ধ্যে বাড়তে ভিড় বাড়ল। আমরা তখন মন্দিরের চাতাল থেকে নেমে এসে চায়ের দোকানে ঢুকলাম। মিষ্টি কম দেওয়া চা আর সঙ্গে বয়ামের রম্বস-আকৃতির বিস্কুট।
*****
ব্যস। আজ রাতে চোখ বুজলেই দু’হাজার ষোল শেষ। কাল সকালে চোখ খুললে নতুন দিন, নতুন বছর। এ বছরে আপনি নিজেকে যেমন চান তেমন হয়ে উঠুন এই শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা রইল।
Ehhe, apnio ekhane? Amio esechhilam je! Aj firchhi. Ekhon airport e bose, plane e uthbo 2016 te, nambo 2017 te. Apnakeo notun bachhorer anek shubhechchha janai.
ReplyDeleteআপনাকেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা, সুগত। আমি এখন চলে এসেছি দিল্লি। আপনার দেশভ্রমণ ভালো হয়েছে আশা করি।
Deleteবয়ামের রম্বস-আকৃতির বিস্কুট।
ReplyDeleteei biscuit gulo khub e sundor khete.potol biscuit.s biscuit.ar sei je bolechilam..pele..lal lonka makhano danda biscuit..
enzoy enzoy
prosenjit
ধন্যবাদ, প্রসেনজিৎ। নতুন বছরের অনেক শুভেচ্ছা রইল।
DeleteHappy new year Kuntala :)
ReplyDeleteei jaygata satyi khub sundor, ami 2003-2004 e gechhilam. dhormer ghonoghota kom bolei besi bhalo legechilo, tomar sathe ekmot.
-Bratati.
হ্যাপি নিউ ইয়ারের অনেক ভালোবাসা আর শুভেচ্ছা তোমাকে আর তোমার বাড়ির সবাইকে, ব্রততী।
DeleteGotobochhor poyla Januyary te ekhanei giyechhilam amra. :-)
ReplyDeleteHappy New Year :) Notun Bochhor khub bhalo katuk...
আরে তাই নাকি? হ্যাপি নিউ ইয়ারের অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে আর রাকাকেও।
DeleteHappy new year Kuntala !!! .. ei Hangsheshwari mandir ki sei Narayan Sanyal -r r lekha galpo tar mandir ??
ReplyDeleteহ্যাপি নিউ ইয়ারের অনেক শুভেচ্ছা ভালোবাসা কোলাকুলি তোকেও, বৈশালী। হ্যাঁ ওটা ওই মন্দিরই বটে।
DeleteHappy new year.......
ReplyDeleteHansheswari mandir o rani Shankari ke nie Narayan Sanyal er asadharan (aamar kachhe) uponyash ta porechis?
হ্যাপি নিউ ইয়ার, শাশ্বত। হ্যাঁ, ওই বইটা আমারও ভালো লেগেছিল খুব।
Delete